ফারাক

শ্রমিক (মে ২০১৬)

রেজওয়ানা আলী তনিমা
  • ১১
  • ৬৬
১।
সকালে গরম গরম ভাত খেয়ে যাবার অভ্যাস মজিদ মিয়ার। রাহেলা মাড় গালছিল, বাচ্চাটা ট্যাঁওট্যাঁও করায় ভাত ফেলে ওকে সামলাতে ছুটলো। মজিদ মিয়া বাচ্চা কাচ্চার কান্নাকাটি একেবারেই পছন্দ করে না।কাঁদাকাটার সময় ওদের কোলে নিয়ে শান্ত করবে এটা ভাবাও পাগলামি। তা’বলে এমন চিৎকার করলে কাজ করা যায়?আর বাচ্চাগুলো হয়েছেও এমন। একটা শুরু করতে আরেকটাও শুরু করবে। ''তিন পোলামাইয়ার জ্বালায় জীবনটা তামাতামা হইয়া গেল।'' ঘোষণা করে রাহেলা ছেলের কাছে গেল। এককালে সে সুন্দরী ছিল। এখন অভাবে আর স্বভাবে---- মা হয়ে যাবার পরে কেইবা আর দেহের দিকে তাকায়? মেজাজও সেইরকম খিটখিটে হয়েছে।তিনবছর বয়সী বারেকের পিঠে ঠোকনা বসিয়ে দিল। সে এখনও মাকে ভয় পায়। বড়গুলোর মত খিদে লাগলেও চেঁচিয়ে পাড়া মাথায় করে না। কান্না গিলে ফেলে ভয়ার্ত চোখে মায়ের দিকে তাকাতে লাগলো। সেই ফাঁকে রাহেলা চটপট ভাত বেড়ে দিলো স্বামীকে।মজিদ মিয়া আজ এসব হাউকাউ কিছু খেয়াল করছিলো না। সংসারে টাকা আনা পাইয়ের হিসাব নিয়ে ভাবছিল।ছাপড়ার ভাড়া আবারও বাড়াবে বাড়িওয়ালা। বড়সাহেবদের বেতন বাড়ছে,বাজারে জিনিপত্রের দামও তাই বাড়তির দিকে।যাদের কিছুই বাড়েনি তারা দেবে কোথ্থেকে? শেফালীটাকে স্কুলে পাঠাবে এবার। যেন মূর্খ না হয়। ছেলে হোক মেয়ে হোক মূর্খের আজকাল কোন দাম নাই।বাকিদুটাও তো আছেই। খরচ চালানো ক্রমেই মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। কি করে? সেই কবে ব্যাপারীর কাছে টাকা নিয়েছিল সেটা সে এবার চেয়েছে এবং খুব ভালো ভাষায়ও চায় নি। ব্যাপারী মহাজন মানুষ , গুন্ডাপান্ডার সাথে সংশ্রব আছে।টাকাটা নেয়ার সময় কি অত কিছু মনে ছিল? না হলে..।না নিয়েও কোন উপায়ই ছিল না অবশ্য। বোনের বিয়ের সময় জামাইকে মোটরসাইকেল না দিলে বিয়ে ভেঙে যায় ভেঙে যায় অবস্থা।
লূৎফা, ওর আদরের ছোট বইন, দশটা না পাঁচটা না , একটাই তো।
সে তো শ্বশুড়ঘর গেল, মাথায় ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে গেল।যাক , কপালে দূর্ভোগ থাকলে ঠেকায় কে?


গায়ে শার্ট গলালো মজিদ মিয়া , খাওয়া শেষ করে বেরুলো কাজে। রাহেলা পিছন থেকে বলেছিল আসার সময় চাল নিয়ে আসতে , কথাটা ওর অন্যমনে কানে ঢুকলো না। অর্থভাবনা গুলো বিনবিন করে মাথায় যন্ত্রণা দিচ্ছিলো । তবে কারখানায় ঢুকতেই ব্যস্ততার মাঝে চিন্তাগুলো কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে গেল । বিকটদর্শন মেশিনগুলো সব চালু হয়ে গেল । যন্ত্রদানবের সাথে কর্মমুখর হাতের সংযোগে মানুষগুলোও যন্ত্র। একটানা কাজের মাঝে দুপুরের খাবার বেলা খাবারের কৌটার সাথে সঙ্কটের চিন্তাগুলোও আবার ছিপি খুলে বের হলো। বকর পাশে এসে বসলো। খেতে খেতে আলাপ করছিলো ওরা।ওর সমস্যার কথা শুনে অনেকবার আগে দেয়া পরামর্শটাই আবার দেয়।
''তোমারে তো কইছি, ভাবীরে বাইরে পাঠায় দাও।বচ্ছর পরে টাকার বস্তায় গড়াগড়ি খাইবা ।''
''অতদূরে পাঠায় দিমু -মাইয়্যামানুষ একা , কিছু যদি হয়?''
‘'কি আবার হইবো?মাইয়্যারা এখন সবই করতাছে, আগের জমানা নাই।''
''হুনছি ঐদেশের মানষে ভালা না।কলিমুদ্দির কথা তরে তো কইছি। আমাগো গ্রামের পোলা। বেবাক বেইচা বিদেশ গেছিলো, সব খোয়ায় ফিরা আইছে।।''
''আরে তুমিই তো কইছ , অয় ভুয়া কাগজে গেছিলো। ভাবীরে কি আর অমনে পাঠাইবা নাকি?''
''তয়?''
''সরকার থাইকা লোক নিতাছে। সব শিখায় পড়ায় নিবো, টেকাপয়সা, দেনা পাওনা সব কিলিয়ার । চিন্তার কিছু নাই।''
মজিদ মিয়া ভাবে, চিন্তার কিছু নেই- আসলেই? অতদূরে পাঠাবে বউটাকে ? বাচ্চাকাচ্চা, নিজের ,ঘরবাড়ির দেখাশোনা এসবের কি হবে? অনিশ্চয়তা পেয়ে বসে ওকে। অথচ খুবই টাকার দরকার এখন । কিন্তু..। এই কিন্তুটার বিচার সে পরের দুদিনেও ভেবে বের করতে পারে না।

২।
সারাদিন খেটে বাড়ি এসে কেমন নিস্তব্ধতা টের পায় মজিদ মিয়া। অন্যদিনের মত পিচ্চিকাচ্চাদের হইচইয়ের কোরাস নেই। কি ব্যাপার সবাই বাইরে কোথাও গেল নাকি?অবাক লাগলো- ওকে না বলে রাহেলা কোথায় যাবে? এমন তো কখনো হয় না। চিল্লাফাল্লায় সবসময় বিরক্ত হলেও এখন এই মুহূর্তে ওসবের অভাবেই ওর উৎকন্ঠা হয়। কারো কোন বিপদ বালাই হলো নাতো?

বেশিক্ষণ ওকে টেনশনে থাকতে হয় না। রাহেলা ওর পায়ের শব্দে বেরিয়ে আসে।লুৎফা এসেছে! হঠাৎ! মন আনচান।কি কারণে সে আসতে পারে? তাও এখানে? লুৎফার একান্নবর্তী বিশাল পরিবার ঠেলে বছরে দুবছরে একবার বাড়ির চৌকাঠ পেরোয় সে ।তাও যায় গ্রামে, বাপ মায়ের সাথে দেখা করে। এই উছিলায় ভাইরের সাথেও সাক্ষাৎ হয়। সেই মহাব্যস্ত গিন্নি লুৎফা আজ এমন অসময়ে ভাইয়ের বাড়িতে ! স্তম্ভিত হবার কথাই। মজিদ বোনের সাথে দেখা করতে ঢুকছিল ঘরে, রাহেলা থামায়।
''এখনি যাওনের দরকার নাই। বসেন এইহানে।'' এরপর বিস্তারিত কাহিনী বলে । লূৎফার জামাই টাকা চায়।
''ক্যান? বিয়ার সময় যা দেওনের কথা আছিল দিছি। আবার কিয়ের দাবী?''
'' আরও চাইতাছে। ব্যবসা করবো। মাইয়্যাটারে মাইরা রাহে নাই। মাইয়্যাও কম নি? পইড়াপইড়া মার খাইছে। আমগোরে কিছু জানায় নাই। ''
''জানাইলেও কি করতাম? একটা বাড়তি টেকা আছে?''
চিন্তিত মুখে মাথা নাড়ে রাহেলা। আসলেও ওদের কিছুই নেই। রাহেলা খুব স্বার্থপর না, তবু ওর নিজের বাচ্চাকাচ্চার কথাও তো ভাবতে হয়। কিছুমিছু না জমাইলে কোন দিন কি বালাই আসে। তখন সাহায্যের জন্য একটা পয়সা দিয়েও কেউ সাহায্য করবে না । সবসময় পরের কথা ভাবলে হয় না। মজিদ মিয়ার সবই ভালো , তবু কারোর কোন কথা শুনলেই হাত উল্টে সব পয়সা দেবে? সাংসারিক বুদ্ধিশুদ্ধি ব্যাডামানষের এত কম হয় কেন? এ যে এখন লুৎফা এসেছে, তার পরে থেকেই আবার ওর বুক ধক ধক করছে , বোকা স্বামীটা আবার কি জানি কোথা থেকে টাকা ধার করে বসে!


৩।
রাতে সব শান্ত হবার পরে কথাটা তোলে মজিদ মিয়া । মাঝখানে আরও একটা দিন পার হয়েছে, ভেবে ভেবে কোন কিনারা পায় নি সে। তার মত গরীব মানুষের এত দায় যে কেন আল্লা দেন! মরার উপর খাঁড়ার ঘা। রাহেলা জানিয়েছে, লুৎফা অন্তঃসত্ত্বা। গরীবের সংসারে নতুন একটা মুখ বাড়া মানে আপদ। এই যে এখন লুৎফা এসে গ্যাঁট হয়ে বসেছে, কবে নামবে কে জানে? যত আদরেরই বোন হোক , এখন বোঝা ছাড়া আর কি? কাদের যদি শেষপর্যন্ত বউকে নিতে একেবারেই না আসে, যৌতুকের লোভে আরেকটা বিয়ে করে ফেলে? সর্বনাশ! অথচ এমন তো কত দেখছে আশেপাশে।আর এই কাদের লোকটাকেই তার কাছে কখনো ভালো লাগে নি। কি দেখে যে লুৎফা মজলো কে জানে!পীরিত করেছিস, এখন মজা বোঝ -বলে দূরে দাড়িয়ে তামাশা দেখতেও পারবে না সে। আপনা মায়ের পেটের বোন যে!
নাহ, আর কোন উপায় নেই-

রাহেলা অনেকক্ষণ চুপ করে থাকলো। মজিদ মিয়া ওকে দূর করে টাকা কামাতে চায় , কি বলবে সে?বেজায় অভিমান হলো ওর । কিন্তু স্বামীদের উপর অভিমান করে কে কবে জিততে পেরেছে? মার খাওয়ার, সহ্য করার কপাল নিয়েই মেয়েমানুষে আসে।

৪।
''ভাবী কত দূরদেশে যাইবা , কি কিসমত তুমার,'' লুৎফার ন্যাকামি শুনে শুনে রাহেলার গা জ্বলছিলো। মনে মনে বলে, কামলা দিতে যাওন অতই যদি কিসমত মনে অয় - তুমি গেলেই পারতা।বাপের জন্মে আমরার বংশের মাইয়্যামানষে ঘরের বাইরে যায় নাই, এহন আমি যাইতাছি। তুমার গুষ্ঠির খাই মিটাইতে -
কদিন সরকারি অফিসে দৌড়াদৌড়ি , বিদেশ যাবার মেলা তোড়জোড়।তড়িঘড়ি লাইন দিতে হল পাসপোর্ট অফিসে। ভিসা। টিকেট।শতেক পেরেশানি ।মজিদ মিয়া টাকা আনার জন্য বউকে পাঠাতে চেয়েছে। বউকে পাঠাতেও যে টাকা লাগবে সেই হুশ নেই। আবার এত দূরে এসে ক'টা টাকার জন্য পিছাবে কেমন করে? ''আরে ভাবী লাখপতি হইয়া ফিরবো , ভয় কি ?টেনশন নিও না।'' বকর সবসময় সাহস দিয়েছে। ওর জানাশোনা আছে। কাজের ব্যবস্থা তারাই করে দেবে, ভরসা দিয়েছে। সে তো মজিদ মিয়ার আপন ভাইয়ের মত , সে থাকতে আবার মজিদের কিসের এত উৎকন্ঠা? মজিদ চেয়েচিন্তে ,বউয়ের বিয়েতে দেয়া গয়না বেচে টাকার আয়োজন করে।

অশ্রসজল চোখে যতদুর পারা যায় , পিছন ফিরে ফিরে দেখলো রাহেলা।বাচ্চাগুলো কে যতক্ষণ পারা যায় গালে হাত বুলিয়ে দিলো, চুমো খেল সবার সামনেই। ছোটটা অবুঝ কিন্তু শেফালী আর ইউসুফ মায়ের দিকে অবাক হয়ে ফ্যালফ্যাল করে চেয়েছিল। মা নামক মানুষটি র মানেই হল খুন্তি কাঠি হাতে তর্জন আর বকাঝকা , অভাবের সংসারে আদর খাবার স্মৃতি ওদের তেমন নেই ।
রাহেলা বার বার চোখ মোছে। ও একা যাচ্ছে না। এই প্লেনে আরো অনেকের গন্তব্য সৌদি। বেশিরভাগই অবশ্য মজদুর পুরুষ। বসে থাকতে থাকতে পাশের ,মহিলাটির সাথে আলাপ জমে ,নাম আম্বিয়া। ওর চেয়ে বয়সে বেশী। ছেলে বড়, স্বামী নেই। যথেষ্ট শক্তপোক্ত। ছেলেমানুষ রাহেলার দিকে সহানুভূতি নিয়ে তাকায়। সান্ত্বনা দেয়। ওর অভিজ্ঞ মনে কত দুঃখ সে সয়েছে, জানে এসব পারিবারিক বিচ্ছিন্নতার চেয়ে সাংসারিক দায়ের চাহিদা বড় নিষ্ঠুর। ''তুমার তো ভাইগ্য ভালো, আল্লার দেশে যাইতেছ। আল্লার ঘর দেখবা।কয়টা মানষের নসীবে হয়? মানষে যেইটার খোয়াব দেহে তুমি বচ্ছর বচ্ছর সেই হজ করতে পারবা। আর টেকা পয়সা তো পাইবাই।সংসারে টেকাই সবচে বড় কথা রে বইন।টেকা পয়সা না থাকলে কিয়ের সোয়ামী আর কিয়ের পোলামাইয়্যা। কেউ পোঁছে না।''

সত্যই সত্যই রাহেলার মনে ভরসা আসে । সে তো যাচ্ছে পবিত্র মাটিতে ।ধর্মকর্ম সে অত জানে না। কিন্তু ধর্মভক্তি আছে । আর টাকা না থাকলে যে সব বৃথা সেও তো সত্যি। অর্থ পর্যাপ্ত থাকলে তাকে কি নিজের সংসার থেকে কেউ একপা টেনে বের করতে পারতো? মজিদ মিয়া টাকার লোভেই তো ওকে দূরে ঠেলে দিল। সে অনেক অনেক টাকা কামিয়ে ফিরে আসলে তার মূল্যই সংসারে অন্যরকম হবে। ওদের গ্রামের চেয়ারম্যানের বউ শিউলি বিয়ের সময় বাপের বাড়ি থেকে গয়নাগাটি, টাকাপয়সা, আসবাব ঘর ভর্তি করে এনেছে।চেয়ারম্যানের নিজেরই টাকার কোন অভাব নেই তবুও মাটিতে পা রাখতে দেয় না শ্বশুরঘরে শিউলির এমন আদর। এটাই তো জগতের নিয়ম।
অনেক টাকা নিয়ে রাহেলাও ফিরে আসবে, ছেলে মেয়েকে ভালো স্কুলে পাঠাবে, জমি জমা কিনবে , পরের বাড়িতে আর থাকবে না, জেগে জেগে সুখস্বপ্ন দেখে ওর অনেকটা সময় কেটে যায়।

৫।
মহিলাটি ওকে কি বললো রাহেলা কিছুই বুঝছিলো না। অবাক হয়ে চেয়েছিল ওর দিকে। কি অসম্ভব রূপবতী! হুরপরীর যে বর্ননা সে শুনেছে সেই হুরপরীও কি এত সুন্দর? রাস্তাঘাটে সে আর কাউকে দেখেনি , নেকাবী মহিলা সবাই।তাই এদেশের বাকি মেয়েরা কেমন হয় সে জানে না। আসা থেকে ঘরে একরকম বন্দি হয়ে আছে । বাসা অবশ্য লোকজনে ভরা ।মহিলার নিজেরও দুটি ছেলে, বাড়ির কর্তা আছে। তবে কিছুক্ষণেই বুঝলো বেটালোকটা বজ্জাত আছে, চোখের দৃষ্টি খারাপ। তার থেকে দূরে থাকতে হবে ।
ভিনদেশে মানিয়ে নেয়া কষ্টকর । ধরণ ধারণ আলাদা। সবচেয়ে বড় বাধা ভাষার। গড় সড় হতে সময় লাগছে। কাজে কর্মে যখন থাকে তখন অতটা কষ্ট হয়না, সময় কেটে যায়।অবসরে রাহেলার বুকটা মুচড়ে ওঠে। চোখের সামনে সবার মুখ ভাসে। শেফালীটা কি করছে? ইউসুফ কোন দুষ্টামী করছে না তো '' বাঁদর পোলা একটা।'' কোলের বাচ্চাটা ঠিকমত খাচ্ছে তো? লুৎফা এখন আপাতত ওদের সাথেই থাকছে ,যাবে কোথায় ? কাদের পরিষ্কার জানিয়েছে, টাকা না দেয়া হলে বউকে সে নেবেনা। অতএব ঘরদোর দেখাশোনা নিয়ে খুব চিন্তা নেই। কিন্তু... সেও তো পোয়াতি। নিজের বেহাল অবস্থায় কতটুকু কি করছে বা করতে পারছে কে জানে। আর মা তো মা-ই, ওর বাচ্চাদের জন্য কার কত দরদ খুব জানা আছে রাহেলার ।নির্ঘুম লম্বা রাতগুলোতে এপাশ ওপাশ করতে করতে কান্না পায় ওর।

আজকে সকাল থেকে সাজ সাজ রব। বড় মেহমান আসবে বাসায়, খুব তোড়জোড়। আরবীয় আতিথেয়তা সম্বন্ধে রাহেলার কোন ধারণা নেই। সে মেশিনচালিতের মত নির্দেশ মেনে কাজ করে। বাড়িতে সেই একামাত্র গৃহপরিচারিকা না, আরও কয়েকজন আছে। সবাই মিলে ঘরবার খাবারদাবার সব ব্যবস্থা পরিপাটি করার কাজে ব্যস্ত তটস্থ।

একসময় ওরা আসে। পর্দা করে তাই বাড়ির মহিলা কেউ বের হবে না।কিন্তু রাহেলাদের তো সামনে যেতেই হবে। লোকগুলোর চেহারা দেখে সে মোহিত হয়ে যায়। কেমন উঁচা লম্বা জোয়ান চেহারা। পাঁচজন পুরুষ। মহিলা কেউ নেই। দুইজনের মুখে বড় দাঁড়ি । দাঁড়িওয়ালা লোকদের রাহেলার ভালো লাগে না। বয়স্ক বয়স্ক লাগে ।তবে এদের দাঁড়ি চেহারায় দাঁড়ি নূরানী সূফী সৌন্দর্য নিয়ে এসেছে।যেমন গায়ের রং তেমন ভদ্র সৌম্য চেহারার মানুষ। হুজুরগুলান নিশ্চয়ই ওদের এই বাড়ির ব্যাটার মত বজ্জাত হবে না।কর্তা হাত নেড়ে পানীয় ঢেলে দিতে ইঙ্গিত করে। রাহেলা বিরাট ঘোমটা দিয়ে সামনে যায় । ফরমাশ মত ঢেলে দেয়। খাবারের বড় পাত্র নিয়ে যায় আসে। সবাই গম্ভীর হয়ে কি যেন আলোচনা করছে।ওর দিকে ফিরেও তাকায় না। রাহেলা একদফা পরিবেশন করে অপেক্ষায় থাকে। বাইরে এসে দাঁড়ায়। পরবর্তীতে মেহমানদের কিছু লাগতে টাগতে পারে ।ডাক পড়ামাত্রই হাজিরা দিতে হবে। অনেকক্ষণ পার হয়ে গেছে। গুজগুজ করে চাপাস্বরে আলোচনার ভাবটা আর নেই।সবাই হাসছে, উঁচু স্বরে কথা বলছে ।এতক্ষণ নীরবতার মধ্যে রাহেলা একটু অধৈর্য ও অস্থির হয়ে পড়েছিল।বিজাতীয় স্বাভাবিক গলার কথা শুনতে শুনতে ওর মানসিক চাপটা শিথিল হয়। ভিতরে ওর ডাক পরে আবার।

রাহেলা শূন্য হওয়া পাত্রে পানীয় ঢেলে দিচ্ছিলো। সৌম্য দুইজন বয়স্ক ভদ্রলোকের একজন রাহেলার দিকে তাকিয়ে গৃহকর্তার উদ্দ্যেশ্যে কি যেন বলে। উত্তরে গৃহকর্তা কি যেন বলে হেসে ওঠে। পাল্টা হাসি ফিরিয়ে দেয় বয়স্কজন ।

৬।

রাহেলা অবাক হতে ভুলে গিয়েছিল। যে হুজুর ধরণের লোকদেরকে দেখে ওর মনে সীমাহীন সম্ভ্রমভাব এসেছিল - ওদের একজনওর উপর চেপে বসেছে।ফেরেশতার মত দেখতে লোকটা -এখন যেন সাক্ষাৎ শয়তান। বাকিরা তামাশা দেখছে , হায় আল্লাহ্ কি বেশরম ! কি জঘণ্য! দেখছে কিন্তু কেউ এগিয়ে আসছে না। হাসছে, আরও কি কি বলছে। খুব বেলাজ কিছু হবে নিশ্চয়ই। ওদের অনেক কথা সে এখনো বোঝে না গৃহাস্থালী দুটা তিনটা কথা , রুটি আনাজ তরিসদাই বরতনের মধ্যেই ওর জ্ঞান সীমাবদ্ধ। কিন্তু এসব বোঝার জন্য ভাষার দরকার হয় না। বেজাতের গুষ্টি! মা'বুদ,এই সব লোক কি আসলেই মানুষ না কি অন্য কিছু ? কেমন করে এমনটা সম্ভব হতে পারে? কেমন করে?আর তার , রাহেলার জীবনেই কি এই দুঃস্বপ্ন ঘটছে? সে ছটফট করতে থাকে।সর্বশক্তিতে বাধা দেয়। কিন্তু ওর অপুষ্ট দূর্বল শরীরের বাধা হৃষ্টপুষ্ট লোকটার কাছে কিছুই না।রাহেলা চেঁচায় , প্রাণপণে চেঁচায় ।আর কিই বা সে করতে পারে?সাদা বাংলায়, ''কেউ বাঁচান আমারে...।''তারপরে ওর হুশ হয় , মাতৃভাষায় ডাকলে কেউ ওকে বাঁচাতে আসবে না। বাঁচাতে বলা'র আরবিটা কি ? সে জানে না, সে এখানে বাঁচতেই এসেছিল , তবু বাঁচাতে বলার মানে সে জানে না!ওর এও মনে হয় , ভাষা না জানলেও আর্তির ভাষা সার্বজনীন। ও যে কাঁদছে, চেঁচাচ্ছে , বিপদে পড়েছে, সে তো এ বাড়ির এতগুলো মানুষ যারা এই ঘরের বাইরে তারা সবাই বুঝতেই পারছে। সিঁড়ি দিয়ে কে যেন নামছে, কই সেই মৃদু পায়ের শব্দ তো সে স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে। তাহলে ওর আকাশ বাতাস ফাটিয়ে আর্তনাদ শুনতে কেউ পাচ্ছে্ না ! নাকি পেলেও আসবে না ?

ধাতস্থ হবার পরে রাহেলা ঠিক করলো সে পালাবে । আর লাখ টাকার দরকার নেই, পরিবারের স্বচ্ছলতার দরকার নেই, আত্নীয়তার দায় মেটানোর দরকার নেই। সে শুধু তার গরীব দেশের ততোধিক অভাবগ্রস্থ সংসারে ফিরতে চায়। সাতপাঁচ কিছু না ভেবেই সে বেরিয়ে পড়লো। এ বাড়িতে আর এক মুহূর্ত নয়।

বেপরোয়া হয়ে গেলে মানুষ পারেনা এমন কাজ নেই। তখন ভাগ্যই সামান্য হলেও কৃপাদৃষ্টি দেয়।ভাগ্যে দেশের ছেলে মইদুলের সাথে ওর যোগাযোগ হয়েছিল , ভাগ্যে ভীরু ভীরু লাজনম্র বাংলার বধূটি বাংলাদেশি দূতাবাসে এসে সাহায্য চাইতে পেরেছিল, পেয়েছিল কোনরকম আশ্রয়। ওরা দেশে যোগাযোগ করবে , পাঠানোর ব্যবস্থা হবে আশ্বাস দিয়েছে।অপেক্ষায় দিন গড়িয়ে যায় , যেতে হয় বলেই ।রাহেলার কাছে ওর নিজের জীবনটা এখন খুব বর্ণহীন লাগে।নিজের শরীরকে নোংরা তোয়ালের মত মনে হয় । প্রতিবার নিষ্পিষ্ট হবার সেই সময়টা ওর কাছে বার বার ফিরে আসে জাগরণে ও দুঃস্বপ্নে। শরীরে ঘিনঘিনে কতগুলো পোকা হেঁটে গিয়েছে এমন মনে হয়। শাড়িটা বেঁধে কোথাও ঝুলে পড়লে কেমন হয়? না , তা সে পারবে না। রাহেলা তার পৃথিবী ফেলে এসেছে দেশে। সে ওখানে ফিরবে ও বেঁচে থাকবে। টাকাপয়সার দরকার নেই। প্রয়োজন হলে ভিক্ষা বসবে, সেটাও এরচেয়ে ভালো। আচ্ছা, মজিদ কি এখন ওকে নেবে আর? ফিরে যাবার প্রবল আকাঙ্খায় এতটা তো সে ভাবেনি, ওর গায়ে কাঁটা দেয় । সে যে এখন নষ্ট মেয়েমানুষ! পুরুষমানুষ আর যাই হোক এ জিনিস মেনে নিতে পারে না। না, না মজিদ কি অত নিষ্ঠুর হবে? পনেরো বছরের সংসার , কত ভালোবাসার কথা , ঘনিষ্ঠ রাত , মমতা দিয়ে মাখা দিন- সব মিথ্যা তাহলে।সে মজিদের পায়ে পড়বে, সব কথা মানবে যদি মজিদ তাকে তার শেফালী, ইউসুফ, বারেকের কাছ থেকে আলাদা না করে। না থাক, সে বরং তাকে কিছু বললেই না, বললে যদি হিতে বিপরীত হয়? বলবে শুধু তাকে এখন থেকে যেন ফিরিয়ে নেবার ব্যবস্থা করে। বলবে , এখান তাকে খেতে দেয়া হয় না। মারধোর করে ..আরও কিছু বানিয়ে বলবে, যা খুশি, শুধু .. ঐ ঘটনাগুলো কিছুতেই বলা যাবেনা।



৭।
কতদিন কথা হয় না দেশে, সত্যের মুখোমুখি দাঁড়াতে সাহস হয়নি রাহেলার । কিন্তু কথা তো বলতেই হবে,অন্তত বলতেই হবে, ''আমারে ফিরায়া ন্যান।''নম্বর ডায়াল হয়।রাহেলার ভেবে রাখা সুচিন্তিত অজুহাত ওপাশে মজিদ মিয়ার ‘’হ্যালো’’ শোনার সাথে সাথে এলোমেলো হয়ে যায়। রাহেলা ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে।কাঁদতেই থাকে অনেকক্ষণ ধরে। মজিদ মিয়া বিমূঢ় হয়ে থাকে ওপাশে। একসময় নিজেকে সামলিয়ে রাহেলা বলে ওঠে, ‘’ শেফালীর বাপ, আপনে আমারে এহান থেইকা লয়্যা যান।‘’ মজিদ মিয়া স্তম্ভিত হয়ে যায়। থেমে থেমে রাহেলা বিস্তারিত খুলে বলে । কিছুই সে লুকিয়ে রাখতে পারে না। মনের কথা নিজের স্বামীকেও না বললে আর বলবে কাকে?মজিদ শোনার পরে যা ইচ্ছা করুক।

মজিদ মিয়া কিছুক্ষণ থম মেরে থাকে। এই জন্য সে বিদেশে পাঠিয়ে ছিল পরিবার ?টাকা দূরে থাক মানইজ্জত সব গেল। গরীবের ইজ্জত ছাড়া আর কি আছে? বকরের উপর তার সব রাগ গিয়ে পড়ে। হারামীর পোলা একটা । এখন কি করা? রাহেলাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। কিভাবে যে কি করতে হয় তাও সে তো কিছুই জানে না। এ কি অচিন্তনীয় বিপদ। বউয়ের গয়না যৎসামান্য বেচে ধারের উপর আরও ধার, ……আরও টাকা লাগবে নিশ্চয়ই।চোখে অন্ধকার দেখে সে।

৮।

অনেক কাঠখড় পুঁইয়ে অবশেষে রাহেলা দেশে ফিরেছে। ওর সাত কপালের ভাগ্য মজিদ মিয়া ওকে ত্যাগ করে নি। রাহেলার কাছে এটাই যথেষ্ট। ''খবরদার কাউরে কইবি না কি হইছিলো।'' রাহেলা মাথা নাড়ে।এমনিতেও সে মরে গেলেও সেই লজ্জার কথা প্রকাশ করতে পারবে না , মজিদ মিয়ার নিষেধ করার দরকার ছিলো না। মলিনমুখে সে ঘরে বসে থাকে । আত্নীয় পড়শী দরকারের সময় কাউকে না পাওয়া যাক, এখন আসে । ঠারে ঠোরে কাহিনী কি জিজ্ঞেস করে ।ও চুপ করে মনে মনে গুমড়ায়।মজিদ মিয়ার অন্য চিন্তা। শুধু ভাবাবেগ নিয়ে থাকলে তার চলে না। কতগুলো টাকা বেরিয়ে গেল, বউ কেলেঙ্কারী করে খালিহাতে ফিরে এসেছে। পয়সা লাগবে ,পয়সা- এটাই শেষ কথা।আশু সঙ্কটের উপায় হিসেবে পাড়াতো কুদ্দুসের মা ছুটা কাজ জুটিয়ে দিল।


সবার খাওয়া শেষ,রাহেলা ডেকচিটা উপুড় করে অবশিষ্ট সবটুকু ভাত কাঁছিয়ে খায়। অনেক ক্লান্ত লাগছে । প্রতিটা দিন উদয়স্ত কাজ করে আজকাল শরীর ভেঙে আসে। একক সংসারে শ্বশুড় শাশুড়ী ননদ দেবর টানতে অভ্যাস নেই, এখন দুইদুটি সংসারের সব কাজ করতে হয়। প্রতিদিন রাতে শুয়ে চিন্তা করতে ভালো লাগে ,কাল যদি কাজ না থাকতো! তা তো হবার না। নিজের সংসারের কাজ থেকেও তার আমৃত্যু যেমন ছুটি নেই , এখন পরের বাসায় কাজও অনির্দিষ্টকাল ধরে বিনাছুটিতে ওকে টানতেই হবে।

ঘরে নিলেও মনের ঘেন্নায় অনেকদিন মজিদ মিয়া ওকে ছোঁয় নি। আজকে অনেকদিন পরে একটু বেশিই সোহাগ দেখায় সে। ক্লান্তিতে সাড়া দিতে চায় না রাহেলার নিজের শরীর।
''কি অইলো?''
'' রাইত অনেক হইছে, কাইল কামে যাওয়া লাগবো না? ঘুমান।''

মজিদ মিয়া হাসে।রাহেলাকে আরও কাছে টেনে তরল গলায় বলে ''কাইল তো ছুটি শেফালীর মা।''
''ছুটি ! কিয়ের ছুটি?'' ''কাইল তো শুক্কুরবার না।''

''কাইল মে মাসের পয়লা দিন। ঐ কি জানি কয়..।হ্যাঁ..’’মে দিবসে’’র ছুটি।''

''মানে? ঐদিন আবার ছুটি ক্যানা?''
'
'ঐ যে লেবার যারা কি জানি কয়-বেবাক ''শ্রমিক''গো জন্য এই দিন ছুটি।''
''শ্রমিক...।মানে আমরা -যারা গতর খাইটা কামাই -''
''তাইলে তো আমরাও লেবার। গতর তো আমরাও খাটাই ।আমগোর ছুটি নাই ক্যান?'' রাহেলা আনমনে প্রশ্ন করে।
''কাইল না গেলে কালকের দিন কাইট্যা খালাম্মা বেতন দিবো। আগেও এমন করছে, জ্বরের সময়ত কামাই যখন দিছিলাম...।''

''ধুর , তোগের কাম আবার লেবারের কাম নাকি? ওইগুলো তো ঘরের কামকাইজ।বেবাক মাইয়্যামানষেই করে। ফ্যাক্টরি কারখানা এইসবের কাম হইল শ্রমিকের কাম , লেবার হইলাম আমরা।গতর তো আমরা খাটাই। আমাদের মত কাম করলে বুঝতি কেমুন কষ্ট..।''

সত্যি?রাহেলা বিমর্ষ হয়,শেফালীর বাপের কথা হয়ত সত্যি। লেবার মানে বাইরে গতর খাটানো পেশিবহুল মেহনতি মানুষ, তার কাজে তো হাড়ভাঙা খাটুনির কিছু নেই। বাসাবাড়ির কাজ আবার একটা কাজ হলো... বিশেষ করে মেয়েমানুষের এ জিনিস জন্ম থেকেই শেখা হয়ে থাকে। ওদের পাশের বাড়ির রোমেলা, শিফুর মত গার্মেন্টে কাম করলেও নাহয় একটা কথা ছিল...।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফেরদৌস আলম পরিচিত প্লটে এত অসম্ভব সুন্দর শব্দমালার চমৎকারিত্ব, মুগ্ধ না হয়ে পারলাম না। অসাধারণ লেগেছে তনিমা আপু।
সালমা আক্তার khub valo golpo likhechen apu, sobo kamna rollo.
রুহুল আমীন রাজু hotath theme geleo golpota valo legeche amar.samne aro valo hobe asha kori.shuveccha.
সেলিনা ইসলাম শেষের প্যারায় রাহেলার অনুভূতি আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে বেশিরভাগ পুরুষেরই ধারনায় এটা যেন চিরন্তন সত্য। খুব ভালো লাগল গল্প। যদিও এত বড় পরিসরের পটভূমিকে ছোট গল্পে রূপ দেয়া অনেক দুঃসাধ্য কাজ। যা লেখক সার্থকভাবেই তুলে ধরেছেন গল্পে। আমার কাছে গল্পটি খুব ভালো লেগেছে। সতত শুভকামনা রইল।
শামীম খান দারুন গল্প লিখেছেন আপু । একই আসমানের নীচে , বিচারের মানদণ্ড ভিন্ন ভিন্ন । শুভ কামনা আর ভোট রইল ।
অজস্র ধন্যবাদ মূল্যবান মতামতে,শুভ কামনা রইলো আপনার প্রতিও।
ইমরানুল হক বেলাল asadaron ekti golpo likchen tonima. amader desher samajer kichu kichu meyeder jibon amonoi hoy. aponar leknite ekti bastobotar rup fute useche. donnobad sobokamona roilo.
ধন্যবাদ ভাই। মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পেলাম খুব। ভালো থাকবেন।
কেতকী ঘরের কাজের কোন ছুটি নেই, মূল্যও নেই। পরিচিত বাস্তবতার গল্পে ভোট রইল।
ধন্যবাদ । ঘরের কাজের মূল্যায়ণ কোন কালেই নেই।এমনকি অর্থমূল্য যুক্ত হলেও তাচ্ছিল্য তার সাথে মিশে থাকে।
শাহ আজিজ থেমে গেল কেন। ভালই লাগছিল গল্পটা ।
শব্দসংখ্যা সীমার উপরে চলে যাচ্ছিল ভাই। তাছড়া বক্তব্য বলা হয়ে গেলেই শেষ করা দেয়া ভালো, তাইনা? ধন্যবাদ ,মন্তব্যে প্রেরণা পেলাম।
আহা রুবন কুদ্দুসের মা একটা ছুটা কাজ জুটিয়ে দিলে রাহেলা যে তার পুরতন জীবনেই ফেরত যায়, এখানে গল্পটা শেষ করে দিলেই চলত। শেষের দিকে ঝুলে পড়েছে। চমৎকার গল্প, সঙ্গে ভোট।
হুম উপরে ফাহমিদা আপুর কমেন্টেও তাই মনে হল। তবে আমি আসলে একজন রাহেলার জীবনের বিবর্তন তুলে আনতে চেয়েছি। বাইরের ও ভিতরের।যা বাইরে দেখা যায় তা আমরা সবাই দেখি। ভিতরে আমাদের রাহেলারা কি ভাবে? সত্যি বলতে ঝুলে যাওয়া শেষাংশটুকু ভেবেই আমি বাকিটা সাজিয়েছি। ভালো না হলেও পরবর্তীতে আরো গুছিয়ে তোলার চেষ্টা করবো। মতামতে অসংখ্য ধন্যবাদ।
মোহাঃ ফখরুল আলম পড়ে খুব ভাল লাগল। ভোট দিয়ে ফেললাম।

১৪ সেপ্টেম্বর - ২০১৫ গল্প/কবিতা: ১১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪