''পাড়ায় পরীর লাহান মাইয়া আইছে যেমনে হোক তারে পটাইতে হইব''। এমনি দৃঢ় সংকল্পে বদ্ধ আমাদের পাড়ার মদন। প্রতিদিন ম্যাচের স্মার্ট ছোট্ট ভাইদের স্টাইলিস্ট জামা কাপড় ধার করে মেয়েটিকে ইম্প্রেস করার জন্য ঘুর ঘুর করে। গত সাতদিন ধরে ট্রাই করছে যদিও এখন পর্যন্ত কোন লাভ হয়নি। ঘটনার দিন- পরী ভোরে তার বাবার সাথে মর্নিং ওয়াকে বের হয়। তাই মদনা ভাইও ভোরে রফিকের ট্রাওজার আর কেডস পড়ে সাজে ফ্লাট থেকে নিচে রাস্তায় নেমে শোনেন তার পরী আর তার বাবাসহ আরো কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছে। আর তার পরী গগন বিদারক চিৎকার দিয়ে মোবাইল চোর! মোবাইল চোর! বলে পয়েন্ট করছে এক ছোকরাকে। পরীর চিল্লানি একদম কলিজা বরাবর তীরের মত বিঁধল মদন দার। - আমার পরীর মোবাইল চুরি করছিস শালা! এই বলে মদন দা চোরের পিছনে ছুটলো। এইটাই মোক্ষম সুযোগ পরীকে ইম্প্রেস করার। চোর ছুটছে তার পিছে পিছে মদনা ভাই। কিন্তু ততক্ষণে চোরকে রোডের মাথায় এলাকার চার্মিং বয় সোহান ধরে ফেলেছে। মদন ভাই কিছুতেই সোহানকে চোর ধরার ক্রেডিট নিতে দিবেনা; পরীর মন জয় করার সুযোগ দিবে না। এই ভেবে সে দৌড়ে গিয়ে সোহানের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ল। ভাবটা এমন নিল যে সে চোর ধরতে এসে নিজেকে সামলাতে পারেনি। আর এই সুযোগে চোরও দিল ভো দৌড়। এটাই তো মদন ভাই মনে মনে চাচ্ছিল। মদনা ভাই আবার চোরের পিছে পিছে ছুটতে লাগলো। চোর ছুটছে মদনা ভাই ছুটছে। মিনিট পাঁচেক চোর-পুলিশ খেলার এক সময় চোর একটা গলিতে গিয়ে ঢুকল। দুজনেই থেমে হাপাচ্ছে। এমনিতেই মদনা দা হাপানীর রুগী। এখন তার ইনহেলার নিতে হইব নয়তো কোন অঘটন ঘইটা যাইব। ডিস্টেন্স ২০ হাত,মদনা ভাই চোরকে উদ্দেশ্য করে, - ভাই মোবাইলটা দিয়া দে! তোর পায়ে পড়ি। - চুরি কি মাগ্নাই করছি? এইটা বেইচা কয়েকদিন ভালোই যাইব। - তুই কত বেচতে পারবি এইটা? আমারে দে আমি তোরে টাকা দিমু। - ৫০০০ হাজার টাকাতো বেচতে পারমু। - ৫০০০ হাজার টাকা? চোরাই মাল ২০০০ টাকার বেশী বেচতে পারবিনা। তারচেয়ে আমারে দে। আমি তোরে ২০০০ টাকা দিতাছি। - ৪০০০ টাকা! শেষ দর! - আমার কাছে অত টাকা এখন নেই, লক্ষ্মী ভাই আমার! এক কাজ কর, আমার মোবাইলটা আর এই ২০০০ হাজার টাকা নে! তারপরও আমাকে এই মোবাইলটা দে! - আচ্ছা ঠিক আছে। আগে আপনে টাকা আর মোবাইল দেন। তয় ডিস্টেন্স বজায় রাখেন। আমরা চোর হইলেও এক জবান। মদনা ভাই মোবাইলের সিম খুলে মোবাইল আর টাকা দুটোই চোরকে দিল। চোরও তার কথা রাখল।
পরিশিষ্টঃ মদনা ভাই খুব খুশি। মদনা ভাই আজকে পরীর সাথে প্রথম কথা বলবে। আজকে তার সাহসিকতায় মুগ্ধ হয়ে যাবে। প্রথমে ফ্রেন্ডশিপ তারপর প্রেম। পরীর বাবা হয়তো তাকে সকালের নাস্তা করানোর জন্য বাসায় নিয়ে যাবেন। মদনা ভাই নিজ রোডে ফিরে এসেছেন মোবাইল নিয়ে। রোডের ভিতর বেশ ভালোই জটলা পেকেছে কিন্তু পরী নেই। মদনা ভাই ভাবলো হয়তো মন খারাপ করে বাসায় চলে গেছে। মদনা ভাই মহিলাদের উদ্দেশ্য করে বলল, -''আন্টি অনেক কষ্ট করে মোবাইলটা উদ্ধার করেছি।'' ভীড়ের ভেতর থেকে এক মোটু সুমি আন্টি সামনে এসে বলল, - আরে এটাত আমার ফোন বাবা। ধন্যবাদ তোমাকে! এত কষ্ট করে আমার ফোনটা উদ্ধার করার জন্য ধন্যবাদ। এই বললে ধীরে ধীরে জটলা কমতে লাগল। ব্যাস এইটুকুই। মদনা ভাইয়ের মাথা চক্কর দিতে লাগলো। কার জন্য সে এতকষ্ট করলো? পরীর ফোন ছিল না এটা। মুটকা আন্টির ফোন উদ্ধার করতে যেয়ে নিজের ফোন আর তার এই মাসের হাত খরচের টাকা খোয়ালো। বাকি মাসটা চলবে কি করে?? কোন রকমে ফ্লাটে ঢুকেই মদন ভাই অজ্ঞান হয়ে গেল।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।