এখন রোজ কল-সেন্টারের কাজে যেতে হয় । আমার বাড়িতে আমরা পাঁচজন থাকি । আমি , একটা বুনিপ, একটা ইয়েতি, একটা ড্রাকুলা আর একটা ব্রহ্মদৈত্য । আমার যাওয়ার পরে ওরা পার্টি করে , হৈ হল্লা আর খাওয়া-দাওয়া করে । আমি দরজা থেকে বেরলেই নাচা গানা আর উচ্চস্বরে বাজনা শুরু হয়ে যায় । যেন এতক্ষণ অপেক্ষা করছিল । রাস্তায় বেরিয়েই ট্যাক্সি-স্ট্যান্ডে ট্যাক্সি ধরতে গেলাম । এক মামদো ভুত-এর ট্যাক্সি । পাঁচমিনিটেই পৌঁছে দিল । তা বলে এটা ভাবা ভুল হবে যে কল সেন্টার খুব কাছে । আমার বাড়ি থেকে কল-সেন্টার ৫৬ কিমি. । কল-সেন্টারে কেবল আমি একা মানুষ । অনেক এলিয়েন আছে । মরফিক্স, হেন্ড্রিক্স, এনিমিল এবং আরও অনেকে । সারাদিন বিশেষ কোনো কাজ থাকে না । ড্রাকুলা নিজেদের জন্য যে সব খাবার আনে, তারই আংশিক ভাগ আমাকে দেয় । কিন্তু আমি তাও খেতে পারি না । খাবারের গন্ধ, বর্ণ ও স্বাদ পেলেই খাবার খাওয়ার ইচ্ছের বেলুন দুম ফটাস করে ফেটে যায় । মাঝে মাঝে ছুটি পেয়ে বেড়াতে যাই । এবার প্লুটোয় যাব । দিন দেড়েকের টুর । আমার সাথে আমার গৃহবাসীরা যাবে । পরের দিন চললাম । ‘সোলার সিস্টেম’ এয়ারপোর্টে গিয়ে প্লুটোর জন্য রকেট ধরে চলে এলাম প্লুটোয় । এখানে পৃথিবীর থেকে অনেকটা বেশি অন্ধকার । অনেক ছোটো-বড়ো পাহাড় , বড়ো বড়ো গর্ত তো আছেই । মাটিটা অনেকটা লালচে ধরণের । এক জায়গায় একটা হোটেলে আমরা আছি । হোটেল থেকে বেরিয়ে ঘুরছি এমন সময়ে একটা কঙ্কাল দেখে অবাক হয়ে গেলাম । তার কাছে যেতে দেখলাম একটা সবুজ বর্ণের ভুত দাঁড়িয়ে আছে । কাঙ্কালটা মানুষেরই মনে হচ্ছে । ভুতটিও মানুষের আদলে গঠিত বলেই মনে হচ্ছে । জিজ্ঞেস করলাম-আপনি কি মানুষের ভুত ? -হ্যাঁ । আমার নাম অনিমেষ চৌধুরী । -তা আপনি এখানে কী করছেন ? -সে এক বিস্তৃত কথা । আপনার কাছে কি অনেক সময় আছে ? তাহলে বসে বলি । -হ্যাঁ চলুন । আমরা একটা টিলা দেখে বসলাম । সে বলতে শুরু করল-------- -এ হচ্ছে প্রায় একশ বছর আগের কথা । আমিই প্রথম পৃথিবীতে এই সব এলিয়েন ও কাল্পনিক প্রাণীদের আক্রমণ সম্বন্ধে টের পাই । কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল । -আগে বলি, আমি একজন বিজ্ঞানী । বিভিন্ন র্যা ডার ও সংকেত পরীক্ষার মাধ্যমে আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে এক সময়ে পৃথিবীতে এলিয়েন ও নানান কাল্পনিক প্রাণীরা আসবে । কিন্তু তারা কখন আসবে, তা আমি ঠিক নির্ণয় করতে পারছিলাম না । যখন তা পারলাম, ততক্ষণে এরা পৃথিবীর কাছাকাছি প্রায় পৌঁছে গিয়েছিল । -যখন এরা আক্রমণ করে তখন আমাকে একটা ড্রাকুলার আদলের এলিয়েন আমাকে এত জোরে ছোঁড়ে যে আমি প্লুটোয় পৌঁছে যাই । বায়ুমণ্ডল থেকে বেরোতেই আমার মৃত্যু হয় । এখন তো এই এলিয়েনরা সব স্থানেই বায়ু ভরে দিয়েছে ।, কিন্তু তখন তো এটা ছিল না । তখন থেকে আমি এখানে আছি । মাঝে মাঝে আমার সেই আগের পৃথিবীটা দেখতে খুব ইচ্ছা করে । দূর থেকে দেখে চলে আসি । কাছাকাছি গেলে ওরা অন্যদের মতো আমাকেও ওদের চাকর করে দেবে । আপনাকে ওরা কেন জানি না ছেড়ে দিয়েছে ? -আমাকে ওদের জন্য ‘সমিট্রোনিক’ ট্যাবলেট তৈরি করতে হয় । যা ওদের অনেক বেশি শক্তি দেয় । এই কাজ কেবল একটা মানুষই করতে পারে । কারণ, এতে যে সকল পদার্থের ব্যবহার আছে তা মানুষ ছাড়া কেউ সঠিক অনুপারে মেশাতে পারে না । এটা ছাড়াও ওদের চলে যায় কিন্তু অধিক শক্তির লোভ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে । তার বদলে ওরা আমাকে অন্তহীন জীবনের ট্যাবলেট দেয় । -খুব ভালো । আমি এখন আসি । আমার বন্ধুরা আমার জন্য অপেক্ষা করছে । -বন্ধুরা ? কারা ? -ইয়েতি , বুনিপ, ড্রাকুলা ও ব্রহ্মদৈত্য । সে অবাক হয়ে তাকাতে থাকল । আমি চলে এলাম হোটেলে । নিজের ঘরে বসে একটা বই-এর পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতার লাইন চোখে পড়ল— ‘আজি হতে শতবর্ষ পরে......”
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন
ভূত আর অদ্ভুত সব এলিয়েন!!! ভালই, তবে শত বর্ষে হয়তো হবে না। ভাল লিখেছেন। শুভেচ্ছা রইল।
নেমেসিস
ভালো লিখেছেন। তবে মাত্র ১০০ বছর পরে এমনটা হবে বলে মনে হয় না। আরও সময় লাগবে। আর সেক্ষেত্রে মানুষই এলিয়নদের ওপর কর্তৃত্ব করবে বলে আমি আশাবাদী। শুভ কামনা।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।