অঝোর ধারায়

ঈদ (আগষ্ট ২০১৩)

মোহাম্মদ সালেক
  • 0
  • 0
  • ৩৬
মুক্তার মনের আনন্দ আর বাঁধ মানছে না আজ। জীবনে দুটো দিন বাদে এত আনন্দ আর কবে পেয়েছিল! হ্যাঁ, ঐ দুটো দিনের কথা অবশ্যই আলাদা। শুধু তার একারই নয়, মুক্তা মনে করে, দুনিয়ার সব মেয়েদের ক্ষেত্রেই দুটো বিশেষ দিন আছে। প্রথমটি হচ্ছে বিয়ের দিন। ঐ দিন সে মানিকের বউ হয়ে এ ঘরে আসে। তখন অনুভব করেছিল যে, তার মেয়ে জনম সার্থক। অকূলপাথারে সে আর একা নয়। তার জীবন নৌকার মাঝি আছে । দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠতম খুশীর দিনটি ছিল বাবুর মা হবার দিন। উপলব্ধি হল যে এতদিনে তার নারী জনম পরিপূর্ণতা পেল।
: বৌ মা, জলদি যাও। পানির কাজ কম কর।বাবুর ঠাণ্ডা লেগে যাবে।
: মা, এখনি আসছি। শাশুড়ি তহুরা বেগমের ডাকে মুক্তা সাড়া দেয়।
তহুরা বেগম বিধবা, বয়স ষাটের কাছাকাছি। শখের হোমিও তাক্তার। তবে হাতযশটা বেশ ভাল। এলাকাতে সবাই এক নামে চেনে। এতক্ষণ বাবুকে কোলে নিয়ে আদর করছিলেন। এইমাত্র শুইয়ে দিয়ে নিজের রুমে ফিরে যাচ্ছেন। হার্টের রোগী। নিয়ম মেনে চলেন।
: আপা, আপনি যান তো। এবারের তাগাদাটা এল ময়নার মার তরফ থেকে।
ময়নার মা। তিন কুলে কেউ নেই। পাঁচ বছর আগে একদিন ভিক্ষা করতে এসেছিল। কথাবার্তা শুনে তহুরা বেগমের মায়া জন্মে যায়। ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দিয়ে একেবারে থেকে যেতে বললেন। ময়নার মা-ও রাজি হয়ে গেল। সেদিন থেকে সে এ বাড়ির প্রতিটি সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ -বেদনার সাথী। তহুরা বেগমকে সে খালাম্মা ডাকে, তহুরা বেগমও তাকে খালা ডাকেন। দু’জনে থাকেনও এক রুমে।
: এই তো যাচ্ছি, বুবু। ময়নার মার ডাকের উত্তরে মুক্তা বলে।
রাতের খানা শেষ। মুক্তা সিঙকে দাঁড়িয়ে থালা বাসন ধোয়ায় ব্যস্ত। এটা তার দায়িত্ব নয়। কিন্তু মুক্তা মনে করে যে, বাবু বাদে এ বাড়ীর সকলের চেয়ে বয়সে ছোট সে। অতএব, এটা তার কর্তব্য। আর যেহেতু বাবু ঘুমোচ্ছে, টুকটাক কাজগুলো সেরে ফেলার একটা মোক্ষম সুযোগ পাওয়া গেল ।
বাবু। এই বাড়ীর VVIP. মাত্র সারে চার মাস আগে এই ধরাধামে তার আগমন। বিয়ের পর মাণিক বা মুক্তা কেহই কোন ব্যবস্থা নেয় নি। কিন্তু মহান সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছার বাইরে তো কিছুই হয় না। অনেক আশা নিরাশার প্রহর পার হয়ে বাবুর জন্ম হয় প্রায় সাড়ে চার মাস আগে। সিজার করতে হয়েছিল। মুক্তার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। দু’ ব্যাগ রক্ত লেগেছিল।মুক্তার সুস্থ হতে দীর্ঘ সময় লাগে । ডাক্তার চার মাসের জন্য সব ধরণের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। অতি সাবধানী মাণিক স্বেচ্ছায় আরো ১৫ দিনের বিরতি দেয়। হয়তো বিরতিটা আরো কিছুদিন লম্বা হত। কিন্তু বাধ সেধেছে আজকের দিনটি, ০৭-০৭ । পাঁচ বছর আগে এই দিনেই তাদের বিয়ে হয়।
ঘরে অবশ্য কোন আয়োজন ছিল না। মাণিক এগুলোর ঘোর বিরোধী। মহল্লার ইমাম সাহেব তাকে বলেছেন, “ birth day, marriage day, death day , new years’ day ইত্যাদি পালন করা গুনাহের কাজ।” অতএব, কে যায় সেধে সেধে গুনাহ কামাতে ? নেকের ভাণ্ডার তো এমনিতেই শূন্য।
কিন্তু এই দিন বা রাত কি ভোলার মত ? না, পৃথিবীতে কেহ কবে ভুলতে পেরেছে !
ভাবতে ভাবতে হাতের কাজ শেষ। দু’হাতে দু’গ্লাস দুধ নিয়ে মুক্তা শোয়ার রুমের দিকে হাটা দেয়।
* * * * * *
মাণিক কথা সেরে মুঠোফোনটা বালিশের পাশে রাখছে। কপালে দুশ্চিন্তার রেখা! মুক্তার নজর এড়ায় না। উৎকণ্ঠার সাথে বিষয়টা জানতে চায়।
: বাদ দাও, কিছু না। মাণিক সহজ হতে চেষ্টা করে।
: অবশ্যই অনেক কিছু। তোমার চেহারাতে পরিষ্কারভাবে পেরেশানির ছাপ ফুটে আছে।
: কই ! না তো । এই যে আমি হাসছি। মাণিক হেসে ওঠে।
মাণিকের চোখে চোখ রাখে মুক্তা। মৃদু হাসে। অতঃপর বলে ওঠে,
We look before and after,
And pine for what is not:
Our sincerest laughter
With some pain is fraught;
Our sweetest songs are those that tell of saddest thought.*
অসাধারণ আবৃত্তি। যেমন সুরেলা, তেমন সাবলীল। প্রতিযোগিতায় নামলে নির্ঘাত পুরষ্কার জুটত। পেশাদার হলে সেরা পাঁচে স্থান তো অবশ্যম্ভাবী। কয়েকদিন এ নিয়ে মাণিক ঠাট্টা করেছিল। কিন্তু মুক্তার অবিচল উচ্চারণ, “ অসম্ভব। আমি তো কেবল তোমারই। আমার রূপ-গুন-সৌন্দর্য থেকে বিন্দুমাত্র মোহিত হওয়ার অধিকার অন্য কারো নেই।” নিজের সৌভাগ্যে মাণিক নিজেই ঈর্ষা বোধ করে।
: অতএব, দয়া করে বলে ফেল দুশ্চিন্তার হেতু কি। দু’জনে মিলে ভাগাভাগি করি। এমন স্মৃতি জড়ানো রাতে একা একা দুশ্চিন্তা করার কোন মানে হয় না।
: তেমন কিছু না। কোন এক ফালতু লোক ফোনে টাকা দাবী করছে ; মানে সোজা কথায় চাঁদাবাজি।
: পুলিশকে জানাও নি ?
: জানিয়েছি, জি ডি – ও করেছি। তবে লাভ নেই। ওরা তো সব ধরণের চাঁদা থেকে কমিশন খায়।
: তাহলে কি করবে এখন ? মুক্তার ভয়ার্ত কণ্ঠস্বর।
: আ-রে বাদ দাও। যা হবার তাই হবে। অতশত ভাবলে ব্যবসা পাতি গুটিয়ে নন্দলাল হয়ে বাসায় বসে থাকতে হবে। ঐ দেখ বাইরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টি বেটার আক্কেল আছে বটে। সময়মতই নেমেছে। মাণিক চেষ্টা করছে মুক্তার মনকে অন্যদিকে সরাতে।
ওঁয়া ওঁয়া ......।
আকস্মিকভাবে বাবু কাঁদতে শুরু করল। সেদিকে তাকিয়ে মাণিক হাসতে হাসতে বলে, ‘দেখ, দেখ। দুষ্টুটা কেমন বাগড়া দিচ্ছে। জাগার আর সময় পেল না।
: উঁহু, মোটেই দুষ্টু না। ২ মিনিটেই ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছি।
মুক্তা এগিয়ে যায় বাবুর কাছে।
২ মিনিট নয়, তবে সত্যি সত্যি ৫ মিনিটের মধ্যে বাবু ঘুমিয়ে পড়ল।
আবার গল্পে মশগুল হয় মুক্তা এবং মাণিক । বাহিরে বৃষ্টি পড়ছে । দু’জনেরই একান্ত কামনা এই রাত যেন শেষ না হয়।
: এই, ঐ গানটা গাও না-।
মুক্তা আব্দার করে। মানিক জানে কোন গানটির কথা বলা হচ্ছে। অসংখ্যবার মুক্তাকে গানটি শুনিয়েছে সে। কিন্তু গত সাড়ে চার মাসে একবারও শুনানোর সুযোগ হয় নি। মুক্তা বহুবার বলেছে যে মূল শিল্পীর চেয়েও তার কণ্ঠে না কি গানটা বেশী ফুটে! দিলের সবটুকু দরদ দিয়ে মানিক গুন গুনিয়ে ওঠে, “ এই রা-ত তোমা-র, আমা-র ......।”
* * * * * * * * * * * *
তৃপ্তি ভরা ঘুমটা মুক্তার হটাৎ ভেঙে যায়। এদিক-ওদিক তাকায়। বাবু চুপচাপ ঘুমাচ্ছে। আজ যেন একটু বেশী শান্ত। কিন্তু মানিক পাশে নেই। কৈ গেলো ? কেন ? মুক্তা তন্ন তন্ন করে রুমের সর্বত্র নজর দেয়। ঐ তো বারান্দার দিকের দরজাটা খোলা । ওখানে খালি গায়ে কে বসে আছে ? মানিক না !
: কি গো, তুমি ওখানে কেন ? কখন গেলে ?
: মিনিট দশেক হবে হয়তো। কেমন যেন লাগছে। তাই বারান্দায় এসে প্রাকৃতিক বাতাসে বসলাম। একটু যদি স্বস্থি লাগে।
বাবু নড়াচড়া করছে। হিসি দিয়েছে। পাল্টাতে হবে। ব্যস্ত হয়ে পড়ে মুক্তা।
মানিকের মধ্যে কেমন যেন অস্থিরতা । বসে থাকতে আর ভাল লাগছে না। আনমনে উঠে দাঁড়িয়ে পায়চারী শুরু করল।
: ব্যাপার কী। তুমি এত ঘামছো কেন ?
: বুঝতে পারছি না। অনিশ্চিত কণ্ঠে উত্তর দেয় মানিক। পূর্ণ গতিতে ঘূর্ণায়মান বৈদ্যুতিক পাখার নীচে দাঁড়িয়ে দর দর করে ঘামছে সে।
: গোসলটা সেরে আসি। দেখি, ভাল লাগে যদি।
তোয়ালে আর লুঙ্গী নিয়ে মাণিক বাথরুমে ঢুকে। মুক্তার কানে শাওয়ার ছাড়ার আওয়াজ আসে।
বাবু দুধ পিয়োচ্ছে। মাণিকের কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে চোখ দুটো বুজে যায়, মুক্তা টের পায় না।
বমির বিকট শব্দে মুক্তা ধড়ফড়িয়ে উঠে বসে । বাবুও ভয়ে কাঁদতে শুরু করেছে। এ কী ! এ যে মাণিক বমি করছে। বাথরুমের দরজাটা খোলা। পরনে শুকনো লুঙ্গী দেখে বুঝা যায় যে গোসল সেরে গা মুছে বাইরে এসেছে। মুখটা বাথরুমের দিকে, শরীরটা ঘরের ভেতরে। উবু হয়ে বসে আছে মাণিক। আবার বমি করল প্রচণ্ড বেগে। মাণিককে ধরার জন্য মুক্তা দৌড় দিল । মাণিকের কাছে এসেই মুক্তা আতঙ্কিত হয়ে পড়ল। বাথরুমের পুরো ফ্লোর জুড়ে বমি আর বমি। শুধু বমি নয়, রক্ত মিশ্রিত বমি। মাণিকের বসার শক্তি নেই। ধীরে ধীরে নেতিয়ে যাচ্ছে। কোন রকমে মুক্তা ধরে রাখল। মুক্তার কোলে ভর দিয়ে মাণিক আর এক দফা বমি করল । বমির সাথে এবারে গল গল করে তাজা রক্ত বেড়িয়ে এল। সংজ্ঞাহীন মাণিক ভর ছেড়ে দিয়েছে মুক্তার উপর। গলা দিয়ে কেমন যেন একটা ঘড় ঘড় আওয়াজ আসছে। হতবিহবল ও নিরুপায় মুক্তা মাণিককে কোন রকমে শুইয়ে দিয়ে এক দৌড়ে রুমের দরজা খুলে চীৎকার দিল, “ মা, মা ...। ”
তহুরা বেগমের ঘুম আগেই ভেঙেছিল। দরজার সামনে ময়নার মা সহ দাঁড়িয়ে করাঘাত করছিলেন। দরজা খোলার সাথে সাথে দ্রুত এসে সংজ্ঞাহীন মাণিকের পালস ধরলেন। হতবুদ্ধি হয়ে বুকে হাত দিলেন, চোখের তারা দেখলেন।
যা বুঝার বুঝে গেলেন। বুকফাটা বেদনা আর্ত চীৎকার হয়ে মুখ দিয়ে বের হল, “ এ কি হল। আমার মা-ণি-ক রে-।”
তবুও মায়ের মন তো। ভাবলেন, কোন একটা হাসপাতালে ফোন করা দরকার। অনেক কষ্টে মনের শেষ জোরটুকু খরচ করে ওঠে দাঁড়ালেন। দ্রুত কয়েক কদমে এগোলেন ফোনটার দিকে। কি মনে করে ঘাড় ঘুরালেন মানিকের দিকে। নাড়িছেঁড়া ধন, মনে বড় আশা। কিন্তু, না । পৃথিবীতে সবচাইতে বিপরীত দুটো জিনিস --- জীবন আর মৃত্যু, উভয়ের মাঝখানে তৃতীয় কোন পর্যায় নেই। মানিক শুয়ে আছে বিদঘুটে ভঙ্গিতে। যে কোন অভিজ্ঞ চোখ এক নজরে প্রকৃত অবস্থা বুঝে ফেলবে। সব শেষ, এমনভাবেই শেষ যে আর কক্ষনো শুরু হবে না। তহুরা বেগমের মাথাটা চক্কর খেল, শরীরটা টলে ওঠল। দরজাটা ধরে নিজকে সামলাতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু পারলেন না। পড়ে যেতে লাগলেন। ময়নার মা কাছেই ছিল। খালাম্মা বলে চীৎকার দিয়ে ধরার জন্য হাত বাড়াল। ময়নার মার কোলে ঢলে পড়লেন তহুরা বেগম। তহুরা বেগমকে কোলে নিয়ে মেঝেতে বসে গেল ময়নার মা। তহুরা বেগমের কোন সাড়াশব্দ নেই, নেই বুকের ধুঁক পুকানি। চোখ দুটো উন্মীলিত। কিন্তু সেখানে নেই প্রাণের স্পন্দন, আর কোনদিন দেখাও যাবে না।
বেশ কিছুক্ষণ ধরে মাণিকের মুঠোফোনটা বাজছে। মুক্তা ঘোরের মধ্যে সেটা তুলে নিয়ে ‘অন’ করল। কানে ধরতেই শুনা গেল খিস্তে খেউর, “ শালার পো, ...... শেষ বার বলছি। ঠিক ৭ দিনের মধ্যে ৫ লাখ টাকা চাই। তা নাহলে যে কোন কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকবি। ” লাইনটা কেটে গেল। তার আগেই হাত থেকে মুঠোফোনটা খসে পড়েছে।
বিপর্যস্ত মুক্তা আতঙ্কিত দৃষ্টিতে দেখল ঘরের এমাথা থেকে ওমাথা, আবার ওমাথা থেকে এমাথা। কল্পনার অতীত এক অবিশ্বাস্য দৃশ্য। যেন সুনামী বয়ে গেছে।
বাথরুমের দরজার কাছে, ঘরের ভেতরে মাণিকের নিথর দেহ।
রুমের মেঝেতে স্থানে স্থানে রক্ত, মাণিকের মুখ হতে নির্গত সর্বশেষ বমিটুকু।
অন্য দিকের দরজার কাছে বসে বুক চেপে কাঁদছে ময়নার মা, কোলে তহুরা বেগমের প্রাণহীন দেহ।
বিছানায় বাবু। কাঁদতে কাঁদতে কখন যেন ঘুমিয়ে গেছে। এই মুহূর্তে আশ্চর্যরকম শান্তভাবে নিদ্রামগ্ন, যেন স্পন্দনহীন।
ভীষণ ভয় পায় মুক্তা। দ্রুত বাবুর নাকে মুখে হাত দেয়। না, শ্বাস প্রশ্বাস ঠিক আছে। ছোট্ট বুকটা নিঃশ্বাসের তালে তালে ওঠানামা-ও করছে, উত্তেজনার বশে খেয়াল করে নি।
বিপদ কীভাবে যেন মানুষকে বলীয়ান করে তোলে! জোরটা কোথায় পেল জানে না। কাউকে তো খবর দিতেই হবে। কিন্তু কাহাকে ? যে শুনবে সেই তো স্ট্রোক করতে পারে। একমাত্র ভাইয়াকে বলা যায়। নিজের মুঠোফোনটা তুলে নিল। ২/৩ বার রিং হতেই ভাইয়া ধরল।
: কি রে ! তুই !! এত রাতে !!!
: স-ব শে-ষ । ভাইয়া-- জোড়া লাশ।
আর কোন কথা এল না। সঞ্চিত শক্তিটুকু নিঃশেষ। মুঠোফোনটা হাত থেকে পড়ে গেল। মাথা আর শরীর ভীষণ ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে। মুক্তা শোকটা হজম করে ফেলছে। কিন্তু একটু বেশী মাত্রায়। সে যেন আস্তে আস্তে পাথরে পরিবর্তিত হচ্ছে। এক চিলতে হাসি ফুটে ঠোঁটের কোণে। হাসিটা হাসিটা ধীরে ধীরে বিস্তৃত হচ্ছে। ভাবলেশহীন হতে চলেছে চোখ দুটো।
: আপাগো-- কি হইছে আপনার !
আতংকিত ময়নার মা তারস্বরে চেঁচিয়ে ওঠে। ঐ চীৎকারে ঘুম ভাঙ্গে বাবুর।
ওঁয়া ওঁয়া ......।
বাবুর কান্নার আওয়াজে মুক্তার ঘোর কেটে যায়। বাবু গলা ফাটিয়ে কাঁদছে । ভয়ে এবং ক্ষুধায় । এত কিছু ঘটল, টের পায় নি। কিন্তু এখন কাঁদছে। দুধ দিতে হবে। মুক্তা আবার তাকায় রুমের চারদিকে, দেখে মৃত্যুপুরী । মুক্তা নজর ফেরায় ক্রন্দনরত বাবুর পানে, দেখে জীবনের উচ্ছ্বাস । আর সামলাতে পারে না । মুক্তা ঢুকরে কেঁদে ওঠে। দুধ তুলে দেয় বাবুর মুখে। দু নয়ন বেয়ে বইতে শুরু করেছে অশ্রুধারা। যেন বাঁধভাঙ্গা জোয়ার। বাইরে বহুত বেড়ে গেছে বৃষ্টির বেগ। অঝোর ধারায় ঝরছে আষাঢ়ের মেঘ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন

২০ মার্চ - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪