আমায় করো তোমার জ্যোতি

গভীরতা (সেপ্টেম্বর ২০১৫)

Salma Siddika
মোট ভোট ১০ প্রাপ্ত পয়েন্ট ৫.২৭
  • ১৫
  • ৫৭
এই মিতুল, এদিকে আয়। আমার নতুন আইফোন দ্যাখ। জন্মদিনের উপহার, বাবা দিয়েছে। গতকাল। '
মিতুল উত্তেজিত হয়ে জয়ার কাছে গিয়ে সাবধানে ফোনটা হাতে নিলো। মিতুলের মুখ হাসিতে ঝলমল করছে। কি সুন্দর ফোন ! হাতের ছোঁয়াতেই সব কাজ হয়ে যায়!
'ফোন নিয়ে এসেছি জানলে স্কুলে আবার প্রবলেম হবে। তোদের দেখাতে নিয়ে এসেছি। একটু পরে লুকিয়ে রাখতে হবে। আয় ,একটা সেলফি তুলি।'
জয়া আর মিতুল দাঁত বের করে হেসে ছবি তুলল বেশ কয়েকটা। ছবিগুলো কি সুন্দর হয়েছে!
'এই দ্যাখ মিতুল, কতগুলো অ্যাপ ডাউনলোড করেছি। এইটা দিয়ে ছবি এডিট করে ফানি বানানো যায় , দ্যাখ। '
জয়া ওদের ছবিটাকে উল্টে পাল্টে কেমন ভূতের মত বানালো, দেখে মিতুলের হাসি থামে না। পুরো টিফিন পিরিয়ডে ওরা দুজন খাওয়া বাদ দিয়ে শুধু ফোনই দেখল।
ঢং ঢং ঘন্টা বাজছে, টিফিন পিরিয়ড শেষ। জয়া যত্ন করে ফোনটা ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখলো।
'আচ্ছা, কাল আমার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আসছিস তো ?'
মিতুল ঘাড় নাড়ে, ও আসবে।
ছুটির পরে বাসায় আসার সময় মিতুলের কেমন মন খারাপ লাগে। তার ফোন খুবই পুরোনো একটা নকিয়া সেট। ছবি তোলা যায় না। ইদানিং কথাও শোনা যাচ্ছেনা। চিৎকার করে কথা বলতে হচ্ছে। বাবাকে দুমাস ধরে বলছে একটা ফোন সেটের জন্য, বাবা দিচ্ছি দেবো বলে পার করছে। মিতুল জানে,বাবার কাছে টাকা নেই।

কাল জয়ার জন্মদিনের উপহার নিয়েও একটা ঝামেলা আছে। মিতুল ক্লাসের অন্য কারো জন্মদিন এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করে। জয়া ওর সবচেয়ে ভালো বন্ধু। জয়ার জন্মদিনে না গেলে খুব রাগ করবে। বাবার কাছে উপহার কেনার টাকা চাইলেই বাবা বলবে যাওয়ার দরকার নেই। কেন যে বাবার কাছে কখনই টাকা থাকে না? মিতুলের মন আরো খারাপ হতে থাকে।

মিতুলের রিক্সা শাহবাগের কাছে জ্যামে আটকে আছে। হঠাৎ রাস্তার পাশে চোখ পড়তেই মিতুলের মাথায় একটা আইডিয়া চলে আসলো।
মিতুলের একটাই সখ, নানা রকম ফুলের গাছ কেনা আর সেগুলোর যত্ন করা। যখন গাছে ফুল ফোটে, মিতুলের আনন্দের সীমা থাকে না।
ওর ছোট বারান্দায় নানারকম টবে নানা রঙের ফুলের গাছ। রোজ ভোরে উঠে গাছ গুলোতে পানি দেয়, যত্ন করে। বাবা তখন ঘুমিয়ে থাকে। মিতুল মাঝে মাঝে গাছের সাথে ফিস ফিস করে কথাও বলে!

মিতুলের বাবা মাসের শুরুতে মিতুলের হাতে স্কুলে আসা যাওয়া আর টিফিনের টাকা তুলে দেন। মিতুল সেটা খুব হিসাব করে খরচ করে। অনেক সময় হেঁটেই বাসায় ফেরে আবার অনেক সময় টিফিন কিনে খায় না। মাসের শেষ দিকে যখন হাতে কিছু টাকা জমে, সেটা দিয়ে ও গাছ কেনে, নানান রঙের টব কেনে।

এখন হাতে কিছু টাকা আছে। জয়াকে গোলাপের দুইটা চারা দেবে জন্মদিনে। সাদা আর হলুদ গোলাপ জয়ার খুব পছন্দ। সাদা গোলাপের চারা বাসায় আছে। হলুদ গোলাপের চারা কিনতে হবে।
মিতুল ঝপ করে রিক্সা থেকে নেমে গেলো। রাস্তার পাশে এই দোকানটা তার পরিচিত।
'কি গো আম্মা , আজকে কোন গাছ নিবেন?' মিতুলের দিকে তাকিয়ে হাসে দোকানদার বাদশা মিয়া।
মিতুল স্কুল থেকে যাওয়ার পথে প্রায়ই বাদশা মিয়ার দোকানে দাঁড়িয়ে গাছ দেখে, কোন গাছের কিভাবে যত্ন করতে হয় জানতে চায়। কোনো কোনো দিন কেনে, কোনদিন আবার গাছ দেখেই চলে যায়। কোনদিন আবার বলে যায় যেন চারাটা ওর জন্য রেখে দেয়। বাদশা মিয়ার দোকানে গাছের কালেকশন ভালো। তবে এমন গাছ পাগল আর কেউ আসে না।
'মামা, আপনার কাছে হলুদ গোলাপের চারা আছে?'
'আছে,তয় দাম কিন্ত দুইশো ট্যাকা। কমাইতে কইলে লজ্জা পামু। কিনছি একশো নব্বই ট্যাকা দিয়া। দশ ট্যাকা লাভ না করলে চলবো ?'
মিতুলের ব্যাগে সাতাশি টাকা আছে। বাদশা মিয়া মিতুলের শুকনো মুখ দেখেই বোঝে, মিতুলের কাছে টাকা নেই।
'মামা, আমার কাছে দুইশো টাকা নেই। একটু কম করে দেন না। আমার বান্ধবীর জন্মদিনে উপহার দেব।'

বাদশা মিয়া গামছা দিয়ে মুখ মোছে। তার দোকানের সামনে ভ্যান দাঁড়িয়ে আছে। ভ্যানে করে কিছু তরতাজা গাছ নিয়ে যাবে। বিভিন্ন অফিসে শোভা বাড়ানোর জন্য। দু এক মাস পর তরতাজা গাছ গুলো নেতানো হয়ে ফিরে আসবে। সেই নেতানো গাছ গুলো আর বাঁচে না। বাদশা মিয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
'কত ট্যাকা আছে আম্মা?'
'একশো সাতাশি টাকা আছে।'
'ঠিক আছে, একশো ট্যাকা দিয়া গাছ লইয়া যান, বাকি একশোপরে দিয়েন।'
মিতুলের মুখ হাসি হাসি হয়ে গেল। বাদশা মিয়ার বড় ভালো লাগে মিতুলের হাসি মুখটা, যেন সাত রাজার ধন পেয়েছে। প্রতিটা গাছ কেনার পর মিতুলের মুখ এভাবেই ঝলমল করে। বাদশা মিয়ার দোকান থেকে গাছ কিনে আর কেউ এত খুশি হয় না।

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

মাকসুদ সাহেবের হাত কাঁপছে। বুক ধরফর করছে আর অকারণেই ভিশন ঘাম হচ্ছে। নিজেকে শান্ত রাখার হাজার চেষ্টা করেও হচ্ছে না। মাকসুদ সাহেব প্রানপনে চেষ্টা করছেন তার টেনশন যেন বাইরে থেকে বোঝা না যায়।
'এই যে মাকসুদ সাহেব। আপনার কি শরীর খারাপ? এমন দেখাচ্ছে কেন?'
মাকসুদ সাহেবের পাশের টেবিলে বসেন আজাদ সাহেব ; আড্ডাবাজ মানুষ। মাথার চুল সব সময় তেল দিয়ে পরিপাটি করে আঁচড়ানো, মুখে পান। পান মুখে নিয়েই ভদ্রলোক কথা বলতে থাকেন। মাকসুদ সাহেবের ধারণা অফিসের আশিভাগ সময় আজাদ সাহেব কথা বলে পার করেন। আজাদ সাহেব বেতন পাচ্ছেন কথা বলার জন্য। কোনো মানে হয়?
মাকসুদ সাহেব তেমন সাড়া দেননা বলে আলাপ তেমন জমে না।
'নাহ, শরীর ভালো' মাকসুদ সাহেব সাবধান হন। আজাদ সাহেব যেন আবার কিছু না বোঝে।
আজাদ সাহেব চোখ কুঁচকে তাকিয়ে থাকেন।তারপর জ্ঞান দেয়ার মত করে বলেন, 'ভাইরে, এখন বয়স হইছে, শরীর আর কত ভালো থাকবে বলেন? শরীরের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলে এই কোম্পানি থেকে লাত্থি মেরে বের করে দেবে, বুঝলেন? ইঞ্জিনের যত্ন নেন। ইদানিং আমি খেয়াল করছি,আপনাকে কেমন পোতানো লাগছে। ভাই, ডাক্তার দেখান। টাকা পয়সা লাগলে অফিস থেকে অ্যাডভান্স নেন। আমি গত মাসে নিয়েছি, বুঝলেন....................'
মাকসুদ সাহেব শুন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন, আজাদ সাহেবের কোনো কথাই তার কানে ঢুকছে না।
এই অফিসের একাউন্টস ডিপার্টমেন্টে সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট মাকসুদ সাহেব। গত ঊনিশ বছর ধরে চাকরি করছেন। জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট থেকে সিনিয়র হয়েছেন, এর চেয়ে বেশি কিছুই নাই। বেতন দিয়ে টেনেটুনে চলে।
আজকে দুপুরে ক্যান্টিনে লাঞ্চ করতে ভালো লাগছিল না। শরীরটা আসলেই কেমন লাগছিল, জ্বর জ্বর। তাই তাড়াতাড়ি চলে আসলেন অফিসে।
এসে দেখেন তার টেবিলের পাশে একটা বাদামী রঙের খাম পড়ে আছে। খামের ভেতর একহাজার টাকার নোট ভর্তি।
মাকসুদ সাহেব এদিন সেদিক দেখলেন। অফিসে এখনো কেউ ফেরেনি। খামটা নিজের ব্যাগে ঢুকিয়ে রেখে চেয়ারে বসে ভাবতে লাগলেন কার টাকা হতে পারে।
অফিসের দোতলায় একাউন্টস ডিপার্টমেন্ট। চার তালায় ফাইনান্স ডিপার্টমেন্ট, টাকা পয়সার লেনদেন ,ক্যাশিয়ার সব ওখানে। এই অফিসে টাকা কিভাবে আসল?
মাকসুদ সাহেব মাথা ঠান্ডা করে ভাবতে থাকলেন সকাল থেকে কে কে ওনার টেবিলে এসেছে। তাদের মধ্যে কেউ কি ফেলে গেল খামটা?
তেমন কাউকে মনে পড়ছে না। হেড অফিসের দুইজন এসেছিল কয়েকটা ইনভয়েস নিতে। ফাইনান্স ডিপার্টমেন্ট থেকে কাদের সাহেব এসেছিল একটা ফাইল নিতে আর দুই একজন সাপ্লাইয়ার এসেছিলো। এদের মধ্যেকার কাছেই এত টাকা থাকার কথা , লাখ খানেক টাকা তো হবেই। টাকার লেনদেন সব তিন তলায় , ওখান থেকে টাকা বের হলে সাথে স্লিপ থাকে। খামের ভেতর কোনো স্লিপ নেই।
কোনো বাইয়ার ফেলে যেতে পারে। সেরকম কেউ তো আসেনি।

মাকসুদ সাহেব অফিস শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করলেন। যার এত গুলো টাকা হারিয়েছে, এর মধ্যে অবশ্যই খোঁজ করতে আসবে। কেউ আসল না। বৃহস্পতিবার বলে তিনটার পরই অফিসে ফাঁকা হতে থাকে। মাকসুদ সাহেব ছয়টা পর্যন্ত বসলেন।

অফিস যখন একেবারে খালি তখন ধীর পায়ে বের হয়ে আসলেন। এমনও তো হতে পারে, টাকাটা অলৌকিক ভাবে তার কাছে পৌঁছে গেছে? আল্লাহ জানেন, এই মুহুর্তে মাকসুদ সাহেবের টাকা কত প্রয়োজন, তাই হয়ত টাকাটা এভাবে এসে পড়লো। অথবা যার টাকা হারিয়েছে তার কাছে এই টাকা কিছুই না, তা না হলে তো কেউ খুঁজতে আসতো। মাকসুদ সাহেন চিন্তিত ভাবে বাসার দিকে রওয়ানা দিলেন।

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

মিতুলের হাতে পায়ে মাটি। সে সারা বিকাল ধরে গোলাপের চারা দুটোকে সুন্দর দুইটা টবের মধ্যে সাজিয়েছে। নতুন করে মাটি দিয়ে হালকা পানি দিয়েছে, নিজের হাতে সুন্দর করে একটা জন্মদিনের কার্ড বানিয়েছে।

মাকসুদ সাহেব ঘরে ঢুকে দেখেন মিতুল গুন গুন করে গান গাইছে আর বসার ঘরের টেবিলের উপর কুজো হয়ে কি যেন লিখছে।
'বাবা দেখো , জয়ার জন্মদিনের কার্ড বানিয়েছি, কেমন হয়েছে ? আর দেখো ওর জন্য গোলাপের চারা কিনেছি। কেমন চমকাবে আমার গিফট দেখে , চিন্তা কর?'

মাকসুদ সাহেব জবাব দিলেন না, তার ভিশন মাথা ব্যাথা করছে। মিতুলের হাসি মুখ দেখে কেন জানি নিজেকে আরো বেশি বিষন্ন লাগছে।
'ভালো হয়েছে মামনি। আজকে রাতে কিছু খাব না , খুব মাথা ব্যাথা। আমি ঘুমিয়ে পড়ব তাড়াতাড়ি।'

মিতুল খুব চিন্তিত হয়ে বাবার মাথায় হাত রাখে। 'জ্বর হয়নি তো বাবা? লাঞ্চ খেয়েছিলে ঠিক মত? প্যারাসিটামল দেই, খাও?'
মাকসুদ সাহেব হাসলেন। তার এই মেয়েটা পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মেয়েদের মধ্যে একজন। মিতুলের মা রাবেয়া পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মেয়ে ছিল, তার মেয়ে ভালো না হয়ে কোথায় যাবে?

'এত চিন্তার কিছু নাই, একটু ঘুমালেই দেখবি সব ঠিক হয়ে গেছে।'
মাকসুদ সাহেব নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলেন। ব্যাগ থেকে নিষিদ্ধ জিনিস বের করার মত করে খামটা বের করলেন। নোটগুলো গুনে দেখেন একলাখ বিশ হাজার টাকা আছে।

মিতুলের মা মারা গেছেন পাঁচ বছর হলো। খুব কষ্টের সময় গেছে তারপর। গত পাঁচ বছরে মাকসুদ সাহেবের বয়স বেড়েছে বিশ বছর। প্রাইভেট কোম্পানির চাকরী দিয়ে কোনো রকমে টেনেটুনে যাচ্ছে। মিতুলকে ঢাকার নামী স্কুলে পড়াচ্ছেন। মিতুলের পেছনে বেতনের বড় অংশ চলে যায়। তা যাক, মেয়েটার জীবন সুন্দর হলে আর কি লাগে।

কিনতু তাতে কি সব চাওয়া মেটে মেয়েটার? মিতুলের ফোন নষ্ট হয়ে গেছে, একটা ফোন কেনা দরকার। ওর গাছের খুব সখ, একটা সেল্ফ কিনে দিলে গাছ গুলো সুন্দর করে সাজিয়ে রাখত। গাছ দিয়ে মেয়েটা বারান্দা ভরিয়ে ফেলেছে। বাসায় একটা নতুন টিভি দরকার। এই টিভির পর্দা প্রায়ই কাঁপতে থাকে, মিতুল গিয়ে টিভির উপর দুই তিনটা চাপড় দিলে আবার ঠিক হয়। মিতুল বলে, 'দেখেছো বাবা, মাইরের উপর ওষুধ নাই, হিহিহি ।'

এলোমেলো ভাবনায় কখন ঘুমিয়ে পড়েছেন টের পাননি মাকসুদ সাহেব। সকালে উঠে পরিপাটি হয়ে নাস্তা করে বেরিয়ে পড়লেন। মিতুল বারবার বলল বিকালে যেন তাড়াতাড়ি আসে, ও জয়ার জন্মদিনের পার্টিতে যাবে, মাকসুদ সাহেব মিতুলকে ওখানে নামিয়ে দিয়ে আসবেন আবার নিয়েও আসবেন।

মাকসুদ সাহেব ব্যাগে করে টাকাটা নিয়ে গেলেন।প্রথমেই গেলেন এলিফান্ট রোডে ফার্নিচারের দোকানে। বেশ কয়েকটা দোকানে ঘুরে একটা সেল্ফ খুব পছন্দ হলো, চার হাজার টাকা দাম । বেশি দাম মনে হছে না ,তার কাছে আজকে যথেষ্ট টাকা। সেল্ফ এর দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থেকে কি মনে করে কিনলেন না। মিতুল যদি পছন্দ না করে? তার চেয়ে বরং আজকে সব ঘুরে দাম জেনে নেয়া যাক, পরের শুক্রবার মিতুলকে নিয়ে কেনা যাবে।

এর পরে গেলেন ইস্টার্ন প্লাজায়। কত যে বাহারের ফোন আছে সেখানে ! মাকসুদ সাহেব সাবধানে ব্যাগটা সামলে রাখেন আর দোকান ঘুরে ঘুরে ফোন দেখেন। একটা ফোন কিনে মিতুলের জন্য নিয়ে গেলে কেমন হয়? মেয়েটার আনন্দময় চেহারা দেখার চেয়ে বড় আনন্দ আর কিছুই নেই। তারপর আবার মনে হলো টিনএজ মেয়েদের কত রকম সখের ব্যাপার আছে। আজকে ফোন কিনে নিলে পছন্দ না ও হতে পারে। তখন আবার বলবে , বাবা আমাকে নিয়ে কিনলেই পরতে। তখন আবার দোকানে ফোন সেট বদলাতে আসলে দোকানদার চিনবেই না। থাক, বরং মিতুলকে নিয়ে কেনা যাবে।

কখন যে দুপুর পেরিয়ে যাচ্ছে মাকসুদ সাহেব খেয়াল করেননি। ইস্টার্ন প্লাজা থেকে বের হয়ে একটু হাঁটতেই একটা চায়নিজ রেষ্টুরেন্ট , জিং লিং। কি যে আজব নাম! মিতুল নাকি তার কোন বান্ধবীর জন্মদিনে এখানে খেয়েছিল। বাবার কাছে গিয়ে তার কত গল্প, খাবার নাকি খুব মজা। মাকসুদ সাহেব ভাবলেন এখানেই খাবেন। তারপর কি মনে করে আর ঢুকলেন না। একা একা খাচ্ছেন, কেমন দেখায়?

পাশেই একটা ভাতের হোটেলে ঢুকে ভাত মাছের ঝোলের অর্ডার দিলেন। নিজের পকেট থেকে টাকা বের করে দিলেন, খামটা সবার সামনে বের করতে কেমন অস্বস্তি লাগছিল।

ভাত খেতে খেতে ভাবলেন, টাকাটা ভাগ্যক্রমে তার কাছে এসেছে। আজে বাজে খরচ করে শেষ করে দিলে কোনো লাভ নেই। মিতুল সামনের বছর ক্লাস টেনে উঠবে, তারপরই কলেজ। কত্ত খরচ !টাকাটা চুপচাপ ব্যাঙ্ক এ রেখে দিলেই হবে !তাছাড়া তার নিজের শরীরও ভালো না। কখন কি বিপদ আপদ হয়।

মাকসুদ সাহেব উঠলেন, বাসায় ফিরতে হবে। প্রায় চারটা বাজে। মিতুল আবার কোথায় যেন যাবে।
বাসে খুব অন্যমনস্ক হয়ে বসে ছিলেন, কেমন যেন একটা মন খারাপ লাগা, তার হাতে এত গুলো টাকা, মন থাকার কথা ফুরফুরে।
'ভাই, ব্যাগে কি সোনা দানা লইয়া বসছেন? এমনে বুকের লগে আটকাইয়া রাখছেন কিসের জন্য ? আমার সরিলে লাগতে আছে, নিচে রাখেন দেহি ' পাশের লোকটা বিরক্ত মুখে বললো।
মাকসুদ সাহেব চমকে তাকালেন। সত্যি তো, কখন যে পাথরের মত ভারী ব্যাগটা বুকের সাথে চেপে রেখেছেন নিজেও টের পাননি।
বাসায় ফিরে দেখেন মিতুল সুন্দর করে সেজে বসে আছে।
'বাবা এত দেরী করলে কেন? আমার পাঁচটার মধ্যে যাওয়ার কথা।
মাকসুদ সাহেব মিতুলকে নিয়ে রিক্সায় উঠলেন। মিতুল হড়বড় করে অনেক কিছু বলছে। মাকসুদ সাহেব হু হা করছেন।

মিতুলের হাতে বিশাল একটা গিফট বক্স। সে সাবধানে গিয়ে জয়ার বাসার কলিং বেল চাপলো।
জয়ার সাথে আরো এক দঙ্গল মেয়ে এসে দরজা খুলল।
' শয়তান, তুই এত দেরী করে আসলি কেন?' দরজা খুলে হাসি মুখে জয়া বলল।
জয়ার হাতে গিফট দিয়ে মিতুল সবার সাথে ভেতরে চলে গেল।

মাকসুদ সাহেব দূর থেকে দেখলেন। কত সুন্দর বাসায় থাকে জয়া, এসব দেখে নিজের জীবনটা বনধুদের জীবনের সাথে তুলনা করে কষ্ট পায় নাতো মেয়েটা?

মিতুল জয়ার বাসায় আগে আসেনি। কি সুন্দর সব কিছু! কি সুন্দর করে সব সাজানো। জয়ার মা কত খাবার রান্না করেছে, কেমন আদর করে সবাইকে খাবার তুলে দিচ্ছে। অজানা কারণে মিতুলের কষ্ট হয়।

খাওয়ার পর জয়া ঠিক করেছে সবাই মিলে ভুতের মুভি দেখবে। মুভির নাম 'এনাবেল' , একটা পুতুলের মধ্যে নাকি ভুত থাকে ! সবাই খুব উত্তেজিত।
হঠাৎমীরা বললো 'জয়া , চল , তোর গিফট গুলো খুলে দেখি।'
সবাই হই হই করে গিফট খুলতে গেল। মীরা জয়ার বেশি কাছের বন্ধু। মিতুলের মনে হয় মীরা মিতুলকে খুব একটা পছন্দ করে না। মীরা সারাক্ষণ গল্প করে ছেলেদের নিয়ে। কোন ছেলে কবে তাকে মেসজ দিল, কোন ছেলে তার জন্য স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে , খালি এইসব গল্প। জয়াও সেসব শুনে খুব মজা পায়। মিতুলের এসব ভালো লাগে না।

জয়া একটা একটা করে গিফট খুলছে, কেউ দিয়েছে সুন্দর ব্যাগ, কেউ শোপিস। মীরা দিয়েছে হিন্দি মুভির ডিভিডি সেট। জয়া এবার খুলল মিতুলের গিফট। গিফট বক্স দুইটা টব বের হলো। জয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো।
মীরা মুখ ফসকে বললো ' আরে, গাছ কেউ দেয় বার্থডেতে! কি আশ্চর্য !'
সবার মধ্যে একটা হাসির গুঞ্জন উঠে। জয়া আলগোছে টব দুটো সরিয়ে রেখে পরের গিফট বক্স খুলতে শুরু করে। একবার জানতেও চায় না এগুলো কিসের চারা । জয়ার প্রিয় গোলাপের চারা দেখে যেরকম আনন্দিত হওয়ার কথা মিতুল ভেবেছে, জয়া সেরকম আনন্দ দেখায় না।

মিতুলের চোখ ভেঙ্গে কান্না আসে। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলায়। আজকের দিনটা যত আনন্দের মনে হচ্ছিল, মতেই সেরকম আনন্দ হচ্ছে না।
জয়া সব গিফট দেখে মুভি দেখতে বসে গেছে। মিতুল একটু টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে আড়ালে চলে গেলো।

চোখ মুছে বাবাকে ফোন করে বলল যেন এখনি নিতে আসে, ওর এখানে ভালো লাগছেনা। বাথরুমে গিয়ে মুখে পানি ছিটালো। বাবা ওকে কাঁদতে দেখলে খুব কষ্ট পাবে।

বাথরুম থেকে বের হয়ে করিডোর দিয়ে আসতেই টেবিলের উপর চোখ পরে মিতুলের। জয়ার নতুন আইফোন চার্জে দেয়া।
মিতুল গুটি গুটি পায়ে ফোনটার দিয়ে এগিয়ে যায়; হাতে নিয়ে নেড়ে চেড়ে দেখে। এরকম একটা ফোন ওর কখনই হবে না। এদিক সেদিক দেখে ফোনের পাওয়ার অফ করে ব্যাগে ঢুকিয়ে নেয়।

মাকসুদ সাহেব খেয়াল করলেন মিতুল খুব চুপচাপ। জন্মদিনে যাওয়ার আগে কত কথা বলছিল। এখন কেমন চুপ!
'কি হয়েছে মিতুল? কথা বলছিস না? জন্মদিন কেমন হলো? অনেক আনন্দ হয়েছে? কিছুই তো বলছিস না। '
মাকসুদ সাহেব খেয়াল করলেন মিতুল নিঃশব্দে কাঁদছে।
'বাবা আমি খুব অন্যায় একটা কাজ করেছি। '
মাকসুদ সাহেব মেয়েকে জড়িয়ে ধরলেন । তার বুকটা হুহু করে উঠলো।
'কি অন্যায় করেছিস বল? আমার এই লক্ষী মেয়েটা কোনো অন্যায় করতে পারে না। '
'বাবা , তুমি রিক্সা ঘোরাতে বলো। জয়ার বাসায় চলো , আমি ভুলটা শোধরাতে চাই। '
'কি অন্যায় বলবি তো। '

মিতুল কিছুক্ষণ কি ভেবে ফিসফিস করে বলল, 'আমি জয়ার ফোন চুরি করেছি বাবা।'

মাকসুদ সাহেব স্তব্ধ হয়ে গেলেন। মিতুল ভেবেছিল তার বাবা প্রচন্ড রাগ করবে, বকা দেবে। মাকসুদ সাহেব সেরকম কিছুই করলেন না।
'বাবা, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি এক্ষুনি গিয়ে ফোনটা আবার আগের জায়গায় রেখে আসব। আমি কক্ষনো এমন করব না। আমি কেন এমন করেছি , আমি জানি না বাবা । ' মিতুল ঝর ঝর করে কাঁদতে থাকে।

'রিক্সাওয়ালা ভাই, রিক্সা ঘোরান।' শান্ত স্বরে বললেন মাকসুদ সাহেব।
'মিতুল , জয়া হয়তো এর মধ্যে তার ফোন খুঁজতে শুরু করে দিয়েছে। এখন তুই গিয়ে কিভাবে ফোন আগের জায়গায় রাখবি?'
মিতুল একটু ভেবে বলে, 'আমি জয়াকে সরি বলে ফোনটা ওর হাতে দেবো । '

সেরকম কিছু হয়নি জয়ার বাসায় । সবাই হরর মুভিতে মগ্ন। মিতুলকে দেখে জয়া ভিশন খুশি।
'তুই চলে এসেছিস, ভালই হয়েছে। এখন আবার যেতে পারবি না। '
'নারে, আমি ঘড়ি ফেলে গেছি বাথরুমে,সেটা নিতে আসলাম।'
'ওহ, আমার জন্য না, ঘড়ির জন্য এসেছিস।'

মিতুল একটু হেসে ভিতরে গিয়ে ঠিক আগের জায়গাতে ফোনটা রেখে আসে।
মিতুলকে আবার বিদায় দিতে আসে জয়া।
'মিতুল, তোর গিফট আমার খুব ভালো লেগেছে।তোর কার্ড এর ভেতরে লেখা দেখলাম এগুলো গোলাপের চারা। আমার প্রিয় গোলাপের কথা তুই মনে রেখেছিস ?'
'এখন যাই জয়া। '
'তুই মীরার কথায় মন খারাপ করিস না। আর আমাকে বলবি কিভাবে গোলাপ গাছের যত্নই নিতে হয়। যেদিন গোলাপ ফুটবে, সেদিন তুই এসে দেখে যাবি আমি কেমন যত্ন নিয়েছি।'
জয়া মিতুলকে জড়িয়ে ধরে।
মিতুলের সব কষ্ট এক নিমিষে উধাও হয়ে যায়।

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

শনিবার হাফ বেলা অফিস। মাকসুদ সাহেব অফিসে গিয়ে দেখেন আজাদ সাহেব নিজের চেয়ারে বসে খবরের কাগজ পড়ছেন। মাকসুদ সাহেব নিজের টেবিলে গিয়ে বসতেই আজাদ সাহেব বললেন ,'ঘটনা তো খারাপ মাকসুদ সাহেব। '
এটা আজাদ সাহেবের আড্ডা দেয়ার সূচনা বাণী। তারপর অফিসের ছোটখাটো ঘটনা রসিয়ে বলবেন। যেন ব্রেকিং নিউজ হয়েছে , আসলে তেমন কিছুই না।
'কি আবার হয়েছে?'
'কাদের সাহেব আছে না? ফিনান্স এ? খুব যে দেমাগ দেখায়? তার তো খেল খতম। ' বলে আজাদ সাহেব চুপ করে গেলেন। অপেক্ষা করছেন মাকসুদ সাহেবের আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন করার।
মাকসুদ সাহেব কিছুই বললেন না। সকাল থেকেই তার মাথা ব্যথা। ব্লাড প্রেশার বাড়লো কিনা কে জানে।
'মাকসুদ সাহেব, কাদের সাহেব অফিসের টাকা মারে। হাতে নাতে ধরা খেয়েছেন।'
'বলেন কি?'
'ঠিক বলি ভাই. আমি তাগেই বলেছিলাম, লোকটা সুবিধার না। আমার কথা তো কেউ পাত্তা দেয় না। কোন বায়ার নাকি একলাখ টাকার মত এমাউন্ট উনার কাছে দিয়েছিল। উনি কোনো রিসিট দেয় নাই , একাউন্টসেও জানায় নাই। তারপর এখন তো হিসাব মিলে না। এমডি স্যার বলেচেন চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে টাকা বের করে না দিলে কাদের সাহেবকে পুলিশে দেবে। চাকরি যে থাকবে না সেটা তো আর বলতে হবে না। বেশি দেমাগ দেখা এমনি হয়।
কাদের সাহেব দুই বছর হলো এই অফিসে জয়েন করেছেন। কারো সাথে তেমন মেলামেশা করেন না। লাঞ্চ এর সময় সবাই যখন আড্ডায় মগ্ন,তখন কাদের সাহেব আলাদা টেবিলে বসে নিজের ফোনে টেপাটিপি করেন নয়তো খবরের কাগজ পড়েন ।
মাকসুদ সাহেবের সাথেও খুব একটা আলাপ হয় না। দেখা হলে সালাম, কেমন আছেন, ওই পর্যন্তই।
কিছুদিন আগে কাদের সাহেবের অফিসে গিয়েছিলেন একটা কাজে। গিয়ে দেখেন কাদের সাহেবের টেবিলে এক বক্স মিষ্টি। কাদের সাহেব মিষ্টির বক্স এগিয়ে দিয়ে মাকসুদ সাহেব কে খেতে বললেন।
'মিষ্টি কেন?'
' ভাই , আমার ছেলেটা মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। ছেলেটা গাধার সমপর্যায়ের। ইন্টারে জিপিএ ৪.৮৭ পেয়েছে। জিপিএ ৫ পেয়ে ছেলেরা ঘুরছে, কথাও চান্স পাচ্ছে না, এই ছেলে কি পাবে। আমি তাকে বললাম, দোষ তার না, দোষ আমার ; আমি ছেলে মানুষ করতে ব্যার্থ । ছেলে জেদ করে এমন পড়া পড়ল, মেডিকেলে চান্স পেয়ে গেল। অফিসের সবাইকে মিষ্টি খায়ানো তো সম্ভব না, তাই এই মিষ্টি। যারা যারা আজকে আমার টেবিলে আসবে তারা সবাই মিষ্টি খাবে। ' কাদের সাহেবের চোখে পানি চিক চিক করে।
'তাহলে তো আমি খুব লাকী !' মাকসুদ সাহেব মিষ্টি মুখে দিলেন।


মাকসুদ সাহেব নিজের ব্যাগটা উঠিয়ে তিন তলায় কাদের সাহেবের সাথে দেখা করতে চলে যান.
'কাদের সাহেব নিজের কেবিনে বসে চোখ কুচকে ফাইলে কি যেনো দেখছেন। মাকসুদ সাহেবকে দেখে বিরক্তি নিয়ে তাকালেন।
'কি ব্যাপার , আপনি এখানে?'
'আপনার কত টাকা হারিয়েছে বলেন তো?
'আপনি জেনে কি করবেন?'
কাদের সাহেব মুখ কালো করে তাকিয়ে আছেন।
'আমার জানা দরকার। '
'এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা। জেনে কি করবেন? বাটি চালা দিয়ে চোর ধরবেন?'
'আপনি চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে টাকা বের করে দিতে পারবেন ?'
'আমি তো চুরি করি নাই, আমি চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে কোত্থেকে বের করব? আপনি কি আমার সাথে তামাশা করেন?'
মাকসুদ সাহেব একটু হেসে ব্যাগ থেকে খামটা বের করে কাদের সাহেবের দিতে বাড়িয়ে দিলেন।
'ভাই, টাকা পয়সা একটু সাবধানে রাখবেন। '
কাদের সাহেব হা করে তাকিয়ে থাকেন ।
মাকসুদ সাহেব নিজের ব্যাগটা উঠেয়ে নিজের টেবিলের দিয়ে রওয়ানা দিলেন। তার ব্যাগটা আর পাথরের মত ভারী লাগছে না।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ইমরানুল হক বেলাল একটি অসাধারণ গল্প আপনি আপনার লেখার যোগ্যতার জন্য পাঠকের রায়ে 3-স্হান পেয়েছেন । অভিনন্দন ।
ভালো লাগেনি ১০ জানুয়ারী, ২০১৬
এশরার লতিফ M4 মোটর ওয়ের এপাশ ওপাশ থেকে কেউ পুরস্কার পেলে বেশ ভালো লাগে :). অনেক অভিনন্দন.
অনেক ধন্যবাদ। ভালো পুরস্কার গুলো আপনাদের ওপারেই থাকে, আমাদের এপারে কোনো রকমে ৩য় পুরস্কার বা সান্তনা পুরস্কার আসে। ভালো থাকবেন।
শামীম খান অভিনন্দন রইল । শুভ কামনা ।
অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
সোহেল মাহমুদ মানুষের চেহারায় সৌন্দর্য ফুটে উঠে সত্য,কিন্তু সেটা হ্মণস্থায়ী।ভেতরের যে সৌন্দর্য, তা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে অনেক দিন।আপনার সৌন্দর্যের সাথে লেখার অনেকখানি মিল রয়েছে।নিয়মিত লেখার অনুরোধ রইলো।ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
আন্তরিক ধন্যবাদ।চেষ্টা করবো আরো ভালো লিখতে।
ভালো লাগেনি ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
সোহেল মাহমুদ এই লেখাটিতে লেখকের সুন্দর রুচিবোধের পরিচয় চমৎকার ভাবে ফুটে উঠেছে।বাবা মেয়ের এইযে সত্য নিষ্টা, নিঃশব্দে আলোর পথ দেখাবে আমাদের সবাইকে।সমাজের প্রতি একজন লেখকের যে দায়িত্ববোধ থাকা উচিত, সেটা আপনি করে দেখিয়েছেন।ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্য।
ভালো লাগেনি ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
আপনার সুন্দর মন্তব্যর জন্য অনেক ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
Firose Hossen Fien nice
ভালো লাগেনি ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
আন্তরিক ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
আবুল বাসার সুন্দর লিখেছেন।অনেক শুভ কামনা রইল।সাধুবাদ জানবেন।পাতায় আমন্ত্রণ রইল।
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
আন্তরিক ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
হুমায়ূন কবির সত্য চির দিনই…… অনেক সুন্দর হয়েছে।
ভালো লাগেনি ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
আন্তরিক ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
তুহেল আহমেদ গভীরতার ধারাবাহিক প্রকাশ , সুন্দর উপস্থাপনের অসাধারণ কাহিনী , ভালো লাগলো কোমলতায় --
ভালো লাগেনি ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
মতামত দেবার জন্য ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
এস আই গগণ চমৎকার গল্প।
ভালো লাগেনি ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
অনেক ধন্যবাদ সময় করে আমার লেখা পড়ার জন্য
ভালো লাগেনি ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

২২ জানুয়ারী - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ২৫ টি

সমন্বিত স্কোর

৫.২৭

বিচারক স্কোরঃ ৩.২৭ / ৭.০ পাঠক স্কোরঃ ২ / ৩.০

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪