গল্পটা জুন, ২০০৪ এর.. আমি তখন স্কুলে পড়ি।আমারা নীলফামারী শহরে থাকি আর দেশের বাড়িটা যশোরের একটা ছোট্ট গ্রামে।ভাবছেন গ্রামের বাড়ি যশোর হলেও আমরা কেন নীলফামারী থাকি?আর বলবেন না ওই যে বাবা সরকারী চাকরিজীবী।আমার অবশ্য এখানে থাকতে ভাল লাগেনা।সন্ধ্যা হলেই বাবার ঘ্যান ঘ্যান। বাবু পড়তে বসো।সারাদিন মায়ের বকবক এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবেনা।ভাল লাগার ভিতরে একটাই আছে আমার প্রিয় জানালা ধরে দাঁড়িয়ে রাস্তার লোক দেখা আর..র সুযোগ পেলেই রাস্তার লোকের গায়ে থুথু ফেলা।কিন্তু এটার জন্য মা আমাকে খুব বকে। একদিন তো সারাদিন খাটের পায়ের সাথে দড়ি দিয়ে বেধে রাখছিল।ও আচ্ছা আপনাদের তো আমার পরিচয় ই দেওয়া হয়নি।আমি নয়ন। ক্লাস ফাইভের টপ বয়।আর হ্যা আর একটা খবর কাল আমি দাদু বাড়ি যাচ্ছি। শোন বাবা, দাদু বাড়ি গিয়ে দুষ্টামি করবি না।ঠিক ভাবে খাবি।দাদির কথা শুনবি।সব সময় কোথাও যাবার আগে মায়ের এমন উপদেশ।বাবা আজ আমাকে রেখেই চলে আসবে।বাসে উঠে জানালার পাশে বসলাম।বাসে উঠলে আমার খুব ভাল লাগে গাছগুলো কেমন দৌড়ে চলে যায়।
আমরা যখন দাদু বাড়ি পৌছালাম তখন বিকাল ছুয়ে সন্ধ্যা। দাদিও তাই বাবাকে ফিরতে দিল না।কারণ আকাশে অনেক মেঘ ছিল।যেকোন সময় নাকি ঝড় হতে পারে।রাতে খাবার পরে মেজ চাচার ২ ছেলে আর আমি এক সাথে ঘুমাতে গেলাম।হঠাৎ বাইরে ঝড়ো হাওয়া শুরু হল।চাচাতো ভাই আমাকে বলল আমাদের বাগানের গাছে অনেক আম ধরেছে আম কুড়াতে যাব। আমি বলি এত রাতে আর এমন বাতাসের ভিতর? আমি যাব নারে বাবা রাগ করবে।চাচাতো ভাই বলল তোর ভয় নেয়রে বাবা যাবে আমাদের সাথে।কিছুক্ষণ পর দেখি মেজ চাচা আমাদের ডাকছে।আমরা ৩ জন মেজ চাচার পিছু পিছু হাত ধরে হাটা শুরু করলাম।অনেক বাতাস যেন উড়ে যাব।গাছের নিচে আমে ভরা।আমরা ইচ্ছা মত আম কুড়ানোই ব্যস্ত।মেজ চাচার ছোট ছেলে আমাদের থেকে একটু দূরে চলে গেছে।সেই সময় হঠাৎ একটা বাজ পড়ল।আমরা পড়ি মরি করে বাসার দিকে দৌড় দিলাম।আমরা যখন বাসায় পৌছালাম তখন ব্যাপক ঝড় শুরু।বারান্দায় দাঁড়িয়ে আমরা দেখি ভয়ের চোটে আম গুলো আনতে পারিনি।আর ও একটা জিনিস দেখি আমরা ছোট রে রেখেই চলে এসেছি।আমি আর বড় ভাই দুজন মিলে চাচারে বললাম চাচা বলে তোরা দুজন মিলে ঘুমিয়ে পড়।আমি ঝড় থামলে ওরে আনব।জানিস না ওরে ছাড়া আমার থাকা সম্ভব না।আমি আর বড় ভাই গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।টিনের চালে বৃষ্টির পানির শব্দে ঘুম আসতে দেরি হয়নি। সকালে অনেক কান্নাকাটির শব্দে আমাদের ঘুম ভাংলো।বাইরে এসে দেখি এক খাটিয়ায় দুটো লাশ বাবু আর মেজ চাচার।চাচি পাশে বসে বিলাপ করছে।"মানুষ টা রাতে ভাত খেয়ে ঘুমাতে গেল হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে বলে, রিতা আমার বুকে কেমন জানি ব্যাথা করছে আমাকে ধর।আমি তারে ধরার আগেই মুখ থেকে ফেনা ঊঠল আর তাতেই দেখি সে আর নাই।তার পরই ঝড় শুরু।" বাবুর গায়ে দেখি কাদা মাখা মুখ থুবড়ে নাকি পুকুর পাড়ে পড়ে ছিল লাশটা। আমার পাশে দেখি বড় ভাই দাঁড়িয়ে আছে।আমি ভয়ে ভাইয়ের হাত শক্ত করে ধরি। ঐ দিনের পর আমি একটা হিসাব এখন ও মিলাতে পারি না।চাচা যদি ঝড়ের আগে মারা যায় তবে আমরা কার সাথে গেছিলাম।আর বাবুর লাশ আম গাছ তলায় না থেকে কেন ১ কি. মি. দূরে পুকুর পাড়ে ছিল? হিসাব মিলুক আর না বা মিলুক তারপর থেকে ঝড়ের রাত আমার কাছে ভয় নিয়ে আসে।মনে পড়লে এখন ও শিউরে উঠি।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সুপ্রিয় ঘোষাল
ভাল লাগল ভোটো দিলাম আপনাকে। কিন্তু আর বিশদ ও আরও চরিত্র-চিত্রায়ণে বাড়িয়ে নেওয়া যেত। খুব abrupt শুরু এবং শেষ। একজন adventure- প্রেমী মানুষ ও তাঁর শিশু পুত্রের এই মর্মান্তিক পরিণতি আরও অনেক সংবেদনষীলতার মোড়কে পাঠকের কাছে উপস্থাপন করা যেত। আপনার জন্যে শুভকামনা রইল।
সেলিনা ইসলাম
চমৎকার লাগল। হয়ত ঘটনাটা সত্য এটা মনে রেখেই লেখা হয়েছে বলে গল্পটা ঠিক সেভাবে উপাস্থাপনা করা হয়নি-বলতে চাইছি আরও একটু মজাদার গভীর কাহিনী বিন্যাস! শেষের চমকটাও খুব ভালো ছিল। আরও চমৎকারভাবে গল্পটা তুলে ধরা যেত বলে মনে হচ্ছে! তারপরও অনেক সুন্দর হয়েছে। শুভকামনা নিরন্তর।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
গল্পটি ঝড়ের রাতের।তাই এটি বিষয়ের সাথে সামঞ্জ।
২২ আগষ্ট - ২০১৬
গল্প/কবিতা:
১৪ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।