ফারাক

দেশপ্রেম (ডিসেম্বর ২০১৩)

মীর মুখলেস মুকুল
  • ৫৮
সাহিত্যিকেরা; বিশেষত কবিরা আকাশের দিকে তাকিয়ে কত কী যে আবিস্কার করে আর দেখতে পায়, তার ইয়াত্তা নাই। শূন্য আকাশে তারা সাগর পাহাড় নদী রচনা করে শুধু রচনাই করে না তাতে বিচরণও করে। আর আমি খালি চোখে তো নয়ই চশমা চোখেও একফোটা জল বা ধূলিকণাও আবিস্কার করতে পারিনি। আমি দিনে দেখি শুধু মেঘ রাতে দেখি চাঁদ-তারা। তারাগুলো ক্ষুদে, মিটমিট করে জ¡েল আর চাঁদ বড়, রূপোর থালার মত। শুনেছি তারাগুলো নাকি নক্ষত্র। তাদের ভিতর কিছু কিছু গ্রহও আছে। পৃথিবীও নাকি একধরণের গ্রহ। তবে পৃথিবী আমাদের আপন আর দূরেরগুলো ভিনগ্রহ। আকাশে বিরাজমান গ্রহ-নক্ষত্রগুলো গোল। পৃথিবীও নাকি গোল। অথচ আমি একদিন দিনাজপুর থেকে চিটাগাং পার হয়ে কক্সবাজার, প্রায় কয়েক’শ মাইল গাড়িতে ভ্রমন করেও পৃথিবী যে গোল তার কোন লক্ষন দেখতে পাইনি। অথচ দূর আকাশের খাঁজকাটা তারার মত দেখতে ওগুলো কী করে গোল হয় তা মাথায় ঢোকে না। এসব ভাবতে গেলে মাথা তো গোল আছেই পা দুটোও গোল হতে শুরু করে। ¯^চোখে দেখা পাবনা মেন্টালের কথা ভেবে এসব ভাবনা মাথা থেকে ঝেরে ফেলি। এসবও শুনেছি ভিন গ্রহে নাকি আমাদের মত মানুষ আছে। তারা খুব উন্নত আর ভয়ানক। তারা পৃথিবীতে এসে আমাদের দেশের পশু-পাখি এমনকি মানুষকেও ধরে নিয়ে যায়, সব আধুনিক যন্ত্র-পাতি বিকল করে দেয়। যাই হোক এগুলো চোখ দিয়ে দেখা নয়, কান দিয়ে শোনা। শোনা কথায় বিশ্বাস করতে নেই। বিশ্বাস করিই বা কিভাবে? এসবে আমার কোন ধারণা নাই। কেননা গ্রহ-ন¶ত্রের কথা উঠলেই জ্যোতির্বিজ্ঞানের কথা উঠে। জ্যোতির্বিজ্ঞান হল বিজ্ঞানের আপন মায়ের পেটের খালাতভাই। আবার বিজ্ঞানের নানা ¯^য়ং গনিত। সেই অনেক আগে ক্লাস সেভেনে, একদিন ভূ-গোল স্যার গ্লোব হাতে ক্লাসে এসে ওটা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে কি সব হাবড়ি-ঝুবড়ি বুঝিয়েছিলেন। তখন থেকে আমার মাথা ঘোরা রোগের সুত্রপাত। সেসব কথা শুনলে এখন অব্দি মাথা ঘোরে। অতপর মানবিক শাখায় ভর্তি। ছ্যাঁচড়াতে ছ্যাঁচড়াতে একদিন ্মেট্রিক, তারপর ইন্টার, অবশেষে ডিগ্রীও পাশ করে ফেললপাম। সবগুলিই তিন টান নিয়ে। হয়তবা তাই বাবা প্রায়ই আফসোস করে বলতেন, মানুষ লেখাপড়া শিখে মানুষ হয়, আর তুই হয়েছিস গাধা। বুদ্ধি-জ্ঞান, কাজ-কর্মে ঠিক ঠিক গাধা। তবে ওর থেকে আমার পার্থক্য শুধু এটুকুই পিছনে একটা অঙ্গ কম।
বাবা এখন ভয়ানক পেরেশান। এই গাধার একটা গতি করার জন্যে। সেজন্য বাড়ীতে ঘন ঘন আত্মীয়-কুটুম আসা যাওয়া শুরু হল।
একদিন বাদজুম্মা মেঝদুলাভাই নতুন পাজামা, পাঞ্জাবী আর গোল টুপি হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো, শ্যালক গাধা, ঝট-পট রেডি হ তো।
আমি গাধার মত ভাবলেশহীনভাবে মাটির উপর পা দিয়ে আঘাৎ করে বললাম, ব্যাপার কী?
ব্যাপার কিছু না, চল্ আমাদের সাথে।
সন্ধ্যা-নাগাদ দশ বার জনের একটা দল অনেকটা গলায় দড়ি দিয়ে টেনে নেওয়ার মত করে টানতে টানতে নিয়ে গেলো আমাদের জেলা সদরের এক ভদ্রলোকের বাড়ীতে। আমাদের বসতে দেয়া হয়েছে আসবাবপত্র খালি করে চাদর পাতা মেঝেতে। আন্ডা-বাচ্চা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়েসের ছেলে-মেয়েরা দরজা জানালায় উঁকি ঝুকি দিয়ে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে আমাদের দেখছে। যেন আমরা চিরিয়াখানার চিরিয়া।
লম্বা দেনদরবার চলছে। এক ফাঁকে মেজ দুলাভাই কোথা থেকে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে পকেট থেকে ঘাম মোছা দূর্গন্ধযুক্ত রুমাল বের করে বললো, এটা ভাঁজ করে তোর গাধা মার্কা মুখটা ঢেকে একটু লজ্জা-লজ্জা ভাব করে থাক্।
হঠাৎ টিনএজের তিন-চারটা ছেলে-মেয়ে এসে আমাকে ঘিরে বসলো। একজন বললো, দুলামিয়া কেমন আছেন?
আমি চুপ থাকলাম।
একজন গোল টুপিটা খুলে ফুঁ দিয়ে নিজের মাথায় দিয়ে আমার মাথার চুল নেড়েচেড়ে বললো, চুল পাতলা।
আর একজন গোঁফ জোড়া হাতিয়ে বললো, এগুলো কি কলপ করা?
একটুপর অন্য একজন বললো, লোকটা কথা বলে না কেন? গাধা নাকি?
এত¶ণে ওরা আমার সত্যিকার পরিচয় জেনেছে ভেবে, প্রাণ-পণ চেষ্টা করেও নিজের হাসিটা দমাতে পারলাম না। খেজুরের বিচিরমত দাঁত বের করে হেসে ফেললাম। আর মনে মনে আল্লাহ্র দরবারে শুকরিয়া আদায় করলাম, ভাগ্যিস আমার লেজ নাই। তাহলে কেউ না কেউ ওটাও উঁচিয়ে দেখতো। তখন মুখের উপর ফুস করে বাতাস ছেড়ে দিলে বুঝতো ঠেলা।
মাঝ রাতের পর দূর্গন্ধময় রুমালের হাত থেকে রেহায় পেলাম। আমাকে আজম্মেরমত এনে ঢুকিয়ে দেয়া হল খোয়াড়ে। দেখলাম এক মহিলা বসে আছে। একটু পরেই বুঝলাম আসলে ওটা একটা মহিলা পুলিশ।
ঘরে ঢোকার সাথে সাথে সে চেঁচিয়ে উঠলো, মালেকা! মালেকা! লেজওয়ালা ওটাকে কষে একটা প্যাদানি দিয়ে ভত্তা বানিয়ে ফেল।
আমার মনের জোর বরাবরই কম। অটোমেটিক আমার পিছনে হাত চলে গেল।
এটা দেখে হুংকার দিল, পিছনে হাত দিয়ে বাবু সেজে থাকা হচ্ছে। বিড়ালটা না মারা পর্যন্ত সামনে দু’হাত জোড়া করে দাঁড়িয়ে থাক।
আমি বললাম, জ্বে পুলিশ আপা! থুক্কু! বৌ আপা।
রাবিস! কি সব বাজে ল্যাঙুয়েজ! গাধা নাকি?
বিস্মিল্লায় গলদ। ইচ্ছা হলো চিৎকার দিয়ে কাঁদি। ভেবেিেছলাম শত বুদ্ধি খাটিয়ে হলেও বৌ এর কাছে অন্তত গাধা হিসাবে ধরা দেবো না। সে আশা এখন দেখছি গুড়ে বালি। ভয়ও হলো, পাছে যদি ডিমোশন দিয়ে গাধা থেকে ভেড়া বানিয়ে দেয়, তয় আমও যাবে ছালাও যাবে। তাই তারাতারি উত্তর করলাম, জ্বি।
খেকিয়ে উঠলো, জ্বি মানে?
মানে ঐযে বললেন।
ও...। বুঝেছি।
তারপর থেকে তার সেই বুাঝা-ই আমার জন্য সব চেয়ে বড় বোঝা হয়ে গেল। হাঁড়ি-পাতিল, বাজার-ঘাট, আয়-রোজগার আর ঐ পুালশ বৌ-এর রোজকার পালাপালা কথা আমার নিত্য দিনের বোঝা।
আমাদের সংসারের বয়স প্রায় ছয় মাস। এরই মধ্যে আমি বৌয়ের চরম ভালবাসায় পরম অতিষ্ঠ।
একদিন দুপুরের পর একটা গহীন জঙ্গলে দড়ি হাতে পায়চারি করছি। হঠাৎ অদ্ভুত মানবাকৃতির একটা দানব এসে আমার সামনে দঁড়াল। আমি অধিক ভয়ে নির্বিকার। সে যান্ত্রিক রিনরিনে ¯^রে বললো, আমাকে দেখে একটুও ভয় পাচ্ছ না, ব্যাপার কি?
ভাবলাম, ভয় পাইনি মানে? গলা শুকিয়ে কাঠ। ইতিমধ্যে তলপেটের যাবতিয় পানি নিচের দিকে গড়িয়ে গেছে। কাপড় ভিজলেও ভিতরে ভিতরে পানিশুন্য রোগীরমত দশা আমার। সাহসের ভাব নিয়ে বললাম, আমি হলাম গিয়ে গাধা শ্রেনীর মানুষ, গাধার আবার ভয়ই কী সাহসই বা কী? জান না গাধারা কথার ধার ধারে না কাজে বিশ্বাস করে?
সে যান্ত্রিক রিনরিনে গলায় ভুম ভুম করে হুংকার দিয়ে উঠলো, তার মানে?
না কিছু না, ইতিমধ্যে একটা কাজ হয়ে গেছে আরও একটা ছোট কাজ হলো।
কী সব আবল তাবল বকছো, পরিস্কার করে বলো কাজগুলো কী?
সব বলছি। তার আগে বল, তুমি কে?
আমি এলিয়েন।
অরে বাবা! এবার বড় কাজটাও হল। আমাকে দশ মিনিট সময় দেবে?
কেন?
প্রথম কাজটা কাপড় ভিজে ক্ষতম, ছোট কাজটা বাতাসে মিলিয়ে গেছে, আশা করি নাক থাকে তো টের পেয়েছ। বড় কাজটার কথা কি আর বলা দরকার আছে? এখন এর থেকে পরিত্রান পেতে পানির দরকার। পাশে একটা পুরনো পুকুর আছে, এই যাব আর আসবো।
এলিয়েন নাক চেপে ধরে বললো, দ্রুত যাও, দাঁড়িয়ে থেকে বমি করার ব্যাবস্থা কর না।
একটু পর ভেজা কাপড়ে কাঁপতে কাঁপতে এসে বললাম, ভাই এলিয়েন মানে ভিন গ্রহের মানুষ, ছালায় মালায় কম।
এতোক্ষণ পর সালাম?
আমি কৃত্রিম লজ্জাভাব নিয়ে বললাম, পবিত্রতার একটা ব্যাপার আছে না? স্টিমেটিল এনেছ?
স্টিমেটিল কি?
মাথাঘোরা বন্ধের ওষধ, তোমাদের কথা শুনলেই মাথা ঘোরে, এখন তো ¯^চক্ষে দেখা। প্রচণ্ডরকম মাথা ঘুরছে।
কথাগুলো বলছিলাম বটে কিন্তু ভিতরে এমনই আলোড়ন হচ্ছিল যে, নতুন করে কাপড় নষ্ট হওয়া থেকে নিজেকে খুব কষ্টে বিরত রেখেছিলাম। তবে কয়েকবার বাতাস ছেড়ে রেহায় পেয়েছি।
এবার এলিয়েনের কণ্ঠ রিনরিনে তবে ঠাণ্ডা মোলায়েম একটা ভাব। বাহ্ তুমি তো বেশ সহজ-সরল। তোমার কথায় খুশি হয়েছি। তুমি আমার দোস্ত।
আমার ধরে নতুন করে জান এলো। আমি বুক ভরে শ্বাস নিলাম।
সে বলে চলেছেÑ শোন, আমাকে ভিন গ্রহ থেকে পাঠান হয়েছে। পৃথিবী সম্বন্ধে খবর নিতে। প্রায় সব দেশের খবর নিয়েছি। এখন বাংলাদেশ। তা তুমি এই লোকে-লোকারণ্য জন-মানবশূন্য জঙ্গলে কি করছো?
আমার গলার কাঁপাভাবটা কমে এসেছে। অনেকটাই সহজ-সরল ভাবে বললামÑ ঐ বল্লাম, আমি গাধা শ্রেনীর মানুষ। তাই প্রিয়তমা স্ত্রী বলেছে লোকালয় ছেড়ে জঙ্গলে বাস করতে। কিন্তু এখানেও সমস্যা। পশু-পক্ষিরা আমাকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। আমার নাকি কী একটা জিনিসের অভাব। তাই যা করার তাই করছি।
খামাখা আত্মহত্যার দরকার নাই। এক মাস খাবেদাবে, আমার সাথে ঘুরবে। আমার বিশাল ¶মতা। ঐ যে বাহন দেখছো, ওটাতে আমি অদৃশ্য হয়ে দ্রুত গতিতে যেখানে খুশি সেখানে যেতে পারি। দুর থেকেও সব বুঝতে পারি। আমাকে সেভাবে প্রশি¶ন দেয়া হয়েছে।

এক মাস মহাসুখে ঘুরেফিরে আবার সেই জঙ্গলে এসে থামলো এলিয়েনের যানটা। এলিয়েনের ফিরে যাবার মুহূর্তে করুণ সুরে বললাম, এই এক মাস তোমার সাথে থেকেও মাথা মুন্ডু কিছুই বুঝলাম না। তুমি কি বুঝলে দোস্ত, বলনা।
এলিয়েন বললো, তোমাদের দেশটা খুব সুন্দর। এক কথায় অপরূপ। তবে তোমাদের নির্বুদ্ধিতায় সুন্দরবন আর সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর অন্যতম সাত সৈন্দর্যের মধ্যে উঠে আসতে পারেনি। তোমাদের কৃষকেরা আর খেটে খাওয়া মানুষগুলোই কেবল সৎ। বাদবাঁকী সব প্রতিষ্ঠানই কম-বেশী দূর্নীতিগ্রস্থ। শি¶া প্রতিষ্ঠানের পবিত্রতা নেই, ¯^াস্থ্য ব্যবস্থা এইডস ভাইরাস আক্রান্ত, মানুষ বিপদে পরলে পুলিশের কাছে যাওয়াতো দূরে থাক পালিয়ে বাঁচে, প্রশাসনের হাত লম্বা হলেও প¶াঘাতগ্রস্ত, বিচার ব্যবস্থা পরনিরভর্শীল। ঐসব দমনকারী কমিশকে দমন করতে সারিসারি কয়েক ধাপ ঐ জাতিয় কমিশন বানালেও শেষ রক্ষা হবে না। আর রাজনীতি একটু জটিল। সরকারী দল জনগনের সমস্যা পরিস্কার বুঝেও সেসব সমাধানের পথে যায় না বরং প্রতিপ¶কে দমন করাই মুখ্য উদ্দেশ্য মনে করে। ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার কথা ভাবে। ফলে জন দূর্ভোগ বাড়ে। বিরধী দল এইসব সুযোগ নিয়ে হরতাল ডেকে দেশের ¶তি করে।
এসব তো আমার মাথায় ঢোকে না। আমি বললাম।
বিয়ের যৌতুকের টাকা তোমার বাপ আর তিন ভগ্নিপতি ভাগ করে খেল। এখন বৌ তোমার মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাচ্ছে। আগে এসব বুঝতে চেষ্টা কর। তারপর ওসব। ঠিক আছে, বেঁচে থাকলে দেখা হবে। গুড বাই।
এলিয়েনের চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে থেকে থেকে ফের বাড়ী গেলাম।
একমাস পর বাড়ি ফিরলাম, বৌ আমাকে ভালমন্দ দু’টো কথা বলবে কী মুগুড় নিয়ে দরজায় দাঁড়ালো। কোন মাতারীর ঘর করে ড্যাং ড্যাং করে বাড়ি ফেরা হচ্ছে? এ্যাঁ?
কিযে বলেন বৌআপা থুবড়ি বৌজান, আমাকে এলিয়েন মানে ভিনগ্রহের মানুষ ধরে নিয়ে গিয়েছিল। এই একমাস...
একথা শুনে সে সিনা টান করে দাঁড়ালো, কী? বলি কয় গ্যালন মদ গেলা হয়েছে শুনি? পাঁড়মাতাল কোথাকার। হুকুমজারী করলামÑ মাতলামী বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ঘরে স্থান নেই। সেদিন শীতের সারারাত খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে কাটাতে হল। সেদিনের কষ্টের কথা আজও ভুলতে পারি না...।

পাঁচ বছর পর আবারও সেই জঙ্গলে আমার হাতে দড়ি। ঠিক সময়মত এলিয়েন এসে হাজির। তাকে দেখেও না দেখার ভান করে পালিয়ে যেতেই সে আমাকে পিছন থেকে হাত চেপে ধরলো, কি ব্যাপার পালাচ্ছো কেন? বল কেমন আছ?
আমি চুপচাপ।
কী কথা নেই কেন? তুমি এত কালো হয়েছ কেন?
অবশেষে মুখ খুললাম, বউ এর যৌবনের উত্তাপে।
ভাল, হাতে দাগ কিসের?
বউ রান্না প্র্যাকটিসের সময় আমাকে রোস্ট মনে করে গরম খুনতি দিয়ে একটু নেড়ে দিয়েছিল।
মাথায় আলুর মত ফুলে উঠেছে কেন?
সোনার বৌটা খেয়ে খেয়ে ফুটবলের মত গোলগাল হয়ে গিয়েছিল। ডাক্তার বলেছিল একটু জগিংফগিং না হয় খেলাধুলা করতে। একদিন বিকালে খেলার বল না পেয়ে পাঁচ কেজি চালের ভাত রান্নার পাতিলটাকে কাজে লাগিয়েছিল।
খুঁড়িয়ে হাটছো কেন?
আমার পা ব্যাথা হয়েছিল। বউকে বললাম কুসুম-কুসুম গরম পানি ঢেলে স্যাক দিতে। সে একদিনে কাজ সারতে চেয়েছিল। ভবিষ্যতে আরও পানি লাগবে ভেবে, ভবিষ্যতের সব গরম পানির গরমের যোগফল ফুটন্ত পানি হয়, তাই ঢেলে দিয়েছিল।
চমৎকার! আত্মহত্যা পরে কর, চল বেড়াই।
ঠিক দুই মাস মজা করে ঘুরে বেড়ালাম। ফেরার সময় বললাম, এবার কি বুঝলে?
এলিয়েন বললো, খুব আশ্চর্য হলাম, গত টার্মে যারা বিরোধী দলে ছিল তারা তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার জন্যে আন্দোলন করেছিল। সরকারী দলের মতামত ছিল উল্টা। এখন নিজ নিজ অবস্থার পরিবর্তনের ফলে একই মুখে উভয় দলই সম্পূর্ণ উল্টো কথা বলছে। এখন মনে হচ্ছে তোমরাই এলিয়েন।
খাঁটি কথা বলেছ। নিশ্চয় তোমার মাথা ঘুরছে। এই নাও স্টিমেটিল।
এলিয়েনের একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলার শব্দ পেলাম। মনে মনে ভাবলাম কার দীর্ঘশ্বাস কে ফেলে। এলিয়েনের যাওয়ার সময় কাঁদকাঁদ হলাম, দোস্ত, তোমার তো অনেক ¶মতা, আমার একটা গতি করে দাও না।
মানে?
এই বুঝলে না? আমি বাড়ীতেও টিকতে পারি না। আবার একটা জিনিসের অভাবে বনের জন্তু জানোয়াররাও সুনজরে দেখে না। ওটার যদি একটা ব্যবস্থা করে দিতে। পরিস্কার করে বলি, আমাকে একটা লেজের ব্যবস্থা যদি করে দিতে।
সে ব্যবস্থা আর আমাকে করতে হবে না। তোমরা যেভাবে চলছো, এভাবে চলতে থাকলে আস্তে আস্তে একদিন শুধু তোমারই না সকলেরই গজিয়ে যাবে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ মহিউদ্দীন সান্‌তু onekta roshalo, bastobota o onekta aseche, valo legeche,
সূর্য রম্য কিছু কিছু জায়গায় ছন্দ হারিয়েছে। আর শেষে দেশের, দলের মান্যতা, ভিন্নতার কথায় একটা স্যাটায়ার পরিপুষ্ট হতে হতেও কিছুটা নিরাশ করলো। হয়তো বলতে পারতাম অসাধারণ স্যাটায়ার কিন্তু এখন শুধু বলতে হচ্ছে ভালো হয়েছে।
মনতোষ চন্দ্র দাশ সমসাময়িক ঘটনার অার্বতে সুন্দর একটি গল্প। ভাল লেগেছে।
মিছবাহ উদ্দিন রাজন চরম একটা স্যাটায়ার আছে লেখাটায় । শুভকামনা রইলো ।
Rumana Sobhan Porag ভাল লিখেছেন।
এফ, আই , জুয়েল # অনেক বাস্তবধর্মী ও চেতনা জাগানিয়া একটি লেখা ।।
Farid Ali গল্পতে সমসাময়িক সময় উপস্থাপিত হয়েছে ।
আরাফাত ইসলাম এককথায় অসম্ভব বাস্তবধর্মী ভালো একটা লেখা উপহার দিয়েছেন !!!

০৬ মে - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ২০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী