পূর্ণতার খোজে

পূর্ণতা (আগষ্ট ২০১৩)

মাসুদ রহমান
ছোট্টবেলায় শোনা একটা গানের কলি এমন "যারে যা চিঠি লিখে দিলাম সোনা বন্ধুর নামে" বেশ ভালো লাগতো। মর্মার্থ বুঝতাম না তবে এটুকু বুঝতাম কোনো এক বন্ধুকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠি। চিঠির প্রেরক আর প্রাপক এর মধ্যকার সম্পর্কটা কী রকম হবে তা বুঝতাম না। যখন বুঝতে পারি তখনো কোনো সোনা বন্ধুর খোঁজ পাইনি।ভাবতাম এতো অল্প তে সোনা বন্ধু জুটবেনা।
আরো বড় হতে হবে-কলেজ পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালেয়ে ভর্তি হতে পারলেই কত্‌তো সোনা বন্ধু জুটবে! আসলেই যে বিষয়টা এতো সহজ না তা বুঝতে খুব বেশি সময় লাগেনি। এইতো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক পর্যায়ে এসেও যখন কোনো সোনা বন্ধুর নাগাল পেলাম না তখনই সব ক্লিয়ার হলো আসলেই ভাবা যতো সহজ করা ঠিক ততটাই কঠিন। নাগাল না পেলে হবে কি চিঠি লেখা কিন্তু থেমে নেই। সেই কলেজের ফার্স্ট ইয়ার থেকে শুরু এখনো থেমে নেই, লিখেই চলেছি। লিখতে লিখতে কতো শত কলম নিঃশেষিত, কত ডায়েরির পাতা কালো হরফের অক্ষরে পরিপূ্র্ণ তা সত্যিই অবাক করার মতন ব্যাপার কিন্তু একটা চিঠিও সোনা বন্ধুর নামে পাঠাতে পারলাম না বা পারিনি। কখনো পারবো কি না তা একমাত্র স্রষ্টা মালুম। সোনা বন্ধুর সন্ধান না পাবার ব্যর্থতা সম্পূ্রণটাই আমার।আর মনের মধ্যে অনূভুতি গুলো কখনো এতো তীব্র হয়নি যে সোনা বন্ধুকে পেতেই হবে। বরং অনুভূতিগুলো যখনই জাগ্রত হবার চেষ্টা করেছে তখনই কোনো না কোন stimulus ওদের সামনে বাঁধার দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই যেমন এইচ এস সি ফার্স্ট ইয়ারে যখন নয়নকে বেশ পছন্দ হলো সব criteria তে সে উত্তীর্ণ to be a Sonabondhu the then time a stimulus appeared before me that this is not high time to consider someone as Sonabondhu specially as Nayon , so you must give up everything, rather you should concentrate on your studies cause you must be admitted into any university. সুতরাং তৎক্ষণাৎ সব ছেড়ে ছুড়ে সুবোধ বালকে ন্যায় পড়ালেখায় মনোযোগ দিলাম, তবে ওর উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিটা ট্রেনের জানালা দিয়ে বাইরে ছুড়ে মারলাম বি-বাড়িয়ার কোথাও। HSC এর পর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিংয়ে কাউকে কাউকে সোনাবন্ধুর মতন মনে হতে লাগলো । এই যেমন ব্যাচের সব চেয়ে সুন্দরি মেয়ে আয়েশা । যখন দেখলো আমি প্রতিদিন ডেইলি টেস্টে সর্বোচ্চ নম্বর পাচ্ছি এবং শেষে Intensive care এ বেশ ভালো করলাম তখন থেকেই দেখতাম ও বেশ ঘনিষ্ট হতে চাইতো, বিশেষ করে চবি তে বি ও ই ইউনিটে outstanding performance করার কারনে। তখন stimulus দাঁড়ালো তোমার লক্ষ্য কিন্তু এখনো অপূর্ণ, আর তা হলো ঢাবিতে চান্স পেতে হবে, সুতরাং এমন ভূল করোনা যাতে তীরে এসে তরী না ডোবে। এরপর আয়েশাকে ও পাত্তা দেওয়া ছেড়ে দিলাম। ও কোনো কিছু জানতে চাইলে কেমন যেন অন্যমনস্ক হয়ে জবাব দিতাম অথবা বলতাম জানিনা বা পারিনা।ও বলতো তুমি কি ঠিকমতো কথাও বলতে পারনা।আর এতো লাজুক কেনো, আমার দিকে তাকিয়ে কথা বললে মনে হয় মরেই যাবে। মনে মনে বলতাম আত্মার মরণ না হলেও আমার উচ্চাকাঙ্খার মরন হতে পারে যা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারবো না। তাই ওদিকের attention ফিরিয়ে এনে admission 'র দিকে দিলাম। সোনা বন্ধুর নাগাল আবার ও নাকের ডগার পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। অভিষ্ট লক্ষে পৌছালাম বেশ ভালো ভাবে। ঢাবি কর্তৃপক্ষ ১টা আসন দিতে আমায় বাধ্যই হলো এক রকম।বিনিময়ে সোনা বন্ধুর নামে চিঠি লিখেও লেখা হলোনা, পাঠানোতো বহুদূর পথ। তারপর ভাবলাম এবার বুঝি আর চিঠি পরিত্যক্ত অবস্হায় ফেলে দিতে হবেনা, ঠিক ঠিক সোনা বোন্ধুকে পেয়েই যাবো, কিন্তু সে আশা সুদূর পরাহত। এখন কেন যেন ওদেরকে বন্ধু মনে হয়না, মনে হয় সাক্ষাত যম, তা না হলে কেন সব সময় হীন্মন্যতায় ভুগী।নিজেকে ভার্সিটির সর্ব নিম্নতম ছাত্র মনে হয় , আসলেই কি তাই? রুমে দেখি রুমমেটরা অনেক ক্ষেত্রেই আমার চেয়ে ঢের কম জানে। ডিপার্টমেন্টে খুব খারাপ রেজাল্ট করি তাওতো না। তাও কেনো যেনো নিজেকে অধমর্ণ মনে হয়। এমন অনেক দেখেছি যারা ঠিক ভাবে ১ পেজ ইংরেজি লিখতে পারে না তারাই দু বাহুতে দু গার্লফ্রেন্ড নিয়ে রোজ সকাল বিকেল কলাভবন, টিএসসি, সড়ক দ্বীপে ব্যাপক আড্ডা মারে। ওদের সামনে দিয়ে হাঁটতেই যেন হাটু কাপে, হোক না অনাকাঙ্খিত কোন ডিপার্টমেন্টের। এইতো সেদিনও কলাভবনের কোনো এক ডিপার্টমেন্টের একটা মেয়েকে বেশ মনে ধরায় মনের অভিব্যক্তি প্রকাশের নিমিত্তে চোটো ভাই কাম বন্ধুকে নিয়োজিত করেও মনের পালপিটেশন নিয়ন্ত্রন করতে পারছিলাম না এই ভয়ে যদি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যাত হই। সত্যিই এই চিঠির মতো হয়তো আরো অনেক চিঠি লেখবো কিন্তু সোনা বন্ধুর নামে আর হয়তো পাঠানো হবেনা। বলছিলাম নিজের Inferior complexity 'র কথা, কিন্ত অবাক না হয়ে পারিনা যে অন্যরাও আমাকে নিয়ে একই সমস্যায় ভোগে। এইতো যেমন আজ পর্যন্ত কোনো কাজিন তথা (চাচাত, মামাত,ফুফাত) আমায় বলাতো দূরের কথা ভাবনায় ও আনে না। ওরা ভাবে ওরা হয়তো আমার যোগ্য না তাই কোন রূপ ইঙ্গিত দিলেও অতি সন্তর্পনে আলোচ্য বিষয়কে পাশ কাটিয়ে ভিন্ন বিষয়ের অবতারনা করে। ভাবে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি তাই বিশ্ববিদ্যালয়েরাই আমার উপযুক্ত। তা না হলে অজমূর্খদেরকে ওদের মনের কোটরে জায়গা দিলেও আমার জায়গা হয় না । এভাবেই হয়তো আমাকে চিঠি লিখে যেতে হবে চিঠির গন্তব্য বা উদ্দেশ্য আর খুঁজে পাওয়া যাবেনা, দেখি এভাবে আরো কতো দিন লেখা যায়.!!!!!!!!!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সুজিত দেব রায় খুব ভালো লাগলো পরে ......
মিলন বনিক নিজের Inferior complexity 'র কথা ভালোই বলতে পেরেছেন...তবে জ্যোতি ভাইয়ের সাথে সহমত পোষণ করছি...তবে হয়তো সোনাবন্ধুও পেয়ে যাবেন...
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি প্রচেষ্টা ভাল তবে আরো ভাল হতে পারতো মনে হয়.....পরবর্তিতে আশা করি এই লেখকের কাছ থেকে আরো অনেক ভাল লেখা পাবো........অন্যদের লেখা না পড়লে পাঠক সংখ্যা বারবে না ...তাই অন্যদের লেখা বেশী করে পড়তে হবে ....অনেক ধন্যবাদ মাসুদ ভাই আপনাকে............

২৪ জুলাই - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪