ছিঁচকে চোর

বিশ্বকাপ ক্রিকেট / নববর্ষ (এপ্রিল ২০১১)

শেখর সিরাজ
  • ১৮
  • 0
  • ৭৬
শৈলেনদের বাড়িটা অনেকটা সেকালের বনেদী জমিদার বাড়ির মতো।পরস্পর গাঁ ঘেঁষা এক সাথে অনেক গুলি ঘর।ঘন ঘন যাতায়াত ছাড়া নতুন কাউর পক্ষে একা নিদিষ্ট কোনও একটা ঘর খুঁজে পাওয়া এক রকম দুঃসাধ্য ব্যাপার।সেই প্রথম আমি শৈলেনদের বাড়ি গিয়ে ছিলাম।অবশ্য এর আগে অনেক পীড়াপীড়ি করেও শৈলেন আমাকে কখনও ওদের বাড়িতে নিয়ে যেতে পারেনি।শেষ অবধি আমার এক গেঁয়েমীর কাছে অনেকটা মাঝি বিহীন নৌকার মতো হাল ছেড়ে দিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ফিরে গিয়েছে।কিন্তু সেদিন ভূগোল পরিক্ষার জন্য এমনেই কিছু ফুটনোটের দরকার হয়ে পড়ে ছিল।উপায়ন্তর না যেয়ে আমার কোনও উপায়ও ছিল না।শৈলেনের মুখে প্রায় বলতে শুনেছি ঐ বয়সে সে থাকার জন্য বাড়িতে নিজস্ব আলাদা একটি ঘর পেয়ে ছিল।তা নিয়ে এমন লম্বা নাক উঁচু ভাব করার কিছু আছে বলে আমার কাছে মনে হয়নি।এতো বড় যাদের একটা বাড়ি,সে বাড়ির যে কেউ ইচ্ছে করলেই যে কোনও একটা ঘর নিয়ে অনায়াসে একা থাকতে পারে।এটাই তো স্বাভাবিক।কিন্তু শৈলেন ঠিক কোন ঘরটাতে থাকতো সেটাই আমার জানা ছিল না।কখনও জিজ্ঞেস করা হয়ে উঠেনি।যেদিন শৈলেনদের বাড়ি গিয়ে পৌঁছুলাম।সেদিনেই ঠিক বুঝতে পারলাম না জিজ্ঞেস করে কেমন ভুলটাই না করলাম।এমন ঝোঁকের মাথায় একদিন আমাকেও যে হঠাৎ আগুন্তকের মতো শৈলেনদের বাড়িতে এসে উপস্হিত হতে হবে।এটা দেখে আমি নিজেই খানিকটা হতবুদ্ধি হয়ে পড়লাম।যদিও আমার বোধ বুদ্ধি এমন আহামারী পর্যায়ে কিছু ছিল না।আমি বরাবরেই সাদাসিধে গোঁ বেচারা টাইপের ছেলে।ধূর্ত খেঁক শিয়ালের চতুরতা আমার স্বভাবের ধাঁচে নেই।বিশাল বাড়ির লম্বা বারান্দা দিয়ে পা টিপে টিপে হেঁটে যাচ্ছি।কাউকে দেখতেও পাচ্ছি না যে কিছু একটা জিজ্ঞেস করবো।ভর দুপুরের নির্জন বাড়িটা যেন হিমালয়ের পর্বত শৃঙ্গের মতো বুকের ভিতর জগদ্দলের দুর্গম পাহাড় হয়ে উঠেছিল।পা টিঁপে টিঁপে হাঁটতে হাঁটতে একটা ঘরের জানালার খিড়কিতে এসে আমার চোখ দুটো প্রায় চুম্বকের মতো করে আটকে গিয়েছিল।শৈলেনদের বাড়িতে এসে যে এমন একটি দৃশ্যের মুখোমুখি আমাকে হতে হবে।তা বোধোদয় আমার ভাবনার অন্তরায় ছিল।স্কুলের টিফিন পিরিয়ট ফাঁকি দিয়ে নাটক থিয়েটার সিনেমায় এমন দু একটি শৃঙ্গারের দৃশ্য যে না দেখেছি এমনও নয়।বয়ঃসন্ধিকালের বসয়টার টানেই যে অন্যরকম।শরীরে রন্দ্রে রন্দ্রে নিষিদ্ধ রকমের সব উত্তেজনা।আজকালের ছেলে ছোকরা হয়তো তা আমার চেয়ে অনেক বেশি ভাল জানে।লাল রং এর খিড়কির পর্দাটা এক পাশে সরে গিয়ে প্রায় কপাটের সাথে উল্টিয়ে আছে। সাহেবী ঢংএ এক ভদ্র লোককে দেখতে পেলাম।আঠারও কি ঊনিশ বছর বয়সী এক যুবতী মেয়েকে ধরে ঠোঁট গুজে চমু খাচ্ছেন।।উজ্জ্বল দোহারা শ্যামলা মেয়েটির শরীরের গড়ন দেখে যদিও আমি তার বয়সটিকে ঠিক ঠাউরে উঠতে পারছিলাম না।সবটাই আমার অকাল পক্ক কাঁচা বয়সের অনুমান দগ্ধ দুরভিসন্ধি।আঠারো কি ঊনিশ তা মেয়েটির বয়স যাই হউক কেন?তা নিয়ে আমার আদৌ চিন্তিত হবার কোনও কারণ দেখছি না।।শুনেছি মেয়েদের বয়স আর ছেলেদের বেতনের কথা কখনও জিজ্ঞেস করতে হয় না।

ভদ্রলোক মেয়েটির পেটের সম্মুখে অংশের মাথা রেখে কান পেতে অধীর আগ্রহে কি যেন শুনতে চাচ্ছেন।পরে বুঝতে পারলাম মেয়েটি সন্তান সম্ভাবনা পোয়াতি।এবং সাথের ভদ্র লোকটিই যে,সেই আগত সন্তানটির পিতৃত্বের ভরন পোষণের ধরিত্রী কর্ণধারী।অতএব তারা দুজনেই যে সম্পর্কে স্বামী স্ত্রী তাতে আমার আর সন্দেহের অবকাশ থাকল না।গর্ভবতী মেয়েটিকে জরিয়ে ধরে তার স্বামী পতি দেবতাটি অনবরত খুনসুটি করে।মেয়েটি কিশোরী বালিকাটির মতো করে খিল খেলিয়ে কারণ অকারণে হেসে গড়িয়ে পড়ে।বোঝা যায় খুব সুখী দম্পতি।কুয়াশায় ঢাকা মেকি সুখীর আভরণের কোনও প্রলেপ ছায়ার মুখোশ পড়ে নেই।প্রথম থেকে শেষ অবধি সবটাই যেন প্রকৃতিদত্ত যার মধ্যে কৃত্রিমতার বায়ো-সার্জারীর কোনও মিশ্র দ্রবনের শংকর আছে বলে মনে হয় না।এমনিটি করে আজকের আধুনিক মহারথী যুগের দম্পতির মধ্যে হয়তো হাজারে এক জোড়া খুঁজে পাওয়া ভার।তাতে কোনও দ্বিধা সংশয়ের বালাই নেই।স্হান কাল বিশেষ হয়তো ভালোবাসারও প্রকার ভেদের বহি প্রকাশ আছে।এই দম্পতিকে দেখে আজ আমার মনে তারেই একটি ঈঙ্গিত প্রবাহের টেউ খেলে গেলো।আমি সনাতন আনাড়ী যদিও ভালোবাসা দাম্পদ্য এজাতীয় শব্দের ব্যবহার মানুষের চরিত্রে কিভাবে প্রয়োগ মন্ত্রে ঘটাতে হয়।তখনও আমার বোধ বুদ্ধির বয়স সে পরিমাণে সাবালকত্বে গিয়ে পৌঁছায়নি।হাতে পায়ে কলা গাছের মতো করে যা একটু লকলকিয়ে লম্বা হয়ে উঠে ছিলাম।আর একটু বড় হয়ে জেনে ছিলাম সবটাই মানুষের অবচেতন মনের বিকারগ্রস্ত খামখেয়ালী পনা।মিশ্র দ্রবণ পদার্থের মতো লঘু ঘনত্বের আপেক্ষিক ব্যাপার এইসব সুখ প্রেম ভালোবাসার ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার উপাদানগুলো।তাই হয়তো জীবনে বেঁচে থাকার মৌলিক সমীকরণের কঠিন শর্তটিও খুব সহজ হয়ে উঠেছিল।আর দশ জনের কথা বলতে পারবো না।নিজের জীবনের মূল মন্ত্র গুরু দক্ষিণাটি আমি প্রথম থেকে শেষ অবধি এই রকমেই পেয়েছিলাম।মেয়েটি আবারও খিঁল খেলিয়ে হেসে উঠে বলে-এই তুমি কি শুরু করছো এমন ভর দুপুরে।কেউ দেখে ফেলবে।ভদ্র লোকটিও একগাল হেসে বলে-দেখুক….আমার রাজত্বে আমি রাজকন্যাকে নিয়ে যা খুশি করবো।তাতে যে যা বলে বলুক।আর একজন বিবাহিত পুরুষ বিয়ের পর তার স্ত্রীর সঙ্গে যা করে।আমিও তাই করছি।কোনও অন্যায় কিছু তো করছি না।মেয়েটি মুখ ভেঙ্গেছি কেটে বলে কি আমার বীর পুরুষরে….খালি বাড়ি পেয়ে,খুব বুঝি যৌবন রস উপচে পড়ছে।একটু পরেই বাবা মা হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরবেন।তখন দেখবো ভেজা বেড়াল-যেন ভাঁজা মাছটিও উল্টিয়ে খেতে জানো না।এখন উঠো,যেয়ে স্নান সেরে এসো।দুষ্টুমি অনেক হয়েছে।

আহা!অরুণা এমন করছো কেন?এতোদিন বাঁধে এলাম একটু কোথায় আদর যত্ন করবে তা না।মুখের উপর ঝাঁটা মারতে শুরু করলে।হ্যাঁ তুমি তো কচি খোকা বাবুটি তোমাকে এখন দুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতে হবে।এ বেলা উঠো তো,অনেক কাজ পড়ে আছে।
ভদ্র লোকটি এবার বসা থেকে উঠে দু হাতে অরুণাকে পাঁজা কোলে করে শুন্যের উপ্ড়ে তুলে তিন চার বার চরকির মতো ঘুরালেন।সেই ফাঁকে যেন মস্ত বড় একটা দুর্ঘটনা নিমিসের মধ্যেই ঘটে গেলো।ভদ্র লোকের চোখ আমার চোখের উপর এসে পড়ে।আমি জানালার খিড়কি থেকে কিছুটা পিছনের দিকে সরে দাঁড়ালাম।উপস্হিত বুদ্ধির কলা কৌশলের চতুরতায় তাক্ষ্যনিক ভাবে আমি আমার চিন্তার জলা ভূমিতে সে মূহুর্তে কিছু খুঁজে পেলাম না।শুধু নিজের ভিতর কেমন জানি একটু অপরাধ বোধের গ্লানিতে ভুগছিলাম।পরের বাড়ির জানালার খিড়কিতে এভাবে কখনও উঁকি দেওয়া উচিত নয়।উঁকি দেওয়া বলতে যা বুঝায় আসলে ঠিক তা নয়।বারন্দা দিয়ে হাঁটতে যেয়ে অপ্রত্যাশিত ভাবেই আমার চোখ দুটো জানালার খিড়কিতে যেয়ে আটকে গিয়েছিল।বোধোদয় কোথাও যেন আর একটি ভুল করলাম।দৌড়ে পালিয়ে যাবো।মনের মধ্যে এমনও চিন্তার টেউ খেলে গেলো দু একবার।কিন্তু পা দুটো নড়াচড়া করবার শক্তিটুকুও যেন উধাও হয়ে গিয়েছে নিমিষেই।ক্রমশ ব্যাপারটা কেমন জানি ঘোলাটে হয়ে আসছে চোখের সামনে।ভাবতেই আমার গলা শুকিয়ে আসছিল।তিল যেন তাল না হয়ে যায়।সেটাই এখন দেখার বিষয়।ভদ্র লোকটি কি মনে করে বসল কে জানে…..

দরজার লাল রং এর ভারি পর্দা সরিয়ে বাইরের বারান্দায় এসে দাঁড়ালেন।ভদ্র লোক আমার দিকে সন্দেহ ভরা দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছেন।মাথা থেকে পা পর্যন্ত আপাদমস্তক আমাকে দেখে।ভদ্র লোকটির কোট-টাইয়ের সামনে আমি বেশভূষাই নিতান্ত হদ দরিদ্র দীনও ভিখারী।হয়তো ভাবছেন ও তাই।আমার মতো ছেলের সঙ্গে এ বাড়ির কাউর যে কোনও রকমের বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকতে পারে।বললেও হয়তো লোকটি বিশ্বাস করবে না। আমার সেই রকমেই ধারণা।নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি বেশির ভাগ অর্থ বিত্তশালী ভদ্র শ্রেণীর শিক্ষিত লোক গুলো খুব অহংকারী আর নাক উঁচু স্বভাবের হয়।আমি ভিতরে ভিতরে লজ্জায় কুঁচকে যেতে থাকি।সে আমার হত দরিদ্র দীনতার দৈন্যতার জন্য নয়।আমি কিছু বলতে যাবো,অমনি ভদ্র লোকটি গলা চড়িয়ে-বাড়ির ঝি চাকরদের ডাকতে শুরু করল।তার গলা ফাটানো ডাকে বাড়ির ঝি চাকর সেই মূহুর্তে দৌড়ে ছুটে না এলেও,ঘরের ভিতর থেকে অরুণা নামের সেই গর্ভবতী মেয়েটি ছুটে এসেছে।অরুণা নামের মেয়েটি বলল-এই ভর দুপুরে আবার ঝি চাকরদের নিয়ে কেন পড়লে?হয়েছে কি শুনি।-হতে আর কিছু বাকি আছে!এটা তো তোমাদের বাড়ি নয় যেন র্দশনীয় কোনও তীর্থ স্হান।যখন তখন রাস্তার ছেলে ছোকরা ভিখারী বাড়ির ভিতর অবধি চলে আসে।বাড়িটার দেখছি আর কোনও প্রাইভেসি থাকল না।কি বাজে কথা বলছো।একবার ছেলটিকে জিজ্ঞেস করো না-কি চায়।জিজ্ঞেস করবে কি?দেখছো না ভিখারী।ভর দুপুরে নির্জন বাড়ি পেয়ে চুরি করার মতলবে ঢুকে পড়ছে।আমি সেই গর্ভবতী মেয়েটির দিকে তাকাই……উজ্জল শ্যামলা বর্নের মেয়ে যে এতো রূপবতী হতে পারে।চোখে না দেখলে,কাউকে বলে ঠিক বিশ্বাস করানো কঠিন।শৈলেনের বোনেই হবে হয়তো।এক পাশ ফিরে দেখলে মুখের কিয়দংশ শৈলেনের মুখের পতিচ্ছবিটাই অনবরত চোখের সামনে ভেসে উঠে। শৈলেন বলেছিলঃতার ভগ্নী পতি বিনোধ অধিকারি বিলেত থাকে।এনিই হয়তো সেই বিলেত ফেরত বিনোধ অধিকারি।যে রকম ভাবে খবরদারীর কৃতত্ব করছেন।আমার দৃষ্টিতে তাই মনে হয়।দূর থেকে এতোদিনে শৈলেনের মুখে এই কোট টাই পরিহিত ভদ্র লোকটির অনেক মুখোরচক গল্প শুনে এসেছি।তখন ভক্তি শ্রদ্ধায় মাথাটা নিজ থেকেই নত হয়ে এসেছিল।আজকের ব্যবহারে তা যেন আবার পুনরায় শুন্যের কৌটায় নেমে গেলো।মানুষের মনের বিশ্বাস ভক্তি শ্রদ্ধার স্হিতি কাল বড় ক্ষনর্জম্মা।যার কথা বার্তায় সামান্যতম সৌজন্যবোধ নেই।তাকে আর যাই হউক ভদ্রলোক বলা চলে না।স্বার্থের দেয়াল প্রাচীরে চুন থেকে পান খসলেই কেউ আর তখন ভদ্রলোক থাকে না।পরিধানের কোট টাইয়ের অন্তরাল থেকে তার বিশ্রী জানোয়ারের স্বরুপটি অনায়াসে বেরিয়ে আসে।তখন লোক লজ্জার ভয়ের রাখঢাকের সমভ্রমটুকুও খণ্ডিত করতে সে কুণ্ঠিত বোধ করে না।এটাই এখন আমাদের কোট টাই পরিহিত শিক্ষিত সমাজের চরিত্র।।নিজের ঘরের লেলিহান আগুনের দাবানলে যতখন না আমরা নিজেরা পুড়ে ছাই ভস্ম হয়ে যাচ্ছি।ততক্ষণ পর্যন্ত পরের ঘরে লেলিহান আগুনের দাবানলের দীপশিখা টুকুও দেখেও আমরা চিৎকার করি না।দিনে দিনে আমরা এইসব জুয়াচুরি ভণিতার প্রকোপ দেখে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি।যে যেটা করে অভ্যস্ত সে সেটা না করতে পারলে বোধোদয় স্বস্তিবোধ করে না।কেউ গৃহ পালিত গাভীর দুধ বিক্রি করে মদের আসরে বসে,আবার কেউ মদের আসরে বসে মদ বিক্রি করে বাজার থেকে সন্তানের জন্য দুগ্ধ সামগ্রী খরিদ করে নিয়ে আসে।আজকালের মানুষে মানুষে সংস্কৃতিটা যেন দিনে দিনে এই রকমেই হয়ে উঠছে।ক্ষনিকের অন্তরালে যখন আমি এই রকম ভাবনা ডুব জলে সাঁতার দিচ্ছি।সেই সুযোগে বিলেত ফেরত বিনোধ অধিকারি খপ্ করে আমার ঘাড়ের কাছাকাছি চেপে ধরে সোজা নাক বরাবরে একটা কষিয়ে ঘুষি মেরে বসলেন।আমি দফাস করে দু হাত পিছিয়ে মেঝের উপর যেয়ে ছিটকে পড়ে গেলাম।সেই গর্ভবতী মেয়েটি।শৈলেনের বোন।ঘরের ভিতর ভদ্র লোকটি একবার যেন কি নাম নিয়েছিল-অ-অ-অরুণা।শৈলেনও বলেছিল তার দিদির নাম অরুণা।তিনি বললেন-কি কি করছো।আহা ছেড়ে দাও।ঘুষিটা একদম যেয়ে নাক বরাবর পড়েছে।এখন কলের জলের মতো হরহরিয়ে রক্ত গড়িয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে।ভদ্র লোকটি আবার আমার ঘাড়ের কাছটাই চেপে ধরে টেনে তুলে বলল-ফের যদি তোকে এ বাড়ির ত্রিসীমানায় ঘুর ঘুর করতে দেখি তবে রে…..ততক্ষণে দেখি বাড়ির ঝি চাকরের দল নিচের সিঁড়ির ধাপে এসে ভীড় জমিয়েছে।আমি কেবল কোনও রকমে বলতে পারলাম অরুণা দিদি আমি চোর নই,ভিখারী নই আমি…….বলেই হন হনিয়ে সিঁড়ি ধাপ মাড়িয়ে প্রায় বাড়ির সদর দরজার কাছাকাছি চলে এলাম।অরুণা দিদি বোধ হয় পিছন থেকে বার কয়েক ডাকলেন এই ছেলে শুনে যাও……গনেশ ওকে ধরে নিয়ে আয়।ততক্ষণে আমি অনেকটা গনেশের হাতের নাগালের বাইরে।বন্দি খাঁচার পাখি হঠাৎ ছাড়া পেয়ে মুক্ত বিহঙ্গে যেমনটি করে উড়াল দেয়।ক্ষনিকের জন্য হলেও যেন নিজেকে সেই মুহুর্তে মুক্ত বিহঙ্গের পাখিই মনে হয়েছিল।

উপসংহারঃ
সেদিন শৈলেনের কাছ থেকে ভূগোল বইটা ধার না নিয়ে আসতে পারলেও,নিজের চেহারার ভূগোলটা পুরোপুরি পাল্টে নিয়ে বাড়ি ফির ছিলাম।কি করে এমন হলো?বাবা মা ভাই বোনের নানা প্রশ্ন….সে আর এক বিড়ম্বনা।পরের দিন বোঁচকানো নাক নিয়ে স্কুলে গেলাম।দেখলাম শৈলেনের বাম হাতের ব্যান্ডেজ গলার সাথে পট্টি মেরে ঝুলে আছে।বললাম কিরে তোর অবস্হা এমন হলো কি করে? দোতলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় পা ছলকে পড়ে গিয়ে হাত মচ্কে গেছে।সারাটা দুপুর বাবা মা ঐ নিয়েই ডাক্তার হাসপাতাল দৌড় ঝাঁপ করলেন।সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে এসেতো সবাই অবাক জামাই বাবু বিলেত থেকে ফেরত এসেছে।তারপর দুপুরের দিকে নাকি আমার বয়সী এক ছিঁচকে চোর ভিখারী সেজে বাড়ির ভিতর অবধি ঢুকে পড়েছিল।জামাই বাবু দেখে ফেলাতে রক্ষে।নয়তো বিলেত থেকে নিয়ে আসা দিদির সব দামি জিনিসপত্র খোয়া যেত।আমি গোঁয়ার গোবিন্দ নিশ্চুপে শৈলেনের বিলেত ফেরত জামাই বাবু-বিনোধ অধিকারির চোর ধরার গল্প শুনি।একে একে সুমন হরিপল মাধব বিশুপতি সেই চোর ধরার গল্প শোনে।অনেক দিন ধরে শৈলেন তার বিলেত ফেরত জামাই বাবু বিনোধ অধিকারির চোর ধরার গল্প করে বেড়ায় আমার কাছে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মাহমুদা rahman গল্পটা সুন্দর....লেখার সাথে আগের লেখকদের dhong ...বেশ ভালো
স্য়েদা তাবাসসুম আহমেদ অনেক ভালো লেগেচে আপনার লেখা...সবার পরা উচিত
সৌরভ শুভ (কৌশিক ) ছিঁচকে চোর,খুলে দাও ডোর /তোমার লেখায় শেখর ,পিয়াছি আলোকিত ভোর /
এস, এম, ফজলুল হাসান অনেক ভালো লেখেছেন , ধন্যবাদ আপনাকে
সূর্য মানুষের মন আর তার উপলব্ধি করার ক্ষমতা সবার ক্ষেত্রে এক হয়না। আমরা যে সময়টায় ঠিক যে জিনিসটা চাই সেটা মোটামুটি হলেও আশা মিটে যায়। আর সাহিত্যে কোনটাযে কোনটার চেয়ে ভাল সেটার বিচার কোনকালেই করা সম্ভব না। শুধু আমরা যে মানুষগুলো কোন গল্প বা কবিতা পড়ে ভাল লেগেছে বলে শুনতে পাই সেটাকেই ভাল বলি। এটা ঠিক লেখার গুনের বিচারিক ফলাফল নয়। লেখালেখির ধারাটা বন্ধ করবেন বলে মনে করিনা। অনেক শুভকামনা থাকলো। আর আমি যে লেখাগুলো পড়েছি তার প্রায় (দুএকটা বিদ্যুত চলে যাওয়া নেট বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ছুটে যেতে পারে) সবগুলোতেই ভোট দিয়েছি।
বিষণ্ন সুমন ভাই আপনি লিখেন অসম্ভব ভালো, কিন্তু এবারও কষ্ট নিতে হচ্ছে যে এটাও বিষয়ভিত্তিক লিখা নয়. তাই ভোট দেবার কোনো সুযোগ থাকলো না
আনিসুর রহমান মানিক আপনার আরও লেখা চাই /ভালো লেগেছে /
ওয়াছিম অনেক ক্ষন পর একটা ভাল গল্প পড়লাম।
মোঃ শামছুল আরেফিন অনেক ভাল লেগেছে।লেখা ছালিয়ে যান। অনেক অনেক শুভ কামনা থাকল।

০৩ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৯ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪