কলেজ পড়ুয়া মেয়ে পরমিতা, সে এবার এইচ,এস,সি পরীক্ষার্থী, মেধাবী ছাত্রীও বটে।
সে বিছানায় শুয়ে শুয়ে কি যেন ভাবছে। তার বান্ধবী শ্যামলী পড়ার টেবিলে বসে বই পড়ছে। শ্যামলী পড়ছে আর পরমিতার দিকে তাকাচ্ছে আর ভাবছে কি হয়েছে তাঁর, যে মেয়ে এই সময়ে পড়ার টেবিলে বসে বই পড়ে ! আজ সে বিছানায় শুয়ে আছে !
শ্যামলী চুপকরে না থেকে তাকে বলল, এই পরমিতা কি হয়েছে তোমার আর এই অসময়ে বিছানায় শুয়ে আছো কেন?
- না..... এমনিতে শুয়ে আছি। ভালো লাগছে না।
- স্বাস্থ্য খারাপ করলো নাকি?
- না তেমন কিছু হয়নি, কেন জানি আজকে আমার ভালো লাগছে না।
হঠাৎ পরমিতার মোবাইল ফোনটা বেজে উঠলো, সে মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে রণবীর কল করেছে। কল রিসিভ করতেই রণবীর বললো কেমন আছো তুমি?
- কেন জানি আজ আমাকে ভালো লাগছে না।
- কেন কি হয়েছে তোমার ?
- না তেমন কিছু হয়নি।
- কি করছো এখন তুমি?
- শুয়ে আছি বিছানায়।
- এই সন্ধ্যে বেলায় শুয়ে আছো- শরীর-টরীর আবার খারাপ করলো নাকি ?
- না এমনিতেই শুয়ে আছি।
- আজ রাত ১২টায় ফোন দিব তোমাকে জেগে থাকবে কেমন ?
- কেন?
- তুমি জানোনা আগামীকাল যে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস।
- ও তাই! কিন্তু আজ আমাকে আর ভালো লাগছে না, রাতে আর তোমার সাথে কথা বলতে পারবো না বরং আগামীকাল তোমার সাথে সরাসরি দেখা করবো। ঠিক আছে এখন রাখি।
এই বলে পরমিতা ফোন কলটি কেটে দিলে সাথে সাথে আরো ফোনটি বেজে উঠে, সে দেখে তার বাবা কল করেছে।
পরমিতা কলটি রিসিভ করতেই তার বাবা বলল- কি ব্যাপার মা এতণে কার সাথে কথা বলছিলে। শুধু নাম্বার ব্যস্ত দেখাচ্ছে?
- না..... বাবা আমার এক বান্ধবী বাড়ীতে গেছে তার সাথে কথা বলছিলাম।
- ও তাই! আচ্ছা মা শোন আগামীকাল সকালে তুমি বাড়ীতে চলে আসবে ?
- কেন বাবা?
- জরুরী কথা আছে , সকাল ১০টার মধ্যে বাড়ীতে চলে আসবে ?
- হঠাৎ জরুরী তলব কেন বাবা, কোন বিপদ হয়নিতো ? ফোনে বলা যাবে না ?
- না মা তেমন কিছু না , আগে বাড়ীতে এসো তারপর সব কিছু জানতে পারবে।
- ঠিক আছে বাবা।
- এখন তাহলে রাখি মা, আগামীকাল তুমি সকাল সকাল বাড়ী চলে আসবে।
এই বলে তার বাবা ফোনটি কলটি কেটে দিল।
পরমিতা এখন ভাবে এদিকে রণবীরের সাথে দেখা করার কথা বলেছি। তাকে এখন কি বলবে সে। না আমি এখন কি করবো কিছুই ভেবে পাচ্ছিনা।
পরমিতা শ্যামলীকে সব কথা বলল এবং তার কাছে জানতে চাইলো সে এখন কি করবে। শ্যামলী তাঁকে বলল- রণবীরকে জানিয়ে দাও, আগামীকাল তুমি তাঁর সাথে দেখা করতে পারবে না। বাবা আমাকে ফোন করেছিল। জরুরী কাজে আমাকে বাড়ীতে যেতে হবে।
-রণবীর যদি কিছু মনে করে।
- যাই মনে করুক হাজার হলেও তোমার বাবা ফোন করেছে। তুমিতো তাঁর কথা অমান্য করতে পারোনা। আর তাছাড়া রণবীর তোমাকে ভালোবাসে, তুমিও রণবীরকে ভালোবাসো। ভালবাসা দিবসে না দেখা করতে পারলে তো কি হবে ? পরের দিন বাড়ী থেকে ঘুরে এসে তার সাথে দেখা করবে।
পরমিতা শ্যামলীর কথায় রণবীরকে ফোন করে জানিয়ে দিল যে, সে কালকে তার সাথে দেখা করতে পারবে না। জরুরী কাজে বাড়ী যেতে হচ্ছে তাকে।
পরমিতার বাড়ী বাংলাদেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড় জেলার পাকিডাকা, ছায়া ঢাকা সবুজ শ্যামলে ভরা এক সবুজ গ্রামে । ভালো ফলাফলের আশায় পার্শবর্তী জেলা সদরে অবস্থিত এক নামকরা কলেজে ভর্তি হয়েছে পরমিতা । আর রণবীরের বাড়ী পরমিতাদের গ্রামের বাড়ীর পার্শবর্তী গ্রামে । সেও ভালো ফলাফলের আশায় শহরের নাম করা কলেজে ভর্তি হয়েছে।
তো যাইহোক পরদিন সকাল বেলা পরমিতা বাড়ীতে গেল। বাড়ীতে পৌছানোর সাথে সাথে তাঁর মা তাকে বলল তাড়াতাড়ি গোসল করে সেজে গুজে রেডি হয়ে নাও।
- সেজে গুজে রেডি হব মানে, কি হয়েছে মা ?
- আজকে তোমাকে দেখতে আসবে, ছেলে পক্ষ।
- ছেলে পক্ষ দেখতে আসবে মানে, মা তোমার কথা আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা?
- তোমার বাবা তোমার জন্য একটা ভালো ছেলে দেখেছে, সে ভালো চাকরী করে, আমারো খুব পছন্দ হয়েছে।
- মা তোমাদের কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি ? আমার সামনে পরীক্ষা আর তোমরা এখন আমাকে বিয়ে দিতে উঠে পড়ে লেগেছো। না... না আমি এখন বিয়ে করতে পারবোনা।
- তোমাকে তো এখন বিয়ে দিচ্ছিনা, দুই মাস পরে পরীক্ষা শেষ হলে তারপর বিয়ে। এখন শুধু দেখা দেখির পালা। যাও তুমি তাড়াতাড়ি গোসল করে রেডি হয়ে নাও। ছেলে পক্ষ ঘন্টা খানেকের মধ্যে চলে আসবে।
- না মা আমি পারবো না।
- দেখো তোমার বাবা কেমন মানুষ ? সেটা তুমি ভালো করেই জানো, বেশি বাড়াবাড়ি করিওনা যেটা বলছি সেটা করো। না হলে তোমার বাবা শুনলে আস্ত রাখবেনা তোমাকে।
পরমিতা তাঁর মায়ের কথা শুনে খুব অবাক হলো এবং ভাবছে কেন তারা এখন আমাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। যে করেই হোক বিয়েটা থামাতে হবে। এখন মা যেটা বলছে সেটাই করি। আর আজকে তো শুধু ছেলে আমাকে দেখতে আসছে। বিয়ে তো আর হচ্ছে না। আজ রাতেই মাকে সব খুলে বলা যাবে।
তাই পরমতিা তাঁর মায়ের কথায় গোসল করে রেডি হয়ে থাকলো। এরই মধ্যে ছেলে প চলে এসেছে, তাদের খাওয়া দাওয়া শেষ হয়েছে। এখন শুধু মেয়ে দেখার পালা।
পরমিতার মা তাকে নিয়ে ছেলে পরে সামনে নিয়ে গেলো। সে লজ্জ্বায় কারো দিকে তাকাচ্ছে না। শুধু মাথা নিচু করে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।
ছেলের বাবা বলে উঠলো কেন মা তুমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছো ? লজ্জ্বা পাচ্ছো বুঝি ?
পরমিতা মাথা নাড়িয়ে বলল হ্যাঁ।
-তোমার নাম কি মা?
- পরমিতা সেন।
- বাহ্ বেশ সুন্দর নাম তো ! তুমি এখন কিসে পড়?
- এবার এইচ,এস,সি পরীক্ষা দিব।
- বেশ ভালো লাগলো। তোমার কথা শুনে। যাও মা তুমি এখন তোমার ঘরে যাও।
পরমিতা একটুও দেরি না করে সে তার রুমে চলে যায়। আর মনে মনে ভাবছে যাক আজকের মতো আমি বেঁচে গেলাম। আজ রাতেই মাকে সব খুলে বলতে হবে। কিন্তু কিভাবে মাকে কথাগুলো বলবে ভেবে পাচ্ছিল না পরমিতা। যদি মা বকাবকি করে। আর বাবাকে যদি সব বলে দেয় তাহলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। না যেই হোক আজকে আমাকে সব বলতেই হবে, কারণ এটা আমার সারা জীবনের ব্যাপার।
রাতে পরমিতা তাঁর মাকে রণবীরের ব্যাপারে সব খুলে বলতেই তার মা তার উপর ক্ষেপে গিয়ে বকাবকি করে বলতে লাগলো তোমার মাথা থেকে ভালোবাসা বের করে দাও। আর এই বিয়েতে রাজি হয়ে যাও। নইলে তোমার পরিণতি ভালো হবে না। ওই ছেলেটাকে (রণবীরকে) আমার পছন্দ না, তোমার বাবাতো আরো পছন্দ করবে না, বরং সে এগুলো কথা শুনলে তোমাকে আস্ত রাখবে না।
- মা আমি রণবীরকে ছাড়া বাঁচবো না।
- দেখ এই সিনেমার কাহিনী আমার কাছে চলবে না। যেটা বলছি সেটা করো। না হলে কিন্তু তোমার বাবাকে বলে দিব।
- না মা তুমি বাবাকে কিছু বলিও না। তোমরা যেটা বলবে আমি সেটাই করব।
- ঠিক আছে তাহলে তুমি রণবীরকে ভুলে যাবে , তার সাথে সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে।
পরমিতা তাঁর মায়ের কথায় বাধ্য হয়ে রাজি হয়ে যায়।
সারা রাত সে ঘুমোতে পারেনি, মনে হয় সারা জীবনের কষ্টটা আজকে তার বুকে চেপে বসেছে। এখন সে কি করবে কিছু বুঝে উঠতে পারছেনা। কষ্টের মাঝে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি পরমিতা, সে ভাবছে রণবীরকে কিভাবে এসব কথা বলবে। তাই পরমিতা ভাবে তার হাতে এখন ৩টি রাস্তা খোলা আছে - এক রণবীরকে পালিয়ে বিয়ে করা, দুই. বাবা মায়ের পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করা। আর তিন হচ্ছে এই দুনিয়া ছেড়ে চলে যাওয়া।
পরের দিন সকালে সে কলেজের হোস্টেলে এসে রণবীরের সাথে দেখা করে সব খুলে বলল। আর তার কাছে জানতে চায় এখন সে কি করবে ?
পরমিতার কথা শুনে রণবীর ঘাবড়ে যায়। আর তাকে বলে এখন আমাদের কোন কিছু করা যাবে না। যেহেতু আমাদের পরীক্ষা সামনে। অতএব আমাদের যা করতে হবে সব পরীক্ষার পর।
- আমার বাড়ীর কান্ড দেখে খুব খারাপ লাগছে, কেন যে তারা আমাকে এখনেই বিয়ে দিতে উঠে পড়ে লেগেছে ?
- রণবী বললো যাও , এখন এগুলো ভেবে কোন লাভ নেই?
- লাভ নেই মানে, আমার এদিকে ঘুম হারাম হয়ে গেছে, আর তুমি বলছো লাভ নেই।
- দেখ পরীক্ষার আগে যেহেতু কোন কিছু হচ্ছে না। সেহেতু আমাদের পরীক্ষার আগ পর্যন্ত টেনশন করতে হচ্ছে না। পরীক্ষা শেষ হলেই আমরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবো। আর তাছাড়া এটা পরীক্ষার আগে কোন কিছু করলে আমাদের ভবিষ্যৎ ভালো হবে না।
রণবীরের কথায় পরমিতা আস্বত্ব হতে পারলোনা। তাই তার সাথে কথা শেষ হওয়ার পর সে হোস্টেলে চলে যায়। তার বান্ধবী শ্যামলীকে সব কথা খুলে বললে সে পরমিতাকে জানিয়ে দেয়। আপাতত তুমি চুপচাপ থাক। এখন কিছু বলা বা করা কোনটিই ঠিক হবে না। আগে দেখ ছেলে পরে মতামত কি?
- আমার মাথায় কিছু ঢুকছে না, আমি যে এখন কি করি ?
- দেখ এগুলো টেনশন করে লাভ নেই। পরীক্ষাটা ভালো করে দাও, তারপর দেখা যাবে কি করা যাবে।
এভাবেই চলে যায় দুই দিন । পরমিতা আগের মত পড়ালেখা, খাওয়া দাওয়া পর্যন্ত ঠিক মত করেনা , এমন কি হোস্টেল থেকে বাহিরে কোথাও বের হয় না। শুধু রুমে বসে শুয়ে থাকে। হঠাৎ একদিন সন্ধ্যে বেলায় তাঁর বাবা তাকে ফোন করে জানিয়ে দিলো ছেলে প নাকি তাকে খুব পছন্দ করেছে। পরশুদিন শুক্রবার তারা তাকে আর্শিবাদ করতে আসবে। তাই তার বাবা তাকে আগামীকাল বিকেলেই বাড়ী চলে আসতে বললো।
পরমিতা তার বাবার কথা শুনে নিজেকে আর স্থির রাখতে পারলো না। বুকে জমানো কষ্টটা আর সামলে রাখতে পারছে না। দু নয়ন জুড়ে অশ্রু অবিরত ঝড়ছে। পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। আর ভাবছে ভগবান কি তাহলে পৃথিবীতে এত কষ্ট দেয়ার জন্য তাকে পাঠিয়েছে। নিজের ইচ্ছে শক্তি বলতে কিছু নেই। আমার ভালোবাসাটাকে কি আমি আপন করে নিতে পারবো না। যেখানে আমার ইচ্ছা শক্তি, স্বাধীনতা, চাওয়া, পাওয়া বলতে কিছু নেই। সেখানে আর থেকে কি লাভ!
পরমিতা রণবীরের মিলন কি এই জনমে আর হবে না। একদিকে তিলে তিলে গড়া স্বপ্নময় ভালোবাসা আর অন্যদিকে তার পরিবারের ইচ্ছা। নিজের ভালোবাসা ও পরিবারের ইচ্ছাটাকে পিছনে ফেলে দিয়ে নিজের অজান্তে পরমিতা লিখে ফেলল-
জীবনে কিছু প্রশ্ন থাকে
যার কোন উত্তর হয় না,
যার লেখা কখনও মোছে না।
কিছু ভুল থাকে যা শোধরানো যায় না,
আবার এমন বন্ধু থাকে
যাকে কখনো ভোলা যায় না।
পরমিতা লিখাটি শেষ করে মোবাইল ফোনটা হাতে নিয়ে রণবীরকে কল করল। রণবীর ফোন রিসিভ করতেই পরমিতা বেদনাভরা কণ্ঠে বলল - তোমার সাথে আমার মিলন এই জনমে আর হবে না হয়তো?
- কেন কি হয়েছে তোমার ?
- খুব কষ্ট পাচ্ছি আমি মনে হয় পৃথিবীটা আমার জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে?
- কি সব বলছো আবোল তাবোল বলছো পরমিতা ?
- না................ আমি ঠিকই বলছি, তোমার আমার ভালোবাসায় কোন ভুল ছিল না, তোমার ভালোবাসা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমাদের এই ভালোবাসা এই জনমে মিলন না হলেও পরের জনমে আমি তোমারি হব, শুধু তোমারি!
- আমি তোমাকে ভালোবাসি, তুমি আমাকে ভালোবাসা তাহলে এই জনমে কেন আমাদের মিলন হবে না। আর আমাদের ভালোবাসায় যত বাঁধায় আসুক জীবন দিয়ে হলেও জয় করব।
- একটা লেখা লিখেছি শুনবে তুমি?
- হ্যাঁ.............. শুনবো , তুমি বলতে থাকো।
- জীবনে কিছু প্রশ্ন থাকে
যার কোন উত্তর হয় না
যার লেখা কখনও মোছে না।
কিছু ভুল থাকে যা শোধরানো যায় না,
আবার এমন বন্ধু থাকে
যাকে কখনো ভোলা যায় না।
- খুব ভালো লাগলো লেখাটি? কিন্তু প্রশ্ন যেহেতু আছে তার উত্তর অবশ্যই আছে।
- হ্যাঁ................. হয়তো আছে। কিন্তু আমার মতো করে উত্তরটা আমি পেয়ে গেছি।
- কি উত্তর পেয়েছো?
- সময় হলে সব বুঝতে পারবে, ভালো থেকো, খুব ভালো থেকো।
এই বলে পরমিতা ফোন কেটে দেয়। সে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত নয়টা বেজে গেছে। তাঁর বান্ধবী শ্যামলী এসে বলল চল খেতে যাই।
- না আজকে আমার ক্ষিদে নেই, তুমি খেয়ে নাও।
- এত টেনশন করিও নাতো, যা হবার তা হবেই বিধির লেখাতো আর মুছা যায় না।
- সত্যি বলছি আজ আমার ক্ষিদে নেই। প্লিজ আমাকে এখন একটু একা থাকতে দাও।
শ্যামলী আর কিছু না বলে খাবার রুমে খেতে চলে গেলো। কষ্টে জর্জরিত পরমিতা কাউকে বলল না যে, পরশুদিন শুক্রবার তার আশির্বাদ। নিজের কষ্টাটাকে বুকের ভিতর চাপিয়ে রেখে আবার সে লিখতে লাগলো তাঁর জীবনের প্রশ্নের উত্তরটা..........
এমন জীবন তুমি করিবে গঠন
মরণে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভূবন।
সুখের আশা করছি কেন
সুখ কি সবাই পায় ?
তবু মোদের সুখকে ভেবে
প্রহর কেটে যায় !
পরমিতা তাঁর জীবনের শেষ লেখাটি লেখে তার জীবনের ভালোবাসার শেষ গন্তব্যস্থল এর দিকে পা বাড়ায়, এখানেই থেমে যায় তার জীবন পাতা। শ্যামলী আর অন্য বান্ধবীরা বাইরে থেকে চিৎকার করে বলছিল পরমিতা দরজা খোল ! দরজা খোল !! দরজা খোল !!! অবশেষে দরজা ভেঙে পুলিশ উদ্ধার করল একটি ঝুলন্ত লাশ !
( কিছু কথা: সত্য ঘটনা অবলম্বনে এবং কলেজ ছাত্রী “সুচিত্রা”র স্মরণে গল্পটি লেখা। সে গত ১৭ মার্চ ২০১৪ইং তারিখে জানিনা কি সুখের আশায় সবাইকে কাঁদিয়ে নিজের ভালোবাসাটাকে অমর করে পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়। পাঠক বৃন্দের হৃদয়গ্রাহী ও মর্মস্পর্শী করার জন্য কিছুটা রূপক করা হয়েছে )