লাশ

ভৌতিক (নভেম্বর ২০১৪)

হাসনা হেনা
  • ১৫
মিতু বিকেলে বাগানে ধীর পায়ে হাঁটছে আর এদিক ওদিক তাকিয়ে নানা রংয়ের ফুল ও নানা ধরণের গাছগাছালী দেখে পুলকিত চিত্তে ওদের প্রশংসা করছে। এবার অনেক দিন পর গ্রামে খালার বাড়ীতে সে বেড়াতে এসেছে। সুযোগ পেলেই ব্ড়োতে আসে এ সবুজ শ্যামল প্রশান্ত গ্রামে। এ একটি মাত্র খালা গ্রামে বাস করে আর সব খালা মামারা শহরে তাই মিতু এ খালাকে ধন্যবাদ জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলে, খালা তুমি একটা জিনিয়াস, কত সুন্দর করে এ বাড়ীটি বানিয়েছ আর কত সুন্দর করে বাগানটি সাজিয়েছ, এখানে এলে প্রশান্তি আর আবেগে আমার প্রাণ ভরে উঠে। এসব কথা শোনে সুশিক্ষিত খালা তৃপ্তির হাসি হেসে বলে, আমার এ আয়োজন ¯^ার্থক হয়েছে সবার প্রশংসায় এবং অনুপ্রাণিত হই কি করে আরও সুন্দর করা যায়। মিতু কখনও গোলাপ ছূঁয়ে কখনও ডালিয়া ছুঁয়ে গান গেয়ে উঠে আর মনে মনে ভাবে সাথে যদি এখন আবীর থাকত তবে কতইনা ভাল হত। কতদিন দেখা হয়না তার সাথে। চট্রগ্রামে গিয়েছে ট্রেনিং-এ ফিরতে আরও পাঁচ ছয় দিন লাগবে। কয়দিন না দেখলেই মন খারাপ লাগে,এর নাম বুঝি ভালবাসা? এরি মধ্যে মিতু ডাক শোনে চমকে উঠল। এদিক সেদিক তাকিয়ে কাউকে দেখতে পেলনা। মনে মনে ভাবল হয়তো মনের ভূল। মিতু আবার সুশোভিত বাগানের সৌন্দর্য্যে মনোনিবেশ করল তারপর ধীরে ধীরে বাগানের দক্ষিণ পাশে এসে চেয়ারে বসল। বসন্তের দখিনা প্রশান্ত হাওয়া উপ্ছে পড়ছে তার এলানো শরীরে যেন ভুলিয়ে দিয়েছে পার্থিব সকল আবর্জনা আর কঠিন বাস্তবতাকে। মিতু সত্য ভালবাসার ¯^র্গীয় অনুভবে হারিয়ে গেল মুহূর্তে আর সে অনুভবে আবীরকে অনুভব করল গভীরভাবে। হঠাৎ আবার মিতু ডাক শোনে নড়েচড়ে বসল। পেছন ফিয়ে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে বলল, আবীর তুমি? আবীর স্মিত হেসে বলল, হে আমি।
-আমারতো বিশ্বাস হচ্ছেনা, কি করে চিনলে এ বাড়ী?
-ইচ্ছে থাকলে সাত সমুদ্র পাড়ি দেয়া যায়। তোমার কথা মনে পড়ল, সব ফেলে চলে এলাম। ঠিক করিনি?
-আবীর- তুমি আমাকে এত ভালবাস?
-কেন, এতদিনেও বুঝনি?
-ভালবাস বুঝেছি কিন্তু এত ভালবাস তা বুঝিনি। তোমার মোবাইলের কি হয়েছে, কতবার কল করলাম, বন্ধ বলছে।
-হারিয়ে গেছে। তোমাদেরকে ছেড়ে এতদিন কি কোথাও থেকেছি। চল এ সুন্দর বাগানটা একটু ঘুরে দেখি।
-নাহ, এখন বাসায় চল, হাত মুখ ধূয়ে খাবে। কেমন উস্কু খুস্ক লাগছে তোমাকে, এ কি অবস্থা তোমার? তাড়াতাড়ি চল।
-নাহ্ মিতু,আমাকে এখনই যেতে হবে, মা-বাবাকে কতদিন দেখিনা। মনটা কেমন করছে।
-সেকি! খালার সাথে দেখা না করে চলে যাবে?
-নাহ্, আজ না। কয়দিন পর জামাই হয়ে তারপর দেখা করব। আচ্ছা, আমাদের বিয়েটা যেন কবে? মিতু ¯^লজ্জ স্মিত হেসে বলল, আগামী
৩১ ডিসেম্বর। আবীর ম্লান দৃষ্টিতে নিরবে অপলক তাকিয়ে রইল মিতুর দিকে। মিতু হাত ধরে বলল, চল, ভেতরে চল। কি দেখছ
এমন করে?
-আচ্ছা মিতু, মনে কর আমি হারিয়ে গেছি,তুমি তখন কি করবে?
-ওসব বলবেনাতো, আমি মরে যাব। আবীর উচ্চ ¯^রে হা-হা করে হাসতে হাসতে বলল, দেখলাম তুমি কেমন কর। চল বাগানে ঘুরি
তোমার সাথে। দুজনে পুরো বাগান ঘুরে বেড়াল। ফুল ছিড়ে একে অপরকে পাপড়ি ছিটিয়ে দিল। কতনা কথা আর উচ্ছ¡াস সুশোভিত
বাগান আরও সুন্দর আরও আনন্দময় হয়ে উঠল। আবীর বলল, আর দেরি করা যায়না, আমাকে এখনই যেতে হবে।
- নো, এভাবে চলে গেলে খালামণি আমাকে বকবে। আস।
- আহ্, তুমি বোঝার চেষ্টা কর। তুমি ফিরবে কবে ঢাকায়?
- দুদিন পর, বোঝেছি, খালামণিকে ডাকতে হবে। মিতু চলে গেল ভেতরের দিকে। মিনিট ক্ষাণিক পর মিতু খালাকে নিয়ে এসে দেখে আবীর
নেই। মিতু বিস্মিত হয়ে বলল, ওমা কাউকে না বলেই চলে গেল! খালা বলল, কই আবীর? মিতু মলিন মুখে বলল, মনে হয় চলে গেছে।
-সেকি কথা, আমার সঙ্গে দেখা না করেই চলে গেল ! মিতু এদিক সেদিক খোঁজে দেখল কিন্তু আবীরকে পাওয়া গেল না। খালা বলল, সত্যি সত্যি
না বলে চলে গেল? এরি মধ্যে খালাতো ভাই অরুণ এসে বলল, মা তুমি এখানে, আমি খোঁজে খোঁজে হয়রাণ। চল, ভীষণ ক্ষিধে
পেয়েছে। খালা হেসে বলল, সেকি, ক্ষিধে পেয়েছে খাবে, আমাকে খুঁজতে হবে কেন, সাফিয়াকে বললেইত্ োহত।
-নাহ্ তুমি আস। মিতু বলল, খালা, এ তোমার বুড়ো খোকা। কয়দিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে আর এখনও এমন ভাব দেখায় যেন ২ বছর
আগে জন্ম নিয়েছে।
-দেখ আপু, মায়ের কাছে সন্তান কখনও বড় হয়না।
-হুম্, কয়দিন পর যখন মেয়ে মানুষের পাল্লায় পড়বে তখন দেখা যাবে।
-আমি কারু পাল্লায় পড়ব না।
-দেখা যাবে। অরুণ চেহারাটা মলিন করে বলল, মা জান, বড় বাস্তার পারে একটা ছেলের লাশ পড়ে ছিল। কারা যেন ছুরি মেরে খুন
করেছে। মতিু আতকে উঠে বলল, লাশ! কখন, কোথায়? আবীরতো একটু আগে গেল। অরুণ বলল, আরে এখন না সকালের দিকে। খালা
মিতুর দিকে তাকিয়ে বলল, আবীরকে তুই খুব ভালবাসিস, তাই না? মিতু স্মিত হাসল কিছুই বলল না।

সিরাজ সাহেব আর মিসেস সিরাজ ছেলের বিয়ের খরচপাতি নিয়ে আলাপ করছিল। এরি মধ্যে কাজের মেয়ে মায়া এসে হন্তদন্ত হয়ে বলল, আম্মা, ভাইজান আইছে। মা-বাবা দুজনই উৎফুল্ল হয়ে বলল, বলিস কি, কোথায়?
- ভাইজানের ঘরে। মা যেতে যেতে বলল, সেকি! আমাদের কাছে না এসে নিজের ঘরে কেন? মা-বাবা ছেলের ঘরে এসে ছেলের পাশে বসল, দুজনেরই একই প্রশ্ন, ফোন দিয়ে আসলি না কেন? এত রাত করে ফিরলি কেন? আবীরের উত্তর হল, তোমাদেরকে অবাক করার জন্য। আর এত রাত কোথায় সারে বারটা বাজে মাত্র। মা ছেলের গায়ে হাত বুলিয়ে বলল, কেমন শুকিয়ে গেছিস, কেমন হয়ে গেছিস তুই, নাওয়া খাওয়া ঠিক মত করিসনি বুঝি? আবীর হেসে বলল, মা তুমি সব সময়ই এসব বল। বাবা বলল, ট্রেনিং কবে শেষ হবে?
- আরও ৩ দিন, তোমাদেরকে দেখতে মন কাঁদছিল, তাই থাকতে পারলাম না। দুদিন ছুটি পেয়েছি তাই চলে এসেছি। আবীর বিছানায় গা এলিয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়ল। মা বলল, আমাদেরও খুব খারাপ লাগছিল। খুব ভাল করেছিস বাবা। বাবা বলল, ওর জন্য খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা কর, পরে কথা হবে। ওকে দেখে মনে হচ্ছে খুব ক্লান্ত। মা বলল, যা, হাত মুখ ধুয়ে আয়। আবীরকে চুপচাপ দেখে বাবা-মা ভাবল, কিছু হয়েছে নাকি। বাসায় এসে এমন করে শুয়ে পড়েনাতো কখনও। মা বলল, কিরে বাবা, শরীর ভালনা? বাবা বলল, পরে জানা যাবে। মা খাবার রেডি করে আবীরকে খেতে দিয়ে পাশে বসে বলল, এত চুপচাপ কেন, কিছু হয়েছে নাকি, শরীর খারাপ? আবীর থালায় ভাত নাড়াচাড়া করতে করতে বলল, ভাল লাগছেনা। মা বলল, নে খা, খেয়ে শুয়ে থাক।

সবার ঘুমাতে অনেক রাত হয়ে গেল। ক্ষয়িষ্ণু চাঁদের আলো আঁধারীতে নিরব পৃথিবী ঝিমুচ্ছিল আর ধীর বাতাসে দুলছে উচ্ছ¡ল তরুলতা। আবীরের মা-বাবার শিয়রের পাশের জানালা ছূঁয়ে একটি কৃষ্ণচূড়ার ডাল নরম শব্দ করছে আলসে। আবীরের মায়ের ঘুম খুব হাল্কা সামান্য শব্দেই তার ঘুম ভাঙ্গে। কৃষ্ণচূড়ার ডালটার সাথে জানালার স্পর্সে তার আজও ঘুম ভাঙ্গল। মনে মনে ভাবল, কালই এ ডালটা কেটে দেবে। রাতের নিস্তব্দতায় এ নরম শব্দটাও কেমন বিরক্তিকর লাগছিল তার কাছে। তারপর এ পাশ ও পাশ করে ঘুমিয়ে পড়ল। হঠাৎ একটা করুণ কান্নার শব্দে তার ঘুম ভেঙ্গে গেল। মা কান পেতে বোঝার চেষ্টা করল এ কান্নার শব্দ কোথা থেকে আসছে। মনে মনে ভাবে এত রাতে কে কাঁদে, অনেক দূর মনে হয়না। এ বাড়ী থেকেই আসছে। হয়তো পাশের বাড়ীর নীলার বাবা কাঁদছে ছেলের শোকে। কয়দিন আগে জোয়ান ছেলেটা তার বিদেশে মারা গেছে। এই ভেবে মা চুপ করে শূয়ে রইল কিন্তু কেন যেন কান্নার সে সুর তাকে অস্থির করে তুলল, শুয়ে থাকতে মন চাইল না; উঠে বসে কান পেতে রইল। ধীরে ধীরে কান্নার শব্দটা আরো স্পষ্ট হয়ে উঠল যেন খুব কাছে মনে হচ্ছে। ছেলে মানুষের মত কান্না। মনে মনে ভাবল, কে এমন করে কাঁদছে, আবীর নাতো? আসার পর ওকে কেমন যেন মলিন দেখাচ্ছিল। মা উঠে যেয়ে আবীরের ঘরের দরজা টোকা দিয়ে নাম ধরে ডাকল। কয়েক বার টোকা দেয়ার পর আবীর দরজা খোলে মায়ের দিকে তাকিয়ে রইল। মা বলল, কার যেন কান্না শোনা যাচ্ছে, তুই কি শুনেছিস? আবীর ঘুম ঘুম চোখে বলল, মা কিছুনা, তুমি ঘুমাও যেয়ে। মা বলল, ঘুময়েছিলি? ঠিক আছে শুয়ে পড়।

মা নিজের ঘরে ফিরে আর সে কান্না শুনতে পেল না। বাবা পাশে অঘোরে ঘুমুচ্ছে। তার ভীষণ গভীর ঘুম; ধাক্কাধাক্কি না করলে তার ঘুম ভাঙ্গে না। এ নিয়ে তাকে বহু কথা শুনতে হয়, শুনলেইবা কি, ঘুমতো কারু কথার ধার ধারেনা। আবীরের মা দরজা বন্ধ করে আবার ঘুমাবার চেষ্টা করল, একসময় ঘুমিয়েও পড়ল। হঠাৎ আবার সে কান্নার সুরে তার ঘুম ভেঙ্গে গেল এবং মনে হল এ ঘরেই কে যেন কাঁদছে। আবীরের মা চোখ খোলে সামনে তাকিয়েই চিৎকার করে বলল, কে? কে? বাতি নেভানো অন্ধকার ঘরকে রাস্তার বাতির আলো ক্ষাণিক উজ্জ্বল করে তুলেছে তাই মা স্পষ্টই দেখতে পেল কালো ছায়ার মত কে যেন তার পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে কাঁদছে। মা ভয়ে আবীরের বাবাকে ধাক্কা দিয়ে জাগাতে চেষ্টা করল কিন্তু বেচারা হু-হা করে আবার ঘমিয়ে পড়ল। ততক্ষণে সে কালো ছায়া মিলিয়ে গেল। মা বাতি জ্বালিয়ে দেখে কেউ নেই, কিছু নেই। মা জোর করে বাবাকে জাগিয়ে বলল, কি ঘুম ঘুমাও তুমি, কে যেন ঘরে ঢুকেছিল, আমার পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে কাঁদছিল। বাবা হেসে বলল, দরজা বন্ধ কে ঢুকবে, ঘুমের ঘোরে ভুল দেখেছ, এবার ঘুমাও, আর আমাকে শান্তিতে ঘুমাতে দাও। কি শান্তির ঘুমটাইনা এসেছিল। মা রেগে বলল, তুমি আমার কোন কথায়ই গুরুত্ব দিতে চাও না, আমি স্পষ্ট দেখেছি, আমি তাকিয়ে ছিলাম এবং কান্না শুনেছি। আর সে কান্নার শব্দেই আমার ঘুম ভেঙ্গেছে। ঘন্টা ক্ষাণিক আগেও আমি এই একই কান্না শুনেছি, ভেবেছিলাম নীলার বাবা হয়তো ছেলের জন্য কাঁদছে। বাবা অবাক হয়ে বলল,তাই নাকি? চোর হলেতো কান্নাকাটি করার কথা না, তাছাড়া ঢুকবেইবা কেমন করে আর এত তাড়াতাড়ি সে পালাবেইবা কেমন করে। চিন্তার বিষয়। ভূত টূত নাতো? দূর! ওসব আছে নাকি। ঠিক আছে, দোয়া দরুদ পড়ে ঘুমিয়ে পড়। মা বলল, আর ঘুম আসবে না আমার, ভীষণ ভয় পেয়েছি। বাবা বলল, বাতি জ্বালিয়ে ঘমাও, ভয় পাবেনা। আমি শুয়ে পড়লাম। বাবা ঘুমাবার চেষ্টা করল আর মা দোয়া পড়ে শুয়ে পড়ল। কিছুক্ষণ পর আবার সে কান্না ভেসে আসল। মা আবীরের বাবাকে ধ্ক্কাা দিয়ে বলল, এই যে শুনছ, কে যেন কাঁদছে। আবীরের বাবা উঠে বসে কান পেতে সে কান্না শুনতে পেল। এবার কান্নাটা বেশ চাঁপা ¯^রে। বাবা বলল, তাইতো, মনে হয় পেছনের বারান্দা থেকে আসছে, চলতো দেখি। মা ভয়ে ভয়ে বলল, নাহ্ নাহ্ আমার ভয় করছে। বাবা উঠতে উঠতে বলল, আরে ভুত বলে কিছু আছে নাকি, দেখি কি ব্যাপার।
-তুমি যাও। বাবা দরজা খোলে বের হয়ে যেয়ে বারান্দার বাতি জ্বালিয়ে এদিক ওদিক তাকাল কিন্তু কিছুই দেখা গেলনা এবং সে চাপা কান্নাও শোনা যাচ্ছেনা। বাবা মনে মনে ভাবল, কে কাঁদবে এত রাতে? হয়তো পাশের বাড়ীতে কেউ কাঁদছিল। দূর! শুধু শুধু ঘুম নষ্ট তারপর হাই তুলে বাতি নিভিয়ে ঘরে ফিরতেই চোখ পড়ল বারান্দার অদূরে খোলা ছাদে একটা কালো ছায়া ধীর পায়ে হাঁটছে কিন্তু ঠিক বোঝা যাচ্ছেনা পুরুষ না মেয়ে। বাবার গা শিউরে উঠল হঠাৎ। এ সাহসী মানুষটি ভয়কে প্রশ্রয় না দিয়ে ঠিক করল বের হয়ে দেখবে বিষয়টা আসলে কি। আবীরের বাবা রুমে ঢোকে দরজা বন্ধ করতেই মা উঠে বলল, কিছু দেখলে?
-দেখেছি। দোতলার খোলা ছাদে কে যেন হাঁটছে, কালো ছায়ার মত মনে হল কিন্তু এত রাতে কেমন করে তালা বদ্ধ ছাদে কি করে উঠল বুঝতে পারছিনা, চোর না তো? চোররাতো অনেক কৌশল জানে। চল বের হয়ে দেখি।
-নাহ্ আমি যাব না আমার ভয় করছে, তাহলে কাঁদছে কে? দাঁড়োয়ানকে ডাক। আবীরকে ডাকার দরকার নাই, ওকে ভীষণ ক্লান্ত মনে হল।
-তার আগে, চুপচাপ দেখি ব্যাপারটা কি।
-নাহ্ নাহ্, তুমি একা যাবেনা। এত সাহস দেখাবার কাজ নেই।
-আরে কিছু হবেনা, তুমি শুয়ে থাক। বাবা দরজা খোলে ছাদের কাছে এসে আর কিছুই দেখতে পেল না। এরি মধ্যে মা সব বাতি জ্বালিয়ে দাড়োয়ানকে ডাকল। দাঁড়োয়ান এসে বলল কি হইছে আম্মা? এত রাইতে, কি হইছে?
-বাড়ীতে মনে হয় কিছু ঘট্ছে।
-চোর ঢুকছে? কেমনে ঢুকল, সবতো তালা বন্ধ আর খোলা ছাদের রেলিং-এর উপরদ উছা কাডার বেড়া দেওয়া। মা এসে বলল, আচ্ছা তুমি কি কারু কান্না শুনেছ?
-কই নাদ। আফনেরা হুনছেন নাকি?
-হে,----সাবধানে থেক। বাবা এসে বলল, এখন আর দেখা যাচ্ছেনা। দাড়োয়ান একটু ভীত হয়ে বলল, ভূত টূত নাদ? বাবা যেতে যেতে বলল, যাও, ঘুমাও যেয়ে, রাত বেশী নাই। এখন থেকে সতর্ক থাকবে। কিছু একটা সমস্যা হয়েছে অবশ্যই। দাড়োয়ান বুকে থুথু ছিটিয়ে নিজের ঘরে গেল। এসব নিয়ে আলোচনা করেই কেটে গেল বাকী রাতটা।

সকালে খাবার টেবিলে আবীরকে না দেখে বাবা জোর গলায় নাম ধরে ডাকল। কাজের মেয়ে মায়া এসে বলল, ভাইজান দরজা বন্ধ করে ঘমাইতাছে। বাবা উঠে যেতেই মা বলল, ঘুমাচ্ছে যখন ঘুমাক, পরে খাবে।
-কি বল! এতদিন পর আসল, ওকে ছাড়া খাব?
-ঘুমাতে দাও। ডাকলে রাগ করবে।
-তাহলে ও উঠুক, পরে খাব।
-নাহ্ দেরি হয়ে যাবে। দুপুরে এক সাথে খেও। শুন, বিয়ে কিন্তু মাত্র ১৫ দিন বাকী। বিয়ের তারিখ হল আর ট্রেনিং শুরু হল। কত কষ্ট করে ঢাকায় বদলী করান হল।
-হুম্, ট্রেনিং বিয়ের আগেই শেষ হয়ে যাবে। পাগল ছেলে দুদিন ছুটি পেয়েছে, চলে এসেছে। মায়া তরকারীর বাটি রাখতে রাখতে বলল,
ভাইজান আফনেগরে খুব ভালাবাসে, ছাইড়া থাকতে পারে না। ভাইজানের বিয়ায় খুব মজা হইব তাই না আম্মা? মা হেসে বলল, তোর বিয়েতেও অনেক মজা করব। মায়া লজ্জা পেয়ে চুপ করে রইল। বাবা বলল, ঠিক বলেছ, ওর জন্যতো পাত্র দেখা উচিৎ কয়দিন আর পরের বাড়ী কাজ করে খাবে। মায়া বলল, আফনেগরে ছাইড়া কই যামু। আফনেগ কাছে অনেক বালা আছি। মা বলল, বিয়ের পরে আরও ভাল থাকবি। আমাদের এখানে ছোট বেলা থেকে আছিস,আমাদের একটা দায়িত্ব আছে না। তুই চলে গেলে আমাদেরযে অনেক কষ্ট হবেরে, তোর মত কি কাউরে পাওয়া যাবে। মায়া যেতে যেতে বলল, হেই জন্যইতো যামু না। বাবা বলল, শুন, আবীরকে বল, মিতুকে নিয়ে যেন গহনা কিনতে যায়।
বেলা ১১টার দিকে মা আবীরের দরজায় ধাক্কা দিয়ে ডাকল। ক্ষাণিক পরে দরজা খোলে মায়ের দিকে নির্বাক তাকিয়ে রইল আবীর। মা বলল, ১১টা বাজে, নাস্তা করবি না? তাড়াতাড়ি হাত মুখ ধুয়ে আয়। দেখ, এ কয় দিনে কি অবস্থা হয়েছে তোর। আয় আমি তোর জন্য নাস্তা খাইনি। মায়াকে ডেকে নাস্তা রেডি করতে বলল। আবীর একটি কথাও বলল না। মা টেবিলে নাস্তা সাজিয়ে ছেলের জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। কিছুক্ষণ পর মায়াকে পাঠাল ডেকে আনতে। একটু পর মায়া এসে বলল আবীর ঘরে কোথাও নেই। মা বলল, বাথ রুমে দেখেছিস? মায়া গ্লাসে পানি ঢালতে ঢালতে বলল, সবখানে দেকছি, নাই। ভাইজান আগে আমারে কত কথা কইত, কত কি আইন্না দিত। কাইল কিছুই কইল না। মা বলল, কোথাও একটু সমস্যা হয়েছে মনে হচ্ছে। আমার আর ওর বাবার সাথে তেমন কথা বলছেনা। জানতে হবে কি হয়েছে। দেখি দোতলার ছাদে গেছে কিনা। মা উঠে বাহিরে এসে দেখে ছাদে একা একা ঘুরছে। মা অবাক হল। কি ব্যাপার, নাস্তা করতে বললাম, ছাদে এলি কেন? মা ছাদে এসে ছেলের গায়ে হাত রেখে বলল, আবীর কি হয়েছে বাবা? তোকেতে নাস্তা খেতে বলেছি। আবীর স্মিত হেসে বলল, চল। খাবারের টেবিলে বসে আবীর কোন রকম একটু খেয়ে উঠে পড়ল। মা বলল, কিছুইতো খেলিনা। বস। আবীর বলল, খেতে ইচ্ছে করছেনা।
-কি হয়েছে তোর?
-অনেক কিছ হয়েছে। মা খাওয়া বন্ধ করে ছেলের পাশে এসে বলল, আমাকে বল্ কি হয়েছে। আসার পর থেকে তোকে কেমন যেন মনে
হচ্ছে। মিতুর সাথে কিছু হয়েছে?
-নাহ্, আমার শুধু কষ্ট লাগে।
-কেন বাবা, কিসের কষ্ট, মাকে বল্। নইলে যে শান্তি পাব না।
-সে কষ্ট বলতে পারিনা মা।
-সব ঠিক হয়ে যাবে। শুন্, মিতু আসলে ওকে নিয়ে মার্কেটে যাবি। তোরা দুজনে পছন্দ করে গহনা কিনবি।
-সম্ভব না মা।
-বলিস কি! বিয়েতো বেশী দেরি নাই। সকালে ফোন দিয়েছিল ও। তোকে খুঁজছিল, আমি বলেছি ঘুমিয়ে আছিস। আজ ও ঢাকায়
ফিরবে। আমি বলেছি ওকে তুই মার্কেটে নিয়ে যাবি। না গেলে ও কষ্ট পাবে।
- মা, এ বিয়ে হবেনা। মা ছেলের কথায় আকাশ থেকে পড়ল যেন, বিস্ময় প্রকাশ করে বলল, কি বলছিস? কেন?
-সে উত্তর আমি দিতে পারব না।
-এমন করিস না বাপ, ঠাট্রা করছিস নাতো?
-নাহ্ মা, যা বলছি এটাই চরম সত্য। মা ছেলেকে অনেক পিড়াপীড়ি করেও কোন কথা আদায় করতে পারল না। এরি মধ্যে মায়া এসে বলল, মিতু আপু ফোন করছে, ভাইজানরে চ্ইাতাছে। মা অনেক অনুরোধ করল মিতুর সাথে কথা বলার জন্য। কোন মতেই কথা বলতে রাজী হলনা আবীর। শুধু বলল, আমাকে একটু একা থাকতে দাও। মা নিজেই ফোন ধরে আবীরের সঙ্গে মিতুর কোন ঝগড়া হয়েছে কিনা জানতে চাইল। মিতু জানাল কিছুই হয়নি ঢাকায় আসার পথে তার সঙ্গে দেখা করে এসেছে। মা ছেলের অবস্থার কথা জানাল এবং ঢাকায় এসে বাসায় আসার জন্য বলল। মিতু বিশ্বাস না করে বলল, না মা, ও দুষ্টুমি করছে হয়তো। আপনি ভাববেন না, সব ঠিক হয়ে যাবে।

কিন্তু সব ঠিক হলনা। আবীর দরজা বন্ধ করে রাখল, খাইতেও চাইল না। কেমন যেন বিমর্ষ দেখাচ্ছে তাকে। কারু কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে চায়না সে। এমন প্রাণবন্ত ছেলেটির হঠাৎ কি হল কেউ তা আ্িবস্কার করতে পারল না। মা-বাবা ধারণা করল কোন একটা সমস্যা হয়েছে। সামনে বিয়ে; এখন এমন অবস্থা হলে কিই না সমস্যা হবে এই নিয়ে বড় চিন্তায় পড়ে গেল তারা। মা ধারণা করল জ্বিন আছর করেছে হয়তো। বাবা এসব পাত্তা না দিয়ে বলল, আরে এসব কিছুনা, কোন ঝামেলা হয়েছে হয়তো চট্রগ্রামে; নইলে ট্রেনিং শেষ না হতেই চলে আসবে কেন? মা বিরক্ত হয়ে বলল, তুমি সব সময় ঝামেলার সন্দেহ কর, ছেলেটা আমার কেমন হয়ে গেছে, কথা বলতে চায়না। আগের মত মা মা করে ডাকেনা। শুধু বলে তার অনেক কষ্ট হচ্ছে কিন্তু কেন কষ্ট হচ্ছে তা বলছেনা। আমার মনে হয় কি জান, কাল রাতে যে কালো ছায়াটা দেখেছি, তার অশুভ ছায়া আবীরের উপর পড়েছে। বাবা উঠতে উঠতে বলল, এসব কিছুনা। মা চোখের পানি মুছতে মুছতে বলল, তুমি নিজে দেখেও এসব বিশ্বাস করছ না। আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। বাবা শান্তনা দিয়ে বলল,কেঁদনা, আমার কি কম খারাপ লাগছে, কতবার ডাকলাম কোন সারা নিল না, কেমন ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। কি হয়েছে তাওতো বলছেনা। এরি মধ্যে দাড়োয়ান এসে বলল, আম্মা, আশ পাশের সব বাড়ীত জিজ্ঞাস করছি, রাইতে কেউ কানছে কিনা। সবাইদ না কইল। বাবা-মা মুখ চাওয়া চাওয়ি করল। দাড়োয়ান মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল, আম্মা ব্যাফারডা বেশী ভালা মনে হইতাছেনা, ভূত আছর করছে এই বাড়ীত। আফনি ঠিকই কইছেন। বাবা বলল, তুমি তোমার কাজে যাও, এমনিতেই তোমার আম্মা ভয়ে অস্থির হয়ে আছে। মা বলল, সব বাদ দিয়ে আমার ছেলেটার কথা ভাব। মিতুকে আসতে বললাম তাড়াতাড়ি আর সে বলে কয়দিন পর আমার বিয়ে, আপনাদের বাড়ীতে গেলে মানুষ বলবে কি। এটা কি একটা কথা হল। মায়া এসে আস্তে আস্তে বলল, খালুজান, ভাইজান বারান্দায় দাড়াইয়া আসমানের দিকে চাইয়া রইছে। বাবা-মা দুজনে তড়িগড়ি করে বারান্দায় এসে ছেলের পাশে দাঁড়াল। মা গায়ে হাত দিয়ে বলল, আবীর, চল্ কিছু খাবি। তুই না খেলে আমি যে খেতে পারবনা। মিতু কিছুক্ষণ পর আসবে। খেয়ে রেডি হ, ওকে নিয়ে মার্কেটে যাবি। আবীর মায়ের দিকে তাকিয়ে উদাস চোখে বলল, আমি তোমাদেরকে ছেড়ে কোথাও যেতে চাই না মা। বাবা বলল, তোকে কোথাও যেতে হবেনা; শুধু বল কি হয়েছে। আবীর আর কিছুই বলল না চারদিকে কেমন অদ্ভুদভাবে তাকাতে লাগল। মা বলল, ঠিক আছে ভেতরে চল, তোকে কিছুই বলতে হবেনা।

বিকেলে মিতু আসল; আবীর তার সাথেও কথা বলতে চাইলনা। মিতু নাছোড় বান্দা এই কথা সেই কথা বলে আবীরকে উৎফুল্ল করার চেষ্টা করল কিন্তু কোন কাজ হল না। আবীর শুধু বলল আমি কোথাও যেতে চাইনা। মিতু বলল, ঠিক আছে, যেতে হবেনা। এখানেই আমরা বসে গল্প করি, তুমি নাকি বলেছ আমাকে বিয়ে করবে না? কেন? আবীর করুণ দৃষ্টিতে মিতুর মুখের দিকে তাকিয়ে রইল আর হে সূচক মাথা নাড়ল। কেন আমার কি অপরাধ? তোমাকে না পেলে আমি যে মরে যাব তা তুমি জাননা? কালতো তুমি কত ভাল ছিলে, আজ হঠাৎ কি হল। বাড়ীর সবাই তোমার চিন্তায় কেমন অস্থির হয়ে আছে। আবীর বলল, কেন কি হয়েছে আমার? তুমি এখন যাও আমি একা থাকব। মিতু বলল, আমি যাবনা, কি হয়েছে জেনে তারপর যাব। আবীর উপুড় হয়ে শুতে শুতে বলল, তোমার সাথে আমার বিয়ে আর কোন দিন হবেনা, তুমি যাও, বিছানায় শুয়ে কাঁদতে লাগল আবীর। মায়া খাবার এনে টেবিলে রেখে বলল, আম্মায় কইছে, ভাইজানরে খাওয়াইতে। কাল থাইক্কা ঠিক মত নাওয়া খাওয়া নাই। রাইতে আসার পর একটু খানি খাইছিল আর কিছুই খায়না। খালুজান আর আম্মায়ও খাইতে চায়না, কি যে হইল, কে জানে, এ বাড়ীর মানূষের মন খারাপ অইলে আমার মনডাও খারাপ হইয়া য়ায়। ভাইজান উডেন খান, খালুজান আর আম্মায় মন খারাপ করতাছে। মায়া চলে গেলে মিতু খাওয়ানোর অনেক চেষ্টা করল কিন্তু ব্যর্থ হল তারপর চোখ মুছে বের হয়ে গেল।

আবীরকে নিয়ে সবাই চিন্তিত হয়ে পড়ল। একমাত্র সন্তানের এ অবস্থায় বিচলিত হল বাবা-মা। মতিু মন খারাপ করে কাঁদে কন্তিু কনে এমন হল তার উত্তর কউে খোঁজে পলে না। আবীরকে বশেী প্রশ্ন করলে সে অস্বস্তি বোধ কর।ে মতিুর বাবা মাও এ নয়িে ভীষণ চন্তিতি হয়ে পড়ল, ময়েটোর কি হব।ে এতে আবীরকে দায়ী করে তারা বভিন্নি রকমরে মন্তব্য করল, হয়তো মতিুকে তার আর ভাল লাগছে না, হয়তো অন্য কারুর প্রমেে পড়ছেে কন্তিু মিতু তা বশ্বিাস করছনো; তার কথা হল তবে নাওয়া খাওয়া বন্ধ করে এমন আনমনা থাকবে কনে? কথা বলতে চায়না কেন? কাঁদবে কেন? কউে কউে বলল, এসব ঢং। আবীরকে কউে মন্দ বলুক সে তা চায়না। মতিুর বাবা-মা বার বার ফো ন করে বলে এখন কি হব,ে আমরা কি করে মুখ দখোব। ময়েটোরইবা কি হব।ে অনকে নমিন্ত্রণ পত্রও বলিি হয়ে গছে।ে ভাল করে জজ্ঞিাস করুন ওর মতলবটা ক।ি মা বোঝানোর চষ্টো করে আপনারা ভাববনে না, সব ঠকি হয়ে যাব।ে আমরা এমনতিইে বড় কষ্টে আছ।ি
রাতে বাবা বারান্দায় পায়চারী করতে করতে চিন্তা করল, আবীরের অফিসে যোগাযোগ করে জানা উচিৎ কোন সমস্যা হয়েছে কিনা কিন্তু আবীরতো ট্রেনিং-এ চট্রগ্রাম ছিল, ওরা কিভাবে জানবে। এরি মধ্যে মা এসে বলল, ঘরে আস রাতের বেলা বাইরে থেক না। আমার মনে হয় এ বাড়ীতে কোন অশুভ ছায়া পড়েছে, একজন মৌলানা এনে মিলাদ দেয়া উচিৎ। বাবা এসব কথার গুরুত্ব না দিয়ে বলল, আচ্ছা, আবীর যেখানে ট্রেনিং নিচ্ছে সেখানে খোঁজ নিয়ে দেখলে কেমন হয়? কিছু হয়েছে কিনা সেখানে।
-ভাল বলেছ, তাই কর।
-কিন্তু, ঠিকানা পাব কোথায়?
-আবীরের অফিস থেকে নিয়ে নাও, ওরা অবশ্যই জানবে। ছেলেটা খায়না, কথা বলেনা আমার কলিজাটা ফেটে যায়।
-টেনশন করনা, ঠিক হয়ে যাবে। ওর করুণ দৃষ্টি দেখলে আমার ভীষণ খারাপ লাগে। এরি মধ্যে মায়া এসে বলল, আম্মা, আমি একলা ঘমাইতে পারুমনা, খুব ডর লাগতাছে, দাড়োয়ান ভাই কইছে, রাইতে নাকি কালা ছায়া দেখা যায় আর কে জানি খালি কান্দে। আবীরের বাবা বলল, এসব কিছুনা, ঘুমাতে যা, বাতি জ্বালিয়ে রাখিস ভয় লাগলে।
-নাহ্ খালুজান, শুইছিলাম, মনে হইল কালা ছায়া আমারে ধরতে আইতাছে। মা বলল, তাইলে তুই শুবি কোথায়?
-আফনেগ রুমে।
-তোর ঘুমাবার অবস্থা ভালনা, আমাদের ঘরে তুই শুইতে পারবি না।
-সেলোয়ার কামিজ পইড়া শুমু এক কোণায়, দোয়াই লাগে আম্মা, না কইয়েন না। আফনের পায়ে পড়ি। ডরে মইরা যামু। ভাইজান একলা ঘুমাইয়া এই দশা। বাবা বলল, এত কথা বলিস কেন। কয়দিন আমাদের রুমে ঘুমাবি? একলা ঘুমাতে হবেনা? ভূত বলে কিছু আছে নাকি?
-আছে খালুজান, আমার মায়ও দেখছে, শিংওয়ালা ভূত, এ---ই বড় নওখ, এ---ই বড় চৌখ, গতরে বড় বড় লোম, আর---কথা শেষ না হতেই বাবা বলল, চুপ কর, ঘুমাতে যা। মা বলল, থাক, একা একা ও ভয় পাচ্ছে। যা কাথা বালিশ নিয়া শুয়ে থাক। চল, রাত অনেক হয়েছে। বাবা ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বলল, ছেলেটার চিন্তায় ঘুম আসছে না। মা বলল, বাতি নিভানোর দরকার নেই, ভয় লাগবে। বাবা শুইতে শুইতে বলল, দরকার নাই বাহিরের আলোই যথেষ্ঠ। শূয়ে পড়, রাত অনেক হয়েছে। দেখি কাল কোন পরিবর্তন না হলে ডাক্তারের কাছে যাব।

মা-বাবা দুজনে দরজা বন্ধ করে চুপচাপ শূয়ে পড়ল। এপাশ ওপাশ করে ঘুমানোর চেষ্টা করল কিন্তু ওদের ঘুম আসল না। বাবা বলল, বাতি নিভিয়ে দাও, চেষ্টা কর ঘুমাতে। মা বাতি নিভাতে রাজী হলনা। ভয় লাগে তার। মায়া খাটের পাশের খালি জায়গায় এক কোণে অঘোরে ঘুমাচ্ছে। এখন ঘুমাতে তার কোন অসুবিধা হচ্ছেনা। এরি মধ্যে বাবা ঘুমিয়ে পড়ল, দোলক ঘড়িতে ঢং ঢং করে রাত দুটো বাজার সংকেত দিল। বাহিরে আধো চাঁদের ম্লান আলো রাতের আঁধারকে হাল্কা করে তুলেছে। আশ পাশে ছিটে ফোটা কয়েকটা বাতি এখানে সেখানে আনমনে জ্বলছে তবুও গভীর রাতের গভীরতা নিজ¯^ আবহ সৃষ্টি করে রেখেছে। মা গতকালের কালো ছায়ার অভিজ্ঞতা মন থেকে দূরে সরাতে পারছেনা। উঠে এসে শিয়রের খোলা জানালা বন্ধ করে ঘরের বাতি জ¦ালিয়ে রেখে ছেলের জন্য এবং অশুভ ছায়া থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দোয়া দরুদ যতখানি জানা সেসব পড়ে শুয়ে পড়ল। একসময় চোখে তন্দ্রা নেমে আসতেই মা ¯^প্নে দেখল আবীর মা মা করে করুণ সুরে কেঁদে বলছে আমাকে নিয়ে যাচ্ছে, আমি তোমাদেরকে ছেড়ে যেতে চাইনা মা। মা ছেলের জন্য এমনিতেই উদগ্রীব ছিল তাই আবীরের নাম নিয়ে ডাকতে ডাকতে তার ঘুম ভেঙ্গে গেল। চোখ মেলে দেখল ঘরের বাতি নিভানো আর সে কান্নার শব্দ। মা পাশ ফিরতেই সে কালো ছায়া তার চোখে পড়ল। মা ভয়ে ভয়ে কে, কে করে উঠে বসল, কালো ছায়াটা তখনও স্থির দাঁড়িয়ে রইল। মা চিৎকার করে আবীরের বাবাকে ধাক্কা দিয়ে ডাকল বাবা জাগল না কিন্তু মায়া লাফিয়ে উঠে বলল, কি হইছে আম্মা ভূত দেখছেন? ও মাগো বলে আবীরের মায়ের উপর এসে পড়ল। ততক্ষণে ছায়া মিলিয়ে গেল। বাবাকে ধাক্কা দিয়ে জাগিয়ে বলল, বাতি জ্বালাও শিঘ্র, চল দেখি আবীরের কি হয়েছে। বাবা তড়িগড়ি করে বাতি জ্বালিয়ে বলল, কি হয়েছে, আবীরের কিছু হয়েছে? মা বলল, আবার সে ছায়াটা এসেছিল। মা ¯^প্নের কথা বলে দুজনেই দরজা খোলে আবীরের রুমের দরজা ধাক্কাতে লাগল কিন্তু দরজা খুললনা আবীর। মা কান্নাকাটি করে বলল, বাবা, দরজা খোল, তোর কি হয়েছে। বাবাও অনেক অনুনয় বিনয় করল। কিছুক্ষণ পর আবীর দরজা খোলে ফ্যাল ফ্যাল করে বাবা মায়ের দিকে তাকিয়ে রইল। মা ছেলেকে ধরে বলল, তুই কেমন আছিস? আবীর ঝিমুতে ঝিমুতে বলল, কিছু হয়নি। মা বলল, চল্, এ ঘরে আর একা ঘুমাবি না, আমাদের ঘরে আয়, এ বাড়ীতে অশুভ কিছু প্রবেশ করেছে। বাবাও একই কথা বলল। মায়াও ভয়ে ওদের সাথে চলে এসেছিল, ও বলল, ভাইজান, আইজগাও ভূত আইছিল, আম্মায় দেকছে।্ একলা থাইক্কেন না। আমার বুকটা অহনও ধড়ফড় করতাছে। আল্লারে, কই যামু। বাবা-মা দুজনেই ওদের রুমে এসে শোয়ার জন্য আবীরকে অনুরোধ করল কিন্তু আবীর রাজী হলনা শুধু বলল, আমার কিছু হবেনা। মা বলল, আবীর তুইতো এমন অবাধ্য ছিলিনা, কারু কোন কথাই শুনছিস না। কিছু না বলে আবীর দরজা বন্ধ করে দিল। বাবা মাকে ধরে ওদের রুমে নিয়ে এস বলল, তুমি বুঝতে পারছনা, কোন একটা সমস্যা হয়েছে। আবীরতো এমন করেনি কখনও। সারা রাত আর ঘুমাতে পারল না কেউ।

ভোর হতেই মা বাবাকে কোন তান্ত্রিক ডেকে এনে বাড়ী বন্ধ করার জন্য বলল, বাবা এসবে খুব একটা গুরুত্ব না দিয়ে বলল তান্ত্রিক আবার কি? ওরা কি করবে। মা নাছোড় বান্দা; একটা ব্যবস্থা করার জন্য বাবাকে চাপ সৃষ্টি করল নইলে এ বাড়ীতে সে থাকবে না, ছেলেকে নিয়ে অন্যত্র চলে যাবে। মায়াকে ডেকে দাড়োয়ানকে ডাকতে পাঠাল। একটু পর মায়া হন্তদন্ত হয়ে দৌড়ে এসে বলল, দাড়োয়ান ভাই অজ্ঞান হইয়া শিড়িতে পইড়া রইছে। এ কথা শোনে ওরা সবাই সেখানে যেয়ে দেখে সত্যিই দাড়োয়ান পড়ে আছে। মাথায় পানি ঢেলে জ্ঞান ফেরাবার চেষ্টা করল। কিছুক্ষণ পর দাড়োয়ান চোখ খোলে এদিক সেদিক তাকিয়ে বলল, ভূতটা গেছে? বাবা বলল, আরে কিসের ভূত, উঠ, বল কি হয়েছে। সবাই মিলে যা শুরু করেছ না। দাড়োয়ান বসতে বসতে বলল, নাহ্ খালুজান, ভূত আছে, আমি নিজ চক্ষে দেকছি। আমি বাত রুম কইরা নিছে নামতে আছিলাম, দেহি --কালা একটা মানুষ শিড়ির মইধ্যে হাটতাছে, আমি কইলাম কে,কে কিন্তু কোন উত্তর দিল না। আস্তে আস্তে আমার সামনে আইয়া মিলাইয়া গেল আর আমি--- বাবা বলল, বুঝেছি। কাল শুনেছতো তাই এমন হয়েছে। এবার উঠ ঘরে চল। মা বলল, এবার বুঝলেতো? তুমিতো আমার কথা বিশ্বাস করতে চাওনা। আমার ছেলেটাকে ভাল কোন মন্ত্র জানা কবিরাজ দেখানো উচিৎ। মায়া বলল, কিছু একটা করেন খালুজান, নইলে আমি দেশে চইল্লা যামু। বাবা কিছুটা নরম হয়ে বলল, ঠিক আছে খোঁজ নিয়ে দেখি। বাবা দাড়োয়ানকেই দায়িত্ব দিল অশুভ শক্তি সরানোর মন্ত্র জানা কোন তান্ত্রিক খোঁজে বের করার জন্য।

একদিকে ছেলে অন্যদিকে অশুভ আত্মার উৎপাত এসবে এ বাড়ীর সবাই টেনশনে আছে। এরি মধ্যে মিতু এসে মলিন মুখে বসল। মা গায়ে হাত বুলিয়ে শান্তনা দিয়ে বলল, চিন্তা করনা, সব ঠিক হয়ে যাবে, কেন এমন করছে জানিনা। আমার ছেলেটা সারা বাড়ী মাতিয়ে রাখত কেন হঠাৎ এমন হয়ে গেল। মিতু কেঁদে বলল, মা ওকে ছাড়া আমি বাঁচব না। বাসায় আমার মন টিকছেনা। আমার সঙ্গে আগের মত কথা বলছেনা, হাসছেনা। যেন আমাকে সহ্য করতে পারছেনা। আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। মা বলল, যাও, দেখ কি বলে। মনে মনে ভাবছিলাম তোমাকে ডেকে আনব। ভাল হয়েছে এসেছ। আবীর মিতুর সঙ্গে আজও তেমন কথা বলল না।

বাবা বের হওয়ার আগে আবীরকে কাছে ডাকল। আবীর এক ডাকেই এসে বাবার পাশে দ্ড়াঁল। মা খুশি হয়ে বলল, বাবা মনটা ভাল লাগছে? বাবা আবীরের গায়ে হাত বুলিয়ে বলল, আবীর, তোর কি সমস্যা আমাকে না হয় তোর মাকে বল, মিতুকে বল। আমরা যে শান্তি পাচ্ছিনা বাবা, দেখ, মিতু কেমন কান্নাকাটি করছে। গোসল করে নাস্তা খা। আমি একটা কাজে ঢাকার বাইরে যাচ্ছি, ভাল থাকিস। আবীর শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে বাবার দিকে তাকিয়ে রইল। বাবা চলে যাওয়ার পর মিতু বলল, চল,আমাদের বাসায় নিয়ে যাই তোমাকে। আবীর ঘরে যেতে যেতে বলল, নাহ্, কোথাও যেতে চাইনা। মা আর মিতু আবীরের পেছন পেছন ঘরে ঢুকে বসল তারপর মিতু বিছানাটা ঝেড়ে বালিশ ঠিক করে বলল, খারাপ লাগলে শূয়ে পড়। মা বলল, তুই না চিংড়ি মাছের ভর্তা আর টমেটো দিয়ে পাবদা মাছের ঝোল পছন্দ করিস, আজ রান্না করব। আমি নাস্তা পাঠাই মিতুকে সঙ্গে নিয়ে খা।

সারাদিন কেটে গেল। কোন মতেই আবীর খেতে চাইল না। মিতুও চেষ্টা করল কোন কাজ হল না। মিতুর বাসা রাস্তার ওপারে এ বাসা থেকে দেখা যায়। ছোট বেলা থেকেই আবীরের সঙ্গে তার পরিচয় আর পরিচয় থেকেই ধীরে ধীরে প্রেম। দুই পরিবারের পছন্দেই বিয়ে ঠিক হয়েছে ওদের। দুই পরিবারই এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা এবং শিক্ষায় দীক্ষাইও সমান। আবীর সিরাজ সাহেবের একমাত্র সন্তান। মিতু বিশ্ববিদ্যালয়ে এম এ পরীক্ষা দিয়েছে আর আবীর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষ করে চাকরিতে যোগদান করেছে। ন¤্র ভদ্র সুশীল আবীর সবার কাছেই প্রিয় মানুষ। বাবা-মা সকল ভালবাসা উজাড় করে দিয়ে বড় করে তুলেছে এক মাত্র সন্তানকে।
বেলা প্রায় শেষ হয়ে এল। মা দাড়োয়ানের জন্য অপেক্ষা করতে লাগল কখন আসবে। কোন্ হজুর নাকি অশুভ শক্তির মোকাবেলা করতে পারে; পাশের বাড়ীর দাড়োয়ান তার সন্ধান দিয়েছে। সেখানে গিয়েছে সে। আবীরের বাবা সেই যে সকালে বের হয়ে গেল এখনও ফেরেনি মা তার কথাও ভাবছিল কখন ফিরবে সে। এমনি সময় মায়া এসে বলল, আম্মা, ভাইজান খাওয়নের টেবিলে আইসা বইছে, মনে অয় ভাত খাইব। মা এ কথা শোনে খুশি হয়ে তাড়াতাড়ি ডাইনিং রুমে এসে ছেলের পাশে বলে বলল, খাবি বাবা, খা, তুই খেলে আমার কিযে শান্তি লাগবে। এই মায়া, তাড়াতাড়ি সব নিয়ে আয়। আবীর নরম গলায় বলল, খাব। মা খাওয়ার আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে উঠল। এরি মধ্যে দাড়োয়ান দৌড়ে এসে বলল, আম্মা, এ বাড়ীর গেইটে টেরাক দিয়া কার যেন লাশ নিয়া আইছে। মায়ের হাত কেঁপে হাতের চামচ মেঝেতে পড়ে গেল। শংকিত হয়ে বলল, কার লাশ? তোমার খালুজানতো এখনও ফেরেনি। চলতো দেখি। মা তাড়াহুড়ো করে যেতেই হুচুট খেয়ে বারান্দায় পড়ে গেল। মায়া ছুটে এসে টেনে তুলে বলল, এমন অস্থির অইছেন কেন, উডেন। আমি দেকতাছি, ভারাইট্টা কারুর কেউ অইব। আফনে এইখান খাড়ান, আমি দেহি। মা মায়ার কথা না শোনে শিড়ি বেয়ে নিচে এসে নামতেই আবীরের বন্ধু রুমির সাথে দেখা। রুমির চোখ ভেজা দেখে মা ভয়ার্ত কন্ঠে বলল, রুমি এ কার লাশ? তোমার খালুজী কোথায়? রুমি বলল, খালা আম্মা আপনি উপরে আসেন, সব বলব, মা বলল, নাহ্ আগে বল আমাদের বাড়ীতে কার লাশ? মায়া বলল, আম্মা অফনেরে না কইছে নামবেন না। রুমি বলল, মায়া, খালা আম্মারে উপরে নিয়া যাও। ওদের এ ধরণের আচরণে মায়ের বুক কেঁপে উঠল। ভাবল নিঃশ্চয় কোন খারাপ খবর। ততক্ষণে লাশ বাড়ীর ভেতরে আনা হল। বাড়ীর খোলা জায়গায় লাশ নামাতেই মা দৌড়ে যেয়ে মুখের কাপড় তুলেই স্তম্ভিত হয়ে গেল। এ কার লাশ? আবীরতো দুতলায় ডাইনিং রুমে, এ কার লাশ? রুমি বলল, খালা আম্মাকে উপরে নিয়ে যাও। মায়াও লাশ দেখে চিৎকার করে উঠল, এইডা কে? মা আবীরের নাম ধরে ডাকতে ডাকতে দুতলায় এসে উন্মাদের মত আবীরকে খুঁজতে লাগল কিন্তু কোথাও নেই আবীর। রুমি উপরে এসে মাকে শান্তনা দিয়ে বলল, খালা অম্মাা, আবীর আর আসবেনা কোনদিন। আপনাদের সঙ্গে এ দুদিন যে ছিল এটা আবীরের আত্মা। খালুর কাছে আমি সব শুনেছি, খালুজী, হাসপাতালে আছে। গত পরশু কে বা কারা কুমিল্লার গৌরীপুরে ছুরি মেরে খুন করে রাস্তার পাশে ফেলে রেখেছিল। লাশ মর্গে ছিল। পত্রিকায় ছবি দেখে আবীরকে চিনতে পারি। মা আবীর বলে চিৎকার করে জ্ঞান হারাল। এদিকে কার কাছে খবর পেয়ে খালাতো ভাই অরুণকে সঙ্গে নিয়ে ছুটে এল কি হয়েছে জানতে। ততক্ষণে অনেক মানুষের ভীড় জমে গেল। মানুষ বলাবলি করছে আবীর কিই না ভাল ছেলে ছিল, ওর কেন এমন মৃত্যু হল। আল্লাহর এ কেমন বিচার। কেউ কেউ বলল, দাড়োয়ান বলল, আবীর বাসায় ছিল তবে কখন এ খটনা ঘটল। এখন আর কারুর জীবনের নিরাপত্তা নেই। কেউ কেউ বলল, এমন টগবগে তরুণ ছেলেটা একি হল। এক পাশে মায়া আর দাড়োয়ান ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছিল। মিতুর ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল, ওরা কি বলছে, আবীরের কি হয়েছে? অরুণকে বলল, মানুষ সরিয়ে লাশের কাছে যেতে। অরুণ মানুষজন সরিয়ে লাশের পাশে দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে বলল, মিতু আপু, এদিকে এস, এই লাশটাইতো সেদিন রাস্তার পাশে দেখেছিলাম। মিতু এগিয়ে যেয়ে চিৎকার করে বলল, নাহ, এ হতে পারে না। এ লাশ না, এ আবীর, এ আমার আবীর । জ্ঞান হারাল মিতু।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
শামীম খান দারুন গল্প । ভাল লাগা জানিয়ে গেলাম । ভোট প্রাপ্য ।
Jyotirmoy Golder শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য........................
গোবিন্দ বীন বেশ ভাল চমৎকার।। "আমার চলতি সংখ্যায় কবিতা গুলো পড়ার আমন্ত্রণ করে গেলাম। আশা করি আমার পাতায় আসবেন "
ওয়াহিদ মামুন লাভলু আবীর মারা যাওয়ার পরও তার আত্মা তাদের বাড়িতে এসে সকলের সঙ্গে কথা বলেছে। আত্মা বলেই তার আচরণে স্বাভাবিকতা ছিলা না, তাই তার আচরণে সবাই অবাক হয়েছে। গল্পটা যেমন দুঃখজনক, তেমনই খুবই ভৌতিক। অসাধারণ লিখেছেন। খুব ভাল লাগল। শ্রদ্ধা জানবেন।
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ দুর্দান্ত গল্প ------- সালাম ও শুভেচ্ছা জানবেন ।
হাসনা হেনা Thank you very much for commenting I was confused in the spelling of Abir.
ARMANI JOUS সুন্দর লাগল। তবে আবীর নামটা আবির হলে মনে হয় ভাল হত।
ruma hamid অসাধারন লাগল ! ভাল থাকবেন ।

০৫ এপ্রিল - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ২২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪