আজ ও ভুলতে পারিনা সেই কষ্টের কথা

কষ্ট (জুন ২০১১)

গাজী মোঃ আল আমিন
  • ৫৮
  • 0
  • ৫৫
কিছু কিছু কষ্টের কথা কখনো ভুলা যায় না, কিছু কিছু মানুষের মনে এমন কিছু কষ্ট থাকে যা কখনো ভুলতে পারে না, সে কষ্ট মানুষকে শুধু যন্ত্রণার আগুনে পুড়িয়ে মারে, মনে হয় এইতো সেদিন ‘যূথীর’ সাথে আমার পরিচয় হল, ভাবতে ভাবতে ৬ বছর কেটে গেল টেরই পেলাম না, ওর সাথে আমার প্রথম দেখা হয় কলেজে,আমি যখন ইন্টার ২য় ইয়ার এ পড়ি তখন আমাদের কলেজে ফাস্ট ইয়ার এ ভর্তি হয় যূথী,লাইব্রিরির সামনে বকুল গাছের নিচে দাড়িয়ে ওর দুইটা বান্ধুবির সাথে কথা বলছিল আর হাসছিল, কি সুন্দর ওই মুখের হাসি, হাসলে গালে টোল পরে যেত, আজও ভুলতে পারি না সেই অনুভুতির কথা, সেই প্রথম দেখা থেকেই কেন জানি আমি ওর প্রতি দুরবল হয়ে যাই, সারাক্ষণ ভাবতে থাকি ওর কথা, প্রতিদিন তাকিয়ে থাকি ওর দিকে ও অ আমার দিকে তাকিয়ে মুসকি হাসে, কিন্তু কিছু বলতে পারি না কারন তখন ও আমাদের পরিচয় হয়নি, আমার সপ্নের রাজ্যে তো ও বাসা বেধে ফেলেছে কিন্তু আমি তো ওকে কিছুই বলতে পারছি না,শুধু চেয়ে থাকি সারাক্ষণ,কি যে করবো কিছুই বুজতে পারসিলাম না,আমার মন তো অস্তির ওর সাথে কথা বলার জন্য কিন্তু কোন উপায়ই খুজে পাচ্ছি না,পরের দিন কলেজে গিয়ে দেখি আমার ফুফাতো বোন রিমির সাথে দাড়িয়ে আছে যূথী, রিমি যে এই কলেজে ভর্তি হয়াছে তা আমার মনেই ছিল না, হঠাৎ রিমির সাথে যূথীকে দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম,আমার সাহস অনেকটা বেড়ে গেল কাছে গিয়ে বললাম কিরে রিমি কেমন আসিছ? রিমি বললো ভাল আছি ভাইয়া তুমি কেমন আছ? ততক্ষণে আমি যূথীর দিকে তাকিয়ে থেকে বললাম ভাল আছি, যূথী আমার দিকে এক পলক তাকিয়েছিল ওর হরিনের মত চোখ দুটি আজ ও আমার কল্পনায় ভেসে বেড়েয়, তারপর ক্লাস শুরু হয়ে গেল ওরা ক্লাস এ চলে গেল,আমি কিছুক্ষণ দারিয়ে থেকে ক্লাস এ চলে গেলাম কিছুতেই ক্লাসে মন বসছিল না,বার বার ওকে দেখতে ইচ্ছে করতেছিল,কিন্তু উপায় কি,ও যে ক্লাসে আছে, তারপরও ওর ক্লাসের পিছনের জানালা দিয়ে দূর থেকে ওকে দেখতে লাগলাম, যত দেখি তত ভাল লাগে এই ভাললাগা যে শেষ হবার নয় এত সুন্দর মানুষ হতে পারে আগে কখনো দেখিনি, মনে হয় বিধাতা নিজ হাতে ওকে তৈরি করেছে, সেই দেখা থেকে ওর প্রতি আমার ভালবাসা আরও বেড়ে গেল, মনে ভালবাসা এলে এরকম লাগে এই প্রথম বুজলাম পৃথিবীটাই যেন রঙ্গিন মনে হচ্ছে, আর নিজেকে মনে হচ্ছে উরু উরু চাঞ্চল্য প্রজাপতির মত, এর মধ্যে কয়েক দিন চলে গেল কিন্তু কিছুতেই আমার মনের কথা ওকে জনাতে পারিনি, ওর কথা ভেবে রাতেও ঘুমাতে পারিনা, আমার কল্পনায় বার বার ভেসে বেড়ায় ওর চাঁদ মুখক্ষানি,অনেক চেষ্টা করেও বলতে পারিনি আমার মনের কথা, বলবো বলবো করেও বলতে পারিনা সামনে গেলেই যেন সবকিছু ভুলে যাই, হঠাৎ মাথায় চিন্তা এল যে রিমিকে দিয়েইতো যূথীকে আমার ভালবাসার কথা জানাতে পারি, রিমি দুইদিন কলেজে আসছে না, তার পরের দিন সুক্রবার আমি রিমিদের বাড়ি গেলাম রিমিদের বাড়ি আমাদের বাড়ি থেকে প্রয় এক কিলোমিটার দূরে, গিয়ে দেখি বাড়ির সামনে ফুফু দারিয়ে আছে, ফুফু আমাকে দেখে বললো কেমন আসিস? আমি বললাম ভাল ফুফু তুমি কেমন আছ? ফুফু বললো ভাল আছি, তারপর ফুফু আমাকে বাড়িতে নিয়ে গেল অনেকক্ষন হয়ে গেল কিন্তু রিমিকে দেখছি না, ফুফুকে বললাম রিমি কোথায়? ফুফু বললো ওর বান্ধুবির বাড়ি গেছে, সকালে গেছে এক্ষণই চলে আসবে তুই ফ্রেস হয়ে আয়, আমি হাত মুখ দুয়ে ঘরে আসতেই দেখি রিমি চলে আসাছে, রিমি আমাকে দেখেই বললো ভাইয়া কেমন আছ? আমি বললাম ভাল, তুই কেমন আছিস? ও বললো অনেক ভাল আছি, আমি বললাম বাবা অনেক ভাল, এত ভাল থাকার কারন কিরে? ও বললো কারন আছে আখন বলবো না, আমি বললাম বলতে হবে না আমি তোর কাছে একটা কাজে আসেছি আমার কাজটা করেদেনা প্লিজ, ও বললো আম্মুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিতে হবে আমি পারব না, আমি বললাম আরে টাকা না অন্য একটা কাজ, প্রমিয কর কাজটা করে দিবি,ও বললো আগে বলো দেখি পারব কিনা আমি বললাম তুই ই পারবি,ও বললো এত না গুরিয়ে বলোতো আমাকে কি করতে হবে। আমি বললাম আচ্ছা তোর সাতে যে ওই দিন লাল ড্রেস পরে একটা মেয়ে দারিয়ে ছিল ওর নাম কিরে? ও বললো কেন?আমি বললাম না এমনেই, বলনা ওর নাম কি?ও বললো ওটা আমার বান্ধুবি ওর নাম যূথী, আমি বললাম অনেক সুন্দর তো নামটা, দেখতে যেমন সুন্দর নামটা ও তেমনি সুন্দর, রিমি বললো কি ও কি আমার চেয়েও সুন্দর? এই বলে রিমি একটু রাগ করলো, আমি বললাম আরে না বোকা তুইতো অনেক সুন্দর ও তরচেয়ে সুন্দর না, এই কথা বলতেই রিমি হেসে দিল, তারপর আমি বললাম রিমি আমি যূথীকে, এ কথা বলতেই রিমি বুঝেফেলেছে রিমি বললো ও আচ্ছা তাই বলো এতক্ষনে বুঝলাম কেন তুমি ওর এত প্রশংসা করতেছ, রিমি বললো আমি পারবোনা তোমাকে এ বেপার সাহায্য করতে, আমি রিমির হাত ধরে বললাম প্লিজ রিমি লক্ষ্মী ভোন আমার আমাকে একটু হেল্প করনা, আমার হয়ে তুই যূথীকে বলনা যে আমি ওকে ভালবাসি, রিমি আমাকে বললো কবে থেকে এত ভালবাসা হা, তলে তলে এত ভাব? আমি বললাম নুতন যেদিন কলেজে এসেছে সেদিন থেকেই ওকে আমার প্রচণ্ড ভাললাগে, আমি ওকে অনেক ভালবেসে ফেলেছি, অনেক বার বলার চেষ্টাও করেছি কিন্তু বলতে পারিনি, তুই বল আমাকে এ কাজটা করেদিবি, অনেক বলে রিমিকে রাজি করালা, কিন্তু সে আমাকে বললো একটা চিঠি লিখেদিতে, আমি লিখলাম,

*যূথী*
কয়েক দিন কলেজে তোমাকে দেখছি না, জানিনা তুমি কেমন আছ, হয়তো তুমি আমাকে চেননা। তুমি যে কলেজে পড় আমি সেই একই কলেজে পড়ি, তোমার বান্ধুবি রিমির কাছে আমি তোমার নামটা যেনেছি, অনেক সুন্দর তমার নামটা তারচেও সুন্দর তুমি, তোমাকে যেইদিন প্রথম কলেজে দেখি সেই দিন থেকেই আমার বিতরে সুন্দর একটা অনুভুতির জন্ম হয়ছে, যা আমাকে বার বার দুরবল করে দিচ্ছে এটা অন্যরকম ভাললাগা,কাউকে ভাললাগা কি অন্যায় কিনা তা জানিনা, সেই ভাললাগা থেকেই তোমাকে আমি অনেক ভালবেসে ফেলেছি, তোমার কথা ভেবে কেটে যায় আমার সারা বেলা, জানিনা আমি কি ভুল করেছি কিনা,শত ভুল বাধা পেরয়ে আমি তোমার হতে চাই, এই মনটা সারাক্ষণ ভাবে তোমার কথা, নিস্পাপ এই মনটাকে কি দিয়ে বুজাব বল,আমি যে আর পারছি না, আই লাভ ইউ *যূথী*আই লাভ ইউ, এই চিঠিটা পাওয়া মাত্রই তুমি আমাকে উত্তর দিও।

তারপর রিমিকে চিঠিটা দিয়ে আমি চলে গেলাম, আমি রিমির কাছে জানলাম চিঠিটা ও যূথীকে দিয়ে দিয়েছে, এক সপ্তাহ হয়ে গেল আমি কোন উত্তর পেলাম না, একদিন কলেজে গিয়ে দেখি রিমি এবং যূথী দারিয়ে আছে, রিমি আমাকে ডেকে বললো ভাইয়া এইদিকে আস রিমির ডাকে আমি ওদের কাছে গেলাম, আজকে অসাধারন লাগছে যূথীকে, এর মাঝে আস্তে আস্তে যূথীকে কি যেন বললো রিমি, এই বলে রিমি বললো আমি একটু দোকানে যাচ্ছি তোমরা কথা বল, এই প্রথম যূথীর সামনা সামনি আমি দারাবার সুযোগ পেলাম, এর আগে যূথী আমাকে তেমন ভাবে চিনতো না, রিমি হয়তো চিনিয়ে দিয়েছে যে আমিই ওকে চিঠিটা দিয়েছি,যূথী আমাকে বললো আপনিকি রিমির মামাতো ভাই? আমি বললাম হা, ও হেসে হেসে আমাকে বললো ভাইয়া আপনি মনে হয় আমাকে একটা চিঠি দিয়েছেন?চিঠির কথা শুনে আমি লজ্জায় আর ওর দিকে তাকাতে পারলাম না, আমি নিচের দিকে তাকিয়ে বললাম হা, ও বললো ভাইয়া আমিতো অনেক ছোট, এই মুহূর্তে এরকম একটা সম্পর্কে জারানো কি আমার টিক হবে?আমি কিছু বলতে পারছিলামনা, আমার হার্টবিট বারতে লাগলো,আমি নিচদিকে তাকিয়েই বললাম টিক আছে আমি এখন যাই, এই বলে আমি চলে এলাম, ওর সামনে গেলে কেন আমার সবকিছু এমন হয়ে যায় কিছুই বুঝতে পারছিলামনা, তারপর দশ বারো দিন চলে গেল ওর সাথে আমার কোন কথা হয়না ওকে দেখলে আমি অন্য দিক দিয়ে চলে যেতাম, ভাবলাম আর কখনো ওর সামনে যাবো না, আমাকে দিয়ে এগুলো হবেনা, তারপরও ওকে ভাবতে আমার ভাল লাগতো, অনেক দিন হয়ে গেল ওর সাতে আমার দেখা হয় না, রিমি আমাকে বললো যূথী নাকি আমাকে খুজতেছে, রিমির কথা শুনে আমি ততটা গুরুত্ত দিলামনা, আমি কয়েকদিন কলেজে যেতে পারি নাই রিমি বা যূথী কার সাথে আমার যোগাযোগ হয়নি, তারপর একদিন আমি কলেজে গিয়ে দেখি আমাদের কলেজের সামনে ছোট একটা ফুল বাগান ছিল ওইখানে দারিয়ে আছে যূথী, আমাকে দেখে এগিয়ে এসে বললো ভাইয়া অনেক দিন আপনাকে দেখছি না কেমন আছেন? আমি তারপর ও ওর দিকে তাকাতে পারছিলামনা অনেক কষ্টে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম ভাল, তুমি কেমন আছ? ও বললো জি ভাল আছি, আজ ও এমন ভাবে সেজেছে অনেক সুন্দর লাগছে মনে হয় ডানা কাটা পরি মাঠিতে নেমে এসেছে, আমি কিছুক্ষণ এক দিষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে থেকে বললাম তুমি অনেক সুন্দর, ও আমাকে বললো কি যে বলেন ভাইয়া, আমি বললাম সত্যি বলছি একটা মানুষ এত সুন্দর হওয়ার দরকার হয় না, তারপর ও সজোরে হেসে বললো আপনি পারেনও ভাইয়া। এভাবে প্রতিদিন আমাদের কথা হত, কথা বলতে বলতে এক সমায় আমাদের প্রেম হয়ে যায়, একজন অন্যজনকে না দেখে থাকতে পারতাম না, ও আমাকে বলতো তোমাকে একদিন না দেখেলে মনে হয় যেন আমার দম বন্ধ হয়ে যায়, আমি ও ওকে না দেখলে থাকতে পা নারি না, ও আমাকে গান শুনাত, একদিন তোমাকে না দেখলে বড় কষ্ট হয়,সেই দিনটাই যেন আমার বন্ধু নষ্ট হয় বড় কষ্ট হয়। ওকে পেয়ে মনে হল আমি যেন বিশ্বটাকে জয় করে ফেলেছি, এভাবে প্রায় আট মাস চলে গেল, এরই মধ্যে আমার ইন্টেরমিডিয়েট শেষ হয়ে গেল, বাবা আমাকে দিপ্লমা পড়ানোর জন্য কুমিল্লায় পাঠাবে বলে টিক করলেন, কিন্তু যূথী চাঁদপুরে থাকবে আর আমি কুমিল্লায় চলে জাব কিছুতেই আমার মন চলছিল না, যূথীকে বললাম ও আমাকে চাঁদপুরেই ডিগ্রি পরার পরামশ্য দিল, কিন্তু বাবা আমাকে দিপ্লমা পড়াবেই, তাই বাবার আদেশই আমাকে মানতে হল, কলেজে গেলাম ওর কাছে বলার জন্য ও শুনছে আমি চলে যাচ্ছি এই শুনে ও মন খারাপ করে বসে আছে, আমি গিয়ে বললাম যূথী আমি কাল সকালে চলে যাচ্ছি, ও বললো যাও যাও চলে গেলেতো আর কাউকে ধরে রাখা যায় না, আমারও বুক বেঙ্গে যাচ্ছে, যে ওকে না দেখে থাকবো কি করে, আমার পা চলছে না, মনে হচ্ছে হাঁটার শক্তি নেই, তারপর আমি বললাম রাগ করনা প্লিজ আমরা ফোন প্রতিদিন কথা বলব, তখন ও বললো শিশির এ কি মাটি ভিজে বৃষ্ট না এলে, ফোনের কথায় কি মন ভরে কাছে না পেলে, আমি বললাম জান মনে করো আমি সবসময় তোমার সাথে আছি, জান তুমি কখনও আমাকে ভুলে যেও না, ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে কিছু বলছে না, আমি ওকে বলে বাড়িতে চলে এলাম, আম্মুকে বললাম আম্মু আমার যেতে ইচ্ছা করতেছে না, আম্মু বললো কি বলছ বাবা দরকার হলে পড়াশোনার জন্য বিলেতেও যেতে হয় যাও বাবা অমত করো না, আম্মুতো জানেনা কেন আমি যেতে চাচ্ছি না, যাক আর কি করবো পরের দিন আমি কমিল্লায় চলে গেলাম, ফোন প্রতিদিন আমাদের কথা হতো, রাত পার হয়ে যেত কিন্তু আমাদের কথা শেষ হত না, এর মধ্যে দুই মাস চলে গেল আমি এক বার এসে ওর সাতে দেখা করে গিয়েছিলাম, দুই মাস পর দেখা আনন্দটাই ছিল অন্যরকম, অনেক ঘুরাগুরি করলাম অনেক মজা করলাম তারপর আমি আবার কুমিল্লায় চলে গেলাম, আবার ফোন চলতে থাকে আমাদের কথা, এর মধ্যে আমার এক সেমিষ্টার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়ে গেল, ও জানতো আমার পরীক্ষা, এর জন্য ওকে আমি কিছু দিন ফোন দিতে পারিনি, এর মধ্যে ও আমাকে একদিন ও ফোন করেনি, পরীক্ষার পর ওকে আমি ফোন করে দেখি ওর নাম্বারটা বন্ধ, অনেক চেষ্টা করেও ওকে আমি পাচ্ছিলাম না, আমার কিছুই ভাল লাগেছে না, ভাবলাম কখন যে কথা বলবো ওর সাথে, আমার পরীক্ষার মাজে ওর ফোন বন্ধ ছিল কিনা তা আমি জানতাম না, পরীক্ষা শেষ হল চার পাঁচ দিন হয়ে গেল কিন্তু এখনো ওর ফোন বন্ধ, ওর শুধু একটাই নাম্বার ছিল আমার কাছে, কি যে করি কিছুই ভেবে পাচ্ছিলাম না, ওর বন্ধ সিমে আমি একটা এস এম এস পাঠিয়ে দিলাম, কিন্তু কোন রিপ্লাই পেলাম না, সারাক্ষণ ওর নাম্বারে ট্রাই কররতাম কিন্তু কোন কাজ হতনা বন্ধই পেতাম, এর দুই তিন দিন পর রিমি আমাকে ফোন করে বললো ভাইয়া তুমি তাড়াতাড়ি বাড়িতে চলে আসো যূথীয় বিয়ে টিক হয়ে গেছে, আমি হঠাৎ করে চমকে উঠলাম বললাম কি তুই সত্যি বলছিস ও বললো হা ভাইয়া সত্যি বলছি, আমার ও বিশ্বাস হল কারন অনেক দিন ওর ফোন বন্ধ,আমি আর দেরি না করে সবকিছু গুছিয়ে বাড়ি চলে এলাম, পরের দিন আমার দন্ধু রনির ভারিতে গেলাম, রনির ভারি যূথীর পাশের ভারি, রনি আগে থেকেই সব জানতো, রনি আমাকে দেখে বললো যূথীর নাকি বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে? আমি বললাম সত্যি নাকি? রনি বললো আমি শুনেছি সত্যি কিনা তা জানিনা, আমি রনিকে বললাম আমিও তাই শুনেই কুমিল্লা থেকে চলে আসলাম, ওর সাথে দেখা করার খুব দরকার, প্লিজ ওকে একটু ডেখে নিয়ে আয় না, আমি ওকে জিঞ্জাস করবো ও কি ওই বিয়েতে রাজি কিনা, রনিকে পাঠালাম ওদের ভারিতে,আমি ওদের ভারির সামনে পুকুর এর পাশে একটা কৃষ্ণচুরা গাছের নিছে দারিয়ে আছি, অনেকক্ষণ হয়ে গেল কিন্তু রনিতো এখনো আসছেনা যূথীকে নিয়ে, আমি খুব চিন্তায় পরে গেলাম কি জানি কি হয়, একটু পরে দেখি রনি আসছে যূথীকে নিয়ে, ও আমার সামনে এসে দাড়াতেই বললাম কি হয়েছে তোমার? ও বললো কই কিছুইতো হয়নি, আমি বললাম তাহলে তোমার ফোন বন্ধ কেন, ও বললো আমার বাবা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে ফোনে কথা বলে আর কি হবে, এ কথা শুনার পর যেন আকাশটা ভেঙ্গে আমার মাথায় পড়লো, আমি বললাম কি বলছো যূথী আমাদের ভালবাসার কি হবে? আমিতো তোমাকে ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারিনা, প্লিজ তুমি এরকম করনা, চল আমরা পালিয়ে যাই, ও বললো না আমি পারবনা আমার বাবার মুখে চুনকালি দিতে, আর তোমার সাথে পালিয়ে গিয়ে কি লাভ হবে আমার, তুমিতো সাধারন দিপ্লমা করতেছ, যার সাথে আমার বিয়ে টিকে হয়সছে সে আয়ারলেল্ডে থাকে, নিজের বিজনেস আছে, বিয়ের পর আমাকেও আয়ারলেল্ডে নিয়ে যাবে, ওর কথা গুলো শুনে আমার চখের কনে অশ্রু চলে এল আর কান্না ধরে রাখতে পারলাম না, হয়তো কেউ ওকে এই এই কথা গুলো শিখিয়ে দিয়েছে, আর না হলে কেন একথা বলছে, যে আমাকে পাগলের মত ভালোবাসতো হঠাৎ করে এত বদলে যেতে পারেনা, আমি বললাম তাহলে কেন আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছেলে ও চুপ করে দারিয়ে রইল, আমি বললাম আজ তুমি রঙ্গিন চশমা পরে লোভের মুখে আন্ধ হয়ে গেছ আমার কোন কথা তোমার কানে যাচ্ছে না, স্বথপরের মত আমাকে আজ দূরে ঠেলে দিচ্ছ, ও বললো এটাই আমার শেষ কথা আমি আর তোমার সাথে কোন কথা বলতে চাই না, একথা শুনে আমার মাথা গুরছে মনে হল এক নিমিশেই পৄথিবীটা অন্দকারে ঢেকে গেল, আমি দাঁড়ানো থাকে বসে পরলাম, রনি আমাকে ধরে রিক্সয় করে আমাদের বাড়ীতে নিয়ে এল, এর পর থেকে আমি খুব অসুস্হ হয়ে পরলাম, আসলে মনের শক্তি মানুষের সবছে বড় শক্তি, মনে শক্তি না থাকলে শরিরের শক্তি কোন কাজে আসে না, আমি ওর চিন্তায় দিন দিন কেমন জানি হয়ে যাচ্ছি, এই পৄথিবীটা আমার কাছে বিষময় মনে হচ্ছে, আমার অসুস্থ্তার কথা শুনে ফুফু আসলো রিমি আসলো, রিমিকে দেখে আমার আরও কান্না পেল, বাড়িতে কেউ জানেনা কেন আমার এই অবস্থা, সবাই জানে আমি জ্বরের কারনে অসুস্থ, রিমি আমার কাছে বসে আছে কিছু বলাম মত ভাষা নেই ওর, আমার কষ্টে ও আ আজ নিরব, বিকালে রনি আসলো ,আমি বললাম আমার কিছুই ভাল লাগছে না, এই পৄথিবীতে বেচে থেকে আমার কোন লাভ নেই, আমাকে আকরশন করার মতো এই পৄথিবীতে আর কিছুই নেই, তাই আমি সিদান্তু নিলাম নিজেকে শেষ করে দেব, রনি এবং রিমি আমাকে অনেক বুজালো, বললো কাপুরুষের মতো কথা বলিস না, জীবন মানে যুদ্দ, জিবনের সাথে যুদ্দ করেই বেঁচে থাকতে হবে, আমি বললাম কি নিয়ে বেছে থাকবো বল, নিরগুম এলমেল রাত তারা করে এই আমাকে সৃতির জানালা খলে দেখি সব ঢেকে গেছে ঘন কাল কুয়াশায়, মনে পরে ওর কথা, বার বার চোখের সামনে বেসে উঠে ওর মুখক্ষানি, এরই মাঝে দশ বারো দি চলে গেল, রনি আমাকে ওর বিয়ের আগের দিন ফোন করে জানালো কাল ২৫ ডিসেম্বর যূথীর বিয়ে, একথা শুনে আমি আরও অসুস্থ হয়ে যাই, ওর বিয়ের দিন আমি উঠে বসার শক্তিও পাচ্ছিলাম না, বধু সাজে ওকে দেখতে খুব ইচ্ছা করতেছিল, কিন্তু কি করে দেখবো আমি যে উঠে দাড়াতে পারছি না, রাত হয়ে গেল, আজ ওর বাসর আর আমি বিছানায় শুয়ে শুয়ে কাদছি, অসুস্থ অবস্তায় একটা গান গাইতে লাগলাম,

সুখের বাসরে তুমি ঘুমিয়ে যখন
আমার দুই চোখে জল জরছে তখন
পূর্ণতা পেল আজ তোমার জীবন
আমার জীবন ঘিরে নামলো আধার
নিঃস্ব হলাম আমি নিঃস্ব হলাম
তোমাকে হারিয়ে আমি সব হারালাম।

রাত প্রয় শেষ কিন্তু আমার ঘুম আসে না, আজ আমার যূথী অন্যজনের হয়ে গেল, ঘুম নেই দুটি চোখে অনেক কষ্ট জমাট ভরা আমার এ জীবন, এ কষ্টকে ভুলতে অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু না তা আর হল না আরো অনেক কষ্ট নিয়ে চলছি, কেন এমন হল, জানি অনেক কথারই হয়না উত্তার, তবুও কেন এত কষ্ট পেলাম, সত্যি এই পৄথিবীটা অনেক মারাময়, আমার ও তো একটা স্বপ্ন ছিল সেই স্বপ্নটা কেন শফলতা পেল না, কেন আজ আমি এত কষ্টের আগুনে জ্বলে পুড়ে মরছি, আমি কি অপরাধ করেছিলাম জানিনা, এভাবে কষ্টের আগুনে পুড়তে পুড়তে চলে গেল প্রয় আরাই বৎসর, যূথী কেমন আছে তা আমি আজ ও জানিনা, আমার মনে হয় ও অনেক সুখে আছে, এর কয়েক দিন পর রনি আমাকে ফোন করে বললো, যূথীর নাকি ডিবোছ হয়ে গেছে ওর নাকি এক বৎসরের একটা কন্যা সন্তান ও আছে, আমি শুনে অবাক হয়ে গেলাম, হায় আল্লাহ এটা কি হল, ওর জীবনটা আবার কেন এমন হল, ও নাকি ওর বাপের বাড়ি চলে এসেছে, আমি অনেক চেষ্টা করেছি ওর সাথে দেখা করতে কিন্তু কিছুতেই ওর দেখা পেলাম না, ইচ্ছা করে যদি কেউ নিজেকে আড়াল করে রাখে তাহলেতো কেউ তাকে খজে পাবে না, অনেক বার রনিকে পাঠিয়েছি কিন্তু ও ঘর থেকেই নাকি বাইরে আসে না রনি বললো, এরপর আমি প্রতিদিন রনিদের বাড়িতে যেতাম যদি যূথীর সাতে একবার দেখা হয় এই ভেবে, একদিন আমি রনিদের বাড়ি থেকে আসার পথে দূর থেকে দেখলাম রিক্সশায় করে আসছে যূথী, দূর থাকেই ওকে দেখে আমি চিনেফেলিছি, কাছে আস্তেই ওর রিক্সশার সামনে গিয়ে দারালাম আমি, চালক রিক্সশা বন্ধ করলো, আমি ওর কাছে গিয়ে বললাম কেমন আছ? ও নিছের দিকে তাকিয়ে আছে,আমি বললাম কথা বলছনা যে? ও আমার দিকে তিকিয়ে কেধে ফেললো, ওর বাচ্ছাটা কোলে, এত সুন্দর হয়ছে ঠিক যূথীর মত, বাচ্ছাতা আমার দিকে তাকিয়ে আছে মায়াবিন দৃষ্টতে, যূথী কাদতেছে আমি বললাম রিক্সশা থেকে নামো, ও নামছে না, অনেক পিড়াপিড়ি করে ওকে নামালাম, আমি একটা সি এন জি ডেকে বললাম চল, ও কাঁদতে কাঁদতে বললো কথায়? আমি বললাম তোমার ব্যাপার সব আমি জেনেছি,তারপর ও আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই, চল কাজী অফিসে যাব, ও আমাকে না বললো, এর পর আমি আর কিছুতেই ওকে রাজি করাতে পারলাম না, অনেক চেষ্টা করলাম কোন কাজ হল না, ও চলে গেল, আমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে কাঁদতে লাগলাম, আজ আমার সব কষ্ট ভুলে গেছি, ওর দুঃখে আজ আমি সবচেয়ে বড় দুঃখী, পৄথিবীতে যাকে এতো বেশী ভালবাসি সেই আজ সুখে নেই, এটা মেনে নিতে পারছিলামনা, কেন এমন হল, হায়রে নিয়তি, নিয়তি মানুষকে কখন কোথায় নিয়ে যায় তা কেউ কখনো বলতে পারে না, আজ আমি নিয়তির স্বীকার, তারপর ও আমি যূথীর অপেক্ষায় আছি, কোন দিন যদি ফিরে আসে বরন করে নেব।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
গাজী মোঃ আল আমিন সুস্মিতা @ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমার লিখে কমেন্টস করার জন্য,,,,,,,
গাজী মোঃ আল আমিন তাকলিমা @ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ,,,,,,,,,,
সুস্মিতা হৃদয় ছুয়ে যাবার মত গল্প,,,,,,,,একদম জীবন্ত কাহিনী,,,,,,,,, বাস্তবতাকে এত সুন্দর ভাবে তলে ধরেছেন,,,,,,,অসাধারণ,,,,,
তাকলিমা অনেক ভালো লাগলো আপনার লিখাটা পড়ে,,,,,,,,বাস্তব কাহিনী যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন অসাধারণ,,,,,
গাজী মোঃ আল আমিন তৌহিদ উল্লাহ শাকিল @,,,ভাইয়া অনেক চেষ্টা করে ও যুথীকে রাজি করাতে পারিনি,,,,,,,,আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমাকে এতটুকু উত্সাহ দেবার জন্য,,,,আমার জন্য একটু দোয়া করবেন,,,,,,
গাজী মোঃ আল আমিন Md. Akhteruzzaman @,,,,,অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে,,,,,,আমাকে এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য,,,,,
sakil এই গল্পটা যুথী কে নিয়ে আর কিছুদিন আগে পরেছিলাম অন্য একটা গল্প বিথিকে নিয়ে . দুটো গল্পই ভালো লেগেছে . আমি ও অন্যদের মত বলব আগে জুথিকে রাজি করান তারপর amra তো achi হা হা হা .......ভালো লেখা আরো মনোযোগ দিয়ে লিখলে তো উপনাস হয়ে যেত .
মোঃ আক্তারুজ্জামান গল্পের অবয়ব অনেকটা প্রবন্ধের মত হয়ে গেছে| দাড়ি, কমার ব্যবহার যথার্থ হয়নি| আরও যত্ন নিয়ে লিখবেন| শুভ কামনা রইলো|
গাজী মোঃ আল আমিন ahmad মুকুল @ ভাইয়া আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর কমেন্টস করবার জন্য,,,,,,,,,,
আহমাদ মুকুল একটা গল্প ভাল হওয়ার জন্য কাহিনীটা জরুরী, তবে ওটাই একমাত্র বিষয় নয়। আপনি নিজের কাহিনীতে হয়তো এতটাই বুঁদ ছিলেন, বাকী দিকগুলোতে নজর দিতে পারেন নি। গল্পের কাঠামো, বিন্যাস, যতিচিহ্ন, বানান ইত্যাদি দিকগুলোতে কাজ করতে হবে। তবে আপনার গল্পে প্রাণ আছে বলেই একটানে পড়ে ফেলতে পারলাম।

১৯ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪