সরে সরে যায় তটভূমি

দিগন্ত (মার্চ ২০১৫)

আখতারুজ্জামান সোহাগ
  • ১৬
মোকাররমের বুকের ভিতর ঢিপঢিপ একটা আওয়াজ হচ্ছে। তার মনে হচ্ছে এ শব্দটা শুধু সে না, শুনতে পাচ্ছে তার আশেপাশের সবাই। এই যে সুন্দর চেহারার ছেলেটা তার পাশে দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছে, আঙুল চালিয়ে চুলের সিঁথি ঠিক করছে বার বার, আর একটু বাদে বাদে তাকাচ্ছে হাতঘড়িটার দিকে, সেও শুনতে পাচ্ছে তার হৃদপিণ্ডের ধুকপুকানি। তাই তো একটু বাদে বাদে তাকাচ্ছে সে মোকাররমের দিকে। এই হয় তার প্রতিদিন। যতক্ষন সে নূরজাহানকে তার সহকর্মীদের সাথে হাসি-তামাশা করতে করতে কারখানার ঐ পকেট-গেট গ’লে বাইরে বেরিয়ে আসতে না দেখে ততক্ষণ কে যেন তার বুকের ভিতরে আশা-নিরাশার পেন্ডুলামটা নাড়িয়েই যায়! কে যেন কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে তাকে জিজ্ঞেস করতে থাকে বারংবার, আজ নূরজাহান কাজে এসেছে তো? আজ দেখা হবে তো তার সাথে?
মাঘের মাঝামাঝি এখন। কিন্তু আবহাওয়ায় তার কোন ছাপ নেই। ক’দিন ধরে এমনটাই চলছে। সন্ধ্যে রাতে কেমন গরম গরম লাগে, শেষ রাতে আবার লেপ টেনে নেওয়া ঠাণ্ডা। সকালে যদিও ফিরফিরে বাতাস থাকে, শীতের দাপট থাকে না অতটা। বেলা যত বাড়তে থাকে সূর্যও চড়াও হতে থাকে, দুপুরবেলা সূর্য দেখা দেয় চৈত্রের রূপে। এই যেমন এখন। মিনিট বিশেক হলো মোকাররম দাঁড়িয়ে রয়েছে এই কারখানার গেটে, তাতেই তেতে উঠেছে শরীর, দু’একফোঁটা ঘামও দৌড়াচ্ছে তার পিঠের উপরে। ঘাড়ের ওদিক দিয়ে জামার ভিতরে হাত দিয়ে ঘাম মোছার চেষ্টা করল সে।
পকেট হাতড়ে বের করে আনল মোকাররম তার সরু মোবাইলটা। বোতাম টিপে চোখের সামনে ধরল সময় দেখবে বলে। মাঝ-আকাশে সূর্য, খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে সরাসরি সূর্যের আলো এসে পড়ছে মোবাইলের পর্দায়, মোকাররম ঝাপসা পর্দাটাই যা দেখল, সময় দেখতে পারল না। বাম হাতের তালু উঁচিয়ে একটুখানি ছায়া তৈরি করে তার নিচে মোবাইল ধরে পিটপিটিয়ে তাকাল সে। একটা বাজতে এখনও তিরিশ মিনিট বাকি। নিজের উপর একটু রাগ হলো তার। এত হন্তদন্ত হয়ে না এলেও চলত।
প্রতিদিনই আসে মোকাররম এখানে, এই পোষাক কারখানার গেটে, ঠিক দুপুর একটা বাজার আগে আগে। কসমেটিক্স এর ব্যবসা তার। দু’টো শোকেজ ভ’রে নিয়ে আসে সে মেয়েদের নানা প্রসাধনসামগ্রী, তা নিয়ে বসে থাকে সে কারখানার ঠিক প্রধান ফটকের কাছে। একটার সময় কারখানা ছুটি হয় দুপুরে খাওয়ার জন্য। দলে দলে সে সময় শ্রমিকরা বের হয়, লম্বা লম্বা পা ফেলে যার যার বাসার দিকে ছোটে দু’টো নাকে-মুখে দিতে, কারখানায় ফেরে তারা আবার ঠিক দু’টোয়। এদের বেশিরভাগই মেয়ে। আসা যাওয়ার পথে এই মেয়েগুলোর কেউ কেউ আসে তার শোকেজের কাছে, এটা ওটা নেড়ে-চেড়ে দেখে, তাদের কেউ কেউ জমানো টাকা দিয়ে এটা ওটা কেনে। নূরজাহানও আসে। তবে সব দিন নয়।
কসমেটিক্স এর ব্যবসা মোকাররমদের মোটামুটি তিন পুরুষের। মোকাররমের দাদা তার যৌবনকালে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে চুড়ি-জরি-ফিতা-টিপ বিক্রি করে বেড়াত। এখনকার মতো তখনকার দিনে গ্রামে গ্রামে এত সাজ-প্রসাধনসামাগ্রীর দোকান ছিল না। তাই বিক্রি-বাট্টা হতো বেশ। কেউ নগদ টাকায় কিনত। কেউ আবার প্রসাধনদ্রব্যের বদলে দিত ধান বা চাল। গমও দিত কেউ কেউ। কারবারে লাভ ছিল ভালো। যা আয় হতো তাই দিয়ে চলত সংসার। শেষ বয়সে একটা কসমেটিক্স এর দোকান দিয়েছিল দাদা গঞ্জে। মোকাররমের বাবা ছাড়া আর কোন ছেলে ছিল না দাদার। দাদার মৃত্যুর পর কসমেটিক্স এর দোকানটাতে তাই বাবাই বসত।
মোকাররমের জীবনটা যেন কেমন! ক্লাস ফাইভে পড়ার সময় তার মা মারা যায় হঠাৎ করেই। বাবা আবার বিয়ে করে এর বছর খানেক বাদে। সাত-আট ক্লাস পড়ার পর বাবা তাকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে আনে, বসিয়ে দেয় কসমেটিক্স এর দোকানে। লেখাপড়ায় মন ছিল মোকাররমের। কিন্তু কি যে হলো হঠাৎ করে!
বাপ-বেটায় মিলে চালাত তখন তারা গঞ্জের দোকানটা। বিরাট বড় গঞ্জ, দূর-দূরান্ত থেকে আসত বড় বড় নৌকা, লঞ্চ ভিড়ত ঘাটে। অনেক মানুষের সমাগম হতো প্রতিদিন, ব্যবসাও ছিল রমরমা। ব্যবসার মাথা ভালোই ছিল মোকাররমের। তখন বেশিরভাগ সময় দোকানে বসত সে-ই। দেখতে দেখতেই দোকানটা বড় হয়ে গিয়েছিল।
বাবার দ্বিতীয় বিয়ের বছরদেড়েক পরে মোকাররমের নতুন মায়ের কোলে এসেছিল একটা সন্তান। ছেলে। সেই দিনটা এখনও চোখের সামনে ভাসে মোকাররমের। সেদিন কত খুশিই না হয়েছিল সে। তিন তাড়াতাড়ি দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে গিয়েছিল সে, গঞ্জ থেকে বড় বড় রসগোল্লা কিনে নিয়ে। পাড়া-প্রতিবেশীদের মিষ্টিমুখ করাতে হবে না! কিন্তু বাড়িতে গিয়েই একটা ধাক্কা খেয়েছিল মোকাররম। ছোট ভাইটিকে কোলে নিতে পারে নি সে। নতুন মা কোলে নিতে দেয় নি। খুব মন খারাপ করে সেদিন নদীর ধারে গিয়ে বসে ছিল মোকাররম। বসে ছিল সন্ধ্যা উতরে যাওয়ার পরেও।
এক প্রকার নিস্তরঙ্গই কাটছিল মোকাররমের জীবন। সকাল থেকে শুরু করে রাত দশটা-এগারোটা পর্যন্ত দোকান সামলায় সে। এ ক’বছরে টুকটাক জমি-জিরেত হয়েছে মাঠে। বাবা সেগুলো দেখাশোনা করে। সৎ ভাই মোজাফফর স্কুলে যায়। কিন্তু তাকে নিয়ে হয়েছে এক জ্বালা। পড়ালেখায় একদম মন নেই। তার নামে স্কুলের মাষ্টারের নালিশ, পাড়া-প্রতিবেশীদের নালিশ। কেবল কোন নালিশ ছিল না মোকাররমের। বৈমাত্রেয় ভাই হওয়া সত্ত্বেও মোকাররম তাকে দেখত নিজের মায়ের পেটের ভাইয়ের মতোই।
টেনেটুনে প্রাইমারী স্কুল পেরিয়েছিল মোজাফফর। তারপরেই বেঁকে বসল সে, আর স্কুলে যাবে না। মোকাররম তাকে বুঝিয়েছিল অনেক। কিন্তু কোন কাজ হয় নি। কিছু বাজে বন্ধুদের খপ্পরে পড়েছিল মোজাফফর। প্রায়ই সে গঞ্জের দোকানে যেত, ক্যাশবাক্স থেকে নগদ টাকা উঠিয়ে নিয়ে চলে যেত বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে। মোকাররমের কোন শাসন-বারণই শুনত না সে। কিছু বললে সে তাকে শুনিয়ে দিত দু’কথা, ‘দোকান কি তোর? আমার বাপের দোকান। টাকা নিলে আমি নেব। তোর তাতে কি?’
মাঝে মাঝে মোকাররমকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজও করত মোজাফফর। মোকাররম এসব কিছু বাবার কানে দিতেও ভয় পেত। পাছে আবার বড় আকারের কোন ঝামেলা তৈরি হয়। একটা কাঁটা ফুটে থাকত তার মনের কোথাও। মা হয়তো তার নয়, কিন্তু বাপ! বাপ কি শুধুই মোজাফফরের! তার নয়? মোজাফফরের বাজে ব্যবহারে সে কষ্ট পেত, মন খারাপ করে বসে থাকত দোকানে। তার বুকের ভিতরে মনটা গুমরে কেঁদে উঠত। যে মা তাকে ছেড়ে চলে গেছে পরপারে প্রায় এক যুগ আগে, তার কথা মনে পড়ত। মায়ের মুখটা তখন আর মনে করতে পারে না মোকাররম। তবুও ক্ষণে ক্ষণে অস্পষ্ট একটা ছবি ভেসে উঠত তার চোখের সামনে। সে ছবি আরও ঝাপসা হয়ে যেত চোখের জলে।
অনেক অনেকদিন বাদে মায়ের মুখটা স্পষ্ট দেখতে পেয়েছিল মোকাররম একদিন চোখের সামনে। খুব বৃষ্টি হচ্ছিল সেদিন সকাল থেকে। তার মধ্যেও মোকাররম বেরিয়ে গিয়েছিল বাড়ি থেকে গঞ্জে দোকান খুলবে বলে। এই একটা কাজে তার কোন গাফিলতি নেই, ছিলও না কোনদিন। রোদ-বৃষ্টি-ঝড়, মোকাররম দোকান খুলবেই সকালে। সেদিনও খুলেছিল। বেলা এগারোটা-বারোটার দিকে বাবা এলো দোকানে, সঙ্গে মোজাফফর। এসেই বাবা বললো, ‘দোকানের চাবি দে।’
আজ প্রায় বারো-তের বছর দোকানের চাবিটা তার কাছে রয়েছে। দোকানের মালিক সে নয়। কিন্তু এত বছরে এই চাবিটার মালিকানা যেন সে-ই পেয়ে গিয়েছিল। প্রথমে কিছু বুঝে উঠতে পারছিল না মোকাররম। তাই ইতস্তত করছিল। তখনই ধমকে উঠল বাবা, ‘কি রে কথা কানে যায় না? চাবিটা দে।’
মোকাররম দোকানের চাবিটা এগিয়ে দিয়েছিল। বাবা চাবিটা নিয়ে মোজাফফরের হাতে তুলে দিয়ে বলেছিল, ‘লেখাপড়া যখন করবিই নে, তখন দোকানদারি কর। কাল থেকে দোকান খুলবি, ক্যাশে বসবি।’ কথাগুলো বলে বাবা চলে গিয়েছিল চায়ের দোকানের ওদিকটায়।
মাকে হারিয়ে, স্কুলের বন্ধু-বান্ধব হারিয়ে মোকাররমের সঙ্গীবর্জিত জীবনের একমাত্র অবলম্বন ছিল এই দোকানটা। তার এতদিনের তিলতিল পরিশ্রমে গড়া সেই দোকানের উপর তখন থেকে যে তার আর কোন অধিকার রইল না সেটা না বোঝার মতো অতটা বোকা নয় মোকাররম। কিন্তু কেন এমনটি ঘটল তা সে বুঝে উঠতে পারছিল না। ক্যাশের জায়গা ছেড়ে দিয়ে দোকানে রাখা ছোট্ট টুলটার উপর গিয়ে বসে রইল মোকাররম, মাথা নিচু করে। তখনই চোখের সামনে মায়ের মুখটা ভেসে উঠল। সেই মুখ, সেই চোখ, সেই ঠোঁট। মায়ের কপালের অর্ধেকটা ঢেকে রয়েছে নেমে আসা ঘোমটায়। আর তখনই দু’চোখ ছাঁপিয়ে জলের বন্যা নামল। কি আশ্চর্য, সেই অবিরাম জলের ধারার মধ্যেও সে তখন স্পষ্ট টের পাচ্ছিল মায়ের মুখখানি। মাকে বলতে শুনল, ‘তুই চইলা যা, বাপজান। দুইচোখ যেইদিকে যায়, সেইদিকে চইলা যা।’
সেদিনের পর থেকে দোকান দেখতে থাকে মোজাফফর। মোকাররমের ভাগে পড়ে ক্ষেত-খামার দেখাশোনা করা। মাঠ-ঘাটের কাজ আগে কখনো করেনি সে। অভ্যাস না থাকায় কাজটাতে ঠিক মনও বসাতে পারে না। কিন্তু বাবার রক্তচক্ষু, সৎ-মায়ের গঞ্জনার ভয়ে চেষ্টা করে যায় যদি কোন ভাবে এটার সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু সে আর কতক্ষণ! কতদিন! বেলা ঘোরার সময় যখন মাঠের কাজ সেদিনের মতো শেষ করে অশ্বত্থগাছটার নিচে বসে মোকাররম, তখন ভীষণ উদাস উদাস লাগে তার। খিদেয় পেট জ্বলে, তারপরও বাড়ি ফিরতে ইচ্ছে করে না। ঝিরিঝিরি দখিনা বাতাসে অশ্বথের পাতায় কেমন একটা সুর তৈরি হয়। যেন একটা ঘোর। মোকাররম কান পেতে শোনে তা। আর তাকিয়ে থাকে দূর-দিগন্তের দিকে। মাঝে মাঝে গামছা বিছিয়ে শুয়ে পড়ে সে অশ্বত্থ-ছায়ায়। ক্লান্তি আর শ্রান্তিতে দু’চোখের পাতা যখন এক হয়ে আসে তখন বদ্ধ চোখের পাতায় দেখতে পায় সে একটা মুখ। তার মায়ের মুখ। অশ্বথ-পাতার মর্মর ধ্বনি ছাপিয়ে মার গলা শুনতে পায় সে। ‘তোর কষ্ট যে আর সইতে পারি নে রে বাপজান। তুই চইলা যা। মন যেইদিকে চায়, তুই চইলা যা।’
মোকাররম চোখ খুলে তাকায় দূরে, খোলা মাঠের প্রান্তে যেখানে আকাশ নেমে এসেছে মাটির উপরে। ঐ তো, ওই খানে, গাছপালার ফাঁক দিয়ে দেখা যায়, পাকা রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলে। ছুটে চলা গাড়িগুলোর হর্ণ শোনা যায় মাঝে মাঝে এখান থেকে, ক্ষীণ স্বরে। সূর্যের আলো গাড়ির সামনের কাচে পড়ে প্রতিফলিত হয়ে আসে এদিকে, চোখে ঝলক লাগে। কত কত শহরের গাড়ি যে আসে! কত কত শহরে আবার যায় গাড়িগুলো! সে শহরগুলো কেমন? মোকাররম শুনেছে ঐ রাস্তা দিয়ে ‘ঢাকার গাড়ি’ যায়। টিকিট কেটে সে গাড়িতে চড়তে হয়। মাঝখানে কোন থামাথামি নাই। সোজা নামিয়ে দেয় গাড়ি ঢাকা শহরে। কোটি কোটি মানুষ থাকে সে শহরে। আর কোটি কোটি টাকা ওড়ে বাতাসে। যত পারো ধরো। হাফিজদ্দির ছেলে বিল্লাল ঢাকায় থাকে। এই তো বাড়ি এসেছিল সেদিন। চলেও গেছে আবার। পাকা বাড়ি উঠিয়েছে বিল্লাল গ্রামে। তার এখন খালি টাকা আর টাকা। জমি কিনবে বলে মাঠ দেখতে এসেছিল একদিন। তখন কথা হয়েছিল মোকাররমের সাথে। একথা সেকথার ফাঁকে বিল্লালের মোবাইল নম্বর নিয়ে রেখেছিল সে।
এর কিছুদিন বাদে শেষমেষ এক সকালে ‘ঢাকার গাড়ি’তে উঠে বসেছিল মোকাররম। এসে নেমেছিল গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে। বিল্লাল মোকাররমের কোন উপকার করে নি। এই শহরে কেউ কারো না- এটা সর্ব প্রথমে তাকে বুঝিয়ে দিয়েছিল বিল্লালই। ভাগ্যিস আসার সময় বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা পেয়েছিল সে। বাবার কাছে কৃতজ্ঞ মোকাররম। কৃতজ্ঞ থাকবে আজীবন। এ ক’টা টাকা না পেলে ঢাকায় এসে টিকে থাকা তার মুশকিল হতো।
খোদা-তায়ালার ইশারা বোঝা বড় মুশকিল। অবাক হয়ে ভাবে মোকাররম। কোথায় সে ছিল। আর কোথায়-ই বা এলো। আর কিভাবেই বা দেখা হয়ে গেল নূরজাহানের সাথে। ঢাকায় না এলে নূরজাহানের সাথে তার দেখা হতো কিভাবে? মোকাররম মাথা নাড়ে। সব খোদা-তায়ালার ইচ্ছা। সব তার ইশারা। তার হুকুম ছাড়া গাছের একটা পাতাও নড়ে না।
ঢাকায় এসে প্রথমে মিরপুর পল্লবীর ওখানে একটা মেসে জায়গা নিয়েছিল মোকাররম। ঐ মেসের সবাই গার্মেন্টে কাজ করে। প্রথমে ঠিক করেছিল সেও একটা গার্মেন্টে ঢুকে যাবে। কিন্তু ওই যে! খোদা-তায়ালার ইশারা। একটা গার্মেন্টের গেটে দাঁড়িয়েছিল একদিন সকালে, অপেক্ষা করছিল কখন ভিতর থেকে ডাক পড়বে ইন্টারভিউ এর জন্য। এমন সময় মোকাররম দেখল একজন লোক দু’টো শোকেজ নিয়ে এসে বসল কারখানার গেটের অদূরে। এ শহরের সব কিছুই তখন মোকাররমের কাছে নতুন, সব কিছুতেই তখন তার বিপুল আগ্রহ। হাঁটিহাঁটি পায়ে সে এগিয়ে গিয়েছিল লোকটির কাছে। কাছে গিয়ে টের পেল লোকটির কাছে বিভিন্ন প্রসাধনসামগ্রী। মেয়েদের গলার হার, কানের দুল, স্নো, পাউডার, আলতা, টিপ এইসব। কথায় কথায় তার কাছ থেকে জানতে পারল সে অনেক কিছু। কোথা থেকে সে এগুলো কিনে আনে, কেমন বেচা-বিক্রি হয়, লাভ-টাভ কেমন, সবকিছু। এই ব্যবসা মোকাররমের রক্তেই ছিল। লোকটির সাথে কথা বলতে বলতেই সে ধরে ফেলেছিল এর ভিতরকার গুমোর। তৎক্ষণাৎ সে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল, গার্মেন্টে ঢুকবে না, সে এই ব্যবসা করবে। কসমেটিক্স এর ব্যবসা। তার বাপ-দাদার ব্যবসা। নিজের দোকান নেই তো কি হয়েছে, দরকার হলে সে এগুলো ফেরি করে বেঁচবে রাস্তায় রাস্তায়। এই লোকটির মতো।
ভাগ্যিস সে এই ব্যবসায় নেমেছিল! এই ব্যবসা করতে গিয়েই তো নূরজাহানের সংগে তার জানাশোনা হয়েছিল। না হলে আজ কোথায় থাকত সে, আর কোথায়ই বা থাকত নূরজাহান!
মোবাইল টিপতে টিপতে এসব কথা ভাবছিল মোকাররম। অপেক্ষার সময় যেন শেষ হতে চায় না। এখনও পনের মিনিট পরে লাঞ্চ আওয়ার শুরু হবে। দলবেঁধে বের হতে শুরু করবে শ্রমিকেরা। প্রথমে বের হবে ছেলেরা। তারপর বের হয়ে আসবে মেয়েদের দল। এক সময় আসবে নূরজাহান। মন ভালো থাকলে এসে দাঁড়াবে তার শোকেজের সামনে। মন খুব ভালো থাকলে বলবে, ‘নতুন কি আনছেন? দ্যাখান। আপনার কাছে তো সব নকল জিনিস।’ তারপর একটুখানি হাসবে। কিন্তু কখন? কখন আসবে নূরজাহান? এরই এক ফাঁকে সন্দেহের সেই ভ্রমরটা ভোঁ ভোঁ করে উড়ে চলে গেল কানের পাশ দিয়ে। আজ নূরজাহান কাজে এসেছে তো? দেখা হবে তো আজ?
নূরজাহানকে সে হারিয়েই ফেলেছিল। যাকে পাই-ই নি সে কখনও আপনার করে, তাকে আবার হারাল কিভাবে সে! মোকাররম হাসে। সেও এক লম্বা কাহিনী।
জিরানীবাজারের ঐখানে একটা কারখানার গেটে প্রথম বসত মোকাররম। সেখানেই নূরজাহানের সাথে তার পরিচয়। প্রথম দিনের কথা এখনও মনে আছে মোকাররমের। চার-পাঁচটা মেয়ের সাথে এসেছিল নূরজাহান, এসে দাঁড়িয়েছিল মোকাররমের দোকানের সামনে। অন্য মেয়েদের বকবকানিতে, খল-খল হাসিতে কান ঝালাপালা, অথচ নূরজাহান চুপটি করে দাঁড়িয়ে ছিল তার প্রিয় বান্ধবীটির কাঁধে থুতনি রেখে, চোখ নিচের দিকে নামানো, দাঁত দিয়ে অবিরাম কেটে চলেছে ওড়নার কোণা। যেন আশেপাশের কোন কিছুর সাথে তার কোন যোগাযোগ নেই। যেন দেখছে না কিছুই। যেন রাজ্য হারিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বিষণ্ন এক রাজকন্যা! বেশ কিছুক্ষণ বাদে একজোড়া কানের দুলের দিকে আঙুল দিয়ে ইশারা করে নূরজাহান বলেছিল, ‘কত?’
‘আগে হাতে নিয়া দ্যাখেন না। দামের কতা তো পরে।’ বলেছিল মোকাররম।
নূরজাহান দাম না শুনে কিছুতেই হাত দেবে না তাতে। মোকাররম দাম বলার পরে তার মুখটা মলিন হয়ে গিয়েছিল। বলেছিল, ‘থাক আইজকা। বেতন পাইলে কিনুম।’
কি যে কষ্ট হয়েছিল মোকাররমের সেদিন নূরজাহানের জন্য! মাত্র বিশ টাকা দাম দুলজোড়ার। অথচ তাই শুনেই তার কালো চোখদু’টোয় ব্যথা ফুটল। দুলজোড়া কেনার হয়তো সাধ ছিল তার, কিন্তু সাধ্য ছিল না। খুব ইচ্ছে হয়েছিল মোকাররমের দুলজোড়া এমনি এমনি দিয়ে দেয় তাকে। কিন্তু সে কথা তাকে কিভাবে বলতে পারে সে!
আর একদিনের কথা মনে পড়ে। সেদিন মনে হয় নূরজাহানরা বেতন পেয়েছিল। তাই মন খুলে দেখছিল শোকেজের সামনে বসে এটা ওটা। এক ডজন কাচের চুড়ি পছন্দ করল নূরজাহান। সিঁদুরে মেঘের মতো রং চুড়িগুলোর। হাতে পরে দেখতে চাইল কেমন মানায়, কিন্তু কিছুতেই চুড়ি তার হাতে উঠছে না। বাধ্য হয়ে কাঁপা কাঁপা হাতখানা এগিয়ে দিয়েছিল সে মোকাররমের দিকে, লজ্জায় চোখ মাটিতে নামানো তার। মোকাররম সেদিন নূরজাহানের হাতখানি ধরে পরম আদরে চুড়ি উঠিয়ে দিয়েছিল, একটার পর একটা। এত নরম হাত হয় মানুষের! খুব ইচ্ছে হয়েছিল তার, সারা জীবনের মতো সে ঐ নরম হাতখানি ধরে রাখে। কিন্তু তা কি হবার!
এর মধ্যেই দেখা গেল নূরজাহান আর কাজে আসে না। দু’দিন, তিনদিন, চার দিন। এক সপ্তাহ। নূরজাহানের আর দেখা নেই। নেই তো নেই, যেন একেবারে হাওয়া! তার সাথে আর যারা আসত তারা ঠিকই আসে, মোকাররমের দোকানের সামনে ঘোরাঘুরি করে, কেবল নূরজাহানেরই দেখা নেই। লাজ-শরমের মাথা খেয়ে তাদেরকে একদিন জিজ্ঞেস করেছিল মোকাররম, ‘ফর্সা মেয়েটা, কি যেন নাম, নূরজাহান, তারে আর দেখি না যে!’
একজন বললো, ‘নূরজাহানে তো চাকরি ছাইড়া দিছে।’
‘কই গেলো?’ উতলা হয়ে জানতে চাইল মোকাররম।
‘নতুন চাকরি নিছে। গাজিপুরে। ভোগড়ার ওই দিকে।’ বললো আর একজন।
‘কোন ফ্যাক্টরি? ফ্যাক্টরির নাম কি?’ মোকাররমের যেন তর সইছিল না।
কারখানার নাম বললো একটা মেয়ে। মোকাররম নামটা মনে করে রাখল। খুব অভিমান হচ্ছিল নূরজাহানের উপর। মেয়েরা নাকি সব বুঝতে পারে। আর এইটুকু সে বুঝল না! ‘তারে সে কতটুকুন ভালা পায়, এইডা বুজল না! তাইলে ক্যান সে কিছুই না বইলা গ্যালো গিয়া?’
অভিমান বুকে নিয়েই মোকাররম ঠিকানা বদলেছিল সেবার। খুঁজে খুঁজে বের করেছিল নূরজাহানের নতুন ফ্যাক্টরি। নূরজাহানকেও। মোকাররমকে ঠিকই চিনেছিল সে। তারপর আবার আগের মতোই। এখানে এই নতুন ফ্যাক্টরিতে নূরজাহানের হয়ে গেছে প্রায় এক বছর। মোকাররমেরও এখানে তাই। নূরজাহানের সাথে চোখাচোখি হয় প্রতিদিনই। দুপুরে খেতে যাওয়ার সময়, খেয়ে ফেরার সময়। এমনভাবে তাকায় সে মোকাররমের দিকে যেন জনম-জনমের চেনা-জানা তাদের। মিষ্টি করে হেসে যখন সে তাকায় তার দিকে, মোকাররমের হাত থেমে যায়, নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। টুকটাক কথাবার্তা হয় নূরজাহানের সাথে মাঝে মাঝে। মন ভালো থাকলে হড়বড় করে অনেক কথা বলে ফেলে সে। এখানে তার চাকরি ভালো। সুপারভাইজারের পোস্ট। তার এলাকার একটা ছেলে এখানে তার চাকরি ঠিক করে দিয়েছে। সে ছেলেটা পাশের একটা সোয়েটার কারখানায় চাকরি করে। নূরজাহান যখন কথা বলে তখন অপলক তাকিয়ে থাকে মোকাররম। শুধু শুনেই যায়। সে ভুলে যায় তারও কিছু বলার আছে। নূরজাহানকে।
নূরজাহান মেয়েটা যেন কেমন! কতবার কত কিছু মোকাররম বিনে পয়সায় দেওয়ার জন্য সেধেছে তাকে, কিন্তু কিছুই নেয় নি কোনদিন। কি হয় নিলে! কেন বোঝে না নূরজাহান, না নিলেই বরং সে কষ্ট পায়। বুকের মাঝখানে কাঠপোকায় কাটে। কেন সে বোঝে না! কত শখ করে একবার একটা আলতা পছন্দ করে এনেছিল সে তাকে উপহার দেওয়ার জন্য। একদম এক নম্বর জিনিস। তার ফর্সা পায়ের পাতা দু’টো টকটকে লাল হয়ে উঠবে তার দেওয়া আলতার ছোঁয়ায়, হরিণের মতো হালকা পা ফেলে সে হেঁটে যাবে সামনে দিয়ে, ধূলোরা সরে গিয়ে তার পথ করে দেবে, মোকাররম দু’চোখ ভরে দেখবে তা। কিন্তু তা আর হলো কই! মুখের উপর নূরজাহান বলে দিলো, ‘অখন আলতা দিয়া কি করুম। আমার বিয়া ঠিক হউক, তখন একটা দিয়েন।’ বলেই খিলখিল করে হেসে উঠেছিল নূরজাহান।
মোকাররমের বুকের ভিতরটা কেঁপে উঠেছিল সেদিন। এখনও কাঁপে, যখন মনে পড়ে। সত্যিই কি নূরজাহানের বিয়ে হয়ে যাবে কারো সাথে? তার না বলা কথাগুলো কি কোনদিন বলা হবে না? মোকাররমের বুকের ভিতরে কষ্টের একটা দলা মোচড় দিয়ে ওঠে। পাশে দাঁড়ানো সুন্দর চেহারার ছেলেটার কাছ থেকে আগুন নিয়ে সিগারেট ধরায়। আয়েশ করে টানে। মনে মনে ভাবে, সিটিচেনের দামী হারটা আজ নূরজাহানকে দেবে সে। সে হয়তো নিতে চাইবে না। আর নিলেও টাকা দিতে চাইবে। মোকাররম কিছুতেই নেবে না টাকা। দরকার হলে মিনতি করে বলবে নিতে। সুযোগ খুঁজবে মনের দু’টো কথা বলার। সম্ভব হলে নূরজাহানের মোবাইল নম্বরটা নিয়ে রাখবে। নূরজাহানের কি মোবাইল আছে? কোনদিন তো দেখেনি সে তাকে মোবাইল ব্যবহার করতে। হয়তো আছে। কারখানায় নিয়ে আসে না। মোকাররম নিজেকে বলে। নিজে নিজেই মাথা নাড়ে। কারখানার গেটের দিকে তাকিয়ে দেখতে পায় ছেলেদের দল বের হতে শুরু করেছে। মোকাররম সিগারেটে কষে দু’টো টান দিয়ে দূরে ছূড়ে ফেলে দেয়। তারপর শোকেজের ডালা খুলে বসে।
ঐ তো নূরজাহান আসছে। হালকা গোলাপী রঙের একটা ওড়না মাথার উপরে দিয়ে হেঁটে আসছে। হাজার মুখের ভিড়েও তার মুখখানা আলাদা। সে মুখখানা ঝলমল করছে হাসিতে। এগিয়ে আসছে সে মোকাররমের দিকে। ক্ষণিকের জন্য চারচোখ এক হলো। তারপর কি হলো, হঠাৎ নূরজাহানের চোখের দৃষ্টি গতিপথ বদলাল। ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল মোকাররম। এতক্ষণ তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সুন্দর চেহারার সেই ছেলেটা হাসিহাসি মুখ করে এগিয়ে গেল নূরজাহানের দিকে। নূরজাহানের কাজলটানা চোখদু’টো এখন সেই ছেলেটির দিকে। মোকাররমের খোলা শোকেজের সামনে দাঁড়াল তারা দু’জন। নূরজাহান ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করল, ‘কখন আইছেন?’ মোকাররম স্পষ্ট শুনতে পেল।
ছেলেটি মিথ্যে বললো, ‘এই তো অক্ষণই।’
নূরজাহান হাসল। এতক্ষণে বোধ হয় সে টের পেল মোকাররম তার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল নূরজাহান তাই মোকাররমের দিকে। তার দৃষ্টি অনুসরণ করে ছেলেটিও তাকাল মোকাররমের দিকে। তারপর নূরজাহানকে জিজ্ঞেস করল, ‘কি, কিছু কিনবা?’
‘না।’ তাড়াতাড়ি বললো নূরজাহান।
‘আসো, তোমারে কিছু কিইনা দিই।’ জোর করল ছেলেটি। মোকাররমের শোকেজের দিকে তাকাল, খানিকক্ষণ এটা ওটা দেখে সিটিচেনের সেই হারটা, যেটা মোকাররম ঠিক করে রেখেছিল নূরজাহানকে আজ উপহার দেবে বলে, সেটির দিকে আঙুল তুলে বললো, ‘ঐ হারডা দেখি। দাম কত ঐডার?’
মোকাররম চুপ করে রইল। সে কিছুতেই বেচবে না এই হারটা। এই হারটা সে উপহার দেবে নূরজাহানকে। কিন্তু ব্যস্ত হয়ে উঠল ছেলেটি, ‘দ্যাখান না ভাই হারডা। কত দাম?’ তারপর নূরজাহানের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ফাইন মানাবে তোমার গলায়।’
‘একশ বিশ।’ শেষমেষ বলতে পারল মোকাররম, কষ্ট ঢোক গিলে।
ছেলেটি মানিব্যাগ বের করল, পাঁচশ টাকার একটা কড়কড়ে নোট রাখল শোকেজের উপর।
‘আমার কাছে তো ভাংতি নাই ভাইজান।’ মিথ্যে বললো মোকাররম, তার হাতের তালু ঘামছে।
পাশ থেকে নূরজাহান বললো, ‘যদি হারের সাথে একটা আলতা নিই, তাও ভাংতি হইব না?’
শোকেজের ভিতর থেকে একটা আলতার শিশি বের করল মোকাররম। নিঃশব্দে বাড়িয়ে দিল তা নূরজাহানের দিকে।
‘কত হইল মোট?’ ছেলেটি জিজ্ঞেস করল।
‘একশ পঞ্চাশ।’ বললো মোকাররম। পাঁচশ টাকার নোটটা ছেলেটিকে ফিরিয়ে দিতে দিতে বললো, ‘আমি তো রোজই বসি এইখানে। ট্যাকা কাইল দিলেও চলব।’
ছেলেটি রাজি হচ্ছিল না। নূরজাহানই তাকে রাজি করাল।
‘বড় মনে কইরা আলতা নিলেন যে আইজকা?’ নূরজাহানকে জিজ্ঞেস করল মোকাররম, কি এক অজানা আশঙ্কার ডঙ্কা বাজছিল বুকে।
লাজুক হাসি হাসল নূরজাহান, ‘আমার বিয়া ঠিক হইছে।’
‘কবে? কার লগে?’ প্রশ্নদু’টো মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল মোকাররমের মুখ দিয়ে।
পাশে দাঁড়ানো ছেলেটির দিকে তাকাল নূরজাহান। তার ফর্সা মুখ টকটকে লাল হলো, লজ্জায়। সেটা আড়াল করতেই লম্বা পা ফেলে হাঁটতে শুরু করল নূরজাহান। সংগে ছেলেটাও। একটু এগিয়ে গিয়ে ছেলেটা নূরজাহানের হাত ধরল। মোকাররম তাকিয়ে থাকল তাদের দিকে। দেখল তাদের চলে যাওয়া। দেখল তাদের দুজনের ক্রমশ মিশে যাওয়া, মানুষের স্রোতে। মোকাররম ঠায় দাঁড়িয়ে রইল। সে যেন এক বিষাদবৃক্ষ।

পরিশিষ্ট: সেদিনের পর মোকাররমকে আর কখনো দেখা যায় নি সেই কারখানার গেটে। কোনদিন না। বহুদিন একশ’ পঞ্চাশটা টাকা তার ওড়নার কোণায় বেঁধে কারখানার গেটে অপেক্ষা করেছে নূরজাহান, ঋণ শোধ করবে বলে। কিন্তু সে সুযোগ হয় নি তার। আজও।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
তাপস এস তপু ভোট রেখে গেলাম। :) আমার লেখায় আমন্ত্রণ রইল।
ভোটিং লাইন বন্ধ ছিল। তারপরও ভোট দিয়েছেন! ধন্যবাদ। শুভকামনা।
ruma hamid onek sundor !
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। শুভকামনা জানবেন।
শেখ শরফুদ্দীন মীম ভালো লাগলো। অনেক শুভকামনা রইল। সময় করে আমার কবিতাটি( আলোর সন্ধানে) পড়বেন।
অনেক ধন্যবাদ। আপনার কবিতা নিশ্চয়ই পড়ব।
Salma Siddika দারুন লিখেছেন। অনেক ভালো লাগলো।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
সকাল রয় সমালোচনা করলাম না। শুধু পড়ে দেখলাম পাঠকের দৃষ্টি থেকে গল্পটা বেশ ভালো।
যা পেয়েছি তাই অনেক। তবে ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দিলে আরও ভালো লাগত দাদা। যাইহোক, শুভকামনা আপনার জন্য, সব সময়।
মনজুরুল ইসলাম There is no way but accepting and expressing the real truth in our life.Because there is no place for emotion in terms of practical phenomenon.The picture you have drawn here is the really real picture of reality.If mokarram was state forward then he may got the opportunity to love with nurjahan.Another fact is also represented here that is the natural selfishness or disability to realize love from women.Anyway i have got pleasure.Good luck.
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই, আপনার সুচিন্তিত এবং বিশ্লেষণমূলক মন্তব্যের জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা, নিরন্তর। ভালো থাকবেন।
সৃজন শারফিনুল অসাধারণ গল্প ভালোলাগা আর সাথে শুভ কামনা রইলো।।
অনেক ধন্যবাদ ভাই। শুভকামনা আপনার জন্য। সতত।
টোকাই খুব চমৎকার গল্প ভাই । শুভেচ্ছা রইলো ।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার জন্যও শুভেচ্ছা। সব সময়।
রুহুল আমীন রাজু anek valo laglo golpti.......(amar patai 'kalo chad' golpoti porar amontron roilo )
ধন্যবাদ। নিশ্চয়ই যাব আপনার পাতায়।
রবিউল ই রুবেন খুব ভালো লাগল। আমার ‘তাঁরার মালা গাঁথি’ কবিতাটা পড়ার আমন্ত্রণ রইল।
ধন্যবাদ। নিশ্চয়ই যাব আপনার পাতায়।

০৫ এপ্রিল - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪