-দেখ ঐ জুটি সকাল থেকে দাড়িয়ে আছে হাঁটু পানিতে, একে অপরকে জড়িয়ে ধরে – বলে নীলিমা।
নিলয় একটু দূরে সাগরের দিকে তাকিয়ে আছে । নীলিমার কথা তার কানে গেল কিনা বুঝা গেলো না । সাগরের ঢেউয়ের গর্জন আর অবারিত সাগর বক্ষ তাকে নিয়ে গেছে অন্য জগতে । নীলিমা ঢাকার নামকরা এক প্রাইভেট ইউনিভারসিটিতে শেষ বর্ষের ছাত্রী আর নিলয় এক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কর্মরত । তারা দুজনেই এসেছে কক্সবাজারে কয়েক দিনের জন্য ।
নিলয় হোটেলের বারান্দায় দাড়িয়েছিল রাত আনুমানিক একটা হবে । পূর্ণ চন্দ্র পূর্ণিমা রাত । সাদা জোসনায় প্লাবিত সৈকত রূপালি আলোয় স্বপ্নিল । হটাৎ একটি মেয়ে একাকি সামনের রাস্তা দিয়ে সৈকতের দিকে যাচ্ছিল ।
মেয়েটি পরেছে লাল পেরে সাদা শিপন শাড়ী । তার সাথে ম্যাচ করে জুতা, টিপ আর লিপিস্টিক দিয়ে নিজেকে অপরূপ করে সাজিয়েছে । পূর্ণিমার রাতে আসমান থেকে পরী যেন নেমে এসেছে । অনেকটা মোহাবিষ্ট হয়ে পড়েছিল নিলয় । কোন মেয়ে যে এত সুন্দর হতে পারে , এত ভাল লাগতে পারে তার জানা ছিল না ।কক্সবাজার যেন তাকে ভাল লাগা অনুভব করতে শেখাল ।মন্ত্র মুগ্ধের মত সে ও নেমে আসল রাস্তায় । যেমন বিলাসি পাখা ওয়ালা পিঁপড়ার দল নিজেকে সপে দেয় আলোর শিখায় ।
দোকান গুলি পার হয়ে নীলয় চলে যায় বালির মধ্যে , কোথায় যেন হারিয়ে গেল সেই মায়াবিনী । অস্থির ভাবে খুঁজতে থাকে এ দিক সে দিক । রাতে ভাটার জন্য পানি চলে গেছে অনেক দূরে । সাদা আলো ভেজা বালিতে পরে রূপালি কার্পেটের মত মনে হচ্ছে । রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে যাচ্ছে ঢেউ আছড়ে পরার শব্দে । তারই মাঝে মাঝে ঢেউয়ের শব্দের অবসরে কবিতা আবৃত্তির মত মনে হচ্ছে । যত কাছে যাচ্ছে তত জোরে কবিতার শব্দ গুলি শুনা যাচ্ছে ।
“এই ক্ষণ যেন মহাকালের বুকে বহমান, শতাব্দী থেকে শতাব্দী পরে আসি , নিয়ত চলেছে ভাসি” । - নীলিমা আছে সাগরের দিকে মুখ করে দাড়িয়ে । একটু থামলে --
“সে না রহিবে স্থির বহিবে নিরবধি, নিজেকে নিঃস্ব করে নিষ্ঠুর অবহেলায়” । - বলে নিলয় ।
কে আপনি ? কোথায় পেলেন এ কবিতা – বলে নীলিমা । কোন বইতে নয়, ফেসবুকে কোন এক খেয়ালি কবির কবিতা থেকে পেয়েছি । আমি যদি ভুল না করি আপনি ও হয়তো একই সোর্স থেকে পেয়েছেন । অধমের নাম নিলয় সুদূরের পিয়াসি -- বলে নিলয় ।
ঠিকই বলেছেন, আমি নীলিমা - দৃষ্টি সীমা যেখানে শেষ, সেখানেই আমি থাকি । হটাৎ এই পথ মাড়াইতে আসা কেন – বলে নীলিমা ।
সময়ই পথ তৈরি করে, পথের বুকে চলাই আমাদের কাজ – বলে নিলয় ।
হ্যাঁ ভুল পথে আসলে তারও মাশুল পরিশোধ করতে হয় পাই পাই করে – বলে নীলিমা ।
“ভুলেই যদি ভরে জীবন ভুলেই করিব বাস, বলরে হে সর্বনাশী তুই কি আমার নস ? ” -বলতে বলতে নিলয় আনমনা হয়ে যায় ।
আবার সেই হতচ্ছরা আপনার মাথায় চেপেছে – বলে নীলিমা ।
শুধু চেপেই বসেনি ! বশীভূত ও করেছে , তার সাথে এই সমুদ্র , পূর্ণিমা, ভেজা ভেজা বাতাস আর সামনে অপরূপ সুন্দরী । বিধাতা যেন সকল সুধা ঢেলে দিয়েছে উজাড় করে । এখানে আসার আগে আমার ধারনা ছিল না পৃথিবী এতো সুন্দর – বলে নিলয়।
“খুলিয়া গিয়েছে সুন্দরের দ্বার রিক্ত নয় কেউ আর, মিলনে, ভালবাসায়, যাদু মাখা কথায় খুলবো আজি বন্ধ দোয়ার” – বলেই কেমন যেন লজ্জাবতী লতার মত গুটিয়ে ফেলে নীলিমা নিজেকে ।
“ ওগো লজ্জাবতী, লাজুক লতা বুঝো কি মোর মনের কথা, ঝেরে ফেলো সকল জড়তা পূর্ণ হোক সকল অপূর্ণতা” – বলে নিলয় নীলিমার হাত ধরতে যায় ।
“ধরা নাহি দিব আজি তব বাহু ডোরে, নিঃশেষ করিব না নিজেকে একেবারে , চলেছি সুদূরের পথ ধরি দেখতে চাইলে দেখবে তোমারই সাথে আছি -এই আমি ” - বলে নীলিমা
নিলয় চিৎকার করতে থাকে নীলিমা...! নীলিমা... !
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“জানুয়ারী ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ জানুয়ারী, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।