আমি একাত্তুর দেখিনি গল্প শুনেছি বাবার কাছে, আমার মায়ের কাছে! আমি মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনে শুনে বেড়ে উঠেছিলাম।
আমাদের সেই সময়ের বসার ঘরে, বঙ্গবন্ধুর এক বিশাল পোর্ট্রেইট ছিলো বাবা আমাদের সব ভাইদেরকে অনুভব করিয়েছিলেন- পোর্ট্রেইটের মানুষটা-ই একটা দেশ! বাবারা কখনো মিথ্যে বলেন না বাবুদের কাছে তাই পাইপ হাতের মানুষটিকে এক আলাদা ভূখন্ড বলে মনে করা শুরু করেছিলাম।
পনেরই আগস্ট, তিন নভেম্বর কিংবা একাশি'র সার্কিট হাউসের নৃশংসতা আমার বালক বেলায় সেভাবে অনুভবে আসেনি তবুও বুঝেছিলাম নিশ্চয়ই ভুল হচ্ছে কোথায়ও।
মৃত্যু আমার কাছে সাদা কাফনে মোড়ানো আগরবাতি আর লোবানের ঘ্রাণে প্রকম্পিত কিছু বিষন্ন প্রহর বলে মনে হতো! তাই বুলেটে ছিন্ন জনকের দেহ কিংবা সবুজ বিপ্লবের কর্ণধরের ঝাঁঝরা হৃদয় মৃত্যুর কোনো সংজ্ঞায়-ই পড়তো না আমার কাছে।
আমি একাত্তুর দেখিনি নুর হোসেনকে দেখেছিলাম হৃদয়ে বাংলাদেশ আর গণতন্ত্রের মুক্তির বারতা নিয়ে স্বৈরাচারীর উদ্যত বুলেটকে সামনে থেকে হৃদয়ে টেনে নিতে তখন আমার অনুভবে মৃত্যু একটু একটু বুঝে আসছিলো কেবল!
আমি একাত্তুর দেখিনি তবে কানসাট দেখেছিলাম ততদিনে আমি পূর্ণ অনুভবে অনেক কিছুই বুঝতে শিখে গেছি আমি কৃষকের ছিন্নভিন্ন দেহ দেখে মৃত্যুর যন্ত্রণা অনুভব করতে চেয়েছি। একুশে আগস্ট দেখেছি রমনা বটমূলের ছিন্নভিন্ন অংগপ্রত্যংগ আমাকে চিৎকার করে করে মৃত্যুর কথা বলেছে! সারাদেশে একযোগে বোমা হামলা কিংবা চার্চ গুড়িয়ে দেয়া বোমার বীভৎসতা আমাকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে!
আমি একাত্তুর দেখিনি পিলখানার নারকীয় হত্যাকান্ড কিংবা হলি আর্টিজানে রক্তাক্ত মানুষ দেখেছি আমি একাত্তুর দেখিনি তবে ইদানিং রোহিঙ্গা জেনোসাইড দেখছি সেখানের লাশের স্তুপ আমার ভিতরে কোনো অনুভূতির সঞ্চার করছে না মৃত্যু দেখে দেখে কি আমি নির্বোধ হয়ে গেছি?
একাত্তুরে দাদারা বর্ডার খুলে দিয়েছিলেন বলেই আজ আমি লিখতে পারছি হে বাংলাদেশ! তোমার জন্মের কথা স্মরণ করে হলেও রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াও আজকের রোহিঙ্গা শিশুকেও আমার মতো অনুভবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করো। আর, মৃত্যু! তুমি আসবেই যখন ওদের জন্য আরো একটু শান্তিপ্রদ হও!
বাংলাদেশ!! নপুংসকতার বেড়াজাল ছিড়ে বের হও হেলায় দূর করো সকল অবহেলা। বাংলাদেশ!!তোমার সকল বর্ডার খুলে দাও।।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
নাজমুছ - ছায়াদাত ( সবুজ )
কি অসাধারণ একটা লেখা বের করে আনলেন কলমের আগায় , কি ইতিহাস গুলো , লিখলেন কবিতার কোথায় এত সুন্দর ও সাবলিল । বাহ এটাই কবির মাহত্ত । সুভেচ্ছা
অনল গুপ্ত
"আজকের রোহিঙ্গা শিশুকেও আমার মতো অনুভবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করো" চরম আবেগী হৃদয় থেকে বেড়িয়েছে এই ভাষা চালিয়ে যাও বন্ধু ... শুভকামনা ও আমার পাতায় আমন্ত্রন রইল ।
সেলিনা ইসলাম
আমিও চাই নপুংসকতার বেড়াজাল ছিঁড়ে বাংলাদেশ বের হয়ে আসুক...! সব অবহেলাকে জয় করে আলোকিত বাংলাদেশ বিশ্বের মাঝে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। চমৎকার কবিতা...শুভকামনা নিরন্তর।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।