'বাবা, ভালবাসি তোমায়'-এ কথাটি বলা হয়নি কখনও আমার। তবে মন চেয়েছে বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলি।
সময়ের চাকা ঘুরতে ঘুরতে আজ উপলব্ধি করি যে, বাবা কতটা ভালোবাসতো আমায়। আগলিয়ে রেখেছে আমায়।
ভালোবাসার টানে মন চাই বাবার কাছে ছুটে চলে যাই। কিন্তু মনের কাছে বাধা আমি। নিজের সংসার হয়েছে। ছোট একটি সন্তান রয়েছে।- ওর ডিউটি রয়েছে।
সংসারের চিন্তা ভাবনা করতে, করতে মনে হয় জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তগুলো আমি হারিয়ে ফেলেছি।
২০০০ সালের কথা। যখন মাত্র আমি কলেজে পা রেখেছি। বাবা মাকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছে। দুপুর ঘনিয়ে যাচ্ছে।
বাবা বাসায় ফোন করে আমাকে বলল- মা যা পারো রান্না করে ফেলো। আমি তো বির্ভান্ত। কিন্তুই পারি না আমি।
রান্না... উফ! এটা তো কিছুই জানি না। বাসার মধ্যে দুই-দুইটা কাজের লোক। কখনও কোন কাজে হাত বাড়ানো লাগেনি। জীবনের প্রথম বাবা বলল- যা পার মা একটু রেঁধে ফেল। ভয়ে জান যায়... যায়। কিছুই পারি না আমি।
রান্না ঘরে যেয়ে দেখলাম। রান্নার বুয়া সব কিছু রেডি করে রেখেছে। বুয়া বলছে, আফা আজ বেশি কিছু নাই রান্নার। ডাল রেঁধে রাখছি। আর শুধু ঢেঁড়স ভাজি ও মাংস রান্না করতে হবে। আফা আপনি যান আমি সব কিছু কইরা ফেলমু।
কিন্তু বাবা আমাকে রান্না করতে বলেছে। 'আপনি যান বুয়া আমি পারবো।' তাই বেশী ওস্তাদি করিয়া রান্না করলাম।
ঢেঁড়সের বিজলাগুলো জড়িয়ে ধরেছে খুন্তিকে। আমি বিজলাগুলো ছড়াতে পানি ডেলে আর ঝোল করলাম।
মাংসের মসলা সব দিয়েছি কিন্তু লবণের কথা ভুলিয়া গেছি।
বাবা আসল। আমি বাবার সামনে দাড়িয়ে। বাবা আমি সব রান্না করেছি। খেয়ে দেখ কেমন হয়েছে। বাবা আমার দিকে তাকিয়ে হাসি মুখে ভাত খেয়ে উঠলো। এতো মজা করে খেল আমি তো মহা খুশি। ও রান্না ভালোই পেরেছি। নিজে খেতে বসেছি মায়ের সাথে। ও মা! একি! ঢেঁড়স তো পানি পানি লাগে, আর মাংস তো লবণ ছাড়া। ই... ছি... কি বিসরি খেতে। না কেনে স্বাদ, না কোন জাত।
দু'চোখে পানিতে ভরে গেল। এই খেয়ে বাবা এত প্রশংসা যে খুব ভাল হয়েছে। ও বাবা! তুমি কষ্ট করে খেলে কিন্তু বুঝতে দিলো না যে আমি রান্না করতে পারিনি। আমি কষ্ট পাব বলে। একি বাবার ভালোবাসা!
মায়ের কাছে থেকে সবকিছু শিখে নিয়েছি কিন্তু কখনও নিজের হাতে রান্না করে বাবাকে খাওয়ানোর সময় হয়ে ওঠেনি।
বাবা আজ আমি সব রান্নায় expert কিন্তু তোমাকে রেঁধে খাওয়াবো। সেই সময়টুকু নেই আমার। আমি উপলব্ধি করছি।
বাবাকে বলতে খুবই ইচ্ছে হয় বাবা ও বাবা ভালবাসি খুব ভালবাসি তোমায়।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আল আমিন
ভালো লাগলো আপু। খুবই স্পর্শকাতর এই ব্যাপারগুলো।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।