বন্ধু ও বন্ধুত্ব

বন্ধু (জুলাই ২০১১)

linta
  • ৫১
  • 0
  • ৩৭
“ সুখের সময় ছুরে ফেলে আমি ছুটে এলাম
বন্ধু আছি আজও আমি বন্ধু যেমন ছিলাম ”

শফিক তুহিনের এই গানটার মতই বোধ হয় সব বন্ধুরা এমন হয়। নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। বিপদে আপদে তার পাশে থাকে। কিন্তু একটা ছেলে আর একটা মেয়ের যখন বন্ধুত্ব হয়, তখন সেই বেশিরভাগ সময়ই বন্ধুত্বটা ভালোবাসাতে পরিণত হয়ে যায়। কিন্তু সবার কপালে তো আর সুখ সয় না। তাই কারো কারো ভালোবাসাটা এক তরফা হয়ে যায়। তেমনই একটা গল্প বলব আজ।

শুভ আর রুমা একই স্কুলে পড়তো। অথচ মজার বেপার হলো তারা দুজনের কেউ কাউকে আগে কখন দেখেনি। শুভ ছিল খুব দুশ্ট ধরনের ছেলে। স্কুল জীবন থেকে তার girlfriend এর অভাব ছিল না। এবং কোনো মেয়েকেই তার বেশি দিন ভালো লাগতো না। তাই খুব ঘনঘন তার girlfriend বদলাতো। মেয়েরা অবশ্য তা জানতো, আর জেনে শুনেই ওর সাথে প্রেম করতো। যদিও শুভ দেখতে খুব সুন্দর ছিল না, তারপরও মেয়েরা ওর personality’র জন্য ওকে পছন্দ করতো।

রুমা খুবই শান্ত মেয়ে। দেখতেও খুব সুন্দর। যে একবার ওকে দেখে সেই ওর প্রেমে পরে যায়। ঠিক যেন সিনেমার নায়িকা। ভারতে ঐশ্বর্য্য রায়ের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ওর জীবনে ওর ভালবাসার মানুষটি আসে নি।

স্কুল শেষে কলেজে উঠলো যখন, তখন ওদের কলেজে একটা সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা’র আয়োজন করা হয়। সেদিনও শুভ তার বন্ধুদের সাথে বসে মজা করছিল। হঠাৎ একটা মেয়েকে দেখে তার চোখ আটকে যায়। এতো সুন্দর এতো রুপ একটা মানুষের কিভাবে হয়? একটা মেয়ে এতো স্নিগ্ধ কিভাবে হয়? অপলক চোখে শুভ দেখল। আর দেখতেই থাকলো। ওর সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু রাশেদকে বেপারটা জানালো। কিন্তু রাশেদ পাত্তা দিল না। কারন এর আগেও শুভ এই ধরনের কথা বলেছে। রাশেদ বরং শুভকে বুঝালো যে কয়েকদিন পরেই আবার সে থিক হয়ে যাবে। কিন্তু শুভ তো আর ওকে ভুলতে পারে না। একি কলেজে দুজন অথচ সামনে গিয়ে কথা বলার সাহসও পাচ্ছে না।

একদিন দেখলো ওদের ক্লাসের শিউলির সাথে সেই মেয়েটি কোথায় যেন যাচ্ছে। শুভ শিউলির মাধ্যমে জানলো যে মেয়েটার নাম রুমা আর সে রামপুরায় থাকে। এবং এটাও জানলো যে সে কারো সাথে প্রেম বিষয়ক সম্পর্কেও জড়িত নেই। শিউলিও ওকে সাবধান করে দিল যে মেয়েটা অনেক ভালো আর সহজ সরল। ও যেন এই মেয়ের সাথেও প্রেম প্রেম খেলা না খেলে। কেননা এত ভালো একটা মেয়েকে কষ্ট দিলে নাকি আল্লাহও মাফ করবে না।

দিন পার হতে লাগল, রুমা’র কথাও শুভ আস্তে আস্তে ভুলে যেতে লাগল। কারন ওর বর্তমান প্রেমিকা নাফিসা রুমা’র চেয়ে আরও অনেক বেশি সুন্দর। অনেক ভালো গানও গায়। তাছাড়া কলেজের অন্য ছেলেরাও ওর জন্য পাগল। এভাবে দিন যেতে লাগল, নাফিসা শুভ’র সম্পর্কও একদিন ভেঙ্গে গেল।

H.S.C. পরীক্ষার দুই মাস আগে শুভ একটা কোচিং এ ভর্তি হয়। আশ্চর্যজনক ভাবে রুমাও সেই কোচিংএ ভর্তি হয়। শুভ’র মনে আবারো সেই দুষ্ট চিন্তা মাথায় আসে। পড়ালেখার বিষয় নিয়ে শুরু। ধীরে ধীরে ফোনে কথা, রাত জেগে কথা, পড়ালেখার বিষয় বাদে কথা, এভাবে কথা বলতে বলতে কখন যে শুভ রুমাকে ভালবেসে ফেলে ও নিজেও বুঝতে পারে না। শুভ জানতে পারে রুমা’র জীবনে আজ পর্যন্ত কোনো ছেলে আসে নি যাকে রুমা নিজের মত করে ভালবাসতে পারবে।

রুমা জানত যে শুভ কোনো মেয়ের সাথে স্থির থাকতে পারে না। তাই রুমাও কখনো ওকে বন্ধুর চেয়ে বেশি কিছু ভাবে নি। বরং শুভ একাই ওকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে।

রাতে রুমা’র সাথে কথা না বললে অস্থির লাগা, রুমা’র নিশ্বাসের শব্দ শোনার আগ পর্যন্ত ঘুম না আশা, প্রতি ঘন্টায় রুমা কি করছে তা সম্পর্কে খোজ খবর নেয়া, ফোন ওয়েটিং থাকলে ওকে সন্দেহ করা – এই সব যদি ভালোবাসা না হয় তবে আর কি হতে পারে?

শুভ ভাবে রুমাকে ওর অনুভুতি গুলো জানানো উচিত। কিন্তু বলার সু্যোগই পাচ্ছে না। সামনে পরীক্ষা তাই ও ভাবলো পরীক্ষার পরই বলবে। শুভ খুব একটা রাত জাগতে পারে না। আর রুমা’র রাত না জাগলে পড়া হয় না। রুমা বলেছে যদি শুভ ঠিক মত থাকে, তাহলে পরীক্ষার পর ওকে surprise দিবে। শুভ’র ধারনা রুমাও ওকে পছন্দ করে আর এই কথাটাই রুমা ওকে বলতে চায়। শেষ পরীক্ষা দিয়ে সাথে সাথে শুভ রুমাকে ফোন দিল।

শুভঃ রুমা, আমি তোমাকে একটা কথা বলতে চাই।
রুমাঃ হুম। বল। কিন্তু তার আগে আমার একটা কথা শোনো।
শুভঃ কি কথা?
রুমাঃ আগে বল যে তুমি রাগ করবা না?
শুভঃ আমি কি কখনো তোমার উপর রাগ করেছি?
রুমাঃ তাও ঠিক। আচ্ছা শোনো। আমার বান্ধবি সুমি আছে না?
শুভঃ হ্যাঁ। কি হয়েছে ওর?
রুমাঃ কিছু না। ওর বড় ভাই কবির, যে বুয়েট থেকে পাস করেছে, সে আমাকে propose করেছে।
শুভঃ ও আচ্ছা। ভালো কথা। তো তুমি কি বলছো?
রুমাঃ আমি আর কি বলব। প্রথমে তো রাজি ছিলাম না। পরে আস্তে আস্তে কথা বলতে বলতে আমারো উনাকে ভালো লাগা শুরু হল।
শুভঃ কবে বলেছে উনি?
রুমাঃ এই তো। পরীক্ষার মাঝেই।

শুভ’র বুঝতে আর বাকি রইল না যে সে নিজেই নিজের পায়ে কুড়াল মেরেছে। এই পরীক্ষার জন্য ও এতোদিন অপেক্ষা করেছিলো। অথচ কিছু দিন আগে বললেও হয়তো রুমাকে আজ আর ওর হারাতে হতো না।

শুভঃ আচ্ছা রুমা। এতে কি আমাদের বন্ধুত্বটাও হারিয়ে যাবে একদিন।
রুমাঃ না কখনোই না। আমরা আগের মতই বন্ধু থাকব। আচ্ছা শুভ তুমি আমাকে ৫ মিনিট পরে ফোন দাও। ও ফোন দিচ্ছে তো তাই।

শুভ কিছু না বলে ফোন রেখে দিল।

এভাবেই ধীরে ধীরে শুভ’র ভালোবাসার মাঝে বাধা হয়ে দাড়ালো কবির। রুমাকে এখনো আগের মত ভালোবাসে শুভ। আর রুমাও শুভকে ঠিক আগের মতই সবচেয়ে কাছের বন্ধু ভাবে। বন্ধুত্বটাকে ওরা হারিয়ে জেতে দেয়নি। হয়তো সত্তিকারের বন্ধুরা এমনই হয়। নিজের মনের কষ্টটাকে লুকিয়ে রেখে নিস্বার্থভাবে বন্ধুর পাশে থাকে সবসময়।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
linta ধন্যবাদ সেলিনা আপা. আসলে সময়ের অভাবে চর্চা করা হয়না. আর তাই খুব বেশি মনোযোগী হতে পারিনি লেখা গুলোর প্রতি. ইনশাল্লাহ এর পরের লেখাগুলোর প্রতি খুব মনোযোগী আর যত্নশীল হব...
সেলিনা ইসলাম আপনার লেখার হাত ভাল তবে যত্নের অভাব বেশ আছে...যত্নশীল হলে লেখাটা প্রান পেত নিঃসন্দেহে । আরও লেখা পাব সেই প্রত্যাশা শুভকামনা ।
linta ধন্যবাদ আরফান ভাই
বিন আরফান. আমি এমনটাই বুঝেছি. যাই হোক এখন বলি হতাশ আর নিরাশ হবার কিছুই নেই. লিখতে লিখতে ঠিক হয়ে যাবে. তবে এটাও মন্দ নয়. শুভ কামনা রইল.
linta জি অরফান ভাইয়া. ঠিক বলেছেন. আসলে এখনো সে রকম পরিপক্ক হয়ে উঠতে পারিনি তো তাই হয়তবা কথার মাঝেও ভুল ত্রুটি থেকে যাচ্ছে...
বিন আরফান. লিন্তা গল্প লেখক হিসাবে কাচা তবে ছোটদের মত বললে এটা আমার নয় এখানে হবে থিম বা চিন্তাটি আমার নয় তাই নয় কি. শুভ কামনা তোমার জন্য.
linta ধন্যবাদ সাইফুল্লাহ ভাই ও হেলেন আপু.আমার জন্য দোয়া করবেন.
হেলেন মোটামুটি হয়েছে।
সাইফুল্লাহ্ ভালো লাগলো। তবে আরও ভালো করতে হবে।
linta ধন্যবাদ মাহী ভাই...ধন্যবাদ শাহনাজ অপু...

০২ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪