বাতাসে ভাসা ভাসা উড়ো খবর পেয়েছিল।তজুমদ্দিন বাড়ি আসবে।বাড়ির বুড়ো বয় জোষ্ঠ প্রবীণ একলাছ উদ্দিন মিয়া তাতে তেমন কর্ণপাত করেন নাই।তজুমদ্দিন সাধারণত ঈদের ছুটি ছাড়া প্রায় বলতে গেলে বাড়িতে তার আসাই হয়ে উঠে না।
একলাছ উদ্দিন মিয়ার পাঁচ সন্তানের মধ্যে তজুমদ্দিন তার বড় ছেলে।বছর সাত হয় নওয়াবপুর রোডে এক অবাঙ্গালীর দোকানের হিসাব লিখে।সেই থেকে তজুমদ্দিনেই এখন তার সংসারের হাল শক্ত হাতে ধরে আছে।
একলাছ উদ্দিন মিয়া নিজে এখন পুরোনো দিনের অচল মুদ্রার মতো।অক্ষম কাজকর্ম একদম করতে পারেন না।শরীরে বল পান না।দু কদম এ গুলোই হাঁপানির টানে শ্বাস কষ্টে ভোগেন।অমাবস্যা পূর্ণিমায় অম্বলের ব্যথাটা যেন মাথা ছিঁড়ে উঠে।তখন আর কোনও হুশ জ্ঞান থাকে না।অথচয় বয়স তো এখনও পঞ্চাশের কোটা পার হয়ে যায়নি।তার বয়সী কত মানুষ এখনও দিব্যি কর্মঠ পরিশ্রমী কাজ করে বেড়ান।শুধু তার শরীরেই যেন অকাল বার্ধক্য এসে মাঘ মাসের শীতের মতন কাবু করে ফেলেছে।চল্লিশের কোটা পার না হতেই মাথার চুল পেকে,এখন ভুরুর কাঁচিতেও ধবধবে সাদা কাশ ফুলের রং লাগতে শুরু করেছে।বয়সের তুলনাই শরীর যেন খুব দ্রুত গতিতে হাত পা গুটিয়ে যাবার জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠছে।শরীর যেন আজকাল ক্রমশ তারেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।বলি বলি করেও শেষ পর্যন্ত কাউকে বলা হয়ে উঠে না।
এক সময় বয়স কালে রোদ বৃষ্টি মাথায় করে গোটা ঢাকা শহর চষে বেড়িয়েছেন।আয় রোজগার পাতিও নেহাত মন্দ ছিল না।খরচ করতেন দু হাত ভরে।নেশা ভাঙ্গ জুয়া মদ আর মেয়ে মানুষে ছিলেন নবাব সিরাজ উদ্দোলা।ফেরার সময় সিদ্ধির কৌটা কোমরের গোছিতে গুঁজে তবেই ঘরে ফিরতেন।কদাচিৎ ঘরে ফেরা না হলে পুরবী সিনেমা হলের থার্ট ক্লাসের টিকেট কিনে নিতেন।বক্মিম গ্রীবা উঁচু করে রাত বারোটার শো- তে মীনাকুমারী উত্তম সুচিত্রার সব রোমান্টিক ভায়লেন্স দেখতেন।আহা!কি নীলচে যৌবনের দুরন্তপনা দিনেই না তার গিয়েছিল।এখন একলাছ উদ্দিন মিয়াকে দেখলে হয়তো কেউ এ কথা বিশ্বাসেই করতে চাইবে না।তজবিহ মালা জপ আর কোরান হাদিসের শানে নূযুল উদ্ধার করেই এখন যার দিন যায়।এতো কালে যেনো ধর্ম কর্মে তার মতি ফিরছে।তখন যদি ভূত ভবিষ্যতের কথা একটু ঠাউরে চলতেন।তবে হয়তো ছেলের আয় রোজগারের উপর নির্ভর নিজেকে এতোটা নিঃস্ব অসহায় বোধ করতেন না।তবুও ছেলে বলে কথা।একে বারে মুখ ফিরিয়ে নেয়নি।মাস শেষে ঠিকেই মানি অর্ডার করে সংসারের খরচ পত্র পাঠিয়ে দেয়।ছেলে যদি তার নিজের স্বভাব চরিত্র পেতো।তবে তার এই অকাল বার্ধক্যে এসে তিনি যে কি করে সংসারের ঘানি টানতেন।মাঝে মধ্যে ভেবে ভেবে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।সরষে ফুলের ভিতর অন্ধকারের ভূত দেখেছেন।ঐ রাক্ষুসে ইট কংক্রিটের ঢাকা শহরে তো আমোদ ফুর্তি করার জায়গার তো আর অভাব নেই।ছেলে যে এখনও সে পথে পা বাড়ায়নি।তাই রক্ষে!প্রফুল্ল চিত্তে নিমগ্নে আল্লাহের কাছে হাত তুলে ছেলের জন্য মঙ্গল প্রার্থনা করে আর্শীবাদ করেন।ফজরের নামাজ শেষ করে তিনি বাড়ির পথে রওনা দিয়েছিলেন।এমন সময় পথের উল্টো দিক থেকে তার ছোট মেয়ে শেফালী তার দিকে দৌড়ে আসছে দেখে তিনি পথের মধ্যেই থমকে দাড়ালেন।কাছাকাছি আসতেই লম্বা লম্বা শ্বাস নিতে নিতে বলল-বাবা তজুমদ্দিন ভাই বাড়ি আসছে।কথা বলেই যেন শেফালী অনেকটা হাফ ছেড়ে বাঁচল।ছেলে বাড়ি আসবার খবর শুনে একলাছ উদ্দিন মিয়া ঠিক খুশি হলেন,না বিরক্ত হলেন তার ভাব ভঙ্গিমায় কোনও প্রকরের উচ্ছ্বাস বোঝা গেল না।বরং না আসলেই বোধোদয় খুশি হতেন বেশি এমনি একটা ভাব তার সর্বাঙ্গে ফুটে উঠেছিল।কিন্তু তা স্পষ্ট বুঝবার মতো বয়স শেফালীর এখনও হয় নাই।একলাছ উদ্দিন মিয়ার মতো তরল পদার্থের মানুষ তা ভালো করেই জানে।কোনও রকম অস্পষ্ট স্বরে বলল তুই বাড়ি যা আমি একটু কাজল মিয়ার হাট থেকে ঘুরে আসছি। শেফালী যে ভাবে দৌড়ে আসছিল।ঠিক সে ভাবেই বাড়ির দিকে আবার দৌড়ে গেল।
তজুমদ্দিন বারান্দায় জল চৌকির উপর বসেছিল।তার মা কাছাকাছি ঘেঁষে তার ভাই বোন গুলি চার পাশ থেকে ঘিরে আছে।প্রতিবারেই ঢাকা থেকে ফিরবার সময় এদের জন্য কিছু না কিছু কিনে নিয়ে এসেছে।কিন্তু এবারেই প্রথম ছয় মাসের ব্যবধানে বাড়ি আসায় কাউর জন্যে বিশেষ কিছু নিয়ে আসতে পারেনি।অবাঙ্গালী দোকান মালিক কর্তা খুব কড়া মেজাজের লোক।দু মাসের বকেয়া বেতনের টাকা আটকিয়ে দিয়েছে।উপায়ান্তর আসার সময় বলে দিয়েছে।সাপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে যেন কর্মস্হলে ফিরে যায়।কোনও প্রকারে যাতে বিলম্ব না হয়।যথা সময় কর্মস্হলে ফিরে যাওয়ার পরেই তার বকেয়া বেতনের টাকা পরিশোধ করা হবে।তার আগে কিছুতেই নয়।এ অবাঙ্গালী দোকান মালিক কর্তা ভদ্র লোকটি খুব ঝানু ব্যবসায়ী।মুখ ফস্কে একবার কথা বেরুলেই হলো,এক সুতো পরিমাণ এদিক সেদিক কথার নড় চড় করবে না।
শেফালী বলল-ভাইয়া আমার জন্য লাল ফ্রকটা আনোনি।শেফালীর বছর দুয়েক বড় নিজাম বলল-তোমাকে কত করে চিঠি লিখে বললাম এবার ঢাকা থেকে আমার জন্য একটা হাত ঘড়ি নিয়ে আসবে।তজুমদ্দিন নিশ্চুপে এক এক করে সবার বায়না আর্জির কথা শুনলো।কারও স্কুলের বেতন বকেয়া বাকি তো কারও পরীক্ষার ফি।বা কারও নতুন জামা কাপড়,সকলের চাই চাই অবস্হা।মা শেষ পর্যন্ত অনেকটা ধমকের সুরেই বলে উঠলেন।এই তোরা থামবি।ছেলেটা আসতে না আসতেই যেন চাঁদের হাট বসিয়েছে।বায়না আরজি দেখছি আর শেষেই হয় না।যা এখান থেকে………ভাইকে অনেক দিন পরে কাছে পেয়েই হউক আর ভ্রাতা স্নেহ প্রীতির টানেই হউক।কেউ তজুমদ্দিনের কাছ থেকে উঠল না।তজুমদ্দিন এই বলে সবাইকে আশ্বস্ত করল যে-এবার ঢাকায় ফিরে যেয়ে সবার বায়না আর্জি এক এক করে মিটিয়ে দেবে।
এক এক করে সবারেই বায়না আর্জি সমস্যার কথা শুনল।শুধু কেবল মাত্র তার স্ত্রী লিপির কোনও অভাব অভিযোগের ফর্দ শুনতে পেল না।বিয়ের সাপ্তাহ খানেক পরে স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে জীবিকার তাগিদে পুনরায় তাকে ঢাকা ফিরতে হয়েছিল।তার বর্তমান অনুউপস্হিতে স্ত্রী লিপি শ্বশুর শ্বাশুড়ীর তোপের মুখে এক সাপ্তাহ টিকতে পারল না।লেজ গুটিয়ে বাপের বাড়ি নায়র গেল।এ সমস্ত খবরা খবর তজুমদ্দিন ঢাকায় বসেই শুনতে পেয়েছিল।লিপিরেই এক দূর সম্পর্কীয় জ্ঞাতি আত্মীয়ের কাছ থেকে।তার পর থেকেই তজুমদ্দিন চিঠির মাধ্যমে কখনও টেলিফোনে কখনও মা বাবার পক্ষ নিয়ে কখনও বা স্ত্রীর পক্ষ হয়ে কথা বলতে শুরু করেছিল।সংসার ধর্মে নেহাত আনাড়ী তজুমদ্দিন জানে না।দুই নৌকার ছিপিতে পা দিয়ে কখনও সমস্যা সমাধানের সূরাহ্ করা যায় না।এক পক্ষ না এ পক্ষকে আত্ম পক্ষ ভেবে সমর্থন করে নিতে হয়।যখন সব কিছুর চেষ্টা ব্যর্থ হতে লাগল।কোনও কিছুতেই কোনও ফলপ্রসূ কাজ হলো না।অবশেষে তখন অবাঙ্গালী দোকান মালিক কর্তা ভদ্র লোকটির মন টলিয়ে স্বয়ং নিজে আজ বাড়ি এসে উপস্হিত হয়েছে।অন্তত মনে একটা ক্ষীণ আশার প্রদীপ জ্বলে উঠেছিল।তার বাড়ির আসার খবর পেয়ে লিপি হয়তো বাড়ি আসবে।কিন্তু সেই আশার ক্ষীণ প্রদীপটিও মনের কৌটায় জ্বল জ্বল করেও এক সময় দপ করে নিভে গেল। আসার আগের দিনেও টেলিফোনের মাধ্যমে বাড়ি আসার সংবাদটি তাকে জানানো হয়েছিল।
এমনিতেই এ সমস্ত খবরা খবর পেয়ে ঢাকায় তার মন টিকছিল না।প্রতিটা মূহুর্ত কেটেছিল নিদারুণ অস্বস্তির মধ্য দিয়ে।এখন স্ত্রীকে বাড়িতে দেখতে না পেয়ে। তজুমদ্দিনের মাথার ভিতর দিয়ে যেন বজ্র তরঙ্গের একটা টেউ খেলে গেল।তার মনের আঙ্গিনায় কি প্রকারের স্ত্রী বিরহ কাতর যন্ত্রণার তুষের আগুনের মতো জ্বলছে।এটা আর কেউ দেখতে পেল না।না তার বাবা মা, না তার স্ত্রী।সকলেই তার বায়না আর্জির ন্যায্য হিস্যা বন্টনে ব্যস্ত।
তজুমদ্দিন জল চৌকি থেকে উঠে কুঁয়োতলায় গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে এসে নিজের ঘরে ঢুকল।দুটো দিন শরীরের উপর দিয়ে খুব বড় রকমের একটা ধকল গিয়েছে।এখন একটানা কিছুক্ষণ ঘুমাতে পারলেই যেন সে বাঁচে।সে ইচ্ছে করেই মায়ের কাছে তার স্ত্রী লিপির প্রসঙ্গটা এড়িয়ে গিয়েছিল।তাই বলে মা নিজ থেকে কিছু বলল না কেন?ছয় মাসের ব্যবধানে সম্পর্কের এতোটা অধঃপতন।
সবে মাত্র চোখের পাতা লেগে এসেছিল।এমনি সময় শেফালী এসে বলল-বাবা ডাকছে।তজুমদ্দিন বিছানা থেকে উঠে শরীরে জামা গলিয়ে বাইরে এলো।মা সকালের জল খাবার তৈরি করছে।তজুমদ্দিন বাবার পায়ের প্রণাম ধুলো নিয়ে সৌজন্যমূলুক কিছু কথাবার্তা বলল।তাতে পিতা পুত্রের সম্পর্ক থাকলেও বোধোদয় শ্রদ্ধা-স্নেহ প্রীতির কোনও বালাই ছিল না।
আজ সকালে তোমার কথাই ভাবছিলাম।এসে ভালোই করেছো।মনের অস্হিরতা নিয়ে কাজে কর্মে মন বসে না।কিছু দিন থাকো তোমার স্ত্রী লিপির সম্পর্কে যা জানার সব তুমি নিজেই আস্তে ধীরে জানতে পারবে।আমরা বললেই তো বলবে ছেলের বউর নামে কুৎসা বলছি।
শতরঞ্জি পেতে একলাছ উদ্দিন মিয়া ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে সকালের জলখাবার খেতে খেতেই এসব কথা বলতে লাগলেন।স্ত্রী লিপির প্রসঙ্গ নিয়ে পিতা একলাছ উদ্দিন মিয়ার সাথে তার আলাপ চারিতা জমে উঠার আগেই,তজুমদ্দিন বলল-আমি এখন উঠি,রাতে সব বৃত্তান্ত শুনবো।ছেলেকে উঠতে দেখে তার মা বলল-মুখে তো কিছুই দিলে না।কেমন রোগা হয়ে গিয়েছিস।ঢাকায় শরীরের যত্ন আদ্ধি কিছু নিসনা।এ খেয়ে মানুষ বাঁচে!
কেউ বাঁচে কিনা সে জানে না।তবে সে নিজে দিব্যি বেঁচে বর্তে আছে।মাসের পর মাস দু টাকার ছাতুর সাথে পাঠালি গূঢ় খেয়ে অনায়াসে দিন পার করেছে।সংসারে দুটো টাকা বেশি পাঠাতে পারবে।শুধু এই ভেবে।সংসারের প্রতি তার ত্যাগ এক নিষ্ঠা দায়িত্ব বোধের মূল্য তার বাবা মা স্ত্রী কেউ দিতে পারল না।তজুমদ্দিন মনের এই জায়গাতেই হোঁচট লেগেছিল সব চেয়ে বেশি।সে মায়ের কথার কোনও উত্তর দিতে পারল না।ঘুমে চোখ বুঝে আসছিল।নিজের ঘরে এসে আবার বিছানায় যেয়ে শুয়ে পড়ল।ঢাকা গেলেই কেন জানি তার চোখ থেকে ঘুম উবে যায়।অনেক দিন বাধে সে গভীর ঘুমের নিদ্রায় তলিয়ে গেল।
তজুমদ্দিন আজ তিন দিন হলো বাড়ি এসেছে।এখনও তার স্ত্রী লিপির কোনও বাড়ি ফেরার নাম গন্ধটিও নেই।লোক পাঠিয়ে বার তিনেক খবর পাঠানো হয়েছে।ইচ্ছে ছিল রাগ অভিমান ভাঙ্গিয়ে স্বয়ং নিজে যেয়ে নিয়ে আসবে।শ্বশুর শাশুড়ীর সাথে পুত্র বউয়ের সাথে একটা মীমাংসা করে দিয়ে যাবে।কিন্তু তার গোঁয়ার পিতা একলাছ উদ্দিন মিয়ার তোপের মুখে তজুমদ্দিন বাড়ির বাইরে এক কদম পা দিতে পারল না।এদিকে তার নিজেরও ছুটির দিনও ফুরিয়ে আসছিল।বাবাকে বললেই বলে-তুমি তার জন্য সমস্ত কাজ কর্ম ফেলে ঢাকা থেকে ছুটে আসতে পেরেছো।সে কেন তোমার জন্য ক্রোশ খানেক পথ ডিঙ্গাতে পারবে না?যদি থাকে বন্ধুর মন নদী সাতরাতে কতক্ষন?
সব জান্তা শমশের-তজুমদ্দিনের বাবা এক কালের ঢাকা শহরের রাজপথ চষে বেড়ানো পথিক।এখন বাপ দাদার ভিটে মাটিতে থিতু হয়ে বসেছেন।তবুও তার মুখের রস কষ সিঙ্গাড়া বুলবুলিরা এখনও থিতু হয়ে বসে যায়নি।তজুমদ্দিন এক কথা দুই কথা বলার বলার পর বাবা একলাছ উদ্দিন মিয়ার সামনে কোনও কথা খুঁজে পায় না।তজুমদ্দিন মাথা নিচু করে পিতার সামনে থেকে উঠে যায়।তার তৃষ্ণার্ত হ্নদয়টা চাতক পাখির মতো উর্ধো আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে।পিপাসায় কাতর বুকটা ফেটে চৌচির হয়ে আসে এক ফোঁটা জলের জন্য।
ছেলের এ বিয়েতে একলাছ উদ্দিন মিয়ার কোনও মত ছিল না।শুধু ছেলের মন রক্ষার্থে রাজি হয়ে ছিলেন।ছেলের দাবির সামনে নিজের ওজর আপত্তি কিছুই টিকল না।ছেলে সব তুরীর জোড়ে ওজর আপত্তি উড়িয়ে দিল।সংসরের একমাত্র উপার্জন ক্ষম ছেলে তজুমদ্দিনের সামনে মুখ থুবড়ে পড়লেন অকাল বৃদ্ধ একলাছ উদ্দিন মিয়া।অনেকটা নিরুপায় হয়ে ছেলের ইচ্ছার কাছে শেষ পর্যন্ত মাথা নোয়ালেন।বিয়ের প্রস্তাবও নিয়ে গেলেন লিপির মায়ের কাছে।
চল্লিশ উর্ধো সহায় সম্বলহীন এক প্রৌঢ়া বিধবা।একলাছ উদ্দিন মিয়া খোঁজ খবর নিয়ে জানলেন-এক উঠতি বড়লোক আত্বীয়ার বাড়িতে ঝি এর কাজ করেন।তার মেয়ের সঙ্গে একলাছ উদ্দিন মিয়ার ছেলে তজুমদ্দিন……ছিঃ ছিঃ।একলাছ উদ্দিন মিয়ার মাথার উপর দিয়ে যেন প্রথমে বিনা মেঘে একটা বজ্রপাত হয়ে গেল।না স্ব জাতি না, স্ব ঘর।ভালোবাসা বুঝি এমনেই অন্ধ হয়।ছেলের মতিভ্রম দেখে নিজেই খানিকটা অবাকেই হলেন।বরং তার চেয়ে বেশি বোদয় আশ্চর্য হলেন।যখন লিপির মা বলল-তজুমদ্দিনের চেয়ে টের বেশি ভালো স্ব জাতি স্ব ঘরের পাত্র তার হাতে আছে।লিপির মায়ের কথা শুনেই একলাছ উদ্দিন মিয়া বুঝেছিলেন তজুমদ্দিনের কাছে তার মেয়েকে পাত্রস্থ করতে তিনি দোটানায় ভুগছেন।এমন মায়ের মেয়ের সাথে ডুবে ডুবে জল খেয়েছে তার ছেলে তজুমদ্দিন।একলাছ উদ্দিন মিয়া আর বসেননি।ছেলের মুখের কথা রাখতে যেয়ে সেদিন।এক রকমের অপমান অপদস্থ হয়ে ফিরে এলেন।বাড়ি ফিরে এসে ঝালও ঝাড়লেন ছেলের উপর।এমন মেয়ের সঙ্গে প্রেম ভালোবাসা।আগে জানলে তোকে জুতিয়ে লম্বা করে দিতাম হারাম জাদা।শুনি দেশে কি মেয়ের আকাল রোগ পড়েছে।কালেই আমি মতি ঘটকের কাছে যেয়ে পাত্রী ঠিক করে আসছি।তুই দুটি পয়সা রোজগার করিস দেখে-তোর কথা মতো আমাকে চলতে হবে।একলাছ উদ্দিন মিয়া এখনও মরে যায়নি।
সে রাতে একলাছ উদ্দিন মিয়া লিপির জাত গোষ্ঠী চৌদ্দ পুরুষের পিণ্ডি উদ্ধার করে তবেই ছেলেকে নিস্তার দিলেন।একলাছ উদ্দিন মিয়া মতি ঘটকের কাছে যাবার আগেই ছেলে তার নবরত্নকে আলতো রং এর পায়ে,লাল বেনারসীর শাড়িতে বাড়ি নিয়ে আসল।তার স্ত্রী তজুমদ্দিনের মা-ঘটা করে অনুষ্ঠানের মহার্ঘ মহড়া আর্শীবাদ দিয়ে নব পুত্র বধুকে ঘরে তুলে নিলেন।তিনি নিজেও বেশি দিন ছেলের প্রতি বর্ষার গুরু গম্ভীর মুখ করে থাকতে পারলেন না।ধীরে ধীরে মনটা কাদা মাটির মতো নরম হয়ে আসছিল।তবুও বার বার মনে হয় কোথায় যেন একটা চির ধরা ফাটল থেকেই গেল।ঠিক যেন জোড়ার মিলন হলো না।
একলাছ উদ্দিন মিয়া এক বিকেলে ছেলের ঘরে এসে বলল-আমার কথা উপেক্ষা করে নিজেই বিয়ে করে বউ ঘরে তুলে নিয়ে এলে।এখন দেখলে তো বউ এর যে খুব উড়াল দেওয়ার স্বভাব।বনের ফুল বনেই সুন্দর লাগে।ফুলদনিতে সুন্দর লাগে নাড়ে তজুমদ্দিন।এ মেয়ের ঘর সংসারে মন নেই।ব বয়োজ্যেষ্ঠ প্রবীণ লোকেরা স্বাধে কি আর বলে-নদীর জল ঘোলাও ভাল।জাতের মেয়ে কালোও ভালো।তুমি বাড়ি এলে আজ কয়েকটা দিন হয়ে গেল।মেয়ে এখনও মায়ের কাছে বসে জাবর কাটে বাটনা বাটে।এ মেয়ের আশা এবার ছাড়ান দাও।ও মেয়ের পিছনে ঘুরঘুর করে তো টাকা পয়সা তো আর কম খুইয়ে দিলে না।এবার মন টাকে পাথর বানিয়ে রুজি রোজগারে মন দাও।পুরুষ মানুষ মেয়ে ছেলের প্রতি এতোটা দুর্বল ল হলে চলে?তাতে সংসারে আয় উন্নতিতে ধস নামে।মানুষের জীবনে তো কত রকমের দুর্ঘটনাই ঘটে।এটাও না হয় সে রকম একটা কিছু দুর্ঘটনা ভেবে ভুলে যাও।
ছেলেকে হাতের নাগালে পেয়ে একলাছ উদ্দিন মিয়া কড়া দার্শনিকের মতো নিজের পূর্ব ইতিহাসের অভিজ্ঞতা ঝালিয়ে হিত উপদেশ দিতে থাকেন।মানুষ বোধ হয় নিদিষ্ট বয়সের একটা সীমা রেখা অতিক্রম করে যখন শারীরিক কর্ম ক্ষমতা হারায়।তখন হয়তো তার মুখের প্রগল্ভতার বাঁচলতা বেড়ে যায়।মুখ সক্রিয় হয়ে উঠে।প্রয়োজনীয় কথা বলার চেয়ে অপ্রয়োজনীয় কথা বলে বেশি।নিরর্থক কথার খৈ ফুটে।তার পিতা একলাছ উদ্দিন মিয়ারও সেই নিরর্থক কথা বলার খৈ ফুটেছে।তজুমদ্দিনের কাছে নিম পাতার তেতো রসের মতো বিস্বাদ লাগে।কাহাতক আর ভালো লাগে!জীবনে কোনও দিন কলব্রীজ টুয়েন্টি নাইনের টেক্কা গোলাম বিবির পাতায় তুরোকের ফোঁটা দিয়ে দেখেনি।সেই তজুমদ্দিনের জীবনে সংসারের যাঁতাকলের প্যাঁচে পড়ে মিহি গুঁড়ো ময়দা আটার মতো এমন করুন দশা হবে।এটা সে কখনও ভাবতে পারেনি।স্ত্রী লিপির কাছ থেকে এমনটা সে আশাও করেনি।
স্ব জাতি স্ব ঘর ডিঙ্গিয়ে সে কেবল ভালোবাসার টানে নিজেকে এমন গড্ডলিকা প্রবাহে গাঁ ভাসিয়ে দিয়েছিল।একটু সুখ সহানুভূতির পায়রার বাঁকবাঁকুম শুনবে বলে…..কিন্তু শুনতে আর পেল কোথায়।তার আগেই বুনো জংলী পায়রা খোপের দরজা আলগা পেয়ে উড়াল দিয়েছে।তার পিতা এখলাছ উদ্দিন মিয়া বলছিল-বনের ফুল বনেই সুন্দর লাগে।ফুলদানীতে সুন্দর লাগে নাড়ে জুমদ্দিন।তেমনি করে হয়তো বনের জংলী পায়রা বনেই সুন্দর লাগে।বন্দি খাচার ভিতর বড্ড পাখা ঝাপটায়।এখন যে কোথায় থেকে এসব আজে বাজে ভাবনার পিঁপড়ে এসে এসব লাভের গূঢ় খেয়ে যায়।ভেবে ভবে তজুমদ্দিনের কপালে ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে।ছয় বছর বগল তলায় ডুগডুগি বাজিয়ে প্রেম করল।তখন এসব ভাবনা চিন্তা ছিল কোথায়।কি জানি নদীর গতি পরিবর্তনের মতো করে হয়তো মানুষের মনের গতিরও দিক পরিবর্তন আছে।বিয়ের পর হয়তো সব পুরুষেরাই তার প্রাক্তন প্রেমিকাকে প্রেমিকা রূপে দেখার চেয়ে কূল-বধূ সত্বী সাবিত্রী স্ত্রী রূপে দেখতে বেশি প্রছন্দ করে।তজুমদ্দিন ও হয়তো তার ব্যতিক্রম ছিল না।
এজন্যই হয়তো হাল আমলের রোমীয় জুলিয়েটদের ঠুনকো প্রেমের জয় জয়কার সর্বত্র।বিয়ের তিন মাস ছয় মাস না পেরুতেই লিগ্যাল নোটিশ ডির্ভোস এ্যালিমেগেশন সেপারেশন।লিঙ্গ ভেদাভেদ ঘুচে এখন সমান অধিকারের যুগ।আজকাল পন্ডগ্রামের আক্কাস আলী করিম ব্যাপারীর ঘরের বউরাও নারীবাদের সক্রিয় কর্মী।যে মেয়েটি কোনও দিন হয়তো রাস্তার ভির ঠেলে একা বাস ট্রেনে উঠতে সাহস করেনি।সেও এখন পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাস ট্রেনের ভীড় ঠেলে তর তরিয়ে উঠে যাচ্ছে।আগে বাস ট্রেনে গাঁ ঘেঁষে লেখা থাকতো 'দয়া করে মহিলা আসনে বসবেন না'কিংবা বসলেও'দয়া করে মহিলা আসন শূন্য করে দেবেন'।এ জাতীয় লেখা এখন আর বাস ট্রেনের গায়ে চোখে পড়ে না।কিংবা কোনও মহিলা যাত্রীর আগমনে কোনও ভদ্রলোক ভদ্রতার সৌজন্যে আসনটি ছেড়ে দিয়েছেন বলেও বর্তমানে এমন নজির আর দেখা যায় না।বরং আজকাল যে যার সুবিধা মতো চলন্ত বাস ট্রেনে টিকিট কন্টাক্টরের সঙ্গে আলু পটঁলের দর দাম কষাকষি করতে করতে দিব্যি গন্তব্য স্হলে পৌঁছে যাচ্ছে।হয়তো কানের পর্দাটাকে আর একটু সজাগ করলে শুনতে পাওয়া যাবে সুবর্ণ চয়ন্তিকাকে বলছে-হুমায়ুন আহমেদের সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত 'আগুনের পরশ মনি' ছবিটি খুব দারুণ হিট করেছে।চলনা শনিবারের দুপুরটি সিনে কমপ্লেক্স যেয়ে এক শো মেরে আসি।নাড়ে কর্তা শুনতে পেলে খুব রাগ করবেন।পুরো সপ্তাহ জুড়ে অফিস করে ছুটির দিনেও যদি স্বামী বরটি পাশে থেকে একটু খুনসুটি না করতে পারে।তবে দারুণ বোরিং ফিল করে।এক কথায় দু কথায় একজন অন্য জনের উপর হেসে গড়িয়ে পড়ে।
একবার মধ্য বয়সী এক পৌঢ় ভদ্র লোক ভিরের ধাক্কা সামলাতে না পেরে পিছন থেকে অল্প বয়সী একটা মেয়েকে জাপটে ধরেছিলেন।ভদ্র লোকটি কিছু বুঝে উঠার আগেই মেয়েটি ঘুরে দারিয়ে পৌঢ় ভদ্র লোকটির গালে পটাপট দুটি চর কষিয়ে দিয়েছিলেন।পরের বাস ষ্টপেজ এসে বাসটি থামার সঙ্গে সঙ্গে ভিরের মধ্যে লোকটি নেমে যাচ্ছিল দেখে।মেয়েটিও লোকটির পিছন পিছন নেমে এসে বলল-শুনন,জ্বি আমাকে বলছেন।যেন কিছুই হয়নি।এমনি একটা ভাব ভঙ্গিমা ভদ্র লোকটির চেহারায় ফুটে উঠল।চলুন,কোথায়?কেন আপনার বাসায়।ভদ্র লোকটি এবার একটু নড়ে চড়ে গলা খাগড়ি দিয়ে বলে উঠল।কেন?কেন? আপনার আত্মীয় স্বজনকে যেয়ে বলে আসবো।আপনাদের এই আধবুঁড়ো খোকাটি বাস ট্রেনে ভিরের মধ্যে অল্প বয়সী মেয়ে দেখলেই পিছন থেকে জাপটে ধরেন।মধ্য বয়সী ভদ্র লোকটি রীতি মত ঘামতে শুরু করেছেন।কোনও কথা না বলে চলন্ত শেয়ার ট্যাক্সি দাড় করিয়ে প্রায় এক রকমের দৌড়ে উঠে পড়লেন।গর্দভ বুড়ো না হয়ে যদি অল্প তারেই বয়সী কোনও ছেলে ছোকরা হতো বোধোদয় ততক্ষণে লেডিজ ফাস্ট, লেডিজ ফাস্ট বলে চেঁচিয়ে এক গাদা লোক জোড়ো করে ফেলতো।এক সময় লেডিজ ফাস্ট কথাটির খুব চল ছিল।মেয়ে ছেলের বাড়াবাড়ি দেখলেই বলা হতো লেডিজ ফাস্ট।
ইভ টিচিং গ্রস্ত মেয়েরাও এখন নিজেরাই নিজেদের তীর ধনুক বর্ম বল্লম হাতিয়ার।পণ্ড অজপাঁড়া গাঁয়ের মেয়েরাও কোনও অংশে পিছিয়ে নেই।তারাও এখন প্রতিবাদের তীর ধনুক বল্লমে শান দিতে শুরু করেছে।বাংলাদেশের নারীরা এখন আর অবলা নয়।তাই হয়তো ঘরে ঘরে সেপারেশন.পার্টিশান ব্যাঙ্কের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে।শাশুড়ী বউতে ঝগড়া।পিতা পুত্রে মনো মালিন্য।ভাই বোনে কলহ বিবাদ সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা।স্বার্থের রশি ধরে টানাটানি করতে গিয়ে সুন্দর সুন্দর সম্পর্কের অকাল মৃত্যু।শত্রু পক্ষের লোক তাই দেখে করতালি দিয়ে বাহবা দেয়।মিত্র পক্ষের লোক চুকচুকিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলে-অর্নথকক কেন ঝামেলা পাকাতে গেলেন বাবু,এই তো বেশ ছিলেন।তাল দেবার বেলায় সবাই দেয়।দুধ দেবার বেলায় কাউকে খুঁজে পাবেন না।কথাটা মাথায় রাখবেন!ঢাকায় থাকতে থাকতে এমন অনেক কিংবদন্তী সব ঘটনার সাক্ষী তজুমদ্দিন।
কিন্তু তার বেলাতেও যে লিপির সঙ্গে সম্পর্কটা শেষ পর্যন্ত ভাঙ্গতে ভাঙ্গাতে মচকানো ডালের মতো ঝুলে থাকবে।এটা ছিল তার কল্পনার অতীত।ছুটির দিন ক্রমেই ঘনিয়ে এসেছে।আজ বাধে কাল ভোরের ট্রেন ধরে তাকে ঢাকার উদ্দ্যেশে রওনা দিতে হবে।আত্মীয় স্বজন শেখড় বিচ্ছিন্ন সেই ঢাকার একাকী নিঃসঙ্গ জীবন আবার।
শীতের দুপুর দক্ষিণের আকাশে হেলে হেলে শুম্ভক গতিতে সূর্য যখন পশ্চিমের আকাশে টলছে।দক্ষিণ মুখো জানালার শিখ গলে সূর্যের খন্ডিত কয়েক ফালি উষ্ণ আলো এসে তার শরীরের উপর পড়ছে।বিছানায় শুয়ে শুয়ে সাত পাঁচের ভাবনার দোটানায় গড়াগড়ি খাচ্ছে তজুমদ্দিন।কি করবে?আর কিছু করার মতো অবশিষ্ট ভাবনার বোধ বুদ্ধি যেন এই মূহুর্তে সব লোপ পেয়েছে।উপুর হয়ে শুয়ে মাথার কাছের বালিশ টিকে বুকের কাছে এনে চেপে ধরে।হাতের আঙ্গুলে টগায় কি যেন শক্ত শক্ত ঠেকে।তজুমদ্দিন নড়ে চড়ে উঠে।বালিশের গায়ে আঙ্গুলের মস্তক চাকি টিপে টিপে দেখে।তাবিজ কবজেই হবে হয়তো।বাবা মায়ের কারসাজি।হতশ্রী লিপির জন্য যেন বাবা মায়ের সংসারটা অকাল স্রোতে ভেস্তে না যায় তারেই ব্যর্থ প্রচেষ্টা।
বালিশের গায়ে পুরোনো ব্লেডের আছড় টানে।থোকা থোকা চাকা তুলো বিছানার উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে মেলে ধরে।নাড়াচাড়া করতেই চাকা তুলোর মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসে।আধুলি সিকি মাপের পাঁচ পাঁচটি তাবিজ।আট ন বছরের বাড়ন্ত শিশু হাতের কাছে নতুন কিছু পেয়ে যেমনি একটু নাড়া চাড়া করে কৌতূহল নিবারণ করতে চায়।তজুমদ্দিনও তাবিজ গুলি নিয়ে তেমনি একটু নাড়াচাড়া করে কৌতূহল নিবারণ করতে চায়।তাবিজের সব গুলি ঠোঁসেই মোম গলিয়ে ঠেসানো।আজকের এই আধুনিক যুগে কেউ তাবিজ কবজে বিশ্বাস করে?অসম্ভব!সব গুলো তাবিজ হাতের মুঠোয় চেপে ধরে ছুড়ে ফেলে কুঁয়োতলার জলার দিকে।তারপর তজুমদ্দিন যতটা সম্ভব উঁচু গলায় মাকে ডাকল-মা-আ-মা-আ…...
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
বিন আরফান.
তাবিজে আমার বিশ্বাস নেই. যাই হোক গল্প এক নিমিষেই শেষ করতে হলো. মনমুগ্ধকর একটি গল্প. আপনি অন্যদের লেখা গলু পড়ুন তখন দেখবেন গল্প লিখে আরো উত্সাহ পাবেন. কেননা এই সাইটে একে অন্যের টি না পড়লে আপনাকে খুজে পাবেনা. আপনার লেখা গুলো জয় হবার মত. চালিয়ে যান একদিন হবেই জয়. শুভ কামনা রইল.
বিষণ্ন সুমন
আমার পাঠক হিসেবে হাতে খড়ি শরত চন্দ্রকে দিয়ে . এখনো নমস্য লেখক তিনি. তার কাছাকাছি আমি আর একজনকে বসতে দিয়েছি , তিনি হলেন শীর্ষেন্দু মুখোপধ্যায়. আপনি কি মনে করবেন জানিনা এর পরের স্থানটা আপনাকে দেবার জন্য মনটা আইঢাই করছে. কাজেই এরপর আপনার লিখার মান নিয়ে কোনো কমেন্ট করাটা আমার জন্য কতটা যৌক্তিক, বুঝে নিন. শুধু বলব লিখে যান আজীবন, যেন আমৃত্তু পড়ে যেতে পারি আপনার লিখা. ধন্যবাদ আপনাকে.
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।