রজতবাবুর রাত্রে খুব গাঢ় ঘুম হয় । কোনো আওয়াজ হলেও তাঁর ঘুম ভাঙে না । মনে হয়, ভূমিকম্প হলেও ঘুম ভাঙবে না । কিন্তু সেই দিন তার রাত একটা-তে কীসের একটা আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেল । উঠে দেখেন তার ঘরের দরজা খোলা । কিন্তু ঘরের দরজা খুলল কে ? তিনি তো দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়েছিলেন ? তাহলে ? উঠে গেলেন বিছানা থেকে । খোলা দরজা দিয়ে তিনি বাইতে বেরিয়ে গেলেন । তিনি শোন দোতলায় । তার চাকর মানিক শোয় নীচের তলায় । তিনি দেখেন তার ঘরের বাইরের আলো জ্বলছে । তিনি তো আলো নিভিয়ে দিয়েছিলেন , তাহলে আলো জ্বালল কে ? মানিক নাকি ? না, তা হতে পারে না । মন মানতে চাইছে না । মনে হচ্ছে, যেন অন্য কোনো ব্যাপার, যা সহজে ব্যাখ্যা করা যাবে না এভাবে । তিনি দ্রুত পায়ে ছলে গেলেন সিঁড়ির দিকে । সেখান থেকে নেমে গেলেন নীচে । নীচের তলায়ও আলো জ্বলছে । ব্যাপার কী ? মানিকের ঘরের দিকে তিনি দ্রুত পায়ে এগোলেন । মানিকের ঘরের দরজা বন্ধ । দরজায় টোকা মারতে যাচ্ছেন ওমনি একটা শেয়াল ডেকে উঠল “হুক্কা-হুয়া” । তিনি ভয় পেয়ে গেলেন । ভয়ে দু-পা পিছিয়ে গেলেন । এর আগে এ তল্লাটে কোনোদিন শেয়াল ডাকেনি । এ পাড়ায় শেয়েল আছে বলেও তিনি জানেন না । থাকলেও বাঁচে কী করে । এখানে তো বন জঙ্গল নেই । কিছুক্ষণ পরে তার ভয় ছাড়ল । তিনি টোকা লাগাতে লাগলেন । এক-দুবার টোকা পড়তেই মানিকের ডাক পড়ল-কে ? মানিকের ঘুম পাতলা । তাই ক’বার টোকা দিতেই সে সজাগ হয়ে গেল । রজতবাবু বললেন-আমি হে মানিক । দরজা খোল । মানিক এসে দরজা খুলে চমকের সাথে বলল-বাবু, আপনি ! এই সময়ে ! কী হয়েছে ? মানিককে তিনি সব খুলে বললেন । মানিক সব শুনে বলল-বাবু, আমি তো কোনো আওয়াজ শুনিনি । আমার ঘুম তো খুব পাতলা । শব্দ হলে তো আমার ঘুম ভেঙে যেত । তার মানে আপনি স্বপন দেখেছেন । কিন্তু আলো কে জ্বালালো আর আপনার ঘরের দরজা-ই বা কে খুলল –তা তো আমি জানি না । -কিন্তু য দি স্বপ্নই দেখি তাহলে আগেও তো আমি অনেকবার স্বপ্ন দেখেছি কিন্তু তাতে তো আমার কোনোদিন ঘুম ভাঙেনি । তাহলে আজ ভাঙল কেন ? -ও কিছু নয় বাবু ছেড়ে দিন । গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন । রজতবাবু আবার দোতলায় উঠে গেলেন । গিয়ে নিজের ঘরে চলে গেলেন । আগের মতো এখনও সেই বাইরের আলোগুলো জ্বলছিল । ঘরে যাওয়ার আগে তিনি আলোগুলো বন্ধ করে গেলেন । গেয়ে এক গ্লাস জল খেয়ে তিনি আবার শুয়ে পড়লেন । এবার ঘুম আসতে একটু দেরি হল । আবার রাত আড়াইটায় ঘুম ভেঙে গেল । কিন্তু এবার শব্দে নয় । কোনো জিনিসের গায়ে হাত লেগে । পাশেই যেন ক’টা হাড় রাখা আছে । আচমকা ঘুম ভেঙে যেতে চোখ খুলে পাশে চাইলেন । এ কী !!!! একটা কঙ্কাল তার পাশে । ভয়ে তার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল । তিনি এক দৌড়ে সিড়ির কাছে গিয়ে দেখলেন এবারও বাইরের সব আলো জ্বলছে এবং তার ঘরের দরজাটা খোলা । তিনি তাড়াতাড়ি করে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে এলেন । দিলেন এক দৌড় মানিকের ঘরের দিকে । মানিকের ঘরের দরজাটা খোলা ছিল । তাই, দৌড়ে তিনি ভিতরে ঢুকে গেলেন । সেখানে আলো বন্ধ ছিল । তিনি আলোটা জ্বাললেন । ওমনি আর এক ভয় । মানিকের বিছানায় মানিক নেই, আছে এক কঙ্কাল !! এবার আর কিছু করার নেই । এবারে একেবারে অজ্ঞান রজতবাবু । জ্ঞান যখন ফিরল তখন দেখেন সকাল আটটা বাজে । তিনি নিজের বিছানায় শুয়ে আছেন । পাশে মানিক বসে আছে । সেই বিছানায়, যে বিছানায় কাল রাত্রে একটা কঙ্কাল শুয়ে ছিল । তিনি উঠে বসলেন । মানিক জিজ্ঞেস করল-বাবু, কেমন আছেন ? রজতবাবু নিজেকে একটু সামাল দিয়ে বললেন-ঠিক আছি । সবই তো ঠিক আছে তাহলে কাল রাতের ওইসব কী ছিল ? আঁধার রাতের ভয়
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।