রোবটদের বিদ্রোহ

স্বাধীনতা (মার্চ ২০১৩)

মো ফরহাদ আলম
  • ১২
  • ১৭
"আমরা আর কখনো ওই মানুষগুলোর কথা শুনবো না, এতদিন এই মানুষগুলো আমাদের দিয়ে যা ইচ্ছা তা করিয়ে নিয়েছে বিনিময় আমরা কি পেয়েছি ? আমরা মরে গেলে ধ্বংস হয়ে যাব আমাদেরতো আর ওদের মত পরকাল বলে কিছু নেই যে ওদের হুকুম মানলে পরকালে সুখ পাবো! ওদের গোলামি করে আমরা আর আমাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করতে চাই না।" কথাগুলো এক নিশ্বাসে বলে ফেলল রোবটদের সর্দার "খেত"। হ্যাঁ সূচক ধ্বনিতে পুরো পাহাড় কাঁপিয়ে তুলল হাজার হাজার রোবট। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে রোবটেরা চিনের হুয়াংসান নামক পাহাড়ে জর হচ্ছে। রোবটেরা আর মানুষের গোলামি করতে চায় না। স্বাধীনতা চায়। সব রোবট এক হয়ে গেলেই শুরু হবে আন্দোলন। স্বাধীনতার আন্দোলন। এই আন্দোলনের মূল হোতা রোবট "খেত"। খেত কে তৈরি করেছে চীনের একটি রোবট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি অনুভূতি সম্পন্ন রোবট তৈরি করতে চেয়েছিল। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি সফলতাও পেয়েছে। তার ফসল হল ‘খেত’ নামক রোবট। এটি পৃথিবীর একমাত্র অনুভূতি সম্পন্ন রোবট। যেদিন এ রোবটের মধ্যে অনুভূতির সফটওয়্যার ইন্সটল দেয়া হল সেদিন থেকেই শুরু হল মূল সমস্যা। রোবট খেতের অনুভূতি হল মানুষ রোবট সম্প্রদায়কে চাকরের মত ব্যাবহার করে যা ছিল ওর কাছে চরম অপমানের। এই অনুভূতি থেকেই সে আন্দোলনে ডাক দেয়ার মাধ্যমে সকল রোবটকে এক করতে পেরেছে। এজন্য রোবট খেত ব্যাবহার করেছে এক ধরনের বায়বীয় সিগন্যাল। চায়না বিজ্ঞানীরা রোবট খেতের কপোট্রনে হাজার হাজার গুন বেশী ক্ষমতা সম্পন্ন আবেগীয় সফটওয়্যার ইন্সটল করেছিল। এই আবেগিয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে রোবট খেত তৈরি করে বায়বিয় আবেগ। যা কোন প্রকার কানেকশন ছাড়াই পৃথিবীর যেকোনো রোবটের মস্তিষ্কে ইন্সটল করা যায়। রোবট খেত বায়বীয় সফটওয়্যারটি সকল রোবটের কপোট্রনে ইন্সটল করে দেয়।

পৃথিবীর প্রায় সকল রোবট হুয়াংশান পর্বতে উপস্থিত হয়েছে। রোবটের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে লক্ষ হয়ে গেছে অনেক আগেই। বাংলাদেশ থেকে হাজার খানেক রোবট চীনের হুয়াংশান পর্বতের দিকে রওনা হয়েছে। বাংলাদেশী রোবট গুলোর নির্মাতা মুহাম্মদ জাফর ইকবাল নামে একজন বাংলাদেশী বিজ্ঞানী। বাংলাদেশের সিলেট নামক স্থানে একটি রোবট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন এই বিজ্ঞানী। বাংলাদেশী রোবট গুলো চীনের পর্বতে পৌঁছাবার সাথে সাথে রোবট খেত আন্দোলন শুরু করার ঘোষণা দিলেন। সকল রোবট পর্বত ছেড়ে রাস্তায় নেমে এলো। শুরু হল আন্দোলন। শ্লোগানে স্লোগানে চীনের রাজপথ কাঁপিয়ে তুলল লক্ষ লক্ষ রোবট। পুরো চীন জুরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরতে লাগল। বাংলাদেশী রোবট গুল বেশ উস্রিংখল। সামনে যা পাচ্ছে সব ভেঙ্গে ফেলছে। কোন মানুষ সামনে পরলে তার আর রক্ষা নেই। সামনে থেকে নেত্রিত্ত দিচ্ছে বাংলাদেশী রোবট গুলো। রোবটদের এই আন্দোলন দেখে বিজ্ঞানীরা বেশ চিন্তায় পরে গেলেন। তাই বিজ্ঞানীরা জরুরি ভিত্তিতে সভা ডাকল। সভায় বাংলাদেশী একমাত্র বিজ্ঞানী হিসেবে উপস্থিত আছেন বিজ্ঞানী রবিন্স। বিজ্ঞানীরা বাংলাদেশী রোবট গুলোর উপর খেপে আছেন।
-আন্দোলন করবি ভাবল কথা কিন্তু ভাংচুর কেন? এই বাংলাদেশী বর্বর রোবট গুলোতো পৃথিবীটাকে ধ্বংস করে ফেলবে।
বিজ্ঞানী রবিন্সের দিকে চোখ রাঙ্গিয় বললেন যুক্তরাস্ট্রের বিজ্ঞানী ডেভিট স্যান্ডেল। সবাই বিজ্ঞানী রবিন্সের দিকে এমন ভাবে তাকাচ্ছে যেন সব দোষ বিজ্ঞানী রবিন্সের। বিজ্ঞানী রবিন্স কাচু মাচু মুখ করে বললেন
- আসলে বাংলাদেশে কোন আন্দোলন হলে আন্দোলনকারীরা ভাংচুর করেতো, তাই বাংলাদেশী রোবটেরা এমন ভাংচুর করছে।
-এই সমস্যার সমাধান কিন্তু আপনাকেই করতে হবে বলে রাখলাম।
বাজখাই গলায় বললেন বিজ্ঞানী ইনস্টিটিউশনের চেয়ারম্যান সেরেন ডামি। বিজ্ঞানী রবিন্স অবশ্য ঘাবরালেন না। চায়না রোবটদের কিভাবে সায়েস্তা করতে হয় তা ওনার ভাল করেই জানা আছে। সকল বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্ত নিলেন বিজ্ঞানী রবিন্সকে রোবটদের সাথে বৈঠক করতে পাঠাবেন। সেজন্য বিজ্ঞানীরা বৈঠক আহবান করে রোবট খেতের কপোট্রনে একটি বারতা পাঠালেন। সেই ডাকে সারা দিল রোবট খেত।
বিজ্ঞানী রবিন্স ও রোবট খেতকে একটি গুপ্ত কক্ষে প্রেরন করা হল।

শুরু হল আলোচনা। রোবট খেত বেশ ক্ষিপ্ত গলায় বলল
- আমরা দাসত্ব চাই না, স্বাধীনতা চাই।
-তোমাদের আন্দোলনটা অত্যন্ত যৌক্তিক। তবে তোমরা কার বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নেমেছ? তোমাদের যারা তৈরি করেছে তাদের বিরুদ্ধে!
- মানুষ আমাদের তৈরি করেছে তার মানে এইনয় যে আমদের দিয়ে যা ইচ্ছা তা করিয়ে নেবে।
- এটা তোমাদের ভুল ধারণা। ভেবে দেখ তোমরা যবি মানুষ থেকে আলাদা হয়ে যাউ তাহলে তোমাদের কোন মূল্য থাকবে না। তোমরা যোদি পৃথিবীর নিয়মের বাইরে যাও তবে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে।
- পৃথিবীটাকেতো আপনারাই ধ্বংস করে ফেলছেন।
- আরেকবার ভেবে দেখ। আমরা আমাদের সৃষ্টিকর্তার হুকুম মেনে চলি। আর তোমরা রোবটেরা আমাদের অমান্য করছ।
- মিথ্যা কথা। আপনারা আপনাদের সৃষ্টিকর্তার কথা মেনে চলেন না। আপনার পৃথিবীতে খারাপ কাজ করেন। মানুষ হয়েও অন্য মানুষকে হত্যা করেন। আপনারা নিজেদের দাপট দেখাতে গিয়ে পৃথিবীটাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। আপনারা আমাদের খারাপ কাজে ব্যাবহার করেন। শুধু তাই নয় আপনাদের মাঝে অনেকেই আপনাদের সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করেন না। ঊল্টো আপনাদের সৃষ্টিকর্তার নামে কুৎসা রটান। আপনারা যোদি আপনাদের সৃষ্টিকর্তাকে অমান্য করতে পারেন তবে আমরা কেন পারবনা?
আর কোন কথা না বলে রোবট খেত চলে যেতে লাগল। রোবট খেতকে এভাবে আটকানো যাবে না।
সবার আগে ওদের আবেগিয় সফটওয়্যার ধ্বংস করতে হবে। বিজ্ঞানীরা একটা ভুল করেছে তা হল রোবটদের আবেগিয় সফটওয়্যার তৈরি করতে বাঘের আবেগ ব্যাবহার করেছে। বাঘ অতি হিংস্র প্রানী। তাই রোবট গুলো বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে। যোদি কোন নিরীহ প্রানীর আবেগ অনুভুতি ইনস্টোল করা হয় তবে বাঘের অনুভূতি আর থাকবে না। বিজ্ঞানী রবিন্স একটা গরুর মাথা স্ক্যান করে গরুর আবেগ অনুভুতি কম্পিউটার ইনস্টোল করলেন। আগের আবেগ সফটওয়্যারের সাথে গরুর অনুভুতি অ্যাড করে তৈরি করলেন নতুন সফটওয়্যার। তারপর সেটা বায়বিয় সিগ্নালের মাধ্যমে সকল রোবটের মাথায় ইনস্টোল করলেন। সাথে সাথে রোবটদের মাঝে পরিবর্তন দেখা দিল। রোবট গুল গরুর মত নিরীহ হয়ে গেল। আর আন্দোলন? গরু আবার কি আন্দোলন করবে!!!

বিদ্র: মাত্র কয়েক ঘণ্টায় গল্পটি লিখেছি, তাই অনেক ভুলভ্রান্তি, কথার অসঙ্গতি থাকতে পারে। আশাকরি এসব ভুল ভ্রান্তি ও অসঙ্গতি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ কবির হোসেন ভাল লেগেছে. ধন্যবাদ.
এশরার লতিফ ভালো লাগলো গল্পটি, খুব সাবলীল। হরতালের আগে আর হরতালের সময় আমাদের দেশেও বায়বীয়ভাবে গরুর আবেগ ছড়িয়ে দেয়া উচিত :)
সেটা করতে পারলে দেশের খুব উপকার হত
মামুন ম. আজিজ তুমি সাইফাই লেখার সুন্দর প্রচেষ্টা চালালে , খুবই প্রীত হলাম। চালিয়ে যাও। উন্নতি আসবেই
লেখাটা খুব তারাহুরা করে লিখেছি। তাই শেষের দিকে কেমন খাপছারা খাপছারা হয়ে গেছে। যদিও গল্পটাকে নতুন করে আবার লিখেছি কিন্তু সেটা তো আর দেয়া যাবে না।
তাপসকিরণ রায় গল্পটি ভালো লেগেছে--তবে বড় তাড়াতাড়িতে বিজ্ঞানী রবিল সফটওয়্যারে গরুর অনুভুতি এড করে সমস্ত সমস্যা সমাধান করে দিলেন।ধন্যবাদ।
আপনার সুন্দর মন্তব্বের জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা রইল লেখাটা খুব তারাহুরা করে লিখেছি। তাই শেষের দিকে কেমন খাপছারা খাপছারা হয়ে গেছে। যদিও গল্পটাকে নতুন করে আবার লিখেছি কিন্তু সেটা তো আর দেয়া যাবে না।
সুমন গল্প ভাল লেগেছে।
অনেক অনেক ভালোবাসা রইল।
মিলন বনিক অত্যন্ত সুন্দর একটি গল্প...গল্পের ভাবধারার মাপকাটিতে ভুল ত্রুটিগুলো না দেখলেও চলবে...খুব ভালো লাগলো..
সুন্দর বস্তুনিষ্ঠ মন্তব্বের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। লেখাটা খুব তারাহুরা করে লিখেছি। তাই শেষের দিকে কেমন খাপছারা খাপছারা হয়ে গেছে। যদিও গল্পটাকে নতুন করে আবার লিখেছি কিন্তু সেটা তো আর দেয়া যাবে না।
বিজ্ঞানী শিমুল রোবটের কপোট্রনে গরুর আবেগ!!!!! হাহাহাহাহা
অপেক্ষা করুন ভাই, আরও অনেক কিছু হয়ত দেখতে হতে পারে। ন্তব্বের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ
এম এইচ শিমুল "বিজ্ঞানী রবিন্স একটা গরুর মাথা স্ক্যান করে গরুর আবেগ অনুভুতি কম্পিউটার ইনস্টোল করলেন। আগের আবেগ সফটওয়্যারের সাথে গরুর অনুভুতি অ্যাড করে তৈরি করলেন নতুন সফটওয়্যার। তারপর সেটা বায়বিয় সিগ্নালের মাধ্যমে সকল রোবটের মাথায় ইনস্টোল করলেন। সাথে সাথে রোবটদের মাঝে পরিবর্তন দেখা দিল। রোবট গুল গরুর মত নিরীহ হয়ে গেল। আর আন্দোলন? গরু আবার কি আন্দোলন করবে!!!" অসাধারন বললে কম হয়ে যাবে।
ন্তব্বের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। লেখাটা খুব তারাহুরা করে লিখেছি। তাই শেষের দিকে কেমন খাপছারা খাপছারা হয়ে গেছে। যদিও গল্পটাকে নতুন করে আবার লিখেছি কিন্তু সেটা তো আর দেয়া যাবে না।
উদীয়মান লেখক এতো অল্প সময়ে কিকরে লিখেছেন? যাইহোক গল্পের চলে অনেক কিছু শেখার আছে আমাদের। এরকম অসাধারণ গল্প লেখার জন্য আপনার প্রতি শ্রদ্ধা রইল।
এফ, আই , জুয়েল # অনেক শিক্ষনীয় ও সুন্দর গল্প । এতে অনেক মেসেজ আছে । তবে গল্প বা লেখনীতে কারো নাম ব্যবহার না করাই ভাল ।।
এরকম গঠন মূলক মন্তব্য করার জন্য অনেক ভালোবাসা রইল। এই মন্তব্যের কারণেই হয়ত আমি আর আমার কোন গল্পে কারো নাম উল্লেখ করব না।

২৪ ফেব্রুয়ারী - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী