ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি

এ কেমন প্রেম (আগষ্ট ২০১৬)

অলভ্য ঘোষ
  • 0
ছ সপ্তাহে সুন্দরী হয়ে ওঠার তত্ত্ব । টি .ভি , ম্যাগাজিন
পোস্টারে সুন্দরীদের হাতছানি । পাশের বাড়ির পম্পা
মাধুরী কাটিং চুল কেটে বাঁকা ভুরু টাকে মসৃণ করে তোলে ।
ব্যালকনিতে ইচ্ছাকৃত-ভাবে আনাগোনা করে । পম্পার মা খুশি
হয় ছেলেরা শিস দিলে কিংবা বাড়ির আনাচে কানাচে পাক
খেলে । তবুও মুখে বলতে হয় ; বকাটে ।
দিন দিন পম্পার অনুরাগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে ; রূপের
সার্টিফিকেটে ঝোলা পূর্ণ হয়ে ওঠে । পম্পার মা ওয়েল্থ
লিস্ট করে দেখে সম্পদের লেখচিত্রে কে এগিয়ে ।
নিউ মার্কেটে পম্পার সাথে বিনোদকে দেখে সুমিত খোঁচে গেলে
পম্পা বিনোদকে মাসতুতো দাদা বলে পরিচয় দেয় ।
পম্পাদের বাড়ির সামনের চায়ের দোকানে আজকাল
সঞ্জু রোজ অপেক্ষা করে ; তাকে এক ঝলক দেখার জন্য ।
চায়ের দোকানওলার লাভ হয় ।
সঞ্জুর চেহারা রোগাটে ।গায়ের রং কালো, চোখ দুটো
কোটরে বসা ছোটো ছোটো ,চোয়াল ভাঙা , নাক খেঁদা ,
সোদপুর বাজারে ওর বাবার একটা মুদির দোকান আছে ।
চলে না । এখন আর্ট কলেজের ছাত্র সে ।
স্কুলের থেকে সঞ্জু পম্পা কে ভালবাসে ।
কিন্তু পম্পার মনের গণ্ডির ভেতরে প্রবেশের অধিকার তার
নেই । সঞ্জু বিশ্বাস করে ভালবাসার ব্যাখ্যা হয় না । শুধু
একটা অদৃশ্য বুঝে নেওয়া পৃথিবীর অণু-পরমাণুতে লুকিয়ে
রয়েছে । সঞ্জু ভাবে ; এমন একটা প্রডাক্ট যদি হতো মানুষের
মুখে নয় ; মনে মাখত সকলে ; মন সুন্দর করে তোলার
ক্রিম '' ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি '' । তাহলে বোধয় অসুন্দর
আর কিছু থাকতো না । পম্পার মুখের মতো মনটাও সুন্দর
হতো । খাদ বাদ দিয়ে একটা নিরেট সোনা হতো পম্পা ।
মাধুরী দীক্ষিতের বদলে মনে মাখা ক্রিমের বিজ্ঞাপনী মডেল
হতো সে ।
প্রতিদিন সন্ধ্যার দিকে একটা লাল মারুতি পম্পাকে নিয়ে কালো
ধোঁয়া উড়িয়ে চলে যায় । সঞ্জুর শ্বাস যন্ত্রে এক দাগ করে বাসা
বাঁধতে থাকে কার্বন ডাই অক্সাইড ।
একদিন সকালে পম্পার বডিটা লেকের জলে পাওয়া যায় ।
অবিন্যস্ত চুল ; মুখের ওপর ঘনীভূত । শরীরে বিচ্ছিন্ন ভাবে
আঁচড়ের ছাপ । কারা দুহাতে আঁচড়ে খুবলিয়ে নিতে চেয়েছে
পম্পার রূপ ! হৃদপিণ্ড টা তখনো অক্ষত লেকের
জলে শীতল !
সেদিন বিকেলে টি.ভি র খবরে পম্পার মা হাউ-হাউ করে কাঁদছে ।
পম্পার বাবা প্রয়োজনে সুপ্রিম কোট অবধি কেস লড়বে বলছে ।
বেশ কয়েক টি মহিলা সমিতি এসে দাঁড়িয়েছে ওদের পাশে ।
সঞ্জুর মুখে এখন আগাছার মতো দাঁড়ি গোঁফ , উসকো খুসকো
চুল , চেহারা আরো পাকিয়ে দড়ি হয়েছে । রাস্তায় ;রাস্তায় কাগজ
কুড়োয় । লোকে পাগল বলে । তার ক্যানভাসে কোন রং আর
কথা বলে না । বোবা হয়ে গিয়েছে । ঢুলু ঢুলু চোখে বিঞ্জাপন
খোঁজে ; '' মনে মাখা ক্রিমের '' ।
যা মনে মাখলে পৃথিবী টা সুন্দর মনে হবে ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
কাজী জাহাঙ্গীর নতুন একটা আইডিয়া পেশ করেচছন, তাই ভোট রেখে গেলাম, এবং আমার পাতায় আমন্ত্রন।
জালাল উদ্দিন মুহম্মদ বেশ গল্পকবিতা ! সময়ের অতি বাস্তব ছবি । খুব ভালো লাগলো । কবির জন্য শুভকামনা নিরন্তর।
প্রান্ত স্বপ্নিল বেশ হয়েছে ভাই, খুব মন কাড়ল। ভালোবাসার অস্পষ্ট চিত্রটি সঞ্জু চরিত্রটি দিয়ে বেশ প্রকট হয়েছে। এভাবেই অনেক ভালোবাসা হাজারো গল্পের ভিড়ে হারিয়ে যায়।
মনোয়ার মোকাররম ব্যাতিক্রমধর্মী গল্প ... সুন্দর মেসেজ ... ভালো লেগেছে ...
শামীম খান বেশ গুছিয়ে লিখেছেন । সমসাময়িক সমাজের ছবি । আরেকটু বড় হোলে দোষ কি ছিল ? ভাল লেগেছে আপনার গল্প । শুভকামনা জানবেন ।
ফেরদৌস আলম একটা ব্যতিক্রমী গল্প। সমাজের এক শ্রেণির মানুষের মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে আরেক শ্রেণির মূল্যবোধের আরো বেশি অবক্ষয়। আমারও দারুণ লেগেছে ভাই।
আহা রুবন ভাই এটি কবিতা না গল্প? বোঝা শক্ত! তবে আমার ভীষন ভাল লেগেছে। নতুন ধারার গল্প। শুভ কামনা জানবেন। ভোট থাকল।

১০ মার্চ - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“জানুয়ারী ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ জানুয়ারী, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী