প্রায় বছর খানেক আগে ঠিক করলাম আমার একটা ব্যাঙ্ক একাউন্ট দরকার। আসলে একাউন্ট কোন কাজের জন্য দরকার না, দরকার একটা ডেবিট কার্ডের জন্য। কার্ডে টাকা থাকতে হবে তাও না। শুধু কার্ড থাকলেই চলে। এই চিন্তায় আব্বার কাছে প্রস্তাব দিলাম, ‘আমার বয়স তো মাশাল্লাহ আঠারো হইছে, আপনে তো শেয়ার-টেয়ার করেন। আমার নামেও একটা একাউন্ট খুইল্যা ফালান। বেশি বেশি একাউন্ট থাকলে নাকি সুবিধা’। আব্বা লাফ দিয়ে উঠে বলে, ‘ফাইন আইডিয়া। কাল্কাই তোর নামে একাউন্ট খুলুম’। আমি তো খুশিতে বাকবাকুম! যাক! এইবার একটা কার্ড আমিও পকেটে নিয়ে ঘুরতে পারবো। আমি আগ্রহের সাথে একটি বিশেষ ব্যাঙ্কের নাম প্রস্তাব করি। আব্বা নাকচ করে দেয়। আমি তখন গাল ফুলিয়ে বলি, ‘তাইলে আমি একাউন্ট খুলুম না’। আব্বা তখন আমাকে শাহজাদা স্থানীয় একটা গালি দিয়ে বলে, ‘তুই খুলবি তোর বাপ ও খুলবো’। আমি বলি, ‘বাপের মুঞ্চাইলে খুলুক। আমি নাই’। আব্বা তখন নারিকেল শলার ঝাড়ু নিয়ে তেড়ে আসে। আমি কোনমতে পিঠ বাঁচিয়ে একাউন্ট খুলতে রাজী হই।
পরদিন গেলাম একাউন্ট খুলতে। গিয়ে দেখি এখানেও ডেবিট কার্ডের প্রচলন আছে। আমি হাল্কা একটা শান্তি পাই। সব কাগজপত্রে আমার জন্মসিল লাগানো হচ্ছে, তখন আব্বার পরিচিত ম্যানেজার আঙ্কেল বলেন, ‘কার্ড লাগবে না?’ আমি করুণ দৃষ্টিতে আব্বার দিকে তাকাই। আব্বা খলনায়ক জাম্বুর মতো গলা করে বলেন, ‘নাহ আজাইড়া জিনিসের দরকার নাই’। আমার অবস্থা তখন ত থৈ ব চ। আমি বলি, ‘জ্বী, লাগবে না’।
এক সপ্তাহ পর আব্বা একটা চেক বই আমার সামনে দিয়ে বলে সাইন কর। আমি টাকার অঙ্ক দেখার জন্য তাকিয়ে দেখি ওইখানে কিছু লেখা নাই। আমি শুধু নাটক-সিনেমায় ব্ল্যাঙ্ক চেকের কথা শুনেছি। এবার নিজের চোখে দেখলাম, এবং তাতে স্বাক্ষর করলাম। আমার একাউন্ট আমার সাইন ছাড়া টাকা তোলা যায় না, আর আমিই জানি না কত টাকার চেকে সাইন করলাম। না জানি আব্বা কত টাকা মেরে দিল। এই চিন্তায় হয়তো রাতে ঘুমাতেই পারতাম না, যদি না মনে পরতো যে ওই একাউন্টে আমি নিজে কোন টাকাই রাখিনি।
কয়েকদিন আগের কথা। আম্মার কাছে টাকা চাইতে গিয়ে দেখি আম্মার ড্রয়ারে আমার ব্যাঙ্কের(!) সিল মারা একটা বাক্স! দেখতে কলমের বাক্সের মতো। আমি আম্মাকে বলি, ‘এইটা কি?’ আম্মা বলেন, ‘কিছু না’। অনেক চাপাচাপির পর জিনিসটা দেখার অনুমতি পাই। খুলে দেখি একটা ‘পার্কার’ কলম। আমি বলি, ‘এইটা আমি নিমু’। আম্মা কঠিন গলায় বলে, ‘না’। আব্বা খাটে শুয়ে ছিলেন। আমি তার দিকে করুণ চোখে তাকাই। আব্বা বলে, ‘গেলি শাহজাদা!’ বুদ্ধিমান মাত্রই বুঝে নিবেন শাহজাদা মানে কি!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
boka bahadur
আমি গল্প কবিতায় প্রথম যে গল্পটি জমা দেই সেটিতে বিষয়ের ব্যাপারে মাথা ঘামাতে গিয়ে গল্পের শ্রাদ্ধ হয়ে যায়। তখন অনেক শুভাকাঙ্খি আমাকে বলেন, গল্পের দিকে জোর দিতে। বিষয়বস্তু খুবই তুচ্ছ। আমি তাদের কথা মাথা পেতে নেই। এজন্য যা মনে আসে তাই লিখি। এজন্য এখনকার লেখাগুলোয় ভোটিং বন্ধ রেখেছি। আর আমি গল্প কবিতায় খুব কম আসি। এজন্য আপনাদের সাথে আমার হয়তো তেমন যোগাযোগও হয় না। আপনারা চাইলে ফেসবুকে কথা হতে পারে। Boka Bahadur লিখে খুঁজলেই আমাকে পাবেন। ক্ষমা করে দিবেন আপনাদের লেখাগুলোয় মন্তব্য না করার জন্য :) আর হ্যাঁ আমি মহান কেউ না, তাই আপনাদের পড়ানোর জন্যই লিখি। আপনারা পড়ে মন্তব্য করেন আর আমি গর্বিত হই। নতুন লেখা জমা দিয়ে এরকম গর্ববোধ বারবার পেতে চাই :D
মোঃ আক্তারুজ্জামান
বিষয় ভিত্তিক কথাটার তোয়াক্কা না করে বেশ স্বাধীনতা ভোগ করছেন- মন্দ কি! আপনার লেখা আমার ভালো লাগে| আমার ছেলেটাও তিড়িং বিড়িং করলে 'শাহজাদা' বলেই গালি দেই- মন্দ বাবা হতেও কিন্তু মন্দ লাগে না কিছু সময় গেলেই বুঝতে পারবেন| অনেক অনেক শুভেচ্ছা.... সব সময় লিখে যাবেন এই আশা রাখি|
অদিতি
আমার একাউন্ট আমার সাইন ছাড়া টাকা তোলা যায় না, আর আমিই জানি না কত টাকার চেকে সাইন করলাম। না জানি আব্বা কত টাকা মেরে দিল। ------------------- আহারে বেচারা। হি হি হি প্রথম পড়া গল্পটাই মজার। তবে বিষয় নাই
সেলিনা ইসলাম
আপনার গল্প নিয়ে কিছুই বলবার নেই কারন আপনি ইচ্ছে করে বিষয়ভিত্তিক লেখা দেননা । আপনার কাছ থেকে বিষয়ভিত্তিক রম্যগল্প চাই এটা পাঠক হিসাবে দাবী । শুভকামনা রইল !
মিজানুর রহমান রানা
গল্পটি পড়ে হাসলাম। হাসির প্রয়োজন ছিলো বেশ। কারণ আজ আমার মনটা ভালো নেই। আপনার গল্পটি আমার মনটাকে খুশিতে বাকুম বাক করে দিলো। হা হা হা। ভোটের অপশন থাকলে এক্কেবারে পুরোটাই দিতাম। নাই দেখে ভয় পেলাম।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।