আত্মপ্রকাশ

বর্ষা (আগষ্ট ২০১১)

রনীল
  • ৯১
  • ৬৬

(ইরফান)

খেলা শুরু হতে না হতেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। মহাখালী ঈগলস প্রিমিয়ার লিগের প্লেয়ার হায়ার করে এনেছে। লোকজনের মুখে শুনলাম নাম ওমর, দর্শকদের ভাষায় “বার্মিজ্জা উমর”। আমি দূর থেকে আড়চোখে একবার তাকালাম। ছ’ফুটের বেশি লম্বা। প্রস্থে ও আমার প্রায় দ্বিগুণ। চেহারা একদম বাঙালিদের মতোই, নাম বার্মিজ্জা কেন কে জানে! যা হোক আমি মুখে খুব একটা আগ্রহ দেখালামনা। সে রকম নিয়ম নেই।
ওমর ও আমাকে আড়চোখে দেখছিল। আমার কপালে হালকা চিন্তার ভাঁজ পড়ে। বৃষ্টিতে মাঠ ভারি হয়ে গেছে। এরকম মাঠে টেকনিকের চেয়ে গায়ের জোর বেশি কাজে লাগে, আর ওমরের সাথে আমার গায়ের জোরে পারার প্রশ্নই ওঠেনা।
আমি সোহাগকে মিডফিল্ড থেকে হাফ ব্যাকে পাঠিয়ে দিলাম। পেছন থেকে সবাই বার বার আমার কাছে বল পাঠাচ্ছিল, আমি বেশিক্ষণ বল পায়ে রাখলামনা। ওমর দু একবার পা চালালো, আমি তিড়িং বিড়িং করে সরে গেলাম।
আমি খেয়াল করলাম- ওমর শুধু বাম পায়েই খেলছে। ডানপায়ের খুব একটা কাজ দেখা যাচ্ছেনা। আমি আবার ডান পায়ে খেলি। ঠিক করলাম, সুযোগ পেলে ওর ডানপাশ দিয়ে কেটে বের হয়ে যাবো।
প্রথম হাফের খেলা শেষ। কোন গোল হয়নি। পুরো সময়টাই আমরা ছোট ছোট পাসে বল পায়ে রাখার চেষ্টা করলাম। পুরোপুরি অ্যাটাকে গেলাম না। ওমর ও দেখলাম ব্যাপারটা ধরতে পেরেছে। অহেতুক আর চার্জ করলোনা।
বিরতিতে সবাই কেক আর লেবু খাচ্ছে। এমন সময় বাসেত এসে আমার কানে কানে বলল- ন্যাটা বাবু এসেছে।
আমি আড়চোখে তাকিয়ে দেখি ন্যাটা দু তিনজন সাগরেদ সহ ঈগলস গ্যালারীতে দাড়িয়ে আছে।
দ্বিতীয়ার্ধের পাঁচ মিনিটের মধ্যেই আমরা একটা গোল দিয়ে ফেললাম।
মিডফিল্ডে জব্বার হঠাৎ ফাঁকায় বল পেয়েছিল। পেয়েই কাঁদা পানির উপর দিয়ে অবিশ্বাস্য গতিতে একটা টান দিল। কাউন্টার অ্যাটাকে ঈগলসরা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। আমি রাইট উইঙ্গের দিকে ছুট দিতেই ওমর আমার দিকে তেড়ে আসলো। ডি বক্সের সামনে প্রতিরোধহীন সোহাগ যেন মনের আনন্দে এক চোট হেঁসে নিল। আস্তে মারলেও চলত, কিন্তু সোহাগ এতো জোরে মারলো যে বার দু’ইঞ্চি হেলে গেল।
স্থানীয় দল হিসেবে আমাদের সমর্থকদের উল্লাস বাঁধভাঙ্গা হবার কথা। হঠাৎ খেয়াল করলাম ন্যাটা বাবু আরো দু একজন কে নিয়ে মাঠের ভেতর ঢুকে গেছে।
- এই গোল মানিনা... এইটা ক্লিয়ার অফসাইড... গোল ক্যানসেল কর...নইলে খেলা বন্ধ।
ন্যাটা বাবু দুহাত পকেটে ঢুকিয়ে সীনা টান করে দাড়িয়ে আছে। আমার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছেনা। ভাবভঙ্গিতে বোঝা যাচ্ছে তৈরি হয়ে এসেছে।
আমি ঘাড় ঘুড়িয়ে গ্যালারীতে কিছু বলবো, তার আগেই বাবু গুলি করলো। তাকিয়ে দেখি এদিকেই এগিয়ে আসছে... আমি নিজের নখদন্তহীনতায় অসহায় বোধ করছিলাম। এমন সময় খেয়াল করলাম সোহাগ কোথা থেকে একটা ক্রিকেট স্ট্যাম্প নিয়ে বাবুর দিকে ছুটে আসছে। আর দুই সেকেন্ড... সোহাগ স্ট্যাম্প তুললো, বাবুর রিভলবারটা আমার দিকে তাক করা... হঠাৎ চোখের পলকে সে ঘুরে গিয়ে সোহাগকে গুলি করলো। সোহাগের মুখ দিয়ে কোৎ একটা শব্দ হয়... তারপর পাক খেয়ে একটু দূরে ছিটকে পড়লো।
একজন মানুষকে পুরোপুরি মেরে ফেলা সহজ কাজ নেই। ন্যাটা বাবুর মত ঠাণ্ডা মাথার খুনি ও মুহূর্তের জন্য থমকে যায়... সোহাগের স্ট্যাম্পটা আমার পায়ের কাছে গড়াগড়ি খাচ্ছিল... মুহূর্তেই সেটা তুলে আমি বাবুর বাম কানের নিচে বসিয়ে দিই।
গুলি লাগার সাথে সাথেই সোহাগের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু এতো আকস্মিক এসেছে যে বেচারা মৃত্যুর আতঙ্কটাও টের পায়নি।
আমি তাকিয়ে দেখি সোহাগের মুখটা হা হয়ে আছে ... চোখদুটো বিস্ফোরিত আর মুখে যেন অসমাপ্ত রাগের সেই চিহ্ন এখনো লেগে আছে।
রাত এগারোটার দিকে পুলিশ এসে আমাকে ধরে নিয়ে গেল। তার আগে অবশ্য আমি বাবুর ফেলে যাওয়া বত্রিশ বোরের রিভলবারটা নাইটগার্ড রমজানের চৌকির নিচে লুকিয়ে ফেলেছি।



(গৌতম)
বাবলুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। সৎ মা উদ্বিগ্নভাবে খাবার হাতে তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন। বাবলুর বয়স চার। এই বয়সেই সে বহুমুখী প্রতিভার পরিচয় দিয়ে ফেলেছে। গড়গড় করে সে বাংলা-ইংরেজি নানান ছড়া বলে যেতে পারে, দুর্দান্ত সব ছবি আঁকে... বাসের পিঠে প্লেনের ডানা জুড়ে দিয়ে প্রকৌশলী প্রতিভার নমুনা ও দেখিয়ে দিয়েছে। বাবলুর তুলনায় আমাকে জড়ভরত ই বলা যায়, কোন কাজই আমি ঠিক মত করতে পারিনা। যেকারনে ‘বেকুব’ শব্দটা প্রায়ই আমাকে শুনতে হয়।
তবে লোকে আমার যে গোপন প্রতিভার খবর রাখেনা, তা হল আমার অনুভূতির প্রখরতা। আমি প্রায়ই মেঘেদের আনাগোনার মানে বুঝে ফেলি, জীর্ণ কদম গাছটার বার্ধক্যের কষ্ট অনুভব করি... বাতাসে জলজ গন্ধ পেয়ে বুঝে ফেলি, একটু পর বৃষ্টি হবে।
এই মুহূর্তে আমি টের পাই বাবলু পুরনো আলনাটার পেছনে ঘাপটি মেরে বসে আছে। কখন যে সে এসে চুপচাপ ওখানটায় বসেছে, টের পাইনি। কিন্তু আলনার পেছনে লুকিয়ে থাকা প্রানের স্পন্দনটুকু কোন এক রহস্যময় প্রবাহে ভেসে- ঠিকই আমার কাছে পৌঁছে যায়।
আমি চুপচাপ গিয়ে পেছন থেকে বাবলুকে জড়িয়ে ধরি। ধরা পড়ে দুষ্টটা আবার পালিয়ে যেতে চায়। দুজনের মধ্যে হুটোপুটি চলতে থাকে। সৎ মা এসে বিরক্তভাবে আমাদের দিকে চেয়ে থাকেন। আমি জানি সৎ মা আমাকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারেননা। এগিয়ে এসে তিনি বাবলুর গালে একটা চড় বসিয়ে দেন। বাবলু কান্না করেনা- তবে লজ্জিত ভাবে আমার দিকে চেয়ে থাকে। বাবলুর এই কান্না না করে লজ্জিত হবার মধ্যে ও কেমন যেন একটা বুদ্ধিমত্তার ব্যপার আছে। আমি আস্তে করে সরে এসে জানালার পাশটায় বসলাম।
মাঝে মাঝে ভাবি- এই যে মানুষ হিসেবে জন্মেছি, এমনটাতো না ও হতে পারত। আমার দাদা শেষ বয়সে বদ্ধ পাগল হয়ে গিয়েছিলেন। দাদী এর আগেই মারা গিয়েছিলেন, যে কারনে শেষ বয়সে দাদার যাবতীয় পাগলামি বাবকেই সহ্য করতে হয়েছিল। সেই থেকে বাবা কেমন যেন বিষণ্ণ হয়ে গেলেন। দাদা অবশ্য একদিন নিজেই বাবার সব কষ্টের অবসান ঘটিয়ে দেন। মধ্য রাতে যখন সবাই গভীর ঘুমে মগ্ন, তখন দাদা নিজেই নিজের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেন।
বাবা কোন রকমে নিজের জানটা বাঁচিয়েছিলেন। কিন্তু প্রানে বাঁচলেও সারাজীবনের জন্য বাবার স্মৃতি হয়ে রইল সে বিভীষিকাময় রাত। দাউ দাউ আগুনে দাদার শ্মশ্রুমণ্ডিত চেহারাটা যেন গলে গলে পড়ছিল, এরই মধ্যে তিনি চিৎকার করে বলছিলেন- মুক্তি দিয়ে গেলাম... তোমাদের সবাইকে মুক্ত করে গেলাম।
সে ঘটনার পর বাবার বিষণ্ণতা রোগ আরো বেড়ে গেল। পাগল বংশ হওয়ায় বাবার বিয়ে করাটাই অনিশ্চিৎ হয়ে পরেছিল। যা হোক আত্মীয় স্বজনদের নানা রকম চেষ্টায় শেষমেশ বাবার বিয়েটা হয়েই যায়। আজ আমি ভাবি, সেদিন যদি বাবার বিয়েটা না হত, তাহলেতো আমার জন্ম হওয়ারই কথা ছিলনা।
বিয়ের আগে আমার মায়ের কাছে দাদার পাগলামির কথা গোপন করা হয়, কিন্তু বিয়ের পর তিনি যথারীতি সবকিছু জেনে যান। আমার মা নাকি অত্যন্ত নিরীহ ধরনের ছিলেন। এধরনের মিথ্যাচারিতায় তিনি ক্রুদ্ধ হননি, তবে ব্যথিত হয়েছিলেন ঠিকই। নিজেকে প্রবোধ দিতেন এই বলে যে- শ্বশুর সাহেব পাগল হয়েছিলেন শেষ বয়সে, সে হিসেবে এখনো অনেক সময় বাকী আছে।
তবে আমার মাকে এতো দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করতে হয়নি। এক প্রবল বর্ষণের রাতে আমাকে জন্ম দেয়ার পরপরই তার মৃত্যু হয়। জন্মের রাতে যে শিশুর মায়ের মৃত্যু হয়, তার বেঁচে থাকাটা অনেকটাই অনিশ্চিৎ হয়ে যায়। কিন্তু আমি মরলামনা, কোন রকমে কষ্টেসৃষ্টে টিকে গেলাম। আমার নিরীহ বাবা কয়দিন চেষ্টা করলেন আমাকে সামলাতে। কিন্তু একজন পাগলকে সামলানো আর একজন নবজাতক কে সামলানো কি একই কথা!
উপায় না দেখে বাবা আমাকে রেখে এলেন ফুপুর কাছে। ফুপু আমার বড্ড আলাভোলা ধরনের, খেয়ে না খেয়ে আমাকে বড় করতে লাগলেন। ফুপুর আশ্রয়ে থাকাকালীন সময়েই পোলিও তে আমার একটা পা নষ্ট হয়ে যায়।
মানুষ না হয়ে যদি পাখি হয়ে জন্মাতাম, তাহলে এতো টিকা, এতো ঔষধপত্র নিয়ে চিন্তা করতে হতোনা। আর টিকার অভাবে যদি পা খোঁড়া হয়েই যেত, তাতে কি যেত আসতো... ডানা থাকতে পায়ের কি দরকার!
যে কারনে আকাশে উড়তে থাকা পাখীদের দেখতে আমার খুব ভালো লাগে। উড়তে উড়তে একসময় পাখীরা অনেক দূরে চলে যায়। তাদের পিছু নিতে নিতে আমি ও একসময় মেঘের ভিড়ে পথ হারিয়ে ফেলি। আজকাল অবশ্য মেঘদের সাথে আমার বেশ বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। গদাইলস্করি জানালাটার পাশে বসলেই মেঘেরা আমাকে ডাক দেয়- আয়, আয়... আমি ভোম্বলের মত সেদিকে তাকিয়ে থাকি। লোকজন আমাকে দেখে হাসে, নাম দেয়- “পাগলা গামা”। আমি জবাব দেইনা, শুধু বোকার মত হাঁসি।
আমার মা বেঁচে থাকলে এটা দেখে খুশি হতেন যে আমার বাবা শেষমেশ পাগল হয়ে যাননি। দ্বিতীয় বিয়ের পর তার বিষণ্ণ ভাবটাও অনেক কেটে গেছে।
শুধু আমি টের পাই, দাদাজানের অতৃপ্ত হাহাকারটুকু পুরোপুরি হাওয়ায় মিলিয়ে যায়নি।
মাঝে মাঝে গভীর রাতে ঘুমের মাঝেই আমি অনুভব করি দাদাজানের হাহাকারটুকু বহুদূর ঘুরে এসে, অনেক শিরা উপশিরা ভেদ করে আমার মাথার ভেতরে আশ্রয় নিয়েছে। ঘুমের মাঝেই আমি তখন হেঁসে উঠি – দেখবেন দাদাজান, একদিন আমি ও ...



















(ইরফান)

রাত এগারোটায় বাসায় পুলিশ আসা মানে ভয়ঙ্কর কিছু। আমার মা ই দরজা খুলেছিলেন। পুলিশ দেখে মার মুখটা শুকিয়ে এতোটুকু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমি ভয় পাইনি, ভয় পেলে আমার চলেনা। জানতাম বড়জোর দুই একদিন। কিন্তু আমাকে ততদিন অপেক্ষা করতে হলনা, দুই ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ আমাকে ছেড়ে দিল।
সোহেল ভাই থানার বাইরে দাড়িয়ে সিগারেট টানছিলেন। আমাকে দেখে হাসলেননা, তবে হাত বাড়িয়ে দিলেন।
- পার্টি হঠাৎ জরুরী প্রোগ্রাম কল করেছে। দুই একদিনের মধ্যে অনেক বড় পরিকল্পনা আছে। তুই ছেলে পেলে রেডি কর।
- কতজন লাগবে?
- বিইশ... মিনিমাম পনর... পরশু হরতাল, কালকে বিকেলের দিকে সবাইকে নিয়ে বড় রাস্তার মোড়ে থাকবি।
- হরতাল পরশু, তো কালকে ছেলেপেলে দিয়ে কি করবেন... অহেতুক খরচ!
- অহেতুক খরচ না... হরতালের দিন কড়াকড়ি থাকবে, তার আগের দিন দুই একটা ঘটনা ঘটাতে হবে... পার্টি থেকে সেরকম ডিরেকশন দেয়া আছে।
- আর ন্যাটার ব্যাপারটা!
সোহেল ভাই হাত তুলেন- সেটা পড়ে দেখা যাবে।
পরদিন সকাল থেকেই ইরফান কাজে লেগে যায়। কিন্তু গতকালের ঘটনার কারনে এলাকা থমথম করছে। বাবা-মারা তাদের উঠতি বয়সী ছেলেদের এদিক ওদিক পাঠিয়ে দিয়েছেন।
একহাঁটু পানি ভেঙ্গে সে নর্দা বস্তিতে চলে যায়। বস্তির ভেতর থেকে নারী-পুরুষের উত্তপ্ত কণ্ঠস্বর ভেসে আসে। ইরফান ভেতরে না গিয়ে কমবয়সী একটা ছোকরাকে ভেতরে পাঠালো। ছোকরা গিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই রান্টুকে ডেকে নিয়ে আসে। রান্টু ইরফান কে দেখে খুশি হয়, এক গাল হেঁসে বলে- কি ওস্তাদ! খবর টবর আছে মনে হয়!
ইরফান হাসলোনা, গম্ভীর মুখে বললো- চল, কাজ আছে।
দুই ঘণ্টা খেটেখুটে দুজনে চৌদ্দজন জোগাড় করে ফেলল। সোহেল ভাই বলেছিলেন- মিনিমাম পনর। কিন্তু চৌদ্দজনের উপর কোনভাবেই আর কাউকে পাওয়া গেলনা।
দলবল নিয়ে ইরফান স্কুল মাঠের দিকে যাচ্ছিল। এমন সময় রান্টু দেখল গৌতম তাদের বাসার দরজার সামনে বসে আছে।
- ওস্তাদ, পনরো নাম্বার একজন অবশ্য পাওয়া গেছে... তয় প্যাঁদানি শুরু হইলে মামায় মনে দুর পারবার পারবোনা!
ইরফান বিরক্তভাবে গৌতমের দিকে একবার তাকায়। কোন কাজ কাম নেই, সারাদিন এরকম ভ্যাবলার মত বসে থাকে। ফার্মগেট ওভারব্রীজের উপর এমন অনেক ল্যাংড়া লোক এলোপাথাড়ি পড়ে থাকে... দেখে ওর মাথায় খুন চড়ে যায়। এসব লোকের বেঁচে থাকার কি মানে! ইচ্ছে করে ভিক্ষুকগুলোর গায়ে থুথু ছিটিয়ে আসে!
খুব কম লোক ই জানে যে ইরফান আর গৌতম একসময় খুব ভালো বন্ধু ছিল। অনেকদিন গৌতমকে বিরক্ত করায়, দুষ্ট ছেলেদের সাথে ইরফান মারামারি ও করেছে। তারপর সে ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করে। বাস্তবতা থেকে ইরফান শিখে নেয় এসব ফালতু লোকের থেকে যতো দূরে থাকা যায়, ততোই ভালো।





















(গৌতম)

দুপুরের দিকে হঠাৎ আকাশে মেঘ করলো। সারা সকাল সুন্দর ঝকমকে রোদ ছিল। অকস্মাৎ এতো মেঘ যে কোথা থেকে এসে পড়লো। আমি জানালার পাশে চুপচাপ বসে মেঘ দেখছিলাম, হঠাৎ সৎ মায়ের বাজখাই গলা শুনতে পেলাম,
- এই যে নবাবজাদা, কাজ কাম তো কিছু করবেননা, পারার মধ্যে একটা কাজই পারেন- সেটা হল ভাবনা... ভাবনকাজী হয়েছেন আপনি! শুধু চিন্তা ভাবনা করেই পেট ভরবে! সকাল থেকে কয়বার বললাম- বাজার যেতে!
আমি তড়িঘড়ি করে উঠে পড়ি... ক্রাচদুটো ছাড়াই। ক্রাচ ছাড়া হাঁটতে আমার অবশ্য খুব একটা সমস্যা হয়না, শুধু অপুষ্ট পা’টায় একটু হালকা চাপ পড়ে।
বাজার থেকে ফেরার পথে দেখি গলির মুখে একটা সিএনজি দাড়িয়ে আছে। সিএনজি ড্রাইভার কিছুতেই গলির ভেতর যেতে রাজি নয়,
- আপনের সাথে আমার কত দুর কন্টাক হইছে... মেইন রোড পর্যন্ত, মেইন রোড আইসা পড়সে এবার নামেন।
আমি ভালো করে সিনজির ভেতরটা দেখি। ভেতরের আরোহিণীটিকে আমি চিনি, আমাদের পাশের বাসাতেই থাকে- নাম রেবা।
- দেখুন ভাই, গলিতে কেমন পানি জমে আছে! এই পানি দিয়ে আমি কিভাবে যাবো... একটু সামনে গেলেই আমার বাসা, মসজিদের পাশেই... প্লিজ ভাই... আপনাকে আমি ভাড়া বাড়িয়ে দেবো।
- আপনের বাড়তি টাকার আমার দরকার নাই। আপনের পচা গলির গাত্তাগুলা দেখছেন! একবার গাত্তায় পরলে কে তখন আমার সিএনজি ঠেলবো?
মাঝে মাঝে নিজের অসম্পূর্ণতার জন্য আমার নিজের প্রতিই ঘৃণা লাগে। সিএনজি ড্রাইভার তেরিয়া ভঙ্গিতেই বসে রইলো। রেবার মুখে রক্ত জমেছে। আমার দিকে অসহায়ভাবে একপলক তাকালো... জানে কোন লাভ নেই।
এমন সংকটময় মুহূর্তে ইরফান যেন মাটি ফুঁড়ে উদয় হল।
- ওই মিয়া... মহিলা এতো করে বলসে... ওরে বাসা পর্যন্ত দিয়া আসোনা ক্যান?
- আমার সাথে উনার কন্টাক মেইন রোড পর্যন্ত... আমার কন্টাক আমি শেষ করসি, এখন বাকিটা আমার দেখার দরকার নাই... আপনের মনে চাইলে আপনে গিয়া পৌঁছাইয়া দেন।
ড্রাইভারটা উদাস মুখে মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো, আর এখানেই সে ভুলটা করলো... ইরফানের দিকে না তাকিয়ে।
ইরফান যেন গল্পের নায়কদের মত জাদুকরি... মুহূর্তেই সে কোথা থে একটা গজার গাছের ডাল জোগাড় করে ফেললো। আমি খেয়াল করেছি- প্রয়োজনের সময় ইরফান কেমন যেন ম্যাজিকের ভঙ্গিতে লাঠি, স্ট্যাম্প এগুলো জোগাড় করে ফেলে। আমি নিজের দিকে একবার তাকাই। জীবনে কখনো আমি ঠিক সময়ে ঠিক কাজটি করতে পারিনি। এই যেমন- এই মুহূর্তে দুই হাতে দুইটা বাজারের ব্যাগ নিয়ে বেকুবের মত দাড়িয়ে আছি।
- ওই খানকির পোলা... তুই আমার লগে রঙ লস! শুয়োরের বাচ্চা, তুই চিনস আমারে!!
ইরফান উন্মত্তের মত সিএনজিতে লাথি মারে, লাঠি দিয়ে দমাদম বাড়ি দেয়। প্রচণ্ড শব্দে গোটা সিএনজি ট্যাক্সিটা কেঁপে উঠে, রাস্তায় লোকজনের চলাচল কিছুক্ষণের জন্য থেমে যায়।
ড্রাইভারটা এতক্ষণে ভালো করে ইরফানের দিকে তাকায়। ইরফানের ঘাড় পর্যন্ত নেমে আসা চুল, ঝকঝকে সাস্থ্য আর শার্টের হাতা কনুই পর্যন্ত গোটানো... দুর্দান্ত সব শিরা উপশিরারা যেন তার কব্জির চামড়া ভেদ করে বেরিয়ে আসতে চায়।
- সরি বস... আমার ভুল হয়া গেসে... আপারে আমি এখনই দিয়া আসতাসি।
সিএনজি ট্যাক্সিটা ঠেলেঠুলে গলির ভেতরে ঢুকে যায়। ভাঙ্গা চোরা স্লাবের উপর দিয়ে বিপদজনক ভাবে হেলে দুলে এগুতে থাকে... সবাই আতঙ্ক নিয়ে সেদিকে তাকায়... শুধু আমি মুগ্ধ ভাবে তাকিয়ে রইলাম... ইরফানের দিকে...।
আমি জানি ইরফান আজকাল অনেক বড় নেতা হয়ে গেছে। সবাই ওকে সমীহ করে চলে। মাঝে মাঝে দুএকজন আসে ওর সাথে পাল্লা দিতে। কিন্তু গায়ের জোর ছাড়াও ইরফানের মাঝে আরো কিছু আছে। সমাজপতিরা তাদের দুরভিসন্ধিতে তার সে ক্ষমতাকে কাজে লাগায়। নিজের অজান্তেই সে ডুবে যাচ্ছে আকন্ঠ পাপে।
আমার থেকে কেউ কিছু আশা করেনা। কারো কোন আশা পুরনের নুন্যতম সামর্থ্য ও আমার নেই। ইরফান, সৎ মা ... সবাই আমার সম্পর্কে কি ভাবে, তা আমি বুঝতে পারি।
কিন্তু আমি নিশ্চিত জানি, একদিন ইরফান ঠিকই নিজেকে চিনতে পারবে। হঠাৎ দেখা একঝলক স্বপ্নের মত আমি ও কিছু রৌদ্রময় দিনের ছবি দেখতে পাই... একদিন সে ঠিকই সবকিছু পালটে দেবে।




বিকেলের দিকে পাশের বাড়ির ছোট ছেলেটি দৌড়ে এসে জানালো যে বড় রাস্তার মোড়ে গৌতমদের ছয় নাম্বার বাসটা পিকেটাররা ভাংচুর করছে।
বলতে গেলে এই বাসের আয়েই তাদের সংসার চলে। সৎ মায়ের সাথে বিয়ের সময় বাবাকে তার শ্বশুর এই বাসটা কিনে দিয়েছিলেন।
গৌতম যথারীতি জানালাটার পাশে গুটিসুটি মেরে বসে ছিল। সব শুনে সৎ মা চোখ বড় বড় করে আর্তনাদ করলেন- হা করে দেখস কি? তারাতারি যা!
গৌতম শারীরিক অসামর্থ্যতার কোথা ভুলে গিয়ে স্প্রিঙের মতো লাফিয়ে উঠলো। বড় রাস্তার মোড়ে এসে দেখে ইরফানের ছেলেরা ইতিমধ্যে বাসের সামনেটায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। বাসের যাত্রীরা সব হুড়মুড় করে বের হয়ে আসছে। ড্রাইভারকে আশেপাশে কোথাও দেখা গেলনা।
গৌতম তাকিয়ে দেখে সৎ মা ও পিছু পিছু হাজির হয়েছেন। বাসের ভঙ্গুর দশা দেখে তিনি আর্তনাদ করে রাস্তায় বসে পড়লেন।
রান্টুরা নির্দয়ভাবে জানালার কাঁচ সব ভেঙে ফেলেছে। একে একে সব যাত্রী বের হয়ে আসলো, শুধু পেছনের সীটে একজন বুড়ো লোক এখন ও বসে আছে। মুখ রক্তে ভেসে গেছে, ঝুলে যাওয়া মাথার ভঙ্গি দেখে বোঝা যায় জ্ঞান হারিয়েছেন। দুএকজন পথচারী গিয়ে বুড়োর সংজ্ঞাহীন দেহটাকে জানালা দিয়ে টেনে বের করে আনলো। বুড়ো এই অবস্থাতে ও বিড়বিড় করে কি যেন বলছিলেন, কিন্তু সেটা শোনার মত অবস্থা এখন কারো নেই।
বাসের সামনের দিকে লাগানো আগুন ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে। সিএনজি সিলিন্ডার যেকোন সময় বার্স্ট হতে পারে, লোকজন সব দৌড়ে এদিক ওদিক পালাচ্ছে।
সৎ মায়ের আহাজারিতে কান পাতা যায়না। ইরফান রান্টুকে নির্দেশ দিল বাসের পেছনটাতেও পেট্রোল লাগাতে। হঠাৎ সে খেয়াল করলো গৌতম নড়বড়ে পায়ে বাসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
বুদ্ধিমান ইরফান মুহূর্তেই ব্যাপারটা ধরতে পারে। গৌতমদের ও একটা ছয় নাম্বার বাস কমলাপুর-বনানী রুটে চলে। ছয় নাম্বার বাস সব দেখতে একরকম হয়। বোকা গৌতম ভেবেছে এটা তাদের সেই বাসটা।
রান্টু গৌতমের সামনে এগুনোর ব্যাপারটায় ধোঁকা খেয়ে যায়- এরফান ভাই, ল্যাংড়া হালায় তো ভাবসে এইডা হেগো বাস... হালায় তো মনে হয় বাস নিয়া পালাইবো!
বাসে ততক্ষণে আগুন বেশ ভালোভাবে লেগেছে, রান্টু আর দুএকজন চায় গৌতমকে ধরে নিয়ে আসতে, কিন্তু গৌতম ততক্ষণে অনেক সামনে চলে গেছে। নিরপায় রান্টু তখন একটা ঢিল কুড়িয়ে নেয়- ল্যাংড়া হালায় বাস নিয়া পালাইবো তো! মার শালারে!
রান্টুর টিপ বরাবরই অব্যর্থ। ঢিলটা গৌতমের মাথার পেছনটায় লাগে, ঢপ করে শব্দ হয়। তাল সামলাতে না পেরে গৌতম বাসের পাদানিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
ইরফান চিৎকার করে বলে- গৌতম, এইটা তোদের বাস না... এইটা অন্য বাস... ফিরে আয়!
গৌতম যেন কিছুই শুনতে পায়না, সন্মোহিতের মত সে আগুনের দিকে তাকিয়ে থাকে... তারপর হাচরে-পাছরে বাসের ভেতরটায় ঢুকে যায়।
সবাই ভাবছিল, সে ড্রাইভারের সীটের দিকে যাবে। কিন্তু তারা তো জানেনা, গৌতম জীবনে বাস চালানো তো দুরের কোথা, গাড়ির স্টিয়ারিং ও কখনো ছুঁয়ে দেখেনি।
বাসের সীটের সিনথেটিক কাভার গুলোতে ও আগুন লেগে গেছে। গৌতম অভ্যাসমত সেখানে হাত রাখে, পরক্ষণেই ঝটকায় সে হাত সরিয়ে নেয়। বাসের শেষ প্রান্তে এসে সে দেখল স্কুল ড্রেস পড়া একটা ছোট মেয়ে সীটের নিচে পড়ে আছে। এ হল অজ্ঞান হয়ে যাওয়া সে বুড়োর নাতনী। রান্টুদের ছোড়া ঢিলের হাত থেকে বাঁচতে সীটের নিচে আশ্রয় নিয়েছিল।
গৌতম মেয়েটাকে টেনে উপরে ওঠালো। পদার্থ বিজ্ঞান অনুযায়ী একজন মানুষ শরীরে বাড়তি ওজন বহন করলে তার প্রায় পুরোটাই তার দুপায়ে ভর করে। এই ছোট মেয়েটার শরীরের ভর নেবার মত যথেষ্ট শক্তি তার পায়ে নেই। কথায় যেন ক্রমাগত ঠনঠন শব্দ হচ্ছে, গৌতম টের পায়- হাতে খুব বেশি সময় নেই।
আগুনের তাপে বাসের ভেতরের অক্সিজেন সব এদিক ওদিক পালিয়েছে। গৌতম যেন পোড়া মাংস-চুলের গন্ধ পায়। দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় সে মেয়েটাকে কাঁধে তুলে ফেললো।
অপুষ্ট পা’টা মনে হয় পট করে ভেঙ্গেই যাবে। গৌতম মেয়েটির অচেতন শরীরটিকে জানালা দিয়ে পাচার করে দেয়।
ঠনঠন শব্দটা এখন আরো জোরে হচ্ছে। বাইরে ইরফান এতক্ষণে ব্যাপারটা ধরতে পারে। বেপরোয়া ভাবে সে বাসের ভেতর ঢুকে পড়তে চায়। রান্টুরা তাকে জোর করে ধরে রাখে।
অবসন্ন গৌতম আর দাড়িয়ে থাকতে পারেনা। সীটের উপর আগুন জ্বলছিল, ধপ করে সে তার উপরেই বসে পড়লো।
- হারামজাদা, তুই কি পাগল হইছস! বের হয়ে আয় ভাই আমার...
ইরফানের দিকে তাকিয়ে সে কোন এক দুর্বোধ্য কারনে হেঁসে উঠে। পাগল! ঠিকই তো... সে তো পাগল ই!
ধাতব ঠনঠন শব্দটা এখন আর হচ্ছেনা। মহাশক্তিধর বহ্নিরাজ প্রবল প্রতাপে তার বিজয় ঘোষণা করে। ক্রুদ্ধ ক্ষমাহীন অজগরের মত তীব্র রোষে গোটা বাসটাকে পিষে ফেলতে চায়। বিচারাধীন প্রজার মত গৌতম সেদিকে ম্লানভাবে চেয়ে থাকে।
দূরে বহুদূরে মেঘেদের দেশে তোলপাড় ঘটে যায়। অযুত লক্ষ মেঘ ব্যাকুলভাবে ডেকে চলে- ফিরে যাও গৌতম... ফিরে যাও!
গৌতম রিক্তভাবে সেদিকে একপলক দেখার চেষ্টা করে, তারপর আলতো ভাবে বলে- মুক্তি দিয়ে গেলাম... তোমাদের সবাইকে মুক্ত করে গেলাম।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
শামীম খান খুবই ম্যাচিউরড লেখা । অসাধারন ভাল লাগা নিয়ে একটানে পড়লাম । অনেক শুভাশিস জানবেন ।
রনীল সাবের ভাই- আরশি দুপুরে আপনার কিছু পরামর্শ পেয়েছিলাম। আত্মপ্রকাশ লেখার সময় ঐ কথাগুলো মেনে চলার চেষ্টা করেছি। লেখা শেষ হবার পর অধীর আগ্রহে আপনার মন্তব্যের জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু আমি জানতাম না যে আপনি অসুস্থ ছিলেন। যা হোক পরম করুনাময়ের কাছে শোকর আদায় করছি, আপনি সুস্থ ভাবে আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন।
ভালো লাগেনি ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১১
আহমেদ সাবের গত মাসে আপনার গল্পটা পড়বার আগেই হাসপাতালে পাড়ি দিতে হল। এখন সুযোগ পেয়ে গল্পটা পড়লাম। ইরফান আর গৌতম – দু জনের চরিত্রই অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তবে, আমার কাছে গৌতমের চরিত্রের কাছে ইরফানকে নিষ্প্রভ মনে হয়েছে। “মাঝে মাঝে গভীর রাতে ঘুমের মাঝেই আমি অনুভব করি দাদাজানের হাহাকারটুকু বহুদূর ঘুরে এসে, অনেক শিরা উপশিরা ভেদ করে আমার মাথার ভেতরে আশ্রয় নিয়েছে। ঘুমের মাঝেই আমি তখন হেঁসে উঠি – দেখবেন দাদাজান, একদিন আমি ও ... “ - গৌতমের চিন্তার বাস্তব পরিণতি চরিত্রটার প্রতি আগ্রহ বাড়িয়েছে। “খুব কম লোক ই জানে যে ইরফান আর গৌতম একসময় খুব ভালো বন্ধু ছিল।“ – না জানলেও শেষ পর্বে গৌতমের প্রতি ইরফানের মমত্ববোধ হৃদয়কে নাড়া দেয়। “আরশি দুপুর” ‘এর গল্পকার অনেক অনেক এগিয়ে গেছে – এটা বিরাট আনন্দের ব্যাপার।
ভালো লাগেনি ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১১
আমীর You've nailed it at the end bro, which is something difficult to do. .
Didarul Islam অসাধারন...
রনীল এই মাত্র ছাত্রজীবনের দি এন্ড (এম বি এ’র শেষ পরীক্ষা) করে আসলাম। পরীক্ষার ব্যস্ততার জন্য আপনাদের মন্তব্যের তাৎক্ষনিক জবাব দিতে পারিনি বলে ক্ষমাপ্রার্থী। হৃদয়রাজ, সুমন কান্তি দাস , বাধন রাজিব, সজিব, স্বপ্ন বিলাসী, নয়ন বৃষ্টি, বিপুল, হালিম ভাই সহ যারা আত্মপ্রকাশ পড়েছেন, সবাই আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সুন্দর সকাল পড়া শেষ করলাম , বর্ণনা শৈলী দারুন লাগলো , সত্যি অসাধারণ . শুভোকামনা রইলো.........
M.A.HALIM ভোট গৃহীত হয়োছে।
মোঃ শামছুল আরেফিন গল্পের ফরম্যাটটি আমার কাছে নতুন মনে হল। কিছু খন্ড খন্ড বিচ্ছিন্ন ঘটনার সম্মেলন এর তার ফল অসাধারণ একটি গল্প। গল্পের শেষ অংশে গৌতমের এমন পরিনতি খুবই কষ্ট দিয়েছে। ভাল লাগার পরিমাণটা এত বেশি যে আমি মনে হয় ঠিকমত মনের কথাগুলো তুলে ধরতে পারিনি।

০৪ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৩১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪