“বলরাম কাশিরাম”

জাকিয়া জেসমিন যূথী
২৯ আগষ্ট,২০১৩

নতুন বিয়ে করা বউয়ের বড় খালার বাড়িতে জামাই, ননাশ আর শশুড় শাশুড়ির দাওয়াত ছিলো। শশুড় যায় নাই। বাড়িতেই ছিলো। খেয়ে দেয়ে বেশ রাত করে মগবাজার থেকে গ্রিণ রোডের বাসায় ফিরতি পথ ধরেছিলো ওরা চারজন। শাশুড়ি আর ননাশ এক রিকশায়। আর নতুন জামাই বউ এক রিকশায়। রিকশা চলতে শুরু করলে কখনো শাশুড়ির রিকশা আগে যায়, কখনো আবার নতুন বউয়েরটা। এভাবে চলতে চলতে শাশুড়ির রিকশাওয়ালা একবার জিজ্ঞেস করলো, “যেখানে যাইবেন, পথ চেনা আছে?”

শাশুড়ির থেকে “হ্যাঁ” জবাব পাওয়ার সাথে সাথে রিকশা যেন হঠাত পংক্ষীরাজ ঘোড়া হয়ে উঠলো। উড়িয়ে নিয়ে চললো মা মেয়েকে। দুজনে রিকশার গতির ঠেলায় পরে পরে অবস্থা। যদিও পেছন থেকে ধেয়ে আসা এক ট্রাকের কারণে মেয়ে কিচ্ছুটি বলছেনা। ওই অত বড় দানবের ধাক্কা খাওয়ার চেয়ে রিকশা কিছুক্ষণ উড়ে উড়েই যাক। ক্ষতি কি! অনেকটা যাওয়ার পরে রিকশা নিউ ইস্কাটন রোডের চৌরাস্তায় এসে পরেছে। ইতিমধ্যে পেছনে বউয়ের রিকশাটা উধাও। বার বার পেছনে ফিরেও তার পাত্তা পাওয়া যাচ্ছে না। কোথায় হারালো? কত দূরে? নতুন বউ! হাতে সোনার বালা! কোন ঝামেলায় পরলো না তো! রাত এখন এগারোটার কাছাকাছি! রাস্তাঘাট অন্ধকার। লাইট নিভিয়ে দিয়েছে অনেক দোকানপাটের। পংক্ষীরাজে বসা দুজনের পেছনের উধাও রিকশার যাত্রী দুজনের জন্য টেনশন হতে থাকে।

এক সময় পংখীরাজ ঘোড়া জায়গামত পৌঁছে যায়। তখনো পেছনের রিকশা লাপাত্তা।

বাড়ির গেট দিয়ে ঢুকে তালা খুলে ঘরে ঢুকে পরে মা মেয়ে। আর চিন্তিত হতে থাকে। সেই সাথে দোয়া করতে থাকে, বউটার যেন খারাপ কিছু না হয়! নিরাপদেই যেন বাসায় ফেরা হয়!

মেয়ে পোশাক চেঞ্জ করে ফেললো। মা চেঞ্জ করছে এমন সময় বাসার বেল বেজে উঠলে মেয়ে গিয়ে দরজা খুলতে ডোর গ্লাস দিয়ে আগে দেখে নিলো কে এসেছে। দেখে আর কেউ নয় ওরা ও’র ভাই আর ভাইয়ের নতুন বউ। দরজাটা খুলে দিয়েই ভাইকে জিজ্ঞেস করলো, “কিরে এত দেরী? আমরা তো চিন্তায় পরে গিয়েছিলাম! অত রাত! বউয়ের হাতে গয়না!”

ভাইটা বলে উঠলো হাসতে হাসতে, “আরে তোমরা উঠছো বলরাম কাহিলের রিকশায়। আর আমাদেরটা কাশিরাম নাই। রিকশা টানতেই পারে না।”

“মানে?” বোন জিজ্ঞেস করলো অবাক চোখে!

জুতা জোড়া পা থেকে খুলতে খুলতে ভাই বলে চললো, “আরে একটা কৌতুক আছে জানো না? একখানে দুই লোকের পরিচয় হয়েছে। প্রথম জন দ্বিতীয় জনকে জিজ্ঞেস করেছে- ভাই, আপনের নাম কি? দ্বিতীয় জন জবাব দিয়েছে-বলরাম কাহিল। জবাব শুনে প্রথম লোকটা স্তম্ভিত! কয় কি? এত্ত মোডা মানুষটাই যদি কাহিল হয় তাইলে আমি কি! তাই তাকে যখন নাম জিজ্ঞেস করা হলো, সে জবাব দিলো- আমার নাম কাশিরাম নাই! কারণ প্রথম লোকটা শুকনো লিকলিকে।”

কৌতুক শুনে বোনটা তো হেসেই খুন! “ও তাই বল! হাহাহা!!”

নতুন বউও এমনকি ভাইটাও কৌতুকের তালে তালে হাসতে হাসতে নিজেদের রুমে ঢুকে গেলো।  

আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
তানি হক বাহ অনু গল্পে দারুন উত্তেজনা ... খুব ভালো লাগলো ...আপু..কাহিনীর গতি আর সাবলীল বর্ণনা ..আটকে দিয়েছ মন... :)
জাকিয়া জেসমিন যূথী ধন্যবাদ, তানি। আমি তো ভেবেছিলাম, সাহিত্যব্লগে কেউ এটা পড়তেই আসবে না।
সাঈদ ভাল লাগল

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী নয়।।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

ফেব্রুয়ারী ২০২৪ সংখ্যার বিজয়ী কবি ও লেখকদের অভিনন্দন!i