একটি অন্যরকম মায়ের গল্প

মা (মে ২০১১)

খালিদ ফারহান
  • ৬৫
  • 0
  • ৭৮
ওরা চার ভাই-বোন। দুই বোন আর দুই ভাই। এখন অনেক ছোট সবাই ই। মাত্র দুই মাসের মত বয়স এক এক জনের। জন্মের পর পরই মা সুন্দর চারটা নাম দিয়েছে ওদের। তুন, ওনা, কিম আর যাবা।
তুন আর যাবা হল বোন, বাকিরা ভাই।
তো একদিনের ঘটনা-

একটা রাস্তার পাশে বড় বাড়ির অন্ধকার একটা কোণায় চার ভাই বোন বসে ছিল। কিম বারবার ওনা আর তুন কে খেলাচ্ছলে খোঁচাচ্ছিল। মা না থাকায় এটা হয়েছে। মা গিয়েছে ওদের জন্যে খাবার খুঁজতে। যাবা ওদের মধ্যে একটু ভাবুক টাইপ। চুপচাপ বসে ছিল ও। মাঝে মাঝে বিরক্ত চোখে কিম কে দেখছিল।
কিম এখনও ঠিকমত হাঁটতেও শেখেনি কিন্তু ভয়াবহ চঞ্ছল স্বভাব। মায়ের বকাও এর জন্যে কম খায় না ও। একদিন তো মা রেগে গিয়ে থাবা দিএ চড় মেরে বসেছিল গালে ওর। কিন্তু কিসের কি, কিম নিজের মতই আছে।

মায়ের কথা ভাবলে অবাকই লাগে যাবার। অসাধারণ সুন্দরী ওদের মা,আর নিঃশব্দ চলাফেরা। শিকার ধরায় ও জুড়ি মেলা ভার। আর এই মধ্যবয়সেও ওদেরকে যেভাবে আগলে রাখে,আহ--
কিম আর তুনের ঝগড়ায় চিন্তাটা ভেঙ্গে যায় যাবার।তুনের লেজ কামড়ে দিয়েছে কিম। রেগেমেগে একটু দূরে সরে আসে যাবা। আশেপাশে অনেক খাবার, একবার ভাবে যে চেষ্টা করবে নাকি ধরার। পরক্ষণেই ভাবে মা তো আছেই, আর ও এতোই ছোট যে সাহস বা ক্ষমতা হয় নি এখনও ওর। তাছাড়া, মা যতদিন আছে, ওদের কিছু হবে না,ওরা জানে। কিন্তু, উমমম- অনেকক্ষ্ণ তো হয়ে গেল,ভাবে যাবা- মা আসে না কেন?


ওই হামিদ, আমাকে দে। দড়িটা নিয়ে নেয় মোমেন হামিদের হাত থেকে। দড়ির অপর মাথায় একটা বিড়ালের লেজ বাঁধা। বিড়ালটাকে রাস্তার উপর দিয়ে ঘষটে নিয়ে দৌঁড়াতে থাকে দুজন। আহ, জীবনটা কত মজার।
ওদের প্ল্যান হল আজকে বিড়ালটাকে এভাবে পুরো এলাকা ঘুরাবে, অনেক কষ্টে ধরেছে দুজন মিলে। এই সুন্দর বিড়ালটা ওদের বাসা থেকে একদিন মাছ চুরি করেছিল, আজকে মজা বুঝবে।

কিছুক্ষণের মাঝেই আরো এলাকার ছেলেরা জড় হয়। যারা দড়ি পায় নি তারা ইট মারতে থাকে বিড়ালটার দিকে। অজ্ঞান হয়ে যায় সুন্দর বিড়ালটা। হঠাৎ একটা ইট লেগে থেতলে যায় বিড়ালটার মাথা.........

মা এখনও আসে না কেন? ক্ষুধায় কাতর যাবা ভাই বোনদের জিজ্ঞাসা করে। কেউই কিছু বলতে পারে না। আর ওরা এখনও এত বড় হয় নি যে নিজেরা খাবার যোগাড় করবে।
আহ, দুনিয়াটা এত কঠিন কেন? জড়াজড়ি করে করুণ সুরে ডাকতে থাকে চার ভাই বোন।

পরিশিষ্টঃ দুদিন পর ময়লা ফেলতে যেয়ে সিটি করপোরেশন এর লোক এক বাড়ির কোণার থেকে চারটা বিড়ালের বাচ্চা উঠিয়ে গাড়িতে ফেলে। উঠানোর সময় নাক কুঁচকে গিয়েছিল তার কারণ পচে গিয়ে গন্ধ বের হচ্ছিল বাচ্চাগুলোর গা থেকে।
কি আর করা, এলাকা তো পরিষ্কার রাখতেই হবে,ভাবতে ভাবতে আরো এক বালতি ময়লা ফেলে দেয় লোকটা গাড়িতে বিড়ালগুলোর ওপরে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
বিন আরফান. ei golpoti goto porbe bijoyi hobar mt chhilo. ei jonyo prochar protha aboshyok.
নিরব নিশাচর ................. তোমার এই লেখাটা, এ যাবত সবচে বেশি আঘাত করেছে আমাকে... গত মাসে অনেকবার চেয়েও মন্তব্য করতে পারিনি তোমার গল্পটি তে , কোনো একটা টেকনিকেল প্রবলেম হচ্ছিল তখন... আমি তোমার কাছ থেকে শিখেছি... তোমার বার্তা আমাকে ভীষণ ভাবে ভাবিয়েছে... তোমার এবারের লেখা এখনো পরিনি, তবে এখুনি যাব... বয়সে ছোট হলেও, আমার কাছে তুমি গভীর শ্রদ্ধার মানুষ... ধারাটা ধরে রেখো... ফর নাথিং কখনো লিখবে না...
রনীল অসাধারন একটি ছোট গল্প... আমরা মানুষরা শুধু নিজের অনুভুতি নিয়ে ভাবি, কিন্তু পশু পাখি দের অ যে আনন্দ-কষ্টের অনুভুতি থাকতে পারে, সেটা আমরা মানতে চাইনা...লেখক কে ধন্যবাদ জানাই, অন্যরকম একটি গল্প লিখার জন্য... শুভ কামনা
খালিদ ফারহান আবার ধন্যবাদ অরফান ভাই , কিন্তু প্রচার তো নিষিদ্ধ. হারিয়ে যাক রেন্ডমের ভিড়ে . কিছু করার নেই
বিন আরফান. সে জন্য প্রচার আবশ্যক নতুবা আপনাকে আমরা যারা চিনি তারাই পড়বে অন্যথায় রেন্ডমের তালিকায় হারিয়ে যাবে. তবে গল্পটি সত্যি অসাধারণ.
খালিদ ফারহান আসলেই গল্পের থেকে কবিতার পাঠক অনেক বেশি. জানি না কেন . আমি ভেবেছিলাম আমার বিড়াল এর গল্পটা আরো অনেক মানুষ পর্বে. কিন্তু তা হলো না :(
Rajib Ferdous একটি বিষয় লক্ষ্য করছি যে এখানে গল্পের চেয়ে কবিতার পাঠক বেশি। মানে কবিতাতেই বেশি মন্তব্য পড়ছে। এর কারন বোধহয় ধৈর্য। আমাদের কি ধৈর্য কম? অবশ্যই কম। আর একারনেই আমরা সাহিত্যে অনেক পিছিয়ে আছি। কারন, আমরা যথেষ্ঠ ধৈর্য ধরে যেমন কিছু পড়তে চাইনা, তেমনি যথেষ্ঠ ধৈর্য ধরে কিছু লিখতেই চাইনা। গল্পে টান থাকলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধৈর্যের অভাব হয়না। সাহস করে শুরু করলেই হল। কি বুঝলে?
খালিদ ফারহান ধন্যবাদ ইফতেখারুল ভাই , আমি চেষ্টা করেছি পশু পাখির কষ্টের বেপারে একটু সচেতন করতে মানুষ কে
ভূঁইয়া মোহাম্মদ ইফতেখার ব্যতীক্রমী, ভালো লেগেছে।

১৯ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৯ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪