নারকেল তত্ত্ব
প্রিয় পাঠক আগেই বলে রাখছি আমার তত্ত্বের নাম শুনে আপনাদের মনে হতে পারে এটা নেহাত খামখেয়ালীপনা, আমার অবশ্য তা মনে হচ্ছেনা। নিউটন সাহেব গাছ থেকে আপেল পড়া দেখে মাধ্যাকর্ষণ তত্ত্ব দিলেন, অধ্যাপক আইনস্টাইন রাতের আকাশ দেখে আপেক্ষিকতার তত্ত্ব দিলেন, ম্যালথাস জনগণ এর কথা চিন্তা করে ওনার তত্ত্বটাও দিলেন। কিন্তু আমি এমনই চুনোপুঁটি যে আমি কোন কঠিন তত্ত্ব দিলে সবাই ছ্যা ছ্যা করে উঠবে তাই আমার তত্ত্বর নাম নারকেল তত্ত্ব দিতেই এক রকম বাধ্য হচ্ছি। তত্ত্বটাও যে একান্ত আমার সে দাবীও করতে খুব ভায় পাচ্ছি, সবাই পছন্দ করলে পরে আংশিক দাবী করব হয়ত।
আমি নিজেই অনেক বছর ব্যাপারটা বুঝে উঠতে পারি নাই তারপর যখন বুঝলাম, আসে পাশের সবার ওপর আমার তত্ত্বটা পরীক্ষা করে এখন মোটা মুটি নিশ্চিত আমি একটা লাগসই তত্ত্ব পেয়েছি। কঠিন তাত্ত্বিক আলাপ করার আগেই কিছু উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটাতে পাঠকের আগ্রহ সৃষ্টি করার একটু চেষ্টা করি,
কিশোরবেলায় আমার গান করার বেশ সখ ছিল, সেই উৎসাহে কয়দিন গান শেখার ক্লাস করে আর ব্যা ব্যা রবে রেয়াজ করে বাড়ীর সবার কান এবং মাথা প্রায় নষ্ট করে দেবার ব্যাবস্থা করে দিচ্ছিলাম। মা একদিন মায়াভরে বললেন তোর গলায় গানটা মনে হয় ঠিক আসছেনা, তুই বরঞ্চ কোন বাদ্য বাজানো শিখতে শুরু কর। সেই আমার সংগীত প্রতিভার বিকাশে সমাপ্তি, কোন দিন আর বাদ্য যন্ত্র হাতে নেইনি, গানের গ ও আর চেষ্টা করিনি, অথচ বন্ধু সুমন গান শিখে ফেলল, এখন মন চাইলেই গান করে, আমাদের আব্দারেও গান গেয়ে শোনায়। এইতো সেদিন সবাই মিলে শহরের বাইরে বেড়াতে গেছি, উঠেছি ভাড়া করা এক বিশাল বাড়ীতে, এদেশে বলে কটেজ। রাতের বেলা বাড়ীটার পিয়ানোতে টুং টাং করে এমন সুন্দর কিছু গান শোনাল, আমাদের সবার বেড়াতে যাওয়াটাই স্বার্থক হয়ে গেল। ফিরতি পথে ভাবলাম, আমি যদি গান ছেড়ে না দিতাম, আজকে ওর মত আমিও গান গেয়ে এবং শুনিয়ে হয়ত আনন্দ পেতাম, কিন্তু অল্পেই ছেড়ে দিয়েছি।
আরো একটা উদাহরন দেই, বন্ধু রুমি আর আমার অংক ভীতি দুই পরিবার আর বন্ধু মহলে প্রায় সকলের জানা,ওর বাবা মা আমাদের জন্যে মাষ্টার ব্যাবস্থা করলেন, কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হলন, ক্লাশের শেষ পরীক্ষায় বিশাল একটা শুন্য নিয়ে আমরা দুজনই অকৃতকার্য হলাম, আমি আর ও ছাড়া সবাই ওপরের ক্লাশে উঠে গেল। ওর বাবা রেগেমেগে ওকে ঘর থেকে বের করে দেবার উপক্রম, আমার অবস্থাও যে খুব ভালো তা নয় । কিন্তু ভাগ্য বলতে হবে, এমন গভীর দুঃখের এক বিকেলে ওদের উঠানে বসে আছি, রুমির বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া চাচা এসে আমাদের সাথে বসলেন। কথায় কথায় বোঝালেন ভয় পেয়ে পালিয়ে কখনই কোন বিষয়ে ভাল করা যায় না, ঘেন্না করে কি আর ভালবাসা হয় ? অংকের চেয়ে সহজ আর নাকি কিছুই নেই, কারন অংকের সব কিছুই যুক্তি মেনে চলে। চাচা ওকে আর আমাকে অংক শেখাতে লাগলেন। সেই থেকে রুমি ঘন্টার পর ঘন্টা অংকের চর্চা করে চলল, আমিও চেষ্টা চালালাম। আমি পরের পরীক্ষা উৎরে হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম, কিন্তু রুমি ছাড়েনি,গত কুড়ি বছর রুমি কে দেখলাম, এন্তার বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ল, শেষ পর্যন্ত অংকেই একটা ডক্টরেট নিয়ে ফেলল, এখন সে একজন অংকের অধ্যাপক, একদিন ওর জীবনি লেখা হলে ওতে অংকে ফেল করার বিষয়টাও নিশ্চয় লেখা থাকবে, আমার নামটা সাথে থাকলে নিজেকেও ওর সাথে এক আধটুকু বিখ্যাত লাগবে বই কি।
এখন আমার ধারনা হয়েছে, আমি যা কিছু নূতন শুরু করতে যাব, প্রথমেই বাধা আসবে, ভূল হবে, অকৃতকার্য হব। ছোট বেলায় মনে হত, ছাই আমি যেটায় হাত দেই সেটাই হয়না। আসলে কথাটা ঠিক নয়, সবটাতেই ভাল ফল হত যদি আমি জানতাম কেমন করে ওই কাজটা করতে হয়। আমাদের পারিপার্শিক অবস্থা বা সমাজে আমদের চার পাশে কেউ আমাদেরকে বলতে চাননা, অকৃতকার্য হওয়াও একটা শিক্ষা, দৌড়াতে শিখবার আগে হাঁটতে শিখতে হয়, আর তাতে বেশ কয়বার পড়তে হবে সেটাও শেখার একটা অংশ। সমাজ শুধু কৃতকার্যদের কেই বাহবা দিতে চায়, সেটা খুবই ভাল, কিন্তু অকৃতকার্যদের লজ্জাদিয়ে এড়িয়ে যাওয়াটা যেন আমাদের রেওয়াজ। আমিও সবার সাথে তাই করেছি, বার বার হেরে গিয়ে লুকিয়েছি। হঠাৎ একদিন অবস্থা ঘুরে গেল, সে কাহিনী বলতে হলে আমার প্রিয় বন্ধু রাঘু নানথন প্রেমাতিলাকারত্নম এর সাথে পাঠক এর পরিচয় না করালেই নয়।
ভিন দেশে পড়তে এসেছি, প্রথম ক্লাস একাউন্টিং এর, শেষ করে ক্যাম্পাসের পায়ে হাঁটা রাস্তা ধরে ক্যাফের এর দিকে যাচ্ছি, দেখলাম আমাদের ক্লাসের একটা ছেলে আমাকে আসতে দেখে দাঁড়িয়ে পড়ল, এসে পরিচিত হতে চাইল, সেই রাঘু, এসেছে ভারত থেকে, মূলত: সে শ্রীলংকার জাফনার মানুষ। গোলগাল চেহারা, চোখে পুরু চশমা, মাথা ভর্তি কোঁকড়া চুল, মুখে হাসি টানা, পরে বুঝেছি হাসিটা ওর বিশেষ বৈশিষ্ট। খাওয়া নেয়ার লাইনে আমরা দুই জন দাঁড়িয়ে আমাদের পালা আসার জন্যে অপেক্ষা করছিলাম আর কথা বলছিলাম । বললাম, প্রথম ক্লাসেই চার অধ্যায় পড়িয়ে ফেলল, তোমার কেমন মনে হচ্ছে? জেফ্রি জোন্স মাষ্টার মশায় মনে হচ্ছে ভোগাবে । আবারও মুখে হাসি টেনে বলল, বেশতো শিখে পড়ে নেব, ও আর কিভাবে ভোগাবে? আমরা যদি ভুগতে না চাই পথ বের করে নিতে হবে। বলে কি ছোকরা, এত্ত গুলো পড়া এক সপ্তাহে কি করে পড়ব?
পরের ক্লাসটা ইকনমিক্স, দুটো ত্রিশ এ শুরু হবে, হাতে একটু সময় আছে, খাওয়া নিয়ে একটা টেবিলে বসে রাঘু আর আমি নিজেদের মধ্যে আলাপচারিতা করছি, পরিচিত হচ্ছি, রাঘু জানাল ওর বাবাকে শ্রীলংকার গৃহ যুদ্ধে তামিল টাইগাররা খুন করে ছিল, তখন রাঘু ক্লাস ফাইভে পড়ে, ওর মা ওদের দুই ভাই কে নিয়ে কোন রকম পালিয়ে ভারতে চলে আসেন । ওর মা চাকুরী করে ওদের পড়াচ্ছেন, ছোট ভাই সিমলায় এক বোর্ডিং স্কুলে পড়ে আর ওকে এখানে পড়তে পাঠিয়েছেন। মধ্য বিত্ত, মোটা মুটি শিক্ষিত পরিবার ছিল , কিন্তু অবস্থার কারনে এখন ওকে চাকুরী করেই পড়াশুনা চালিয়ে যেতে হবে, সরকারের চোখ এড়িয়ে পেট্রল পাম্পে রাতের শিফটে কাজ করবে, সে একটা চাকুরীও প্রায় ব্যাবস্থা করে ফেলেছে। ওর পড়া শেষ হলে ছোট ভাইকে পড়ার খরচ দিত হবে আর ওর ইচ্ছে মাকেও নিয়ে আসবে এই দেশে। রাঘু এবার আমার দিকে তাকিয়ে, হাসি হাসি মুখ নিয়ে বলল, তোমার কথা বল। আমার কথা আর কি বলব, আমি তখনও ওর কাহিনী শুনে অবাক হয়ে খাবি খাচ্ছি, এই ছেলে এত কিছুর মধ্যেও কেমন সাহসী, আর সেদিন এসে এখনই আমার বাড়ীর জন্যে মন খারাপ হচ্ছে, খেতে পারছিনা, ঘর পরিষ্কার, রান্না করা সব কিছুই যেন সমস্যা মনে হচ্ছে।
অল্পের ওপর নিজের খবর দিলাম, আমরা বন্ধু হয়ে গেলাম, এত বছর পর এখনও আমরা খুব ভাল বন্ধু। ঐদিন রাঘু ওর হাসি টানা মুখে জানাল, ওর বাবা ওকে ছোট বেলায় মজার একটা গল্প বলেছিলেন, গল্পটাই এই নারকেল তত্ত্ব, রাঘুর মত করেই পাঠকের জন্যে পেশ করলাম,
• শোন আমরা জাফনার ছেলেপুলে আমাদের ছোট বেলা থেকেই নারকেল খেয়ে অভ্যাস, তাই সহসা আমরা ভয় পেতে চাইনা, কারন নারকেল খাওয়াতো আর সহজ বিষয় না।
• বুঝলাম না রাঘু, নারকেল খাওয়ার মধ্যে কঠীন কি আছে?
• আছে, বুঝিয়ে বললে তুমি আমার সাথে এক মত হবে, তোমার দেশে কি নারকেল গাছ আছে? কখনও নারকেল কেমন করে খায় দেখেছ।
• অবশ্যই দেখেছি, দেশে আমাদের বাড়ীর পেছনেই বেশ কয়টা নারকেল গাছ আছে, ছোট বেলায় আমরা বলতাম নারকেল গাছে ভূত থাকে।
• ও এক গাল হেসে বলল, গাছ থেকে তুমি যখন পাকা নারকেল পেড়ে আনবে ওটা খাওয়ার আগে তোমার কি করতে হয় বলতো?
• ওহ সেটা বলতে চাইছ, এমন কিছু কি করতে হয়? প্রথমে নারকেল এর বাইরের শক্ত আঁশের আবরনটা দা বা ছুরি দিয়ে ছিলে নিতে হয়, তারপর নারকেলটা ফাটিয়ে ওখান থেকে নারকেল এর রস, যাকে আমরা নারকেল এর পানি বলি ওটা বের করে নিতে হয়, ব্যাস তারপর সাদা শাশটা নারকেল থেকে চাঁড় দিয়ে দিয়ে বের করতে হয়।
• ঠিক বলেছ, তোমারও দেখছি নারকেল খাওয়ার বেশ ভালই অভিজ্ঞতা আছে, এবার নারকেল খাওয়ার অভিজ্ঞতাটা আমাদের জীবনের সাথে মিলিয়ে দেই। তুমি যখন কিছু শিখতে যাবে, প্রথমেই তুমি নারকেল এর ছোবড়াটা ছাড়াতে হবে, এতে মজার কিছুই নেই,তুমি মনে করবে হয়ত, হায় সময়ের কি অপচয়, বিষয়টা শুধুই রসহীন ছোবড়া। যেমন মনে কর আমাদের দুজনেরই প্রাথমিক ভাষা ইংরেজী নয়, আমরা যখন ইংরেজী শেখার জন্যে A তে Apple, B তে Ball পড়েছিলাম আমরা শুধুই ঐ বিষয়টার ছোবড়া ছাড়াচ্ছিলাম, অর্থাৎ কেমন করে বিষয়টা বুঝব তার সংকেত গুলো শিখছিলাম। একই ভাবে আমরা অংকে ১,২,৩ শিখেছি, অনেকে মনে করবে এটাই বুঝি কঠিন অধ্যায়, আসলে তা কিন্তু নয়।
কঠীন অধ্যায় হচ্ছে এর পরের পর্ব, অর্থাৎ নারকেল এর শক্ত খোলশটা ফাটানো, ওটা যদি না পার তুমি নারকেল এর রসটুকু আর পাবেনা। মনে কর আমরা A, B, C শেখার পর বাক্য বানাতে শিখলাম, অনেক লেখা এবং পড়া চর্চা করতে হল। একই ভাবে অংকে যোগ, বিয়োগ, গুন আর ভাগ শিখতে হল। এগুলো কিন্তু মূল বিষয় নয়, এখনও চলছে মূল বিষয়টা আস্বাদন করবার প্রস্তুতি পর্ব। এটাই কঠিন, একটা বিষয় সেখার জন্যে সংকেত গুলো শেখার পর এই পর্বে শিক্ষার্থী বিষয়টার মূল সুত্র গুলো শিখছে। বেশীর ভাগ শিক্ষার্থী এই অংশে এসে মনে করবে, এত্ত গুলো ছোবড়া ছাড়ানোর পর এখন দেখি আরো কঠিন একটা আবরন, নাহ, এ বিষয়ের রস আস্বাদন আমার জন্যে নয়। এখানেই আমরা সবাই বড় ভূলটা করি।
শিক্ষার্থী যদি বিষয়টাকে আঁকড়ে ধরে থাকে, এর পরই আসছে রস আস্বাদনের পালা, ঐ অংশে শিক্ষার্থী বিষয়টা বুঝবে, শিখে আনন্দ পাবে, বিষয়টা জীবনে প্রয়োগ করতে পারবে, বলতে পার, এই পর্বে এসে আমাদের বিষয়টা ভাল লাগতে শুরু করবে। অনেকে আবার মনে করবে সে ঐ বিষয়টা বেশ জানে, সেটাও আবার ভূল, তুমি এখনো বিষয়টার মধ্যে সহজ লভ্য অংশটুকুতেই বিরাজ করছ, বিষয়টার গভীরে কি আছে সেটা নারকেল এর শাশ এর মতই চাঁড় দিয়ে তুলে আনতে হবে।
• হ্যাঁ এখন আমি মনে হয় বুঝতে পারছি এর পর তুমি কি বলতে যাচ্ছ, ঐ পর্যায় বিষয়টা নিয়ে অনুসন্ধান, গবেষনা ইত্যাদি করতে শুরু করতে পারব, তখনই আসলে আমরা দেখতে পাব বিষয়টার মূল স্বাদটা কোথায়।
• ঠিক বলেছ, নিজেদের সাথে অন্যেকেও বিষয়টাতে স্বাদ পেতে সাহায্য করতে পারব, অর্থাৎ শেখাতেও পারব।
• ওহ! রাঘু, তুমি খুবই বুদ্ধিমান ছেলে, তোমার সাথে পরিচয় হয়ে খুব ভাল হয়েছে, আমার সাহসও অনেক খানি বেড়ে গেল, আসলে শেখার পথের এমন সুন্দর বর্ননাটা আমার খুবই ভাল লেগেছে। এটাকে একদিন আমি আর তুমি তত্ত্ব আকারে প্রকাশ করতে পারি হয়ত, কি বল?
রাঘু হো হো করে হেসে উঠে বলল,
• আচ্ছা তোমার দেশে নারকেল দিয়ে কি কি খাওয়া বানায়? আমার দেশে প্রায় সব কিছুতেই নারকেল দেয়া হয়, রান্না করা হয় নারকেল তেল দিয়ে। নারকেল দিয়ে তৈরী ইডলি, দোসা, ওগুলোর সাথে দৈ এবং সম্ভার দিয়ে খেতে যা মজা না। একদিন ছুটির সময় তোমাকে খাওয়াতে নিয়ে যাব, আমি একটা শ্রীলংকান রেস্তোরাঁ খুজে পেয়েছি, মনে হয় ভালই হবে। আর আমার মায়ের রান্না করা যে কোন নারকেল এর তরকারি খেলে তোমার মনে হবে পৃথিবীর শ্রেষ্ট খাওয়া।
• আহা নারকেল দিয়ে খাওয়ার কথা বলেতো আমার জিভে পানি এসে গেল, আমার মা খুব মজার নারকেল চিংড়ি রান্না করেন, আর বড় খালার হাতের নারকেলের পুলি পিঠে খেলে তোমার মনে হবে সে এক স্বর্গীয় খাওয়া, ছোট খালা নারকেল আর লাউ এর দুধ সেমাই ঈদে-পরবে বানান তখন আমি সবার আগে গিয়ে ওনার বাড়ীতে হাজির হই। চল আপাতত ইকনমিক্স ক্লাশটা করে আসি।
সবার সাথে আমরা দুজন ক্লাশে বসার পর অধ্যাপক রবার্ট লাট্রিগ গট গট করে এসেই নিজের পরিচয় দেয়ার আগে দেয়ালের সবুজ লেখার বোর্ডে খস খস করে দুটো শব্দ লিখলেন, ডিমান্ড এবং সাপ্লাই।
রাঘু আর আমি একে অন্যের দিকে এক পলক তাকালাম, রাঘু ফিস ফিস করে বলল, নারকেল এর ছোবড়া!
অনেক বছর পেরিয়ে গেছে, কয়েকদিন আগে, বিকেলে পার্কে বসে গল্পের বই পড়ছিলাম কাছেই মেয়ে খেলছিল। মুঠোফোন বেজে উঠল, দেখলাম রাঘু, ফেলে আসা দিন গুলোর অনেক গল্প হল। হঠাৎ মনে হল, রাঘুর বলা সেই নারকেল তত্ত্বটা সবাই কে জানানোর দরকার। রাঘুকে বলতেই সে চিরাচরিত হা হা করে হাসি দিয়ে বলল, তুই এখনও পাগল রয়ে গেছিস, যদি পারতাম তোর মাথাটাই আমি এখন নারকেল এর মত ফাটাতাম!