একটি অপয়া মানুষ ও বিবিধ বোধোদয়

উপলব্ধি (এপ্রিল ২০১৬)

রেজওয়ানা আলী তনিমা
মোট ভোট ২০ প্রাপ্ত পয়েন্ট ৫.৮
  • ১৮
  • ৮১
শওকত উদ্দেশ্যহীন হয়ে অনেকক্ষণ রাস্তায় হাঁটছিল। না, ঠিক উদ্দেশ্যহীন কি?মনের গোপনে একটা উদ্দেশ্য তো ঠিকই ছিল।একটি খারাপ কাজ সে করতে যাচ্ছে। সামাজিক বা ধর্মীয় দৃষ্টিতে আপাত ভাবে খুব গর্হিত হয়ত হবে , তাতে কি ?ফেরার পথ এখন বন্ধ হয়ে গেছে, ফিরে করবেটা কি সে?.

সেরাতে ঘুমাতে যাবার আগেই কি ভেবেছিল শওকত তার আগামী ভোরটা কেমন বদলে যাবে? আব্বা রাতের বাসে চিটাগাং থেকে আসবেন , সকালে পৌঁছে নরম টোকা দেবেন দরজায়।এমনভাবেই হয়ে আসছে প্রতি মাসের কটা দিন। অবসরের পরেও ঠিক কাজ বন্ধ করেননি আজীবন কর্মী সিকদার সাহেব।প্রফেসরের হিসাবের জীবন । খুব কড়াক্রন্তি করে চলা , অবসরে কিছু সেমিনার সিম্পজিয়ামে ওয়ার্কশপে ডাক পান।এদেশে শিক্ষাগুরুর চেয়ে প্রফেশনাল সিঙ্গারেরও সম্মান আর সম্মানি দুইই বেশী। তবু প্রাপ্তি নামমাত্র হলেও আসা যাওয়ার ধকলে তাঁর না নেই কখনো।এ এক নেশা যেটা বাইরের কেউ বুঝবেনা।

সেদিন ভোরে খুব সুখের একটা স্বপ্ন দেখছিলো শওকত।নিম্মি তার হাত ধরে হাঁটছে। পরণে লাল শাড়ি, লম্বা চুল গুলো ছাড়া , ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে ওকে। স্বপ্নটা এত স্পষ্ট যে কিছুতেই স্বপ্ন মনে হচ্ছিলো না। মনে হচ্ছিল সত্যি। আর কি সুখী সুখী লাগছিল নিজেকে ওর সেই স্বপ্নের মধ্যেও।

সে ঘুম ভাঙলো অসময়ে ।ছুটির দিনটা একটু দেরী করে ওঠার অভ্যাস বরাবরের । কিন্তু ঐ দিনটি তো সাধারণ দিন ছিল না। ওকে কেউ ডাকেনি, ডাকার কথা কারোর মনেই হয় নি। স্রেফ মাতমের সুরে জেগে উঠলো সে। বিস্মিত ঘুমলাগা চোখে উঠানে নেমে এলো। কাপড়ে মোড়া কেউ শুয়ে আছে সেখানে। একটা লাশ। সিকদার সাহেবের! আব্বা! চমকে উঠলো শওকত। ওর মনে হতে লাগলো সে এখনও ঘুমিয়ে আছে, স্বপ্ন দেখছে । এতো সত্যি হতে পারে না! পারে কি? হয়ত ঘুমেই সুখস্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। এমন ত হামেশাই হয় ওর।
কিন্তু না, ওটা স্বপ্ন ছিলনা , সত্যিই ছিল। পিছিয়ে এসে সিঁড়ির ধাপে বসে পড়ে সে। শোকাকুল মায়ের মাথা ঝুলে ওর ঘাড় স্পর্শ করলে চেতনা ফিরে আসে ওর। সেই শুরু, তারপরে বড় ছেলে হিসেবে পরিবারের সবাই ওর নাপোক্ত কাঁধে চেপে বসেছে। বড় সন্তান হবার বড় জ্বালা। জোয়াল কাঁধে রাতারাতি নবীন ছেলেটাও বুড়িয়ে ওঠে। অনার্স শেষ করলো কোনমতে, না করে চাকরি পাওয়া যাবে না কোথাও । পাওয়া গেলে অনার্সটাও হতো কিনা সন্দেহ। বাবার আয় সীমিত ছিল , তবু কিভাবে কিভাবে সংসারের ব্যয়নির্বাহ হয়ে যেতো সেই সময়টার আগে শওকত কোনদিন জানতে পারেনি।তখন জানতেই হল। পেনশনের যথাকিঞ্চিত আয় , বাবার এখানে সেখানে কর্মশালা, লেকচার, ট্রেনিং, ইত্যাদির সাথে দেশের সামান্য পৈত্রিক জমি। সেটা অনভিজ্ঞ পেয়ে চাচারা নির্লজ্জ্ব গাপ করে দিল ।কদিন সোজা সরল শওকতের আরও কিছু শক্তি আর অর্থক্ষয় ছাড়া কিছু হলো না। চাচারা ঝানু । তাদের সাথে সে পারে? ধাক্কাটা মধ্যবিত্ত শওকতের পরিবারের জন্য রীতিমত হতাশার ছিলো।বাবা যে কি বাবা না থাকলেই শুধু বোঝা যায়। চূড়ান্ত পরাজয়ের দিনটিতে সম্পত্তি খুঁইয়ে নিজের ঘরে এসে একান্তে লুকিয়ে ওর চোখে দুইফোঁটা পানি বেরিয়ে এসেছিল। বাবার মৃত্যুর দিনও শওকত কাঁদেনি।অথচ কাঁদল বাবার রেখে যাওয়া পুরুষানুক্রমিক সম্পত্তি হাতছাড়া হয়ে যাবার পর! সম্পত্তির মায়া কি এত বড় ?সবসময় দূরত্ব বজায় রেখে চলা আব্বাকে কখনো বোঝেনি সে, কাঠিন্যর আড়ালে কত মমতা থাকলে লোভী শ্বাপদ মানুষের সংসারে পরিবারকে এভাবে টেনে চলা যায়। গাম্ভীর্য ছিল, অভাব ছিল না জনকের ভালোবাসায়।

………………………..
শওকতের গোটা পাঁচেক টিউশনি একটু আয় দিতো। দিনের শেষটা ছিলো এইটের রুমকির।বাকিগুলো খেটে ওদের ঘরে দরজা পেরিয়ে ঢুকতে সময়ে গায়ে বিন্দুমাত্র শক্তি পেত না সে।ঢুকেই মেয়েটাকে বলতো, ‘এক গ্লাস পানি দিতে বল তো। ‘এক ঢোকে শেষ করে অর্ধভুক্ত দিনটার গ্লানি ক্ষয় করতো। তারপরে পড়াতো।ক্লান্তি ওকে আঁকুপাঁকু জড়িয়ে ধরতো। মেয়েটার মাথা কি মোটা! বিরক্ত লাগতো শওকতের , এত বার বোঝাচ্ছি এই সামান্য জিনিসটাও বোঝো না কেন?
রুমকি একবার চোখ তুলে তাকিয়েই ঘাড় গুঁজে বইয়ে ঝুঁকে পড়তো।
ওর চোখে দুই ফোঁটা পানি , স্যার টের পাওয়ার আগেই মুছে নিতো সে। জগৎঅনভিজ্ঞ কিশোরীরা অকারণে বড় সেনসিটিভ হয়।
সদাবিনীত শওকতের ব্যবহার ক্রমশ রুক্ষ হয়ে উঠছিলো।নিজের ব্যর্থ ভারবাহী জীবনের ঝালে অধৈর্য। সুযোগমত কোথাও ঢেলে দিতে পারলে আশীবিষের জ্বালা বোধহয় কমে।আলুনি রুটিনের ব্যতিক্রম হল একদিন।কি ভীষণ আনন্দের সেই ব্যাতিক্রম। অলস এক দুপুরে ফোন বাজলো, ‘হ্যালো , শওকত হোসেন বলছেন?’
‘হায়দার এন্টারপ্রাইজ থেকে বলছি। গত মাসের উনিশ তারিখে যে জুনিয়ার এক্সিকিউটিভ পদের জন্য ভাইভা দিলেন, দম নিয়ে বলে কন্ঠস্বর , চাকরিটা আপনার হয়েছে। জয়েনিং ২৬ শে, মানে পরশু।’
শোনার পর থেকে শওকতের পা মাটিতে পড়ছিলো না। বুকে খুশির মাদল। অনার্স পাস করে তিন বছর ফ্যা ফ্যা করে ঘুরেছে সে, কার না কাছে গিয়েছে। পায়ে ধরাটাই বাকি ছিল।
পরিবারের বড় ছেলের দায় কুব্জ করে রেখেছে ওকে। আজকাল ধরাধরি ছাড়া কেউ পোঁছে না।কোথাও কালেভদ্রে ডাকলে ইন্টারভিউ দিয়ে আসার পর রোকেয়া বানু জিজ্ঞেস করেছেন , বাবা, কেমন হলো?আশা আর আশঙ্কা দুটোই তাতে টের পাওয়া গিয়েছে। অনুচ্চারিত অভিযোগও। পড়শীর ছেলেটা বিসিএস প্রশাসনে , খালাতো ভাই কলেজের লেকচারার। জন্ম বাউন্ডলে চাচাতো ভাইও ব্যাংকে । খালি তুই-ই কেন আজো....?
সেই অপমানাহত বেকার জীবনের গ্লানি ধুঁয়ে চাকরি পাবার দুপুরটা ঝলমলিয়ে উঠলো !


………………………
শওকত অনেকদূর চলে এসেছে। একটা সিগারেট ধরালো। এটাই শেষ , আর খাবেনা কখনো। নিকোটিনে বৈরাগ্য আগে কখনো আসেনি, এখন যখন জীবনে বৈরাগ্য তখন সামান্য অগ্নিশলাকা আর কি ছাড়!
……………….........
মধ্যবিত্তের চাকরির আহ্লাদী ফানুশ ততক্ষণ থাকে যতক্ষণ চাকরিটা না হয়। টিউশনি করে হাজার এগারো টাকা আয় হতো , চাকরি স্টার্টিং ছয়।কি ফানি! শওকত ভাবে। তবু বাঙালির কাছে টিউশনি কোন প্রফেশনই না, সেটার ভরসা কি ? ধরা যাক , লাস্ট ডে পড়ালাম ঐ রুমকিকে , আজকেই যেকটা দিন হয়েছে টাকা ধরিয়ে রুমকির মা অনায়াসে বলতে পারেন আমাকে , কাল থেকে আর আসতে হবেনা। কিন্তু এই যে কেরানির হালচষা চাকরি সেটাতেও তো সিরাজ সাহেব আমাকে অনায়াসে বলতে পারেন, শওকত আপনাকে আর কাল থেকে দরকার নেই। কোন বাধা আছে কি? না , দুটার মাঝে তাহলে তো কোনই তফাৎ নেই। তফাৎ শুধু লোকদেখানো সামাজিক মর্যাদার। কেরানির পরিচয়টা যে স্বচ্ছন্দে দেয়া যায় সেটা টিউটর পারে না, বাড়তি সামাজিক মর্যাদার অর্থমূল্য শোধ হয় টিউশনির এগারো মাইনাস ছয়ের অঙ্ক থেকে । হাস্যকর না করুণ?
…………………………….
আম্মার শরীরটা বেশ কিছুদিন ধরে খারাপ । রোকেয়া কিছু বলেন নি শওকতকে। চেপে গিয়েছিলেন। এক শুক্রবারে দোরের কাছে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন । সুমি রান্নাঘরে গিয়ে একেবারের মায়ের উপরেই হুমড়ি খেয়ে পরে গেল। 'ভাইয়া', চিৎকারে সচকিত হলো শওকত।' কি হয়েছে ? '
তারপরে হাসপাতাল , ফিনাইলের গন্ধঘেরা আবছা জগৎ।মাথা ঘুরানোর কারণ অপুষ্ট দূর্বলতা। ডাক্তারি পরীক্ষার সুযোগে ধরা পড়লো লিউকেমিয়াও । বজ্রাঘাত পড়লে এর চেয়ে ঢের ভালো হতো। সবাই একেবারে শেষ হয়ে যেত। এখন উপায় কি?
শওকত পেপার বেছে ফোন দিলো। 'টিউটর লাগবে?'
' কোয়ালিফিকেশন ?'
'…..ওহ, আমরা আসলে স্টুডেন্ট প্রেফার করি। বিশেষ করে বুয়েট , ঢাবি এইসব। আপনার তো গ্যাপ আছে, তায় কলেজ ...এখন নতুন কারিকুলাম, বোঝেনই তো।'
হুম শওকত সবই বোঝে , কিন্তু দূর্ভাগ্যগুলো কেন না বুঝে এই বহন করতে অক্ষম হতভাগাটার উপরেই এসে পড়ে?
বাধ্য হয়ে অফিসেই মুখ ফুটে বলে ফেললো শওকত।নকিব ভাই , শামসু ভাই প্লিজ একটা টিইশনি দেখে দিন না।
বলেন কি ? এমন সারাদিন খেটেও আবার টিউশনি। বিয়েটিয়েও তো করেননি। এত টাকা লাগে ? জিএফের পিছনে ঢালবেন বুঝি? বক্রোক্তি জোটে, কাজ না।
অবশেষে জুটোলো অনেকচেষ্টায় । লতাপাতায় আত্নীয়ের।সম্পর্ক বলেই দরকার বেশী হলেও দর কম। তবু বাড়তি কিছু টাকার বন্দোবস্ত আপাতত।
………………………………
গতকাল মাকে দেখে এসেছে । হাসপাতালের বেডে করুণ দেখাচ্ছিল দৃঢ় মুখটা। শক্ত হাতে এতদিন সবাইকে সামলে এসেছে বলেইনা এই অসহায় চেহারা এতদিন ওদের অজানা ছিল।
এর ঠিক দুই দিন আগের ঘটনা। হাসপাতাল থেকে ফিরে আসছিল বাসায় ।ওখানে ছোটটা -সৈকত আছে আপাতত, চিন্তা নেই। বাসায় ফিরতে শিখা চা বানিয়ে দিল। চুমুক দিয়ে যাচ্ছিল। চাপা ফোঁপানোর শব্দ ….। পা টিপে মায়ের রুমের দরজাটা খুললো।শিখা টেবিলের উপর মাথা রেখে কাঁদছে। তার ইমিডিয়েট ছোট এই বোনটা বড় রূপসী।এখন কি অসহায় লাগছে , বিশ্রীও। দূর্বল মানুষের মধ্যে কোন সৌন্দর্য থাকে না।
'কি হয়েছে রে?' খুব অবসন্ন লাগে ওর। আবার নতুন কোন সমস্যা নিশ্চয়ই। শুনতে ভালো লাগে না। তবু জানতে চাইতে হয়।
'ভাইয়া, জাহাঙ্গির বলেছে আমি রাজি না হলে তুলে নিয়ে যাবে।'
'কে জাহাঙ্গীর ? '' কি ব্যাপারে ? কি হয়েছে?' থতমত শওকতের মুখ দিয়ে যন্ত্রতাড়িতের মত বের হয় ।
'বিশ্ব বখাটে ভাইয়া। ওর অনেক শক্ত কানেকশন আছে। মামা এমপি।'
ভাইবোন অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে থাকে। কি করবে শওকত ? কোন বানানো ভরসার কথা বলবে ? শিখার বিয়ের বয়স হয়নি তবু প্রথমেই এই পরিস্থিতিতে আপদ বিদায় করার কথাই মনে আসে ওর। বোনকে ও শিক্ষিত সাবলম্বী করবে -এই পণে বাধা আসলে সংস্কার কিংবা সহজ সমাধান বিজয়ী হয়। কিন্তু সেটাও এখন সংসারের এই অবস্থায় অসম্ভব যে!
বিপদ কখনো একা আসে না।
আম্মার অসুখে শওকত পাগলের মতো সাধ্যমত টাকা ঢালছে। বড়মামার বাসায় গিয়েছিল একদিন।। অনেকক্ষণ বসে রইলো। আচ্ছা , টাকা যখন মানুষ ধার নিতে আস তখন কি তাদের দেখেই গরিবী বোঝা যায়? কি অবহেলা করে ওকে শুকনা মুখে বসিয়ে রাখা হলো! সে সবচেয়ে ভালো শার্টটা পড়ে গিয়েছিল। মামার বাড়ি অভিজাত এলাকায়। ওদের মত টিনের চালের না। এলেবেলে ভাবে যেতে লজ্জা লাগে। ধার সে আরো কয়েকজায়গায় চেয়ে ফেলেছে। স্বল্প অভিজ্ঞতায় জানে চাইতে হবে এমন ভাবে যেন আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই চুকিয়ে দেবে। আজকাল জিভের জড়তা দ্রুত কেটে আসছে। দরকার পড়লে সে হয়ত কিছুদিন পরে ভিক্ষাও চাইতে পারবে। শওকত লম্বা অপেক্ষায় বসে চিন্তা করে, এই যে নিচ্ছে আদৌ কি চুকানো হবে দেনা? আব্বার জানাজার নামাজে রইসউদ্দিন ইমামতি করেন।গমগমে গলায় বলেছিলেন, ‘মরহুমের কাছে কারো কি কোন পাওনা আছে? ‘থেমে থেমে মাইকে কয়েকবার ঘোষণা হয়েছিল। ইমামের লম্বা দোয়া কথাবার্তায় ভারি ছিল। ‘ আল্লাহ্পাক বলেছেন তিনি আর সব পাপ মাফ করে দিবেন , কিন্তু বান্দার ঋণ ,হকের মাফ হবেনা।‘ তার এখন কতখানে দেনা জমছে হিসাবও নেই, কালই যদি মরে যায়?আচ্ছা ,সে তো তেমন কিছু ধার্মিকও নয়, এসব কথা মনে আসছে কেন? রোগেশোকে মন দূর্বল বলে?

………………………..
সকালে খুব কাহিল লাগছিল। নতুন কথা না। রাতে টিউশনি সেরে ফিরতে আজকাল শরীর ভেঙে আসে। গতকাল হাসপাতালে গিয়েছিল ফেরার পথে। প্রতিদিন যাওয়া হয় না।ডাক্তারের সাথেও কথা হলো।
' শুনুন, কেমো দেয়া হচ্ছে কিন্তু বডি কোঅপারেশন করছে না। বোনম্যারেো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। কিছু দিন পরে করা হবে তবে অপারেশনের প্রস্তুতি আছে। তাছাড়া ডোনার লাগবে।'
'আমার আর আম্মার রক্তের গ্রুপ এক।ডোনারের সমস্যা নেই।' শওকতের উদ্বেগ অন্যখানে। 'খরচ ?'
' মিনিমাম ছয়লাখ। জটিলতা নাহলে আরো কম লাগতো।তারপরেও আমাদের এখানে মোটামুটি চিপ।।'
শওকত কিছু না বলে বাইরে বেরিয়ে আসে। ওর মাথা ঘুরছে।
বাসায় এসে না খেয়ে শুয়ে পরেছিল । শিখার ডাকাডাকিতে কান দেয়নি। অবাক হবার কিছু নেই সকালে আরো খারাপ লাগবে। লম্বা সময়ের অনাহার বিচ্ছিরি অবসাদ এনেছে শরীরে।
কিছু কোন মতে খেয়ে অফিসে এল। চেয়ারে বসার পড়ে হঠাৎ ওর মন ভালো হয়ে গেল। মাহী এসেছে।
'এত সকালে? '
'কি হয়েছে? কোন দুঃসংবাদ?'
মাহী চুপ থাকে।' চল , বাইরে যাই, চা খাবে?'
ওরা বাইরের ছোট দোকানটায় গিয়ে বসে। বয় চা দিয়ে যায়। মাহী দুটা চুমুক দিয়েই নামিয়ে রাখে। ওড়নার প্রান্ত নিয়ে নাড়াচাড়া করে । দেরী হয়ে যাচ্ছে তো .., শওকত উশখুশ করে অথচ মনে চাপা দুশ্চিন্তা।
এত চিন্তা টেনে টেনে ওর ক্লান্ত মস্তিষ্ক হঠাৎ স্থবির হয়ে যায়।
'শওকত শোন ,....আমার .. আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। বাসা থেকে খুব চাপ দিচ্ছিল। বাবা স্ট্রোক করেছে জানো তো সব। আমরা অনেকগুলো বোন , একটা ভাই নেই। আমি বড় হিসেবে ...।সবসময় শুধু নিজের কথা ভাবা যায় না। ছেলে ভালো পেয়ে...... মা খুব কান্নাকাটি করছিল। আর কি কি যেন বলে যায় মাহী ।শওকত আর কিছু শুনতে চায় না। মাহী চলে যায় একসময়। পিছু ফিরে আর চায় না। পিছুটান রেখে যাওয়া মানুষগুলো কখনো সুখী হয় না তাই।
শওকত চুপচাপ কাজে ফেরে। বুকে ভেতর গুড়িয়ে যাওয়া পাঁজরের চাপ। কি কষ্ট !এমনই কেন হলো? কেন আবার এমনই সময়? কতখানি দুঃখযন্ত্রণা মানুষ একটা নির্দিষ্ট সময়ে নিতে পারে উপরওয়ালা কি তার সেই পরীক্ষা নিচ্ছেন? মাহীকে এখন যে ওর খুব দরকার ছিল।ওহ এ কেমন স্বার্থপরের চিন্তা। মাহীর মত সেও তো আত্নকেন্দ্রিকই বনে গেল তাহলে। ও যা ঠিক করেছে । অলুক্ষুণে একজন সব- ভুল মানুষের জীবনের সাথে লেপ্টে থাকার কোন মানে হয় না।নিম্নিকে ভালোলাগার কথা কখনো সে বলতে পারেনি, মাহীকে আঁকড়ে আবার স্বপ্ন দেখতে চেয়েছিল সেটাও গেল।বন্ধ্যা জীবন...।

ওদের প্রতিষ্ঠানে ইদানিং খুব ফিসফাস। লোক ছাঁটাই হবে। কাজকাম মন্দা। যা রটে কিছুটা হলেও তো বটে। সবাই তটস্থ। শওকতও। কেরানির টিপটিপে প্রাণের ভিতর ভয় । মাহীর ব্যাপারটা যথাসম্ভব মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে বা ঝেড়ে ফেলার ভাব করে দ্রুত হাতে কম্পিউটারে ডাটা ইনপুট দিতে থাকে শওকত। বেশী দ্রুত দিতে গিয়ে আবার হাত কেঁপে উঠে কিছু ভুল হয়ে যায়। কপাল! এখন ম্যানেজারের সাথে দরবার করতে হবে। নতুন সফটওয়্যারে কিছু ভুল হলে কারেকশন অনেক ঝামেলা, ডিলিট হলেও লাল হয়ে থাকে নতুন ইনপুট। জবাবদিহী করতে জান যায়। দুরু দুরু বুকে কাজ করতে থাকে শওকত। বড় সাহেবদের মিটিং চলছে কিছু দিন । সবার ধারণা এই থেকেই তাদের ভাগ্য নির্ধারিত হবে। এখন এই তুচ্ছ কারণে ম্যানেজারকে কিছু বলা যাবে না। হন্তদন্ত হয়ে বোর্ড মেম্বারদের পান ভোজন সংক্রান্ত ছোটখাট বিষয়ে পুরো দৌড়ের উপর থাকা ম্যানেজারের দিকে আড়চোখে চেয়ে শওকত ঠিক করে, স্যারের একটু মন মেজাজ ভালো থাকলে সেসময় যাবে।
……………………..
ব্রেক টাইমটা আজকে অন্য দিনের চেয়ে আলাদা। এমনিতে প্রাইভেট কোম্পানিতে ব্রেকটাইম বলে কিছু নেই। তবে অলিখিত একটা বিরতি ধরে যে যখন পারে খেয়ে নেয়। আজকে কেউ নড়ছেনা।মাইনুল সাহেবের ঘন্টায় ঘন্টায় পান খাওয়া অভ্যাস। আজকে সেই সকালের পরে থেকে একটাও পান খাননি। সাগর চেইন স্মোকার । আজকে একটাও নিকোটিন না টেনে চলছে তার বেশ।বেখেয়ালী শওকত নিজের জ্বালায় জ্বলছে । কিন্তু টেনশনের ত্বড়িৎবাহ সে টের পায় আশেপাশে না তাকিয়েও। হাওয়ায় গোলমালের ছাপ।
দুটার দিকে সবার ভিড় ভেঙে পড়লো নোটিশ বোর্ডে । ছাঁটাইয়ের লিস্টে নিজের নামটা দেখে পুরো দুনিয়া উল্টা ঘুরে গিয়েছিল শওকতের । হঠাৎ সব অন্ধকার হয়ে গেল। হাত পা কিছু একটা চালিয়ে নিজের মনের অবচেতনে কিছু একটা অবলম্বন খুঁজলো সে। কিছু মেলে না। সব হাত থেকে পিছলে পিছলে যাচ্ছে। হইহই শব্দ ।
‘কি হয়েছে ? কি হয়েছে?’
' মাথায় পানি ঢালো ' ,বললো একজন।
' ব্যাপার কী?' ফিসফিস আরেকটা একটা কন্ঠ জবাব দেয় ,' কাটা পড়েছেরে। '
খাঁড়ার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া সৌভাগ্যবান আফসোসের চুকচুক শব্দ তোলে। আরো কিছু বাদ পড়া কালো মুখ কাচের চোখ পেতে দেখে। সরওয়ার ভাই মিহিন হেসে বলেন, কিছু ভাববে না শওকত। আমরা আছি কি করতে? এমপ্লয়ি ল বলে তো একটা কিছু আছে , নাকি? এত সহজ কাউকে ঝেড়ে ফেলা? মগের মুল্লুক ?
শওকত বোবা মুখে সব শোনে। সে জানে কেউ কিচ্ছু বলবে না, প্রতিবাদ হবে না। সব ছাপোষা প্রাণী। ট্যাঁ ফোঁ করতে গেলে নিজের ঘাড়েই যে পড়বে।

নিসাড় বেরিয়ে আসলো সে, আজ আর কাউকে কিছু বলে যাবার ব্যাপার নেই। অন্যদিন দুপুরে একটা বার শাহেদ , ফেরদৌস, শিশিরদের সাথে মিলে চা খেতে কি টিপে টিপে বের হওয়া লাগতো ! পরিপূর্ন শূন্যতার মধ্যেও অদ্ভূত এক ধরণের শান্তি আছে।সব না হারালে টের পাওয়া যায় না।গন্তব্যহীন হেঁটে উত্তরার দিকে জ্যামে আটকে থাকা একটা গাড়িকে পেরিয়ে এলো, দুটি ছেলে মেয়ে গাড়ির ভেতরে বসে অন্তরঙ্গ দৃশ্যের অভিনয়ে ব্যস্ত। অভিনয়ই তো। এখন ওর কাছে সবই রঙ্গমঞ্চের চিত্রায়ন । গাড়িতে গান বাজছে , শব্দে চারপাশ প্রকম্পিত। যানজটের ঢিমে চলায় সুপারফাস্ট শহরে কচ্ছপের মত হেঁটে চলা মানুষ হারিয়ে দেয় খরগোশ গাড়িগুলোকে।যুগলের দৃশ্যটা চোখের সামনে থেকে মুছে গেছে অনেকক্ষণ । নিজের চূড়ান্ত দৃশ্যের অভিনয়ের অন্তিম সময় ঘনিয়ে এলে শওকতের মনে এখনও ঘটনাটার ছাপ কিন্তু এখনও লেগে আছে। কি রঙিন সুখের জীবন কিছু মানুষের, আর কিছু মানুষের জীবন কি অর্থহীন! যাহোক , তার সমস্যা এখন থেকে অতীতের বিষয় হয়ে যাবে। দুনিয়ার সব সমস্যা নিয়ে সে আর বেঁচে থাকবে না ঠিক করেছে। কেন তাকেই সব বোঝা নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে? ঐ যে ভ্যানে চড়ে যাওয়া কিশোরীর দলের তো কারো কোন সমস্যা নেই, দিব্যি কাগজের পাতমোড়া আচার চাখছে। আর তার শিখার সমস্যা জীবন মরণ। কালো বোরখা বর্ষীয়সী মহিলার বলিরেখায় নিরুদ্বিগ্ন অবসরের ছাপ, আর তার নিজের মা ধুঁকছে । তার নিজের জীবনে মান নেই, ধন নেই , প্রেম নেই, কিস্যু নেই। অবিচারক স্রষ্টার উপর অভিমান ওর গলায় গুটি পাকিয়ে চিৎকার করে উঠতে চায় ।এমন নেই -মানব কেন তাকে তিনি বানালেন?কেন? প্রতিটি নিস্পাপ ভোরে বাবার সুললিল কন্ঠে শওকতের মুছে যাওয়া স্বপ্নের মত মনে পড়ে , ভোরবেলার তেলওয়াতর বাণী,' অতএব (হে জিন ও মানুষ!) তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করবে?' আব্বা শিখিছিলেন খুব যত্ন করে তাঁর প্রিয় সূরা আর রাহমানের অর্থ। বিধাতার দিকে শওকত প্রশ্ন ছুড়ে দেয়, আমার কাছে কি কি নেয়ামত আছে, এসেছে, বল তুমি আল্লাহ্? জবাব মেলে না।
……………………….
শওকত শহর ছাড়িয়ে বাইরের দিকে চলে এসেছে । গাজীপুরের দিকের রাস্তা পার হয়ে আরো গভীরে চলে যাচ্ছে নদীর মত প্রশস্ত পথ। এতক্ষণে উপযুক্ত জায়গা পাওয়া গেছে। খাঁজে খাঁজে পা রেখে সে উঠবে সেতু বেঁধে চলা দেয়ালের গায়ে , ঝাঁপ দেবে, পড়বে , ডুবে যাবে, নির্ঝঞ্জাট , বুদ্বুদের অস্ত্বিত্বের মতই দ্রুত। আহ! কতো সহজ সমাধান। জ্বালাভরা পৃথিবী থেকে চিরমুক্তি। সে আর ভার বইতে পারছে না।
শুরু একটা ধাপে আলতো পা রাখলো সে।
অকস্মাৎ গোঁ গোঁ করে তুমুল আওয়াজে ধাক্কা লাগলো বাতাসের গায় । ব্যালেন্স হারিয়ে চমকে শওকত পা হড়কে গেল।উল্টা দিকে গাড়িটার ধাক্কার প্রতিক্রিয়ায় ছিটকে পড়লো অন্যপাশে। কোনমতে দুটি খাঁজে আটকে ঝুলছে, সাহায্যের আশায় চেঁচাতে লাগলো। নিচে তাকিয়ে বোঁ কেরে মাথায় পাক দিল, চোখ বুজে ফেলেছে। এক লোক ঝুঁকে পড়েছে ওর চিৎকার শুনে।বহুকষ্ট করে হাত ধরে উপরে তুললো।আবার স্থির হয়ে দাঁড়ালো শওকত কনক্রিটের ভূমিতে।হাঁপাচ্ছে। দূরে ওকে নিচে ফেলে দেয়া গাড়িটা বেকায়দাভাবে অপরদিকের ব্রিজের দেয়ালে আটকে আছে।
' বড়মানুষের পোলাপান, মদ খেয়ে ফূর্তি করতে গিয়ে হুঁশ থাকে না।' শওকতের সপ্রশ্ন চোখের দিকে তাকিয়ে উত্তর দিলো লোকটা।কাছে গিয়ে উঁকি দিলো শওকত। কি আশ্চর্য! সেই যুগলটা! রাস্তায় ওদের সুখ দেখে চোখ টাঁটিয়ে গিয়েছিল ওর আর এখন ওরা এই অবস্থায়! ছেলেটি অচেতন, মেয়েটির চেতনা আছে, কিন্তু মাথা কেটে রক্ত পড়ছে। কিছু হলেই ষোলো কোটির দেশে নিমিষে ভিড় জমে তামাশা দেখতে। বেশ কিছু লোক এখানেও জমা হয়েছে। ছবি তুলছে ,ভিডিও করছে, কে জানে মুহূর্তে কি ক্যাপশনে নষ্ট সভ্যতার উত্তরাধিকারীদের ছবি ছড়িয়ে পড়বে সামাজিক যোগাযোগে। গা গুলিয়ে ওঠে শওকতের । কেন যেন! দূরে সরে আসে। এতক্ষণে একটি মুচকি হাসিও ফোটে ওর ঠোঁটের কোনায়। সে না মরতে যাচ্ছিলো? তাহলে যখন ঝুলছিল অসহায় কেন হাতজোড়া ছেড়ে নিশ্চিন্তে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারলো না? সে আসলে বাঁচতে চায়। যত দূর্যোগই থাকুক সে মরতে চায় না - স্রেফ মৃত্যুপিয়াসী মানুষের ভূমিকায় অভিনয় করেছে ।কাঁচা অভিনয়। আকাশের দিকে একনজর তাকালো শওকত। কি সুন্দর সুনীল! গাছগুলোও একটু বেশী সবুজ সবুজ লাগছে না? প্রাণের উচ্ছাস ছড়ানো এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকাই তো একটি অ-নেক বড় নেয়ামত। মৃত্যুর এত কাছাকাছি না গেলে শওকত কখনো বুঝতো কি?উফ! কি ভয়ংকর !
যাক কিছু তো ঘটেনি !সে এখন থেকে বেঁচে থাকবে, নিশ্চয়ই বেঁচে থাকবে। মনে মনে নিজের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে লাগলো,'দেখি , বিকেলে একবার কায়েস ভাইয়ের কাছে যাবো, কোচিং সেন্টার পড়াবার কাজ জুটিয়ে দেবেন বলেছিলেন। কোচিং কাজে ইনকাম বেশ ভালো। নিকুচি করি কেরানির মাছিমারা কাজের। শিখাটাকে ছোটমামার বাড়িতে কিছুদিনের জন্য পায়ে ধরে হলেও রেখে আসতে হবে, পরে দেখা যাক। মায়ের গয়নাগুলো আপাতত যাবে, গেলইবা। তার অনাগত বউয়ের জন্য সযত্নে রাখা গয়নাগুলোতে আপাতত হক তার নিজেরই আগে। আপনমনে ফের হাসলো শওকত। আবার মুখ বন্ধও করে ফেললো। কেউ দেখলে ওকে পাগল মনে করবে, একলা একলা হাসছে।
জীবন বড়ই সুন্দর । শওকতের খুব আনন্দ হচ্ছে। কেন হচ্ছে? ওর কোন সমস্যারই তো সমাধান হয়নি।তবু বড় ভালো লাগছে কেন?বেঁচে থাকা যেমন কঠিন তেমনই আনন্দের , শুধু এজন্যই কি?
'অতএব (হে জিন ও মানুষ!) তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করবে? '
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সেলিনা ইসলাম অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা !
জসিম উদ্দিন আহমেদ খাটি বাস্তবতা নিয়ে লেখা আপনার গল্পটি আমার দারুন লেগেছে। ভোট ও শুভেচ্ছ।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
জোহরা উম্মে হাসান মন চ্ছুয়ে গেল , খুব সুন্দর লাগলো - জীবন থেকে নেয়া !
মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।
মোহাম্মদ সানাউল্লাহ্ অনেক সুন্দর করে লেখা গল্পটা যেন কারও জীবনে বাস্তব হয়ে দেখা না দেয় ।কারণ জীবনটা তো আর গল্প নয় । আপনার গল্পের মাঝে হারিয়ে গিয়ে আমিও বেঁচে থাকার একটা উপায় খুঁজছিলাম । দারুন লিখেছেন । ভোট রেখে গেলাম ।
চমৎকার অনুপ্রেরণা দায়ী মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।আমিও আশা করি শওকতের দূর্দশা যেন কারোর না হয়।ভালো থাকবেন।
মোহাঃ ফখরুল আলম ভাল লেগেছে। ভোট দিতে মন চায়। আমার কবিতা পড়ার আমন্ত্রণ রইল।
অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো লেগেছে জেনে আনন্দিত হলাম। ভালো থাকবেন।
মোহাম্মদ আহসান ভাল লাগলো।
মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ

১৪ সেপ্টেম্বর - ২০১৫ গল্প/কবিতা: ১১ টি

সমন্বিত স্কোর

৫.৮

বিচারক স্কোরঃ ৩.৮ / ৭.০ পাঠক স্কোরঃ ২ / ৩.০

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪