নববর্ষের আবির

বিশ্বকাপ ক্রিকেট / নববর্ষ (এপ্রিল ২০১১)

শাহ্‌নাজ আক্তার
  • ৩৫
  • 0
  • ৯১
মাঝে মাঝে মনে হয় সব কিছু ধ্বংস করে দিয়ে কোন জন মানবহীন জায়গায় চলে যাই। ভালো লাগেনা । আর ভালো লাগেনা। জীবনের এই দু:সহ যন্ত্রণা আমাকে প্রতিনিয়ত তাড়া করে ফেরে। কিভাবে ভুলবো আমি তোমাকে? সেদিনের সেই দিনটি যে বারবার ফিরে ফিরে আসে ............... এটাই যে প্রকৃতির নিয়ম। কিন্তু তুমি তো আর আসোনা। ২০০৫ সাল , ১৪ ই এপ্রিল. পহেলা বৈশাখ, মানে বাংলা নববর্ষ। তোমার সাথে আমার প্রথম দেখা রমনার বটমূলে। তোমরা তিন বন্ধু মিলে আড্ডা দিচ্ছিলে আর বাদাম খাচ্ছিলে বেঞ্চিতে বসে । আমি তখন সবে মাত্র রমনাতে আসলাম । লাল পেড়ে সাদা শাড়ি পড়ে কপালে লাল টিপ দিয়ে , খোপায় লাল গোলাপ গুজে খুব আয়েশি ভঙিতে তোমদের পাশ দিয়ে হেঁটে আসছিলাম । হাত ভর্তি চুড়ির রিনিঝিনি শব্দ হচ্ছিল । প্রচণ্ড কড়া রোদ । হটাৎ মাথাটা ঘুরে উঠলো । পড়ে যেতে যেতে আর নীচে পড়া হলোনা । কে যেন আচমকা আমাকে ঝাপটে ধরলো । আমি হতবিহবল হয়ে গেলাম । তাকিয়ে দেখি তুমি মুগ্ধ দৃষ্টিতে আমার মুখের পানে তাকিয়ে আছো । ধন্যবাদ দিলাম।
তুমি ও গ্রহণ করলে এবং বললে বসেন।
আমি ও বসে পড়লাম, জানিনা কেন, শুধ জানি তোমাকে আমার জানতে হবে ।
সেই থেকে শুরু , চেনা জানা , ভালোলাগা, ভালোবাসা...... । কি আবেগ! কি উচ্ছ্বাস ! আমাদের সেই দিনগুলি ..... একসময় মনে হতো পৃথিবীতে সবচেয়ে আদিখ্যেতা হলো প্রেম, যে একজন আরেকজন ছাড়া নাকি বাঁচবেনা । কিন্তু আবির এর সাথে পরিচয়ের পর থেকে মনে হলো এর থেকে ধ্রুব সত্য দ্বিতীয়টি নেই।
সেই আবির তুমি আমাকে ফেলে কোথায় চলে গেলে , মাত্র একটি বছর তুমি আমার জীবনে ছিলে কিন্তু তার রেশ আমি আজ ও বয়ে বেড়াচ্ছি । আজ ও সেই দু:সহ স্মৃতি .......। দিনটি ছিল ২০০৬ সালের ১৪ই এপ্রিল। বাংলা নববর্ষ । আগের দিন রাতে ফোনে বললে আমাদের প্রথম দেখা যেখানে হয়েছিল , যেভাবে সেজেছিলাম , ঠিক ওভাবে যেন ওখানেই আসি । খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে রওনা দিলাম রমনার বটমূলে। চারিদিকে নতুন বাংলা বছরকে বরন করে নেওয়ার সাজ সাজ আমেজ। ছেলে মেয়েরা নববর্ষ সাজে সজ্জিত। আচ্ছা আজকের আকাশ টাই বা এত সুন্দর লাগছে কেন । ঠিক যেন আমার আবির এর মত । আমার আবির, যার মুখের দিকে তাকালে আপনা-আপনিই মনটা ভালো হয়ে যায়। কি মায়াবী মুখ ! কি সুন্দর চাহনি।
সেদিন খুব সকাল সকাল একই সাজে বাসা থেকে বের হলাম। রমনার গেটে পৌঁছে রিকসার ভাড়া মিটিয়ে ভিতরে ঢুকতে যাবো, হটাৎ একটি শঙ্কিত আওয়াজ! তাকিয়ে দেখি একটি নিথর দেহ পড়ে আছে রাস্তার উপর। কিছু মানুষ জটলা বাঁধছে দেহটিকে ঘিরে । সম্ভবত ছেলেটি রিকসা থেকে নামতে যেয়ে প্রাইভেট কারের ধাক্কা খেয়েছে । কিছু পথচারী প্রাইভেট কারটিকে আটকে রেখেছে। আহারে কোন মায়ের বুকটি যেন আজ খালি হয়ে গেল ।সত্যিই খুব কষ্টদায়ক। হটাৎ ছ্যাঁত করে উঠলো বুকখানা । কি মনে করে একটু এগিয়ে গেলাম জটলাটার কাছে।নিথর দেহটাকে নিয়ে পথচারী রা চেষ্টা করছে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য। দুটি লাল গোলাপ ছেলেটির হাতের মুঠোয় ।উপুড় হয়ে পড়ে আছে ।
আচ্ছা ওর না দুটো লাল গোলাপ আনার কথা ছিল আমার জন্য। এই এই ওর মুখখানা আমাকে একটু দেখাও তো । দৌড়ে গেলাম । একি ! এ যে আমার আবির। যার জন্য আমি সব কিছু করতে পারি। উফ! মাগো ! তারপর আর কিছু মনে নেই। জ্ঞান ফিরে দেখি আমাকে ঘিরে আছে বাসার সবাই।
আমার আবির নেই। অথচ আমি আছি । মাত্র একটি বছরের ব্যবধানে ওকে হারিয়ে ফেললাম । প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ ফিরে আসে। কিন্তু আমার আবির আর ফিরে আসেনা। আজ ও আমি পহেলা বৈশাখে একই সাজে রমনার গেটে যাই। ও যেখানে পড়ে ছিল সেখানে ফুল দেই । তারপর বাসায় ফিরে আসি । এও এক রকমের ভালোবাসা, এও এক রকমের বেঁচে থাকা ।
অনিশ্চিত পথচলায় আমাকে আজীবন চলতে হবে।
থামা যাবেনা । যদি আবার তাঁর দেখা পাই।
যদি নববর্ষ কোন নতুন দিগন্তের সূচনা করে . . . . .।
নববর্ষ ও আবির যে আমার কাছে একই সুতোয় গাঁথা ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
M. H Shamim ভালো হয়েছে..............
বিন আরফান. সুন্দরকে সব সময় সুন্দর বলতে হয়.
এফ, আই , জুয়েল আবীর কুমকুম সব হইয়াছে বাসী । কী রং-এ রাঙাবে তারে আজি ।।
সৌরভ শুভ (কৌশিক ) Shahnaj Akter লিখুন বারবার /
মোঃ আক্তারুজ্জামান বেশ কয়েক বার পড়ে ফেললাম| নির্ভুল বানান, বাক্য গঠন, পরিপাটি করে কথা সাজানোর দক্ষতা আপনাকে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে......
এস, এম, ফজলুল হাসান অনেক ভালো লেখেছেন , ধন্যবাদ আপনাকে
rehana apu ato abeg die likhechen , khub valo laglo
খোরশেদুল আলম এত অল্প বয়সে এত ভাল লেখা কিকরে হলো খুব ভালো হয়েছে।
Najnin খুব ভালো হযেছে. ভোট দিলাম
মুহাম্মদ জহুরূল ইসলাম আহা সেদিন পার্কে যদি আমি থাকতাম ! চমত্কার লিখেছেন. তবে বানান ভুল করেছেন.

১৯ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪