আপাতরমণীয়

বিন আরফান.
১১ নভেম্বর,২০১২


কমলাপুর হতে গাজীপুর পৌঁছার জন্য কিছুটা পথ যানজটকে জয় করতে ট্রেন যোগে এয়ারপোর্ট এসে নামি। প্লাটফর্ম পেরিয়ে স্টেশন অতিক্রম করে রাস্তার পশ্চিম পাশে এসে অপেক্ষারত যাত্রীদের ভীড়ে এসে দাঁড়াই। তখন রাত প্রায় আটটা। দীর্ঘ ত্রিশ মিনিট পর ময়মনসিংহ গামী একটি যাত্রীবাহী বাসের সিট ফাঁকা দেখতে পেয়ে দৌড়ে উঠি। গায়ে যদি আর দু’এক সের মাংশ থাকতো তাহলে হয়তো সীট কপালে জুটতোনা। পাতলা শরীরে ফাঁক ফোকর দেখে দ্রুত একটি সিটে বসে পড়ি। এতে এতটাই আনন্দিত হই যেন বিশ্বজয় করেছি। কিন্তু সিটের যে বেহাল দশা! মনে হচ্ছিল এই বুঝি সামনের সিটের যাত্রী সিটসহ আমার কোলে এসে পড়বে। একটু অসস্তি বোধ করছিলাম। পাশের জানালা দুটিরও নাজুক অবস্থা। গ্লাস নেই। ধূলাবালি যুক্ত বাতাসে গায়ে ময়লার স্তুুপ জমাট বাঁধতে শুরু করেছে আর একটু একটু শীত অনুভূত হচ্ছে। অসস্থি বোধও হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ ভিন্ন অনুভূতির জন্ম নেয়। দু’চারটা চুল উড়ে উড়ে আমার চোখে মুখে লাগছিল। বুঝতে বাকি রইলনা সামনের সিটে বসা ব্যক্তিটি নারী। তাকিয়ে দেখি ঘন কালো কেশবরণ কন্যা। মাথায় ওড়না নেই। অবশ্য ফ্যাশনের যুগে তার কোন প্রয়োজন হয়না। ওড়না ছাড়াই নারীদের সুন্দরর্য দারূন ফুটে উঠে। ক্লান্তির ভ্রমনে তা দেখায় উপোভোগ করার মত। দেখতে দেখতে অন্তত কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায়।

মনে কুমতলব জাগে রূপ দেখার। হতভাগ্য কপাল, গ্লাসটা থাকলে এ রাতে স্পস্ট দেখা যেত। এখন রূপের র’ও দেখা যাচ্ছেনা। তবে একেবারেই নিরাস হইনি। কোমরের একটি অংশ দেখতে পেলাম। আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে বলে কথা। টি-সার্ট আর জিন্সের প্যান্ট পড়া ছিল। সিটের একটি অংশ ফাঁকা থাকায় তা চোখে পড়ল। অতর্কিত বসার কারণে টি-সার্ট উপরে উঠে গিয়েছিল। যতটুকু অংশ দেখলাম তাতে অতিব সুন্দরী বলে মনে হল। এতটাই মনোহরী লাগছিল যেন দৃষ্টি ফেরানোই যাচ্ছিলনা। আজেবাজে চিন্তা করতে করতে গা গরম হয়ে যাচ্ছিল। পরম যতেœর সম্পদটাও সজারুƒর কাটার ন্যায় আকৃতি ধারণ করল। মোহের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম। শুধু আমি নই, দন্ডায়মান লোকগুলো নির্লজ্যের মত পলকহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। অনেকে তাকে নিয়ে কানে কানে গুঞ্জনও করছিল। তাদের এরূপ গুঞ্জনে আমি ঈর্ষাণ্বিত হই। মন চাইছিল তাদের চোখে মরিচ ডলে দিই। কিছু লোকের চরিত্র এমন হয়েছে, অনেক ভদ্র মহিলারা স্বাধীন ভাবে চলতে পারেননা। বেহায়াপনার একটা সীমা থাকা দরকার। আরে বাবা আমি না হয় চুলের ছোঁয়ায় পরিস্থিতির স্বীকার। কিন্তু তোমরা কেন ?


এভাবেই চলছি তো চলছিই। কখন যে ভাড়া পরিশোধ করেছি, কত দিয়েছি? তা কিছুই মনে নেই। অথচ হেলপার ডাকছে গাজীপুর চৌরাস্তা এসে পড়েছি। ওহ! তার ডাকটা কাবাবে হাড্ডির মত বিরক্তিকর লাগল। এতো  তাড়াতাড়ি চলে এল। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি বারোটা বাজে, যদিও ত্রিশ চল্লিশ মিনিটের পথ। তারপরেও মনে অতুষ্টি রয়েই গেল। আরও দুই ঘন্টা বেশি সময় লাগলে ক্ষতি কি হত? না, বেরসিক ড্রাইবার। ময়মনসিংহ পর্যন্ত যাওয়ার ইচ্ছা জন্মনিলেও উপায় নেই। সকালে অফিস, এখানেই নামতে হবে।
নামার পূর্বে মুখমন্ডলটা দেখার বাসনা জাগল। তাকিয়েই তড়িৎ গতিতে চোখ ফেরায়ে নিই। এতক্ষন রসগোল্লা নয়, গোল আলু চিবুচ্ছিলাম। ভেবেছিলাম সখি, এ দেখি সখা।

আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Lutful Bari Panna হা হা হা। দারুণ একটা লেখা মিস করে যাচ্ছিলাম দেখি। শেষ পর্যন্ত সখা!!! দারুণ লিখেছ হে। বর্ণনার ভঙ্গীটাও ভীষণ আকর্ষক।
বিন আরফান. এতো আপনার দোয়ার বহির্প্রকাশ ভাই. একটু আধটু আপনাদের অনুকরণ করছি এই আর কি !

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী নয়।।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

ফেব্রুয়ারী ২০২৪ সংখ্যার বিজয়ী কবি ও লেখকদের অভিনন্দন!i