প্রতি রবিবার ছুটির দিনে সিনেমা দেখতে যাওয়া তন্ময়ের অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। রবিবার সকালে বের হয়ে দুপুর পর্যন্ত সিনেমা দেখে অবন্তির সাথে লান্স করে তারপর বাসায় ফেরে। কিন্তু আজ সে বের হতে পারেনি এখনও। বাসায় কোথা থেকে একজন মেহমান আসছে, একজন মেয়ে। বোবা মেয়েটা, তাই কে সে বোঝা যায়নি। বেশ সুন্দরী মেয়েটা, রাজকন্যা টাইপে র চেহারা। অবন্তিকে এটা বলাতে খুব ক্ষেপছে। ও হয়ত নিজেকে পৃথিবীর সবথেকে সুন্দরী ভাবে। তন্ময়েরও খুব রাগ হল অবন্তির উপর। তাই একাই রওনা হল সিনেমা দেখতে।
আজ হরর মুভি দেখবে তন্ময়। সিনেমা হলে ঢুকতেই কেমন জানি গা ছমছম করছিল তন্ময়ের। একা একা কখনও সে হরর মুভি দেখেনি। মুভি দেখে তন্ময় খুব অবাক হল। মুভিতে যে আত্মাটা কে দেখাচ্ছে ওই মেয়েটাই আজ সকালে ওদে র বাসায় আসছে। তন্ময়ের খুব ভয় হচ্ছিল কারন ওর পাশেও কেউ ছিলনা। হঠাৎ সে অনুভব করল পাশ থেকে কেউ একজন তার কাধে হাত রাখলো । তাকাতেই সে দেখলো সেই মেয়েটি তার পাশে বসে আছে। তন্ময়ের গলা শুকিয়ে আসছিলো। বাহিরে বের হবার চেষ্টা করতেই মেয়েটা তার হাত চেপে ধরল। টানাটানিতে তন্ময়ের ঘড়িটা খুলে থেকে গেলো। কোন মতে ছাড়িয়ে মুভি শেষ না করেই বেরিয়ে পড়লো। কিন্তু বাহিরে সে কোন রিক্সা দেখতে পেলোনা। হাটতে শুরু করল। আজ রাস্তাটাও তার কাছে অচেনা লাগছে। হাটতে হাটতে অনেক দুর যাবার পর একটা রিক্সা পেলো। রিক্সায় উঠে রিক্সা চালককে তাড়াতাড়ি চালাতে বলে। তন্ময়ের ঘুমঘুম পাচ্ছিল, হঠাৎ সে অনুভব করল তার পাশে কেউ বসে আছে। পাশে তাকাতেই দেখে সেই মেয়েটি। মেয়েটি বলে" ঘড়িটা নিবেনা তন্ময়।" কোনমতে রিক্সা থেকে নেমে দৌড় দেয় তন্ময়। দৌড়াতে দৌড়াতে একটা বাড়ীতে যেয়ে নক করে সে। ভেতর থেকে একজন মহিলা বের হয়ে আসের ঘোমটা দিয়ে। ভয়ে তন্ময়ের বুক তখন তৃষ্নায় শুখিয়ে গেছে। মহিলার কাছে পানি চাওয়ার আগেই মহিলাটি তন্ময়কে পানি এগিয়ে দিল। কোন কিছু না ভেবে ঢকঢক করে পানি খেয়ে নিলো সে। মহিলাকে গ্লাসটা দিতেই ঘোমটা উঠিয়ে মহিলাটি বলে "ঘড়িটা নিবে না" । তন্ময় তাকাতেই অবাক হল এটা তো সেই মেয়ে। কোনমতে দৌড় দিয়ে পালানোর চেষ্টা করল। কিন্তু মেয়েটাও ওর পিছ পিছ দৌড়ানো শুরু করল। দৌড়াতে গিয়ে ট্রেন রাস্তার সামনে গেলো সে। মেয়েটি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল তন্ময়কে আর ট্রেন এসে চাপা দিল মেয়েটিকে। তন্ময় অঙ্গান হয়ে গেল। চোখ খুলতেই তন্ময় অনুভব করলো সে তার বেডে। এখানে কিভাবে আসলো কিছুই বুঝতে পারলোনা সে। শরীরে খুব ব্যাথা ওর। মা চা দিতে আসলো। কাল কি হয়েছিলো জানতে চাইলো তন্ময়ের কাছে। তন্ময়ের বাবা নামায পড়তে মসজিদে যাবার সময় ওকে অঙ্গান অবস্হায় পেয়েছে বাসার গেটের সামনে। কিছুই বুঝতে পারলো না তন্ময়। তাকিয়ে রইলো মায়ের দিকে।
খুব মাথা ঘুরাচ্ছিল আর অস্থির লাগছিলো তন্ময়ের। অবন্তিকে খবর দিয়েছে তন্ময়ের মা। হয়ত এখনই এসে যাবে। তন্ময় মায়ের কাছে গতকাল যে মেয়েটা এসেছিল তার সম্পর্কে জানতে চাইলেস মা জানালো সকালেই মেয়েটি চলে গেছিলো। ভালো লাগছিলোনা তন্ময়ের। অবাক হল সেই ঘড়িটা নিজের হাতে দেখে। অবন্তি এসে বকবক করতেই আছে। কেন, কিভাবে, কি হল হাজারটা প্রশ্ন। এর মধ্যে শুরু করেছে আর এক গল্প। তার গ্রামের এক আত্মিয় নাকি ট্রেনে চাপা পড়েছে, হয়ত আত্মহত্যা করেছে। ফেসবুকে কোন ছেলে তার সাথে প্রতারনা করেছে । এত সুন্দর মেয়েটাকে কেমন বিভৎস লাগছে। ৫ দিন আগে এ ঘটনা ঘটছে। কিন্তু অবন্তিরা খবর পেয়েছে আজ। পত্রিকা সাথে এণেছে অবন্তি। পত্রিকাতে দুটি ছবি, একটি ট্রেনে কাটা আর একটি আগের। জোর করে তন্ময়কে দেখালো অবন্তি। তন্ময় চমকে উঠলো মনে হল হৃদ-স্পন্দন থেমে আসছে। এটাইতো। সেই মেয়ে যে কাল রাত্রে ওর সাথে এত কান্ড ঘটিয়েছে। মেয়েটির নাম জানতে চাইলেআ অবন্তি জানালো নীলা। তন্ময় ল্যাপটব নিয়ে ওর ফেসবুব এক্টিভ করল যা সে এক সপ্তাহ আগে ডিএক্টিাভ করেছিলো। "নীল পরী নীলা" ছিল মেয়েটির ফেসবুকের নাম। প্রতিদিন চ্যাট হত মেয়েটির সাথে। তবে তন্লয়ের সন্দেহ ছিলো যে এটিল ফেক আইডি ।মেয়েটি নিজের ছবি ফেসবুকে দিতনা। তন্ময়ের জীবনে অবন্তি থাকার স্বত্ত্বেও নীলার সাথে ওর প্রেম হয়। গত জন্মদিনে নীলা এই ঘড়িটি দিয়েছিল তন্ময়কে। গত সপ্তাহে ছবি দেওয়া নিয়ে ঝগড়া হওয়ায় ফেসকুক ডিএক্টি ভ করে তন্ময়। মেয়েটি বলে তুমি তো আমাকে ভালোবাসো তবে ছবি দিয়ে কি করবে। তন্ময়ের কাছে সম্পর্কটার গুরুত্ব না থাকলেও মেয়েটির কাছে অনেক বেশি ছিল। শত মেসেজ জমা হয়ে আছে ইনবক্সে আর কিছু ছবি। তন্ময় অবাক হয়ে দেখলো সেই মেয়েটিই নীলা যে গত কাল তার কাছে এসেছিলো। তবে এটা ছিল নীলার অশরীরী আত্মা।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ মোখলেছুর রহমান
গল্পটি শেষের দিকে এসে ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে, যা সামনে যাওয়ার পাথেয়।
মোঃ আক্তারুজ্জামান
ভালো লাগলো। তবে ঘটনার টুকিটাকিগুলি যদি যত্নের হাতে সুবিন্যস্তভাবে, পরিপাটি করে তুলে ধরার চেষ্টা করতেন তবে লেখাটা খুব সুন্দর হয়ে উঠত। এগিয়ে যান। একদিন অনেক অনেক ভালো করবেন বলে বিশ্বাস রাখি।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“জানুয়ারী ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ জানুয়ারী, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।