অনেক  বাংলা  সিনেমার  কাহিনীর  আর্বতের  মত  করে  সংবাদ  সম্মেলন  এ  বয়ান  চলছে। আমাদের  চেষ্টা  অব্যাহত  রয়েছে । খুব  শীঘ্রই  তদন্ত  প্রতিবেদন  প্রকাশিত  হবে।  তবে  এক্ষণে তদন্তের  স্বার্থে  আমরা  এর  চেয়ে  বেশী  বলতে  পারছিনা।  আমাদের  সবগুলো  এলিট  ফোর্স  মাঠে  নেমে  পরেছে.. .আবলা. ..আবলা. ..আবলা...। 
বংলা  সিনেমার  এত  অধঃপতন  হয়েছে  যে  দর্শককুল  অনায়েসেই  উদ্ধার  করে  ফেলতে  পারে তারপরে  কি  হবে,  তবুও  যেভাবে  পর্দায়  ভেসে  উঠে  আমিও  সেভাবে  বলছি  এগল্পের  সবগুলো চরিত্র  কাল্পনিক,  তবুও  কেউ  যদি.. ....ইত্যাদি  ...ইত্যাদি ।
.........
হঠাৎ  করে  মিটফোর্ড  হাসপাতালের  বার্ণ  ইউনিটে  রোগীর  সংখ্যা  বেড়ে  গেছে।  প্রতিদিন  দু’চার জন  করে  আসতে  আসতে  গত  সাত  দিনে  পঞ্চাশের  কাছাকাছি  গিয়ে  ঠেকেছে।  ভাবনার  বিষয়  হচ্ছে  সবগুলো  রোগীর  লক্ষণ  ও  উপসর্গ  গুলো  একই  রকম । প্রত্যেকেরই  মুখমণ্ডল কালো  হয়ে  যাওয়া,  হটাৎ  দেখলে  মনে  হবে  বিউটি  পার্লারের  কোন  ফেসিয়াল  প্রলেপ  দেওয়া হয়েছে।  ব্যাপারটা  আসলে  তা  না,  ব্যাপার  হচ্ছে  মুখের  উপর  উচ্চ  তাপমাত্রার  গরম  হাওয়া ছুড়ে  দেওয়ার  ফলে  পুরো  মুখমণ্ডল  ঝলসে  গিয়ে  কালো  হয়ে  গেছে ।  এর  মধ্যে  বেশির ভাগই  রাজধানীর  বিভিন্ন  এলাকার  বিউটি  পার্লারের  মালিকরা  রয়েছেন ।  উনাদের  সাথে  কথা বলে  জানা  গেছে  প্রায়  সকলেরই  একই  রকম  বক্তব্য ।  প্রত্যেকেই  সন্ধ্যার  পরে  যখন  নিজেদের  পার্লারে  ব্যবসায়িক  সময়  দিচ্ছিলেন  সেই  সময়টাতেই  অচেনা  অবয়বের  কিছু  লোক তাদের  কথামত  মাস্ক  দিতে  না  পারায়  গরম  বাতাস  দিয়ে  মুখ  ঝলসে  দিয়েছে।     
....................  
-বস,  ঐ  যে,  ঐ  দেখা  যাচ্ছে,  ঐটা  হচ্ছে  বাংলাদেশ ।  যুবরাজ  ম্যাল্কমের  জন্য  যে  মাস্কটা  প্রয়োজন  সেটা  ঐ  দেশে  পাওয়া  যাওয়ার  কথা  বলে  দিয়েছেন  প্রধান  হেলথ  ক্যাব পরিচালক ।  ইতিমধ্যে  বারো  জনের  একটা  চৌকস  বহুরূপী  স্কোয়াড  ঐ  দেশের  রাজধানীতে অভিযান  শুরু  করে  দিয়েছে —স্পেস  সাঁটলের  একজন  ওয়াচ  ডগ  সদস্য  এজেন্সি  কর্মকর্তাকে জানালেন।
- সেটা  তো  বুঝলাম,  ফলাফল  কি,  শুন্য ?  এ  পয্যন্ত  পৃথিবীতে  যতগুলো  অপারেশন  করেছো কোন  খানে  কি  এতো  সময়  লেগেছে ?
-বস  আমরাও  যথাসাধ্য  চেষ্টা  করে  যাচ্ছি ।  কিন্তু  মনে  হচ্ছে  কোথাও  যেন  তথ্য  ঘাটতি রয়েছে ।  ঐ  দেশের  মানুষ  গুলো  মনে  হচ্ছে  তথ্য  গোপন  করছে ।  কেউ  স্বীকার  করছে  না  কোথায়  পাওয়া  যাবে  ঐ  মাস্ক ।  তবে  আমরাও  কড়া  নির্দেশ  দিয়ে  দিয়েছি  যত  হাজার  পার্লার  আছে  সবগুলো  পার্লার  মালিকের  বিরুদ্ধে  তথ্য  হাসিল  না  হওয়া  পয্যন্ত ‘অপারেশন  মাস্ক  ফাইন্ডার’  চলতে  থাকবে ।  আজ  মধ্যাহ্ন  ভোজের  পর  ২০  জনের  আর একটা  দল  নাইট্রিক  এসিড  ব্লোয়ার  সহ  সাঁটল  থেকে  ‘খেয়া  টারটেল’  ছেড়ে  গেছে।   
       এবার  কম্যান্ডার  আর  বেশী  উত্তেজিত  হয়ে  পড়েছে  ।  তিনি  অনেকটা  চিৎকার করেই  বললেন 
-শুধু  মাস্ক  মাস্ক  করছো  কেন ,  মাস্ক  পাওয়া  না  গেলে  মাস্ক  তৈয়ারির  প্রযুক্তিটা  বের  করে  নিয়ে  আস ।  ঐ   প্রযুক্তি  কোথায়  কার  কাছে  রাখা  আছে,  তাকে  খুজে  বের  করো অতিসত্ত্বর ।  না  হলে  আরও  বড়  ক্রাকডাউন  করো  ।  পুরো  অঞ্চলটাকে  আইসোলেইট  করো । আমি  আর  দেরি  করতে  চাইনা।  
........................... 
পুরো  দেশে  একটা  আলোড়ন  হয়ে  গেছে।  সমস্ত  মিডিয়াগুলোতে  একই  সংবাদ  প্রচারিত  হতে শুরু  করেছে ।  কোন  কোন  মিডিয়াতে  মুখ  ঝলসানো  পার্লার  মালিকের  সংক্ষিপ্ত  সাক্ষাৎকারও প্রচারিত  হয়েছে ।  প্রত্যকে  একই  কথা  বলেছেন -  শরীরের  তুলনায়  বড়  মাথাওয়ালা  মনুষ্য আকৃতির  কিছু  লোক  যাদের  চেহারায়  নাক  ও  চোখ  খুব  কাছাকাছি  মনে  হয় ।  প্রথম দর্শনে  কিম্ভুতকিমাকার  মনে  হলেও  কথাবার্তার  ধরন  অনেকটা  রবোটিক  অর্থাৎ  রোবটরা  যেরকম  করে  শব্দ  করে  কথা  বলে  অনেকটা  সেরকম ।  পরনে  নভোচারীর  মত  স্পেস  স্যুটের  আদলে  পোশাক  পরা  প্রাণীগুলো  অদৃশ্য  হওয়ার  ক্ষমতা  সম্পন্ন ।  প্রত্যেক  রোগীই  বলেছে  তারা  কথা  বলতে  বলতে  অদৃশ্য  হয়ে  গেছে  এবং  কথোপকথন  চলাকালেও  এই  আছে এই  নাই  তাদের  এরকম  মনে  হয়েছে ।  তবে  চেহারাটা  হলদেটে  ফর্সা ।  পোশাকের  বাহুতে স্প্রে  জাতীয়  কিছু  একটার  ছোট  সিলিন্ডার  বাঁধা  আছে।  অনেকটা  রাজধানীতে  শিক্ষকদের বিক্ষোভে  পুলিশের  ব্যবহার  করা  পিপার  স্প্রে’র  সিলিন্ডার  এর  মত।  ‘তোমাদের  পার্লারে  কার্বন  মাস্ক  আছে  কিনা,  কয়টা  আছে  তাড়াতাড়ি  বের  করে  দাও’  এটাই  ছিল  তাদের একমাত্র  প্রশ্ন ।  কিন্তু  পার্লার  মালিকরা  বলেছেন  তারা  এধরনের  কোন  ফেসিয়াল  মাস্কের  কথা আগে  কখনো  শুনেননি । একথা  বলার  সাথে  সাথে  প্রাণীগুলো  বেশ  উত্তেজিত  হয়ে  পড়ে । কয়েকজন  পার্লার  তছনচ  করে  খোঁজাখুঁজি  করতে  থাকে  আর  একজন  যে  কিনা  নেতার  মত কথা  বলছিল  সে  বলে  উঠল  ‘সারা  পৃথিবীর  মানুষ  জানে  এই  দেশে  কার্বন  মাস্ক  তৈরি হচ্ছে  আর  তোরা  ভান  করছিস’  এই  বলেই  মুখের  উপর  গরম  কি  যেন  ছিটিয়ে  দিয়ে অদৃশ্য  হয়ে  গেল।
.................................।
অবশেষে  এলিয়েন  গুলো  অধ্যাপক  সত্য  প্রকাশ  আহমেদ  এর  বাসার  খোঁজ  পেয়ে  গেল ।  তিনি  একজন  খুব  ব্যস্ত  মানুষ ।  অনেক  অনেক  ফাইল  পত্র  নিয়ে  তিনি  খুব  প্রেসারে আছেন ।  সুন্দরবনের  বিদ্যুৎ  প্রোজেক্টের  প্রধান   বৈজ্ঞানিক  কর্মকর্তা  তিনি  । চীপে’র  কথার  বাইরে এক  কদম  দিতে  পারেন  না ।  প্রোজেক্টের  চুক্তিপত্র  থেকে  শুরু  করে  ব্যবসাপাতি  কি  কি হবে,  কারা  কয়লা  সাপ্লাই  দিবে,  কারা  ছাই  কিনবে,  কারা বিদ্যুতের  খাম্বা,  কারা   বিদ্যুতের তার  ইত্যাদি  সাপ্লাই  দিবে  এসব  কিছুই  ইতিমধ্যে  সম্পন্ন  করা  হয়েছে ।  প্রজেক্টের  আশপাশ থেকে   শুরু  করে  যত  রকমের  ব্যবসা  গড়ে  উঠার  সম্ভাবনা  রয়েছে  সবগুলো  পরিকল্পনা একসাথে  করে  বানানো  ‘ভিশন  ২০৮০’র  প্রধান  কর্মকর্তা  এই  অধ্যাপক  সত্য  প্রকাশ  আহমেদ ।  এলিয়েন  গুলো  তার  বাসায়  ঢোকার  সাথে  সাথে  রুমের  বৈদ্যুতিক  বাতিগুলো  বিস্ফোরিত হয়ে  মেঝেতে  ছিটকে  পড়ল।  সাথে  সাথে  এলিয়েনগুলোর  কপালের  অংশ  থেকে  এক  ধরনের সবুজ  আলোর  বিচ্ছুরণে  পুরো  কামরায়  কেমন  একটা  নৈসর্গিক  পরিবেশের  মত  হল ।  এসব দেখে  সত্য  বাবু  একেবারে  নির্বাক  হয়ে  গেলেন । একটু  পরে  ধাতস্থ  হয়ে  চেয়ার  থেকে  উঠতে   যাবেন  এমন  সময়  একটা  এলিয়েন  উনার  কাঁধে  চাপ  দিয়ে  আবার  বসিয়ে  দিল আর  বলতে  শুরু  করলো –
-আমাদের  কার্বন  মাস্ক  চাই,  অনেক  মাস্ক  দরকার ।  তাড়াতাড়ি  বলো  এই  মাস্ক  কোথায়, কারা  বানাচ্ছে   এখন ।  এই  প্রযুক্তির  ফাইল  পত্র  কি  কি  আছে  সব  আমাদের  হাতে  তুলে দাও। 
সত্য  বাবু  কিছু  বলার  আগেই  একজন  এলিয়েন  টেবিলের  উপর  রাখা  লাল  ফিতায়  বাঁধা ফাইল  পত্র  গুলো   হাতড়াতে  শুরু  করেদিল।  এর  মধ্য  থেকেই  বেরিয়ে  এলো  সোনালী  ফিতায়  দু’দিক  থেকে  মোড়া  একটা  সুদৃশ্য  ফাইল,  উপরে  লেখা  ‘ Vision 2080’।  অনেকটা কিচির  মিচির  করে  উঠলো প্রাণীটা।  তাদের  নেতাকে  বোঝাতে  শুরু  করলো –
-Yes boss, May be this is the golden book which may contain all the theory of Carbon Mask. you see, they mentioned here ‘Vision 2080’. 
সত্য  বাবু  এবার  বলে  উঠলেন  ওখানে  ২০৮০  সাল  পয্যন্ত  বিদ্যুৎ  প্রজেক্টা’কে  ঘিরে  যে ব্যবসা  বানিজ্য  হবে  তার  একটা  মাস্টার  প্ল্যান  ছাড়া  আর  কিছু  নাই।
এলিয়েনগুলোর  নেতাটা  খুবই  উত্তেজিত,  সে  বলতে  শুরু  করলো- 
-সারা  পৃথিবীর  মানুষ  তো  জানলোই , আমাদের  এলিয়েন  গ্রহানুবাসিও  জানলো  এদেশে  বিদ্যুৎ প্রকল্পের  চিমনি  দিয়ে  নির্গত ধোঁয়া  থেকে  মুখ  সাদা  করার  ফেসিয়াল  ‘কার্বন  মাস্ক’  তৈরি হচ্ছে  আর  তুমি  বলছ  নেই?  তা  কি  করে  হয়?  কই  তোমার  চুক্তি  পত্র  কই?  তাড়াতাড়ি  বের  করো। 
       বলেই  কলার  মত  দেখতে  লম্বাটে  ছোট  একটা  যন্ত্র  সত্য  বাবুর  হাঁটুর  দিকে  তাক করতেই  নীল  আলট্রা  ভায়োলেট  রে  বেরিয়ে  এসে  প্যান্টের  খানিকটা  পুড়ে  গিয়ে  চামড়ায়  লাগলো।  সাথে  সাথে  অধ্যাপক  টেবিলে  রাখা  ফাইলগুলো  হাতড়াতে  শুরু  করলো  আর  গোঙাতে গোঙাতে  চুক্তির  ফাইলটা  বের  করে  দিল।  একটা  এলিয়েন  এগিয়ে  এসে  ফাইলটা  বাম  কানের কাছে  ধরতেই  লাল  ধরনের  গামা  রে  বেরিয়ে  এলো  যা  দেখে  অধ্যাপক  বুঝতে  পারলো ফাইলটা  স্ক্যান  হয়ে  গেছে  ওদের  মেমরিতে,  তারপর  তারা  ভিশন  ২০৮০  ফাইলটাও  স্ক্যান  করে  নিল।  তারপর  বলতে  শুরু  করলো
-ও  এই  হল  তোদের  ধাপ্পাবাজী,  নিজেদের  আখের  গোছাতে  তোরা  মানুষরা  দেশের  বারোটা বাজিয়ে  এসব  অপকর্ম  করছিস।  তারপর  নেতাটা  জিজ্ঞেস  করলো 
-এই  প্লুটোনো  প্রিন্স  ম্যাল্কমের  ডাক্তার  কি  বলেছিলরে ?
- উনার  চেহারায়  ক্রুড  অয়েলের  যে  আস্তরণটা  লেপটে  গেছে  সেটা  পরিস্কার  করতে  হলে মুখের  মধ্যে  বছর  খানেক  কার্বন  মাস্ক  লাগাতে  হবে  বস ।
-তো  এখানে  আসতে  বলল  কেন  আমাদেরকে,  এরা  ত  সব  ভুয়া।  বলে  একটা  আর  করে   আরেকটা।   এরা  বলছে  ঐ  বিদ্যুৎ  কেন্দ্র  করার  সময়  আলট্রাসুপারক্রিটিক্যাল  প্রযুক্তি  ব্যবহার করে  দূষণ  দূর  করবে,  এটা  ত  সম্ভব  না,  পানি  দূষণ  করার  আধুনিক  প্রযুক্তি  হল  ‘ জিরো  লিকুইড  ডিসচার্জ’  ওটাতো  চুক্তিতে  নেই,  এরা  বলছে  নির্গত  ছাই  দূষণ  রোধে  ইলেক্ট্রো স্ট্যাটিক  প্রিসিপিটেটর  ব্যবহার  করবে,  কিন্তু  আধুনিক  প্রযুক্তি  হল  ‘ব্যাগ  হাউস  প্রযুক্তি’ ।  সবই  ত  দেখছি  ভুয়া  আর  পাগলের  কারখানা,  নাহলে  কেউ  কি  নিজের  জমি,  ৮৫  ভাগ টাকা  দিয়ে  ৫০  ভাগ  মালিকানা  চায়  তাও  যদি  উপকরন  গুলাও  নিজেরা  সাপ্লাই  দিতে  পারত। 
-কিন্তু  বস  এরাতো  ঘোষণা  দিয়েছে  বিদ্যুৎ  কেন্দ্রের  ধুঁয়াকে  হিমায়ত  করে  কার্বন  মাস্ক  বানাবে  আর  রপ্তানি  করে  দারিদ্রতা  দূর  করবে। 
-ধত্তুরি , বজ্জাৎ  গুলোর  আবার  কথা,  বিশ্বের  একমাত্র  ম্যানগ্রোভ  ফরেস্ট  দেখতে  এসে  প্রিন্স ম্যাল্কম  কি  ফাঁদেই  না  পরে  গেল।  আমরা  এখন  কিং  সলোমন  কে  কী  বলবো। 
-ইয়েস  বস।  সেদিন  সাঁটলে  আমিও  ছিলাম,  সুন্দরবনের  সৌন্দর্য  দেখে  প্রিন্স  এতোটা  অবিভুত হয়ে  গেছিল  যে  পাইলট  কে  বলল  খুব  নীচ  দিয়ে  যাও,  নদীর  পানি  ছুঁয়ে  বাতাস  যেন গায়ে  লাগে।  সেই  নদীটার  কি  নাম  যেন…  ও  হে  পশুর  নদী।   পা  ফসকে  পানিতে  পড়ে গেলেন  মিঃ  ম্যালকম,  আমরা  তাড়াতাড়ি  তুলে  ফেলেছিলাম  কিন্তু  তবুও  উনার  মস্তিস্কের  সার্কিট  কর্নারে  কিছু  ক্রুড  অয়েল  লেপটে  যাওয়ায়  চেহারার  ৯০  ভাগ  কাল  হয়ে  গেল।   
-এই,  এই  বজ্জাৎ,  এতো  সুন্দর  একটা  বন্য  পরিবেশের  নদীতে  তোরা  তেল  ঢেলেছিস  কেন, বল  কি  জন্য  ঢেলেছিস ?
  সত্য  বাবু  এবার  ভয়ে  ভয়ে  স্যার  ডাকতে   শুরে  করেছে। 
-স্যার  আমরা  তো  ঢালিনি,  আমাদের  এক  ব্যবসায়ির  জাহাজ  ডুবে  তেল  ছড়িয়ে  পড়েছিল। 
-পরেছে  ত  তুলে  নেস  নি  কেন?
-স্যার  কি  করে  তুলবো ,  আমাদের  ত  সেরকম  উন্নত  প্রযুক্তি  নেই।  আমাদের  মাছ  ধরার জাল  প্রযুক্তি  ছিল,   আমরা  জন্গণকে  বলে  দিয়েছি  যে  যা  পারে  তুলে  নিয়ে  যেতে,  আমরা কোন  মূল্য  নেইনি  স্যার।
-এইজন্যই  ত  তোরা  মানুষ।  আমরা  এলিয়েনরা  তোদের  মত  হিপোক্রেট  না।  বলেই  কলার মত  যন্ত্রটা  আবার  তাক  করলো,  সত্য  বাবু  ভয়ে  আঁতকে  উঠলো ।  কিন্তু  কি  মনে  করে যেন  ট্রিগার  চাপলনা।  প্লুটুনো  কে    বলতে  লাগলো 
-দেখলি  কেমন  মিথ্যেবাদী  মানুষগুলো । নদিতে  ছড়িয়ে  পড়া  তেল  তুলে  নেওয়ার  প্রযুক্তি  নাই,  আবার  বলে  ২৯০  ফুট  উচুতে  উড়ে  যাওয়া  ধুয়াকে  লিকুইডিফাই  করে  কার্বন  মাস্ক বানাবে।  এই  হল  মানুষ।  এই  মানুষ  এই  মানুষ  বল্  তোদের  এই  ভুয়া  ফর্মুলা  কে  দিয়েছে ?  এইবার  আঘাত  করার  ভঙ্গিতে  হাত  উপরে  তুলেছে  নেতাটা ।  
-বলছি  স্যার,  বলছি।  আমাদের  পরিচালনা  পরিষদে  একজন  পাগলা  ধরনের  খুব  বুদ্ধিমান সদস্য  আছে।  যার   বুদ্ধিতে  আমরা  রিজার্ভের  লক  খুলে  ফেলতে  পারি,  না  থুক্কু,  উনি বলেছেন  উন্নত  বিশ্বের  উন্নত  প্রযুক্তির  সন্ধান  উনার  কাছে  আছে  এবং  একটা  অঙ্কের  মাধ্যমে অন্যান্য  বোর্ড  সদস্যদের  ধারনাও  দিয়েছেন  তিনি,  যার  জন্য  আমরা  সেটা  প্রচার  করেছি। 
-কী? অঙ্ক ?  সেই  পাগলটা  অঙ্কের  মাধ্যমে  দিয়েছে?  ঐ  পাগলাংক  তোরা  বিশ্বাস  করেছিস? 
-না  স্যার  একটা  সমীকরণ  দিয়ে  …… 
-ধুত্তুরি  তোর  সমীকরন,  পাগলের  কষা  অঙ্ক  মানে  পাগলাংক,  ওটা  পাগলাংকই।  কিন্তু  আমরা তোমাদের   ছাড়ছি  না।  কার্বন  মাস্ক  আমাদের  চাই  ই  চাই।  আমাদের  যুবরাজের  জন্য  যে কোন  মূল্যে  ওটা  আমাদের  লাগবেই।
-স্যার  এখন  তো  আমরাও  বিপদে  পড়ে  গেছি।  দেশের  মানুষ  সব  এই  প্রজেক্টের  বিরুদ্ধে নেমে  গেছে।  ইউনেস্কু   থেকে  আমাদের  হুমকি  দেওয়া  হয়েছে  ঐ  বিদ্যুৎ  কেন্দ্র  বাতিল  করার  জন্য। 
- এই  চুপ  বজ্জাত  মানুষ,  কোন  বাতিল  হবে  না,  কোন  বাতিল  হবে  না।  প্লুটুনো  ‘খেয়া টার্টেল’  টীমকে  ফোন  করে  নিরীহ  মানুষকে  পোড়াতে  নিষেধ  করো।  পার্লার  অভিযান  বন্ধ ঘোষণা  করা  হোক,  খুব  উত্তেজিত  হয়ে  নেতা  বলল  ‘Oparetion  mask  finder  is  over’ for  now.  The  new  operation  will  be  ‘Operation  rampal  impliment’
ইউরনো,  স্পেস  ভেঙ্কুভার’এ  কানেক্ট  করো।  ‘খেয়া  কেটার  পিলার’  আর  ‘খেয়া  এন্ট  ফায়ার’ কে  এলার্ট  করো।   অপারেশন  রামপাল  ইমপ্লিমেন্ট  ইজ  স্টার্টেড  নাউ।
-ঐ  মানুষ  তোমার  ঐ  পাগল  বুদ্ধিমান  সহ  সব  মানুষকে  খবর  লাগাও,  সব  গুলোকে এখানে  আসতে  বলো ,  যে  কোন  মূল্যে  ঐ  বিদ্যুৎ  কেন্দ্র  হতেই  হবে,   কার্বন  মাস্ক  হতেই হবে।  নাহলে  ছপ্পান্ন  হাজার  বর্গ  মাইল  কালো  করা  আমাদের  জন্য  কোন  ব্যাপারই  না । 
-জ্বি  স্যার,  আমি  সবাইকে  আসতে  বলে  দিচ্ছি  স্যার,   যত  বাধাই  আসুক,  ইউনেস্কু- টিউনেস্কু  কিচ্ছু  মানিনা  স্যার,  বিদ্যুৎ  কেন্দ্র  হতেই  হবে  স্যার,  দেশকে  বাঁচাতে  হবে  স্যার।  
এই  প্রথমবার   অধ্যাপক  মুখ  ফস্কে  নিজের  জীবন  বাঁচানোর  আশায়  দেশের  জন্য  ভাবলেন  যেন। 
সত্য  বাবু  চীপ’কে  ফোন  লাগাতে  চেষ্টা  করতে  লাগলো।
-হ্যালো,  হ্যালো,স্যার  আমি  সত্য  প্রকাশ........  আমি  সত্য  প্রকাশ.........।