‌প্রে‌সি‌ডেন্ট যখন দ্বিধায়

ঐশ্বরিক (মার্চ ২০১৭)

খা‌লিদ খান
হুজুর কাঁদছেন। কেঁদেই চলছেন। ঠিক কী কারণে কাঁদছেন মেয়েটা তা বুঝতে পারছে না।
দু’মাস যাবৎ তাঁর কাছে পড়ছে সে। সর্বদাই উৎফুল্ল দেখেছে। অনেক মজার মানুষ তিনি। আজ কী যে হলো?!!
ব্যক্তিগত বিষয়ে কিচ্ছু বলেন না তিনি। বলাতেও পারে না মেয়েটা।
পারবেই বা কী করে? ধার্মিক প্রেসিডেন্ট সাহেবের মেয়ে। একটু লাজুক তো হবেই।
নাম তাবাস্সুম। বাবা বোখারার প্রেসিডেন্ট আইয়াজ আকবার। সে‌দিন হুট করে কোথা থে‌কে যেন এক হুজুর নিয়ে এসেছেন। আর বললেন- 'তাবাস্সুম! তুমি আজ থেকে উনার কাছে পড়বে। অনেক ভাল হুজুর।' আর কিচ্ছু বলেন নি উনার ব্যপারে। কাউকে জিজ্ঞাসা করারও যো নেই।
পড়ার বাই‌রের অনেক প্রশ্নেরও উত্তর দেন হুজুর।
পড়ার ফা‌কে ফা‌কে টুকটাক প্রশ্ন ক‌রে তাবাস্সুম। আর মজার মজার উত্তর পায়।
আজ ম‌নে হয় আর প্রশ্ন করা হ‌বে না।
কারন, হুজুরের ক্রন্দনই থাম‌ছে না।
‌বেশ কিছুক্ষণ কেটে গেল এভা‌বে।
হাঠাৎ এক কান্ড ঘ‌টি‌য়ে বসল মে‌য়েটা।
হা‌ফেজ মু‌রিস বান্না যার জন্য মো‌টেও প্রস্তুত ছি‌লেন না। অবশ্য তাঁর থে‌কে কথা বের করার আর কোন উপায়ও ছিল না।
‌মে‌য়েটা কসম খে‌য়ে বসল!!
বলল, 'আল্লাহর কসম! আজ আপনা‌কে বল‌তেই হ‌বে; আপ‌নি কে? কী আপনার প‌রিচয়?!
আর আজ‌কে হঠাৎ কাঁদার কারনটাই বা কী?'
'থ' মে‌রে গে‌লেন হুজুর। মে‌য়েটার এমন কান্ড; ভাব‌তেও পা‌রেন নি তি‌নি।
‌কান্না থে‌মে গে‌ছে। চো‌খের পাতা এখ‌নো ভেজা।
একটু পর; নি‌জে‌কে সংবরন ক‌রে বল‌লেন, এটা তুমি কী কর‌লে?!
'যা ক‌রে‌ছি বু‌ঝে শু‌নেই করে‌ছি।' একটু খা‌নি লাজুক হাসল মে‌য়েটা।

আগেই সব বল‌তে চে‌য়ে‌ছি‌লেন বান্না। কিন্তু কীভা‌বে বল‌বে? কী ব‌লেই বা শুরু কর‌বে?
কারন মে‌য়েটা‌কে তার পছন্দ হ‌য়ে‌ছে। মোটামু‌টি সিদ্ধ‌ান্তও নি‌য়ে ফে‌লে‌ছে বড় কিছুর!!
আর এরজন্য প্র‌য়োজন নিজের ব্যপা‌রে ওকে সব কিছু ব‌লে দেয়া।
'‌শোন তাবাস্সুম!'‌ কিছুটা ভে‌বে মুখ খুলল বান্না। 'দুপু‌রে আমার হুজরায় এসো। খাওয়ার দাওয়াত।'
‌প্রে‌সি‌ডেন্ট আইয়াজ হা‌ফেজ মু‌রিস বান্নার জন্য গনভব‌নে একটা ঘরও দি‌য়ে‌ছে। নিযুক্ত ক‌রে‌ছেন ক‌য়েকজন‌‌ খা‌দেমও‌। আগে যাই থাক এখন সে তার কন্যার গুরু।
****
'আমার কোন প‌রিচয় আগে শুন‌বে' দস্তরখা‌নের ওপাশ থে‌কে বল‌লেন হা‌ফেজ বান্না।
'সব ব‌লেন।' লজ্জাবতীর মত লাগছে মে‌য়েটা‌কে। ছোয়া মাত্রই গু‌টি‌য়ে যা‌বে ম‌নে হয়।
'‌ঠিক আ‌ছে, আ‌গে নিকট অতী‌তেরটা শোন। আমি তোমা‌দের ক‌য়েদী ছিলাম!'
'ক‌য়েদী' বলা‌তেই লা‌ফি‌য়ে উঠল মে‌য়েটা। ঘৃণায় না আশ্চ‌র্যে বুঝা গেল না!
'ত‌বে আ‌মি জা‌নি না কেনই বা ক‌য়েদী হলাম' আবার বলা শুরু কর‌লেন। 'সে‌দিন আ‌মি জংগ‌লে ঘুমু‌চ্ছিলাম। শরীরটা ছিল ক্লান্ত। কারন আ‌মি হ‌রিণ ধর‌তে গি‌য়ে পথ হা‌রি‌য়ে‌ছি। আ‌গে অভ্যস্ত না হওয়া স‌ত্বেও শোয়ার সাথে সাথেই ঘু‌মি‌য়ে গেলাম। কতক্ষণ ঘু‌মি‌য়ে‌ছি জা‌নি না। হঠাৎ কিছুর আঘা‌তে ঘুমটা ভাঙ্গল। উঠে দে‌খি দু'জন সিপাহী; ঘোড়ার উপর বসা। বল্লমের আগা দি‌য়ে আমার পা খোচা‌চ্ছে। আর আমার চারপা‌শে ছ‌ড়ি‌য়ে ছি‌টি‌য়ে আ‌ছে স্বর্ণমুদ্রা! আমার প‌কেট ভ‌র্তি স্বর্ণ!!
ইতিম‌ধ্যে গ্রেফতারও হলাম।
অনেক প‌রে অবশ্য জে‌নে‌ছি‌ যে, আমি তোমার বাবার স্বর্ণভান্ডার থে‌কে এসব চু‌রি ক‌রে ‌পা‌লি‌য়েছি!!! '
তাবাস্সু‌মের চোখদু‌টো কেমন যেন হ‌য়ে যা‌চ্ছে। ওর অনুভূ‌তি বোঝা যা‌চ্ছে না।
বান্না বল‌লেন, কী হ‌লো! এমন 'তোম্বা' মে‌রে গে‌লে কেন?
'কী বলব! অবাক হ‌চ্ছি সুন্দর একটা ঘটনা শু‌নে। আর রাগ হ‌চ্ছে এর কিছুই আমি জা‌নি না ব‌লে।'
'রাগ হবার কিছু নেই।' দুজন‌কেই অবাক করে দেয় দরজার কাছ থে‌কে আসা কণ্ঠটা।
‌প্রে‌সি‌ডেন্ট আইয়াজ কামরায় ঢুক‌লেন।
'আপ‌নি এখা‌নে?!' দুজ‌নেই সমস্ব‌রে ব‌লে উঠল।
'হ্যাঁ, কিছুক্ষণ যাবৎ মে‌য়েটা‌কে খুজ‌ছি' আইয়াজ অনেকটা অপরা‌ধীর মত ক‌রে বল‌ছেন। 'ওর এক খা‌দেমা বলল, "হুজু‌রের ঘ‌রে গে‌ছে; দুপু‌রের খাবার ওখানেই খা‌বে।" অপরাধ হ‌য়ে‌ছে জে‌নেও আড়াল থে‌কে গল্পটা শুনলাম।'
তারপর আপন ম‌নেই ব‌লে উঠল 'এখন বুঝ‌তে‌ছি আসল চোর কে?!!'
'তার আগে ব‌লুন, এসব কিছু আমায় জানাও নি কেন?' মে‌য়েটা রা‌গের চো‌খে বলল।
আকবার বলল, ব‌লি‌নি কারন, তু‌মি কোন ক‌য়েদীর কা‌ছে পড়‌তে রা‌জি হ‌বে না। আর তুমি তো জানই তোমার দ্ব‌ী‌নি শিক্ষার জন্য একজন ভা‌লো হুজুর খুজ‌ছিলাম।'
'‌কিন্তু, এটা জান‌লেন কী ক‌রে যে সে ভা‌লো?' বাবার কথার মা‌ঝেই ব‌লে উঠল মে‌য়ে‌টি। কোন সন্দেহ রাখ‌বে না সে আজ। সব জে‌নে নি‌বে।
'বল‌ছি।' প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর দি‌লেন আইয়াজ। 'তু‌মি তো জা‌নো, আমি সপ্তা‌হে একবার জেলখানা প‌রিদর্শ‌ন ক‌রি। সে‌দিনও গেলাম। সে‌লের নিকটবর্তী হ‌তেই শুনলাম, এক অভূতপূর্ব তেলাওয়া‌তের সুর। খোজ নিয়ে শে‌ষে তোমার সাম‌নে বসা হুজুর‌কে পেলাম।'
‌কিছুক্ষণ নিরবতা।
'আসল চোর তাই‌লে ওই লোকটাই যে হুজুর‌কে ধ‌রি‌য়ে দি‌য়ে‌ছে!' এবারও নিরবতা ভাঙ্গল প্রে‌সি‌ডেন্ট।
'মা‌নে?!' হুজু‌রের ক‌ন্ঠে হালকা রাগ। 'আমা‌কে আবার কে ধ‌রি‌য়ে দি‌বে? আ‌মি তো কা‌রো সা‌থে কোন শত্রুতা ক‌রি নাই। তাছাড়া আমি তো আমার দে‌শের...'‌ জিহ্বায় কামড় দি‌য়ে নি‌জে‌কে সংবরন কর‌লেন মু‌রিস বান্না।
‌প্রে‌সি‌ডেন্ট আইয়াজ চোর খু‌জে পাওয়ার আন‌ন্দে বিষয়টা ধর‌তে পা‌রে নি। তি‌নি বের হ‌য়ে গে‌লেন আচমকাই। চো‌খে হালকা ক্রোধ। ফরমান জা‌রি কর‌তে হ‌বে লোভী চোরটা‌কে ধরার জন্য। কেন যে ডাবল পুরষ্কা‌রের ঘোষণা করল সে।
আস‌লে তি‌নি চেয়ে‌ছি‌লেন এর মাধ্য‌মে চু‌রি বন্ধ কর‌বেন। এ বিষয়টা আ‌গে তার মাথা‌তেই আসেনি যে, চোর নি‌জেও এ সু‌যোগ গ্রহন কর‌তে পা‌রে।
শালার চোর, ডাবল পুরষ্কা‌রের আশায় চু‌রির সম্পদ বান্না সা‌হেব‌কে‌ দিয়ে নিরীহ লোকটা‌কে ফা‌সি‌য়ে‌ছে।
ওদিকে তাবাস্সুম জিহ্বায় বিষয়টা ধ‌রে ফেলেছে। বাবা বের হ‌য়ে যে‌তেই ধ‌রে বসল হুজুর‌কে। 'আপ‌নি আপনার দে‌শের কী?'
'না না আ‌মি কিছু না।' অনেকটা আড়াল কর‌তে চাই‌লেন নি‌জে‌কে।
'কস‌মের কথা ম‌নে আছে?' মে‌য়েটার শান্ত কণ্ঠ।
'ই‌য়ে মা‌নে...'। কিছুটা ভড়‌কে গে‌লেন বান্না। 'আমি আমার দে‌শের প্রে‌সি‌ডেন্ট!' ফস‌কে বের হ‌য়ে গে‌লো।
'মা‌নে?!!!' মে‌য়েটার চো‌খে শত বিষ্ময়। 'আপ‌নি আপনার দে‌শের...' হঠাৎ বাই‌রে এক ফরমান শোনা গেল~
‌""প্রে‌সি‌ডেন্ট সা‌হে‌বের নি‌র্দেশ!
গনভব‌নের সকল সদস্য বি‌শেষভা‌বে প্রিন্সেস তাবাস্সুম এবং ত‌ার সম্মা‌নিত শিক্ষক মু‌রিস বান্না‌কে আজ মাগ‌রিব বাদ জরু‌রি তলব করা হ‌য়েছে।""
'বা‌কিটা সেখা‌নেই শোনা যা‌বে।' হা‌সি মুখে বে‌রি‌য়ে গেল তাবাস্সুম।
****
আইয়াজ আকবা‌রের পা‌শে বড় এক চেয়ার রাখা হ‌য়ে‌ছে। তা‌তে এখন বসা আছেন সমরক‌ন্দের প্রে‌সি‌ডেন্ট হাফেজ মুরিস বান্না! মাথা নিচু ক‌রে আ‌ছেন।
সাম‌নের দি‌কে প্রি‌ন্সেস তাবাস্সুম আর কিছু অপ‌রি‌চিত লোকজন।
'আমার একটা জি‌নিস বু‌ঝে আস‌ছে না' প্রথ‌মে মুখ খুল‌লেন আইয়াজ। 'এত বড় রাজ্য ছে‌ড়ে প্রে‌সি‌ডেন্ট বান্না জঙ্গ‌লে কেন ঘুমু‌তে গে‌লেন?!'
'মাননীয় প্রে‌সি‌ডেন্ট ম‌হোদয়!' আপ‌রি‌চিত‌দের একজন দা‌ড়ি‌য়ে বল‌তে লাগল। 'আ‌মি এর কারন আপনার সাম‌নে...' বান্না হা‌তের ইশারায় লোক‌টি‌কে ব‌সি‌য়ে দি‌লেন।
অবাক বিষ্ম‌য়ে তা‌কি‌য়ে আ‌ছে সবাই বান্নার দি‌কে।
‌প্রে‌সি‌ডেন্ট ধৈর্য্য হারা হ‌য়ে বল‌লেন, 'তাহ‌লে আপ‌নিই ব‌লুন বান্না!'
ধী‌রে ধী‌রে কেঁ‌পে উঠল তার কণ্ঠস্বর।
'আস‌লে আমা‌দের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম।' অনেকটা ভূ‌মিকার মত ক‌রে শুরু কর‌লেন প্রে‌সি‌ডেন্ট মু‌রিস বান্না। 'আমা‌দের সং‌বিধান হ‌লো কোরআন। কিন্তু আ‌মি তেমন কিছু জা‌নি না এর সম্ব‌ন্ধে। ভা‌লো ক্বারীর কা‌ছে হেফজ শেষ কর‌লেও আ‌লেম হ‌য়ে‌ছি মার্কা মারা।'একটু থাম‌লেন তি‌নি।
'তারপরও শোকর খোদার, তি‌নি আমা‌কে দেশের সোর্ব‌োচ্চ মর্যাদা দ‌ি‌য়ে‌ছেন।
‌প্রে‌সি‌ডেন্ট হবার পর আমার জানা শোনা বাড়া‌তে হয়। সা‌র্টি‌ফি‌কেট মার্কা জ্ঞান দি‌য়ে ইসলা‌মি রাষ্ট্র চালা‌নো অসম্ভব।
প্রতি‌দিনই কোরআ‌নে কারীম থে‌কে কিছু কিছু অধ্যায়ন করতাম।
এক‌দি‌নের ঘটনা। আমি সূরা আলে ইমরান পড়‌ছি। ২৬নং আয়া‌তে চ‌লে আসলাম। অর্থ দি‌কে নজর বুলা‌তেই হালকা খটকা লাগল ম‌নে।
'অর্থটা একটু বল‌বেন' কেউ একজন জিজ্ঞাসা করল পাশ থে‌কে।
'হ্যাঁ হ্যাঁ অবশ্যই বলব।' বান্না উৎফু‌ল্লের সা‌থেই ব‌লে যা‌চ্ছেন। 'অর্থটা এমন~
"‌হে নবী! আপ‌নি বলুন, হে আল্লাহ! রা‌জ্যের মা‌লিক! আপ‌নি যা‌কে ইচ্ছা রাজত্ব দেন। যার থে‌কে ইচ্ছা রাজত্ব ছি‌নি‌য়ে নেন। যা‌কে ইচ্ছা সম্মান দেন। যা‌কে ইচ্ছা লাঞ্চনা দেন।"
আমার এত বড় রাজত্ব! এত সম্মান! বুঝলাম, এগু‌লো আল্লাহ আমা‌কে দান ক‌রে‌ছেন। কিন্তু এগু‌লো ছি‌নি‌য়ে নি‌বেন কীভা‌বে?!!!'
‌জো‌রে নিশ্বাস ছাড়‌ছেন বান্না।
'তারপর...'
'ওওও' এই সময় কথায় বাধা দি‌য়ে দা‌ড়ি‌য়ে গেল প্রি‌ন্সেস তাবাস্সুম। 'এখন বু‌ঝে‌ছি! আমি তো সকা‌লে এই আয়াতই তে‌লোয়াত কর‌ছিলাম। আর তখনই আপ‌নার সব ম‌নে হ‌লো আর আপ‌নি...'
'হুমম' মু‌রিস বান্না মুচ‌কি হে‌সে বল‌লেন।
'তারপর কী হ‌লো?!' আকবার আগ্র‌হে প্রায় ঝু‌কে প‌ড়ে‌ছেন বান্নার দি‌কে।
'তারপ‌রের ঘটনা আমার প্রধানম‌ন্ত্রী‌ না‌সেফ তৈয়্যব‌কে বলার অনুম‌তি দিলাম' হঠাৎ ক‌রেই নিজ কথার ই‌তি টে‌নে নিলেন প্রে‌সি‌ডেন্ট বান্না। ম‌নে হ‌লো হালকা লজ্জা পা‌চ্ছেন সাম‌নের ঘটনাগু‌লো বল‌তে।

সাম‌নে বসা অপ‌রি‌চিত‌দের একজন দা‌ড়ি‌য়ে গেল। প্রে‌সি‌ডেন্ট আইয়াজ অবশ্য এতক্ষণ এদের কাউ‌কেই চি‌নেন নি। প্রধানমন্ত্রী না‌সেফ দা‌ড়ি‌য়ে যে‌তেই বুঝ‌লেন, আগন্তুকরা নি‌জে‌দের প্রে‌সি‌ডে‌ন্টের খো‌জেই এসেছে!
'এক‌দিন আমরা প্রে‌সি‌ডেন্ট বান্নার সা‌থে জঙ্গ‌লে শিকা‌রের উ‌দ্দেশ্যে বের হলাম।' না‌সেফ বলা শুরু কর‌লো। 'শিকার করা ওনার অ‌নেক শখ। প্রায়ই সদলব‌লে বে‌রি‌য়ে প‌ড়েন। যাই হোক সে‌দিন আমরা ঘুর‌তে ঘুর‌তে জঙ্গ‌লের গভ‌ীরে চ‌লে আ‌সি।
হঠাৎ একটা অপূর্ব হ‌রিণ আমা‌দের নজ‌রে পড়ল।
এত সুন্দর হ‌রিণ আমরা জীব‌নেও দে‌খি নাই। প্রে‌সি‌ডেন্ট সা‌হেব হ‌রিণটা‌কে খুব পছন্দ কর‌লেন। ধরার জন্য তৈরী হ‌লেন। সবাই‌কে এলার্ট কর‌লেন আর বল‌লেন, "যার ফাক দি‌য়ে হ‌রিণ‌টি বে‌রি‌য়ে যা‌বে তা‌কেই ধ‌রে আন‌তে হ‌বে হ‌রিণটা।"
দূর্ভাগ্যক্র‌মে সেটা বান্না সা‌হে‌বের ফাক গ‌লেই পালাল।
‌তি‌নি সাহস হারা‌লেন না। নিজ কথা ঠিক রাখ‌তে হ‌রি‌ণের পি‌ছে ছুট‌লেন। আমরা পি‌ছে আস‌তে চাই‌লে তি‌নি মানা কর‌লেন শিকার ধর‌তে অসু‌বিধা হ‌বে ব‌লে।
আমরা সেখা‌নে প্রায় এক‌দিন অ‌পেক্ষা করলাম। তারপর খুজ‌তে বের হলাম তা‌কে। ক‌য়েক‌দিন খু‌জে ব্যর্থ হ‌য়ে ফি‌রে আসলাম আ‌গের জায়গায়। তারপর ক‌য়েকজন সিপাহী সেখা‌নে রে‌খে বাকীরা ফিরে আসলাম।
এসে প্রিন্স বান্না‌কে খবর দি‌তেই ও ক্ষে‌পে গে‌লো। তারপর আশপা‌শের রা‌জ্যে খবর নি‌তেই....'
'থাক মন্ত্রী মহোদয়!' পাশ থে‌কে ব‌লে উঠ‌লো এক আগন্তুক। প্রিন্সই হ‌বে। 'এগু‌লো আর বল‌তে হ‌বে না। কারন এরপর থে‌কে সবাই জা‌নে।' এবার মু‌রিস বান্নার দি‌কে ফিরল যুবকটা।
'আব্বা! আপনার প‌রের গল্পগু‌লো এবার ব‌লেন। আপ‌নি তারপর কোথায় গে‌লেন এবং এখা‌নে কীভা‌বে গ্রেফতার হ‌‌য়ে এলেন?! '
‌প্রিন্স জা‌বেদের মু‌খে বাবা ডাক শু‌নে তাবাস্সুম অবাক হ‌লো। হঠাৎ সবার সাম‌নে থে‌কে উঠে চ‌লে গে‌লো। ওর ক্ষোভ, ও‌কে কেন কেউ আ‌গে সব ব‌লে না।
'ওর চ‌লে যাবার কারনটা একটু প‌রে বল‌ছি' জা‌বেদ ওর পিছু নি‌তে নি‌তে বল‌লো।
দুই প্রে‌সি‌ডে‌ন্টের চোখা‌চো‌খি হ‌লো। মৃদু হা‌সিও বের হ‌লো উভয়ের মুখ থে‌কে।
তারপর সমরক‌ন্দের প্রে‌সি‌ডেন্ট উপসংহার টান‌লেন নিজ গ‌ল্পের। বল‌লেন,
'আস‌লে পৃ‌থিবীর প্র‌তি‌টি কাজ ঐশ্ব‌রিক। আল্লাহর অধী‌নে। তি‌নিই প্রতি‌টি কাজ ক‌রেন এবং করান। আমা‌কে সম্মা‌নের উচু আসন থে‌কে অত‌লে তি‌নিই ফে‌লে‌ছেন। আমার থে‌কে রাজ্য কে‌ড়ে নি‌য়ে‌ছেন তি‌নিই। অন্ধকার প্র‌কোষ্ঠ ঘু‌রি‌য়ে ফের আলোর দি‌কে বেরও তি‌নি ক‌রে‌ছেন।
আর সেই আয়াত সম্প‌র্কে তো আর কিছুই বলার নেই আমার। চো‌খে আঙ্গুল দি‌য়ে বু‌ঝি‌য়ে দি‌লেন সব।'
'আচ্ছা, আজ‌কের সভা এখা‌নেই সমাপ্ত।' আইয়াজ সমাপ্তি ঘোষণা ক‌রে বান্নার কা‌নের কা‌ছে মুখ এ‌নে ফিস‌ফি‌সি‌য়ে বল‌লেন, জা‌বেদ~তাবাস্সুম রা‌জি থাক‌লে আপ‌নি রা‌জি তো?!!
'আরে আমি তো আগে থে‌কেই রা‌জি!' হঠাৎ চোখটা জ্বলে উঠল বান্নার। 'একটা বিষয় লক্ষ্য ক‌রে‌ছেন?'
'কী' কিছুটা অবাক হ‌লেন আকবার।
'ওদের এই বিষয়টাও কিন্তু ঐশ্বরিক!!!'

**প‌রি‌শিষ্ট**
এ‌ই, তু‌মি আগে ব‌লো নি কেন যে তু‌মি প্রিন্স?!!
ব‌লি‌নি অনেক কার‌নে, প‌রে বলব। এখন চ‌লো! বাবার গ্রেফতার হবার গল্পটা শুন‌তে হ‌বে।
ও আ‌মি জানি' মৃদু হে‌সে ব‌লে মে‌য়েটা।
আরে চ‌লো তো, তোমা‌কে বাধার ব্যবস্থাটাও কর‌তে হ‌বে।
'সব কিছু ও‌কে' রহস্যময় হা‌সি দি‌য়ে বলল মে‌য়ে‌টি।'এখন চ‌লো'
কোথায়?!
জা‌নি না...
হঠাৎ মে‌য়েটার কাচ ভাঙ্গা হা‌সি ছ‌ড়ি‌য়ে গেল সর্বত্র। আগে কখ‌নো জা‌বেদ তাবাস্সুম‌কে এভা‌বে হাস‌তে দে‌খি নি
(গল্পটা সম্পূর্ণ কল্পনা প্রসূত)

আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
কাজী জাহাঙ্গীর বেশ ভালই কল্পনা করেছেন। আরো ভালো ভালো কল্পনা করুন, লিখুন আর আমাদের বিমোহিত করুন। অনেক শুভকামনা, ভোট আর আমার পাতায় আমন্ত্রণ।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী মাঝ পথে দিয়ে কেমন যেন এলোমেলো লাগলো। তবুও অনেক ভালো হয়েছে। শুভকামনা, ভোট ও আমার পাতায় আমন্ত্রণ রইলো।
‌তীব আহমাদ তোর লেখা এত্ত সুন্দর হল ক‌বে!
সা‌জিদুর রহমান দারুন হই‌ছে! ভক্ত হ‌য়ে গেলাম। সাম‌নে আ‌রো লেখা চাই। অ‌পেক্ষায় রইলাম

০২ ডিসেম্বর - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ১১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪