নেতার বাড়িতে একদিন

পার্থিব (জুন ২০১৭)

আহা রুবন
  • ১০
  • ১৮
অনেক পরিকল্পনা করে সাজানো-গোছানো কথাগুলো উপস্থাপন করার সময় মনোযোগী শ্রোতার আগ্রহ ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছিল। তাই তার আত্মবিশ্বাস বেড়ে তিনগুণ হয়ে উঠল। কিন্তু কথা শেষে যখন বললেন ‘আপনার উদ্দেশ্য কী?’ তখন মোন্তাজুর রহমানের ভেতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল।

‘পুলটা খুবই দরকার স্যার।’
‘তা তো শুনলামই...’
‘আমাদের খুব কষ্ট করে যে কোনও একটা উপায়ে নদী পার হতে হয়। কিন্তু বাচ্চারা বর্ষায় স্কুলে যেতে ভীষণ বিপদে পড়ে যায়... দুই মাইল ঘুরে...’
‘এ-কথা আগেও বলেছেন, কিন্তু আমি জানতে চাচ্ছি তাতে আপনার কী লাভ?’
‘কোনও লাভ নেই স্যার! আমাদের সবার খানিকটা উপকার হয়, এই তো।’
চশমার ওপর দিয়ে আপাদমস্তক নিরীক্ষণ করে, মুখে এসে দৃষ্টি স্থির হয়। পুল সুপারিশকারী জড়সড় হয়ে পড়েন, যেন তিনি নব বধূ—ধর্ষকের মুখে বাড়িতে একা।
‘হুম সবার উপকার হয়! কিন্তু সেই সবার উপকার হলে আপনার কি সুবিধে, সেটাই তো আমি জানতে চাই।’
মোন্তাজুর রহমান মহাবিপদে পড়ে গেলেন। তার কী সুবিধে? আসলেই সেটা তো ভেবে দেখা হয়নি।
‘এত করে সব সমস্যাগুলোর কথা গুছিয়ে প্রায় মুখস্থ করে ফেললাম, আর আমার কী লাভ সেটাই বলতে পারছি না। মাথা চুলকাতে লাগলেন। স্যার যেহেতু বলছেন, কথা ঠিক। আমার লাভ অবশ্যই আছে, কিন্তু কী সেটা?’
‘এত কী ভাবছেন? এত কথার পেছনে আপনার উদ্দেশ্য বলুন দেখি—পুলটা পাশ করে দিচ্ছি।’
ভয়ার্ত চোখে নেতার দিকে তাকালেন মোন্তাজুর রহমান—তবে কি পুলটা হবে না! ধরা-পড়া মাছ-চোর বেড়ালের মত চোখে-মুখে অসহায় ভাব ফুটে উঠল।
‘আমি এখন উঠছি... এই... ভদ্রলোকটাকে চা দিয়ে যা।’
পুল আবেদনকারী কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলেন—মনে মনে হাতড়াতে লাগলেন—পুল তৈরি হলে তার কোন উদ্দেশ্য সফল হয়? ভেতরে ভেতরে ঘেমে উঠলেন। মাথা ঘুরতে লাগল, কানে শুধু ভোঁ ভোঁ শব্দ। টালুমালু করতে লাগলেন। এরমধ্যে নেতা উঠে দাঁড়িয়েছেন। হঠাৎ মোন্তাজুর রহমান হাঁপাতে হাঁপাতে বলতে শুরু করলেন ‘স্যার পুলটা হলে আমার স্ত্রীর কাঁথা শুকোনোর খুব সুবিধে হয়...’
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফেরদৌস আলম এই গল্পটা আমার পড়াই হয়নি। অল্পতে বেশ মূল্যবান কথা। হীরা-জহরতের মত।
সেলিনা ইসলাম যে যেমন সে চায় অন্যকেও সেভাবে দেখতে! না হলে যে নিজের ফায়দাটা নিতে পারবে না-বর্তমান সময়ে এটা একেবারে যেন সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে! বাস্তব পটভূমিতে চমৎকার গল্প। শুভকামনা নিরন্তর।
'যে যেমন সে চায় অন্যকেও সেভাবে দেখতে!' এটিই আসল কথা। অনেক ধন্যবাদ।
কেতকী খুব কম কথায় অনেককিছু বলে দিলেন গল্পে... কিন্তু ভোটের অপশনতো এলো না!! নাকি আমার ভুল!!
আপনার ভুল নয়। আগের সংখ্যায় দ্বিতীয় বিজয়ী ছিলাম বলে।
মোঃ মোখলেছুর রহমান অল্প কথায় অনেক কথা।ভাল লাগল।
অনেক ধন্যবাদ মোখলেছ ভাই।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী খুব চমৎকার হয়েছে, তবে একটু মজা পেয়েছি→ এ জন্য একরাশ শুভেচ্ছা রইলো। বরাবরের মতই অনেক অনেক শুভকামনা, ভোট ও আমার পাতায় আমন্ত্রণ রইলো.....
ধন্যবাদ আলম। আপনার লেখা তো পড়ছি। মাঝে মাঝে মন্তব্য করতে পারি না।
গল্পের পাতায় আমন্ত্রণ রইলো দাদা.....
রুহুল আমীন রাজু অল্প শব্দে বাজিমাত গল্প...।। দারুণ লাগলো ভাই । অনেক শুভ কামনা । ( আমার পাতায় আমন্ত্রণ রইলো )
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
কাজী জাহাঙ্গীর সমসাময়িক পরিস্থিতিতে নেতা হওয়ার অযোগ্যতাকে ইঙ্গিত করেছেন বলিষ্ঠভাবে। অনেক ধন্যবাদ দাদা, একটু হাসালেন বলে। ভাল থাকবেন, সময় হলে কবিতায় আসবেন।
তবু এমন নেতাদের দ্বারাই আমরা চালিত। ধন্যবাদ বন্ধু।
এশরার লতিফ স্যাটায়ারধর্মী গল্প, ভালো লাগলো অনেক।
ধন্যবাদ প্রিয় লেখক।
ইমরানুল হক বেলাল ছোট গল্প হিসেবে দারুণ ভূমিকা রেখে গেলেন রুবন ভাই, আপনার গদ্যের হাতে যাদু আছে । মুগ্ধতা এবং ভোট রেখে গেলাম ।
অনেক ধন্যবাদ বন্ধু।
Fahmida Bari Bipu হাহ হা...গল্প পড়ে মজা পেলাম রুবন ভাই। সার্থক অনুগল্প বলতে পারি। শুভকামনা।
মন্তব্য পড়ে গল্প লেখা সার্থক মনে হচ্ছে। শুভ কামনা রইল।

২১ এপ্রিল - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ১৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪