জনি

শিক্ষা / শিক্ষক (নভেম্বর ২০১৫)

হাসান ইমতি
  • ৮২
উনি বাম পা একটু টেনে টেনে হাঁটেন । শরীরচর্চা শিক্ষকের জন্য এটি একটি অযোগ্যতা হিসাবে বিবেচিত হবার কথা । শফিক স্যারের ক্ষেত্রে সেটা হয় না । এই পদ আলোকিত করে স্যার আমাদের স্কুলে আছেন বহুদিন । জানা যায় একসময় উনি ভালো ফুটবলার ছিলেন, এখনো উনি ফুটবল ভালোবাসেন । পায়ের এই সমস্যাটা ফুটবলের কাছ থেকে ভালোবাসার প্রতিদান স্বরূপ পাওয়া। এ নিয়ে উনার থেকে আমরা অবশ্য কখনো কোন অভিযোগ শুনিনি । আর পায়ে সমস্যা থাকলেও উনি উনার কাজে খুব দক্ষ, কাজের বাইরে উনি কথাও বলেন খুব কম ।

আমাদের স্কুলটা ছিল কোএডুকেশন । আমি ছিলাম আমাদের ক্লাসের ফার্স্টবয়, এজন্য স্যার ও ছাত্র ছাত্রীদের আলাদা মনোযোগ ও ভালোবাসা পেয়ে আমি বরাবর অভস্ত্য ছিলাম । এই ক্ষেত্রেও শফিক স্যার এক ব্যতিক্রম, উনার চোখে আমি কখনো আমার জন্য আলাদা করে ভালোবাসার বা স্নেহের প্রকাশ দেখিনি । শুধু একদিন শরীরচর্চা ক্লাসে উনি আমাকে একান্তে ডেকে বলেছিলেন, আমি যদি তোমাকে “জনি” নামে ডাকি তাহলে কি তোমার কোন আপত্তি আছে । স্যার বরাবর খুব গম্ভীর মানুষ তাই কৌতুহল জাগলেও আমি উনার এই ইচ্ছের কারণ জিজ্ঞাসা করার সাহস পাইনি, শুধু মাথা নেড়ে নীরব সম্মতি জানিয়েছি । নতুন একটা নাম পেছে সে সময় এক ধরনের ভালোলাগাও তৈরি হয়েছিল তখন । এরপর থেকে স্যার আমাকে “জনি” নামেই ডাকতেন । কেন উনি আমাকে জনি ডাকতে চেয়েছেন সে রহস্য আমি স্কুল জীবনে আর ভেদ করতে পারিনি । এই স্কুলে আমি তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছিলাম, পরে ভর্তির সুযোগ পেয়ে শহরের নামকরা সরকারী স্কুল ফরিদপুর জেলা স্কুলে চলে যাই । এই স্যারের প্রতি অজানা এক কারণে আলাদা একটা টান রয়ে গিয়েছিল, অনেকদিন বাদে একবার পুরনো স্মৃতির টানে ফিরে গিয়েছিলাম আমার বাল্যের সেই স্কুলে, পুরনো স্যারদের কাউকে কাউকে পেলেও শরীরচর্চার শফিক স্যারকে দেখলাম না স্কুলে । উনার কথা জানতে চাইলে পুরনো দপ্তরী জয়দেব জানালো আমি স্কুল ছেড়ে চলে যাবার কিছুদিন পরেই শফিক স্যারও নাকি স্কুল ছেড়ে চলে গিয়েছেন । চলে যাওয়ার কারণ বা কোথায় গিয়েছেন জানতে চাইলে সে জানালো, শেষের দিকে স্যারের মাথায় গণ্ডগোল দেখা দেয়াতে উনার স্ত্রী উনাকে নিয়ে গ্রামে ফিরে গিয়েছেন, মাথায় গণ্ডগোল দেখা দেবার খবরে বিস্মিত হয়ে কারণ জানতে চাইলে সে জানালো, ওমা তুমি জানো না, এটা তো তুমি স্কুলে আসার পরের ঘটনা, স্যারের ছেলে জনি, যে দেখতে আর বয়সে অনেকটা তোমার মতোই ছিল, পানিতে ডুবে মারা যাবার পর থেকেই স্যারের মাথায় সমস্যা দেখা দিয়েছিল, পরে সেটা বেড়ে যাওয়াতে উনাকে নিয়ে উনার স্ত্রী গ্রামের বাড়ীতে ফিরে গিয়েছেন । জনি নামের রহস্য উদঘাটন হলেও আমি আর কখনো স্যারের কোন খোঁজ পাইনি। যেখানেই উনি থাকুন না কেন ভালো থাকুন, পরিপূর্ণ থাকুন ।


আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
গোবিন্দ বীন ভাল লাগল,ভোট রেখে গেলাম।পাতায় আমন্ত্রন রইল।
এশরার লতিফ ছোট কিন্তু সুন্দর গল্প. সাবলীল ভাষার ব্যবহার.
ভালোবাসা ...
রেজওয়ানা আলী তনিমা ভালো লাগলো , শুভেচ্ছা নিরন্তর
ভালোবাসা ...
হাবিব রহমান অনেক ভাল লিখেছেন।
ভালোবাসা ...
asraf ali ভাল লাগলো। শুভ কামনা রইলো।
ভালোবাসা ...
এস আই গগণ টেনেটুনে আর একটু বড় করলে আরো ভাল লাগতো। শুভ কামনা রইলো। পাতায় আমন্ত্রণ ।
যা বলতে চেয়েছি বলা হয়েছে,আবার কিছু আড়াল রেখেছি, কিছু রহস্য না থাকলে লেখা মনে দাগ কাটবে কেন, লেখার আকারের সাথে ভালো মন্দের সরাসরি সম্পর্ক নেই, অকারণে লেখা বড় করতে গিয়ে পাঁচালী ফেদে বসলেই তা একঘেয়ে হয়ে যেতে পারে ...ধন্যবাদ

১৯ আগষ্ট - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ৩৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“জানুয়ারী ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ জানুয়ারী, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী