একটা খুন

উচ্ছ্বাস (জুন ২০১৪)

কামরুল হাছান মাসুক
  • 0
  • ৩৬
খুন করার পর মনে হচ্ছে লাশটাকে দাফন করা দরকার। ও যে ধর্মের, আমিও সে ধর্মের। লাশটাকে দাফন না করলে বড় ধরণের পাপ হয়ে যাবে। এতে ভয়াবহ ক্ষতি হতে পারে। যে রকম উচ্ছ্বাস নিয়ে বারাকাত সাহেবকে খুন করা হল, এখন সে রকম উচ্ছ্বাস লাগছে না। একটা ভীতি কাজ করছে। যদিও একা খুন করিনি। আমার সাথে আরও চারজন আছে। ওদের দেখে মনে হচ্ছে না ওরা ভয় পাচ্ছে। মনের সুখে সিগারেট খাচ্ছে। আমার কেন এত ভয় লাগছে। আগে কখনো খুন করেনি। এবারই প্রথম। কি দরকার ছিল খুন করার। বেচারা আর কয়টা দিন বেঁচে গেলে কিই বা এমন ক্ষতি হত। ও যা শুরু করেছিল আমার কাছে অবশ্য খুন ছাড়া আর কোন রাস্তা ছিল না। আমি যে জায়গায় যেতাম ও সেই জায়গায় নাক গলাত। ওর জন্য আমার সব কিছু বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। ওকে বারবার সতর্ক করার পরও ও শুনেনি। কি করব। কেউ সোজা কথা না মানলে বাঁকা রাস্তায় যেতে হয়। বাঁকা রাস্তায় গিয়েই যত ঝামেলা। ঝামেলা যেহেতু শেষ এখন উচ্ছ্বাস লাগার কথা। উচ্ছ্বাস লাগছে না কেন? আনন্দে নিত্য করার কথা। সব ঝামেলা শেষ। ওর ঝামেলা শুরু হওয়ার কথা। ফেরেশতা এসে ওকে তিনটা প্রশ্ন করার কথা। ওর চিন্তা থাকার কথা কিভাবে ও প্রশ্ন উত্তর দিবে? আমার এত ভাবনা কিসের। খুন করেছি। কিচ্ছা খতম। জায়গা থেকে সরতে ইচ্ছে করছে না। বারবার মনে হচ্ছে ওকে দাফন না করে চলে যাওয়া কি ঠিক হবে। শেয়াল কুকুর এসে যদি লাশটা খেয়ে ফেলে। খেয়ে ফেললে আমার জন্য ভালই হওয়ার কথা। কোন চিহ্ন থাকবে না। চিহৃ থাকলেও আমার কোন সমস্যা হবে না। আমাকে নিরাপত্তা দিবে প্রচণ্ড ক্ষমতাশালী এক লোক। যারা কথায় সমস্ত অপরাধ জগতের মানুষ উঠ বস করে। তবুও এমন লাগছে কেন? বারবার মনে হচ্ছে কাজটা কি ঠিক করলাম। ওর ছেলে মেয়ে আছে? থাকার কথা। ও একদিন বলেছিল আমার ছেলে মেয়ের জন্যই আমি ভয় পাই। নিজের জন্য কোন ভয় ছিল না। আমি যদি মারা যাই তাহলে আমার ছেলে মেয়েকে কে দেখবে। ছেলে মেয়ের বয়স বেশি হয়নি। দুই ছেলে। মেয়ে নেই। এক হিসেবে ভালই হল। মেয়ে হলে ঝামেলা হত। বিয়ে দিতে আজকাল অনেক যৌতুক লাগে। ছেলেরা যৌতুক পায়। ওর বউটারও বয়স বেশি হয়নি। ছেলে মেয়ের বয়স বেশি হলে বউয়ের বয়স বেশি হত। ওর বউকে দেখেছিলাম। পরীর মত চেহারা। এত সুন্দর বউ ও কোথায় থেকে পেল কে জানে।
স্যার, এখানে কি করছেন? আমরা যে জন্য এসেছিলাম সে কাজ শেষ। আসেন চলে যাই। রাত বিরাতে বেশিক্ষণ থাকা ঠিক না।
লাশটার কি হবে? এটা কি একা থাকবে।
লাশটার কি হবে মানে। উনাকে কি ঘরে নিয়ে মমি করে রাখবেন। যদি মমিই করে রাখবেন তাহলে খুন করলেন কেন? পাগল হয়ে গেলেন স্যার। আপনি এখানে থাকেন। আমরা যাই। লাশের পাহারা দিতে পারেন।
কি বল। আমি এখানে একা থাকতে পারব না। আমি থাকলে তোমাদেরও থাকতে হবে।
আমাদের মাথা খারাপ হয়নি। আমরা এখানে থাকব কেন? খুন করার পর যত দ্রুত সম্ভব স্থান ত্যাগ করতে হয়। ফেরেশতারা এসে বিভিন্ন প্রশ্ন করবে কি দরকার। আজরাইলও আসে পাশে থাকে। দরকার আছে ঝামেলায় জড়াবার। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেছি। আপনার দরকার হলে থাকেন। আমরা যাই।
লোকটাকে কেন খুন করলাম বলতে পার?
আমরা বলব কিভাবে? খুন করেছেন আপনি।
আমি খুন করিনি। খুন তোমরা করেছ। আমি সাথে ছিলাম। টাকা পয়সা দিয়েছি।
ওই হল। উনার সাথে আমাদের কোন শত্রুতা ছিল না। যা ছিল আপনার সাথে। টাকা দিয়েছেন। আমরা কাজ করেছি। আমাদের কাজই খুন করা। কেউ যদি টাকা দেয় তাহলে আপনাকেও খুন করতে দ্বিধা করব না। শুধু আমাদের নিরাপত্তা দিলেই হবে। জেলেও থাকতে পারব। নিরাপত্তা দিলে জেলে থাকা যা বাড়িতে থাকা ও তা। টাকা রুজি বলে কথা।
তোমরা এগুলো কি বলছ? আমার ভাল লাগছে না। আমার মনে হচ্ছে অনেক বড় অন্যায় করেছি।
স্যার, অন্যায় অবশ্যই। আপনাদের লাভে খুন করেছেন। অন্যায় হবে না। আসেন যাই। আমাদের ভাল লাগছে না। একটু পর ভোর হয়ে যাবে। মানুষের আনাগোনা বেড়ে যাবে। বিপদে পড়বেন। আপনাকে দেখে খারাপ লাগছে। আপনার মনে যদি এতই কিন্তু থাকত তাহলে খুন করতে গেলেন কেন?
খুন আমি করতে চায়নি। নেতা আদেশ দিয়েছেন। রাজনীতি করতে হলে এরকমটা করতে হয়। কি করব। উপরের আদেশ বলে কথা। উনার সাথে বনিবনা কারও হচ্ছিল না। উনাকে বুঝানোর অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। উনি বুঝতে চান নি। কি করব। বলুন।
স্যার, বুঝাবুঝির দরকার নাই। যা হওয়ার হয়ে গেছে। বাড়ি যাই। সামাল দিতে গাঁ ঢাকা দেওয়া লাগতে পারে। কাপড় চোপর গোছাতে হবে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আপেল মাহমুদ এমন ঘৃন্য কাজ হররোজ হচ্ছে। মানুষ যেনো আর সামাজিক জীব নেই। ধন্যবাদ লেখককে।
biplobi biplob Kisuta kosto hocilo, kintu shasa hasi paya galo. Patokdar j obosta, mon kara hoya jay. Tobuo lika jan pasa thakbo asa raki.
এফ, আই , জুয়েল # বাস্তবতার আলোকে অনেক সুন্দর একটি গল্প।।

১৮ মার্চ - ২০১২ গল্প/কবিতা: ৩৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪