এদিক থেকে গ্রামের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা দারুণ কষ্টকর। হঠাৎ প্রচণ্ড গরমে চোখের দৃষ্টি ঈষৎ লালচে হয়ে উঠে। খুব করে চোখ বার-দুয়েক করে মর্দন করলে সেটা ক্ষণিকের জন্য সয়ে যায়। ফের আবার সেই লালচে পর্দা।
এই পর্যন্ত আসলেও চলতো। কিন্তু এর পরেই আঘাত হানে মাথার মধ্যে। ঝিমঝিম করে উঠে সেটা হালকা দুলতে থাকা তালগাছের মতো ঝাঁকুনি দেয়। তখন কেন যেন চোখ ফিরিয়ে নিতে হয়।
আমি আর তুমি যেই গ্রামের দিকে এতক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম, সেটার নাম থানিয়া। গ্রামখানা দেখতে ছবির মতো সুন্দর কিনা সেটা জানি না, তবে বিকালের দিকে গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলা করতোয়ার তীরে সারি সারি কাশফুলের দিকে তাকালে কেমন যেন মনে হালকা শীতল একটা অনুভূতি কাজ করে।
সে গ্রামের দিকেই আরেকজন তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ বাদেই সে চোখ মর্দন করতে থাকলো। এরপর ফের আর মাথা তুলে তাকালো না। হঠাৎ কপালের ঘাম হাতের তালুর উল্টোপিঠ দিয়ে মুছে বসে পড়লো আসন গেড়ে সেখানেই।
সেখানকার মাটি তখন শক্ত হয়ে আছে কাঠের মতো। শুধু সেখান কেন? থানিয়ার প্রতি ইঞ্চি ইঞ্চি মাটি শক্ত হয়ে জানান দিচ্ছে অনাগত দূর্ভিক্ষের।
সময়টা গ্রীষ্মকাল।
থানিয়া গ্রামের ঠিক বাইরের দিকে জঙ্গলের মেঠোপথে শুয়ে থাকা এই বিধ্বস্ত পথিক যেন অনাগত ভবিষ্যতের প্রতীক।
দূরে দেখা যায় সারি সারি গাছ। তার মধ্য দিয়ে অধিকার করে বসা বহু ছোট ছোট বসতি।
আর তার পাশে শূণ্য ধানক্ষেত।
বাড়ির উঠানে শীর্ণ ‘মহেশ’রা করূণ তাকিয়ে থাকে দিগন্তের দিকে।
একটা দুইটা মানুষ দেখা যায়। তারা মন্থরগতিতে নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত। সেটা দূর থেকে দেখতে অলস লাগে।
গ্রীষ্মের দাবদাহে প্রায় জ্বলতে থাকা এই গাঁয়েই আমার বেড়ে উঠা। যদিও সেটা সবসময় এরকম ছিল না।
আসলে কখনোই এরকম ছিল না।
বারো বছর আগে আমি জমিরুদ্দিদের পুকুরে সাঁতরে বেড়াতাম সারা দুপুর- যেটা এখন তপ্ত হাঁটুজলে মৃতপ্রায়।
বারোটা বছর! সেটা বড্ড আগের কথা হয়ে গেল, তাই না?
তাহলে বলি শুনো।
এখন থেকে ঠিক চার কি পাঁচ বছর আগের কথাও যদি বলি, তখনো শরাফাতদের ক্ষেত ছিল সোনালী ধানে ভরা।
বাবা আর আমি মিলে ভাগের ধান এনে ভরতাম মটকির পর মটকি। উঠানে বসে চালতার আচার শুকোতে ব্যস্ত মা-ফুফুরাও এদিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে সন্তুষ্টির হাসি হেসে কল্পনার নকশি কাঁথায় আঁকিবুঁকি করতো।
ভাগের ধানের কথা নাহয় পরেই রাখি, সামান্য খুদ-কোরা দিয়েও নিঃস্ব ভিক্ষুকের মোটামুটি খোরাক মিলে যেত।
দূরের সারি সারি গাছে ঢাকা গ্রাম থানিয়া। সেখানে একসময়ের ফসলি জমিগুলোতে কাকতাড়ুয়ারা অলস দাঁড়িয়ে দর দর করে ঘামছে।
আর নিঃস্ব ভিক্ষুক অসহায় হয়ে হাত তুলে কেঁদে উঠে। তার ঠোঁট গলে অস্ফুট আর্তনাদ, আল্লাহ্র গজব নামসে গো বাবা! আল্লাহ্র গজব!!
এরপর চোখ বেয়ে নেমে পড়ে ক্ষুধার্ত কান্না। পথের মধ্যে ধুলোয় বসে আর্তনাদ করতে থাকা ভিক্ষুকের দিকে সবাই তাকায় করুণার দৃষ্টিতে। কেউ কেউ আফসোস করে, হা-হুতাশ করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
ফেলুক! এর বাইরে কারো কিছুই করার নাই।
কারো ঘরেই হয়তো সাহায্য দেবার মতো কিছু নেই। অথবা থাকলেও অনাগত ভবিষ্যৎ সঞ্চয় হিসেবে সেটা রেখে দেয়া আছে গুদামঘরে।
“সত্যই বুঝি আল্লাহ্র গজব নেমে এসেছে। এভাবে চলতে থাকলে খুব শীঘ্রই সবাই না খেয়ে মারা পড়বে”। শিক্ষিত মাতবর চাচা বাসার উঠানে বসে হালকা মুড়ি মুখে দিতে দিতে একদল সাহায্যপ্রার্থী ক্লান্ত চাষীদের হতাশার বাণী শুনায়।
সবচেয়ে বুড়ো চাষীটা বসেছে আসরের একদম শেষ মাথায়। সে তার ৯ বছরের নাতিকে সাথে করে নিয়ে এসেছে। শিশুর শুষ্ক বক্ষে সবকটা হাড় গুণে ফেলা যায়। মুখে গাঢ় করে ময়লা লেগে আছে। চোখগুলো কেমন গাঢ়! তাকিয়ে থাকলেই কেঁদে ফেলতে ইচ্ছা হয়।
সে হঠাৎ দাদুর লুঙ্গিতে টান দিয়ে শুধায়, দাদু! আল্লাহ্ কেডা?
বুড়ো দাদু কিছু বলে না। ফ্যালফ্যাল করে তাকায় নাতির দিকে।
শিশু আবার শুধায়, দাদু! আল্লাহ্ কি খারাপ? গজব দিব কেন দাদু? ও দাদু! কথা কও না কেন?
বুড়োর চোখ বেয়ে জল নামতে থাকে। সে নাতিকে জড়িয়ে ধরে পিঠে হালকা করে হাত বুলায়।
না রে বাবা! আল্লাহ্ খারাপ না রে।
সভা ভেঙে যায় কিছুক্ষণ বাদেই। যে যার যার কাজে চলে যায়।
কাজ!
সবারই কাজ থাকে। যখন কিছু করার থাকে না, তখন ব্যস্ততা থাকে সবচেয়ে বেশি! সবসময় মনে হয় কী যেন একটা করতে হবে। এই করি, এই করছি করে করে আর করাই হয় না। করবে কিভাবে যখন জানেইনা কাজটা কী!
এই ফাঁকিবাজির ফাঁক গলে পালিয়ে যায় সময়।
সময় গড়াতে গড়াতে সকাল গড়িয়ে দুপুর। এরপর দুপুরের উষ্ণতাকে হালকা প্রশমিত করতে হাজিরা দেয় স্নিগ্ধ বিকেল। আর বিকেলে করতোয়ার তীর ঘেষে সোজা দাঁড়িয়ে থাকা বটগাছের নিচ থেকে ভেসে আসে দোতারার টুং টাং! বাদক আমাদের গ্রামের বাউল নানা।
সেদিকে তাকাতে হয় না কারো। আপন মনে কাজ করতে থাকা মানুষগুলো কপালের ঘাম মুছতে যেয়ে হালকা লুফে নেয় মায়াবী সুরকে। আর আমার মতো ভবঘুরেরা বিশাল আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে সুরের দার্শনিকতার খুঁজে।
অভ্যাসটা আমার নতুন নয়। সেই ছোটবেলা থেকেই। তখন বাবা এসে পাশে বসে জিজ্ঞাসা করতো, বাপজান! আসমানে কী খুঁজস?
আমি চোখ কুঁচকে বলতাম, আল্লারে খুঁজি বাপজান! এরপর আঙুল দিয়ে দেখাতাম দূর আকাশকে।
আল্লাহ্ ওইনে থাকে না আব্বা?
আব্বা কোন উত্তর দিতেন না। তিনিও আমার ইশারার দিকে তাকিয়ে থাকতেন আনমনে।
করতোয়ার বুকে দূরে দুই একটা নৌকা দেখা যায়। হয়তো এখান থেকে অন্যখানে পাড়ি জমাচ্ছে কোন স্বপ্নালু অভিযাত্রী। আর নাহয় বাণিজ্য শেষে ফিরে যাচ্ছে কোন বিদেশি বণিক।
আগে আরোও নৌকা দেখা যেত।
করতোয়ার বুকে সাঁতরে বেড়াত নানা নৌকা।
ক্ষণে ক্ষণে ডেকে উঠতো মাঝিরা।
খরস্রোতা নদীর যৌবনা ঢেউ তটে এসে আছড়ে হুঙ্কার দিত সশব্দে। কখনো কখনো তার সাথে মিশে যেত নতুন মেশিনের নৌকার ভট ভট শব্দ।
ডাঙ্গায় দাঁড়িয়ে হাত নাড়তো কতিপয় ‘মায়ের কথা না শোনা’ দুষ্ট বালক।
আর কয়দিন বাদে বাদেই হঠাৎ ঝড়ো হাওয়ায় উন্মাতাল হয়ে যেত বাতাস। সাথে সাথে নেমে আসতো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি।
আমরা সবাই ছুটে যেয়ে আশ্রয় নিতাম বড় বটগাছের নিচে। সেখানে বাউল নানা তার দোতারা থামিয়ে তাকিয়ে থাকতো বৃষ্টির দিকে। তারপর হঠাৎ করে বিজলী চমকে উঠলেই সে লাফিয়ে উঠতো, দেখসো! দেখসো! আল্লায় ছবি তুলতেছে! দেখসো!
সবাই সাদা দাঁত বের করে হাসিমুখে পোজ দিত আকাশ পানে তাকিয়ে। আর আমি তাকিয়ে খুঁজি আলোকচিত্রীকে।
অন্ধকার আকাশ চিড়ে হঠাৎ চিকন বিজলী জেগে উঠে। পরক্ষণেই প্রচন্ড বাজের শব্দে কানে তালা লেগে যায় সবার। ভয়ে সবাই একে অপরকে জড়িয়ে ধরতাম।
আর বাউল নানা খিল খিল করে হাসতে থাকতো আমাদের ভয় দেখে।
এসবই গেল অতীতের কথা। অতীত সবসময়ই সোনালী হয়। কেন যেন সবচেয়ে কষ্টে থাকা মানুষটাও তিক্ত অতীতকে পেছনে ফেলে আসতে পারে না। বার বার ঘাড় ঘুরিয়ে সেটির দিকে মায়াবী চোখে তাকিয়ে কেন যেন দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
অতীতের থানিয়ার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলি আমি। এখনো নিত্য বিকেল হলেই মেঠোপথ ধরে হেঁটে হেঁটে নদীতীরে চলে যাই। সেখানে যেয়ে আকাশ দেখি।
আজও সেদিকেই যাচ্ছি। হঠাৎ দেখি পাড়ার ছোকরা রাখাল চার-পাঁচজন এদিকেই দৌড়ে আসছে। আসছে বললে ঠিক মানাচ্ছে না। দেখে মনে হচ্ছে কার কাছে তাড়া খেয়ে যেন পালাচ্ছে।
তখন কৌতূহলে ওদের দিকে তাকিয়ে কয়েকটা হাঁক দিলাম। ওরা কেউই ফিরে তাকালো না।
সমান গতিতেই ছুটে যেতে লাগলো রাস্তা ধরে। আমি ফের তাকাই বিপরীত দিকে। যেদিক থেকে ওরা ফিরে এসেছে সেদিকটায় ঘন জঙ্গল।
সারি সারি গাছ দাঁড়িয়ে আছে ঠায়। কোন প্রাণের স্পন্দন নেই। একপলক তাকিয়ে আর সাহসে কুলালো না।
না বাবা! আজ আর ওদিকে মাড়িয়ে কোন লাভ নেই।
ফিরে গেলাম বাড়ির দিকে।
গাঁয়ের দিকে সাঁঝের গঞ্জে সব খবর মিলে যায় গরম গরম। সেদিনও সাঁঝের গঞ্জ থেকে বাবা খবর নিয়ে এলেন।
জঙ্গলের ধারেই দেখা মিলেছে এক আগন্তুকের। সারাগায়ে তার কুষ্ঠের ঘাঁ এর ছোপ। রাখালরা সেদিকে গরু-ছাগল নিয়ে নিত্য ঘাস খাওয়াতে যায়। আজকেই তারা আগন্তুককে প্রথম দেখেছে। দেখে আর পায় কে ওদের। যে যেদিকে চোখ যায় সেদিকে পড়ি কি মরি দৌড়।
লোকটা কী আসলেই কুষ্ঠ রোগী বাবা?
বাবারে, কুষ্ঠকে কে না চিনে? এক দেখাতেই যে কেউ বুঝে ফেলে যে লোকটা কুষ্ঠ নিয়ে এসেছে। কোথা থেকে এসেছে কে জানে? আর বাকি কেউ এসেছে নাকি ওর সাথে, সেটাও শঙ্কার বিষয়।
সেদিন মা ফুফুরা সবাই নামাজ শেষে তজবি নিয়ে বসে। গজব আসলে সব দিক দিয়েই আসে। এবার আল্লাহ্ এ কোন বিপদের নিশান দিলেন সেটা কেউই জানে না!
আমি বিছানায় শুয়ে ছিলাম কাঁথামুড়ি দিয়ে। হঠাৎ অজানা আতংকে উঠে বসলাম। আলমারি থেকে আসামী তজবিটা নিয়ে বসে পড়লাম মায়ের পাশে।
তুমি যেই হও আল্লাহ্, রক্ষা করো আমায়!
পরের ভোরের সূর্যের আলো দেখার আগেই গ্রামজুড়ে রটে যায় এই কথা। এদিকে ওদিকে হঠাৎ আনন্দের সাথে গল্পবাজেরা ভিড় জমায়।
হঠাৎ করে তারকা বনে যাওয়া রাখালরা এই ঘর থেকে সেই ঘরে যেয়ে কাহিনী বৃত্তান্ত শুনিয়ে আসে।
মন্দিরে বেজে উঠে শাঁখ-পুজোর ডাকে মুখরিত হয়ে উঠে হিন্দুপাড়া। ওরাও নিশ্চিত ভগবান নারাজ!
দেখতে দেখতে আরতি-প্রাসাদ-ত্রিলকে পবিত্র হয়ে উঠে ওরা।
মসজিদে সেদিন ছিল জুম্মাবার। নামাজের অনেক আগেই মাতবর আর বড় হুজুর এই ব্যাপারে সলা-পরামর্শ করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এরপর খুতবায় হুজুরের অগ্নিঝরা বক্তব্যে গ্রামে হঠাৎ সবার মাঝে অসীম তাকত জন্মায়। সবাই খুঁজে পাই হারানো সাহস। তারা কোনভাবেই আল্লাহ্র এই অভিশাপকে গ্রামে ঢুকতে দেবে না। মোনাজাতে করুণভাবে কেঁদে উঠে সবাই।
আমার গাল বেয়ে টপটপ করে গড়িয়ে পড়ে নোনতা জল।
মোনজাত শেষে চোখ মুছে উঠে উল্টো ঘুরে দাঁড়িয়ে দেখি আল্লাহ-খোদার নাম না নেয়া অনেক চেনা মুখই এসে ভিড়েছে মসজিদের পেছনের সারিতে।
দেখতে দেখতে ব্যাপারটা দুইদিন খুব আতংকে রাখলো অধার্মিকদের। আশেপাশের গ্রামে ব্যবসা করতে যাওয়া মানুষগুলোর পরিবারে নেমে আসে অস্বস্তি আর দুশ্চিন্তা। কোন গ্রাম থেকে উঠে এসেছে এই অভিশাপ আল্লাহ্ জানেন।
অনেক পরিবারই কেন যেন হঠাৎ শিয়রে উঠে ভয়ে। যদি এই রোগী স্বয়ং তাদের ঘর না ফেরা মানুষটাই হন? ঘরের দরজায় কড়া নাড়লেই এজন্য অনেকে প্রমাদ গুণে।
এই বুঝি দুয়ার খুলেই দেখবে হাসেমের বাপ ফিরে এসেছে সারা গায়ে কুষ্ঠ নিয়ে!
এমন শত শত হাসেমের বাপ এর পরিবার ভীতসন্ত্রস্ত দিন কাটায়। একমাত্র ভরসা ওই সাত আসমানের উপরে দন্ডায়মান আল্লাহ্। অনেকেই হুজুর ডেকে মিলাদ পড়াবে বলে ঠিক করে। ঘরটা বান্ধানো দরকার।
হঠাৎ করেই অনেককিছুই বদলে যেতে থাকে। মসজিদের বৃষ্টির নামাজের বদলে মানুষ কুষ্ঠ অভিশাপের ভয়ে কেঁদে কেটে বুক ভিজায়।
দেখতে দেখতে সবাই অঘোষিত সিদ্ধান্তে উপনিত হলো এতদিনের খরার পেছনেও এই অভিশাপেরই হাত। ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’ অনেকটা সেরকম হয়ে গেল।
অতএব এই অভিশাপকে যত দ্রুত সম্ভব নিপাত করা চাই।
থানিয়ার মসজিদের বড় হুজুর আসগর আলী প্রত্যহ সকালে দাঁত মর্দন করে গ্রামের পথে পথে হেঁটে প্রাতঃভ্রমণ সারেন। কিন্তু গতকাল তিনি কুষ্ঠরোগীর ভয়ে সেদিকে রাস্তায় বের হননি। তিনি কখনো কুষ্ঠরোগ দেখেন নি এমন না। তার দাদির এক দুসম্পর্কের আত্মীয় একবার এই রোগে মারা যান। তিনি ছোট ছিলেন বলে চোখে দেখে এতো কিছু না বুঝলেও দাদির মুখে সবসময় শুনেছেন তার করুণ পরিণতির কথা।
বাড়িঘর পরিবার পরিত্যাজ্য হয়ে অসহায়ের মতো পথে ঘাটে ঘুরে শেষমেশ এক সকালে তাকে মৃত পাওয়া যায় দুই গ্রাম পরে নির্জন খালপাড়ে।
তার বাইরে বের না হওয়ার পেছনে আসল কথা মাতবর সাহেব তাকে নিষেধ করেছেন।
কয়েকদিন সকালের হাঁটাহাঁটি না করাই মঙ্গল, কী বলেন হুজুর? মাতবর সাহেব চিন্তিত মুখে তাকায় তার দিকে। আর তিনি ঘাড় কাঁত করে সাঁয় দেন, জ্বী আচ্ছা।
গতরাত্রে তিনি হঠাৎ স্বপ্নে দেখতে পান তার দাদিকে। তিনি সেই শিশু আসগর দাদির কোলে বসে শুনছেন পরিবারের গল্প। সবই ঠিক চলছিল। তিনিও আনন্দ পাচ্ছিলেন এমন স্বপ্ন দেখতে পেয়ে। কিন্তু হঠাৎ তার দাদি তাকে সেই আত্মীয়ের কাহিনী শুনাতে শুরু করে।
তার স্বপ্নের মধ্যেই হঠাৎ সাজানো বাড়িঘর বদলে যায় খোলামাঠে। সেখানে শিশু আসগর দাঁড়িয়ে আছে হাতে তার ছোটবেলার প্রিয় খেলনা নারকেলের চরকা হাতে।
সেটা সামান্য বাতাসের আঘাতে খুব আস্তে আস্তে ঘুরছে। মাঠে কোন মানুষজন নেই। শিশু মানুষটার মুখ প্রথমদিকে খুব স্বাভাবিক ছিল।
আস্তে আস্তে সে আশেপাশের নিশব্দতার স্পর্শে ভয় পেতে থাকে। দেখতে দেখতে হাসিখুশি শিশু কান্না জুড়ে দেয়। আর তখনি সে দেখতে পায় দূরে তার দাদি বসে বসে তার মতোই দেখতে একজনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন আর গল্প করছেন।
ভয় পাওয়া আসগর আলী তখন দাদি! দাদি! বলে আর্তনাদ করে ছুটে যেতে থাকে সেদিকে। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ সে বুঝতে পারলো তাকে কেউ তাড়া করছে।
শিশু আসগর আর সাহস পেল না পিছনে তাকানোর। কিন্তু তিনি ঠিকই বুঝতে পারলেন তাকে তাড়া করছে দাদির কুষ্ঠ রোগী আত্মীয়। তিনি খুব জোরে জোরে দৌড়াতে লাগলেন। কিন্তু তিনি পারছেন না।
তার দাদিও তার কথা শুনছেন না। তিনি দিব্যি আগের মতোই হেসে গল্প করছেন কোলের শিশুটির সাথে।
তিনি এই অবস্থায় স্বপ্নেই বুঝতে পারলেন তিনি ঘামাচ্ছেন। হঠাৎ তার ঘুম ভেঙে যায়। ধরফর করে তিনি জেগে উঠেন।
হুজুর একা মানুষ। গত বছর তার স্ত্রী ইন্তেকাল করেছেন। এরপর তিনি আর বিয়ে করেন নি। তাই হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে তার কেমন যেন একা একা লাগছে।
হুজুর হাত দিয়ে তার কপাল আর গলার ঘাম মুছে ফেললেন। প্রচন্ড পানির পিপাসা পেয়েছে তার। অথচ ঘরের পানির কলসি নেড়েচেড়েও একফোঁটা পানি মিলল না।
অগত্যা তিনি ছোট কলসখানা নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে কলতলার দিকে রওয়ানা দিলেন। হঠাৎ পথের মধ্যে তিনি থেমে গেলেন। তার মুখ ভয়ে সাদা হয়ে গেল। তিনি কলস হাতে নিয়েই দ্রুত পিছনের দিকে ছুটে চলে ঘরে ঢুকে গেলেন।
এরপর সশব্দে ঘরের খিল দিলেন। তার ভয় পাবার কারণ কোন ভূত-প্রেত নয়। তিনি সেই কুষ্ঠরোগীকেও বাসার সামনের রাস্তায় আবিষ্কার করেননি। তার ভয়ের কারণ স্বপ্ন। তার হঠাৎ মনে পড়েছে একটু আগে দেখা স্বপ্নের কথা। স্বপ্নের ভয়াবহতার আবেশ হঠাৎ তাকে ঘিরে ধরলো।
তিনি ঠিক করলেন সকালে উঠেই কুষ্ঠরোগীকে খুঁজে বের করবেন। আর যাই হোক, বিধাতার কোন বিধানেই মানুষকে অভিশাপ হিসেবে দেয়া নাই। তিনি তার ভুল বুঝতে পারলেন। অজানা অচেনা কুষ্ঠরোগীটি যেন তার পরীক্ষার জন্যেই হাজার গ্রাম ফেলে এই থানিয়াতেই হাজির হয়েছে। তিনি মনে মনে ঠিক করলেন মাতবর সাহেবের কাছে ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলবেন। তবে পরেই বুঝতে পারলেন সেতা সম্ভব নয়। আর তার হাতে এতো সময়ও নেই। যা খুশি হোক, তবুও মানুষটাকে একা অবহেলায় মরতে দিবেন না তিনি।
গা ছম ছম করা আঁধার নিশব্দতা হঠাৎ করেই আসগর আলীর কান্নায় ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।
এরপর আজ সকালে উঠেই তিনি ফজর নামাজ পড়ে বাইরে বের হয়ে গেলেন বড় চাদরখানা গায়ে জড়িয়ে।
বেশিদূর যেতে হয়নি তাকে। তালতলার নিচেই গরু নিয়ে এগুতে থাকা সেই ‘তারকা’ রাখাল দলকে পেয়ে গেলেন তিনি।
অনেকদূর থেকে থানিয়াকে দেখতে খুব ছোটগ্রাম মনে হয়। মনে হয় খেলাচ্ছলে কোন বালক হয়তো কাদামাটি দিয়ে গড়ে তুলেছে এই অসামান্য ভাস্কর্যকে।
করতোয়ার বুকে দূরের নৌকা থেকেই গ্রামটা অনেক ছোট লাগে, না জানি আসমানের উপর থেকে আল্লাহ্র কাছে সেটা কতো ক্ষুদ্র! তিনি কী তার এই বিশাল সাম্রাজ্য ফেলে এই ক্ষুদ্র গায়ের কান্নায় নজর বুলান?
বিকালবেলা বসে আছি নদীতীরে। এখন আর আগের টুং টাং নেই। বাউল নানা সেই কুষ্ঠ হাঙ্গামার পর থেকেই বিকালের দোতারা পর্বের বিরতি টেনেছেন।
ঘটনার পরে আজ চারদিন পার হয়ে গেছে। সেই অভিশাপ এখন রূপ নিয়েছে ত্রাসে।
আকাশের দিকে তাকিয়ে এখন আর আল্লাহ্র বাসা খুঁজি না। বড় হয়ে যাওয়ার এই একটা সুবিধা। ছোটবেলার বড় বড় পাগলামিগুলো থেকে রেহাই মিলে।
সন্ধ্যার সূর্যটা করতোয়ার বুকে ডুব দিচ্ছে। সেদিকে তাকিয়ে থাকতে একটা অন্যরকম ভালো লাগে। বাউল নানা আজকে থাকলে এখনি হয়তো দুইহাত জোড় করে প্রণাম করতো সূর্যের দিকে।
তার কাছে এই সূর্যটাও আল্লাহ্!
আনমনে বসে থাকতে থাকতে হঠাৎ কানে ভেসে আসলো সুমধুর আজান। চমকে উঠলাম আমি। এই আজানতো আসগর হুজুরের কন্ঠের আজান নয়। পরক্ষণেই শান্ত হয়ে বসি। মনে পড়েছে আসগর হুজুরকে আর রাখা হবে না। তার বদলে খুব চিকন কন্ঠের একজন তরুণ মুয়াজ্জিনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
আজ সকালেই তাকে পাশের গ্রাম থেকে ভ্যানে করে নিয়ে আনলাম আমি আর কয়েকজন বন্ধু।
অভিশপ্ত আসগর হুজুরের কন্ঠে আজান শুনে কী আর নামাজ হবে? নাহ! আল্লাহ্র গজব নামবে!
গতপরশু হঠাৎ সবাইকে অবাক করে দিয়ে সবার সামনে দিয়েই আসগর হুজুর আল্লাহ্র গজবকে বুকে জড়িয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তার হুজুরাখানার দিকে।
হুজুরের চোখে কোন লজ্জা নাই। শুধু চাপা একটা ভয়; কিন্তু ভয় ছাপিয়ে চোখ জুড়ে একপশলা স্বস্তি।
আমি তখন রাস্তার পাশেই বসে বসে আমাদের ছাগলটাকে খাওয়াচ্ছিলাম। হঠাৎ বাবার উচ্চস্বরে নাউজুবিল্লাহ চিৎকার শুনে পিছনে ফিরে তাকাই।
ঠিক তখনই চোখের সামনে দেখি এই অপরাধ। ছি! ধিক!
হুজুর হয়ে অভিশাপকে আগলে রাখা? এতো সস্তায় কী আর খরা নামে?
আক্রোশে ফেটে পড়ি আমি ভিতরে ভিতরে। এর একটা বিহিত না করলে আল্লাহ্ সহ্য করবেন না। কিন্তু একা একা তো আমি কিছু করতে পারি না। আমার ঠিক চোখের সামনে দিয়ে পার হয়ে যাচ্ছেন হুজুর এবং অভিশপ্ত সে রোগী। তাকে চাদর দিয়ে ঢেকে নিয়ে যাচ্ছেন হুজুর।
মা তাড়াতাড়ি আল্লাহ্র নাম নিয়ে আমাকে প্রায় টেনে বাড়ির ভিতরে ঢুকিয়ে দরজায় খিল আটকে দিলেন। বাবা দ্রুত জানালা বন্ধ করে ফেললেন।
ফুফু তখনই তজবি নিয়ে বসে পড়েছেন। আল্লাহকে ডাকছে সবাই।
আল্লাহ্! কোথায় তুমি? আমাদের রক্ষা করো। এই অন্যায় এর ক্ষমা আছে কিনা সেটা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে গেলাম আমি।
সেদিন তেমন কিছুই জানতে পারিনি। এমনকি সাঁঝের গঞ্জ থেকেও তেমন কিছু জানতে পারেননি বাবা। কিন্তু পরদিন ঠিকই অনেক কথাই সত্য-মিথ্যা হয়ে ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে।
হুজুর এখন মসজিদের উত্তর দিকের জঙ্গুলা-পোড়া বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। তিনি হুজুরাখানা থেকে আলাদা করে খাবার নিয়ে বেরিয়ে যান সেদিকে।
অনেকের মতে হুজুরকে হুজুরাখানার ধারে কাছেও আসতে দেয়নি এলাকার দামাল ছেলেরা। দূর থেকেই ইট-পাটকেল ছুঁড়ে ক্ষান্ত করেছে তাকে।
অনেকের মতে হুজুর হাজার চেষ্টা করেও কোনো এক অলৌকিক ক্ষমতার প্রতিরোধে দরজা দিয়ে ঢুকতে পারেন নি; অগত্যা বাধ্য হয়ে আশ্রয় নেন পোড়াবাড়িতে ইত্যাদি ইত্যাদি!
আমি বসে বসে শুনি এসব কথা। আর মনে মনে বলি সুবহানআল্লাহ। এরপর খোলা জানালা দিয়ে বাইরের আকাশে তাকাই দূর আল্লাহ্র বাড়ির পানে।
বাবা তখন ওঝা ডাকতে বেড়িয়ে গেছেন। বাড়িটাকে বান্ধাতে হবে অভিশাপের আছর থেকে।
নতুন হুজুর প্রথম দিনে এসেই জোর গলায় ওয়াজ করে আসগর হুজুরের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে বললেন। এলাকার সকলেই ফের মাত্র ৫ দিনের ব্যবধানেই আরো একবার আরেক হুজুরের পিছনে দাঁড়িয়ে নতুন করে সাহস ভরে নিচ্ছে বুকে।
ফের সেই মোনাজাত। ফের সেই ক্রন্দন। ক্ষমা চায় সবাই।
এতোদিন যাবৎ আসগর হুজুরের পেছনে পড়া সকল নামাজের কাফফারা আদায় করবে কিনা সেই চিন্তায় অনেকেরই কপালে মোটা ভাঁজ দেখা গেল।
তখন হিন্দু পাড়াতে ফের পূজা বসে। তাদের পুরোতরা আসগরের মতো ভ্রষ্ট হতে চায় না। মা যদি কৃপা করেন।
মোনাজাত শেষে মসজিদের বাইরে সবাই সমবেত হয়। মাতবর সাহেব সবার উদ্দেশ্যে জানান দেন, শক্ত ইমানদারদের প্রধান দায়িত্ব অন্যায় বল দিয়ে প্রতিবাদ করা। এবার তারা বল দিয়েই প্রতিহত করবে এই পাপিষ্ঠকে।
সাথে সাথে তুমুল সাড়া পাওয়া গেল গ্রামের আবাল-বৃদ্ধ বণিতার কাছ থেকে। তারা যার যা কিছু আছে সেটা নিয়েই জমায়েতে যোগ দেয়।
গ্রামের জোয়ানদের বড় একটা দল নয়া হুজুরের পিছু পিছু এগিয়ে যাচ্ছে পোড়াবাড়ির দিকে।
দূর থেকে দেখতে দৃশ্যটা আরো ভয়ংকর লাগছে। রাস্তার ধারে একটা হাড্ডিসার কুকুর শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিল। হঠাৎ মানুষের ঢল দেখে সে একবার ঘেউ করে উঠে। এরপর উল্টো দিকে দৌড়ে পালায়।
আমিও তাদের মাঝে আছি। আমার হাতে একটা শক্ত বাঁশ। হাতের কাছে কিছু পাচ্ছিলাম না। ঠিক তখন বাবা দিলেন হাতে। এরপর আয়াতুল কুরসি পড়ে জোরে বুকের মধ্যে ফুঁ দিয়ে দেন।
আর মাত্র কিছুক্ষণ। এরপরই আমরা দূরে করে দিব এই অভিশাপকে। আমি আকাশপানে ফের তাকাই। কল্পনার ছবিতে তখন আকাশটা মেঘে ঢেকে গেছে। অভিশাপ মোচনের সাথে সাথে আকাশের জ্বলন্ত সূর্যটাও তাকে লুকিয়ে ফেলবে দুর্নিবার মেঘের আড়ালে। মাটির সোঁদা গন্ধটাও যেন নাকে আসছে। এক পশলা বৃষ্টিতে ফের ভিজবো সবে মিলে।
দেখতে দেখতে আমরা পোড়াবাড়িতে এসে পড়লাম। প্রথম দিকের কয়েকজন কয়েকবার হুজুরকে হাঁক দিল জোরেশোরে।
ভিতর থেকে কোন সাড়া পাওয়া গেল না। এরপর আরো দুই একবার চেষ্টা করার পরেও ফলাফল অভিন্ন। তখনই গুঞ্জন উঠলো দরজাটা ভেঙে ফেলো না কেন?
আমার আর তাড়া সইছে না। আমি হঠাৎ করেই দলছুট হয়ে বের হয়ে গেলাম। একেবারে সামনের সারিতে যেয়ে এক লাথি মেরে ভেঙে ফেললাম বহু বছর ধরে ক্ষয়ে পড়া পুরানো দরজাখানা।
তারপরই ভিতরের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম।
সেখানে কেউই নেই। না আসগর আলী, না তার সেই অভিশাপ!
তার বদলে সেখানে পুরো বাড়িটা জুড়ে চমৎকার আকাশী রঙের অদ্ভুত ফুলে ফুলেল হয়ে আছে। আমি সদর দরজা ধরে বসে পড়লাম বিস্ময়ে। আমার পিছু পিছু সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো ভিতরের ফুলগুলোর দিকে। জনতা স্তব্ধ। পিনপতন নীরবতা।
এমন ফুল আমি কখনো দেখিনি। শুধু আমি কেন? কেউই দেখেনি।
বুড়োমতন মুরুব্বিরাও চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ। এরপর এদিকে ওদিকে মাথা নাড়ান।
নাহ! হাজার দেশ ঘুরেছে তারা, অনেক ফুলই দেখেছে, কিন্তু এমন ফুল তারা কোথাও দেখেননি। পার্থিব কোন বাগানের ফুল নয় এগুলো; বরং এরা ঐশ্বরিক। হ্যাঁ, ঐশ্বরিক! ঈশ্বরের অন্য জগৎ থেকে যেন এটা কোন আশীর্বাদ।
দূরের নদীতে কিছু পাল তোলা নৌকা যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
তার পাশেই সুন্দর গ্রাম থানিয়া। যাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে ঘন বন।
নদীর তীরের কাশফুলগুলো ঝরে যাচ্ছে সব। এখনো কিছু আছে অবশ্য। একটা, দুইটা, দশটা।
শক্ত মাটি।
ফসলহীন জমিতে দুর্ভিক্ষের হাহাকার।
সময়টা গ্রীষ্মকাল। খরা চলছে।
ঠিক এমন সময় আকাশ কালো হতে থাকলো। মাটিতে প্রায় ভুলে যাওয়া সোঁদা গন্ধটা ফের জেগে উঠেছে।
আমি তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে। আমার চোখে বিস্ময়ভাব কেটে গেছে। সেখানে ভর করছে গ্লানি। আল্লাহকে চিনতে না পারার হতাশায় আমি বিধ্বস্ত।
২৭ মে - ২০১৬
গল্প/কবিতা:
১২ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪