অপূর্ব আতিথেয়তা !

পরিবার (এপ্রিল ২০১৩)

রফিক আল জায়েদ
  • ১০
  • 0
  • ১২
আজকাল শহরের মানুষগুলো কেউ কাউকে চেনে না। আসলে চিনতে চায় না। শহরের যান্ত্রিকতা আর ব্যস্ততার মাঝেও নাঈম সাহেব অন্যরকম মানুষ হিসেবে পরিচিত, যাকে মহল্লার ছোট বড়
সবাই চেনে তাঁর আন্তরিকতার কারণে। কোন পরিবারে কি সমস্যা, কার কি প্রয়োজন সবার খোঁজই তিনি রাখেন। সাধ্যমত প্রয়োজন পূরণও করেন। তিনি যেন সমাজের অভিভাবক। প্রত্যেক দিনের মত স্বভাবসুলভ নিয়ম অনুযায়ী রাস্তা দিয়েই যাচ্ছিলেন, পথিমধ্যে এক অচেনা পথিক পাশ দিয়েই যাচ্ছিল
চেহারায় ছিল আভিজাত্যের ছাপ স্পষ্ট, কিন্তু মুখটা ছিল শুষ্ক, মনে হয় ক'দিন ধরে খাওয়া হয়নি। তাই
কাছে গিয়েই জিজ্ঞাসা করলেন, 'আপনাকে তো চিনতে পারলাম না, এখানে কার কাছে এসেছেন ?'
কোথায় যাবেন?
পথিক, আমি চর শিমুল গ্রাম থেকে এসেছি। কাজের খোঁজে। 'চর শিমূল' নামটা শুনে একটু হোঁচট খেলেন নাঈম সাহেব। আপনার নাম কি ?
বাদল।
আর একটা ধাক্কা লাগল হৃদয়ে ঠিক মধ্য খানে। কিন্তু বুঝতে দিলেন না একটুও। তো হঠাৎ কাজ খুঁজছেন কেন?
গত তিনদিন আগে হঠাৎ প্রবল বন্যায় ঘর বাড়ি তলিয়ে গিয়েছে। কিছুই বাঁচাতে পারিনি নিজেদের
প্রাণ ছাড়া। বলছেন আর দুচোখ থেকে দরদর করে অশ্রু ঝরছে।
'ঠিক আছে আপনি কাঁদবেন না' বললেন নাঈম সাহেব।
বাড়িতে নিয়ে খেতে দিলেন খুব যত্নের সাথে। খাবার শেষে একহাজার টাকার দশটি নোট হাতে গুজে দিলেন।
পথিক এমন আতিথেয়তায় শুধু মুগ্ধ না বিস্মিতও হলেন। টাকাটা নিতে দ্বিধাবোধ করছিলেন। কিন্তু নাঈম সাহেব বললেন, 'আপনি না হয় টাকাটা কর্জ হিসেবে নিন।'
পথিক পথ চলতে চলতে ইট পাথুরে শহরের নির্মমতা আর আতিথেয়তার বাস্তবতা মিলাতে অক্ষম।
এবার নাঈম সাহেব চলে গেলেন আজ থেকে পনের বছর আগে, সেদিন ছিল চৈত্রের মধ্য দুপুর দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে চর শিমুল গ্রামে পৌঁছলেন নিজেদের চাচাত ভাই বাদলদের বাড়িতে। সৌজন্যবোধের পর কোন ভূমিকা ছাড়াই নাঈম সাহেব বললেন, 'ভাই আমার ছেলেটা খুব অসুস্থ অপারেশন করতে হবে এক লাখ টাকা লাগবে। আমাকে ধার হিসেবে না হয়, তোমাদের একটু জমি বিক্রি করে দাও।' অনুনয়ের যত পথ হতে পারে সবই প্রয়োগ করলেন নাঈম সাহেব। কিন্তু কিছুই হল না এই পাথুরে মনের কাছে। বরং অভুক্ত অবস্থায়ই চলে আসতে হয়েছিল। প্রাণের সঞ্চিত সব শক্তি নিঃশেষ হলেও পথের দীর্ঘতা যেন কিছুতেই শেষ হয় না। সামান্য কিছু অর্থের অভাবে একমাত্র সন্তান তামীমকে পারি জমাতে হল এমন জগতে সেখানে পৃথিবীর মত নিষ্ঠুর বীভৎস রূপ নেই। নেই বঞ্চনার কোন ঝনঝট। নিজ হাতে বহন করা সন্তানের লাশ নিজ হাতে খনন করা কবরে! সারা বাড়ি মাতিয়ে রাখত কথার ফুলঝুরিতে। আজ সবই স্মৃতির পাতায় আঁকা কিছু স্বপ্ন।
নাঈম সাহেব স্মৃতির দর্পণে দেখছেন বিবর্ণ অতীত আর অশ্রুতে চূর্ণবিচূর্ণ হচ্ছে হৃদয় দর্পণ। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে প্রিয়তমা স্ত্রী ফারহানা বাকরুদ্ধ........
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক শুধু অতিতেযতা নয় একটা মানবিক গুনাবলিও বটে...খুব ভালো লাগলো...
পুরস্কার প্রাপ্ত লেখকদের মন্তব্য পেলে ভালই লাগে। ভাল থাকবেন।
সূর্য আমরা প্রায়শই বলি "ইট পাথরে ঝঞ্জালে আর মানুষের দেখা পাওয়া যায় না, গ্রামের মানুষরা সহজ সরল......" আসলেই কি তাই? প্রতিটি মানুষ কেমন তা নিহিত থাকে তার আচারে, ব্যবহারে আর কর্মে। সেখানে শহর গ্রাম বলে কিছু নেই। গল্পের যে মেসেজ "প্রয়োজনে অপরকে সাহায্য করো" এটা ভাল লেগেছে। বাস্তবতার নিরীখে ১৫বছরে একটা পরিবার হয়তো এভাবে ঘুরে দাড়াতে পারে না নাঈম সাহেব হয়তো সন্তান হারা হয়ে টাকার কষ্ট উপলব্ধী করেই সংগ্রামী জয় পেয়েছেন। ছোট কলেবরে গল্পটা বেশ স্পষ্ট হয়েছে।
সূর্য ভাই, প্রথমে আপনাকে সময় নিয়ে এতবড় করে মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আসলে মানুষের মানবতা থাকে তার হৃদয়ে। ইট পাথুরে শহর আর সহজ সরল গ্রামেও বিপরীতমূখিও হতে পারে। এটা আমার প্রথম গল্প তাই অতটা ভাল হয়ত হবে না। ভাল থাকবেন সর্বদা।
তাপসকিরণ রায় je banchna diyechhe,take banchnar badle praptite bhariye debar galpoti bhalo legechhe.dhnyabad.
আশা করি ভাল আছেন! ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।
ভূঁইয়া মোহাম্মদ ইফতেখার মূল বক্তব্যটি ভালো লাগল। সামনে আরও লেখা আশা করছি।
আশা করি আগামিতেও পাশে পাব। ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি বাস্তবতার নিরিখে গল্পটি গতানুগোতিক হলেও .....বেশ ভাল লেগেছে......জায়েদ ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ..............
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি ভাই, কষ্ট করে সময় দিয়ে পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ
এফ, আই , জুয়েল # অনেক সুন্দর গল্প । স্বার্থের টানে প্রিয়জন কেন দুরে সরে চলে যায়---এর মত বেশ চমৎকার ।।
এফ, আই , জুয়েল # ভাই, দোয়া করবেন আর ভাল থাকবেন।
সুমন পনের বছর অনেকটা সময়, হয়ত চেহারা ভুলেও যাওয়াও সম্ভব। প্রতিকৃয়াটা ভাল লেগেছে। সব ঘাতের প্রতিদান প্রতিঘাতে হতে হবে এমনও কোন কথা নেই। আর নাঈম সাহেবও মনে হয় এভাবেই ভেবেছেন। ভাল লাগল গল্প।
ভুলে যেতে চায়নি কিন্তু সন্তান হারানোর শোক তাকে বিস্মৃত করে দিয়েছে। ভাল থাকবেন।
এশরার লতিফ নাঈম সাহেবের চরিত্রটি ভালো লাগলো (এই বাদল কী সেই বাদল?).ভবিষ্যতে আরো লেখা দেখবার আশায় রইলাম. অনেক ধন্যবাদ
আপনাদের এত ভালবাসা পাওয়ার পরও কি না লিখে থাকতে পারব ? ভাইয়া, লেখায় কোন ভুল থাকলেও জানাবেন। শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
এশরার লতিফ নাঈম সাহেবের চরিত্রটি ভালো লাগলো (এই বাদল কী সে বাদল?).ভবিষ্যতে আরো লেখার আশায় রইলাম. অনেক ধন্যবাদ.
জ্বী, ভাইয়া ! সেই বাদলকেই উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। নতুন লিখছি, তাই আপনাদের ভাল না লাগলেও যে উত্‍সাহ দিচ্ছেন। তারপরও কি না লিখে পারি ?? ভাল থাকবেন।
মোঃ কবির হোসেন রফিক আল জায়েদ ভাই আপনার গল্পে কঠিন একটা বাস্তবতা তুলে ধরেছেন. গল্পটি আমার কাছে ভাল লেগেছে. ধন্যবাদ.
এটা জীবনে প্রথম গল্প লেখা। আর আপনি হলেন প্রথম মন্তব্যকারী।আমার লেখাতে সমালোচনা চাই বেশি বেশি। ভাল থাকবেন।

০৪ ফেব্রুয়ারী - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ১৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“মে ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ মে, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী