একটি বর্ষণ মুখর রাত অথবা একটি বিভ্রমের গল্প

শাড়ী (সেপ্টেম্বর ২০১২)

রুমানা বৈশাখী
  • ৪৪
  • ৬৩
১)
আলমারীটা ঠাসা কাপড়ে। তবে সমস্তই তার নিজের। এ বাড়িতে কাজের লোক দুজনকে বাদ দিলে মানুষ কেবল তিনি একাই। আলমারী জুড়ে তার একলার জিনিসপত্র থাকবে সেটাই তো স্বাভাবিক।
তবুও ভালোমতন নেড়েচেড়ে দেখেন তিনি, যদি মেয়েটাকে দেবার মতন কিছু একটা মিলে যায়। ছোট হয়ে যাওয়া শার্ট অথবা স্লিপিং স্যুটটা। যেভাবে ভিজে গিয়েছে মেয়েটা,অমন বৃষ্টি ভেজা কাপড়ে কোনো সুস্থ মানুষের থাকা সম্ভব নয়। শরীরের সাথে চেপে বসেছে একদম ভেজা জিন্স আর টি শার্টটা।
তাতে অবশ্য মনিকাকে দেখাচ্ছে বেশ। মন তো চাইছে এখনই কাছে টেনে নিয়ে বিছানায় চলে যান। কিন্তু না, এটা তার ধরণ নয়। স্ত্রী হোক বা এক রাতের জন্য আসা দেহপসারণী, সকলের সাথেই তার ধরনটা একই রকম- স্থির, ধীরে ধীরে আনন্দ নিয়ে। ঠান্ডা মাথার হিসাবী মানুষ হিসাবে এক প্রকার দুনর্ামই আছে তার পরিচিত মহলে।
স্ত্রী মৌটুশী অবশ্য ভীষণ ছটফটে একটা মেয়ে ছিল। সব কিছুতেই তাড়াহুড়া, চোখের পলক ঝাপটানোর আগেই হতে হবে সমস্তকিছু। রাধঁতে গিয়ে হাত পোড়াতো রোজ, গোসল করতে গেলে চুল না মুছেই বের হয়ে যেতো বাথরুম ছেড়ে, কোথাও বেড়াতে যাবার কথা থাকলে দু ঘন্টা আগে থেকেই শুরু হয়ে যেতো তাড়া দেবার পর্ব।
আর এজন্যই হয়তো.. .. ..
এজন্যই হয়তো জীবনের পর্বটাও বড্ড তাড়াতাড়ি চুকিয়ে-বুকিয়ে মৃতু্যলোকের ওপারে চলে গেলো সে। মা হবার খুব তাড়া ছিল মেয়েটার, আর তাই বুঝি প্রথম সন্তানকে জন্ম দিতে গিয়েই ফুরিয়ে গেলো তার গল্প। এমনকি বাঁচলো না সাত মাসে জন্ম নেয়া ছেলেটাও। মৌটুশীকে ভালোবেসেছিলেন কিনা জানেন না শাহীন সাহেব, তবে পুত্র বেঁচে থাকলে অবশ্যই তাকে সর্বস্ব দিয়ে ভালোবাসতেন।
সেসব গল্প গত হয়েছে বহুকাল, আজ আর সেই সমস্ত নিয়ে ভাবনা জাগে না মনে। একা একাই বেশ কাটিয়ে দিয়েছেন জীবনটা। মা বাবার পছন্দ করা পুত্রবধূ ছিল মৌটুশী, তবু তার গত হবার পরে জীবনের স্বাভাবিক নিয়মেই আবার বিয়ের তাড়া এসেছে পরিবার থেকে। কিন্তু কেন যেন সংসার নামক বস্তুটার শৃঙ্খলে আর আবদ্ধ হতে মন চায়নি। কাজ পাগল মানুষ তিনি, বরাবরই অর্থ উপার্জনের মাঝে নিজের আনন্দ খুঁজে পেয়েছেন। তার মনের জন্য নারী সঙ্গের বিশেষ কোনো প্রয়োজন নেই, আর শরীর নারী সঙ্গ কামনা করলে অর্থের বিনিময়ে সহজলভ্য সেটাও। এতে বরং বৈচিত্র্য আছে, ইচ্ছা মতন বেছে নেবার সুযোগ আছে, আছে প্রতিদিন বদলে নেবার স্বাধীনতা ।
আজ যে মেয়েটা এসেছে- মনিকা- সে অবশ্য আগেও এসেছে কয়েকবার। বছর বাইশের তরতাজা তরুনী, আর্কষনীয় নিখুঁত শরীর। চলনে-বলন আর পোশাক-আশাকে উচ্চবিত্ত আধুনিকাদের মতন, আর বিছানায় সম্পূর্ণ পাশ্চাত্য দেশীয় দেহপসারীনি। ভালো মতন জানে নিজেকে কি করে ব্যবহার করতে হয়, কি করে খেলতে হয় আর খেলাতে হয়। বিছানায় নির্জীব পড়ে থাকা একটা নারী শরীর নয় কেবল সে।
আজকাল অবশ্য বেশ্যাবৃত্তি কেবল নিম্নবিত্ত ঘরের নিরুপায় মেয়েদের বাধ্য হয়ে বেছে নেয়া পথ নয়। মধ্যবিত্ত, এমনকি উচ্চবিত্ত ঘরের অনেক মেয়েও নির্বিকার চিত্তে এই পেশা বেছে নিচ্ছে। এজেন্টদের মাধ্যমে এদের সাথে যোগাযোগ করতে হয়, মোটা অংকের বিনিময়ে এরা সঙ্গ দিতে আসে নিঃসঙ্গ পুরুষদেরকে। চমৎকার একটা শব্দও তৈরি হয়েছে এদের জন্য - "এসকর্ট"।
শাহীন সাহেবের অত ন্যায়-নিতী আর্দশ নিয়ে মাথা ব্যথা নেই। সারাটা জীবন তাই করেছেন তিনি যাতে তার ফায়দা হয়েছে, আনন্দ পেয়েছেন। অর্থের বিনিময়ে নিজের জন্য সুখ কিনে নিচ্ছেন তিনি- দোষটা কি করছেন তাতে? আর দোষ হলেও অবশ্য কিছু যায় আসে না তার। যতক্ষণ মনিকার মতন নারীদের সঙ্গ উপভোগ করার শরীরিক সক্ষমতা থাকবে, ততদিন অন্য কিছু নিয়ে ভাববার প্রয়োজন নেই..
'তোমার জন্য ড্রিঙ্ক বানাবো?'
কামনাময় আহবান মনিকার কণ্ঠে। নিজের জন্য ভদকা ঢেলে নিয়েছে গ্লাসে, জ্বেলে নিয়েছে সিগারেট। এতদূর থেকেও ডাইনিং হলের মিনি বারে দাঁড়ানো মেয়েটার শরীরের আঁকবাক চোখে পড়ছে স্পষ্ট। শরীরের প্রতিটি অঙ্গ ভঙ্গিতে কামনায় অধীরতা ফুটে আছে।
অবশ্য সেটা বিচিত্র কিছু নয়। শাহীন সাহেব রূপবান পুরুষ। বয়স পয়তালি্লশের ঘর ছুঁয়েছে তো কি, এখনও ছাবি্বশের মেদহীন ঝরঝরে শরীর ধরে রেখেছেন। জুলফির কাছে পাক ধরা চুল, রূপালী ফ্রেমের চশমা আর সহজাত গাম্ভীর্যের সাথে তার ব্যক্তিত্বের আর্কষনটা নেহাত ফেলনা কিছু নয়। এখনও যে কোনো তরুনী চোখ বুজে বিয়ের পিঁড়িতে বসে পড়বে তিনি একটু আগ্রহী হলেই।
'কি হলো, বানাবো ড্রিঙ্ক?'
'কর্ণারে দেখো একটা ব্ল্যাক ডগের বটল আছে। জাস্ট অন দ্যা রকস।'
মনিকা ব্ল্যাক ডগকে খুঁজতে ব্যস্ত হয়, শাহীন সাহেব মনযোগী হন আবার আলমারীর দিকে। সারারাত থাকবে মেয়েটা, ভেজা কাপড় না বদলালেই নয়। আচ্ছা, মৌটুশীর কিছু কাপড় তো তিনি রেখে দিয়েছিলেন, সেগুলো কই? একটা দুটো সালোয়ার কামিজ, না হয় রাতের ঘুমাবার নাইটি গুলো তো থাকার কথা।
কোথায় রেখেছিলেন?
পাশের ঘরের দেয়াল আলমারীতে? নাকি ওয়ারড্রবের ড্রয়ারে? নাকি.. ..
এই তো পাওয়া গেছে! অন্য কোথাও যেতে হয়নি, তার পুরানো কাপড়ের ভাঁজ থেকেই বের হয়ে এসেছে একটা শাড়ি। মনে হয় মৌটুশীরই, কোনো না কোনো সময় ভুল করে রেখেছিল তার আলমারীতে। আর এতটা কাল ভুল করেই রয়ে গেছে কাপড়ের ভাঁজে মিশে।
সাদা জমিনে ছোট ছোট আকাশী ফুল তোলা সাদামাটা সুতির শাড়ি, চিকন পাড়খানা রূপালী সুতোয় বোনা। এত সাধারণ শাড়ি মৌটুশী পরতো কখনও? মনে তো হয় না। তাই বুঝি অবহেলায় পড়ে আছে এক কোণে। সাথে নিয়ে মৌটুশীর স্মৃতি, মৌটুশীর ঘ্রাণ.. ..
শাড়িতে মাখামাখি হয়ে থাকা সৌরভ টুকুন অস্তিত্বে প্রবেশ করতেই অবশ হয়ে আসে শাহীন সাহেবের হাতজোড়া। মৌটুশীর শরীরের ঘ্রাণ তার মনে নেই ঠিক, কিন্তু তিনি নিশ্চিত জনেন যে শাড়িতে জড়িয়ে থাকা এই সৌরভ মৌটুশীর নয়। হতে পারেই না। কোনো ভাবেই না।
কেননা এই সৌরভ পারুলের শরীরের।
এই শাড়িখানা পারুলের পরনের।
পারুল পারুল পারুল... ... পারুল বালা !

২)
'.. .. ..দেখো পারুল, বুঝতে হবে তোমাকে। জীবন সবসময় এক রকম থাকে না!'
'কেন এমন বলছো তুমি? আমার কি দোষ? কি এমন করেছি আমি যে নিজের থেকে আমাকে দূরে ঠেলে দিতে চাইছো তুমি?' নারী কণ্ঠটি কান্নাভেজা, অস্থির, শংকিত।
'এখানে দোষগুনের কথা আসছে কেন?' ভীষণ ভীষণ রূঢ় শোনায় শাহীনের কণ্ঠ। 'তারা তো আমার পরিবার, জন্মদাতা পিতা-মাতা। তাদের কথা কি করে ফেলে দিবো আমি বলো? কারো অনুমতি ছাড়া, কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করেছি আমরা... ... এমনিতেই অনেক বড় একটা ভুলের সাথে দুটো বছর থাকা হয়ে গিয়েছে...'
'ভুল শাহীন?' বিস্ময়ে স্থবির নারী কণ্ঠ। 'তোমার আমার সম্পর্কটা ভুল শাহীন? আমাদের এত বছরের সংসার এখন ভুল তোমার কাছে?'
'ভুল নয় বলো? তুমি হিন্দু, আমি মুসলিম। সমাজ মেনে নেবে এমন সম্পর্ক? এতকাল না হয় কেউ জানতে পারেনি, কিন্তু আব্বা-আম্মা চলে আসলে তো জানাজানি হতে দেরি হবে না। তখন কি হবে? সমাজে মুখ দেখাতে পারবো আমি?'
পরম ভালোবাসার স্বামী পুরুষটিকে শক্ত আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরে পারুল নামের গড়পড়তা মেয়েটা। 'শুধু এইটুকুন তো? আমার ধর্মই তো সমস্যা? কোনো সমস্যা নেই... তুমি বললে.. তুমি বললে আমি মুসলিম হয়ে যাবো।... হ্যা, মুসলিম হয়ে যাবো। কালকেই হবো। তাহলে তো আর কেউ কিছু বলবে না। বলবে বলো? সবাই মেনে নিবে তখন...'
'না পারুল, নেবে না। আমার মা-বাবা,পরিবার কেউ নেবে না।'
অপকৃতস্থের মতন কাঁদে অসহায় নারী। 'আমি কোথায় যাবো বলো? তোমাকে ছেড়ে কোথায় যাবো আমি? তুমি ছাড়া কে আছে আমার দুনিয়ায়?'
কথাটা সত্যি। ভীষণ ভীষণ ভাবে সত্যি।
মাসির বাড়িতে অনাদর অবেহেলায় বেড়ে ওঠা পারুলের আসলেই এই বিশাল পৃথিবীটায় আপন কেউ নেই। সেই মাসির বাড়ির চিলেকোঠায় ভাড়া থাকতো শাহীন। ছাত্র তখন সে, পারুল কিশোরী। পরিচয়, ঘনিষ্ঠতা, বন্ধুত্ব। বছরের পর বছর পাশাপাশি থাকতে থাকতে যে নির্ভরতা তৈরি হয় দুটি মানুষের মাঝে, সেই নির্ভরতার হাত ধরেই গভীর প্রেম।
শাহীন তখন পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন আগাগোড়া, কেননা সংসারের কর্তা বড় ভাইয়ের সংসারে বেকার ছোট ভাইয়ের জন্য কোনো স্থান অবিশিষ্ট নেই। কটা টিউশনী আর নিত্যদিন চাকরী-বাকরীর চেষ্টা, মাত্র এইটুকুকে ভর করে করেই তার সাথে একদিন ঘর ছেড়েছিল পারুল বালা। আর সাথে এনেছিল আজন্ম জমানো সনচয় টুকুনও।
সেই সময় গত হয়েছে এখন বেশ অনেকটা দিন। শাহীনের এখন ভালো চাকরী হয়েছে, বন্ধু-বান্ধবের সাথে মিলে ব্যবসাও শুরু করেছে, ঘুরতে শুরু করেছে ভাগ্যের চাকা। আর তাই এখন পরিবারের কাছেও তার কদর বেড়েছে বৈকি। ভাইয়েরা এখন নিজ থেকে যোগাযোগ করে, শহরে এসে প্রতিষ্ঠিত হতে চায় মা বাবা সহ পুরো পরিবার। কি করে না বলবে? নিজের মা-বাবা-ভাই-বোন, ফেলে দেয়া যায় এদের?
এমনটা নয় যে বাড়িতে বলার চেষ্টা করেনি। করেছে। বিগত একটা বছর ধরে চেষ্টা করেই যাচ্ছে শাহীন। বলার চেষ্টা করছে যে একটি মেয়েকে বছর দুয়েক আগে বিয়ে করেছে সে। অনাথ একটি মেয়ে, নাম পারুল, বিধর্মী। দেখতে হয়তো শ্যামলা বরণ, সাদামাটা। তবে বড় লক্ষী গৃহিনী। লেখাপড়া জানে না সে নিজে, কিন্তু শাহীনের জীবনের আজকের এই প্রতিষ্ঠার পেছনে এই মেয়েটার অবদানই সবচাইতে বেশী।
বাবাকে পারেনি যখন, বড় আপাকে বলেছে শাহীন। এবং যা ভয় করেছিল তাই হয়েছে। মেনে নেয়নি বাড়িতে কেউ, কখনও নেবে সে আশাও নেই। তাদের একটাই দাবী, এই মেয়েকে তালাক দিতে হবে। তাদের বংশের উত্তরসূরী কোনো বির্ধমী মেয়ের গর্ভে জন্ম নেবে না। কিছুতেই না!
মাথা ঠান্ডা করে স্ত্রীকে বোঝাবার চেষ্টা করে এবার শাহীন, 'আচ্ছা ঠিক আছে। শোনো, আমরা অন্য কোনো একটা ব্যবস্থা করি এসো। আব্বা-আম্মা আসুক, এখানে উঠুক। আমি তোমাকে অন্য জায়গায় আরও সুন্দর একটা ফ্ল্যাট ভাড়া করে দিবো।'
'অন্য জায়গায়?' মনে হয় যেন নিজের শ্রবণ শক্তিকে ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারে না পারুল। 'আমি অন্য জায়গায় কেন যাবো? এটা আমার বাড়ি, আমার সংসার। এইসব ছেড়ে আমি কোথায় যাবো?'

'একটু বোঝার চেষ্টা করো না, পারুল। প্লিজ! তুমি এমন অবুঝের মতন করলে আমি কোথায় যাবো? এটা আমার নিজের কেনা ফ্ল্যাট, বাবা-মা এসে তো এখানেই উঠবেন। তাই না? তোমাকে আরও বড়, আরও সুন্দর ফ্ল্যাট ঠিক করে দিবো আমি থাকার জন্যে।'
'আর তুমি?'
কিভাবে বলবে যেন বুঝতে পারে না স্বামী পুরুষ। 'আমি তো আর সবসময় তোমার সাথে থাকতে পারবো না। বাবা মা বয়স্ক মানুষ, তাদের খেয়াল রাখার জন্য তো কাউকে থাকতে হবে। তাই না? আমি সুযোগ পেলেই থাকতে যাবো তোমার কাছে... আচ্ছা যাও বাবা, রোজ যাবো। তোমার কোনো কষ্ট হবে না দেখো। এখন যেমন আছে, সবকিছু তেমনই থাকবে। কিচ্ছু বদলাবে না, একদমই না। রাতে থাকতে পারবো না, এই যা।'
'তারমানে.. .. তারমানে...'
স্ত্রীকে বুকে টেনে নেয় শাহীন, মাথায় আলতো হাত বুলিয়ে দেয়। 'তারমানে কিছুই না, বোকা মেয়ে। তুমি একটু ঠান্ডা হও তো। কেবল ঠিকানা বদলাবে আমাদের, আর কিচ্ছু বদলাবে না।'
'সত্যি বদলাবে না?'
'একদম না। তুমি যা আছো, তাই থাকবে। আমি যা আছি, তাই থাকবো। কেবল মা বাবা জানবে না আমাদের সম্পর্কটা। পরিবারের জন্য এতটুকুন স্যাকরিফাইস তো করাই যায়, তাই না বলো? অ্যান্ড আই প্রমিস ইউ, আমি যত দ্রুত সম্ভব সবাইকে রাজি করিয়ে তোমাকে এই বাড়িতে নিয়ে আসবো। প্রয়োজনে সবার সম্মতিতে আবার বিয়ে করবো আমরা। সব ঠিক হয়ে যাবো দেখো। সব ঠিক হয়ে যাবে!'
মিথ্যা স্বান্তনা। আগাগোড়া মিথ্যা। তবু মনে হয় যেন ভরসা করে মেয়ে। কাঁদে ঠিকই, কিন্তু প্রতিবাদ করে না আর।
কেবল প্রশ্ন করে, 'যদি মা বাবা তোমাকে বিয়ে দিতে চায় আবার?'
'পাগল নাকি? তোমাকে ফেলে আমি আবার বিয়ে করবো? মাথা কি খারাপ আমার?'
'সত্যি তো?'
'আরে বাবা, এই মেয়ে বলে কি? তুমি তো আমার একটা মাত্র লক্ষী বউ!'।
... ... বাইরে তখন ঠিক এমনই বর্ষনমুখর একটা রাত ছিল। ঠিক আজকের মতন!

৩)
কেন এমন হয়?
কেন অতীতের পাতা থেকে কখনও উঠে আসে এমন সব স্মৃতিরা, যাদেরকে আজীবন বুকের অন্ধকারে চাপা দিয়ে রাখার অন্তহীন প্রয়াস থাকে আমাদের? কেন ফিরে আসে সেই সব মুখেরা, যাদেরকে ভুলে যেতে পারলেই শান্তি আর স্বস্তি আমাদের?
ভুলেই তো গিয়েছিলেন তিনি পারুলের কথা। এমনভাবে ভুলে গিয়েছিলেন, যেন কোনো কালে অস্তিত্বই ছিল না পারুল বালা নামের কারো। যেন পারুল বালা কোনো বাস্তবের মানুষ নয়, স্বপ্ন কোনো। কিংবা ছায়া।
সেদিনের সেই রাতের পর পারুলকে তো একটিবার মনে করেননি তিনি। একবারের জন্যেও না। সেই বর্ষণ মুখর রাতে, যেদিন শেষ বারের মতন দেখেছিলেন পারুলকে.. ..
বরাবরের মতন সহজ ভঙ্গিতেই শাহীনের চুলের ভাঁজে ভাঁজে নারিকেল তেল ঘষে দিচ্ছিল মেয়েটা। হতের চুড়ি গুলো টুংটাং বেজে যাচ্ছিল মৃদু , সদ্য স্নান করে আসা শরীরটা থেকে ভেসে আসছিল অদ্ভুত একটা ঘ্রাণ। তাদের ছোট্ট সংসারের দৈনন্দিন রাত্রিকালীন চিত্র।
'তোমার তেল ঘষাঘষিতে লাভ তো কিছু হলো না, বউ।' আরামটুকুন চোখ বুঝে উপভোগ করতেই করতেই রসিকতা করে শাহীন। 'চুল যেমন পড়ার, তেমনি তো পড়েই যাচ্ছে। যতই তেল মাখামাখি করো, টোকো স্বামীর সাথে ঘর তোমাকে করতেই হবে।'
'ইস! অত আল্লাদ নেই। টেকো স্বামীর সাথে মরে গেলেও ঘর করবো না আমি। কোনোদিনও না।'
স্ত্রীকে টেনে এনে নিজের কাছে বসায় শাহীন। 'এই বুঝি পতি প্রেম? মাথায় চুল না থাকলে প্রেমও থাকবে না?'
হাসে পারুল। 'আমি কিন্তু তা বলিনি। আমি বলেছি, টেকো স্বামীর সাথে আমাকে ঘর করতে হবে না।'
' হায় খোদা! এই ছিল আমার কপালে?' কপট দুঃখে কপাল চাপড়ায় পুরুষ। 'শেষে কিনা তুমি আরেকটা বিয়ে করবে আমাকে ফেলে? হায় আল্লাহ, এই দিন দেখার আগে আমাকে তুলে নিয়ে গেলে না কেন? বিয়ে করা বউ আরেকটা বিয়ে করবে বলে.. ..'
ভালোবাসার পুরুষটির চুলে খুব শান্ত ভঙ্গিতে বিলি কাটে নারী। 'আমি না, বিয়ে তো করবে তুমি।'
'আবার শুরু করলে? আচ্ছা, এইসব ফালতু কথা দিয়ে সময় নষ্ট করে লাভটা কি বলোতো?'
'তা ঠিক.. ..' বিড়বিড় করে যেন মেয়ে আপন মনেই। 'হাতে সময় ভীষণ কম।'
'কি... হলোটা কি তোমার আজ? এমন করছো কেন?' উত্তেজিত শাহীন। 'আমরা না আলোচনা করে সমাধান করে ফেললাম সব কিছুর? হাতে সময় কম, আমি আরেকটা বিয়ে করবো.. .. এসব কি বলছো তুমি উলটা পালটা?'
ডায়রীর ভাঁজ থেকে একটা ফটোগ্রাফ বের করে স্বামীকে দেখায় মেয়ে। 'মেয়েটার নাম মৌটুশী। উচ্চ শিক্ষিতা, বাবা বড় শিল্পপতি।'
'আরে, এটা তুমি কোথায় পেলে?' ভীষণ চেষ্টায় কন্ঠস্বরকে স্বাভাবিক রাখে পুরুষ। 'মৌটুশী তো আমার ক্লাসমেট। একসাথে এম.বি.এ করছি আমরা। গত বছর ভর্তি হলাম মনে নেই? একক্লাসে পড়ি আমরা একসাথে।'
'আর এখন একসাথে জীবনও কাটাবে।' হাসে পারুল। 'তুমি আমাকে বললেই তো হতো যে অন্য কাউকে ভালো লাগে। আমি কি তোমার সুখের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতাম বলো?'
'কি যে বলো না তুমি। ধূর...'
'তোমার আম্মা পাঠিয়েছেন এই ছবি। আর বলেছেন, সব কিছু জেনেও তোমার ঘাড়ে ঝুলে আছি আমি... আমার কি লজ্জা হয় না?'
'আসলে.. .. আসলে... আম্মা-আব্বাই ঠিক করেছে সব... আমি আসলে.. ..'
'ঠিকই। আম্মা-আব্বাই বিয়েটা ঠিক করেছেন। কেবল প্রেমটা করেছো তুমি, আর তাদেরকে জানিয়েছো তোমার পছন্দের কথা।' বালিশ টেনে শুয়ে পড়ে পারুল। 'আমার জন্যে ফ্ল্যাট দেখেছো? অনেকদিন তো উত্তরায় থাকা হলো, এবার বনানী বা ধানমন্ডিতে দেখো।'
কি বলবে, কি করবে ঠিক বুঝতে পারে না পুরুষ। এইসব কি বলছে পারুল? আর এমন সহজ স্বাভাবিক আচরণই বা করছে কি করে? তার তো কাঁদার কথা, চিৎকার করবার কথা, ধোঁকাবাজ-প্রতারক বলে গালাগাল করবার কথা।
তবে? কি হলো আজ পারুল বালার?
হাত বাড়িয়ে স্বামীকে কাছে যাকে পারুল। 'কি হলো, ঘুমাবে না? কাছে এসো, মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছি।'
'পারুল. ... আ.. আমি...'
'আহা, এতো কথা বোলো না তো। কাছে এসো, রাত অনেক হয়েছে।'
যন্ত্রচালিতের মতন নির্দেশ পালন করে পুরুষ। আর তারপর দুহাতে স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে মুখ গোঁজে বুকে। 'একটা ভুল হয়ে গেছে, পারুল সোনা। অনেক বড় একটা ভুল হয়ে গেছে... আমি কালকেই সব ঠিক করে ফেলবো দেখো।'
'আচ্ছা ঠিক আছে, ঠিক কোরো।'
'মা- মৌটুশী... সবাইকে বলে দিবো তোমার কথা। কালকেই বলে দিবো।'
'আচ্ছা দিও।'
'শুধু তুমি আমার বউ.. .. তুমি তুমি তুমি...'
'আমি জানি তো.. ..আমি জানি।'

এবং পরের দিন খুব ভোরে.. ...
মৃত পাওয়া গিয়েছিল পারুল বালাকে!
স্বামীর দৃঢ় আলিঙ্গন থেকে সন্তপর্নে ছাড়িয়ে নিয়েছিল সে নিজের অস্তিত্ব। হয়তো এলোচুল গুলোকে বেঁধেছিল আলতো খোপায়। শাহীনের ঘুমন্ত মুখখানায় হয়তো হাত বুলিয়েছিল একটু, কপালে সযতনে এঁকেছিল একটি চুম্বন। আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বের চোখে চোখ রেখে সিঁথিতে গাঢ় করে এঁকেছিল সিঁদুরের রেখা।
আর তারপর.. ...
এই শহরের বুক থেকে রাতের অন্ধকার তখনও মিলিয়ে যায়নি পুরোপুরি। ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে একটু একটু, তবে ল্যাম্প পোস্টের হলদে বাতিগুলো জ্বলছিল তখনও। শহরের বাইরে থাকা আসা দূর পাল্লার ট্রাক-বাস গুলো তাদের ঝড়ঝড়ে শরীরগুলোয় সবের্াচ্চ গতিবেগ তুলে ছুটে ছুটে যাচ্ছিল ফাঁকা সড়কগুলোর শরীরর বেয়ে।
ঠিক সেরকম একটা ট্রাকই পিচঢালা ধূসর রাস্তার বুকে পিষে দিয়ে গিয়েছিল পারুলের শরীরটাকে সেদিন। ট্রাক খানা পারুলের পথে পড়ে গিয়েছিল, নাকি পারুলই গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ট্রাকের পথে- সেই প্রশ্ন এখন অবান্তর। তবে ঘটনা যাই ঘটে থাকুক না কেন, স্বস্তি দিয়েছিল এই ঘটনা অনেককেই।
হঁ্যা, অনেককেই। মা, বাবা, ভাইয়া, আপু.. ..
এবং সর্বোপরি শাহীনকেও।

৪)
বৃষ্টির বেগ বেড়েছে অনেক, রিতীমতন ঝড় হচ্ছে এখন। আকাশের বুক এপার ওপার চিড়ে যাচ্ছে বিদ্যুতের রূপালী রেখা, ঘনঘন বজ্রপাতের শব্দে কান পাতা দায়।
অতীতের ভাবনা পাশে ঠেলে বর্তমান নিয়ে ব্যস্ত হতে চেষ্টা করেন শাহীন সাহেব। মনযোগী হতে চেষ্টা করেন আজকের রাতের জন্য যে নারী দেহটি প্রেমিকা, তার প্রতি। মানুষ যে কি করে নিজেকে ব্যতীত অন্য কাউকে ভালোবাসে, সেটা কখনওই বুঝে উঠতে পারেননি তিনি। কিংবা কে জানে, মানুষ হয়তো আসলে অন্য কাউকে ভালোও বাসে না। অন্য কাউকে ভালোবাসবার যে ভ্রমটুকুন সে নিজের মাঝে তৈরি করে, মূলত তা নিজেকে ভালোবাসবারই অন্য একটা রূপ। নিজের পছন্দের একটা বস্তুর ওপরে যেমন মমতা থাকে, পছন্দের মানুষদের ওপরে মমতা থাকার ব্যাপারটিও মনে হয় অনেকটা তেমনি... ...
বজ্রপাতের শব্দে সম্বিত ফিরে আসে।
বিদ্যুত চলে গেছে, মোমের আলোয় ভরে গেছে তার দুই তলা প্রাসাদসম বাড়ি। জেনারেটর আছে, কিন্তু সেটা কাজ করছে না কেন কে জানে। কাউকে ডেকে যে জিজ্ঞাসা করবেন, সে ইচ্ছাটাও হচ্ছে না এ মুহুর্তে। থাকুক না খানিকটা অন্ধকার, কি হবে? মানব সমপ্রদায়ের অন্তরটাই যখন অন্ধকার দিয়ে ছাওয়া, বাইরের পৃথিবীতে তখন আলো থাকুক বা না থাকুক- কিচ্ছু যায় আসে না।
তবে কি তার অন্তরেও অন্ধকার?
সে তো অবশ্যই। অন্তরে অন্ধকার না হলে পারুলকে ভুলে মৌটুশীর দিকে হাত বাড়িয়েছিলেন কেন? অবশ্য না দিয়ে তখন উপায়ও ছিল না। পারুল তাকে জীবনের কঠিনতম সংগ্রাম পাড়ি দিতে সাহায্য করেছে ঠিক, কিন্তু এই প্রতিযোগীতা ঠাসা পৃথিবীতে পারুলের মতন নেহাতই সাধারণ অশিক্ষিত জীবন সঙ্গিনী নিয়ে সমাজের উচ্চ অংশটার সাথে মেলামেশা করা যায় না একদমই। পারুলের মতন মেয়েরা কেবর গৃহিনী হবার জন্যে তৈরি, কিন্তু তার প্রয়োজন ছিল মৌটুশীর মতন নিখুঁত একটা সামাজিক পুতুল। নিজের অবস্থান পরিবর্তর্নের সাথে সাথে মানুষের চাহিদা আর পছন্দও বদলায়। এবং তারও বদলেছিল সেই সময়ে।
দোষ হয়েছে?
নিজেকে সবার আগে গুরুত্ব দেয়াটা যদি দোষের হয়ে থাকে তো অবশ্যই হয়েছে। জীবনটা এমনই, অতীতের অধ্যায় নাড়াচাড়া করাটা লোকসানের সওদা এই বাজারে। কেননা যা হয়েছে, তাকে বদলে ফেলবার সুযোগ মানুষকে প্রকৃতি দেয়নি। সেই যে পারুল গিয়ে দাঁড়িয়েছিল চলন্ত ট্রাকটার সামনে, বদলাতে পেরেছিলো কি কেউ?
ভাবতে চান না এতটুকু, তবু আজ এই মুহুর্তে ভাবনাগুলো চলেই আসে মনে। ভীষণ কেঁদেছিলেন তিনি সেই দিনে, পারুলের দেহের অবশিষ্টাংশ গুলো আঁকড়ে ধরে চিৎকার করে করে কেঁদেছিলেন। তার বড় বড় আয়ত চোখ, পুরু ঠোঁট, ধনুকের মতন বাঁকানো ভ্রু মিলেমিশে বানানো মায়াময় মুখ খানা চেনার উপায় ছিল না একেবারেই। শরীরটা দুমড়ে মুচড়ে পরিণত হয়েছিল স্রেফ মাংসের একটা পিন্ডে। যা চিনতে পেরেছিলেন, তা হলো মাথার দীঘল কেশরাজি। সেই সুগন্ধী কেশরাজি, আজও যার সৌরভ মিলেমিশে আছে তার গোটা অস্তিত্বে. ...
না না, তা কি করে হয়? এতকাল যে পারুলের কথা এতটুকু মনে করেননি, আজ কেন তার সৌরভের কথা মনে আসবে? কেন?. ... কেন সেই সৌরভকে এতটা জীবন্ত হবে যেন আশেপাশেই আছে?
অস্থির হয়ে এদিক ওদিক তাকান শাহীন সাহেব। জানেন সমস্তই তার ভ্রম, মনের ক্ষনিকের দুর্বলতা। সেই একই রকম বৃষ্টিভেজা ঝড়ো রাত, আলমারীর কাপড়ের ভাঁজে মিলে যাওয়া মলিন বির্বণ সেই শাড়ি, আর সেই শাড়িতে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা বহুকাল আগে স্মৃতি হয়ে যাওয়া মেয়েটির সৌরভ.. .. কল্পনা, সমস্তই কল্পনা আগাগোড়া! কল্পনা ছাড়া আর কিছু হতে পারে?
তবু মন যেন মানে না।
বাথরুমে পোশাক বদলাচ্ছে মনিকা, এখান থেকেও কানে আসছে তার গুনগুন গানের আওয়াজ। তবু বারবার মনে হয়, দরজার ওপাশে বুঝি মনিকা নেই। আছে অন্য কেউ। এমন কেউ, অনেক অনেক কাল আগে যে এমনি করেই গুনগুন গান করতো বর্ষনমুখর রাতগুলিতে।
ভাবে তাকাবেন না একবারও, তবু বাধ হন। চোখ জোড়া সেঁটে থাকে যেন দরজার সাথে, অজানার আশংকায় বুকের মাঝে ধড়ফড় করে হৃৎযন্ত্রখানা।
কিংবা.. ..
অপেক্ষা করে! অপেক্ষা করে তার ফিরে আসবার। অন্য ভুবনের মায়াজাল ছিন্ন করে, অনন্তকালের ব্যবধান অতিক্রম করে তার ফিরে আসবার।
সম্ভব নয়, জানেন তিনি। বাস্তবতার সামনে পরাবাস্তবতা আজীবন পরাজিত, তাও জানেন। তবু অপেক্ষা করেন। আর একটিবার... ... কেবল একটিবার নিজের সেই মুখটির সামনে দাঁড়ানোর অপেক্ষা, অন্য ভুবনের যাত্রাকালে যাকে বিদায় জানানো হয়নি শেষবারের মতন।
অপেক্ষা করেন তাই শাহীন সাহেব.. ..
নিজের অস্তিত্বের প্রতিটি বিন্দু একত্রিত করে অপেক্ষা আর অপেক্ষাই করেন কেবল!

পরিশিষ্ট ঃ-
হঁ্যা, সে পারুল। দরজার ওপাশ থেকে যে নারী অস্তিত্বটি এসে দাঁড়ায় তার সামনে, সে পারুল না হয়ে যায়-ই না!
হতে পারে শরীরটা মনিকার। চোখ-নাক-হাত-চুল সব মনিকার। সব সব সব!
কিন্তু তারপরেও... ..
সে পারুল! তার চোখের উজ্জ্বলতা পারুলের, ঠোঁটের কোণের হাসির রেশটুকুন পারুলের, বাতাসে দুলতে থাকা কেশরাজির সৌরভ পারুলের, পরনের মলিন শাড়িখানা পারুলের। সে পারুল। বহু বহু কাল আগে ভীষণ অভিমানে মুখ ফিরিয়ে চলে যাওয়া পারুল।
.. ..বাইরে ঝড়-জলে মাখামাখি এলোমেলো রাত সামনে বাড়ে, আর এই কংক্রীট নগরীর কোথাও না কোথাও প্রকৃতির বিভ্রমের শিকার একজন শাহীন সাহেব দাঁড়িয়ে থাকেন স্তব্ধ হয়ে।
বড় রহস্যময় খেলা এই প্রকৃতির, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে অযথা বিভ্রমের জন্ম দেয়।
হরহামেশাই।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এশরার লতিফ ভালো । 'মানব সমপ্রদায়ের অন্তরটাই যখন অন্ধকার দিয়ে ছাওয়া, বাইরের পৃথিবীতে তখন আলো থাকুক বা না থাকুক- কিচ্ছু যায় আসে না'।
ভালো লাগেনি ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১২
সূর্য মুগ্ধতার পুরোটাই
ভালো লাগেনি ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১২
জহির ভালো লাগলো
ভালো লাগেনি ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১২
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২
প্রিয়ম দারুন ভাবে অনেকটা পথ পারি দিলাম , অনেক অনেক সুন্দর |
ভালো লাগেনি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১২
অনেক অনেক ধন্যবাদ :)
ভালো লাগেনি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১২
শাহজাদী maria শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
ভালো লাগেনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১২
ধন্যবাদ আপনাকে
ভালো লাগেনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১২
আবু ওয়াফা মোঃ মুফতি লেখা সাবলীল গল্প হয়েছে জটিল!
ভালো লাগেনি ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১২
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১২
মনির মুকুল “জানোয়ার” দিয়েই আপনার শৈল্পিক সৃষ্টিকর্মের পথটায় আমার পথিক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ-কাল করে আর তা হয়ে ওঠেনি। আজ পারুল বিভ্রমের হাত ধরেই সে পথে হাঁটলাম। গল্পটা অনেকের যেভাবে লেখাটা ভালো লেগেছে আমার ঠিক সেভাবে লাগেনি, কেননা পড়া শুরু করার আগেই জানতাম একটা ভালো গল্প পড়তে যাচ্ছি। ভালো লেখা পাওয়াটা অপ্রত্যাশিত ছিল না বলেই ঐ ভাবে অভিভূত হইনি। এ ক্ষেত্রে বরং বলতে পারি আমার পাঠকমনে আস্থা পাওয়া সত্ত্বটা বাস্তবে প্রত্যক্ষ করে সেই জায়গাটা আরো শক্তিশালী করে নিল। ....আশা করি এখানে নিয়মিতই পাব আপনাকে।
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১২
চেষ্টা থাকবে। ধন্যবাদ আপনাকে
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১২
মাহবুব খান গল্পে আপনার মুন্সিয়ানা ফুটে উঠেছে / মায়াজাল ভালোই বিছিয়েছেন /অনন্য আপনার লেখার ঢং/ ভালোলাগা রেখেগেলাম
ভালো লাগেনি ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১২
ধন্যবাদ :)
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১২
মোহসিনা বেগম হুম ভাল !
ভালো লাগেনি ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১২
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১২
ইউশা হামিদ গল্প নয় সত্যি ।
ভালো লাগেনি ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২
কখনো কখনো কারো জীবনে ...
ভালো লাগেনি ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২

২৬ আগষ্ট - ২০১২ গল্প/কবিতা: ২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪