বড় বোনের বাসায় শুয়ে বসে দিন কাটে না, অনেক দিন পর বোন আমাকে কাছে পেয়ে যার পর নাই মহা খুশি। বাড়াবাড়ি পর্যায়ে আদর আপ্যায়ন। তবুও কেন জানি ভাল লাগে না; দম বন্ধ হয়ে আসে।গ্রামের বাড়িতে মুক্ত পাখির মত ঘুরে বেড়াতাম;মেঠোপথ আর চারপাশ সবুজের সমারোহ।সোনালী রংঙের ধান ক্ষেত, সবুজ কচুরিপানার উপর সাদা বক বিলে। হাই স্কুলের মাঠে নানা রকম খেলায় মেতে থাকতাম, ছুটির পর।
পড়া লেখায় ভাল ছাত্র না হয়েও প্রাইমেরি স্কুল থেকেই রোল নাম্বার দশের মধ্যে থাকে । হেড স্যার ক্লাসে হোম ওর্য়াকের খাতা দেখে আমাকে কান ধরে দাড় করিয়ে রাখে, কারন জানতে চাইলে বলে ক্লাস শেষ না হওয়া পর্যন্ত কান ধরে দাড়িয়ে থাকবি । তোর বাবাকে বলবি আমার সাথে যেন দেখা করে? একে একে সবার খাতা দিয়ে দেয় , আমার খাতা স্যার নিয়ে চলে যায় । বাবা বাড়ি ফিরে; আমার সব বই খাতা উল্টীয়ে দেখতে লাগলো , প্রতি বই খাতা পাশে খালি অংশে ছড়া, কবিতার অংশ বিশেষ লেখা।লোকে আমাকে প্রায় বলে বজলু মিয়া; ছেলে তোমার বড় কবি হইয়া গেল! কদিন আগে পাশের গায়েঁর কলিম চাচা বাজারে সবার সামনে বলছিল; ছেলে তোমার বিরাট গল্পকার হইয়া গেল সেই কথায় কান দেইনি।আজ বাজারে সকলের সামনে স্কুলের হেড মাষ্টার সাব এই খাতা দিয়ে কত কথা বলতে লাগলেন।তোমার যদি লেখতে ইচ্ছে হয় ঘরে বসে লেখো; মানুষকে হয়রানি করো কেন? আজ বলে দিচ্ছি এমন যেন আর না শুনি; শিক্ষক গুরুজন, তাকে নিয়ে কেউ এ কথা লিখে হেড মাষ্টারের মাথা টাক, মুখ করে ফাঁক,পেটতো নয় যেন,ফুটবল মাঠ।
শান্ত সুবোধ লক্ষী ছেলে হয়ে এস, এস,সি পরীক্ষা দিয়ে শেষ করলাম। আমাকে আর পায়কে; সারাদিন ছড়া আর কবিতা; যাকে কাছে পাই তাকেই শুনাই। লাউ পাতার গুন, পুইঁ শাকেঁ নুন, কিছু একটা মনে পড়লে একাএকা হাটি আর বলতে থাকি।বাসায এসে কাগজে তুলে রাখি।কদিন বাদে কলেজে ভর্তি হয়ে যাই; নতুন বইয়ের গন্ধে মন নাচে আনন্দে।
কলেজ থেকে ফিরতেই, বাবা আবির একটু এদিকে আয়; মা“ ডাকছে। কাছে আসতেই, প্রতিদিন কেউ না কেউ বাড়ি এসে তোর নামে নালিশ করে যায়।তোর বাবার কানে যদি যায়, অবস্থা কি হবে একবার ভেবে দেখেছিস। আচ্ছা মা তুমি বলো; ছড়া বলা, কবিতা বলা এগুলি কি খারাপ কিছু? আমার বুঝে কি হবে! লোকে ক্ষেতে কাজ করছে তুই গিয়ে গল্পের ডালা সাঝিঁয়ে বসিস ওদের কাজের ক্ষতি হয়।কেউ একটা কিছু ভাবতে ভাবতে চলছে তুই তাকে থামিয়ে ছড়া অথবা কবিতা শুনিয়ে তার ভাবনার বারোটা বাজিয়ে দিস। গায়েঁর সবাইতো তোকে গল্পওয়ালা বলতে শুরু করছে ; শেষে কিনা আমদের দেয়া নামটাই গুছে যায় ।শোনো ; মা“ কে কি বললো তাতে আমার কিছু আসে যায না, আমার আসে যায় বলেই একটা চেযার টেনে বসে পড়লেন বাবা। তুমি ভালো করেই জান আমরা একটি সমাজে বাস করি।তোমার জন্য আর সবার কাছে নতো হতে পারবো না; গ্রামে আমরা সবাই খেটে খাওয়া মানুষ তোমার সাহিত্যর কানাকরি দামও এখানে পাবে না ।
পায়চারি করে কবিতা আবৃতি করছিলাম,দরজার ওপাশ থেকে দুলা ভাই শুনছিল। একটু পর আপু বললো তোকে তোর দুলা ভাই ডাকছে। কি খবর শ্যালক বাবু ? জ্বি ভাল, আপনি ভাল আছেন? আজ ছুটির দিন তাই ভাল আছি ।জানতে পারলাম তুমি ভাল কবিতা লেখ; তা আমাকে একটা শোনাও ? না দোলা ভাই , কে বললো? লজ্জার কি আছে এত সৃজনশীল ভাল কাজ, বলে ফেল ঝটপট। এই দরো নাস্তা করো? কবিতা শুনে পেট ভরবে না, ওর একটা কাজের ব্যাবস্থা করে দাও? লাল শাড়ী পরে বুবু এলো তোমার ঘর আলো করে....আমায় একলা করে তোমার ঘর পূর্ণ করতে.... কবিতা শুনে দোলা ভাই পাচঁশো টাকা দিলেন, নিতে চাইনি জোড় করে গুজে দিলেন। বেশ ভালো লাগলো, এখন থেকে ছুটির দিনে আমাকে কবিতা শুনাবে, মনে থাকবে তো?
২২ অক্টোবর - ২০১৫
গল্প/কবিতা:
৫ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪