সুখের সাজা

ঘৃণা (সেপ্টেম্বর ২০১৬)

সমাধিরঞ্জন
  • 0
বিয়ের পর পরই অখণ্ড বিজয় গর্বে মাসের মাইনে প্রথমবার তুলে দিল নব বিবাহিতা স্ত্রীর হাতে। তার স্মিত হাসি দ্রুত মুছে দিল নব পরিণীতা বধূর ম্রিয়মান মুখের ছায়া। পতি অখণ্ডের চিন্তা কপালে তরঙ্গ এঁকে দিল। বৌ খুশি নয়! কেন! কী কারণ! রাখী তাকাল তার স্বামির দিকে, করুনা ভরা চাহনি। হাতে ধরা পঞ্চাশ টাকার ব্যন্ডিল। তাদের বাড়িতে তো ড্রাইভ্যর চাকর বাকরকে দিতেই দশ হাজার লাগে।

অখন্ড দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। অফিস ফেরতা ধরল ট্যুশন। তাতেও কুলোয় না। ‘বৌকে দিয়ে চাকরি করাবে শেষ পর্যন্ত’ শুনে অখন্ড চুপ, একেবারে নিশ্চুপ। একথা বৌ নয় যেন তার মানসিকতা বলেছে। অখন্ড মরিয়া। স্ত্রীর রোজ পিয়ানো আর শোনা যায় না। ‘তোমার মত পিয়ার বরও তো পি.ডব্লু.ডি. তে চাকরি করে। পিয়া তো ব্যসে কখনো যাতায়াত করে না। আমাকে মেয়ে আনতে অটো করে যেতে হয়, তাও অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে শেয়র করে’ এসব মন্তব্য বুস্ট্যরের মতো কাজ করলো। সে হয়ে উঠল বেপরোয়া।

বছর শেষ হতে না হতেই তিন বি.এচ.কে.-র ফ্ল্যাট হল। এরপরে প্রতিমাসেই কিছু না কিছু আসে। ঘর ভরতে লাগলো তনিস্ক পি.সি. জুয়েল্যরস আর গিনিতে। একের পর এক আলমারি ভরতে লাগলো দক্ষিণী বেনারসি সিল্কে। কাশ্মিরের গালিচা বৈঠক খানার অতিথিদের পদরেণু চাটতে থাকলো। আধুনিক যান্ত্রিক আসবাবে ঘর হয়ে এল সঙ্কুচিত। ফ্রিজ, ধোলাই ম্যশিন, খাবার স্নানের জল উষ্ণ করার যন্ত্র, দুল ঝাড়ার ম্যশিন, ঘর শীত তাপ নিয়ন্ত্রিত রাখার লম্বাটে দেওয়ালে লাগান যন্ত্র।। কিচেন হয়ে উঠল পাঁচতারা।

গিন্নি মলে যান, স্কুলে যান কারে। অবশ্য ড্রাইভ্যর চালায়। অখন্ড চালাতে শেখেনি।

এতো সুখেও অখণ্ডর বিছনায় যেন বিছে বিছানো। এ বিছে শরীর নয়, দংশায় মাথার গহবরে ঢুকে। কিছুতেই ঘুমের দেখা পাওয়া যায় না। একদন বন্ধুদের পরামর্শ মতো দু’ পেগ নিয়ে শুয়ে পড়লো। ভোর রাত্রে এলেন নিদ্রাদেবী। মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, ‘ঘুমো খোকা, শান্তিতে ঘুমো’ ঘুম ভেঙ্গে গেল স্ত্রী রাখীর আর কন্যা প্রত্যয়ীর। এত সক্কালে কে! তিন তিন বার বেল বাজল। গেট খুলতেই, ‘মি. অখন্ড গুহ কোথায়’

দু’ চারজন মাঝ বয়সী লোক। সঙ্গে তিন জন খাকি। অদূরে গাছের নিচে জীপ। এরা কারা! রাখী বিস্ময়ে তাকাল পাশে দাঁড়ানো মেয়ের দিকে।
- ‘বাবা তো ঘুমোচ্ছে’
- ‘সারা রাত ঘুমোতে পারেনা। ছটপট করে। এই ভোরবেলায় একটু তন্দ্রা মত ...’
- ‘চোপ! ডাক শালাকে’
আওয়াজে ঘুম পালিয়েছে। পেছনে রাত্রিবাসেই অখন্ড হাজির। একজন কনস্টবল মোটাসোটা বালা নিয়ে অখন্ডের কাছে এগিয়ে এল। এদের মধ্যে নীল টাই পরা সব চেয়ে বয়স্ক লোকটি জানতে চাইল। ‘মাসে কতো খরচা করেন? ক’ পয়সা বেতন আপনার স্বামির? কখনো জানতে চেয়েছেন এ পয়সা আসে কোথা থেকে?’

রাখী এ জটিল প্রশ্নের জবাব দিতে না পেরে মেয়ের দিকে সভয়ে তাকাল। বর্ধনশীলা বারো বছরের কন্যা ক্রুর দৃষ্টিতে মা-র দিকে তাকিয়ে, ‘কভেটাস লেডি! আই হেট য়ু’ বলে ভেতরে চলে গেল। বাপের জন্যে দু নয়ন সিক্ত হয়ে উঠল।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক সমসাময়িক সাধারণ ঘটনা...বর্ণনাশৈলী, বাক্যগঠন ও শব্দবন্ধন অপূর্ব....চমৎকার অণূগল্প...খুব ভালো লাগলো...শুভকামনা দাদা...
ভালো লাগেনি ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
পন্ডিত মাহী প্লট ভালো। অনুগল্প ভালো হয়েছে।
ভালো লাগেনি ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

১৭ মার্চ - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী