তুই এত দুরন্ত কেন? কেন তুই সারাক্ষণ এত
গতি নিয়ে চলিস? তোর কি কোনোই
অবসর নাই? সবসময় শুধু ছুটে চলিস।
কী আছে এই ছুটে চলাতে? কী লাভ
মরীচিকার পেছনে ছুটে চলে? তুই
তো জানিস এই জনমই মিছে।
প্রতি পদে পদে হার মানতে হয় এখানে!
তোর জয় নেই এখানে! তবুও তুই জোর
গতিতে চলিস।
সে বলল,"এই জনম
যে মিছে মরীচিকা নয়,এ যে সত্যি!
আমি সত্যের পেছনে ছুটি। সে বড়ই দূর্লভ
যে! সাধ্যি কার,তার সান্নিধ্য পাবার?
কাটাভরা কাননের একমাত্র উৎকৃষ্ট
গোলাপখানি যে সুলভ নয়। তার
সুবাস,সৌন্দর্য, রূপ-লাবন্য
একেবারে যে দূর্লভ! কাটার
আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হবে তোমার দেহ।
পারবে সইতে? তবেই তোমার প্রাপ্য
সেই সৌন্দর্যের রাণী। আমিও
সেই,সবসময় সৌন্দর্যের পূজা দেই। সুখ
আমার আকাঙ্খা। তাই দুঃখের ঝড় আমায়
ঝড়াতে পারেনা।"
তোকে কতবার বলেছি,সুন্দর দর্শন
করিসনে। ব্যথিত হতে হবে শেষে। সুন্দর
যে শুধু স্বপ্ন! তা ও কেন বুঝিসনে,স্বপ্ন
যে শুধুই মিথ্যে! সত্যের লেশ নেই
সেথায়। এই যে,কবে কখন থেকে কোন
ললনাকে দেখেছিস,তারি আশাতেই
আছিস। সে তো তোকে অনেক
কাঁদালো রে! কত্তো অপমান, অসম্মান
করল তোকে। তোর কি সম্মান-মান নেই
একেবারে? তার কতো কাছে গিয়েও
কাছের হতে পারিসনি। সুন্দর
সে তো দু'মুখো সাপের মাথার মণি!
তাকে হরণ করার সাধ্য কার? তবুও তুই তার
আশাতেই আছিস,তাকেই ভালোবাসিস!
কী তুই? কেমন তোর আশা? তোর
আশা বলতে সত্যি কিছু নাই। সবই তোর
দুরাশা যে!
"সুন্দর দু'মুখো সাপের মাথার মণি জানি।
তবুও যে সুন্দর সেই তো সত্য!
আমি তো আগেই বলেছি,সুন্দরের
পূজা দেই আমি। সুন্দর যে সকলের আশা!
সকলের মনেই যে সুন্দরের পূজা মন্দির!
যে সুন্দরকে স্বীকৃতি দেয়না,
যে সুন্দরের পূজা করেনা,
সে তো হৃদয়হীন,পশু। সুন্দর মাত্রেই
চেয়ে থাকা,সুন্দর মাত্রেই হৃদয়াবেগ।
কে না চায় তাকে? না পেলেও চায়।
ব্যথা পেলেও চায়। মরণেও চায়,স্বপ্নেও
চায়। পাওয়া না পাওয়া যে আমার অদৃষ্ট!
কিন্তু সেই ললনার আকাঙ্খা চিরজীবী,
চিরন্তন। হোক সে স্বপ্ন,সত্যির
অপেক্ষায় থাকব আমি। স্বপ্ন
দেখে সত্যির সাধ নেব আমি।
সত্যি নাহোক,স্বপ্নে তো পাই
সে সুন্দরী! এই তো ভাগ্য! তবুও কি কম
সুখী আমি? ক'জন সুন্দরের স্বপ্ন দেখে?
এতেই বাঁচি। বাঁচবো স্বপ্ন নিয়ে।
সম্মান-মান তো সাময়িক ব্যাপার। যাক
না,কত-শত যায় সম্মান মান। তবু স্বপ্ন কিনব
আমি। আমার পূজাদেবীর
ডিঙা বাইতে কি মান,কি সম্মান? জীবন
দেব অকাতরে! স্বপ্নে কি আর
বাস্তবে কি? আমি চাই দেবীর
সাধনা,সুন্দরী দেবীর প্রেম চাই আমি।
সে দেবী প্রাণখেকো হলে দিয়ে দেব
প্রাণ। যারা সত্য সুন্দরের সাধন
চায়,তারা প্রাণের পরোয়া করেনা।
ক্ষণিকের প্রাণ তো তাদের কাছেই
দামী, যারা কুৎসিতমনা! কি আছে এই
প্রাণে? কতক্ষণ জোর এই দেহে? প্রাণ
তো শুধুই 'হাওয়াই মিঠাই'।
একেবারে ক্ষণিকের ব্যাবসা এই প্রাণ
নিয়ে। কিন্তু আমি যে ভাই ক্ষণিকের
সেরা বণিক! হাওয়াই মিঠাইয়ের স্বাদ
চাই আমি। জীবনের স্বাদ তো তারাই
আস্বাদন করে,যারা ক্ষণিক
জীবনে সত্যচর্চা ও সৌন্দর্যের জ্ঞান
অন্বেষণ করে। আমিও তাই। সুন্দর
যে স্বাদ,তার তৃপ্তিই অনন্য। এই স্বাদ
আস্বাদন করেই যে আমি হব অমর! তাই
তো বলেছি প্রাণ যায় যাবে। হুট
করে ছুটে আসা উল্কাপিন্ডের মত
ক্ষণস্থায়ী আমার চলা। কিন্তু
চলা শেষে আমি নিশ্চল হলেও
সকলে বলবে, "এই উল্কার
যে ছুটে আসা বৃথা হয় নাই। সে বড়ই দুরন্ত
ছিল,সুন্দরের টানে ছুটে এসেছে সে।"
সুন্দরের যে পথ পেয়েছি,
ছুটে চলছি সেই পথেই। তাই কি কম? সুন্দর
পথের সন্ধান এমনি আসেনা। এর জন্য
লাগে সুন্দর ও পবিত্র আত্মা। যে আত্মার
প্রাণের স্থায়িত্ব কাম্য নয়,যে আত্মা শুধু
বিনিময় চায়,বিনিময়। "
আজ আমি বুঝলাম,আমারি পথ মিছে।
জড়া-জীর্ণদের পথ এটা। এই
পথে প্রাণের বিকাশ নাই বরং আত্মার
বিনাশই ঘটে এখানে। আমারি পথ আজ
মরীচিকা। শূন্য মরুপথে অনেক হাটলাম।
কিন্তু কোথায় সে প্রাণ? এ যে শুধুই
মরীচিকা! এই পথই বৃথা। শূন্য
মরুভূমি হতে না সম্ভব ফেরা,না সম্ভব
প্রাণ টিকিয়ে রাখা। মিছে তোকে ভয়
দেখালাম,পথভ্রষ্ট করতে চেয়েছিলাম।
আজ আমারি ভয়ের পালা।
আমি জানি,আমার প্রাণের বিনাশ
ঘটবে এখনই অতিদ্রুত।
"মর তুই মর। যে মরীচিকার ভয় তুই আমায়
দেখিয়েছিলি,সে মরীচিকার
কবলে আজ তুই পরলি। তোর প্রাণের
বিনাশ ঘটবে,সে খবর কেউ জানবেনা।
আর আমার যে পথ,সে পথে আমার
প্রাণের বিনাশ ঘটলেও আমি অমর।
আমি তৃপ্ত আজ। মর তুই মর। "
১৭ সেপ্টেম্বর - ২০১৪
গল্প/কবিতা:
২ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪