এই রাশেদ উঠ, আজ না আমাদের বাবুই ধরতে যাবার কথা। রাশেদ এই রাশেদ।। উঃ করে রাশেদ চোখ খুলে দেখে তার বড় ভাই রতন তাকে ডাকছে।ওর তখন মনে পরে গেল আজ রাতে তাদের জাল দিয়ে বাবুই ধরার কথা।আজ দিনেই না ওরা দুই ভাই অনেক খোজাখুজি করে ওর বাবার সেই পূরনো জাল চুরি করে রেখেছে যেটা দিয়ে ওরা রাতে লুকিয়ে বাবুই মারতে যাবে। -কিরে,কি ভাবছিস?তাড়াতাড়ি ওঠ নইলে বাবা কিন্তু জেগে উঠবে।রতন একরকম জোর করেই রাশেদ কে টেনে তুলল। রতন বাড়ির পেছনে একটা জাল ছোট হ্যারিকেন আর বাবুই রাখার একটা ঝাকরা রেখে আসছে।তারা দুজনেই সেগুলো নিয়ে বেরিয়ে পড়ল পাখি মারতে।চারদিকে বন্যার পানি নেমে গেছে।এখন শুধু ধান ক্ষেত অবশিষ্ট।আর এই ধান ক্ষেতেই থাকে অনেক বাবুই পাখি যেগুলোকে জাল দিয়ে খুব সহজেই ধরা যায়। রইজউদ্দিন ছিল রতনআর রাশেদের বাবা। যেমন চালাক তেমনি সাহসি তেমনি ধুরন্দর।কৈশরে তিনি অনেক লোক কে জালিয়েছেন।তিনি সেদিন রাতে তার জরুরি কাজ সারতে বাড়ির বের হতেই তার দুছেলেকে জাল নিয়ে মাঠে নামতে দেখে তিনার বুঝতে অসুবিধা হল না এরা বাবুই মারতে যাচ্ছে।তার মনে ফুটে উঠলো দুষ্ট হাসি।তিনি দেখতে চাইলেন তার ছেলেরা কেমন সাহসি।তিনি বাড়ির ভেতর থেকে একটি সাদা কাপড় একটি লম্বা নলের সাথে পেচিয়ে চুপিচুপি রতন রাশেদের পিছু নিলেন। কিছুদূর যাবার পর সামনে একটি বড় পুকুরের পাড়ে গিয়ে তিনি সেটা নিয়ে উচু করে নিয়ে নানা রকম ভূতের মত অঙ্গি-ভঙ্গি করতে লাগল।সেটা তারা দুই ভাই দেখে ভিশন ভয় পেয়ে জাল হ্যারিকেন রেখে দিল দৌড়।আর তার বাবা সেগুলি নিয়ে স্বযত্নে তার বাড়ির পেছনে একটি খড়ের পালার মধ্যে রেখে দিলেন।পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে রতন একটা নিমের ডাল দিয়ে দাত মাজতে মাজতে চিন্তাকরছে তাদের বাবা যদি দেখেন জাল নেই তাহলে তাদের তিনি কি অবস্থা করবেন? এই ভাবতে ভাবতে রতন গেল সেই খরের পালার কাছে।পালাতে যেই না রতন বসতে গেছে আর অমনি একটি পালার ভেতর থেকে শব্দ হল।ব্যাপারটা কি দেখতে গিয়ে দেখে কালকের সেই হ্যারিকেন ও জাল।রতনের আর বুঝতে দেরি হলো না এটা তার বাবার কাজ।সেও তার বাবাকে জব্দ করতে সেগুলি তখনই একটি গাছের উপর রেখে গাছের আড়ালে লুকিয়ে অপেক্ষা করতে লাগল কখনতার বাবা জাল নিতে আসে।একটু পরে দেখল তার বাবা আসছে।যেই না তার বাবা সেই গাছের নিচ দিয়ে পালার দিকে যেতে লাগল আর অমনি রতন জাল গাছ থেকে দিল ফেলে।চমকে উঠে তার বাবা পেছনে সরে গেল। -একি এই জালগুলি না খরের মধ্যে লুকিয়ে রাখলাম,তাহলে এভাবে এখানে কি করে এলো? রতন গাছ থেকে গম্ভীর গলায় বলে উঠলো-হু হা হা হা।কাল তুই অভিনয় করে তোর ছেলেদের ভয় পাইয়ে দিয়েছিস আর আজ আমি তোকে সত্যিই ঘাড়মটকাতে এসেছি।। হু হা হা হা । -ওরে দুষ্ট।বাবাকে ভয় দেখানো হচ্ছে না!আয় নেমে আয়।তোর কান যদি আজ না মলে দিয়েছি তো। -বারে তুমিই না কালকে আমাদের ভয় দেখিয়ে জালগুলি নিয়ে আসলে।তাহলে আমিই বা তোমার সাথে একটু মজা করব না কেন?দেখতে হবে তো ছেলেটা কার! রইজউদ্দিন মুচকি হেসে বুঝতে পারলেন তার ছেলেরাও ঠিক মতোই হয়েছে।।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক
সুন্দর ভাবে শৈশবের চরিত্র চিত্রণ হয়েছে...ভালো লাগলো.....
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।