ভিখারিনির ছেলে

ভ্যালেন্টাইন (ফেব্রুয়ারী ২০১৯)

নাজমুল হুসাইন
  • ১২
দুপুরের পর থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে,ছ্যাচড়া বৃষ্টি যাকে বলে।অন্ধকার হয়ে উঠা আকাশের মেঘলা রঙের মতই জাদবের জীবনে আজ মেঘ নেমে এসেছে,যেখানে আলোর কোন ঠাই নেই,আছে কেবল অমানিশার চৌম্বুকীয় টান আর মেঘের বজ্র শাষণ।বস্তির অলিতে গলিতে শীত,বর্ষা,গরম তাড়িয়ে,নেড়ি কুকুরের মত দ্বারে দ্বারে কুড়িয়ে খেয়ে পরে বেড়ে উঠা এক বাস্তবতার নাম জাদব।পিতা মাতার রুপ সৌন্দর্য ও স্নেহ ভালোবাসার কথা হৃদয়ের ক্যানভাসে আঁকতে গেলেই,কিছু মুখোশ পরা কিম্ভুতকিমাকার দৈত্যের অট্টহাসি ধ্বনিত হয় হৃদয় কর্ণ কুহরে।চোখের সম্মুখে ভেষে আসে ধারালো অস্ত্রের রক্তমাখা উন্মত্ত উল্লাশ।ভেষে ওঠে খুন রাঙা পশমের ঘামে শিক্ত দূর্গন্ধ মাখা মুখোশ মানব। মনে পড়ে রাতের আঁধার ঠেলে দৌড়াতে দৌড়াতে,চির পরিচিত উদ্যান,পরিচিত স্বজন,বন্ধু বান্ধব,প্রিয় লালপুর স্কুল,সব পিছনে ফেলে উড়ন্ত গাঙচিলের মত আপনার আকাশ ছেড়ে,অন্য আকাশে বেঁচে থাকার করুণ আঁকুতির কথা।দিন যায় রাত যায় স্মৃতির এলবাম উদয়-অস্ত হয় ঘড়ির কাটার তালে তালে।সাত বছরের অবুজ শিশুটি সেদিন নাম ঠিকানাহিন এই কোলাহলপূর্ণ শহরে আশ্রয়ের সামান্যতম ঠিকানা খুজে পা্যনি।বুভুক্ষু অবস্থায় কাটাতে কাটাতে কঙ্কাল সার,মৃতপ্রায়,পরিত্যাক্ত পলিথিন ব্যাগের মত স্টেশনে পড়ে থাকা জঞ্জালের সাথেই তার ভাগ্যের চাকা লেপ্টে গিয়েছিল।
অবশেষে জাদবের একটা কুল কিনারা হয়।কমলাপুর বস্তির ভিখারিনি আলেয়ার খুপড়ি ঘরের মশা,মাছি আর ইদুর বন্ধুদের সাথে।মানুষের যখন একাকিত্ব ঘোচাবার কেউ থাকে না,তখন এরাই কখনো কখনো সত্যিকারের বন্ধু হয়ে ওঠে।লোক মুখে রটনা রয়েছে হাজতীরা যখন জেল খানায় অলস সময় কাটাতে কাটাতে ক্লান্ত,শ্রান্ত হয়ে ওঠে,তখন এক থালা গুড় আর একটা ঝাড়ু নিয়ে বসে যায় মাছি তাড়াবার খেলায়।গুড়ের লোভে ছুটে আসা মাছিরা কয়েদীর সময় বেশ কাটিয়ে দিতে সক্ষম হয়।ভিখারিনি আলেয়ার ঘরের সাথে সুনিবিড় এক বন্ধন তৈরি হল তারও।মশা মাছি আর ইঁদুরের পাল ঢের সময় দেয় তাকে।আলেয়াকেও ধীরে ধীরে মা ডাকতে শুরু করেছে সে।সাত আট বছরের ছেলেটার মুখে মা ডাক শোনার পর থেকে আলেয়া যেন নতুন জীবন ফিরে পেল।কারন তারও স্বামী সন্তান,আত্নীয়জন কেউ নেই দুনিয়াতে।কোথা থেকে কিভাবে বস্তির এই খুপড়ি ঘরে থাকার জায়গা হয়েছে সে কথা সে বলতে পারে না।কে তার মা বাবা ওসব সে নিজেও জানে না।চেহারা ছবির এতটাই বেহাল দশা যে আজ পর্যন্ত কেউ তার দিকে ভুলেও নজর দেয় নি।এ জন্য এক দিক দিয়ে আলেয়া নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করে,সে হল এই জামানার একমাত্র সতী নারী।
অতিসত্বর বাস্তবতার করুন পরিনতীর সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে জাদব।সে এখন তার মায়ের সাথে শহরের এগলি ওগোলি ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করে বেড়ায়।সারা দিনের ঘুরা ঘুরির পর ক্লান্ত শ্রান্ত ছেলেটি ঘুমোতে যায়,কোন দিন এক ঘুমে তার রাত পোহায়,আবার কোন দিন সারা রাত ঘুম হয় না।কোন এক অজানা যাতনায় মনটা বিষিয়ে ওঠে,ডুকরে কেঁদে ওঠে সে।আলেয়া যে টের পায় না তা কিন্তু নয়,মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে সেও তার দুখ কষ্টের সংগি হয় কখনো কখনো।এমন করেই শীত,বর্ষা,গরম পেরিয়ে চলতে থাকে মা ছেলের ঘর কান্না।
ইতমধ্যে জাদব ভিক্ষা করা ছেড়ে দিয়েছে,অন্যের দ্বারে হাত পাততে কেমন যেন বিবেকে বাঁধতে শুরু করেছে তার। কারন এখন সে আর আগের সেই ছোট্টটি নেই।তাই মায়ের অনুমতি নিয়ে সে এখন রাস্তা ঘাটে,স্টেশনে বোতল কুড়াতে শুরু করেছে।ভিখারি থেকে নাম কেটে সে এখন টোকাইয়ের খাতায় নাম লিখিয়েছে।
সেদিনো ছিল বর্ষাকালের কোন এক মেঘলা দিন,আজ আর ভিক্ষা করতে যায়নি আলেয়া,তীব্র জ্বরে সারা গা পুড়ে যাচ্ছে তার।জাদব ডাক্তার ডেকে আনতে,সেই সকালেই বের হয়ে গেছে,সন্ধ্যা অবধী ফিরে আসে নি।এদিকে আলেয়ার গায়ের জ্বর দ্বিগুন গতিতে বেড়েই চলল।জাদবের কোন খোঁজ পাওয়া গেল না।
রাত্রি তখন শোয়া ১১টা।জাদব ছিটে ফোটা বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে খুপড়িতে প্রবেশ করলো,সাথে ইমান আলী ডাক্তার।সারা দিন সে অনেক ডাক্তারের কাছে গিয়ে ধর্না ধরেছে,কিন্তু কেউ তার ডাকে সাড়া দিল না।সকলেরই এক দাবি বড় অংকের ফিস চাই,আছে?দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের ঘরে ডাক্তারকে দেবার মত পয়সা যে থাকে না,একথা সকাল থেকে জাদব কোন ডাক্তারকে বুঝাতে সক্ষম হয়নি।অবশেষে ইমান আলী ডাক্তারের চেম্বারে এসে মাথা গুজে বসে ছিল,রুগীর সিরিয়াল শেষ করে তবেই তিনি এসেছেন।একজন হোমিও ডাক্তার যে এত জনপ্রিয় মানুষ হতে পারে,এই ইমান আলী ডাক্তারকে না দেখলে বোঝা দায়। বেচারার মধ্যে অর্থ লালসা যেমন নাই,তেমনি নিতী জ্ঞানে তিনি অটল অবিচল থাকেন সব সময়।বস্তিবাসীর শেষ ভরসার কেবল ওই একটি জায়গা আছে।অসুখে পড়লে,ফিসের অযুহাতে সে কাউকে ফিরিয়ে দেন না।যাই হোক সেবারের মত ইমান আলী ডাক্তারের চিকিৎসায় আল্লাহর অশেষ কৃপায় আলেয়া সুস্থ হয়ে উঠলো।এর পর প্রায়ই জাদব,ইমান আলী ডাক্তারের চেম্বারে যেত।তিনি কিন্তু একদিনের জন্যও বিরক্তি বোধ করেন নি।তাকে দেখলেই ডাক্তার বাবু হাসি মুখে বলে উঠতো,কিরে কি চাই আজ?জাদব মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলতো এমনিই।
-ও তাই বল,তোর মায়ের আবার অসুখ করে নি তো?
-না মশাই।আপনেরে দেখতে মন চাইলো যে।
কিশোর ছেলেটার কৃতজ্ঞতার বহিপ্রকাশ দেখে কখনো কখনো মোটা ফ্রেমের চষমা খুলতে বাধ্য হয় ইমান আলী ডাক্তার।তৃপ্তির জল যে তার চোখ দুটোকে আর মানাতে পারে না!মুদ্দাকথা হল,সত্যিকারের সেবকরা কাঙালের মত অর্থের পিছনে ঘুরে বেড়ায় না।অর্থ ক্ষণস্থায়ী ফানুশ একটা।যে আকাশে হাওয়া আছে সেখানেই সে উড়ে বেড়ায়,তার পর একসময় ধ্বংশ হয়ে যায়,নিজেকে বিলীন করে দিয়ে চির তরে।
বেশ কিছুদিন পরের কথা,জাদব সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে দেখে কুপির আলো জ্বালিয়ে তার মা কি যেন এক অদ্ভুত বস্তু দেখছে।অতি বিষ্ময়ে সে তার মাকে জিজ্ঞেস করলো মা এইডা কি?আলেয়া হাসি মুখে জবাব দিল কালকা থন তুই ইসকুলে যাবি,ডাক্তার সাবে কইছে,তোর এহন লেহাপড়ার হময়।মায়ের কথায় কেমন যেন বিষ্ময়ে অভিভূত হয়ে ওঠে জাদব।মনের মনিকোঠায় আবছা আলোর মত ভেসে আসে লালপুর প্রাইমারি স্কুল।রঙিন মলাটে মোড়া বই।ঢং ঢং ঢং ঘন্টা বাজার আওয়াজ।আনন্দের আতিশায্যে সারা রাত মা-ছেলের ঘুম হয় না।পরদিন ভোরে উঠেই জাদব মায়ের সাথে স্কুলে হাজির।কিন্তু স্কুল তো খোলে না,এক,দুই,তিন করে ঘন্টা পার হতে থাকে,অবশেষে সকাল দশটায় স্কুল খুলল।আলেয়া হাসতে হাসতে বলল বাজান মনে হয়,আগেই আইয়া পরছিলাম।এতক্ষন তো হময় অয় নাই,অহন হইছে।
জাদব আজ স্কুলে ভর্তি হল।নতুন জীবন শুরু হল তার,প্রতিদিন স্কুল শেষে,সোজা চলে যায় টোকাইয়ের কাজে,এর পর সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে আসে।পরদিন আবার স্কুল,স্কুল শেষে পরিত্যাক্ত জিনিস পত্র কুড়ানো,স্টেশন বাজারে বিক্রি করে ফের ঘরে ফেরা।আধুনিক পৃথীবির বৈদ্যুতিক বাল্বের আলো থেকে বঞ্চিত আলেয়ার খুপড়ি ঘর,শুধু সে একা নয়।বিদ্যুত নেই সারাটা বস্তির কারো ঘরে।কেরোসিন তেলের বাতি জ্বালিয়ে রাত জেগে জেগে স্কুলের পড়া তৈরি করে জাদব।ছেলেটার লেখাপড়ার আগ্রহ দেখে,আবেগ আর উচ্ছ্বাসে মায়ের যেন হুস থাকে না।এ বাড়ি ও বাড়ি থেকে চেয়ে চিনতে পুরনো কাপড় ছেলেকে পরতে দেয়,জাদবও সেগুলো পেয়ে বেশ খুশি হয়।ইদানিং আলেয়া জাদবের খুব বেশি তদারকি শুরু করেছে,স্কুলের বড় স্যার বলেছে,ছেলের মাথাটা বেশ ভালো।ওর এখন বেশি বেশি লেখাপড়ার জন্য সময় দেয়া দরকার।কড়া ভাষায় সে জাদবকে জানিয়ে দিয়েছে-অহন থেইক্কা বেবাগ কাম কাইজ বন্দ।হুধু লেহাপড়া করবা।কাম যা করনের আমিই করমু।
দিন গেল,মাস গেল,বছর গেল।একে একে কেটে গেল পনেরটা বছর।আলেয়া এখন আর ভিক্ষা করে না,কমলাপুর বস্তির খুপড়ি ঘর ছেড়েছে মাস খানিক হল।জাদব এখন বড় চাকরি করে।গাড়ি,বাড়ি সব কিছু হয়েছে তার।ইদানিং ছেলের বিয়ে বিয়ে করে মাথা পাগল করে ফেলেছে আলেয়া।যাদবের সেদিকে যেন কোন প্রকার ভ্রুক্ষেপ নেই।সারাদিন শুধু কাজ আর কাজ।অতিতের দূঃসহ যাতনার কথা এখন আর মনে পড়ে না মা ছেলের।যদিও আলিশান বাড়িতে এখনো সে পুরোপুরি নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে নি আলেয়া।এখনো কেন যেন,নিজেকে ভিক্ষুক মনে হয় তার।তবে যাই মনে হোক না কেন,এই ভিক্ষাবৃত্তি করেই ছেলের লেখাপড়া করিয়েছে সে।ইমান আলী ডাক্তারের পরামর্শ যে ঠিক ছিল,আজ সেটা প্রমানীত।
শুক্রবার ছুটির দিন।তাই আজ আর অফিস যেতে হবে না।বারান্দায় বসে খবরের কাগজ পড়ছে জাদব।হঠাৎ করেই সেল ফোনটা বেজে উঠলো।কোন এক পরিচিত কন্ঠ শুনে নিমেষেই কেমন যেন আনমোনা হয়ে ওঠে সে।হঠাৎ উত্তরের দমকা হাওয়া এসে বাড়ি খায় বারান্দার গ্রিলে,একটুকরো মেঘ এসে আকাশটা ছেয়ে নেয় মুহুর্তেই।পট পট করে স্মৃতির এলবাম কথা বলতে শুরু করে,অশ্রু সজল নয়ন ভরে ওঠে লোনাজলে।দরজার পিছনেই আলেয়া দাঁড়িয়ে ছিল,ছেলের সমস্ত কথা সে শুনে নিয়েছে।
ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় কোন একটা মেয়ের সাথে জাদবের ভাব ভালোবাসা ছিল।কিন্তু যেদিন মেয়েটা জানতে পারে জাদব একজন ভিখারিনির ছেলে,চাল চুলা কিছুই নেই তার।সেদিন থেকে মেয়েটা তার জীবন থেকে সরে পড়েছে।বেশ কয়েক বছর পর আজ হঠাৎ সেই মেয়েটা তার বিবাহের দাওয়াত দেবার জন্য ফোন করেছে।অপমানের একটা সীমা পরিসীমা থাকা দরকার।কিন্তু না জাদবের সব চেয়ে বড় অপরাধ সে বস্তির খুপড়ি ঘর থেকে তিলতিল করে বেড়ে উঠা একটা ছোটলোক।আপদমস্তকে দেখতে মানুষ মনে হলেও,ওদের গা থেকে বস্তির মশা,মাছির গন্ধ আসে।বড় লোকের মেয়ে দেখলেই ওদের মনে অর্থের লোভ জেঁকে বসে।সত্যিকার অর্থে ভাব ভালোবাসা ওসব ছোট লোকদের জন্য নয়।আকাশ কুসুম কল্পনা করা ওদের একদমই সাজে না।এতদিন যাবৎ এই কঠিন বাস্তবতা মেনে নিয়েই জাদব নিজেকে সংবরণ করেছিল।কিন্তু আজ আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না।হু হু করে কেঁদে উঠলো মনটা।এ জগতে তাহলে কি টাকাই সব কিছু?তাই যদি হয়ে থাকে,বিত্ত,বৈভব,প্রতিপত্তি,সম্মান,সামাজিক সীকৃতি সব কিছুই তো আজ হাতের মুঠোয়।ইচ্ছা করছে যদি তার সম্মুক্ষে গিয়ে এক বার প্রশ্ন করতে পারতাম এই যে দেখ,আমি এই একজন মানুষ,খুব ভালো করে দেখ,শরীরের কোথায় ভিক্ষাবৃত্তির চিহ্ন রয়েছে?একটু দেখিয়ে দেবে কি?আমার গায়ে কোথায় বস্তির মশা,মাছির গন্ধ আছে?হত দরিদ্র হয়ে বেড়ে উঠার অপর নামই কি তোমার কাছে,তোমাদের কাছে,উচচ বৃত্তের লোকেদের কাছে,ছোটলোকিপনা?কিছু স্বার্থপর,বিকৃত মনসীকতার মানুষের বিলাশি আলাপন,আর বৈচিত্রময় জীবনাচারণ,আমাদের মত সংগ্রামী মানুষের জীবনে,কাল শাপের মত।জীবনের যে প্রান্তে এসে উঁকি দেয়,শুধু ফোসফোস করতে থাকে।ওদের কাছে আমরা ভালোবাসার যোগ্য নই, তবে কি ওদের হাতে ছোঁবল খাবার জন্যই আমাদের জন্ম?
বেশ কিছুদিন পরের কথা,খুলনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দ্বায়িত্ব পেয়ে মাকে নিয়ে জাদব খুলনা চলে গেল।জীবনের আর একটি পুরোনো অধ্যায় ভুলে যাবার জন্য উদ্গ্রীব হৃদয়,সংগ্রাম করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।আলেয়া ছেলের মনের অবস্থা বুঝতে পারে,কিন্তু কিছু বলতে সাহস পায় না।আসলে সে কিছু বলতে চায় না।ভাব খানা এমন যেন,জীবনের রঞ্জিত রুপের বলি পাঠা হয়ে,উৎসর্গের অপেক্ষায় রয়েছে সেও।মা ছেলের সংসারে কেমন যেন নিরবতা এসে হাজির হয়েছে ইদানিং।তবে আশার কথা হল,খুব বেশি দিন তাদের এই নিরবতা ঘুমটা দিয়ে বসে থাকলো না।দিগন্তের মেঘলা আকাশ ছিন্ন ভিন্ন করে,দিবালোকের প্রদিপ্ত সূর্য,সকল লাজ-লজ্জা আর লুকোচুরির খেলা ভংগ করে,পূবের হাসি মাখা রোদ্দুর হয়ে,আয়নার প্রতিচ্ছবির মত উঁকি দিয়েছে।জোড়াবিহীন খেঁচর চিরদিন শুন্যস্থানের ফাঁকা হাওয়া হয়ে,পারিযায়ের ন্যয়,এ প্রান্ত হতে ও প্রান্তে ছুটে চলতে পারে না,প্রকৃতি অনায়াসে মিলনের বার্তা হয়ে সুগন্ধি ছড়ায় পেখম মেলে।
বলছিলাম,জাদবের জীবনে আর একটা শীত অতিসত্বর বসন্তের দ্বার প্রান্তে দাড়িয়ে।হয়তবা রুক্ষতার শৈত্য প্রবাহ,তার জীবন থেকে দূরে,বরফ গলা নদীর দেশে,নাও ভিড়াতে চলেছে অচিরেই।লান্স আওয়ারে মায়ের জরুরী ফোন পেয়ে বাড়িতে ছুটে এলো জাদব।পৃথীবির তাবৎ ফরমায়েশের উর্ধ্বে মায়ের ফরমায়েশ।সুতরাং অফিস থেকে সহসা বাড়িতে ফিরে আসতেই হল।মায়ের হাসি খুশি মাখা মুখচ্ছবি দেখে দুঃশ্চিন্তার ঘোর কেটেছে তার।মনে মনে চিন্তার উদয় হয়েছিল,মায়ের অসুখ করে নি তো?আশার কথা হল,তেমন কিছু নয়,এক সাথে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্যই তার এই জরুরী ফরমায়েশ।
নুরীর মা আগেই টেবিলে খাবার সাজিয়ে রেখেছে,সুতরাং দ্রুত ফ্রেস হয়ে জাদব ডাইনিং রুমে এলো।খাবার টেবিলে বসতে যাবে,এমন সময় হঠাৎ দৃষ্টি পড়লো বারান্দার দিকে।কিঞ্চিত সরে থাকা জানালার পর্দার ফাঁক দিয়ে কোন রমনীর প্রতিচ্ছবি!ছেলের মুখের পানে একবার আড় দৃষ্টে তাকিয়ে,হাসি মুখে মা ডাক দিলেন নীরা?পর্দার আড়াল থেকে জবাব এলো জি আম্মা।
-হুনো,পোলাই আইছে,এক লগে খামু,আহো।
বাধ্য রমনীর মত ধীরে ধীরে ডাইনিং রুমে প্রবেশ করলো নীরা।হঠাৎ করেই কোন চির পরিচিত জন সম্মুখে এসে দাঁড়ালে কিছুটা বিষ্ময়ের উদ্রেক হয় বৈকি।জাদব হতবাগ হয়ে বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল তুমি?
তার চোখ যেন ছনা বড়া।স্বপ্ন ও সত্যের মধ্যে পার্থক্য করতে যেন কষ্ট হচ্ছে।কারন ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় এই মেয়েটির সাথে বহুবার দেখা হয়েছে তার।দুই ক্লাস নিচে পড়তো,উর্মির সাথে।উর্মি হচ্ছে সেই মেয়ে যে কিনা ভালোবাসার মুখে লাথি মেরে রক্তাক্ত করেছে জাদবের প্রেমভরা বুক।নীরা আর উর্মি ছিল দুই বান্ধবী।নীরাও বড়লোকের অতি আদরের দুলালী।সেও উর্মির মত বড় লোক বাপের একমাত্র কন্যা,মার্সিডিজ গাড়িতে চড়ে ক্লাসে আসতো প্রতিদিন।হঠাৎ করে সেই মেয়েটির আগমনের যোগসুত্র স্থাপনে জাদব পুরোপুরি ভাবে অক্ষম।তার প্রশ্নে মিষ্টি করে হেসে দিয়ে চেয়ারটা টেনে বসে পড়লো নীরা।ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে মা আবার বলল-হেই মাইয়া আহে নাই তো কি হইছে,সোনার টুকরা মাইয়া তোর আশায় বইয়া আছে,হেরেই আমি বউ বানামু।নীরার হাসি মাখা ঠোটের ফাঁকে কেমন যেন রহস্য রেখার স্পষ্ট রং।আগা-মাথা কিছুই বুঝতে পারছে না জাদব।মায়ের কথায় বাধা দিয়ে বলল-কিন্তু মা,তুমি ওকে চেনো না।আলেয়া নীরার দিকে তাকিয়ে ফের বলে উঠে,হুনছো পোলার কথা?আমি বুঝি তোমারে চিনি না?খিল খিল করে হাসতে হাসতে মা আবার বলে উঠলো,আমার শিক্ষিত পোলায় কয় কি?না চিনলে অরে বারিতে আনছে ক্যাডা?কিঞ্চিত লজ্জা পেল জাদব।অতঃপর খাবার টেবিলেই নীরার রহস্য উন্মোচিত হল।
ইউনিভার্সিটিতে প্রথম দেখাতেই জাদবের প্রেমে পড়েছিল নীরা।কিন্তু সহসাই সে জানতে পারে উর্মির সাথে জাদবের সম্পর্ক রয়েছে।সুতরাং বাধাপ্রাপ্ত রাস্তায় হাঁটার সিদ্ধান্ত আপাতত সে স্থগীত করে।এর পর বান্ধবীর প্রেমের স্বার্থে দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে অথবা গোপনে সাহায্য করেছে।কখনো নিজের আকাঙ্ক্ষার কথা বলতে গিয়ে উভয়ের মাঝে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি।নিজেকে গোপন করে,চুপি চুপি ভালোবাসার খেলায়,এতটাই মত্ত ছিল যে,কাংখিত স্বপ্ন পুরনের কোন সুজোগ নিজেকে দেয়নি সে।সেই থেকে আজ অব্ধি সংগোপনে পিছু পিছু ছুটে চলেছে নীরা।ঢাকার স্টেশন বস্তির টোকাই থেকে আজকের ম্যাজিস্ট্রেট,জাদবের জীবন চলার সমগ্রপথ তার চেনা জানা।ভিক্ষারী মায়ের সাথেও চেনা জানা প্রথম দিন থেকেই।জাদবের পিছু নিয়ে বস্তির সে খুপড়ি ঘর চিনে এসেছিল সেদিন।এর পর তার অবর্তমানে আলেয়ার সাথে নীরার সাক্ষাত হয়েছে বহুবার।উর্মির সাথে ব্রেকআপ হওয়া সত্বেও সে সম্মুখে আসে নি,শুধু মাত্র জাদবের মনের দুরাবস্থার কথা চিন্তা করে।উর্মি যেদিন অপমানের চূড়ান্ত পর্বের সমাপ্তি করেছিল তার বিয়ের দাওয়াত দিয়ে,সেদিন সে তার সাথেই বসে ছিল।বার বার প্রতিবাদ করতে গিয়েও থেমে গিয়েছিল এই ভেবে যে,অহংকারের কাছে সত্য সব সময় মরিচিকার ন্যয়।উন্মাদ কখনো পুকুর ও নদীর মধ্যে পার্থক্য করতে পারে না।সেদিনের পর থেকে,উর্মির সাথে বন্ধুত্বের সমস্ত সম্পর্কের ইতি টানে নীরা।
জাদব ঢাকা থেকে খুলনা ট্রান্সফার হওয়ার পরদিনই,পিতার সাথে খুলনা চলে এসেছে সেও।ভিখারিনির ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ে দিতে তার কোন আপত্তি নেই।তাই জাদবের সাথে,তিনি কথা বলতে চেয়েছেন অনেকবার,কিন্তু মেয়ের খেয়ালীপনার কাছে তাকেও হার মানতে হয়েছে।অদম্য ধৈর্যশীল,সুরুচি সম্পন্ন কন্যার হাতের বালা,সময় হলেই কেবল তার উজ্জলতা দেখায়।সে ক্ষণ আজ এসে গেছে।সুতরাং মিথ্যা অহংকার আর দাম্ভিকতার দর্প চূর্ন করেই,ভিখারিনির ছেলের সাথে নীরার বিয়ে হল।জাদব নীরার সংসার যাত্রা শুরু হল এবার।এই যাত্রায় বস্তির মশা মাছির কোন দূর্গন্ধের রঙ নেই,না আছে অর্থ লোভ,না আছে বড়লোক ছোট লোকের ভেদাভেদ।
বছর দুয়েক পরের ঘটনা,এক টুকরো মেঘলা আকাশের মত আবার বজ্র বৃষ্টির আগমন।রং নাম্বার থেকে উর্মির ফোন এসেছে।কন্ঠ শুনেই ফোন কেটে দিল জাদব।স্ত্রীর কাছে সব ঘটনা খুলে বলল সে।এত দিন নীরার সাথেও উর্মির জোগাযোগ বন্ধ ছিল।জাদবের কাছে ওর কথা শুনে,কেমন যেন পুরনো বান্ধবীর জন্য মনটা হঠাৎ আনচান করে উঠলো।মনের মধ্যে প্রশ্নের সারি বদ্ধ লাইনের টাইপিং শুরু হল।এতদিন পর আবার কেন?অপমান করেও কি স্বাদ মেটেনি?নাকি সুখের নমুনা দেখাতে,নতুন নষ্টামির কীড়া জন্ম নিয়েছে ওর মাথায়?জাদবের সাথে নীরার বিয়ে হয়েছে,সেটা অবশ্য উর্মির জানা নাই,জানবার কথাও নয়।কারন আমেরিকা প্রবাসী ছেলের সাথে বিয়ে করে,এদেশকে চিরতরে সালাম জানিয়েছে,সালাম জানিয়েছে এদেশের মানুষকেও।যাই হোক সিদ্ধান্ত হল এবার ওকে দেখতে যাবে।কারন মূল্যবান মানবীর পা এবার দেশের মাটিতে পড়েছে।
এবার অবশ্য একা নয়,জাদবকে সাথে করেই নিয়ে যেতে চায় নীরা।প্রিয় বান্ধবীকে জানিয়ে দেয়া দরকার,জাদবের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে,এবং আমরা দুজনে বেশ সুখেই আছি।কিন্তু জাদব কিছুতেই রাজী হতে চাইলো না।অনেক পীড়াপিড়ির কাছে অগত্যা হার মানতে হল শেষে।
পরদিনই নীরা বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে হাজির।কিন্তু বাড়িতে কোন কোলাহল নেই,সারা বাড়িতে কেমন যেন শুনশান নিরাবতা।নিচ তলায় উর্মির বাবা মায়ের সাথে দেখা হল তার।উর্মির কথা জিজ্ঞেস করতেই ওর বাবা বলল ঘরেই আছে,যাওনা তোমাকে দেখলে বেশ খুশি হবে।সিড়ি বেয়ে সোজা উর্মির রুমে গেল নীরা। কিন্তু নিজের চোখে যা দেখলো,সেটা মেনে নিতে কেন যেন মন সাড়া দেয় না।রং বেরঙের অহমীকার পরণে সাদা শাড়ি দেখে আঁতকে ওঠে সে।তাকে দেখার পর কোন আবেগ বা উচ্ছ্বাসের কোন চিহ্ন দেখা গেল না উর্মির মধ্যে।কিরে,কি করে হল এমন?উর্মির মুখ থেকে কোন উত্তর ভেসে এলো না।কিছুক্ষনের মধ্যেই ওর মা এসে সব কিছু পরিষ্কার করে দিল।মেয়ের এই করুন দুঃসময় পিতা-মাতার শুধু নির্বাক উপভোগ করা ছাড়া,আর কিই বা গত্যান্তর থাকতে পারে?বড় সাধ করে বিয়ের পীড়িতে বসেছিল,কিন্তু বিধিবাম।তবে কি জাদবের সাথে বেইমানীর চুড়ান্ত সাজা পেয়ে গেলো আজ?
নেশায় আসক্ত পাত্রের পাত্রস্থ হওয়ার পরিনতী।মাত্রাতিরিক্ত নেশার দরুন প্রবাসেই স্বামীর মৃত্যু হয়েছে কিছু দিন হয়।এর পর সে বাপের বাড়িতে ফিরে এসেছে।নীরা আর কিছু বলতে পারলো না,ধীর পায়ে সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলো।দেশে ফিরেই তার বিয়ের ব্যপারে জানতে পেরেছে উর্মি।তাই স্বামীকে সামনে এনে আর কষ্ট বাড়াতে চায় না সে।
জাদব এতক্ষন পার্কিংলটেই গাড়িতে বসে ছিল।নীরা গাড়িতে উঠে বসলো।গাড়িতে বসতেই চোখ গেল ঝুল বারান্দার দিকে,এক দৃষ্টে তাকিয়ে,উর্মি ড্রাইভিং সিটে বসে থাকা জাদবকে দেখছে।সাদা শাড়ি পরিহিতা পুরনো স্মৃতিকে চিনতে জদবেরও ভুল হল না।তার স্বরে তার মুখ থেকে উচচারিত হল বিধবা!
বিলাশবহুল বাগান বাড়ি মাড়িয়ে,গাড়ি এগিয়ে চলেছে হিসেবের আসল ঠিকানায়।গ্লাসের ফাঁক গলে,বাতাসে ভেসে আসা আর্তনাদ জানান্দিয়ে গেল,মিথ্যা অহমিকার লোনাজলে প্রথমবার অনুতপ্তের সুর ধ্বনিত হচ্ছে।জীবন আকাশে জমে উঠা মেঘ আজ নিজেকে ছেড়ে দিয়ে অঝোর ধারায় বয়ে চলেছে।এ বৃষ্টি জনমধরে বয়ে যাবে পৃথিবীর বুকে।খা্ল,বিল, নদী,সমুদ্র যে তার পিছু নিয়েছে,মেঘের রুপ ধরে।কি হবে বিশাল আকাশ আর হাওয়ার পরোশ দিয়ে?সব কিছুইতো একদিন ঝরে যায়,ভেসে যায় সময়ের উলটো শ্রোতে।এটাই হল মানুষের জীবনচক্র।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Ahad Adnan চমৎকার লেখা
ভালো লাগেনি ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
মুহম্মদ মাসুদ বেশ সুন্দর তো। ভালো লাগলো।
ভালো লাগেনি ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
এশরার লতিফ বড় ক্যানভাসে ভিখারির ছেলে যাদবের কাহিনী। বেশ ভালো লেগেছে। শুভকামনা।
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
রুহুল আমীন রাজু মানসম্মত লেখা ... বেশ লাগল আমার।অনেক শুভ কামনা। আমার পাতায় 'চোখের জলভোজ' গল্পটি পড়ার আমন্ত্রণ রইল।
ভালো লাগেনি ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
নিশ্চয়।আমি এমনিতেই আপনার লেখা পড়ি।
ভালো লাগেনি ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
আহমাদ সা-জিদ (উদাসকবি) ভালো লাগলো.... ভালো থাকুন ভালোবাসায়।
ভালো লাগেনি ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

গল্পটিতে একটা ছেলের নানা মুখি জীবন,উত্থানের ক্রমোন্নতির পাশাপাশি,ভালোবাসার এক সুন্দর গল্প তৈরি হয়েছে।মা না হওয়া সত্বেও আলেয়া যেমন সত্যিকারের মা হয়ে উঠেছে,তেমনি ভালোবাসার প্রবঞ্চনার মধ্যে থেকেও,জাদব তার নিজের আগোচরেই,কারো ভালোবাসার নজরবন্দি ছিল সারাক্ষণ।গল্পটি লেখার ক্ষেত্রে চরিত্রগুলিকে এমন ভাবে সাজাবার চেষ্টা করেছি যেখানে, জাদব হল মুল চরিত্র।কিন্তু কোথাও আলেয়া,কোথাও নীরা,কোথাও উর্মি,কেন্দ্রিয় চরিত্রটিকে শাষণ করে ফ্রন্ট লাইনে দাঁড়িয়ে গেছে,মোট কথা পার্শ চরিত্রগুলি কোন কোন ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রকে ম্লান করে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।সর্বোপরি ভিন্ন আমেজের এক ভালোবাসার গল্প ভ্যালেন্টাইন সংখ্যার জন্য জমা দিলাম।আশাকরি বিচারক মন্ডলী এবং পাঠকবর্গ গল্পটি থেকে,সাহিত্যরস আস্বাদন করবেন।

২৯ সেপ্টেম্বর - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ৩৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪