সংগ্রামী জনতা (একটি কাল্পনিক কথামালা)

sakil
১৬ জুন,২০১২

আমাদের গ্রামের কুদ্দুস চোরের নাম সকলের জানা। কুদ্দুস যখন চুরি করে তখন সবাইকে জানিয়ে মানে বলে কয়ে চুরি করে। কিন্তু তার চুরির কোন সাক্ষ্য প্রমান না থাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু করতে পারে না । থানার দারোগা বাবুর সাথে কুদ্দুসের ভীষণ ভাব। দারোগা বাবুর কাছে কেউ নালিশ নিয়ে গেলে তিনি বার বার একই বুলি আওড়ান। ‘যান সাক্ষী প্রমান থাকলে নিয়ে এসে অভিযোগ করুন , আমি ব্যাবস্থা নেব।এমনি এমনি এসে বললে তো হবে না’। সাধারন মানুষ সাক্ষী প্রমান ও খুঁজে পায়না আর সে কারনে কুদ্দুস চোরা কে তার উপযুক্ত শাস্তি ও দিতে পারছে না। দিনের পর দিন চলে যায়। অবস্থার কোন পরিবর্তন নেই।

একদিন সকালে পুরো গ্রামে রব পড়ে গেল।কুদ্দুস চোরাকে পুলিশ বেদড়ক পিটিয়ে উল্টো তার নামে মামালা দায়ের করে জেলে পুরেছে। যাক বাবা এতদিনে বুঝি শান্তি এল। তবে কুদ্দুস চোরাকে যে কারনে দারোগা পিটালেন। সেই কারণটা হল গিয়ে এলাকার এম পি সাহেব। কুদ্দুস নাকি অপোজিশন পার্টি করে । হরতালের দিন মিছিলে ছিল। ব্যাস হয়ে গেল। এলাকার মানুষ মনে মনে ভীষণ খুশি । কিন্তু তাদের এই খুশি বেশিদিন স্থায়ি হল না । এলাকার পুলিশ গুলোর চরিত্র কেমন যেন বদলে গেল। আগে ঘুষ খেত, কিন্তু এখন ঘুষতো খায়ই সেই সাথে শুরু করেছে ব্যাপক হয়রানি। আজ অমুকের ছেলেকে গ্রেফতার তো কাল অমুকের ছেলে। ন্যায় অন্যায় দেখছে না পুলিশ। সবাই ভাবছে ওরে বাবা একি কাণ্ড।

এলাকার ছেলে শান্ত বি এ পাস করে সাংবাদিকতা করছে বেশ কয়েক বছর। সাধারণ মানুষ। যে কয়টাকা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে কোনরকম। তবে এলাকার সবাই শান্তকে মান্য করে । আজ সকালে কিনা সেই শান্তকে বেদড়ক পিটাল পুলিশ। ওমা এই নিয়ে যখন কিছু সচেতন মানুষ মানব বন্ধন করল। তখন দেশের সর্ব উচ্চ পর্যায়ের মন্ত্রীরা বলছে পুলিশ থেকে দূরে থাকুন। পুলিশ মনে হয় পা.....ত্তা হয়ে গেছে। তাহলে এই পুলিশ দিয়ে কি দেশের কিছু হবে?

শাহিন মোল্লা সেদিন ইউরোপ থেকে দেশে ফিরে এলেন। গ্রামের রহম আলির চা দোকানে বেশ আয়েশি ভঙ্গীতে বসে সেই দেশের পুলিশের প্রশংসা করতে লাগলেন। গ্রামের সাধারণ মানুষ মুগ্ধ হয়ে শুনতে লাগলেন। সে সময় আশি বছরের বৃদ্ধ মনু মিয়া বলে উঠলেন- আমাদের দেশের পুলিশ নাকি কন ঘটনার মোটিভ খুঁজে পায়না । কি লাভ এদের কে এত্ত এত্ত টাকা পয়সা দিয়ে পুষে । এরচেয়ে বাবা শাহিন তোমার ইউরোপ থেকে কিছু পুলিশ নিয়ে আস আমাদের জন্য।

এমন সময় রাস্তা দিয়ে টহলরত দুইটি পুলিশের গাড়ী এসে থামল মোড়ের চায়ের দোকানে । দফাদফ শব্দ করে বেশ কয়েকজন পুলিশ নেমে এসে সকলকে হাতকড়া পরিয়ে গ্রেফতার করে নিয়ে চলল থানার দিকে । তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এরা একত্রে বসে নাকি সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এলাকার মানুষ একেবারে ভয় পেয়ে গেল। সবাই ঘরের বাইরে আড্ডা দেওয়া বন্ধ করে দিল।

বারে বারে কোণঠাসা মানুষ আজ গভীর রাতে একজায়গায় মিলিত হল । বাঁচতে হলে বাঁচার মত বাঁচব। এভাবে মরব না । রাতের আঁধারে গন মানুষের ঢল তখন এলাকার থানা এবং সরকারি মহলের দিকে এগিয়ে চলল। তাদের সকলের চোখ গুলো চকচক করে জ্বলছে নতুন বিজয়ের আনন্দে। মৃত্য সেখানে তুচ্ছ। এলাকার পুরো মানুষ কে থানার দিকে এগিয়ে আসতে দেখে দারোগা বড় কর্তাকে ফোন দিলেন। কিন্তু বড় কর্তা তখন ফোন ধরবেন কোথা থেকে তার বাড়ির দিকে ও তখন এগিয়ে আসছে লাখো জনতার ঢল।

(পুরো লেখাটি কাল্পনিক এবং অবাস্তব, কারো সাথে কিংবা কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য লিখিত নয়। যদি কারো সাথে কিংবা কোন দেশের সাথে এই কাহীনির মিল খুঁজে পাওয়া যায় তা অনভিপ্রেত কাকতলা মাত্র)

আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আহমেদ সাবের "কাল্পনিক এবং অবাস্তব" এর সাথে বাস্তবের অনেক মিল খুঁজে পাই। লেখা সুন্দর হয়েছে।
sakil সঙ্গত কারনেই লিখতে হয় কাল্পনিক। বুঝতেই তো পারছেন?ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভকামনা রইল।

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী নয়।।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

ফেব্রুয়ারী ২০২৪ সংখ্যার বিজয়ী কবি ও লেখকদের অভিনন্দন!i