ভূত দেখা রাতের গল্প

ভয় (এপ্রিল ২০১৫)

রফিকুল ইসলাম সাগর
  • 0
  • ২০
পৃথিবীতে ভুত বলতে কিছু নেই, ভুত শব্দটা কাল্পনিক। কেউ যদি বলে ভুত দেখেছে তাহলে সেই কথা আমি বিশ্বাস করি না শুধু মাত্র নিজের কল্পনায় সৃষ্টি। পৃথিবীতে জ্বীনের অস্তিত্ব আছে এই কথা সবারই জানা। মানুষ ও জ্বীন সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি। জ্বীনেরা যে কোন সময় যে কোন রূপ ধারণ করতে পারে বলেই জানি। তারা মানুষের চেয়ে অনেক বেশি বছর বেচে থাকে, দুই হাজার বছর আড়াই হাজার বছর অথবা তার চেয়েও বেশি। জ্বীনদের মধ্যে ভাল-খারাপ দুটোই আছে। অনেক গবেষকের মতে মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়াতে ও ফিলিপাইন জ্বীনেদের বসবাসের সংখ্যা অনেক বেশি। এই দেশ গুলোর বেশিরভাগ জায়গা জুড়ে পাহাড় ও জঙ্গল। এই কারণেই জ্বীনেরা নাকি তাদের বসবাসের জন্য এই দেশ গুলোকে বেছে নিয়েছে। বর্তমানে মালয়েশিয়াতে আমার অবস্থান। আমার নিজ চোখে দেখা ভয়ংকর কিছু ঘটনা সবাইকে জানাবো। প্রথম যখন মালয়েশিয়া আসলাম একটি তিন তলা বাড়িতে থাকতাম। ৩য় তলায় আমি এবং আমার এক বন্ধু থাকতাম। ২য় তলায় দু’টি কক্ষ, কক্ষ দু’টিতে আরো দু’জন বাঙালি থাকতো। নিচ তলায় রান্না করার ঘর এবং বাকি অংশ ফাকা। একদিন রান্না করছিলাম, বাড়িতে আর কেউ ছিল না সেই সময়। উপরে আমার কক্ষে মোবাইলের রিং-টোন বাজছে, ফোন করেছে কেউ। রান্না ঘর থেকে বের হতেই দেখলাম একটি মেয়ে সামনের দিকে হেটে যাচ্ছে। আমি পিছু নিতেই সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে গেল। আমি দ্রুত সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে কাউকে দেখতে পেলাম না। ভাবলাম ২য় তলায় যে বড় ভাই থাকে তার বান্ধবী হতে পারে কক্ষে প্রবেশ করেছে হয়তো। রাতে ২য় তলায় যে দুইজন থাকে তারা বাড়ি ফেরার পর তাদের জিজ্ঞাসা করলাম তাদের কক্ষে কোনো মেয়ে আছে কিনা? তারা বলল নাতো। কেন কী হয়েছে? আমি ঘটনা বললাম তারা বলল ও আচ্ছা সমস্যা নেই। আমরাও অনেক দিন দেখেছি। আমি বুঝতে পারলাম ওটা জ্বীন ছিল। তারা বলল ভয় পেয়না ওটা কারো ক্ষতি করে না, ভাল জ্বীন।

দেড় মাস পর সেই বাড়িটা ছেড়ে নতুন আরেকটি বাড়ি ভাড়া করলাম। নতুন যেই বাড়িটি ভাড়া করেছিলাম সেই বাড়িতে প্রায় সাত-আট বছর কেউ থাকত না। বাড়ির সামনে বড় বড় ঘাস হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাড়িটি ছিল খুব সুন্দর দু’তলা বাড়ি, ভাড়াও কম। বাড়িওয়ালার শর্ত ঘাস পরিস্কার সহ যা যা সমস্যা আছে আমাদের ঠিক করে নিতে হবে। আমরা রাজি হলাম। দু’দিনে বাড়ি গুছিয়ে নিলাম। বাড়িতে উঠার কিছুদিন পর বাড়িতে আমি একা দিনের বেলা,আমার কক্ষের দরজা খোলা রেখে গান শুনছিলাম। নিচ থেকে সিড়ি দিয়ে উপরে উঠলেই আমার কক্ষ দেখা যায়। হটাৎ আমার দৃষ্টি পড়ল সিড়ির দিকে। দেখতে পেলাম কে জানি একজন উপরের দিকে উঠল। আমাকে দেখেই আবার নিচে নেমে গেল। যা দেখছি অনেক লম্বা আকৃতির। চেহারা দেখতে পাইনি।

পড়নে ছিল কালো রঙের কাপড়। দেখার সাথে সাথে আমি কক্ষ থেকে বের হয়ে দু’তলা থেকে নিচ তলা নামলাম। কিন্তু নিচে কেউ ছিল না। আগের বাড়িতে এক দৃশ্য দেখলাম এই বাড়িতেও একই রকম ঘটনা। আমার মনে হল আমার মনের ভুলও তো হতে পারে। তবে না আমি নিশ্চিত কিছু দেখেছি। আসে পাশের পরিচিত বাঙালি যারা অনেক বছর যাবত মালয়েশিয়া আছে তাদের অনেকর সাথে এই বিষয়ে কথা বললাম তারা অনেকই স্বীকার করলেন তাদের চোখে দেখা এরকম কিছু ঘটনার কথা। অনেকে বললেন তারাও নাকি অনেক দেখেছে। কেউ কেউ বলল এখন তো কম দেখা যায় আগে আরো বেশি ছিল। যারা ১৯৯২ সালে মালয়েশিয়াতে এসেছেন তারা বলল এখন তো অনেক ঘর বাড়ি বিল্ডিং হয়েছে আগে তো এইসব কিছুই ছিল না জঙ্গল ছাড়া, আমরা পাম বাগানে কাজ করতাম। তখন এগুলা নাকি বেশি চোখে পড়ত। যারা মালয়েশিয়ান তারাও অনেকে স্বীকার করলেন জ্বীন দেখার কথা। মালয়েশিয়ার স্থানীয় ভাষায় হাংতু (জ্বীন)। গম্বাক নামক এলাকায় নাকি বেশি চোখে পড়ে।

কিছুদিন আগের ঘটনা প্রাইভেট কারে করে তিনজন বন্ধু মিলে গিয়েছিলাম মালাক্কা। রাত প্রায় তিনটার সময় আমরা কুয়ালালামপুরের উদ্দেশ্যে ফিরছিলাম। পাহাড়ি পথ। দূর দুরান্তে কোনো ঘর-বাড়ি নেই। গাড়ির চলাচল তেমন একটা ছিল না। হটাত আমরা দেখতে পেলাম চারজন লোক একটি লাশ নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে। আমরা অবাক হলাম। এমন নির্জন পথে লাশ নিয়ে যাচ্ছে দৌড়ে দৌড়ে তাও আবার মাত্র চারজন। গাড়ি থামিয়ে আমরা দেখতে গেলাম। আমরাও দৌড়ে তাদের কাছে যেতেই তাদের পায়ের দিকে নজর পড়ল। দেখলাম পা দেখা যায়না। তারা লাশ নিয়ে শুন্যের উপর দৌড়ে যাচ্ছে। ঘটনা বুঝতে পেরে আমরা আর কাছে গেলাম না দৌড়ে আবার গাড়িতে এসে বসে পড়লাম। আমরা তিনজন নিজ চোখে এমন ভয়ংকর একটা ঘটনা দেখলাম।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
নাসরিন চৌধুরী সত্যিই আমার গায়ের পশম দাঁড়িয়ে গেছে!! আপনার লেখাটা পড়ার পর আমার চিন্তায় যদি বার বার এমন কিছু আসে তাহলে নিজেকে নিয়েই নিজে বিপদে পড়ে যাব!! আমি নিজেই খুব ভীতু একজন মানুষ। তবে আপনার লেখাটা খুব ভাল হয়েছে
আমি ছোট বেলায় অনেক ভয় পেতাম। ভূতের কোনো সিনেমা দেখলে পরবর্তী অনেকদিন জ্বরে আক্রান্ত থাকতাম। আমার মা আমাকে হুজুরের কাছে ফু দিতে নিয়ে যেত, পানি পড়া খাওয়াতো। তবে এখন আর একটুও ভয় পাইনা। আপনার এতো সুন্দর মতামত পেয়ে আমার খুব ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন। শুভ কামনা।
আখতারুজ্জামান সোহাগ খুব ভয় পাইয়ে দিলেন ভাই! দারুণ জমজমাট ভয়ের গল্প হয়েছে। আপনার জন্য শুভকামনা।
আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
রবিউল ই রুবেন অনেক ভাল লাগল গল্পটি।

০৩ মে - ২০১২ গল্প/কবিতা: ১১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪