একটি স্নিগ্ধ ভোরের প্রতীক্ষায়

ভোর (মে ২০১৩)

হাসান ইকবাল
"একটি স্নিগ্ধ ভোরের প্রতীক্ষায়" কবিতাটি লিখেছিলাম হাসপাতালের সিঁড়িতে বসে। ১২ ডিসেম্বর ২০১২। ঘড়ির কাটায় তখন রাত ২টা।
ইভ-টিজিংয়ে উক্তত্যতার শিকার হয়ে আমার ছোটবোন টুনি যখন হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। ১০ ঘন্টা চলে গেল। আইসিইউতে তার জ্ঞান ফিরছেনা। সেই সময়কার আমার ব্যাথাতুর মনের অনুভূতিগুলো তুলে ধরেছি এই কবিতায়।
-হাসান ইকবাল

আমার বুকের ভেতর গোপন প্রকোষ্টে যে ব্যাথা জমা হয়ে আছে
তা নেভাতে গিয়ে দাবানল হয়ে প্রজ্বলিত হয়ে উঠল
নিমিষে তা পা থেকে মাথা, আপাদমস্তক আমি শিহরিত হলাম
অদ্ভুত এক চৈতন্যতায়।

আমার গভীর ঘুমের আচ্ছন্নতায় দেখতে পেলাম
আমার গরিয়সী মায়ের মলিন মুখ, ভাই-বোন, আমার প্রিয়তমা স্ত্রী’র আকুলতা।
হাসপাতালের আইসিইউ’র বেডে শুয়ে অবচেতন
মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকা যন্ত্রনাকাতর আমার প্রিয় ছোটবোন টুনির মুখ।

কি নিষ্ঠুর অপেক্ষা, কখন জ্ঞান ফিরবে, দারোয়ান থেকে শুরু করে
নার্স, ডিউটি ডক্টর, তাদের কাছে কেন যেন কৃপা খুঁজি বারবার।
ঘন্টার পর ঘন্টা, দিনের পর দিন।

অনেক শুষ্ক মুখে হাসি ফুটে উঠে, আবার কেউ নিয়ে চলে আপন স্বজনের লাশ।
ক্রন্দন ধ্বনিতে অট্রহাসি হাসে হাসপাতালের দেয়াল।
ঘন কাঁচের সীমানা ভেদ করে ঊঁকি মারে আমার মা
কখন শুনতে পাবে একটি সুমধুর ডাক,
একটি উৎফুল্ল মধুর সময়ের অপেক্ষার আকুপাকু আমাদের প্রতিটি নিউরণ।

কতটা নিলর্জ হলে মানুষ এতটা নির্মম হতে পারে,
আমার বোনের বাক স্বাধীনতাকে তুচ্ছ করে
শুধু হুমকি, খুন, অপহরণ অথবা টাকা দিয়ে বেঁচে থাকার এক নতুন সমীকরন
আমার স্বাধীন এই বাংলাদেশে।

জ্ঞান ফিরবে বলে বসে থাকা হাসপাতালের সিঁড়ি, বেলকনি
অথবা আইসিইউ’র সামনে।
কি অদ্ভুত এক অন্তমিল।
হাসপাতালে যারা আছে সবাই আমারি মতো
আপনজনের জন্য নিংড়ানো ভালোবাসা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা, জেগে থাকা রাতের পর রাত।

কখন ভোর হবে কেউ জানেনা,
উকি মেরে দেখি এক অদ্ভুত নিরবতা এক মৃত্যুপুরীর মতো।

১২ ডিসেম্বর ২০১২
মোহাম্মদপুর, ঢাকা
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সূর্য অসহায়ত্ব বেশ ফুটেছে কবিতায়। কবির মতো খুন, হুমকী, অপহরণ, চাঁদাবাজীর বাংলাদেশ আমরা কেউ চাই না তবু কেউ কেউ এমন অপকর্ম করে যাচ্ছেই। ভালো লাগলো বেদনার্ত কবিতা
তানি হক বেদনা বিধুর কবিতা :( আপনাকে ধন্যবাদ হাসান ভাই
তাপসকিরণ রায় কবিতা দুঃখের মাঝে মন থেকে ফুটে বের হতে চায়--আর সে কবিতা হয়ে ওঠে মনোগ্রাহী--মর্মস্পর্শী।আপনার বেলাতেও হয়েছে তাই--মর্মমুখর একটি লেখা আপনার কলম থেকে বেরিয়ে এসেছে।আপনার বোনটি এখন কেমন? জানতে ইচ্ছে হয়,ভাই !
এশরার লতিফ ভালো লাগলো আপনার কবিতা। শুভেচ্ছা রইলো।
মিলন বনিক হাসান ভাই...অসাধারণ...সেই ভোরের সাথে যেন দেখি টুনির হাসিমাখা মুখ....গকডক-এ অনেকদিন পরে পেলাম....কেমন আছেন....
আবু ওয়াফা মোঃ মুফতি "কখন ভোর হবে কেউ জানেনা, উঁকি মেরে দেখি এক অদ্ভুত নীরবতা এক মৃত্যুপুরীর মতো।"--ছুঁয়ে গেল মন।

২৪ ডিসেম্বর - ২০১২ গল্প/কবিতা: ২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪