কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের ‘সেইফ হোম’ থেকে অনন্ত আজ ছাড়া পেয়েছে। সাত বছর পর আজ তার মুক্তি মিলল। বহু প্রতিক্ষীত মুক্তি। যে-বয়সটা তার বয়সী ছেলেরা মিষ্টি-মধুর দুষ্টুমি আর নিয়ম ভাঙ্গার আনন্দে কাটায়, সে-বয়সটা অনন্ত পার করেছে সেইফ হোমের চার দেওয়ালের মধ্যে। যেখানে হৃদয়ের আবেগ কিংবা মনের কষ্ট বুঝার কেউ নেই। সেইফ হোমের একগুয়ে জীবন তাকে সংশোধনের বদলে আরো জেদী করে তুলেছে। একটা বদ্ধ অভিমান কিশোর মনে দানা বেধেঁছে।
সেইফ হোমে অনন্তের সাথে মিশুর বন্ধুত্ব হয়। মিশু তার সমবয়সী, দু’এক বছরের ছোটও হতে পারে। সেও আজ ছাড়া পেয়েছে। মিশু খুবই গরীব ঘরের ছেলে। ওর বাবা ঢাকা শহরে রিক্সা চালাত। সৎমায়ের অত্যাচারে মিশুকে শিশু বয়সেই রাস্তায় নামতে হয়। মিশু যে বস্তিতে থাকত, সেই বস্তির এক বড়ভাইয়ের হয়ে মাদক সাপ্লাইয়ের কাজ করত। পুলিশের কাছে ধরা পড়ার আগে ভালই চলছিল মিশুর। মাদক সাপ্লাই করে যা পেত তা দিয়ে পেট ভরে তিন বেলা খাবার জুটত। পেট পুরে খেয়ে কখনো বস্তির খুপড়ি ঘরে, কখনো রেলের পরিত্যাক্ত বগি কিংবা প্লাটফরমে শুয়ে মনের সুখে রাত কাটিয়ে দিত। কিন্তু সুখ বেশি দিন কপালে সইলো না। মাদকসহ হাতেনাতে পুলিশের কাছে ধরা খেয়ে সোজা গাজীপুরের কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে ঠাঁই হলো মিশুর। পাক্কা সাত বছরের জেল। ভাগ্যিস সেখানে অনন্তর মত একজন সাথী পেয়েছিল!
অনন্তর কাহিনী অবশ্যি মিশুর থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। সে কোন বস্তির ছেলেও নয় এবং মাদক বেঁচতে গিয়ে ধরাও খায়নি। অনন্ত উচ্চ বিত্ত পরিবারের সন্তান। ইংরেজি স্কুলে পড়ালেখা করেছে। ভদ্রলোকের মত কথা বলে। তাছাড়া তার আরো অনেক গুন আছে। এ-কারণে মিশু তাকে যথেষ্ঠ সমীহ করে। অনন্ত মিশুকে আশা দেয়। একবার এখান থেকে বের হয়ে বাড়ী যেতে পারলেই তাদের সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। অনন্তের বাবা নেই। তবে বাবা খুব ধনী ব্যক্তি ছিলেন। টাকা -পয়সা বাড়ী-গাড়ীর কোন কিছুরই কমতি নেই তাদের। সবকিছুর মালিকই এখন অনন্ত। শুধু জেল থেকে বের হওয়ার অপেক্ষা। সামজের নিচুতলা থেকে উঠে আসা আশ্রয়হীন কিশোর মিশু অনন্তের মাঝে নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সন্ধান করে!
সেইফ হোম থেকে বের হয়ে মিশু ও অনন্ত উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে ঘুরে কয়েক ঘন্টা কাটিয়ে দেয়। সবকিছু যেন তারা নতুন করে দেখছে। দীর্ঘ সাত সাতটি বছর বাইরের মুক্ত হাওয়া গায়ে লাগেনি। আহা! মুক্তির এত আনন্দ। এখন দুপুর। একটা হোটেলের সামনে দিয়ে যেতে যেতে অনন্তকে উদ্দেশ্য করে মিশু বলে,“ খুব ক্ষিদা লাগছে, চলেন কিছু খাইয়া লই স্যার!”
অনন্ত লক্ষ্য করেছে, বাইরে আসার পর থেকে মিশু তাকে স্যার বলে সম্বোধন করছে। হোমে থাকতে সে অনন্তকে বলত “ওস্তাদ”। ওস্তাদ থেকে এখন সে “স্যার” হয়েছে। হঠাৎ এই প্রমোশন প্রাপ্তি অনন্ত বেশ উপভোগ করে। প্রথম প্রথম মিশুর মুখে “স্যার” শব্দটা শুনে তার লজ্জা লাগলেও এখন তার বেশ ভালই লাগছে। অবশ্যি ছোট বেলায় অনন্ত যখন গাড়ী করে মায়ের সাথে কোথাও যেত, গাড়ী কোথাও থামলে গরীব লোকেরা দুটো টাকার আশায় তাকে স্যার, স্যার বলে ডাকত। সে গাড়ীর জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে টাকা দিলে তারা খুশি মনে চলে যেত। শিশু অনন্ত মাকে এ-ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে তখন জবাব পেয়েছিল, গরীব লোকেরা টাকার জন্য বড়লোকদের স্যার বলে ডাকে। কিন্তু মিশুর ব্যাপারটা তা নয়। সে অনন্তকে সত্যিই খুব সম্মান করে। একথা অনন্ত’র অজানা নয়।
হোটেলে দু’জনে পেট ভরে খেয়ে আবার রাস্তায় নামে। এবার গন্তব্য সরাসরি অনন্তদের বাড়ী, উত্তরার রবীন্দ্র স্মরণী। রোড নং-০২, হাউজ নং-২৩, বাড়ীর নাম ‘রোজেন-ডেল’। ছিমাছাম একটি দোতলা বাড়ী। বাড়ীর কথা মনে হতেই আবার অনন্ত’র মন বিষিয়ে উঠে। অনন্ত ভেবেছিল আজ মুক্তির দিনে মা হয়তো তাকে নিতে আসবেন। যদিও তার মা গত একবছর যাবৎ তাকে দেখতে আসেননি!। তার জেল হওয়ার পর প্রথম দিকে মা ঘনঘন আসতেন। কিন্তু হঠাৎ করে মায়ের এমন কী হলো যে একেবারে যাতায়াত বন্ধ করে দিল। শেষবার একবছর আগে যখন মা তাকে দেখতে আসেন, তখন বিদায় বেলায় মা খুব কেঁেদছিলেন। সে কান্নার মাঝে কোন অশুভ ইঙ্গিত ছিল না তো! বাড়ীতে গিয়ে যদি দেখে কেউ তাকে গ্রহণ করছে না তাহলে সে কী করবে? সে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? আর মিশু নামের অসহায় এই ছেলেটারই বা কী হবে? সে-তো ধরেই নিয়েছে যে অনন্ত তাকে আশ্রয় দিবে!
২
হোমে থাকতে মিশু অনন্তকে অনেকবার জেলে আসার কারণ জিজ্ঞেস করেছে। কিন্তু অনন্ত কিছুতেই মুখ খোলেনি। সে বলত, ‘যদি কোন দিন এই নরক থেকে মুক্তি পাই তবেই তোমাকে সব কিছু বলব’। মিশুর সে কথা মনে আছে। তাইতো বাইরে আসার পর একথা সেকথায় ঘুরিয়ে ফিরেয়ে সে অনন্ত’র জেলে যাওয়ার কারণ জানতে চায় বারবার।
‘আমি হুনছি আফনে একটা মানুষরে গুলি কইরা মাইরা হালাইছেন, কথাডা কি সত্য স্যার’ রাস্তার চলতে চলতে মিশু ভয়ে ভয়ে অনন্তকে জিজ্ঞেস করে।
শিষ্যের ব্যাকুলতা দেখে অনন্ত মনে মনে হাসে। সে ভাবে আজ আর একে নিরাশ করা ঠিক হবে না। “মানুষ হত্যা করেছি বলেই তো সাত বছর জেল খাটলাম। কথাটা সত্য। আমি নিজ হাতে একজন মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছি।’
অনন্ত’র মত একজন ভাল ছেলে মানুষ হত্যা করেছে একথা মিশুর বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। তারপরেও সে বিশ্বাস না করে পারে না। কারণ তার সাথেই তো অনন্ত খুনের দায়ে সাত বছর সাজা খেটেছে। মিশু বলে, ‘স্যার, আগে আফনের জীবনের ঘটনাডা শুনতে চাই, তারপর আফনের বাড়ীত যামু’।
“শুনতে চাও ভাল। কিন্তু এইটা তো অনেক বড় কাহিনী।’
‘যতবড় হোক না ক্যান আমি হুনতে চাই’ মিশু জবাব দেয়। ‘চলেন স্যার, ঐ গাছটার নিচে বইস্যা আরাম করে গল্প করি’।
অনন্ত বলে, ‘চল গিয়ে বসি। এখন তো আমরা স্বাধীন, কাজেই তাড়া কিসের!’
তারা দু’জনে রাস্তার পাশে একটা শিরিষ গাছের তলায় এসে বসে। অনন্ত মিশুকে তার জেলে যাওয়ার কাহিনী বলতে থাকে।
‘আমার যখন তিন বছর বয়স তখন আমার বাবা মারা যান। বাবার মুখটা আমার ভাল মনে নেই। তবে বাবা যে একজন ভাল মানুষ ছিলেন তা আমি বড় হয়ে লোকমুখে শুনেছি। বাবা মারা গেলেও আমাদের কোন দিন কোন সমস্যা হয়নি। আমার বাবা ছিল মস্তবড় ব্যবসায়ী। তাঁর কনস্ট্রাকশান ফার্ম ছিল। তাছাড়া বাবা মারা যাওয়ার সময় ব্যাংকে অনেক নগদ টাকা রেখে গিয়েছিলেন। বাবার একমাত্র সন্তান হিসেবে তার রেখে যাওয়া সম্পত্তির উত্তরাধিকারী ছিলাম আমি এবং আমার মা। উত্তরায় আমাদের বাড়ীতে ২/৩জন বিশ্বস্ত কাজের লোককে সাথে নিয়ে আমাদের মা-ছেলের জীবন বেশ কাটছিল। সুখ সুখে শান্তিতে ছিলাম আমরা। উত্তরার ‘স্কলেস্টিকা’ স্কুলে আমি পড়তাম। মায়ের আদর আর শাসনে ভালই কাটছিল আমার শিক্ষা জীবন। আমার বয়স যখন দশ বছর তখন হঠাৎ করে একটি ঘটনায় আমার জীবন অন্যদিকে মোড় নেয়। আমার মা বাবার কনস্ট্রাকশন ফার্মের এক ইঞ্জিনিয়ারকে বিয়ে করলেন । বিষয়টি আমার শিশু মনে বিরুপ প্রভাব ফেলল। মা যেদিন ঐ লোকটিকে বিয়ে করল, তার পরের দিন আমাকে আমার এক আত্নীয়ের বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়া হলো বেড়িয়ে আসার জন্য। দিন পনের বেড়িয়ে আসার পর আমি যখন বাড়ী এলাম, তখন আমি আবিস্কার করলাম নিজ বাড়ীতে আমার সেই আগের অবস্থান নেই। না আমার মায়ের কাছে, না কাজের লোকেদের কাছে। যদিও মায়ের ঐ লোকটিকে আমি মনে মনে মেনে নিতে পারিনি, কিন্তু সেই পরিস্থিতিতে আমার জীবনে ঐ লোকটি পিতৃসুলভ স্নেহের মনোভাব নিয়ে এলে আমি হয়তো তাকে আমার পিতার আসনে বসাতে পারতাম। কিন্তু তিনি তা না করে আমার বিরুদ্ধে আমার মাকে খেপিয়ে তুললেন। যে বাড়ীতে আমি ছিলাম রাজপুত্রের মত সেই বাড়ীতে সবার অবহেলায় অযত্নে আমার দিন কাটতে লাগল। মা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে আমার বাবার দিকের লোকজন আমাদের বাড়ীতে আসা একেবারে বন্ধ করে দেয়। ফলে আমার খোঁজ খবর নেওয়ার মত আর কেউই ছিল না। বছর যেতেই দ্বিতীয় ঘরে মায়ের একটি ছেলে সন্তান হয়। ছেলে হওয়ার পর থেকে আমার প্রতি সকলের অবহেলা চরমে উঠে। ইতোমধ্যে বাড়তি খরচের অজুহাতে স্কলেস্টিকা স্কুল হতে আমাকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে। কোন একটা সস্তামানের বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি করানোর কথা চলছে। মায়ের দ্বিতীয় স্বামী লোকটি ছিল খুবই কঠোর প্রকৃতির। আমি ধীরে ধীরে আবিস্কার করলাম ঐ লোকটির লোভ আমার বাবার সম্পত্তির উপর। আমার মা-ও বিষয়টি টের পেতে লাগলেন। কিন্তু তিনি ছিলেন নরম প্রকৃতির মহিলা। দৃঢ়-প্রত্যয়ী এবং অত্যাচারী ঐ লোকটিকে মা ভীষণ ভয় করতেন। তিনি যেন ঐ লোকটির হাতের খেলার পুতুল হয়ে গেলেন। কথায় কথায় ঐ লোকটি আমার ও আমার মায়ের গায়ে হাত তুলল। নিজের প্রতি সকলের অবহেলা আমি মেনে নিলেও মায়ের প্রতি ঐ লোকটির অবহেলাকে আমি মেনে নিতে পারিনি। ধীরে ধীরে একটা প্রতিহিংসা আমার মনে দানা বাঁধে। বাবার লাইসেন্স করা পিস্তলটি আমি সুযোগ বুঝে মায়ের ড্রয়ার থেকে চুরি করে আমার কাছে এনে রেখে দিই আর সুযোগের অপেক্ষায় থাকি। একদিন রাতে আমাকে বোর্ডিং স্কুলে পাঠাবার বিষয় নিয়ে মায়ের সাথে ঐ লোকটির তুমুল কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আমি টের পাই ঐ লোকটি আমার মাকে খুব মারধর করছে। মায়ের চিৎকার আর কান্না শুনে আমি আর স্থির থাকতে পারিনি। পিস্তল হাতে সোজা মায়ের ঘরে ঢুকে পড়ি। ঘরে ঢুকে দেখি মা তার খাটের উপর উপুড় হয়ে শুয়ে কাঁদছে। আর ঐ লোকটি তার শিশু ছেলেটিকে কোলে দাঁড়িয়ে আছে। আমি সাতপাঁচ না ভেবেই গুলি চালিয়ে দিই। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য নাকি ঐ লোকটির সুভাগ্য তা আমি জানি না, গুলি গিয়ে লাগে আমার দুই বছর বয়সী সৎভাইয়ের গায়ে। স্পটেই সে মারা যায়। তার পরেই ইতিহাস তো তোমার জানাই আছে।’
মিশু মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনছিল। এতক্ষণ ধরে সে একটা কথাও বলেনি। এবার আক্ষেপ করে বলল, ‘আহা! স্যার, বড়ই করুণ কাহিনী। আফনের লগে আমার একটা জায়গায় মিল আছে। আমি ঘর ছাড়ছি সৎমায়ের নির্যাতনে আর আফনে সৎ বাবার নির্যাতনে, তাই না?’
অনন্ত উদাস গলায় বলে, হ্যাঁ তাই তো’!
সন্ধ্যার প্রাক্কালে অনন্ত ও মিশু উত্তরায় তাদের বাড়ীর সামনে পৌঁছায়। কিন্তু বাড়ীর সামনে এসে আচমকা অনন্ত’র অন্তর কেঁপে উঠে। তাদের বাড়ীর নাম ছিল ‘রোজেন-ডেল’। কিন্তু তাদের বাড়ীটিতে অন্য একটি নাম ফলক ঝুলছে কেন? তবে কি এই সাত বছরে মা বাড়ীর নামটাও পাল্টে ফেলেছেন? অনন্ত ভয়ে ভয়ে কলিংবেল টেপে। অচেনা একজন দারোয়ান এসে গেট খুলে দেয়। দারোয়ান তাদের দুজনকে দেখে তাচ্ছিল্যের স্বরে বলে, ‘কি চাই?’ যেন তারা দুইজন ভিক্ষা চাইতে এসেছে।
অনন্ত মিন মিন করে বলে, “জি¦, এইটা মরহুম সুমন্ত মাহামুদ সাহেবের বাড়ী না? এই বাড়ীতে তার স্ত্রী থাকতেন। আমি মরহুম সুমন্ত মাহামুদ সাহেবের ছেলে অনন্ত মাহামুদ। আমি সাত বছর আগে বাড়ী হতে... বাড়ীতে কেউ কি আছেন?’
দারোয়ান আবারো একবার অনন্ত’র পুরো শরীর পরখ করে নেয়। এইরকম বেশভূষার একটি রাস্তার ছেলে কিনা বলছে তার বাবা এই বাড়ীর মালিক! পাগল টাগল নাকি! দারোয়ান ঝাঁঝাল স্বরে বলে, ‘আমি কোন সুমন্ত মাহামুদকে চিনি না, এই বাড়ীতে এখন ফরেনার থাকে। তারা এম্বাসির লোক। এই বাড়ী যে ভদ্রমহিলার ছিল তিনি বছর খানেক আগে বাড়ীটা আমেরিকান এম্বাসির কাছে বেঁচে দিয়ে আমেরিকা চইল্যা গেছে স্বামী লইয়া।’
অনন্ত গেটের সামনে ধপাস করে বসে পড়ে। বিড়বিড় করে বলতে থাকে, ‘মা বাড়ী বিক্রি করে দিয়ে একবছর আগে আমেরিকা চলে গেছে! আমাকে না জানিয়ে! আমার কী হবে তা একবারও ভাবল না। এতবড় অবহেলা... এতবড় অবহেলা আমাকে। এখন আমি কোথায় গিয়ে দাঁড়াব?’
মিশু অনন্তের কাছে গিয়ে তাকে উঠিয়ে দাঁড় করায়। অনন্ত’র কাঁধের উপর হাত দিয়ে রাস্তার অপর পাশে একটি বেঞ্চিতে নিয়ে গিয়ে বসায়। সে পরম মমতায় অনন্ত’র কাঁধে হাত বুলাতে বুলাতে বলে, ‘ওস্তাদ আফনে একটুও ঘাবড়াইয়েন না। আফনের এই শিষ্য থাকতে আফনের কুন ভয় নাই। আল্লার দুনিয়ায় থাহনের জায়গার কি অভাব! চলেন আমার লগে!’
মিশু ও অনন্ত হাঁটা শুরু করে। অনন্ত মিশুর কাঁধে হাত রেখে পা টেনে টেনে হেঁটে যাচ্ছে। দারোয়ান তাকিয়ে তাকিয়ে তাদের যাওয়ার দৃশ্য দেখছে। এতক্ষণে সে পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছে। সে এখানে আসার পর শুনেছে, বাড়ীর আগের মালিকের একটা ছেলে খুনের দায়ে জেলে আছে। সেই ছেলেটাই তাহলে ফিরে এসেছে। যতদূর চোখ যায় ততদূর পর্যন্ত সে তাদের যাওয়ার দৃশ্য দেখে। তার চোখে পানি। নিজের অজান্তে তার মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে,‘আহা রে! ছেলেটা বড় দুঃখি!’
১২ ডিসেম্বর - ২০১৫
গল্প/কবিতা:
১৬ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪