মিনু

দিগন্ত (মার্চ ২০১৫)

Shimul Shikder
  • ১২
  • ৩০
প্রথম যেদিন মিনুকে দেখতে আসল, সেদিন মিনুর সে কী আনন্দ! লাজুক লাজুক খুশিতে সারা বাড়ি মাতিয়ে রাখল। লজ্জা গোপন করতে সবার সাথে ধমকে ধমকে কথা বলতে লাগলো। পাত্রের নাম জাকির হোসেন। মিনু বলল, এ্যা, এটা একটা নাম হল? এ তো ঠেলাগাড়িওয়ালাদের নাম। মিনুর ছোট বোন অনু বলল, এই আপু বিয়ের পর তোর জাকির হোসেনকে কিন্তু আমি ফকির হোসেন নামে ডাকব। মিনু খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে। মিনুর ভাল লাগে। কল্পনায় রাজপুত্র জাকির হোসেনের ছবি আঁকে। সুশ্রী, সুঠাম, বলিষ্ঠ যুবক- পঙ্খিরাজ ঘোড়া নিয়ে তার দোরে অপেক্ষায় থাকবে রাজকন্যাকে উড়িয়ে নেওয়ার জন্য।
ছেলের মা মিনুকে উঠালো, বসালো, হাঁটালো, কতো যে কী শুনালো, বলালো, বুঝালো!
কোন এক ফাঁকে মিনু জাকির হোসেনের দিকে আড় চোখে তাকালো। মিনুর বুক ধ্বক করে উঠলো। কল্পনার সাথে এতো অমিল! তাতে কী। তবুও সে যে তার রাজপুত্র।
জাকির হোসেনের মেয়ে পছন্দ হল। মিনুর প্রানে আনন্দের বন্যা বয়ে গেলো। সে রাতে সে সত্যি সত্যি স্বপ্নে দেখে ফেলল, জাকির হোসেন পঙ্কিরাজ ঘোড়া নিয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছে। ঘুম ভেঙ্গে মিনু জাকির হোসেনের উদ্দেশ্যে লম্বা এক চিঠি লিখে ফেলল, তার জীবনের জমানো সমস্ত ভালবাসার না বলা কথা দিয়ে।
কিন্তু বিয়েটা ভেঙ্গে গেলো। দরাদরিতে পোষালো না।
এর কিছুদিন পর আবার মিনুকে দেখতে এলো। ছেলে কিন্তু এবারে সত্যি সত্যি রাজপুত্র। যেমন উঁচালম্বা, তেমন গায়ের রঙ। ভাল চাকরি করে। নাম আসাফউদ্দলা খান। আসাফউদ্দলা খানকে মিনুর ভারী পছন্দ হলো। সে রাতেও মিনু আসাফউদ্দলা খানকে স্বপ্ন দেখল।
বিয়ে কিন্তু সেটাও ভেঙ্গে গেলো। মেয়ে পছন্দ হল না।
এর পরের বারও মিনুর খুব ভাল একটা সম্বন্দ এলো। পাত্রের সরকারী চাকরি, দেখতে ভাল, বংশ ভাল। কিন্তু তারা পছন্দ করে ফেলল মিনুর ছোট বোন অনুকে। এতো ভাল পাত্র মিনুর মা হাতছাড়া করতে নারাজ। অনুর সাথেই বিয়েটা হয়ে গেল।
এরপর অনেকদিন চলে যায়। মিনুর আজকাল আর বিয়ের সম্বন্ধ আসে না। চুলে পাঁক ধরেছে, চোখের নিচে কালি পড়েছে। মিনু কিন্তু এখনো স্বপ্ন দেখে দিগন্ত থেকে ছুটে আসা এক পঙ্খিরাজ ঘোড়া তার দোর গোঁড়ায় দাড়িয়ে। শুধু রাজপুত্রের চেহারাটা ঝাপসা ঝাপসা।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
শেখ শরফুদ্দীন মীম ভালো লাগলো । শুভকামনা রইল। সময় করে আমার কবিতাটি( আলোর সন্ধানে) পড়বেন।
রুহুল আমীন রাজু SUNDOR GOLPO...VALO LAGLO.(AMAR PATAI 'KALO CHA' GOLPOTI PORAR AMONTRON ROILO)
গোবিন্দ বীন ভাল লাগল,পাতায় আমন্ত্রন রইল।
সৃজন শারফিনুল অসাধারণ গল্প, এভাবেই দরাদরির জন্য হারিয়ে যায় কত মিনুর জীবন।। এই গল্পটি নিগৃহীত,বাস্তব সমাজের চিত্র। ভাল লাগলো খুব। প্রাপ্য সন্মান রেখে গেলাম।
জলধারা মোহনা কেন সবার স্বপ্নগুলো বাস্তবতায় রুপান্তরিত হয়না? কেন জীবনের গল্পগুলো রূপকথা হয়ে যায়না? কিন্তু এমনটা হয় না.. তাই কল্পনা আর বাস্তবতায় যুগ যুগান্তরের ব্যবধান :'(
প্রান্ত পথিক আর কারও ভাগ্য যেন মিনুর মত না হয় !
মনজুরুল ইসলাম Interesting story written in shortly.But got pleasure.Good luck.
মোহাম্মদ সানাউল্লাহ্ লেখার সাথে বাস্তবতার অমিল না থাকলেও আপনার নিষ্ঠুরতা আমাকে আতঙ্কিত করে ! লেখায় মুন্সিয়ানার ছাপ ষ্পষ্ট ।
এমএআর শায়েল চুলে পাঁক ধরেছে, চোখের নিচে কালি পড়েছে। মিনু কিন্তু এখনো স্বপ্ন দেখে দিগন্ত থেকে ছুটে আসা এক পঙ্খিরাজ ঘোড়া তার দোর গোঁড়ায় দাড়িয়ে। শুধু রাজপুত্রের চেহারাটা ঝাপসা ঝাপসা। লাইনগুলো ভাল হয়েছে।

১৬ অক্টোবর - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪