শ্বাসকষ্ট

কামনা (আগষ্ট ২০১৭)

আহা রুবন
  • ১২
  • ৩২
‘হ্যাঁ হ্যাঁ আরও জোরে, জোরে শ্বাস নিন... আরে বাবা পেট ফুলাচ্ছেন কেন? বুক, বুক ফোলান—তারপর ছাড়ুন।’
‘ডাক্তার সাহেব, আমার পেটে অনেক গ্যাস...’

জিহ্বা, নাক, গলা একে একে সব খুঁটিয়ে দেখতে লাগলেন। কিন্তু কোনও কিছুই অস্বাভাবিক দেখছেন না।
ডাক্তার সাহেব চিন্তিত হয়ে পড়লেন ‘কোনও সমস্যাই তো দেখছি না?’ শুঁটকি গহেরের দিকে তাকালেন ডাক্তার।
‘তাইলে বড় ডাক্তারের ঠিকানা দিয়া দেন।’
‘দরকার হলে দেব। এরপর যখন শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তখনই চলে আসবেন।’
‘ডাক্তার সাহেব আজকে বাড়ি গেলে শ্বাস কষ্ট শুরু হবে।’
ডাক্তারের ভ্রু কুঁচকে গেল। ‘সে কি! আপনি আগে থেকেই জানেন, কবে আপনার রোগ বাড়বে?!’
‘বুঝতে পারি। যেদিন কামাই কম হয়। আজ তো দোকান বন্ধ করে আইছি...’
‘একটু বুঝিয়ে বলুন? কী করেন আপনি?’
‘মহল্লার মোড়ে ছোট একটা দোকান চালাই—শুঁটকি মাছ বেচি। সবদিন ভাল বিক্রি হয় না। যেদিন কম লাভ থাকে, বাড়িতে বউ গালপারে। জামালের, আজাদের সাথে তুলনা করে বলে—“ওরা বেটা ছেলে ওগো মুত খাও গিয়া।” তখন আমার শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে—মনে হয় মারা যাব...’

‘হ্যাঁ এই ট্যাবলেট কয়টা খেয়ে একমাস পরে দেখা করবেন।’
‘ভাল হব তো?’
‘দেখা যাক, আশা করি সুফল পাবেন।’
‘ডাক্তার সাহেব আমার স্ত্রীর গালাগালি বন্ধ করার কি কোনও উপায় নাই? না, মানে এমন কোন ওষুধ দিলেন যে, কথা কইতে আলসেমি লাগবে। বা ধরেন যে, আলাজিহ্বাটা অবশ হয়ে গেল... তাইলে আর আমার ওষুধ লাগত না। একদিন একটু প্রতিবাদ করলাম—সে দা দিয়ে পালানের মরিচ গাছ, লাউ গাছ, পেঁপে কিছুই রাখল না। শেষে এসে চুলা কোপায়া ভাঙ্গল।’
‘পরে চুলোটা কে তৈরি করল?’
‘আমার বউ-ই... আমি চুলা বানানো দেখে কইলাম “কষ্ট তো তুমিই করলা, কী লাভ...” আর অমনি কাজ থামায়া কটমট কইরা আমারে দেখল। তারপর এক লাথি দিয়া ভাইঙ্গা কোন বাড়িতে চইলা গেল।’

রোগীর সমাধান কিছুটা দিলেও রোগের সমাধান দিতে পারলেন না। রোগীর দোকান বন্ধ তাই কপালে কী আছে তার, সেটা মনে করে, ভিজিট ফী নিলেন না। ভাবতে থাকলেন—অনেক স্বপ্ন চোখে নিয়ে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলেন। যতদিন ভাল কোথাও জয়েন না করছেন, এবং জয়েন করেও মাঝে মাঝে নিজের গ্রামে এসে অল্প পয়সায় গরিবের চিকিৎসা দেবেন। অনেকের চিকিৎসা, সেবা, দিয়ে নিজেকে অনেক বড় আর তৃপ্ত মনে হত। আজ যেন কেমন লাগছে—এসবের সমাধান কী। কোন ওষুধ দেব? মনে হয় শিক্ষক হলে ভাল হত। ছেলেদের পড়িয়ে বিকেলে গ্রামের মানুষদের জীবন সম্পর্কে সচেতন করতে পারতাম। এরা সংসার শুরু করে অথচ কীভাবে জীবনটা সুন্দর করা যায় কিছুই জানে না। এই পরিবেশ রেখে দিয়ে কীভাবে সুন্দর দেশ আশা করি! তার আগে দরকার সুন্দর মানুষ—হ্যাঁ সুন্দর মানুষ! সংসার শুরুর আগে সবার প্রস্তুত হওয়া দরকার, সাংসারিক জ্ঞান দরকার। অশিক্ষা-কুশিক্ষা দূর করতে পারলে ভবিষ্যতে যারা আসবে, তারা উন্নততর হয়ে আসবে। সব কি শেষ হয়ে গিয়েছে? আমি কি একটা স্কুলে সপ্তাহে একদিন বিকেলে সবাইকে জড়ো করে এমন সমস্যার পরামর্শ দেয়ার উদ্যোগ নিতে পারি? মেয়েটিকে ডেকে কি বোঝানো যায়—সবার আয়-রোজগার কখনও সমান হয় না। সে যদি না শোনে? সেই সম্ভাবনাই বেশি, হয়ত অপমান করবে। ভেতরে ভেতরে দারুণ উত্তেজনা অনুভব করতে লাগলেন। কেমন যেন লাগছে—কী এর সমাধান? কী কী... রুমে পায়চারী করতে লাগলেন।

‘বড় ভাই জ্বরের একটা রোগী এসেছে, নিয়ে আসব?’
ধপ করে চেয়ারে বসে পড়লেন ডাক্তার।
‘ফ্যান জোরে চালিয়ে দাও, আরও জোরে—জানালা খুলে দাও, পর্দাও... আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে...’
ছেলেটা তাই তাই করল।

কিছু সময় পর ডাক্তার কপাল মুছে এক গ্লাস পানি খেলেন। একটু ভাল বোধ করলেন। ছেলেটা হাসতে হাসতে বেরিয়ে এল ডাক্তারের রুম হতে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
দেয়াল ঘড়ি শুরু হতে হতেই শেষ হয়ে গেল, কিন্তু খুবই ভাল লাগল। রইল শুভ কামনা আর ভোট সেই সাথে আমার পাতায় আমন্ত্রন।
কুদুলে নারী কী আপনার খুব অচেনা? বেশি কিছু বলা বিপদজনক! আমাদের দেশের রাজনীতির ছায়া আছে
ভালো লাগেনি ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
Bokul শেষ হয়ে হইলো না শেষ কিন্তু আপনার বেলায় এইটা এমন কেন হইলো। শুরু হতেই শেষ হয়ে গেল। ভোট সহ শুভকামনা রইলো।
আপনাদের অনুপ্ররণা নতুন করে গল্পটি লিখতে তাড়িত করছে। ধন্যবাদ বকুল ভাই।
মোঃ মোখলেছুর রহমান গল্প পড়তে পড়তে দেখি কখন যেন শেষ হয়ে গেছে,তারপর আনুমানিক কিছুক্ষন পড়লাম,ভোট ও শুভকামনা রইল।
"তারপর আনুমানিক কিছুক্ষন পড়লাম" এই কথাগুলো খুব ভাল লাগল। ভাল থাকবেন।
ফাহমিদা বারী রুবন ভাই, গল্প শুরু না হতেই শেষ কেন? পুরোটা আসেনি নাকি?
আসলে গল্পটা এভাবেই লিখেছি। এর সঙ্গে নিজের আবেগ জড়িয়ে আছে তাই গল্প হিসেবে হয়ত পরিপূর্ণতা পায়নি।
সেলিনা ইসলাম N/A চমৎকার থিম! ডাক্তারের ইচ্ছেটা কিন্তু অনেক ভালো ছিল। এই ইচ্ছেকে বাস্তবায়িত করে সুফল কুফল দুদিক তুলে ধরে গল্পটা আগালে খুব ভালো লাগত। গল্পটা কেবল জমে এসেছে অমনি লেখক শেষ করে দিলেন। অতৃপ্ত পাঠক মন! আরও লেখা পড়ার প্রত্যাশায় শুভকামনা রইল।
"ডাক্তারের ইচ্ছেটা কিন্তু অনেক ভালো ছিল। এই ইচ্ছেকে বাস্তবায়িত করে সুফল কুফল দুদিক তুলে ধরে গল্পটা আগালে খুব ভালো লাগত।" কিন্তু ডাক্তার তার ইচ্ছেগুলো প্রয়োগ করার সুযোগ পায়নি। তার পূর্বেই তার মৃত্যু হয়। যা হোক জীবন থেকে নেয়া অংশ হুবহু গল্পে ব্যবহৃত হয় না। তার ইচ্ছেটা গল্পে ঘটনা যায়ই। দেখি হয়ত পরে বড় করব। লেখার সময় ভেবেছিলাম বাস্তবের ঘটনার সাথে মিল রাখতে। শুভ কামনা রইল আপা।
সুস্মিতা সরকার মৈত্র ইয়ে, গল্পটা কি শেষ হয়েছে?
বাকিটুকু আপনি পূর্ণ করে নিন। পাঠককে একটু ভাবার সুযোগ দিলাম আর কী! অনেক ধন্যবাদ।
শায়লা আক্তার একটি অন্যতম গল্প, মন ছুঁয়ে গেল পড়ে। কবির জন্য ভোট আর একরাশ মুগ্ধতা জানিয়ে গেলাম।
অনেক ধন্যবাদ । আশা রাখি ভাল লেখা লিখবেন । শুভাশিস রইল ।
আমি কোনো কবি বা লেখক নয়, তবুও চেষ্টা করবো।
সেই চেষ্টাটিই যেন অনেক এগিয়ে নিয়ে যায়।
ফেরদৌস আলম কী রুবন ভাই, সেরা লেখাগুলো কই?
লজ্জা দিয়েন না! কিছু দিন হল একটু ব্যস্ত, তারপর আবার নতুন লেখা মাথায়ও আসছে না। আপাতত না-হয় আপনাদেরই পড়ি।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী ‘আমার বউ-ই... আমি চুলা বানানো দেখে কইলাম “কষ্ট তো তুমিই করলা, কী লাভ...” আর অমনি কাজ থামায়া কটমট কইরা আমারে দেখল। তারপর এক লাথিদিয়া ভাইঙ্গা কোন বাড়িতে চইলা গেল।’ হা হা হা.... খুব হাসালেন কিন্তু দাদা। অন্য রকম মজা পাইলাম এ গল্পে। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা ও ভোট রইলো দাদা। সময় করে আমার পাতাই ঘুরে আসার আমন্ত্রণ।
ধন্যবাদ নুরেআলম সিদ্দিকী।
কাজী জাহাঙ্গীর ডাক্তারেরও কি বউ এর কথা মনে পড়ে গেল নাকি, হা হা হা...। তবে একটা কথা ভাল লাগল ডাক্তার টা সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করলো। সংস্কার নিয়ে চিন্তা করলো। ভালবাসার সম্পর্ক নিয়েও চিন্তা করলো আর এটাই গল্পের বক্তব্যটাকে আরো ধারালো করে দিল। অল্প কথায় অনেক কিছুই বললেন। অনেক শুভকামনা আর ভোট। ভাল থাকবেন।
শুঁটকি গহেরের কামনা ছিল বউ বোবা হয়ে যাক। আর ডাক্তারের কামনা ছিল সমাজের সাধারণদের জন্য কিছু করার, কিন্তু দুজনেই ফেল! হা হা হা... ধন্যবাদ প্রিয় বন্ধু।
এক বৃদ্ধ ডাক্তারের ফি দিতে না পারায় ডাক্তার তার ছাতা রেখে দিয়েছিল আমরা সেই সমাজের লোক, আপনি এমন একটা ডাক্তার দেখালেন যে কি সমাজের একবার হলেও ভাবল, সেটাই বা কম কি, আজকেরগুলা টাকা ছাড়া কী বোঝে? হয়তো এটার মত হাতে গোনা কিছু ছাড়া,হা হা হা, ধন্যবাদ।

২১ এপ্রিল - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ১৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "পদত্যাগ”
কবিতার বিষয় "পদত্যাগ”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ জুন,২০২৫