সন্ধ্যে হয়নি। হতেও দেরি নেই। ধূসর মেঘের ফাঁকে-ফাঁকে ডুবন্ত বেলার কমলা আলোর উঁকি। অস্ত-দিগন্তের লালিমায় বিদায় দিনের আকুতি। ভরদিন অšে^ষান্তে ক্লান্ত পাখিরা দলে-দলে নীড়ে ফিরছে। দূরে ঝাপসা ধোঁয়ার আড়ালে অসপষ্ট গ্রামগুলো ক্রমশ গাঢ় সবুজ থেকে কালচে হয়ে যাচ্ছে। মেঠো পথে কিষাণ-রাখালরা লাঙ্গল-জোয়াল-গরু নিয়ে গ্রামে ফিরছে। হতাসা-ক্লেদ-ক্লান্তি ঝরানো ভাটিয়ালি তাদের কণ্ঠে। শ্যামলীমায় তখনও এক বালক এক মনে ঘুড়ি ওরাচ্ছে। নাটাইয়ে সুতোর টানে পরাধীন পাখির মত ঘুড়িটা ¯^াধীন আকাশে-বাতাসে খেলছে...।
আমি মেটে সড়ক ধরে গঞ্জের দিকে যাচ্ছি, দিনের ক্লান্তি কিছুটা নির্ভার করতে; চায়ের আড্ডায়। বাঁক ঘুড়ে আমগাছটা পিছনে ফেলে আসতেই দেখলামÑ ঘুড়িটা বাধন কেটে ¯^াধীন হয়ে কোথায় হারিয়ে গেছে। ছেলেটি বিষন্ন। চোখ ভেজা। বুঝলাম, ঘুড়ি অচিন দেশে হাড়িয়ে গেছে, অথচ সুতোর টান এখনও তার হৃদয়ে অদৃশ্য এক মায়াটানে পরিণত হয়ে খেলা করছে। এ রেশ থাকে...। কতক্ষণ থাকে কেউ জানে না।
আমাদের আড্ডাখানাটা গঞ্জে। গ্রামের বিঘতখানেক উন্নত সংস্করণ গঞ্জ। চরাটের বেনচির উপরে টিনের চালাঘর। খোলামেলা একটা চা’য়ের দোকান। খুব সরব হয়। চা-পান-টানে জমে উঠে। অধ্যাপক, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতি কর্মী, ছাত্ররা ছাড়াও সব রকম লোকেরই সমাগম হয়। যেন এক চলন্ত শিক্ষা পরিবার। সেটা এমন যে, কাউকে চিনে নিতে হয় না, নিজেই নিজেকে চিনিয়ে দেয়।
অথচ আজ? আজ কী হলো? কেমন যেন একটা পড়ো-পড়ো ভাব। সেখানে কী বাজ-টাজ পড়েছে? নাকি অন্য কিছু? শোকপুরীও হতে পারে। কত কিছুই মাথায় আসছে। কাছে আসতেই বুকের ভিতর ছ্যাঁত করে উঠলো। ছোট-বড় ছয়-সাতজন চা-পাঠী বসে আছে। মনমরা। কারোর মুখে রা নেই।
আমাদের কবি এনামুল হক টগর-ই কথার প্রাধান্যে থাকে। সব সময় আসরটাকে জমিয়ে রাখে। তার আধ্যাতিক ঢংয়ের কথায় আমরা নতুন নতুন আলোর সন্ধান পেয়ে থাকি।
সেই প্রথম মুখ খুললোÑ তৌফিক আকন্দ আর আমাদের মাঝে নেই। নিরব-নিথর আসরটা যেন শোকের আর এক ধাপ তলে ডুবে গেল। কবি টগরের কাছ থেকে শোনা সেই কথার প্রতিধ্বনি হলÑ জীবনের ভেতর মৃত্যু ঘুমিয়ে থাকে। তৌফিক আকন্দ যেন সেই ঘুমের সন্ধান পেয়েছে।
উপন্যাসিক সাইদ হাসান দারা’র মন খারাপ হয় না; দেরাজ দিলের লোক, মিশুক, ফুর্তিবাজ। অনুভব এবং ঘ্রাণ শক্তি প্রখর। লেখকরা এমন না হলে কী আর সাহিত্য অন্তর থেকে জোসনার মত গলে গলে পড়ে? সে-ও কথা বলছে না। কেমন যেন পাথর হয়ে গেছে।
আমি ফিরে ফিরে চাই; বাঁকা চোখে, চোরা চোখে। দারার চোখে কী পানি? সে সবার অলক্ষ্যে চশমা খুলে চোখ মুছলো।
ফিরোজ খন্দকার সার্থক নাট্যকার ও নির্দেশক। মাটির মানুষ বলেই নয়; মনটা কাদার মত নরম। আগেও টের পেয়েছি, আজ আবারও টের পেলাম। শুরু থেকেই মাথা নিচু করে বসে আছে। মুখটা শুকনো। দৃষ্টি অসচ্ছ, ঘোলা। সবাই কাঁদলে আমি কী করবো...?
অঞ্জন, প্রিন্স, শিবলু, শিশির সবারই একই অবস্থা। চুপচাপ। কান্না-কান্নাভাব। হাস্যজ্জ্বোল দোকানদার মনজু অন্যমনোস্ক। তড়িৎকর্মা চা-পাচক বাবুলের হাতই চলছে না। একি হলো আজ...?
আমি অসহায়ের মত পরিস্থিতি অনুধাবনের চেষ্টা করছি। কাকে কী শান্তনা দেব? আমার নিজের সান্তনা কোথায়...?
আসরটা যেন ক্রমশ শীতল হয়ে গাঢ় অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে। শেষ বৈশাখেও যেন এখানকার তাপমাত্রা আস্তে আস্তে শিশিরাংকের নিচে নেমে যাচ্ছে। বিজলি-বাতি, আকাশে একখন্ড-চাঁদ আর অনেক তারা; এতকিছুর পরও যেন চারিদিক ঘন অন্ধকার।
মুহূর্তে আমাদের আড্ডাখানা টাইম মেশিন হয়ে ছুটে গেল ত্রিশ-বত্রিশ বছর পিছনে নাটোরের গুরুদাসপুরের সাহাপুর গ্রামে। সবকিছু যেন স্পষ্ট ছবিরমত চোখের পর্দায় বায়স্কোপের মত ভেসে উঠলো। যেন কোন সার্থক পরিচালকের জীবন্ত ছবি প্রজেক্টরে চালছে; আমরা দর্শকরা বসে আছি শেষ রাত্রির নিরবতায়। নিস্তব্ধতার যেন শেষ নেই...।
নন্দকূজা নদীটা মেঘ থেকে নেমে এসে দিগন্ত স্পর্শ করে সাপের মত এঁকে-বেঁকে দূরে কোথাও চলে গেছে। তাতে রঙিন পাল তোলা নাও। খরা পেতে মাঝিরা মাছ ধরছে। নদীর রূপালী ঢেউ শেষে শুরু হয় নরম সবুজ ঢেউ। তরুণ ধানে বাতাসের ঢেউ। সে ঢেউ শেষ হলে কাজল কালো উদাস আর একরকম ঢেউ। একখানি গ্রাম ঢেউ-এ ঢেউ-এ বহুদূর শেষে আকাশের গায়ে হারিয়ে গেছে। মাঝে মাঝে মাথা উঁচু করে থাকা তাল গাছ; যেন শিরোস্ত্রাণ পরা সেইসব সৈনিক, সেখানে গেলেই ওরা কুর্নিশ করে ¯^াগত জানাবে। সেগুন, দেবদারু, জারুল, শিমুল, কৃঞ্চচূড়া আর হালোটের মাথায় ঝাঁকড়া কাল চুলোমাথার রেইনট্রি, গ্রামের অহংকার হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। গাঁয়ের প্রান্তে বটের ছায়ায় বিরাট মাঠঅলা স্কুল। সাহাপুর গ্রাম।
গ্রামের মাঝে এক জবরদোস্ত গেরস্ত বাড়ি। গেরস্তের নাম মুছা আকন্দ। আম, জাম, কাঁঠাল, তেতুল, কলাগাছে ঘেরা ছায়া নিবির এক জমপেস বাড়ি। গ্রীষ্মের বিকালের কমলা আলোয় বাড়ির আঙিনাটা যেন সবে পাক ধরা আম রঙ ধারণ করেছে। গরমে আম-জাম-কাঁঠাল পেকে গন্ধে মৌ মৌ। সে আলো আর তাপে আমাদের আড্ডাখানার শীতল-অন্ধকারভাব ক্ষণিকের জন্যে ম্লান হয়ে গেছে। অজান্তেই অতি সন্তর্পণে যেন বালক বেলার রূপকথা হাতিয়ে অস্তিত্বহীন হয়ে গেলাম...।
আবু হানিফ স্কুল থেকে হাঁপাতে হাঁপাতে বাড়ি ফিরছে...। বারবাড়ি থেকে হাঁক ছাড়েÑ
মা..., মা..., পানি খাব...।
মা পৈঠানে চাল ঝারে। ¯েœহময়ী সব ফেলে আগে আঁচলে খোকার কপালের ঘাম মোছে।
খারাও বাপ..., হাসেলে যাও, ভাত খাতি বসো, পানি আনতিছি...। উৎকণ্ঠিত মা ঘড়া হাতে কলের ঠাণ্ডা পানি আনতে যায়...।
হানিফের তর সয় না। কার কথা কে শোনে! কিসের খাওয়া! কিসের পানি পিপাসা! চঞ্চল হানিফ তার সাজানো খোপে বই রেখেই ছোটে নাটাই-ঘুড়ি নিয়ে। তার প্রিয় কাল খাসিটা লেজ উঠিয়ে কান খাড়া করে টগবগিয়ে টাট্টু ঘোড়ার মত তার পিছু নেয়...। চির চেনা সবুজ মাঠে হানিফের ঘুড়ি আকাশে পথ হারায়। অথবা সে নিজেও...।
দিন যায়, বছর যায়। হানিফের মন রাখালের ভাটিয়ালীর সুরে ভাটির টানে কোথায় হারিয়ে যেতে চায়। গাছে-গাছে পাখির বাসায় ডিম আর ছানা খোঁজে। বোল্লার ডিম সংগ্রহ করে বড়শি দিয়ে মাছ ধরে। শীতের শেষে নদীতে পলো ফেলে দল বেঁধে মাছ ধরে। হাঁটু জলে কাদায় ফোকড়ে ফোকরে হাত ঢুকিয়ে বাইন মাছ ধরে। বাইন তার খুব প্রিয়।
মা বলে, বাপ আমার মাছ ধইরে আনেছে। বাইন মাছ। মমতায় তার সুখের হাসি ফোটে। সে সুখের আড়ালে ভয় উঁকি দেয়।
তোর বাপ যেনি টের না পায়। তালি মাইরে কিছু থুবিনানে...।
বাবা মুছা আকন্দের কড়া শাসনÑ হাইলে, চাকর, জাইলির কাজ তুমার না, লেহা-পড়া ঠিকমত কর...।
হানিফ তখন বোধ হয় ক্লাস টেনের ছাত্র। একদিন বাংলা স্যার ক্লাস নিচ্ছেনÑ হানিফ আনমনা।
শিক্ষক রাগত প্রশ্ন করেনÑ মন কোথায় থাকে? এ্যাঁ? প্রশ্ন করছি উত্তর দাও, ব্যর্থ হলে অপমানিত করে ক্লাস থেকে বের করে দেব। বল, জীবনানন্দ দাসের জন্ম কোথায়?
হানিফ ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। তবুও চোখ বন্ধ করে আবৃত্তি করেÑ
একদিন খুঁজেছি যারে/বকের পাখির ভিড়ে বাদলের গোধূলি আঁধারে,
মালতীলতার বনে, কদমের তলে,/নিঝুম ঘুমের ঘাটেÑকেয়াফুল, শেফালীর দলে!
বলেছ বটে! নজরুল সম্বন্ধে কী আর জান, কী আর বলবেÑ তবুও চেষ্টা করে বল Ñশিক্ষক প্রশ্ন করেনÑ
হানিফ মাথা উচু করে বলেÑ নজরুলের পরিচয় জানার জন্যে তার সাহিত্যের বিশাল সাগরে সাঁতার কাটার দরকার পরে না। সামান্য উচ্চারণেই বোঝা যায়Ñ
গাহি সাম্যের গান
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহিয়ান!
সে একদিন এভাবেই প্রকাশিত হয়েছিলÑ
ওরে ভয় নাই, আজ দুলিয়া উঠেছে হিমালয় চাপা প্রাচী!
গৌরীশিখরে তুহিন ভেদিয়া জাগিছে সব্যসাচী!
বাঞ্চিত মানুষের সাম্যের চেতনায় যে আগুন, তারই শিখা থেকে নজরুলের জন্ম। হানিফ উত্তর দেয়।
ঠিক আছে, ঠিক আছে, আমাদের কবি রবি ঠাকুর সম্বন্ধে কী জান? স্যার তাকে বিপদের চরম সীমায় নিয়ে যেতে চানÑ
হানিফ শুরু করেÑ
আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার চরণধূলার তলে
সকল অহঙ্কার হে আমার ডুবাও চোখের জলে।
সে বলে চলেছে...।
নব আনন্দে জাগো আজি নব রবিকিরণে
শুভ্র সুন্দর পীতি-উজ্জ্বল নির্মল জীবনে।
জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের হৃদয়ের ভালবাসার স্পন্দন থেকে তার জন্ম। তাই তো তিনি বিশ্ব কবি।
শিক্ষক শুধু বলেছিলেনÑ বাবা তুমি বড় হবে! অনেক বড়...!
সত্যিই হানিফ অনেক বড় হয়েছে। অনেক।
স্কুল জীবন থেকেই তার সাহিত্যের প্রতি প্রবল ঝোঁক। লেখালেখি তখন থেকেই। কলেজে সে রীতিমত নট্যকর্মী। নিজ এলাকায় তখনই সে শিল্পী হিসাবে পরিচিত।
আমাদের সেই সৈম্য ফর্সা লম্বা হানিফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে মাস্টার্স করেছেন। পরে বিসিএস।
সে এখন সহঃঅধ্যাপক, চিত্রশিল্পী, নাট্যশিল্পী, নাট্যকার (সুরতহাল, গেরুয়া, নিশিকুটুম, আরও কিছু প্রকাশের পথে), উপন্যাসিক (প্রতিমা)।
সে এখন তরুণ প্রজন্মের তৌফিক আকন্দ। এ নামেই সে লেখালেখি করে।
তৌফিক আকন্দের ছোট বেলার সেই ঘুরি কলেজ জীবনে আরও চঞ্চল হয়ে ইঠে। কখনও বা সে নিজেই ঘুড়ি হয়ে আকাশে উড়ে। মাঝে মাঝে নন্দকূজার আকাশ ছাড়িয়ে ওপাড়ের আকাশে হারিয়ে যেতে চায়। কী এক অজানা টানে। কোন এক গ্রাম্য হরিণীর মৃগনাভীর ঘ্রানে। অথবা শিউলি ছড়ানো পথে কাঁচা বকুল ফুলের মালার আশায়। ঘুড়ি হয়ে আপন পাখায় ভর করে আকাশের পর আকাশ পাড়ি দিয়ে বার বার সে ছুটে যায় ওপাড়ে আম্বিয়ার কাছে। যেন খুঁজে পায় আপন ঠিকানা। আপন আশ্রয়, প্রেমের আকাশ।
সে ছুটে গেছে হাজার মানুষের কাছে। হঠাৎ একদিন সুতো ছিঁড়ে অজানায় হারিয়ে গেল...। আমাদের আবু হানিফ অর্থাৎ তৌফিক আকন্দ আর আমাদের মাঝে নেই...(ইন্না লিল্লাহে ওয়া ... রজেউন)।
হানিফের বাবা-মা আজও সাহাপুর গ্রামের বটের ছায়ায়, নন্দকূজার ঢেউয়ে ঢেউয়ে, সবুজ ধানের খেতে হানিফকে খুঁজে বেড়ায়...।
নন্দকূজার ওপাড়ে আকাশে আর কোন ঘুড়ি ওড়ে না। আম্বিয়া মলিন শিউলি বকুল মাড়িয়ে পথে পথে ঘুড়ে বেড়ায় আকাশের পানে তাকিয়ে...।
বুকের ভিতর চেপে বসা এক উদাস ব্যাথা নিয়ে কিছুক্ষণ পর ফিরছিÑ আকাশে ধুসর কাল জোয়ারের মেঘ মোরসুমি বাতাসের টানে এক আকাশ থেকে আর এক আকাশে বাঁধনহারারমত ছুটে যাচ্ছে। তারা যেন কোন বাধাই আজ মানাবে না। তার ফাঁকে ফাঁকে ঘুণে ধরা চাঁদ লুকোচুরি খেলছে। বোধ হয় বৃষ্টি হবে। বিরহ-কাতর বৃষ্টি...। তৌফিক আকন্দকে হারিয়ে রিমঝিম কান্নার বৃষ্টি...।
পথে দেখি সেই বালক তখনও গাছের নিচে বসে আছে। বুঝলামÑ ঘুড়ির টানটা এখনও আছে। ক’টা টাকা দিয়ে বললামÑ ঘুড়ি কিনে আবার কাল উড়িও। অন্ধকারেই বুঝলাম তার চোখ চকচক করছে। বোদ হয় টান আর নেই।
কিন্তু আমি পিছন থেকে এক নতুন টান অনুভব করছি। সুতোহীন টান! তবুও প্রচন্ড! সবকিচু ছিঁড়ে নিতে চায়...! তখন কবির কথা মনে পড়ে...
মেঘের পর মেঘ
ওপাড়ে নীলাকাশ
তার আড়ালে কে
কোথা থেকে এলে এক ঘুড়ি
রামধনুর রঙে রুদ্র যৌবনে ওড়ো
ফিরে আস আপনার হয়ে
বারীশের তীড়ে সবুজিয়া দেশে
ছলনার আবর্তে এঁটে নাটাইয়ের সাথে
কে কাকে টানে; বিচ্ছেদ অনুরাগে
ছিঁড়ে যাও অনন্ত জিজ্ঞাসার দেশে
অনুপম মুরতির বেশে
প্রলয় হলে অবসান
কোথায় নাটাই কোথায় ঘুড়ি
কাটেনা রেশ অদম্য কেন টান?